বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

অসার জন্ম

জন্মে যাদের তীব্র ঘৃণা
মর্মে তাদের কি?
রক্ত গঙ্গা সাঁতরে সেথায়
মানুষ খুঁজেছি

মানুষ খুঁজেছি আতুরঘরে
খুঁজেছি অন্ধ কবরে
বসতঘরের চারপাশ খুঁজেছি
অষ্ট প্রহর ঘুরে

ঘুরে-ঘুরে খয়ে জন্ম
আয়ু করি পার
মর্ম চোখের চর্ম তুলে
জন্ম হয় অসার।

মানুষ শ্রেষ্ঠ নাকি নিকৃষ্ঠ?

সব মানুষকে বিবেচনায় নিলে মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলতে দ্বীধা জন্মে। কিছু মানুষ আছে যাদের গুয়োপোকা বলাই বেশী সমীচিন, ওদের জন্মস্থান পরিচয় নির্ধারন করে। যুক্তির খাতিরেই বলি- শুধু কি জ্ঞান বিবেচনায় মানুষ শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার হতে পারে?

না; মানুষকে শ্রেষ্ঠ ভাবতে পারছি না, বরং এদের এমন এক চিজ মনে হয়, যারা-
১) নিজেদের ধর্মে বিভক্ত করে, কর্মে বিভক্ত করে, জাতে বিভক্ত করে
২) এরা বাঁচাতে ঔষধ বানায়, মারতে অস্ত্র বানায়
৩) কখনও কারও ঘর তুলে দেয়, কারও টা আবার পুড়িয়ে দেয়
৪) সেবায় কখনও অসুস্থকে বাঁচিয়ে তোলে, আবার সুস্থকে খড়গে খুন করে
৫) সময়ে যতটা মমতায় আগলে রাখে, পুরোলে তারচেয়ে বেশী তাড়ায়
৬) স্বার্থ থাকলে শ্রদ্ধা করে, পুরোলে লাথি মারে
৭) কখনও পথ থেকে তুলে নেয়, কখনও আবার ঘর ছাড়া করে
৮) আদর-মমতায় কাউকে পরিপূর্ণ করে তোলে, কারও জীবনকে অবলীলায় বীষময় করে তোলে
৯) ডান হাতে পেট পুরে আর বাম হাতে বিষ্ঠা সাফ করে
১০) আর নিজের বিবেচনায় নিজেকেই শ্রেষ্ঠের দাবিদার করে বসে

না; আমার বিবেচনায় প্রাণিজগতের শ্রেষ্ঠ মানুষ!!! এ কোনভাবেই বিবেচিত হচ্ছে না। শ্রেষ্ঠ‘রা বরাবরই শ্রেষ্ঠ হবে তাদের নিষ্ঠায়-কর্মে-গুণে। তারা মহিমাণ্বীত হবে ক্রমাণ্বয়ে। কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার মানুষদের ঠিক কতজন আজ নিজেকে বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারছে?

সত্যি কি মানুষ দেখছি?

চারিদিকে কেবল মানুষগুলোকে খুঁজছি
চোখের সামনে কেবল মূর্তমানব স্বরুপে
বিবেকের দায়ে প্রশ্ন তুলি
সত্যি কি মানুষ দেখছি?

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

চাওয়া পাওয়া

একদিন সবাই ভেবেছিল-
পৃথিবীটা বরং গর্দভদের শাসনে যাক

অতপরঃ গর্দভরা শাসনের আসন পেল
আসনে বসেই সমস্ত কৃতিস্তম্বকে বানিয়ে দিল মুক্ত টয়লেট
তারপর থেকে সমস্ত পৃথিবী ভরে উঠল উৎকট গন্ধ আর বীষময় বেদনায়...

আমি সংশয়বাদী!!

আমি সংশয়বাদী!!

ধর্ম সত্য এ যুক্তি আজও যেমন কেউ আমার মননে গেঁথে দিতে পারে নি, তেমনি ধর্ম মিথ্যা এ সম্পর্কে যুক্তিগুলোও আমার কাছে অতটা শক্তিশালী মনে হয় না। তাই কেউ কোন বিষয়কে আমার কাছে সত্য বলে জোর যুক্তি দেখাতে পারলে আমি তাকে সত্য বলে স্বীকার করি আবার কোন সত্যকে মিথ্যা বা মিথ হিসেবে শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে পারলে তাকেও আমি মানি।

আমার ধর্মের প্রতি যেমন প্রচন্ড বিশ্বাস আছে, তেমনি প্রচন্ড অবিশ্বাসও। পূর্বাপর মহাপুরুষদের মহানুভবতা এবং তাঁদের প্রতি আজও মানুষের শ্রদ্ধাবোধ দেখে আমি যেমন বিমোহিত হই। তেমনি ক্ষমতাশালীর ক্ষমতায় দীন-হীন মানুষের সারাজীবন শোষন, অবহেলা আর অবজ্ঞা আমাকে স্রষ্টার অপার মহিমার বিষয়ে সন্দিহান করে। আমি আমার ভ্রমযুক্ত পৃথিবীতেই কেবল পরিভ্রমন করি। সকল ধর্মের মহিমাণ্বীত হবার জায়গায় আমার যেমন দৃঢ বিশ্বাস আর শ্রদ্ধাবোধ আছে, তেমনি ধর্মকে ব্যবহার করে হিংস্র ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠায় জন্য ঘৃণাবোধও প্রবল।

সহজ করে বলতে গেলে আমার মত সংশয়বাদীদের অবস্থান জাহান্নাম কিংবা নরক! তাই স্বর্গ বা বেহেস্তের সাধও আমার মনে আসে না আর তা মনে আনার চেষ্টাও আমি করি না। দুনিয়ার আলো নিবে গেলে পরপারে কার কি হবে? কে কোথায় যাবে? সত্য-মিথ্যায় কে কতটা এগিয়ে? মুখোশের আড়ালে কে কাকে আস্তাকুঁড়ে ঠেলে পয়দা লুটছে... এসব যেহেতু জানা সম্ভবপর নয় আর দুনিয়াতে নানান পণ্থায় সৎ আর ভালো থাকবার জায়গায় থেকে যখন বার-বার আহত আর প্রতারিত হই, তখন বেঁচে থাকার এই দুনিয়ায় যেটুকু সুস্থ-নির্মল শ্বাস নিতে পারি, এই কেবল আমার কামনা।

অগ্রগতি

“দেশকে ডাস্টবিনে রাখুন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন!”

সংখ্যালঘু

আমাদের পাশের গ্রাম বিনোদপুরের একটা প্রচারিত ঘটনা ছিল এমন-

প্রতিদিন গ্রামে কোন না কোন ঘরে কিংবা মাঠ-বাগানের ফল-ফসল চুরি হয়ে যাচ্ছিল, কোনভাবেই এই সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছিল না। এলাকার লোকজন জানত কার ইশারায় চুরি হচ্ছিল, কিন্তু উপযুক্ত প্রমান আর খর্বিত ক্ষমতার ধরুন প্রভাবশালী মদদ দাতাকে কেউ স্পর্শও করতে পারছিল না। তো নির্বাচন প্রাক্কালে সে মদদ দাতাও মেম্বার পদপ্রার্থী পদের জন্য দাঁড়ায়। এলাকার লোকজন মনে-মনে তার উপর চড়াও থাকায় সে বুঝতে পারে নির্বাচনে তার পরাজয় শতভাগ নিশ্চিত। তাই তিনি নির্বাচন প্রচারে এ‘কথা প্রচার করতে থাকেন যে, যদি তিনি নির্বাচিত হন, এলাকার লোকজন দরজা খুলে ঘুমোতে পারবে, কোন চুরি হবে না। যাই হোক- প্রতিদিন পাহারা দিতে থাকা অতিষ্ঠ লোকজন এর সমাধান চাইছিল খুব করে, তাই এই নিয়ে মুরুব্বিশ্রেনীর কয়েকজন বসল। বসে তারা সবাই দেখল মদদ দাতা মেম্বারের বিপরীতে যিনি দাঁড়িয়েছেন, তিনি চুরির মদদ দাতা থেকে কিছুটা ভালো হলেও তাকে দিয়ে এই সমস্যা আদৌ সমাধান সম্ভব নয়। তাই সকলের সম্মতিক্রমে চুরির মদদ দাতাকে নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তিনি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পরেরদিন থেকে এলাকায় সত্যিকারে চুরি বন্ধ হয় এবং এলাকার মানুষের স্বস্তি ফেলবার সুযোগ হয়।

উপরের গল্পটি এইদেশের সংখ্যালঘুদের জানার উদ্দেশ্যে দেয়া, এদেশে সংখ্যালঘুদের নিঃশেষ করার জন্য যারা উঠে-পড়ে লেগেছে, সংখ্যালঘু‘রা ভয়ে-আতঙ্গে তাদের কাছ থেকে দূরে সরে থাকবার চেষ্টা করছে। ফলশ্রুতিতে প্রতিনিয়ত তাদের ভাগ্যে নেমে আসছে নির্মম প্রহসন। একদিকে যারা তাদের নিঃশেষ করতে চাচ্ছে, তারা নির্বাচিত না হয়ে সংখ্যালঘুদের কারন হিসেবে দেখে ক্ষোভ-প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করছে আর অন্যদিকে ডর-ভয়ে আতঙ্কগ্রস্থ সংখ্যালঘু‘রা বাঁচতে গিয়ে যাদের আকড়ে ধরতে চাইছে তারা স্বার্থ উদ্ধার শেষে নিজেদের আখের গুছাতে এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় আহরণের আশায় নিজেদের ভাই-বন্ধু খুঁজে তোষামোদিতে সংযুক্ত হচ্ছে। যার খেসারত ১৯৪৭ থেকে ২০১৬ সংখ্যলঘুর সংখ্যা ৩০% থেকে নেমে ৮%।

পরিশেষ একটা কথা- আমার মেছের ছোটভাই শরীফ একদিন হেসে উঠে আমার বন্ধু মিথুনকে উদ্দেশ্য করে বলছে, মিথুন ভাই দাদা আপনাকে আর করিম ভাইকে যে পরিমান নির্যাতন করছে (প্রেক্ষিত- আমার স্বভাব বন্ধুদের অসম্ভব বিরক্ত করে নিজের এবং তাদের মন ভালো রাখার চেষ্টা করা) তাতে কে বলবে এদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হয়! দাদা (আমাকে উদ্দেশ্য করে), কানু দাদা (ছোটভাই কানু) আর আমার বন্ধু সুব্রত (ছোটভাই) তো প্রতিদিন সংখ্যলঘু নির্যাতনের খবর পায়। যাই হোক, শরিফের সে কথা শুনে মনে-মনে হাসলাম আর বললাম- ভাইয়া, দোষ করেছে একজন আর তার খেসারত দিয়েছে ৩০০টি পরিবার। না এরবেশি বলার ইচ্ছে নেই, শুধু একটা কথাই ভাবছি ৬৯ বছরে সংখ্যলঘুদের ১০০% এর প্রায় ৭০% শেষ আর বাকীটা শেষ হতে বছর হিসেবে সময় নেবে ২৫ বছর। তারপর কি হবে? কি হবে না হবে সেটা বরং আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের দিকেই চোখ রেখে আমরা দেখি। যদি এখনও সকলের মনে বদ্ধমূল ধারনা থাকে মুসলিম-মুসলিম ভাই-ভাই, তবে বলি- ক্ষমতার লোভ আর রক্তের নেশা এই দুই পেয়ে বসলে শেষ ধ্বংস পর্যন্ত সে কাউকে নিস্তার দেয় না, উত্তর প্রজন্ম সে পথেই দ্রুত এগিয়ে চলছে।

ব্যক্তি আর গোষ্ঠী কখনও এক নয়, এক হতে পারে না

ব্যক্তি আর গোষ্ঠী কখনও এক নয়, এক হতে পারে না। প্রত্যেকের মধ্যেকার পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধও কখনও এক হবে না, এক হতে পারে না। যদি তাই হত, তবে সৃষ্টির সৌন্দর্য্য থাকত না। ব্যক্তির স্বাতন্ত্রীক স্বত্ত্বা বলে কিছু বেঁচে থাকত না, জন বিশেষে দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হত না, ভিন্ন মতাদর্শের সৃষ্টি হত না, কারও প্রতি কেউ বিরূপ হত না অথবা কারও প্রতি কারও সম্মানও বলবৎ হত না আর ভিন্ন গোষ্ঠী, শ্রেণী, জাতি কিংবা ভিন্ন-ভিন্ন ধর্মবিশ্বাসেরও জন্ম হত না।

মানুষ জন্মানুযায়ী গোষ্ঠীর পারস্পরিক বিশ্বাসে দাবিত হয়, এ অস্বীকার করার জো নেই। তেমনি ব্যক্তি জীবনবোধ, সামাজিক আচার, রাজনৈতিক অনুলব্ধি, অর্থনৈতিক বৈষর্ম্যতা কিংবা ধমীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় একদিন মানুষ একটা নির্দিষ্ট চেতনায় জাগ্রত হয়ে বেড়ে উঠে, প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তাধারায় জন্ম নেয় এক-একটা স্বতন্ত্র স্বত্ত্বা। তাই ব্যক্তি আচারনের জন্য সমস্ত গোষ্ঠীকে সংযুক্ত করা কিংবা সমস্ত গোষ্ঠীর উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন কোনভাবেই সমর্থিত হতে পারে না। যদি তাই হয় তবে- এ কেবল এই সত্যকেই সামনে মেলে ধরে, গোষ্ঠীর প্রতি ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটাতে সংগঠিত চক্র তাদের নোংরা কুৎসিত চরিত্রটাকে কেবল সামনে টেনে ধরছে।

এইদেশের আবহাওয়ার আনুকূল্যে আমাদের জন্ম, শৈশব, বেড়ে উঠা। একদিন আচানক এই মাটির বুকেই আমাদের শান্ত ঘুমের আয়োজন। এদেশে ভিন্ন ধর্মালম্বীরা পরস্পরের সৌজন্যে একসাথে একপাতে যেমন খায় তেমনি এক হাতে অন্য হাতের জন্য মেলে দিয়ে পরস্পরের হাত ধরে একই রোলিং ধরে পথ পাড়ি দেয়। তবে চরিত্রগুলো এত দ্রুত বদালাচ্ছে কেন? হাতগুলো পরস্পরকে ঠেলে ফেলে দেবার প্রয়তারা চলছে কেন?

