রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বোঝার ভূলে

তুমি হেলায় ঠেলে দিলে বলে
এ জীবনে বিদ্ধ আমি এমন
তোমার বোঝার ভূলে রাখি তুলে
আজও যা মনে গোপন

বেঁচে থাকার গল্প

তবুও বেঁচে থাকতে হয়-
রাতের আঁধারে ডানা ঝাপ্টিয়ে গন্তব্যে ফেরা পাখির মত
রাস্তারধারে অনাদরে অকারণ বেড়ে উঠা আগাছার মত

বেঁচে থাকার অভিনয়ে ভাঙ্গা কুঁড়োঘরে জমে বর্ণিল নুড়ি
আলো কিংবা বাদলে অঘোর ঘুম ভাঙ্গে সুখ সঞ্চায়নে
বিদির্ন স্বপ্নের বিচিত্র নেশা অহেতুক হানা দেয় মনে

দ্যোদুলমান এ জীবন-
একে রং চংয়ে সাজিয়ে একটু রঙ্গিন করে তোলা গেলেই
অযাচিত পথচারি বেশে ঠুকরে চলা প্রতিটি পায়ের ছাপে
সহজেই এঁকে নেয়া যায় বেঁচে থাকার রোমাঞ্চকর গল্প...

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ

রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আগ পর্যন্ত খুব কমজনই জীবনের তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ হয়।

বলতে চাইছি

বর্তমানে বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটিরও অধিক।

সরকার ২১ লক্ষ সরকারি লোককে হাতে রাখতে তাদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুন করেছে। সাথে দ্বিগুনের অধিক হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ সামরিক কিংবা আধা-সামরিক বাহিনীর বেতন। আর বাদবাকী যে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ আছে, যারা দিনমজুরে কিংবা বিভিন্ন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে, তাদের জন্য সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই।

সরকার সরকারী কর্মচারী কিংবা কর্মকর্তাদের এই বর্ধিত বেতনের ধরুন খাদ্য কিংবা নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রবাদির উপর যে প্রভাব পড়বে তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? নাকি সরকার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদে বাকীদের এদেশে অবাঞ্চিত ঘোষনা করবে?

সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বর্ধিত বেতনের কারনে সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে অসাধু উপায় আর ঘুষ বানিজ্য বন্ধ হবে! কিন্তু আমি বলতে চাইছি যারা এতদিন ধরে ঘুষ খাওয়ার এত-এত সুচতুর কৌশল আয়ত্ব করেছে, ঘুষের রকমারী পণ্থা আবিষ্কার করেছে, সর্বোপরি নিজেদের লালসার জিহ্বাকে এত-এত ভারী করে তুলেছে তাদের এই কর্মকান্ডকে সরকার ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় বন্ধ করবার চিন্তা করছে? আর কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে অসৎ উপায় ঠেকাতে কিংবা ঘুষ বানিজ্য বন্ধ বাস্তবায়নে?

নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়

এইযে; যে জায়গাটিতে আপনি আছেন- এখানে জীবনের প্রতিটি প্রদক্ষেপ আপনাকে অনুৎসাহিত করবে। আপনার মন অনুচ্চারিত আগামীর যে সুন্দর প্রভাতটির প্রতীক্ষা করছে- সে প্রভাতটিকে আরও বীষময় করে তুলবে। আপনার চলার প্রতিটি বাঁক‘কে সে আরও বাঁকিয়ে তুলবে, জীবনের প্রতিটি কৌঠর‘কে কদার্য্য করে তুলবে, যদি আপনি মানুষ থেকে থাকেন।

এখানে কেবল মানুষদের কথা বলা হয়েছে। কারণ একজন মানুষ মানুষ হয়ে প্রতিদিন হাজারো হতাশা, রূদ্ধশ্বাস, স্বপ্নের অকাল মৃত্যু, চারপাশের এত-এত যন্ত্রণা-বঞ্চনা-গঞ্জনা, ধর্ষন, ক্ষমতার দম্ভ, অহংবোধ, স্তুপকারে জমা হওয়া লাশের সারি, মৃত্যুতে ঠেলে দিয়ে নৃশংস উল্লাস এসব কোনক্রমেই নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়।

বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী

শুনি দুনিয়াতে সবচেয়ে বড় আদালত মানুষের বিবেক।

যেখানে মানুষের বিবেক পচে দূর্গন্ধ ছড়ায়, সেখানে সঠিক বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী।

বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়

বীরেরদল বীরত্ব দেখিয়ে সন্মানিত হয় আর বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়।

আজকে এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে স্যারের সে কথাটি খুব মনে পড়ছে

ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়াকালে জীবনবিজ্ঞান ক্লাসে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সিরাজউদ্দোলা স্যার যখন কৈশরে পদার্পনকালে মানবদেহের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতেন, তখন ইমোশনাল মনে এর তীব্রতা তৈরীর কারণে পিছনের সারিতে বসা ছাত্রদের মধ্যে হুসহাস-ফুসফাস আর হাসাহাসি শুরু হত। এমত অবস্থায় স্যারের পড়াতে অসুবিধা হত বিধায় স্যার দু‘একজনকে তুলে হুসহাস-ফুসফাসের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা অনুত্তর মুখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকত। তখন স্যার বলতেন, এরে অডা হগল তোরা কি নিয়ে ফুসুর-ফাসুর করছ, তোরা কি মনে করছ আমি বুঝি না? তোগে কিছু বলার বা জানার থাকলে আমারে জিগা, ফুসফাস করছ কেন? একথা বলে বসিয়ে থামানোর চেষ্টা করতে। কিন্তু ছাত্ররা বসেই আবার একই কাজ করত। তখন স্যার রেগে বলতেন, অডা হগল নিজেগোরে কি বেশী সেয়ানা মনে অয়? তোগে মত কত হোলাইন হগল য়ার মুতের লগে চলি গেছে আর কোতুগুন লুঙ্গিত আটকি মরি গেছে। আর তোরা আইয়ছ ......

আজকে এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে স্যারের সে কথাটি খুব মনে পড়ছে। ছাত্রলীগ নামক যে আবালের দল শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারসহ সন্মানিতদের গায়ে হাত দেয়ার সাহস করেছে,তাদের অনেকেই স্যারের প্রসাবের সাথে বেরিয়ে যাবারও যোগ্যতা রাখে না। অথচ ক্ষমতার জোরে আজ তারা কি করছে তা ভাববার জ্ঞানও তাদের নেই। আর যারা এই ঘটনাকে জাফর স্যারের গায়ের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে তাদের কথা আর না ই বললাম.....

মনুষ্যত্ববোধে কেবল মানুষ আপন

ধর্ম কর তুমি তোমার মতন
ধর্ম করি আমি আমার মতন
ধর্ম বলয়ের পথ যোজন-যোজন
মনুষ্যত্ববোধে কেবল মানুষ আপন।

আমার নাম অবিবেচক কেন?

আমার ফেসবুকের বেশিরভাগ বন্ধুদের কৌতুহল আমার নাম অবিবেচক কেন?

সত্যিকারের যদি বলতে যাই তবে এর রহস্য আমার কাছেও কিছুটা অবোধ্য, তারপরও যখন নামটি ধারন করে আছি তাই বলতে হয়-

* আমি “অবিবেচক” কারণ- চলতে গিয়ে আমি দেখেছি আর আট-দশজনের মতো করে আমি এত সহজ চিন্তা কিংবা বিবেচনা করতে পারি না।

* আমার জানার পরিধির চেয়ে প্রকাশ করার পীড়া বেশী।

* আমি মনের কথাগুলো বলতে গেলেই দেখি, আমার বন্ধুদের অনেকে তা সহজে নিতে পারে না।

* আমার প্রকৃত নাম “বিপ্লব” অথচ এই নামের মত আমি কখনোই দীপ্তমান নই।

* যেহেতু নিজ নামটি বহন করবার মতো নিজেকে উপযুক্ত বিবেচনা করতে পারি না, তাই বিবেচনাহীন হয়েই বেঁচে থাকবার অভিনয় করে যেতে হচ্ছে।

* “অবিবেচক” নামটা বহণ করার ফলে কিছু কিছু দায়বদ্ধ পীড়া থেকে সহজেই নিজেকে মুক্ত করে নিতে পারি।

ইত্যাদি.....

ঘামাব আপন মাথা কি ভেবে গণ্য

এই তল্লাটে, একই পাল্লাতে
রাম-রহিমের ওজন যদি হয় ভিন্ন,
অস্বীকারের কিবা আছে, মুক্ত স্মরিয়া পাছে
ঘামাব আপন মাথা কি ভেবে গণ্য?