বারবার বলছি, ব্যক্তি কখনও সামষ্টিক নয়, তবে কেন ব্যক্তির উপর ক্রোধ সামষ্টিকের উপর গিয়ে পড়ছে? পৃথিবী জুড়ে এমন কোন দেশ নেই, যেখানে কোন নির্দিষ্ট ধর্মীয় চিন্তা-ধারার মানুষ ভিন্ন চিন্তাধারার কাউকে কটাক্ষ করার চেষ্টা করে নি অথবা তার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি অন্যের উপর প্রয়োগ করে অন্যকে তার মতাদর্শে দীক্ষিত করতে চেষ্টা চালায় নি। যুগ-যুগ ধরে ধর্মান্তরিত হওয়া লোকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। শুধু ধর্মীয় কেন? আমরা সকলেই ব্যক্তির দূর্বলতাকে নিয়ে কম-বেশী ঘাটা-ছেড়া করি নিয়মিতই। এ জীবনের অনুসঙ্গ ব্যাতীত ভিন্ন কিছু নয়। তবে যে চরিত্রটি মানুষ কখনওই এড়িয়ে যেতে সক্ষম নয়, সেই চরিত্রটির জন্য সমূহ গোষ্ঠীকে আঘাত করার মনোবাসনা কি নির্দেশনা দেয়? আমি আমার বিবেচনায় তা বুঝতে পারিনি, হয়ত পারবও না। যারা বুঝে তারা সে সত্যটিকে তুলে ধরুক। তবে আমি একটা বিশ্বাস চিরদিন মেনে চলি, তা হল- কোন বিষয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করতে নেই, তাতে সত্যটা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।

আমার অপূর্ণ আকাশ

আমার অপূর্ণ আকাশ জুড়ে তোমার ব্যাকুল বসতি
জীবনটাকে বলে বোঝাব, কি সে সামার্থ্য-প্রতিশ্রুতি?

অতীত ভবিষ্যৎ

কখনও আসেনি এমনদিন রথী, যেদিন একের হাসিতে হেসেছে লুটে সবে
এমনদিনও আসবে না কভূ, যেদিন একের ব্যথায় কাঁদবে সবে অনুভবে

পরিচয়

পরিচয় পর্বটা চেহারা-পোশাক-আশাক দেখে শুরু, আচারণ মধ্যবর্তী পর্যায় আর চরিত্র জানার শেষ পর্যায়ে উপণীত হতে-হতে বেশীরভাগই প্রতারিত হয়ে সব হারিয়ে বসে!

জিজ্ঞাসা

বেঁচে থাকার জন্য মানুষের ঠিক কতটা চাই? ঠিক কতটা হলে একজন মানুষ মন থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলতে সক্ষম, অনেক হয়েছে আর চাই না?

না, মানুষের কাছে কিংবা মানুষের বিবেকের কাছে এ প্রশ্ন রাখা নিতান্তই অমূলক। যেহেতু মানুষের চোখ বা মগজ হাঁটুর নিচে তাকাবার চেষ্টাকে হেয়ালে চলে, তাই মানুষের বাসনা কিংবা ব্যাকুলতা সে কেবল উপরের সিঁড়িতে পা রাখার। আর এই উপরের সিঁড়িতে ক্রমাগত পা তুলতে গিয়ে সে রপ্ত করতে শেখে- অন্যকে অধিকার বঞ্চিত কিংবা প্রতারিত করার নীতিকৌশল।

মানুষ নামের মুখোশ

পৃথিবীতে এমন কোন দেশ কি আছে যেখানে মানুষ হয়ে অন্য মানুষের রক্ত নিয়ে বিভৎস খেলায় মেতে উঠা কল্পনাতীত, নাকি হিংস্র নেশা আবডাল করতেই মানুষ পৃথিবীতে এসে মানুষ নামের মুখোশ পড়ে?

জীবনটা কাঁচের গ্লাসের মত

জীবনটা কাঁচের গ্লাসের মত। এর বাহিরকার রুপ দেখে অনেকে ভুলে যায় এটা সোডিয়াম সিলিকেট আর বালির মিশ্রন, যা যতন করে আগলে রাখতে না পারলে যেকোন সময় ভেঙ্গে খান-খান হয়ে যেতে পারে। অথচ দূর থেকে প্রত্যেকে অন্যের জীবনটাকে কতটা স্বচ্ছই না ভাবে।

প্রশ্ন?

যে সৌন্দর্য্য দেখবার আশায় আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ান, সে আয়না আপনার বাহিরের কিংবা ভেতরকার প্রকৃত সৌন্দর্য্যকে কখনওই জানে না, জানাতেও চায় না।

যদি নিজের ভেতরকার সৌন্দর্য্যটাকেই জানা না হয়, তবে অল্প পচনেই দূর্গন্ধ ছড়ানো চামড়ার সৌন্দর্য্য দেখে কি লাভ বলুন তো? আচ্ছা, আপনি চামড়ার সৌন্দর্য্য দেখিয়ে কাউকে প্রভাবিত কিংবা প্রতারিত করার কথা ভাবছেন না তো?

দায়ভার

ভাবিতে যে বিষয় ভাবনা বড় মনোরম
তাহারি দায়ভার সহিতে যাতনা ভীষণ

অভাব

শুরুতে অভাবগুলো ভাত-কাপড়েই থাকে, সময় তাকে আগ্রাসী ভাব-বাসনায় আবদ্ধ করে। সময়ে প্রতিটি কদমের হিসেব রাখা সত্যিই বড় শক্ত।

শ্রদ্ধায় রতনতনু স্যার



ছোটভাইয়ের সাথে সম্পর্কের কারনে চার-পাঁচবার আমাদের বাসায় শ্রদ্ধেয় রতন তনু স্যারের পদার্পন হয়ে ছিল এবং স্যারকে একেবারে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। ভালো মানুষের সংজ্ঞা আগে খুঁজলেও এখন খুঁজি না, কিন্তু মানুষটাকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন তারা জানেন কতটা নিখাদ ভদ্রলোক ছিলেন তিনি। সন্তান-সন্ততিহীন যে পিতা নিজের লেখাকে সন্তান বানিয়ে বেঁচে ছিলেন, সমস্ত মন-প্রাণ ঢেলে যিনি সন্তানগুলোকে পরম মমতায় আগলে বড় করে তুলেছেন, সে সন্তানগুলোর কয়েকজনকে আগলে রাখার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলা একাডেমি তাঁকে বিশিষ্ট জন নিরুপন করতে পারে নি, এ সত্যি আমাদের জন্য হতাশাজনক বাতা! ৫২ বছরের পরিসমাপ্ত জীবনের যাঁর ৭০ খানা বই প্রকাশিত হয়েছে, যাঁর বই বাংলা একাডেমি কর্তৃক সংরক্ষিত হয়েছে, যিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য, যাঁর লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অনেকস্থানে পঠিত হয়েছে, যার বইয়ের সূত্র ধরে অনেকে থিসিস কিংবা গবেষণাপত্র, ক্রোড়পত্র লিখছে, তিনি নাকি বাংলা একাডেমির চোখে বিশিষ্টজন নন। আর তাই তাঁর মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শ্রর্দ্ধাঞ্জলির সুযোগ মেলে নি।

অনেক ভেবে দেখেছি, তেলমর্দনে তেলাক্ত করতে পারলে কে কি লিখেছে সে বড় হয়ে উঠে না, বরং জন বিশিষ্টজনে পরিনত হয়। আর তার পরিনতির মুখোমুখি হতেই আমাদের পথও দ্রুত এগিয়ে চলছে।পরিনতি যখন নিশ্চিত, তখন মর্দনের তেল উৎপাদন ব্যবস্থা না থাকলে, একদিন হয়ত খুনোখুনিই লেগে যাবে। যাক যা হবার তা হয়ে গেছে, অন্তরের আহত ক্ষতগুলোকে জমিয়ে রেখেই স্যারের জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থণা জানাই, তিনি যেন তাঁকে স্বর্গবাসী করেন।

গন্তব্য নিশ্চিত সবাই জানে!!!

গন্তব্য নিশ্চিত সবাই জানে!!!

তবু মনের বুভুক্ষু রেখা মাড়াবার যাতনা বড়
সোহার্দ্যে বাঁচার কাতরতায় ঢেঁকে যায় মৃত্যুর পাহাড়-উপত্যকা

মিথ্যাকেই আগলে রাখি-
যদি সত্যকেই জড়াতে চাইব-
তবে স্বপ্ন বাঁচবে কিসে?
রহস্য মিলবে কোথায়?
কিসের নেশায় উন্মোচিত হবে আদিমত্তা?
অার কেনইবা বাঁচার ইচ্ছেতে জন্মাবে জীবনের প্রতি নির্ভরতা?

ক্ষমতা

# ক্ষমতা না থাকলে ক্ষমতাহীনের ক্ষমা করার শক্তি কতটা, অনুগ্রহের চোখ দিয়ে দেখতে গিয়ে কোন ক্ষমতাশালীর তা দৃষ্টিগোছর হয় না।

# ক্ষমতাই যদি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হত- অনুভূতির কাছে কেউই পরাজিত হত না আর মমতার পৃথিবীও কাঁচের ন্যায় ঠুনকো আঘাতে ভেঙ্গে পড়ত।

নিজেই পিছু হটছি

বিশ্বাসগুলোর ক্রমাগত ভাঙ্গন দেখছি
মিথ্যার ধ্বংসস্তুপ দেখে, নিজেই পিছু হটছি

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

তোমাদের দিনগুলোতে

তোমাদের দিনগুলোতে ফুল-প্রজাপতির মিতালি
জড়িয়ে যাক ছড়িয়ে থাক মিষ্টি রোদ্দুর চৈতালি

বিবেচনাবোধ

ভালো-মন্দ বুদ্ধি সলাপরামর্শ দেবার মতো দুনিয়া জুড়ে লোকের অভাব নেই, কিন্তু আপনার দুর্দিনে হাতটাকে শক্ত করে ধরবার লোক দু‘একজন এ কেবল বর্তমান। তাই অন্য কারও থেকে যেকোন সলাপরামর্শ নেবার পর নিজের বিবেচনাবোধকে খাটাতে হয়। সব সময় ভেবে নিতে হবে, আমার বর্তমানটিই যেন কেবল আমার না হয়। আলোক পসরা ভরা আমার জীবনের পরবর্তী সময়টাও যেন রয়।

শেষ প্রতিপাদ্যতে

যার অপেক্ষায়
সে আসে নাই
যে আসতে চাইল
তাকে চাই নাই
শেষতক যা না চাইবার
তা আগলে ধরল...
ফেলতে পারলাম না
শুধু দীর্ঘশ্বাস আকড়ে নিলাম
হায়! এটাই কি প্রতিপূরক
শেষ প্রতিপাদ্যতে?

অনুলব্ধ মন

কাউকে ভালোবাসতে অনুলব্ধ মনের টানই যথেষ্ঠ, কদাকার কোমলতাহীন রুপের সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের মোহ-বিশ্বাস-ভালোবাসা সে অনুলব্ধ মনেরই অভ্যর্থনা। অথবা বিশ্বসংসারময় সকলের মধ্যকার যে আত্মিক সমন্ধ গড়ে উঠে তাকে অনুলব্ধ মনের প্রভাব ছাড়া কি বলা চলে?

সামার্থ্যবান ও অক্ষম

মানুষ ততক্ষন সামার্থ্যবান, যতক্ষন সে প্রকৃতি আর মনের সাথে সন্মুখ যুদ্ধে সমান লড়তে পারে।
মানুষ তখনই অক্ষম, যখন মনের সাথে যুদ্ধের সামার্থ্য হারিয়ে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা অপলক অনুধাবন করে।

হেরে যাওয়া সৈনিকের স্বপ্ন

স্বপ্নগুলো চোখে যতই চকচকে রংধনুর ন্যায় খেলুক না কেন, হেরে যাওয়া সৈনিকের কাছে সে সদা মিথ্যা, মিথ আর প্রবঞ্চনা।

যতই অমূলকে ডুবে যাই না কেন, জরা কিংবা মৃত্যু দুই‘ই জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় সত্য।

লিখতে গেলেই

লিখতে গেলেই থমকে দাঁড়াই
হঠাৎ করে দুলল কেন কানের দুল?
তোমা নিয়ে ভাবতে সব জড়িয়ে ফেলি
এ‘কোন ইশারায় ডাকল পথের বনফুল?

আমি কেবল শ্রেষ্ঠতারই প্রশ্ন তুলছি

আপনি বিশ্বাস করেন- সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড সর্বশক্তিমানের সৃষ্টি, দুনিয়ার কোন কিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাহিরে নেই। তিনি চাইলে- সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড এক ইশারায় ধ্বংস করে দিতে পারেন। আবার সে আপনিই বলছেন “সনাতনধর্ম” “ইসলামধর্ম” “খ্রীষ্টধর্ম” “বৌদ্ধধর্ম” “গুরুধর্ম” “শিখধর্ম”...সেরা। আপনার শ্রেষ্ঠধর্ম গ্রহন ব্যতীত বাকীরা কাফের/নাস্তিক, এ‘জন্য তারা স্বর্গ/বেহেস্ত তো পাবেই না বরং নরক/দোজগ এর অনলে দাউ-দাউ করে জ্বলবে।

তাহলে কি দাঁড়াল?
আপনার শ্রেষ্ঠতার যুক্তিতে- আপনার ধর্ম ব্যতীত অন্যধর্মের
সৃষ্টিতে স্রষ্টার ইচ্ছে কিংবা উদ্দেশ্য কি?
তিনি কেন সৃষ্টির সমগ্রকে এক করেন নি?
কেন করেন নি একজাতের কিংবা একধর্মের?
যদি হাশরের ময়দানে সমস্ত সত্য-মিথ্যার নির্ণয়ের স্থান হয়,
তবে- কি কারনে অন্যধর্মের হিসেবে সৃষ্টি করে
স্রষ্টা স্বয়ং কারও নরক/দোজগ নিশ্চিত করেছেন?
বলতে চাইছেন- দুনিয়ায় এসে আপনার শ্রেষ্ঠটাকে গ্রহণের সুযোগ আছে?
কিন্তু প্রশ্ন রাখছি- কেন দুনিয়ায় এসে শ্রেষ্ঠ নির্ণয়ে দ্বীধা-দ্বন্ধে পড়তে হবে?
কেন এখানে এসে নিজের জন্মদাতা-জন্মদাত্রী
আর পূর্বপুরুষদের শেখানো সত্যকে মিথ্যে বলে আপনারটাকে সত্য হিসেবে
গ্রহণ করার মতো দম রূদ্ধকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে?
আপনাকে সত্য বলে স্বীকার করতে গিয়ে কেন সমস্ত রক্তের
সম্পর্ক ছিহ্ন করে, সবাইকে হয়ত অসহায় পথে ঠেলে
আপনার দিকে এগিয়ে যেতে হবে?
দুনিয়ায় আপনি এত সহজে শ্রেষ্ঠটাকে পেয়ে গেলেন,
তবে অন্যকে কেন এত আঘাত এত নিঃস্বার্থ ত্যাগ এত বিড়ম্বনা সইতে হবে?
শ্রেষ্ঠত্বের কথা বললে আমি সন্দিহান, আর বিশ্বাস রেখে সবাইকে মানুষ বলে মানবতাকে আশ্রয় করতে চাইলে অথাৎ সবার আগে আমরা মানুষ বললে- আমি আপনার সাথে এক কাতারে দাঁড়াতে সদা উদগ্রীব, আমি আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি বিশ্বাস রাখি- সমগ্র ধর্ম সত্য, সমগ্র বিশ্বাসও সত্য।আর বিশ্বাসই সামগ্রিকতার নির্ণয়ক কিংবা রুপকার। আপনি আপনার অবস্থান থেকে সৎ থাকলে, সত্যটাকে আগলে রাখলে, আপনি আপনার জায়গা থেকেই শ্রেষ্ঠ হতে পারেন। কিন্তু অকারন যদি বিতর্ক করতে চান- আমি বলব, আমি আপনার সত্য কিংবা বিশ্বাসকে প্রচন্ড ঘৃণা করি। আপনি স্বার্থণ্বেষী ধ্বান্ধাবাজ, ধর্মের মুখোশ লাগিয়ে পৃথিবীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর হীন বাসনা আপনার মগজ আর হৃদয়ের আদ্যপৃষ্ঠে লেপ্টে গেছে।

মেস জীবনের অধ্যায়

নিচতলায় অবস্থিত তিনরুমের একটা ফ্ল্যাটে আমাদের সাত জীবিত (ব্যাচেলর) আর এক মৃত (বিবাহিত) এর বসবাস। যার মধ্যে একরুমে থাকি আমি, আমার পিচ্ছিকালের (বিদ্যালয়ের) বন্ধু সুমন আর আড্ডাবাজ বন্ধুগ্রুপের এর বন্ধু করিম। আমরা তিনজন নোয়াখালীর। অন্য আরেক রুমে পিশাত ভাই সুব্রত আর তার বিদ্যালয়বেলার বন্ধু শরিফ, তারা দুজন লক্ষ্মীপুরের। আর শেষ রুমটিতে থাকে সুমনের বিএসটিআই এর অফিস কলিগ মোশারফ ভাই (কিশোরগঞ্জ), আরিফ (লক্ষ্মীপুর) আর মিনহাজ (কুমিল্লা)। আরিফ আর মিনহাজ দু‘জনেই সুব্রতের ডিপ্লোমার বন্ধু। যাই হোক- যে প্রসঙ্গ ধরে সবার পরিচয় একে-একে দিচ্ছিলাম, সে প্রসঙ্গেই ফিরি।

গতকাল, তখন রাত ১২:৩০ কি তারও একটু বেশী। আমরা বাসায় সাধারনত সবাই ঘুমুতে-ঘুমুতে রাত একটা কি দুটা বাজে। আমি বালিশে হেলান ফেলে আকাম করছিলাম :P (ক্যান্ডিক্র্যাশ সোডা খেলছিলাম), মিথুন ডেল কার্নেগী সমগ্র পড়ছিল। আরিফ জাভা এনড্রয়েড প্রোগ্রামীং নিয়ে ব্যস্ত আর আরিফের ছোটভাই পিয়াস (ঘুরতে এসেছে) আর মোশারফ ভাই মোবাইলে ব্যস্ত, শরিফ মুভি দেখছে আর সুব্রত শরিফের সাথে মুভি দেখার পাশাপাশি ফেসবুক আর পত্রিকা নিয়ে ব্যস্ত। অবশ্য মিনহাজ আর করিম বাসায় ছিল না। মিনহাজ অফিসের কাজে শেরপুর আর করিম ব্যক্তিগত কাজে বাড়িতে।

আমার রুমটা ডোকার মুখেই। হঠাৎ জানালার কাঁচে একটা মাথা। বন্ধু সুমনকে বললাম মিথুন (এ নামেও তাকে ডাকি) দেখ জানালার পাশে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখা যায়। আমাদের বাউন্ডারিতে চারটা বিল্ডিং সেফারেট বাউন্ডারী করা। এর অংশিদাররা সম্পর্কে সবাই ভাই-বোন। আর ইউনুছ মিয়া বাসার দারোয়ান। ইউনুছ মিয়াকে দেখলে একটু অবাকই লাগে, যতক্ষন তাকে দেখী ততক্ষনই ওর চোখ তার এনড্রয়েড ফোনের মধ্যে। একজন মানুষ কি করে একটা বিষয় নিয়ে এতটা সময় মজে থাকতে পারে সে আমার চিন্তার বাহিরে। তার একটা কুকুর আছে, অপরিচিত কাউকে ও বেশ বিরক্ত করে। পেছন-পেছন ছোটে আর গেঁউ-গেঁউ করে। মিথুনকে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখাতেই মিথুন বই বন্ধ করে জানালা দিয়ে সবেমাত্র উঁকি দিয়ে ইউনুছ মিয়াকে কিছু বলতে যাবে, তখনই ও দেখল পুলিশ বাহিনী আসছে। মিথুন জানালার পাশ থেকে আমার দিকে সরে এসেই বলল পুলিশ আসছে। আমি ওর কথাটা মজা হিসেবে নিয়ে আবার খেলায় মন দেব, ঠিক তখনই দরজায় নক পড়ল। আরিফ উঠে দরজা খুলে দিল। সাথে-সাথে ৮ জনের পুলিশ আর বিজিবি সদস্য আমাদের ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ল। ঢুকেই তারা ভাগ হয়ে আমাদের তিনরুমে তল্লাশি চালাতে শুরু করল। আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাগ কাপড়-চোপড় চেক করার পর, টেবিলে বইয়ের তাক পর্যবেক্ষন করতে শুরু করলেন। টেবিলের উপর অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি “আ'মালিয়াতে কোরআন” আর “মৃত্যুর আগে ও পরে” নামক দুটি বই ছিল। আর বিছানায় পড়ে ছিল মিথুনের পড়তে থাকা “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তল্লাশি করতে থাকা পুলিশ “আ'মালিয়াতে কোরআন” হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আমাকে প্রশ্ন করল- বিছানায় বইটি কিসের? আমি জানালাম “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তারপর বন্ধু করিমের টেবিলের ঢাকনা খুলে ঔষধের বোতল খুলে জিজ্ঞাসা করল- এটা কি? বললাম ঔষধ।

আকস্মাৎ অনাকাক্ষিত ঘটনায় কিছুটা বিব্রতবোধ করলাম, কিছুটা শঙ্কাও! মূলত আমরা আমাদের মোটামুটি ভালো করেই চিনি। প্রায় দু‘বছরের মতো একত্রে থাকছি, পাশাপাশি আমদের ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্তমান। আর সবাই বেশ রকমের ধৈর্য্য-শৈর্য্যশালী (কারণ আমাকে যারা সহ্য করে স্নেহ-সন্মান দেখায়, তারা সে না হয়ে পারে না।)। তাছাড়া আমি ব্যতীত (নিজের কথা নিজে বলা যায়?) কখনও কারও আচারনের কোনপ্রকার উগ্রতা কিংবা কোনপ্রকার অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে নি। তাই নিজেদের নিয়ে আমার শঙ্কা ছিলনা, কিন্তু বর্তমান পুলিশের ঘটনাগুলো কম-বেশী জানা থাকায় তাদেরকে একটু সন্দেহের চোখেই দেখছিলাম আর খেয়াল রাখছিলাম, তারা না অস্বাভাবিক কিছু করে ফাঁসিয়ে দেয়।

যা হোক নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাস বলবৎ থাকায় আর পুলিশের আমার রুম তল্লাশি করা শেষ হলে, আমি কিছুটা স্বাভাবিক মনে আবার খেলতে শুরু করলাম। আরিফ রুমের সবচেয়ে ছোট মানুষ আর মোশারফ ভাই ছুন্নতি আলেম মানুষ, দু‘জন একটু বেশী ঘাবড়িয়ে পড়ায় পুলিশের জেরার মুখে পড়ল। আমি যখন খেলায় মনোযোগ দিলাম, তখন দু‘জন পুলিশ এসে আমার পাশে বসে আমার তামশা দেখছে, একজন চেয়ারে বসে-বসে ঝিমুচ্ছে। কিছুক্ষন আমার তামশা দেখার পর- একজন পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করল- কি? ইন্টারনেট চালান? তাহলে কম্পিউটার চেক করতে হবে। একথা বলে আমার কাছ থেকে ল্যাপটপ চাইলে আমি দিলাম, কিন্তু বেরসিক পুলিশ আমার খেলাটাকে মিনিমাইজ না করে কেটে দিয়ে ব্রাউজার ওপেন করে ব্রাউজারের রুপদর্শনপূর্বক কেটে দিয়ে আমাকে ল্যাপটপ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন একটা জিমেইল খুলতে। আমি বুঝলাম তিনি কম্পিউটার হাতে ধরলেও এখনও ওটায় অতটা অভ্যস্ত হতে পারেন নি। তাই আমি ওকে স্যার বলে খুললাম, তিনি তার দেয়া একটা আইডিতে লগিন করে একটা মেইল পাঠাতে বললেন। তা করে দিলাম। ব্যস্ স্যার খুশি হয়ে আমাকে বিভিন্ন উপদেশ প্রদান করতে লাগলেন, আর সাবধান থাকতে বললেন। বললেন- কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত কিছু দেখলে বা অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়লে যেন পুলিশকে জানাই। আমি বললাম- ঠিক আছে স্যার।

রাত একটার মধ্যে পুলিশের সব চেক করা আর কথাবার্তা বলা শেষ হলে তারা বেরিয়ে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে, কিছুক্ষন হাসি-ঠাট্টা চলে। তারপর প্রত্যেকের নিজের রুমে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি চলে। শুতে যাবার আগে মিথুন জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখে- আমাদের মালিকের বোন আমাদের মুখোমুখি বিল্ডিংয়ের দোতালা থেকে আমাদের রুম আর আমাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষন করছে। মিথুন বলল- অবিবেচক, আন্টি দোতালা থেকে তামশা দেখছে। মনে হয় আগামী মাসে বাসা ছাড়ার নোটিশ পাব। আমি বললাম- এত সহজ? কি অন্যায়ে ছাড়ব? এরপর আরও কিছুক্ষন দু‘বন্ধু কথা-বার্তা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে অফিসের প্রস্তুতি নিয়ে বেরুতেই দেখলাম, আন্টির স্বামী টাংকির পানি চেক করছে। আমাকে দেখে কিছুটা সন্দেহের দিকে তাকাল মনে হল। ভাবছি- তবে কি মিথুনের ভাবনা সত্য? বাসা ছাড়ার নোটিশ মিলতে পারে? যদি তাই হয়, তবে বাসা ছাড়ার কষ্টে আমি কিন্তু মিথুনকে আচ্ছা ধোলাই দেব। বলব- কুফা তুই ঐ কথা মনে করাতেই তো বাসা ছাড়ার নোটিশ এল..