পরিপূর্ণতা

জন্মে কর্মসিদ্ধ হয় না বরং মানুষের ভিতরকার সৎনিষ্ঠা আর শ্রমের বিনিময়ে তা পরিপূর্ণতা পায়।

বর্নিলে দেখা

হৃদয়ের ক্যানভাসে যে ছবি আঁকা
তারে;
--তুলির রেখায় টেনে বর্নিলে দেখা

ভাষাহীন রোদন

আমি মনের ভাষাগুলো গুলিয়ে ফেলি বার-বার
শব্দরা বারবার বেরুতে চেয়েও স্তব্ধ হয়ে পড়ে,
ঘৃণাগুলোকে উগলে দিতে পারলে স্থির হতে পারতাম
অথবা উন্মাদ হয়ে মাসুদ নামক হিংস্র হায়েনাগুলোর
রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মাততে পারলে-
না; মাসুদ হায়েনাদের এমন করে ষষ্ঠশ্রেনীর
হরিণ শাবকটাকে খুবলে খাওয়ার দৃশ্য-

এ আমি ভাবতে পারি না,
এমন অবলীলায় অমানবিক হিংস্র জানোয়ারের পীড়ায়
জন্মদাতা-দাত্রীর ভাষাহীন রোদন এ আর সহ্য হয় না।

আরও একবার নতি স্বীকার

সুলতানা সুস্থ হয়ে জীবনে ফিরুক সে ইচ্ছেটা ছিল কিন্তু আমার সে ইচ্ছেটা বোধহয় ইচ্ছেতেই থেকে গেল, কারন জীবন তার অতি সন্নিকটে চলে গেছে।

জীবনের রূঢ বাস্তবতার কাছে বোধহয় আরও একবার নতি স্বীকার করতে হচ্ছে।

মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়

মানুষ জীবনের প্রতিটি স্তরে অসহায়।

সমাজে বলুন, সংসারে বলুন, কিংবা জাতি ধর্ম বর্ন গোত্র দেশ কিংবা বিদেশ যেখানেই বলুন না কেন, মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়। অসহায় এই জীবনে প্রত্যেকেই তাই কর্তব্যকে সীমাবদ্ধতার মাঝেই পরিব্যাপ্ত রাখে। স্নেহ-মায়া-মমতা কিংবা মানবতা, সব কিছুই জনবিশেষে সীমাবদ্ধ গন্ডিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে।

ও বিধাতা

এমনি করে জন্ম-মৃত্যু গুনে-গুনে
ক্ষীন সম্ভাবী জীবনও থেমে পড়ে,

হাসপাতালের বিছানায় ছড়িয়ে থাকা বেদনার্ত জীবনের আর্তনাদ
মৌণমুহূর্ততায় দুই-চারটা থেমে যাওয়া শরীর দেখে অভিভূত হই,
বলি ও বিধাতা; এই সহে-সহে ক্ষয়ে যাওয়া দেহে
কেন তবে এত বাসনারা ডুবে মরে?

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক শুধু একজনই। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এমনই একজন বলিষ্ঠ নেতা যার নাম উচ্চারিত হতেই পাকি ঘরনার লোকদের চুলকানী আর গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। শুধু তাই নয়- এই চুলকানী আর গাত্রদাহ তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বহে বেড়ায়। যখন চুলকানী কিংবা গাত্রদাহ খুব বেড়ে যায়, তখন তারা গেয়ে উঠে-

“জাতির পিতা মুজিব পিতা স্বপ্নে দেইখা কয়

দেশটা তো আমার একা, অন্য কারও নয়”

চরম চুলকানীর এই রোগে ভুগতে থাকা তারা ভুলে যায়- যে স্বপ্ন দেখে, দেখায় এবং স্বপ্নকে সার্থক করে, সে সত্যিকার অর্থেই সেই স্বপ্নের দাবীদার। অথচ তারা বঙ্গবন্ধুর বিদ্রুপ করতে গিয়েও তাঁর স্বীকৃত কর্মকে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলে নিজেদের অজান্তেই।

আজ ১৫ই আগষ্ট। বাঙ্গালী জাতির চির শোকের দিন। এই দিনে পাকিসমমনা ক্ষমতালিপ্সুদের হাতে জাতি হারায় একজন সত্যিকারের অভিভাবক, একজন রুপকার কিংবা একজন মহান সেনা নায়ককে। আজ এমন একটি শোকার্ত সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে শুধু এইটাই বলবার আছে-

“ওহে মহান সেনা, সত্যিকারের বলে বলিয়ান

আজ এই দীনহীনের লহও প্রণাম।”