সময়ের পরিবর্তন

সময় বদলাচ্ছে, জীবন বদলাচ্ছে
বদলাচ্ছে মুখের ছাপ
ভাব বদলাচ্ছে, অনুভব বদলাচ্ছে
জড়াচ্ছে দুঃখ তাপ...

[ছোটবেলায় খুব রোগাটে আর পিচ্ছি থাকায়, আমাকে নিয়ে মায়ের কষ্টের অন্ত ছিল না। শারীরভাবে উর্বর করতে মায়ের সে কত কি প্রচেষ্টা ছুটোছুটি। আবছা মনে আছে- ষষ্ঠ কি সপ্তমশ্রেনীতে থাকাকালে আমার শারীরীক উন্নতির জন্য মা আমাকে ৭-১০ টি ভিটামিন ইনজেকশন করিয়েছিলেন। সে ইনজেকশনের যন্ত্রণা মনে পড়লে আজও আতকে উঠি। কমচে কম ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা এই ইনজেকশনের ব্যাথা থাকত। কিন্তু সব রকমের প্রচেষ্টা চালিয়েও মা আমার তার ছেলেকে মোটা দেখতে ব্যর্থ হল।

আজকের দিনটাতে দাঁড়িয়ে কিছুটা আপসোস, আক্ষেপ আর বুকভরা কান্না আড়াল করা ছাড়া কিছুই করার নেই। মাকে হারিয়েছি ১০ বছর গত হবার পথে। অথচ যে চেষ্টা করে মা ব্যর্থ হয়েছে, যে শরীরের ক্রমাগতবর্ধনে এখন নিজেই ভীত হচ্ছি। ইতোমধ্যে ৭০ কেজি ওজনের সাথে লড়তে শুরু করেছি।]

বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?

প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অফিসের কিছু অর্থ খুইয়েছি বেশী দিন হয় নি। গতপরশু আবার আরোক প্রতারক চক্রের কল। কল দিয়ে বলল- হ্যালো গ্রামীণ ফোন থেকে বলছিলাম। বুঝতে পেরে তাকে- জিজ্ঞাসা করলাম, কদ্দিন যাবৎ চাকুরী করছেন? বলতেই- গালি করতে করতে কলটা কেটে দিল। অফিসে থাকায় গালিগুলো শুনে হজম করা ছাড়া কিছুই করার কিংবা বলার ছিল না।

শালার ভাগ্য আর সময়টাই দেখুন!!

প্রতারণাও করবে আবার গালিটাও দিয়ে আরামে কেটে যাবে। আর আমি শালা বুঝে-শুনেও মুখে কুলুপ এঁটে, বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?

প্রসঙ্গ ফেসবুক

ট্যাগ করলে খুবই বিরক্তি লাগে আর রাজনৈতিক ট্যাগ হলে আরও বেশী। সবাইকে অনুরোধ করছি আমাকে কোনপ্রকারের রাজনৈতিক ট্যাগ করবেন না। আমি কোন রাজনৈতিকের টাকায় কখনও এককাপ চা কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের অনুদানের পয়সায় একটা বিস্কিটও খাই নি। ছোটবেলায় বাপ-কাকার উপার্জনের টাকা খেয়ে বড় হয়েছি আর এখন নিজের শ্রমে খেয়ে বাঁচি। যেহেতু কারও খাই না এবং খাবার ইচ্ছেও নেই, তাই কারও প্রচার-প্রচারণামূলক পোষ্ট আমার ব্যাক্তিগত টাইমলাইনে এসে ভীড় করবে এ আমার অসহ্য।

আমার ব্যাক্তিগত মতাদর্শ আছে, আছে আমার ব্যাক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ। আমার কাউকে পছন্দ হলে কিংবা তাঁর মতাদর্শ আমার ভালো লাগলে- সে আমি নিজের ওয়ালে প্রকাশ করি কাউকে বিরক্ত করা ছাড়াই। তবে অযথা আমাকে ট্যাগ করে বিরক্ত করা কেন?

সত্য আড়াল

চোখের সৌন্দর্য্য আর মনের অনুভূতি, জীবনের অনেক সত্য আড়াল করে।

সৌন্দর্য্য আর প্রেম

সৌন্দর্য্য অনুভব আর প্রেম অনুভূতি
সৌন্দর্য্য ছুঁয়ে দিলে রুপ হারায় আর প্রেম দু‌হাতে জড়িয়ে নিলেই নিঃস্তেজ হয়ে পড়ে

উছন্ন

নয়নাভিরাম প্রেয়সীর প্রেম বন্দনায়
তুলতুলে গাল আলতো ছুঁলে-
সরে দাঁড়ায় সে
বলে- সখা হে
ক্ষয়িষ্ণু রুপে মজ না বলি এত
পাবার মত হইও ব্যাকূল তত
রাখিও মনে-
লাজুক লতা লাজে যায় ঝরে
রুপের পসর ছুঁলে যায় খয়ে
মাঝখানে সব ভূলের অবয়ব
অষ্টাদশির উছন্নের কলরব।

আবেদন

হিমবুড়ী আসছে চুপি-চুপি
তুমি তার সাথে আসছ কি?
তুমি না এলে শীতকেও কর মানা
ঘাসের শিশির চরণ যেন ছৌঁয় না
ভালোবাসাবিহীন জীবন বড্ড একা
শিশির শীহরণে খাচ্ছে কেবল ধোঁকা!!!

ধিক্কার

ইচ্ছে না থাকলেও একবার ভাবুন- মানুষ কতটা হিংস্র জানোয়ার হলে ঠান্ডা মাথায় ২0 জন নিরীহ মানুষকে গুলি করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে-কেটে প্রতিটি মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত করতে পারে? শুধু তাই নয়- কতটা নিকৃষ্ট জানোয়ার হলে, মৃত্যুর মিছিলে বসে হাতের-শরীরের রক্ত মুছে শেফকে দিয়ে নিজেদের পছন্দের খাবার বানিয়ে নির্বিকার মনে বসে পেট পুরে খেতে পারে? এদের বাঁচবার অধিকার আছে?

আর উপরের ঘটনায় কাদের প্রতি সিমপ্যাথি দেখাবার কথা? নিশ্চয়ই সে সব অসহায়দের জন্য, যারা পরিবার-পরিজন ছেড়ে বিদেশ-বিভূইয়ে নৃশংস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

অথচ টাইম-লাইনে ভেসে বেড়ায় সেসব জঙ্গি নেকড়ের বিভৎস ঘৃণ্য ছবি আর তাদের জন্য বিবেক বোধহীন অসংখ্য মানুষের ব্যাকুল রোদন সাথে রুপের স্তব-স্তুতি।

রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৬

যদি অভিমানী আঁখিজলে

যদি অভিমানী আঁখিজলে মুছে কাজল
ধরিয়া রাখিও প্রিয়ে পাতিয়া আঁচল
বিরহী পাখি যবে উড়ে যাবে দূরে
দেখিব কত কাজল রাখিলে আঁচলে।

যদি

যদি বন্ধু হও!!!
সামনে দাঁড়াও
কথা কও
সুরে গাও
দেখি প্রানের পরে মনের কথা গানের সুরে।

যদি প্রিয় হও!!!
ধরা দাও
পাশে দাঁড়াও
হাতটি বাড়াও
প্রেমপ্রেয়সী পাশে থাকুক হাতটি রাখুক হাতের পরে।।

তোকে দেখে

তোকে দেখে-
লজ্জার মাথা খেয়ে, চোখ রাখি চোখে।

বেহেস্তকামীদের সমস্যা কি?

বেহেস্তকামীদের সমস্যা কি?

আরে ভাই, তোরা বেহেস্তে ৭০ হুর নিয়ে উল্লাস করবি আবার দুনিয়াতেও কাফেরের রক্ত নিয়ে উল্লাস করবি?

আরে- কাফের‌রা তো এমনিতেই পরকালে দোজগের আগুণে জ্বলতে থাকবে বলে নিশ্চিত হয়েছে, তাদের দুনিয়ার বাতাসটুকু অন্তত শান্তিতে নিতে দে।

নাকি দুনিয়াতে তাদের এইটুকু সুখও সহ্য হচ্ছে না? নাকি পরকালের দোজগের আগুণের ব্যাপারে তোদের সন্দেহ আছে?

তবে বল- দুনিয়াতে কাফেরের এই সামান্য সুখ নিতে পারছিস না, জান্নাতে অন্যের সেই মানের ৭০ হুর দেখে সইতে পারবি তো?

(বি. দ্র- এই পোষ্ট বিশেষ কারও পক্ষ নিয়ে নয়। এই পোষ্ট আক্রান্ত সাধারন অসহায়েদর পক্ষে, এই পোষ্ট ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির ধরুন আমার মত আর যারা কাফের খ্যাতি পায়- তাদের জন্যে।)

যে যেতে চায়

পুলিশের আইজিপি (এ কে এম শহীদুল হক) বলেছেন, আটক জঙ্গিরা বলে, ‘আমাকে মেরে ফেলেন। আমি জান্নাতে যাব।’

প্রত্যেকের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার আছে, আছে বাসনা পুরণের অধিকারও। অথচ প্রশাসন অকারণ হস্তক্ষেপ চালাচ্ছে।

যে যেতে চায় তাকে যেতে দিতে হয়, তাকে যেতে দেওয়া উচিত। না হলে সে যার যাওয়ার ইচ্ছে নেই, তাকে নিয়ে যাবার সুযোগ খুঁজে।

নিঃখাদ ভালোবাসা্ ও দেশপ্রেম

নিঃখাদ ভালোবাসা কাকে বলে? সত্যিকারের দেশপ্রেমিক কারা?

ভালোবাসা তখনই নিখাদ হয়, যখন তা বিনিময় বিহীন হয়।
মা-বাবা জানে তার কোলের কন্যা সন্তানটি একদিন তাদের ছেড়ে অন্যে ঘরের কেউ হবে, জানে- তাঁদের ছেলেটি একদিন তাঁদের পথে ফেলে দিতেও হয়ত দ্বীধা করবে না। তবুও তাঁরা কন্যাটিকে, তাঁদের ছেলেটিকে নিজের শরীরের হাজার ছোট-জখমের বিনিময়ে কোমল রাখতে উদগ্রীব থাকে।

নিখাদ ভালোবাসা বাসতে পারে একজন কৃষক। সারাদিন মাঠে পড়ে আগুণে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল বুনে। অথচ তিনি জানেন এই ফসলের দশভাগের একভাগও তাঁর উদর নিবৃতের জন্য নয়। তবুও সন্তানের মমতায় আগলে তিনি ফসল বুনেন, ফসল উঠার আগ পর্যন্ত হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা ঢেলে ফসলের যত্ন করেন।

নিখাদ ভালোবাসা দেখাতে পারেন একজন শ্রমিক- তিনি পরম মমতায় অন্যের জন্য বড়-বড় দালান-কৌঠা, পথ-ঘাট গড়ে তোলেন প্রতিটি রক্তঝরা ঘামের দামে। অথচ এই দালান-কৌঠা, রাস্তা-ঘাট কোনটিই তাঁর থাকবার বা চলবার নয়।

আমরা একটু দানবীর হলেই তাকে শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিকের খেতাম দেই! রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অলংকৃত করে শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিকের আসন প্রদান করি! অথচ জানতে চাই না- দানবীরের অর্জিত সম্পদের খাত, বুঝতে চাই না নেতা-মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর সাচ্চা দেশপ্রেমিক সাজার পেছনে কাক্ষিত থাকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার বাসনা।

আগে অনেকবার লেখেছি- মনের ভেতরে পুড়ে-পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া প্রেমিকের প্রেম খুব কম প্রেমিকাই বুঝতে চেষ্টা করে। অথচ ভালোবাসি-ভালোবাসি বলে মুখে ফেনা তোলা লাফাঙ্গারই প্রতারণা ফলাবার আগ পর্যন্ত প্রেমিকার কাছে শ্রেষ্ঠ প্রেমিক বলে বিবেচ্য হয়!

ব্যাচেলরদের বাড়ী ভাড়া

বাড়িওয়ালাদের যদি ব্যাচেলরদের বাড়ী ভাড়া দেবার ইচ্ছে না হয়, তবে তারা কন্যার পিতা হয়ে ব্যাচেলরদের আত্মীয় কইরে নিবার পারে। এতে কারও থাকার ঘরও হয়, পাশে থাকার বউও হয়..

মানুষ আমি স্রেফ এক মানুষ

অতটা ভালো চাইনে হতে-
ভূল করে লোকে দেবতা বলে
অতটা নিচেও চাইনে নামতে
ভয়ে মরে লোক অতল জলে

মানুষ আমি স্রেফ এক মানুষ
সুখ-দুখ-আনন্দ-বেদনায়
মুখোশ পড়ি মুখোশ খুলি
অবোধ-বোধের মন্ত্রণায়...

বাঙ্গালি থেকে গালি

অনেকে বলে থাকেন- গালিটাও নাকি একপ্রকার আর্ট, যে আর্ট মানুষ মনের অন্তঃগোছরে এঁকে রেখেছে সে আদিমকাল হতে। আমিও তাই মনে করি, জীবনের প্রতিটি আলোক বিচ্ছুরণের বিম্ব কিংবা প্রতিবিম্ব যখন চোখের কোণে ধরা দেয়, তখন সে মনের মাঝেও উজ্জ্বল পটরেখা এঁকে যায়।

আমি গাঁয়ের ছেলে। গাঁয়ে থাকাকালে আমাদের বেশীরভাগ সময়ই ঘুম আসত গালি-গালাজের শব্দে আবার ঘুমও ভাঙ্গত তা শুনেই। জীবনের সাথে এর এতটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক এমন ছিল যে, মাঝে-মাঝে মনে হত গালি না শুনলে প্রকৃতিও বোধহয় শূণ্যতা বোধ করত।

আমাদের জাতিসত্তা নিয়ে যদি বিস্তারিত ঘাঁটাঘাটি করা হয় তবে, আমাদের শিকড় থেকেই যে এর অন্তঃপ্রবাহধারা বর্তমান -তা সহজেই অনুমেয় হবে বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু প্রযুক্তির যুগে বসেও সে সব নিয়ে বিস্তর গবেষনা করবার মতো ধৈর্য্য না থাকায় অনুমানভিত্তিক জ্ঞাণকে সত্য বলে স্থাপন করবার যে সাহস দেখাচ্ছি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

কিন্তু হঠাৎ আজকে গালি নিয়ে লেখালেখির কৌতুহল জন্মাল কেন? আসলে মনের মর্জি-আর্জি দুইই বোঝা দায়! কখনও সে কাকে দাবড়াতে চায়, কখন সে নিজের দাবড়ে পালায়, এ বোঝা বেশ কষ্টসাধ্যই বটে। আজকে একটা বিষয় খেয়ালে নিতেই হঠাৎ মনে হল, গালি নিয়ে একটা ধারাবাহিক শুরু করলে কেমন হয়? এ নিয়ে কিছু অল্প-বিস্তর ভেবে দেখে পেলাম, আসলে ব্যাপারটা একেবারে মন্দ হবে না! যে হারে নিজের বিপরীত মানষিকতার মানুষের দিকে মানুষ ক্রোধের দৃষ্টি রেখে চৌদ্দগোষ্ঠীর শ্রাদ্ধ করছে, গোষ্ঠীর নামে নামে ফুল-তুলসির দিয়ে পিন্ডি চটকাচ্ছে, তাতে গালির ধরনগুলো শেখানোর মতো নিখাদ যুক্তির কার্য্যকারিতা আছে বই কি...

বর্তমানে উদিয়মান ক্ষমতাশালী দেশগুলো মধ্যে চীন, ভারত অন্যতম। তো আমরা বাঙ্গালিরা খুবই ভদ্র-শান্ত-সভ্য (নিজেদের মনে) হওয়ায়, আমরা ভাবি- যদি আমরা কোন দিন উদিয়মান শক্তি হইও, আমাদের মনের মধ্যে ভারতের মতো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ইচ্ছে বা অভিলাষ হবে না, কেননা আমরা তাদের তুলনায় অনেক ছোট দেশ এবং আমাদের লোকবল কম এবং আমরা আগায়-গোড়ায় সুগন্ধিমাখা ভালো মানুষী এবং ক্ষমতা হলেও দেশীয় ভূখন্ড কিংবা জনগোষ্ঠীর হিসেব-কিতেবে ইসরাইলের সাথে আমাদের দেশিও ইনছানদের তুলনা চলে না। কারণ তারা ইসরাইল, তারা ইহুদী-নাসারা, তারা ক্ষমতার জন্য হিংস্র দানব হয়ে রক্ত খায়।

তো ঠিক আছে, মুল কথায় আসি- যেহেতু আমাদের দেশের উপর ভারতীয়দের প্রভাব বেশী এবং ওরা আমাদের ক্ষমতার জোরে করায়ত্ত করে রাখতে চায়, তাই আজ আমরা ভারতীয় এবং এদেশে অবস্থানরত ভারতীয় দালালদের গালি-গালাজের কৌশল শিখব।

যেকোন গালি-গালাজ শুরুর পূর্বে যেমন কিছু কারণ থাকা চাই, তেমনি থাকা চাই কিছু উপকরণও। তাই ভারতের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করার জন্য যে কারণগুলো আছে সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে নেই।

১) ভারত আমাদের চারিদিকে স্থল ও জল দখল করে খাচ্ছে। (শ্রুতিপদঃ অধিকার আদায়ের ক্ষমতাহীন প্রত্যেকে অথর্ব বলে, এরা সবকিছু শুয়ে-বসে পেতে চেয়ে কাঁদে।)

২) ভারত অন্যায় ভাবে সীমানায় বাংলাদেশীদের খুন করছে। (তর্কিত প্রশ্নঃ খুন হবার সাধ বুকে জমিয়ে কারা অবৈধভাবে সীমানা পারাপার হতে চায়? আর কেন পারাপার হতে চায়?)

৩) আমাদের দেশের অসহায় গরু ব্যবসায়ীদের মেরে ফেলছে এবং গরু আনতে দিচ্ছে না। (প্রশ্নঃ গরু ব্যবসায়ীরা অকারণ সেখানে মরতে যাচ্ছে কেন? গরু কি এদেশে উৎপাদন সম্ভব নয়?)

৪) ভারত আমাদের সাথে টিপাই বাঁধ নিয়ে খেলছে, তিস্তা চূক্তি নিয়ে খেলছে। (উত্তরেঃ ভারত যখন টিপাই বাঁধ দিয়েছে, তিস্তা নিয়ে খেলছে, তখন আমরা তাদের সাথে শরীর ঘষাঘষি না করে বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছি না কেন? আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে অসমর্থ্য? তবে অসমর্থ্যে উর্দ্ধস্বর কি মানায়? আমরা না হয় যেদিন সামার্থ্য হবে সেদিন দেখাবার অপেক্ষায় থাকি)

৫) ভারত আমাদের দেশের সমাজ-রাজনীতি আর অর্থনীতি নিয়ে খেলছে। ( আশ্চার্য্যবোধক চিহ্নযুক্ত প্রশ্নঃ খেলার মাঠ আমার দেশের, লোক আমার দেশের, খেলবার দলও ঠিক হল দেশের মধ্যেকার লোকজন নিয়ে। তবে তারা খেলছে কিভাবে? যদি নিজের স্বাধীন ভূখন্ডে অন্যলোক এসে খেলে থাকে, তবে গলা ফাটিয়ে না বলে নিজের অক্ষমতার জন্য সকলের তো উচিত ছিল আত্মহত্যা করা।)

যা হোক- গালি দেবার মতো কারণ তো মিলল- এবার বন্ধুদের সাথে শুরু করুন গালাগালি।

ভারত রেন্ডিয়ার দেশ, শালারা নাপাক, ন...পো, মান্দ..., চু...পো, মা...রি, খা....পো, মা...পো, ন...জাত, বে..., দা... এভাবে চলতে থাকুক।

যেহেতু মেজাজ চাঙ্গা, তো বন্ধুদের গালির সাথে আরও যোগ করুন-

“রেন্ডিয়ার জাকির নায়েক খা.....পো, মওদুদি ন....পো, ভারতের মুসলমানদেরও..... করি, পিসটিভি লোকজনরে......, ডান্ডি রাষ্ট্রে দেওবন্দ রে.....” -আচ্ছা কোটেড লাইন শুরু করার পর বন্ধুরা কেউ-কেউ থেমে গেছে? কারও চোখমুখ লাল হয়ে যাচ্ছে? কারও রক্তচক্ষু আপনার দিকে তেড়ে আসছে? তবে রাগ সামলে থেমে গিয়ে সরে পড়ুন। কারণ গালি আপনি এখনও শিখে উঠতে পারেন নি, উল্টো-পাল্টা গালির জন্য আপনার কাঁধের উপরের ধড়টা হয়ত বন্ধুর রক্তচোখা রাগের উপর হারিয়ে বসতে পারেন।

পরিশেষঃ ভাইলোগ আমার উপ্রে রাগ লইয়েন না। সত্যি কতা কইতে কি- আপনেরা আসলে যে যুক্তিতে আড়ালে আবডালে গালি দিবার পয়তারা করেন, সে যুক্তিরই খাতিরে কয়েকটা কইলে কইছি ভায়ে আপনেরার সইবে না। আর কাঁধে একটু বিদ্যের ভার আছে বিধায় লজ্জায় মুখও খুলবার চাই না। কিন্তু এতে ভাইবে বইসেন না, কিচ্ছু কইবার পারি না, সত্যি কইছি ভাইলোগ- এখানে যে বিদ্যে আপনারা ফলিয়ে যাচ্ছেন তার কয়খান কইলেম পিচ্ছিবেলায়ই মুখস্ত হইয়ে গেছে।

এখনও কত নতুন আছি

জীবনের দেয়াল থেকে চুন খসে পড়ে বার-বার
শিরিসের কাগজে জিহ্ন প্রলেপ তুলে নতুন প্রলেপ দেই
চকচকে দেয়াল দেখিয়ে বলি-
দেখ এখনও কত নতুন আছি!!!

বিটিভি দেখুন আর পজিটিভ ভাবনা ভাবতে শিখুন

ভিসেন্ট সাহেব, কার্নেগী সাহেব, জনাব শিব খেরাসহ প্রত্যেকটি লেখকের যুক্তি ছিল, সব-সময় পজিটিভ চিন্তার ব্যাপারে। পারলে জীবন থেকে “পাপ” “মিথ্যা” এবং “না” এই শব্দগুলো মুছে দিতে। “আমি পারছিনা” এই কথাটি এভাবে না বলে বলতে হবে- “আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু মনে হয় কোথাও ভূল হচ্ছে!”

এরপর থেকে আমি টুকিটাকি পজিটিভ চিন্তা-ধারার চেষ্টা করে চলছি। কিন্তু মিডিয়ার অগ্রাসনে আর বিজ্ঞানের অগ্রধারায়, চারদিকে ইচ্ছে না থাকলেও “পাপ” “মিথ্যা” কিংবা “না” এই শব্দগুলো থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না।

এজন্য... ঠিক এজন্যই... আমি সিদ্ধান্ত নেবার চেষ্টা করছি, সব মিডিয়া জগত বন্ধ করে দিয়ে শুধু বিটিভি‘র ভক্ত হয়ে যাব। সত্যি বলতে কি, জ্ঞাণ হবার পর থেকে এই একটা মিডিয়ার চ্যানেল পেয়েছি, যেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পজিটিভ খবর, উন্নয়ন আর উন্নয়ন সাথে দেশ শাসকদের শীনা উঁচু করে বলবার মতো চরিত্র!!!

তাই সকলে আসুন, বিটিভি দেখুন আর পজিটিভ ভাবনা ভাবতে শিখুন।

যে নিজেকে নিয়েই কেবল ভাবতে শিখেছে

যে নিজেকে নিয়েই কেবল ভাবতে শিখেছে ( অথাৎ যার পৃথিবী কেবল নিজেকে ঘিরেই বর্তমান) তাকে নিয়ে কিংবা তার ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবতে গেলে অনেক বেশী খেসারত দিতে হয়। সাথে নিজের অর্জিত সম্মানও বিসর্জন দিতে হয়।

বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

পুলিশ নিক পাকায়ে

আমাদের মতো গবীবের মেসে এসেও পুলিশ ধরনা দিয়ে যাচ্ছে কয়েকবার। বলি-

ওগো প্রিয়তমা-
তুমি থাক আড়ালে লুকিয়ে
আমায় পুলিশ নিক পাকায়ে...

ভালোবেসে দেখেছ কি...

ছুঁতে চাইলে অহংকারী হিংসুটে গোলাপ
পাপড়ি ছড়িয়ে সুবাস ঢেলে উঠলে বলে
আমার মত এত কোমলরূপ পাবে নাকো...
মিথ্যে শুনতে আমার সে রাগ হয় বড়
বললেম আমি-
শুধু কি আরশিতে আপনায় রাখ?
আড়াল চোখে আমার প্রিয়ার
রাঙ্গা মুখখানী একটু দেখ!

সে দেখলে!
লজ্জায় লুকিয়ে নিলে সুবাস
গুটিয়ে নিলে পাপড়ি..
বললে আমায়-
কোথায় পেলে ষোড়শী অপরূপ কেশী?
বললেম আমি-
ভালোবেসে দেখেছ কি রূপের আরশিতে চাঁদনির হাসি?

ভয় ও বোধ

তাদের কাছে অস্ত্র আছে, প্রশিক্ষন আছে, সর্বসাধারনের প্রতি ঘৃণা (কারন- তারা সাধারন মানুষকে মারছে) আছে, ধর্ম রক্ষার নৈতিক দায়িত্বের (যদিও কর্র্মকান্ড প্রশ্নবিদ্ধ) তাগিদ (যদিও মুখোশধারী হিংস্র জানোয়ার) আছে, বেহেস্তের বাসনা আছে,৭২ হুরের লোভ আছে আর আত্মহত্যার প্রবণতা আছে- তবে এমন কাউকে যেকোন পরিস্থিতিতে মোকাবেলার সুযোগ কোথায়?

প্রার্থনার ধরন

গতকাল একজন বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতার একটা কৌতুক পড়েছিলাম, যা অনেকটা এরকম-

“ছোটবেলায় আমার একটা সাইকেল পাবার তীব্র আকাঙ্খা ছিল, তাই আমি ঈশ্বরের নিকট প্রতিদিন একটা সাইকেল পাবার আশায় প্রার্থনা করতাম। দীর্ঘদিন প্রার্থনায় ঈশ্বরের সাড়া না পেয়ে, আমি একটা সাইকেল চুরি করে এনে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা শুরু করলাম।”

কৌতুকটি পড়ার পর আমি বেশ ভাবলাম এবং দেখলাম আমাদের জীবনবোধের সাথে এই কৌতুকটির প্রভাব বিস্তর। আমাদের দেশের আপামর মানুষের দিকে তাকালে আপনার সহজে চোখে পড়বে- এদেশের একশ্রেণী যারা স্রষ্টার অনুগ্রহ পাবার আশায় তাঁর দরবারে ক্লান্তিহীন ফরিয়াদ জানিয়ে- অভুক্ত পড়ে পড়ে মরছে। আর অপরশ্রেণী যারা বৈধ-অবৈধ দু‘হাতে নিজের চাহিদার অতিরিক্ত টাকা কামিয়ে ভালো মানুষির পোশাক পড়ে মানুষকে দান-সদকা করে নাম ফুটাচ্ছে আর গলা ফাটিয়ে স্রষ্টার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছে।

[মনে রাখুনঃ

১) যার নেই তার ফরিয়াদ পাবার। আর যার ক্ষমার ফরিয়াদ সে মুখোশধারী, ভন্ডরুপ আগলে সে সাধু হতে চায়।

২) পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো সাক্ষ্য দেয়- দুনিয়া ভোগ আর মোহবাসনায় আবদ্ধ, তাই সাধারন মানুষ বিষয়াসক্ত নয়- এ কথাটি সম্পূর্ণ অবান্তর। সত্য এই- মানুষের কোন না কোন বিষয়-বৈভবে আসক্তি থাকেই। অতএব- সর্বসহায়ের কাছে মানুষের প্রার্থনার মূল প্রার্থনা‘ই বাসনার, ক্ষমার নয়।]

সভ্য!!!

সভ্যরা অস্ত্র বানিয়ে হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে মশা-মাছি, কীট-পতঙ্গ ধ্বংস আর পশু-পাখি শিকার করে জীবন-ধারনের মহৎ উদ্দেশ্যে। আর তারা অসভ্য-বর্বর‌‌ মানুষদেরও শিকার করে চলছে সভ্যদের সাথে গলায়-গলায়, বাহুয়ে-বাহুয়ে জড়িয়ে চলতে!!!

প্রবাসী বাঙ্গালির গল্প



মেদু মিয়া প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরলে বাড়িতে আনন্দের জোয়ার উঠে। কৌতুহলী ময়-মুরুব্বি‘রা ঘিরে ধরে তার প্রবাস জীবনের গল্প শুনতে- আর মেদু মিয়াও আগ্রহ নিয়ে গল্প শুরু করে-

আরে ভাই বলবেন না, সে দেশ আর আমাদের দেশ? সবকিছুতে আকাশ-পাতাল ব্যবধান।আমাদের এখানে তো কেবল খুনোখুনি-ঝড়গা-ফ্যাসাদ আর তারা যারা-যার মতো করে সে চলছে, কেউ কারও দিকে তাকাবার পর্যন্ত সময় নেই। সবচেয়ে আশ্চর্য্য কি- আমাদের দেশের মানুষের শরীরে মলে কি বাজে দূর্গন্ধ, কিন্তু কি কমু ভাই বিদেশে তারা যেমন ভালো-ভালো সুগন্ধি গায়ে মাখে তেমনি সুগন্ধিযুক্ত খাবার খায় আর তাদের মলগুলোও বেশ সুগন্ধযুক্ত। আর সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার কি- তাদের মল পড়ার সাথে-সাথেই মাটি হয়ে যায়। আর মাটিও বেলে মাটির মত চকচকে দেখায়। আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা হলে তো এই মাটি দিয়েই ভাত-তরকারী খেলত। আমারও মাঝে-মাঝে ছোটবেলাকার ভাত-তরকারী খেলার কথা মনে পড়ত, তখন আমি বালতিতে করে টাংকিতে জমে যাওয়া বেলে মাটি দূরে সরিয়ে টাংকি খালির কাজ করতাম।

[বি. দ্রঃ- এই স্যাটোয়ারটি যারা ইংল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা, রাশিয়া, সৌদিআরব কিংবা দুবাইয়ের মতো দেশগুলো নিয়ে খুশিতে ফেটে পড়ে তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। ভাইলোগ তারা নিজের দেশে কিংবা দেশের মানুষের সাথে যত ভালো ব্যবহারই করুন না কেন, কিংবা যত ভালো মানুষির পরিচয় তুলে নিজেদের সভ্য প্রচারের চেষ্টা করুক না কেন, জানুন বিশ্বব্যাপী সাধারন মানুষের জীবন-যাপন দিনকে-দিন কঠিন হয়ে পড়ছে তাদের বহমান কূট-কলাকৌশলের কারণেই। তাদের ভালো মানুষিরুপটা সত্যিকারের হলে- দুনিয়াব্যাপী খড়গ হাতে কারোই হয়ত রক্ত নেশায় ছুটতে হত না।]

প্রসঙ্গঃ জীবনবোধ ও বাস্তবতা

মিডেলইষ্টে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া প্রবাসীর বেশীরভাগ খুবই কষ্টসাধ্য দিনযাপন করেন। যেখানে দেশে ২৭-২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করা কঠিন, সেখানে অনেকে ৪০ ডিগ্রীর উপরের তাপমাত্রা সহ্য করে ভেড়া-উট চারণ, খেঁজুর গাছ কাটা, খেঁজুর সংগ্রহ করা, মেথর-মুচির কাজ, রাজমিস্ত্রির কাজ, দোকানের সাধারন শ্রমিকের কাজ, তেলের খনিতে কিংবা দিনমজুর হিসেবে কাজ করে পরিবার পরিজনের জন্য অর্থের সংস্থান করে থাকেন। অনেকে সেখানে দূর্গম পাহাড়ের গায়ে বির্স্তৃন জনাকীর্ণ স্থানে খাবার-দাবারের নানাবিধ সমস্যা বয়েও টিকে থাকবার চেষ্টা করেন। নিজ দেশ ছেড়ে, পরিবার-পরিজন সব ছেড়ে সেখানে একা-একা যুদ্ধ করা কিংবা দুই-একটা পরিচিতমুখ সামনে রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে জীবনের প্রাণবন্ত মুহূর্তগুলো শেষ করে শেষ জীবনে এসে পরিবার-সন্তান সন্ততি নিয়ে একটু সুখের মুহূর্ত উপহার পাওয়া- এটাই বেশীরভাগের তাগিদ থাকে। কাজের মাধ্যমে মিডেলইষ্ট প্রবাসীরা সাথে সংযুক্ত থাকায় আমার জানা আছে- ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যারা কাজ করতে যায়, তারা মাসিক যে বেতনে চাকুরী করে তাতে ৮-১০ বছর চাকুরীর সুবাদে জমানো অর্থের পরিমান এ দেশে অবস্থানরত ১০-১৫ টাকা বেতনের চাকুরীজীবীদের থেকে সামান্যই বেশী। তাই বলতে গেলে বলা চলে- প্রতিনিয়ত বিরুপ পরিবেশে টিকে থাকায় তাদের জীবনবোধ অনুভব করার তাগিদ কিংবা সুযোগ দেশে বসবাসরত অন্যদের থেকে কয়েকগুন বেশী হবার কথা।

কিন্তু বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমরা কি দেখতে পাই?

দেখতে পাই- জীবন সম্পর্কে যাদের বোধশক্তি বেশী জন্মাবার কথা, তাদের বেশীরভাগই এদেশে এসে জমিদার বনে যায়। দেশে ফিরে তারা নিজের হাত-মুখ ধোয়ার জন্যও কারও হাতে থাকা পানির পাত্র খোঁজে। যা সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক। আর সবচেয়ে বেশী দুঃখজনক, ফিরে এসে যখন সেখানে যাদের হাতে অত্যাচারিত হয় তাদের গল্পই গর্ব করে বলে বেড়ায়। অথচ এদেশে ফিরে মানুষকে জীবনমুখি শিক্ষায় উৎসাহিত করার তাদের কত না সুযোগ ছিল। দেশের কাজে হাত লাগিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবার তাদের কত না সুযোগ বর্তমান। অথচ তারা প্রবাসে অন্যের মল তুলতে ঘৃণা বোধ না করলেও নিজ দেশের নাঙ্গল কাঁদে নিতে তাদের আজন্মের দ্বীধা!

[বি. দ্রঃ মিডেলইষ্টে কাজ করে অনেক টাকার মালিক বনে যারা এদেশে ফেরে, মনে রাখবেন তারা বেশীরভাগই ঐদেশে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে ফিরেছে অথবা কারও মাথায় আঘাত করে কাউকে নিঃস্ব করে ফিরেছে। সৎভাবে উপার্জন করে ১০০-তে কেবল ২-৫ জনেরই ভাগ্য প্রসন্ন হবার সুযোগ বর্তমান।]

সময়ের অভ্যর্থনা

যৌথপরিবারে কেটেছে পুরোটা শৈশবকাল। একত্রে পরিবারের ১৫-২০ জন মানুষের সাথে মানষিকতা ভাগাভাগি কিংবা বসবাস করতে গিয়ে দেখেছি প্রত্যেকটি স্বাধীনতা মুখাপেক্ষি জীবনগুলোকে। স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা ভাগাভাগিতে তখন কত কত প্রতিযোগিতা! সময়ের সাথে জীবনের আয়োজন, খাদ্যের প্রয়োজন কিংবা বন্টণে কত বৈসাদৃশ্য-বৈচিত্র্যতা! দেখেছি স্বার্থের প্রয়োজনে অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার সে কি দারুন নিকৃষ্ট মানষিকতা। পরিবারের ক্ষমতাধর ব্যক্তির নিকট ভালো মানুষিরুপে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে অন্যকে অগ্রহণযোগ্য করে তোলার কত সব নির্মম প্ররোচনা। অন্যের দূর্বলতার সুযোগে উচ্চস্বর বিলাপে কারও মাথা নত করে দেবার কত শত প্রতারিত ভাবনা। কত সহজে সময়কে না বলে কারও চোখে ঢল অথবা কারও চোখে চকচকে ছল্। দেখেছি কখনও অমানুষিক অন্যায় নির্যাতন, কখনও আবার চোখের সামনে দিয়ে রক্তের ঢলে ভেজাঘাস কিংবা অসহায় বেলায় কীতপতঙ্গের পীড়ন। আর সময়কে বাসনা করে উপোস কাটিয়ে দেয়া জীবনের কিছু নির্মম দিনলিপি।

সময়ের সাথে-সাথে জীবনের অনেক গল্প বদলে যায়, বদলেছেও। অনেক বছর আগেই যৌথপরিবার ভেঙ্গে একক স্বতন্ত্ররূপ পেয়েছে। স্বতন্ত্র পরিবারগুলো নিজেদের ঘিরে জমানো স্বপ্নে বর্ণিল হয়েছে। কিন্তু কিছু মানাষিকতা কিংবা রক্তধারা এখনও উত্তরাত্তরে বয়ে যাচ্ছে। সমতা বজায় রেখে বাঁচার তাগিদে যতটা সাধ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করছি কিন্তু ব্যর্থতায় মাঝে-মাঝে অসহায় আর অবাক লাগে। তবে সবচেয়ে বেশী অবাক লাগে যখন দেখী ছোট-ছোট ভাইবোন যারা আমাদের মতো এমন শৈশব পায় নি অথচ আমাদের বদ্যৌলতে তারা পূর্বপ্রজন্মের মতো দক্ষ অভিনয়ের কৌশল আয়ত্ব করে ফেলেছে আর ভাব দেখাচ্ছে সে বুঝতে অক্ষম!!

সন্তুষ্টি কি সম্পূর্ণতা আর সম্পূর্ণতাই কি সার্থকতা?

সন্তুষ্টি কি সম্পূর্ণতা আর সম্পূর্ণতাই কি সার্থকতা?

যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয়- আপনি নিজেকে নিয়ে কি সন্তুষ্ট? সন্তুষ্ট কি আপনার পরিবারবর্গ নিয়ে? অথবা প্রতিবেশী-সমাজ-দেশমাতৃকা কিংবা ভূ-গোলার্ধ ভাবনায়?

আসল সত্য- কামনার বেড়াজালে জড়িয়ে থাকা মন হাজারো প্রচেষ্টাতেও সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম নয়। তাই ব্যক্তি সন্তুষ্টি কিংবা স্বার্থকতার আশায় ছুটে চলা পথটা বেশীরভাগ সময়ই বিপথগামীর কিংবা অবৈধ। আর স্বার্থকতার নেশায় ধাবিত লোকজনের বর্তমান চিত্রটাই সবচেয়ে বেশী চোখে পড়বার মতো।

জীবনটাকে উপভোগ করতে গেলে নিজের মনকে নিজের বিবেকলব্ধ সৎ চেতনায় বাঁধতে হয়, নিজের অবস্থান নিয়ে সর্বোচ্চ সুখী হবার চেষ্টা থাকতে হয়, তা না হলে সম্পূর্ণতা কিংবা সার্থকতার নেশায় ঘরে-ঘরে উন্মাদ জঙ্গিতে ভরে উঠবে। অথবা অসভ্য-মাতাল নষ্টদের পদচারণায় পৃথিবী ভরে যাবে। যা থেকে সত্যিকারে নিস্তারের কোন পথ নেই। তাই ভালো মানুষিকতায় সৎ চেতনা জাগ্রতকল্পে এখনই সবার সজাগ হওয়া জরুরী।

মৃত্যু ও মায়া

জন্মে মৃত্যু অধীর হয়ে দিচ্ছে কেবল তাড়া
মাঝখানে তার জড়িয়ে রাখা কিছু স্বপ্ন-মায়া।

দ্বিগবিজয়ী

দ্বিগবিজয়ীর পথ থাকে না! তিনি আঁধারের ইশারায় ছুটেন, বোকা পথ তাই আড়ালে হারাবার বাঁক খুঁজে পায় না।

ভারতীয় দালাল!!!

মাঝে-মাঝে কিছু লোকের সাথে অনিচ্ছায় বিতর্কে যেতে হয়। তাদের ভাষায় ভারত হিন্দুদের দাদার দেশ। হিন্দুরা ভারতের দালাল। তাদের কথায়-বার্তায়, আকার-ইঙ্গিত কিংবা উদ্দেশ্য কি? কথার বাকামিতে তারা এমন ভাব ধরে যেন আমরা কিছু বুঝি না। কিন্তু তাদের যদি প্রশ্ন করি এদেশে আপনার আমার নাড়ি ছেঁড়া রক্ত মাটি শুষেছে, এদেশের আবহাওয়ায় আমরা উঠেছি-বসেছি-খেলেছি। তারসত্বেও যদি আমাদের এদেশের চেয়ে ভারতের প্রতি দূর্বলতা বেশী হয়, তবে এদেশে বসবাস করে আপনাদের কাদের জন্য জ্বলে? আসলে তাদের কথার ভাবে মেনে নিতেই হবে- আসলে আমরা এদেশে নই, আমাদের মন-প্রাণ সব সঁপে দেয়া ভারতের জন্য। যদি আমি বা আমরা নাও হই, তারা জোর শক্তি প্রয়োগ করে হলেও আমাদের তা মানাতে বাধ্য করে ছাড়বে মনে হয়। আসলে দুনিয়াটা সত্যি খুব মজারু! এখানে ক্ষমতাই মূখ্য আর বাকী সব মৌন। ক্ষমতায় রাতকে ঝাড়বাতিতে দিন করে আর দিনকে কপাটের আড়ালে লুকিয়ে রাত করে। কিন্তু সাধ্য কিংবা সীমাবদ্ধতার কিংবা সত্যটা যথাযথ স্বীকৃতির ধার ধারেনা।

এখানে আমাদের কে ভারতের দালাল বলার কারণ হিসেবে তাদের যুক্তিগুলো শুনুন- বেশ রং চঙ্গা যুক্তি, জানা থাকলে যেকোন হিন্দুদের দালাল আখ্যায়িত করা আপনার জন্যও সহজ হবে। যুক্তিগুলোঃ

১) বাংলাদেশের প্রত্যেকটি হিন্দুদের আত্মীয়-স্বজন ভারতে আছে (কি কারণে সেটা বিবেচনার বিষয় নয়, কারণ.....সে না বললেও যারা বোঝার বুঝবেন নিশ্চয়ই)
২) বাংলাদেশের হিন্দু‘রা খুশিতে বসবাস করার জন্য ভারতে ছুটে।
৩) হিন্দু‘দের উপর এদেশে মানুষ অন্যায় অত্যাচার করলে তারা ভারতের কাছে বিচার দেয়।
৪) এরা ভারত সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আওয়ামীলিগকে ভোট দেয়।
৫) ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতি এদের দারুন আকর্ষন, এরা দেশী সংষ্কৃতি বাদ দিয়ে ভারতের সংষ্কৃতির প্রতি দাবমান। (যদিও বাংলাদেশের সত্যিকারের সংষ্কৃতি আসলে কি ছিল বা কি হচ্ছে তারা তা ভুলতে চেষ্টা করে অর্হনীশ।)
৬) হিন্দুরা ভারতের বাংলাদেশের উপর অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করে না। (যদিও বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাস বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, এদেশের মানুষের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ইতিহাস সংখ্যার বিচারে এখনও হিন্দুরাই এগিয়ে। এটা মুখের কথা নয়, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।)
৭) হিন্দুদের ভারতীয় কবি-সাহিত্যিকদের (রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর....) প্রতি দূর্বলতা।
৭) আরও আছে, এ মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।

এসব বলার পর তাদের যদি প্রশ্ন করা হয় এর জন্য যদি হিন্দু‘রা ভারতের দালাল হয়ে যায়, তবে বলুন-

১) আপনারা ভারতের চ্যানেল বর্জন করতে লাফালাফি করেন, অথচ মজার কথা আপনাদের প্রিয় নায়ক নায়িকাদের লিষ্টে এগিয়ে- সালমান খান, শাহরুখ খান, ফারদিন খান, আমির খানসহ ভারতের সব মুসলিম নায়ক‘রা, যদিও তারা আমারও প্রিয় নায়কের তালিকায়। তবু এদেশের মুসলমানদের তালিকাটি কিন্তু বিভাজিত।)
২) তেনাদের প্রিয় শিল্পীর তালিকায়, ভারতে গান গেয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া আতিফ আসলাম, আদনান সানি.....
৩) ভারতের চ্যানেলে প্রতি তীক্ততা থাকলেও তারা আবার ভারতের পিস টিভির দারুন ভক্ত।
৪) ভারতের সব নিকৃষ্ট বর্বর কিন্তু জাকের নায়েক, মওদুদী, ড. আবুল কালাম আজাদ তাদের আদর্শ। জাকের নায়েক আর মওদুদীর আদর্শ উদ্দেশ্য স্থাপনের জন্য তারা এমন কোন ঘৃন্য পথ নেই, যাতে আশ্রয়ে তাদের কার্পণ্যতা আছে।
৫) ভারতের সনিয়া মীর্জা পাকিস্থানের মালিককে বিয়ে করাতে তেনাদের সুখ বলে শেষ করা যাবে না।
৬) রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভারতীয়, তাই এদেশের সমস্ত পুস্তক থেকে তাঁদের বাদ দেয়া (আসল উদ্দেশ্য বাংলাভাষাটাকে মুছে দেয়া, একথা বলছি কারন- বাংলাসাহিত্যে তাঁরা ব্যতীত বাংলা সাহিত্যের আধো অস্তিত্ব আছে কিনা, আমার জানা নেই)। কিন্তু তাদেরই আবার ভারতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি নির্মোহ দূর্বলতা। ঘটনাটি প্রশ্নবিদ্ধ।

এসব বিষয় যদি বলা হয় এবং একই অভিযোগে তাদেরকেও ভারতীয় দালাল বলা হয় তখন এরা রক্তচোখে আপনাকে মারতে হুমকি দেবে না এও বলা মুশকিল। অতএব হিন্দু‘রা ভারতীয় দালাল তমকা নিয়েই এড়িয়ে চলুন জান বাঁচাতে, জানেন তো জান বাঁচানো ফরজ।

ধর্মবোধ ও আমরা

আমরা মানুষ হবার যতটা না চেষ্টায় রত, তারচেয়ে বেশী চেষ্টায়রত ধর্মকে আশ্রয়ে রাখতে। তবে কি আমরা ধার্মিক?

এই প্রশ্নের প্রতিউত্তর একটাই- ধর্মের নির্দেশনা ধর্মীয় অনুশাসন যথাযথভাবে পালন, একে অপরের সাথে মিথ্যা কিংবা জোচ্ছুরি না করা, সৎ পথে চলা, কারও ক্ষতির মানষিকতা পোষন না করা, নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা কিংবা থাকার সর্বোত্ত চেষ্টা করা, কারও গীবত না করা, সামার্থ্য অনুযামী দান-সদকা দেয়া, মনুষ্য জ্ঞাণে আবদ্ধ থাকা, মাণবতা পোষন করা, কারও ক্ষতি না করা, কারও উপর অন্যায়-অত্যাচার থেকে বিরত থাকা এবং সর্বোপরি সর্বোত্তভাবে সকলের সহিত যথার্থ বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখা।

কিন্তু আমরা কি দেখছি? আমরা দেখছি মন্দিরে বড়-বড় ধর্ম যাজক নামধারীরা জানাচ্ছে হিন্দুদের উপর অমানুষিক নির্যাতনের কথা, প্রার্থনা করছে তাদের ধর্মের লোকদের সু-প্রসন্ন জীবনের জন্য। মসজিদের ইমাম তিনি বয়ান দিচ্ছেন সমগ্র মুসলিম জাতির দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে, দোয়া করছেন মুসলিম ভাইয়েরা যেন জালিমদের দুঃখ-নিপীড়ন উতরে আল্লার পথ ধরে বেহস্তবাসী হয়। একই অবস্থা বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, গুরুধর্মসহ প্রায় সকল ধর্মের বেলায় বর্তমান।

আমরা প্রত্যেকে এক-একটা পরিবারের সন্তান, আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের অভ্যন্তরের প্রত্যেকের মানষিকতা কিংবা আদর্শ এক নয়। যদি একই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত হবার পরেও আমরা সম-মানষিকতা সম্পন্ন না হই, তবে সমাজ-সংসার কিংবা ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে আমরা সকলে কি করে এক হব? যদি একটি পরিবারের একজনের উগ্রতায় পরিবারের সবাইকে সামষ্টিক বিচারে আনা না হয়, তবে কেন ধর্মীয়বোধের উপর ভিত্তি করে মানুষে-মানুষে পৃথক হবে? সবধর্মের পালনকারী যেহেতু মানুষ- অতএব দৃষ্টিভঙ্গি, মানষিকতা কিংবা আদর্শিক বিচার-বিবেচনায় আনলে প্রত্যেক ধর্মে এমন কিছু মানুষ আছে- যারা আগ্রাসী, ধর্মের নাম করে এরা রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মজতে পছন্দ করে। এরা ধর্ম নিয়ে মানুষ নির্ণয় করতে চায়- মনুষ্যত্ব কিংবা মানবিক বিরেচনায় নয়। এরা দেখাতে চায়- এই ধর্মের লোক আমাদের এই করেছে, ঐ ধর্মের লোক আমাদের পাছায় বাঁশ দিয়েছে, ওরা আমাদের ধ্বংশ করতে চায়, চলুন আমরা আমাদের ভাইদের জন্য দোয়া করি। কিন্তু এরা এতটুকু বিবেকেও কখনও মানুষ হিসেবে ব্যক্তির উগ্রতা কিংবা হিংস্রতাকে দেখাতে চায় না। আসলে উদ্দেশ্য বিবেচনায় নিলে এরা চায়, শুধু নিজ ধর্মকে প্রচার আর প্রসার ঘটাতে। এতে রক্তের লিপ্সায় অন্যকে হিংস্র জানোয়ার বানাতে এদের বাঁধে না।

যদি একজন ধর্মীয় আদর্শ পালনকারী নেতা শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রচার-প্রসারের নেশায় পড়ে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে মানুষকে মারার নির্দেশ দেয় কিংবা কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিজের আদর্শিক মতাবাদ জোর করে চাপিয়ে দেয়, অথবা আদর্শিক মতবাদ চাপাতে না পেরে তাকে নিঃস্ব করে কিংবা তাকে কুপিয়ে হত্যার পরোক্ষ মদদ দেয়, তিনি কি করে সঠিক ধর্মীয়গুরু কিংবা ধার্মীক? যদি নিজের বিবেক-বোধ এতটুকু অন্তত থাকে তবে এই রক্তের হোলিখেলা থামাবার জন্য এখনই তা বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে এখনই, সেসব ধর্মীয়গুরুদের ভূল এখনই ধরিয়ে দিতে হবে। বলতে হবে আপনি মানুষের জন্য দোয়া করবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মুসলিম কিংবা নিজ ধর্ম অন্তর্ভূক্ত ভাইদের জন্য নয়। আমরা মনুষ্যত্ব বিশ্বাসকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই, বিষাদে নয়।

বাঙ্গালি চরিত্র ও ভবিষ্যত



বাঙ্গালি চিরকালই দু‘মুখো! এরা স্বাভাবিক চিন্তা-চেতনাতে কখনও এক হতে পারে নি, অদূর ভবিষ্যতের সে আশা করাটা দূরহ বটে। এরা সন্ত্রাসকে যেমন প্রতিহত করতে চায়, ঠিক তাদের লালনে মদদ দিতেও তৎপর। একদল একজনকে দোষী সাব্যস্ত করে তথ্য দিলে অন্যদলের কাছে মিথ্যে সাব্যস্ত করার তথ্যও এসে যায়। কেউ আক্রান্ত হয়ে ঘৃণা-ভয়ে থু-থু ছিটালে ঠিক বিপরীত কেউ এসে সে থু-থু চেটে খায়।

কেউ হ্যাঁ বললে সে হ্যাঁ‘কে না বলার লোকের যেমন অভাব থাকে না, তেমনি হিংস্র জানোয়ারের সুদর্শনরুপ দেখে ক্রাশ খেয়ে অর্গাজম হওয়ারও অভাব নেই।

এমন জাতির ভবিষ্যৎ কতটা ভয়ঙ্কর রুপ হয়ে এসে দাঁড়াবে- সময় কেবল তারই প্রতিক্ষার প্রহর গুনছে।

উদ্দেশ্য

আইডিবি থেকে কম্পিউটারের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক কোর্সে বৃত্তিসহ বিনামূল্যে করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র মুসলিম ছাত্রদের। ইসলামী ব্যাংকের মতো এখানে কোন হিন্দু বা অন্যকোন ধর্মালম্বিদের আবেদন করার সুযোগ পর্যন্ত নেই। সবচেয়ে মজার ব্যাপার সরকারই এ ব্যাপারে সব সুযোগ করে দিচ্ছে, এমনকি প্রশ্ন পর্যন্ত উঠছে না- এদেশে অন্য ধর্মালম্বিদের যথেষ্ঠ বসবাস থাকার সত্ত্বেও তারা কেন সমসুযোগ পাচ্ছে না?

প্রশ্ন তুলছি, গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় এ ধরনের মানষিকতা প্রদানের সুযোগ দেয়ার কার্য্যত কারন কি? বৃত্তিপ্রদানের মাধ্যমে এভাবে একটি জনগোষ্ঠীকেও সবস্থানে ক্ষমতাশালী করে তোলার উদ্দেশ্যও বা কি? আজকে যারা কম্পিউটারের হ্যাকিং কিংবা স্প্যামিং কিংবা ভার্চূয়াল জগতে হিডেন থেকে বিভিন্ন অসাধু কার্য্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের মদদ দাতা আসলে কারা? শুধুমাত্র একটা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গোপন কার্য্যসিদ্ধের উদ্দেশ্য কি?

ভয় ও বোধ

খেলোয়ার‘রা খেলছে- রাষ্ট্রযন্ত্র খেলছে, প্রধানমন্ত্রী খেলছে, আইনমন্ত্রী খেলছে, মন্ত্রী পরিষদ খেলছে, সাবেক বিরোধী বর্তমান বিরোধী খেলছে, বাম খেলছে, ডান খেলছে, সাথে মধ্যবর্তী‘রাও খেলছে। বুর্জোয়া রাজনৈতিক খেলছে, নীতি বিসর্জিত আমলাতন্ত্র খেলছে। প্রশাসন খেলছে, তার হাতে ধরে সাঙ্গ-পাঙ্গরা খেলছে। লেজুড় ধর্মব্যবসায়ী খেলছে, বুদ্ধিজীবী খেলছে। বিশ্বাসীরা খেলছে, বিশ্বাসবাসী‘রা খেলছে। লেজ গুটানো বিড়াল খেলছে, ধূর্ত শেয়াল খেলছে। লেজ তোলা কুকুর খেলছে, উগ্রতায় শুয়র খেলছে।

এখানে খেলায় জয়-বিজয় অনুমেয় না হলেও খেয়াল করলেই বোঝা যাচ্ছে সকলের খেলার উদ্দেশ্য হাসিল! খেলায় অংশগ্রহণকারী সবাই নিজেদের কায়দায় খেলতে-খেলতে ভাবছে আবাল জনতা ঠিক বোঝে না, ঠিক খেলার কৌশল জানে না। আর সত্যিতে পৌঁছে আমরাও দেখছি, আসলেই কম ভুগছি না। খেলার চমকে-ঢমকে আমরা ভীতি নিয়ে সেযে, ছুটছি আর থামছিও না। অথচ ভীতি থামিয়ে এদের দিকে হাত এগিয়ে নিলে এরা ঠিক মুঠিতে কতটা পুরত সন্দেহ!

বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬

প্রেম ও বিশ্বাস

প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মূখ্য এবং জরুরী “বিশ্বাস”। এখানে বিশ্বাস যত দৃঢ়, ব্যক্তি মধ্যকার প্রেম তত প্রগাঢ় ও সুদৃঢ়। সময়-পরিস্থিতি বিবেচনা বোধে না নিয়ে শুধুমাত্র আবেগের বশবতী হয়ে, অথবা হারাবার ভয়ে যখন কোন পরিণয় বা সমাপ্তী আসে, তখন সেই প্রেম বা সম্পর্ক নিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ায় জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশ্নবোধক শব্দটি....

তারা কি পরস্পরকে সত্যি বিশ্বাস করে??????

(প্রেম সময়কে যেমন হারাতে জানে, তেমনি হারাতে জানে সমাজ-সংসার-সংশয় কে। অতটুকু না থাকলে প্রেমের প্রাধান্য কিসে?)

প্রেমের ক্ষেত্রে আর একটি গুরুত্ববহ বিষয় সন্দেহ, যেটা দূর্বল বিশ্বাসের কারনে ব্যক্তিমনে জন্ম নেয়। যখন ব্যক্তিমনে সন্দেহ প্রবল হতে শুরু করে, তখন পরস্পরের মধ্যেকার বিশ্বাসও কমতে থাকে। সন্দেহ বাতিক যুক্ত যুগল সত্যিকারের প্রেমটাকে জানে না। তাদের কাছে প্রেমটা যতটা না স্বর্গীয়, তারচেয়ে বেশী দেহ ও মনের খোরাক কিংবা প্রাপ্তীর। এ‘ধরনের প্রেম অভিলাষী! যেটা পরিণয় পেলেও পরিণতিটা স্বপ্নের মতো আগলে রাখবার স্থান করে দিতে পারে না।

(বিঃ দ্রঃ - এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত কিংবা দর্শন। যেহেতু আমার ব্যক্তি জীবনে কাউকে নিয়ে তেমন করে স্বপ্ন দেখা কিংবা কারও হাত ধরে এক-দু‘ক্রোশ পথচলা সম্ভব হয়ে উঠেনি, তাই চিন্তা কিংবা চেতনার ভ্রান্তী থাকতে পারে। তবে নিজের জানার গন্ডি এবং সমাজের প্রতিবিম্ব থেকে যতটুকু আলোর বিচ্ছুরণে ঠিকরে নিতে পেরেছি, তাতে নিজের উপলব্ধিটাকে একেবারে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিতেও আমার কার্পণ্যতা আছে।)

জানা

উর্বর-অনুর্বর প্রাণগুলো ভেঙ্গে-চুরে বুনে যায় কবিতা-গল্প-উপন্যাস
আর রক্ত-মাংস-হাড় মাটিতে মিশে যেতে-যেতে রেখে যায় ইতিহাস।

জিজ্ঞাসা

যতটা কাছে আছি তারও কাছাকাছি রয়ে
যদি নীরবতার নীরবটুকু না শোন্
যতটা আড়ালে আছি তারও আরও বেশী গিয়ে
লাভ কি যদি এ মনটাকে জান?

প্রেম ও পরিণতি

শুরুটা ভালো লাগার, স্পর্শের কিংবা মনের সাথে লুকোচুরির
কিন্তু বিশ্বাসের ত্রয়োদশ বিন্দুরেখা পেরিয়ে পরিণতি সহজ নয়
কতকটা দ্যোদুলমান মন, কিছুটা মৌণস্তব্ধতা অথবা হারাবার কিছুপথ
আতঙ্কগুলো ভূত হয়ে পথ আগলিয়ে সমাপ্তিকে ইন্দ্রজালে আটকালে
আর চেয়ে নেবার মতো বাকী থাকে কেবল এক
যেখানে পরিবার-স্বজন, স্নেহ-সম্মান-দম্ভ-আধিখ্যাতা
জড়িয়ে পড়ে লক্ষ্যহীন ছায়াজালে, নাট্যমঞ্চের বিষাদে

ভালোবাসা হেয়ালীপনার মাত্রা যেমন বোঝে না
তেমনি বোঝে না এগিয়ে যাওয়া পথের সীমাবদ্ধতাটুকুও
শুধু মেঘধারার উপকূল ধরে ফেরবার আশার নৌকোটি
কূলে ভিড়বে বলেও ভেড়ে না
এখানে ভয়টা হারাবার, বিচ্ছেদের
তাই দিগন্তকে ছড়িয়ে যাবার নেশায় ঢেঁউগুলো যখন আরও অপ্রতিরোধ্য
তখন ঝরে পড়ে বেড়ে উঠা সীমানায় নিখাঁদ ভালোবাসার পালকগুলো।

অনুযোগ কেন?

যেমনটি ভেবেছ আমায় তেমনটি কখনও ছিলেম না, আজও নেই
সুদর্শণ পুরুষ তুমি কেন আর সকলেরই বাসনায়, অবিশ্বাস সেই?
না; তোমাকে দেখার মতো আমার কেবল দুটো আঁখিই সদা জেগে রয়
অনুযোগ কেন? আবেগ হেলে শিশিরেরও টলমল ছলছল রোদে পরিনয়।

বাসনা

যদি আগলে রাখার কৌশল জানতে প্রিয়তম;
আমিও পারতাম হতে অন্যসকল প্রেমিকসম

মূল্য

দীর্ঘ তিন বছর যন্ত্রণা সহ্য করেছি, দৈনিক গড়ে ৪-৫ ঘন্টা রাস্তায় কাটিয়েছি ২০ মিনিটের বাসের রাস্তায়। সব সহ্য করেও ভেবেছি সরকার ফ্লাইওভার বানাচ্ছে সে তো আমাদের মতো জনসাধারনের জন্যেই। কাজটা শেষ হলে আমরাই উল্লাসে এই রাস্তায় পথ পাড়ি দেব। ফলে ফ্লাইওভারের উল্লাসে বিভোর আমরা যখন রাস্তার বড়-বড় গর্ত পার হই, তখন তাতে আমাদের চিত্ত আহত হয় না বরং আমরা হাওয়াই মিঠে খেয়ে হাওয়ায় উড়ছি ভেবে নেই।

তিনবছরের মতো সময় পার হয়। যে ফ্লাইওভার দুই বছরের মধ্যে শেষ হবার চুক্তি হয়, তিনবছর পর তার অর্ধেক শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী উৎসাহ নিয়ে উদ্ভোধন করেন। আহা! এ দেখার মধ্যেও সুখ, কৈফিয়ত ছাড়া ঢাক-ঢোল-বাজনা বাজিয়ে উদ্ভোধন! যা হোক অর্ধেক ত হয়েছে, মনে আনন্দ জাগে। আপাতত অর্ধেকে না হয় পেট ফুরবো। হ্যাঁ; মাসখানেক আধেকে বেশ ভালোই কাটছিল। ২০ মিনিটের রাস্তায় আমরা উড়োজাহাজে উড়ে ১০ মিনিটে পার হয়ে গেছি। বাসার সবাইকে তাই কয়দিন কৈফিয়ত দিতে হয়, কি করে আমি এত তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছি! কৌতুক করে বড় এক ভাই বলেন; কি খবর বিপ্লবভাই? অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন নাকি? তখন গর্ব করেই বলে উঠি, আমরা এখন ফ্লাইওভারে উড়ি ভাইয়া। আপনি উড়ে চলার মজা না পেলে বুঝবেন না।

বাবার মৃত্যু বার্ষিকী পালনের জন্য বাড়ি গেছি। ফিরে আবার যখন নিয়মিত অফিস করবার জন্য ৩০ মিনিট আগে বাসে উঠলাম, লক্ষ্য ১০ মিনিটে অফিসের কাছে পৌঁছব, তারপর হাতে ২০ মিনিটে নাস্তা খেয়ে একটু রিলাক্স হয়ে অফিসে ঢুকব। কিন্তু; একি? গাড়ি ফ্লাইওভারে উঠল না, ড্রাইভারের সাথে কেওয়াজ লাগালাম- মামা তোমাগো এত যাত্রীতে পেট পুরে না? অফিস টাইমে মজা করছ? কিছুক্ষন বাক-বিতন্ডা শেষে বাসের স্টাফের কথায় বুঝলাম, বেইলি রোড ভিআইপিদের রোড! আম-জনতা ভিআইপি রোড দিয়ে চলবে? তাই মন্ত্রণালয় থেকে সাধারন যাত্রীসেবা বাসের রোড পার্মিট তুলে দেয়া হয়েছে। সেদিন অফিসে ১ ঘন্টা পর নাস্তা না খেয়েই ডুকলাম। বুঝলাম, এদেশে আম-জনতার মূল্য শাসে, তাই আমের (আমজনতার) শাসটাই সকলের চাওয়ার, ঐটুকু শেষ হলে আঁটি হতে নতুন চারা গজে যতদিন না নতুন শাসের আম পাওয়া যায়, ততদিন পর্যন্ত তা মূল্যহীনই পড়ে থাকে।

আশার বাণী

শ্রমিক-মজুরের পিঠে হাত বুলিয়ে অনেকে বলেছে-
দেশ যেদিন উন্নত হবে সেদিন আমরা তোমরা.....
দেশ একটু-একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে
পিঠে হাত বুলিয়ে অনেকে আকাশ ছুঁয়েছে
অথচ আশার বাণী আকড়ে ধরা শ্রমিক-মজুরের দল
তাঁরা চাপড়ানো পিঠে কুঁজ নিয়ে এখন বিছানায়, নির্বাক

রিফিউজি

এদেশে হিন্দুধর্মালম্ভী‘রা রিফিউজি নয় বরং সংখ্যাগুরুদের চেয়েও এদেশে তাদের বাপ-দাদার ভিটে অধিকার অনেক বেশী, অনেক প্রাচীন। সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা সংষ্কৃতিক যে অবকাঠামোর উপর এদেশটা আজও দাঁড়িয়ে আছে, তারও বীজ বপন এদের হাতেই হয়েছে। ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ সালের ভূমি রেকর্ড কিংবা তফসিল ঘাটাঘাটি করলে এখনও স্বচ্ছ কাঁচের মতো স্পষ্ট দেখা যায়, এইদেশের সব ভূমি-সম্পত্তি প্রকৃত মালিক ছিল তারাই। অথচ অবাক হয়ে দেখতে হয় আজকের সময়টাকে!

তাদের বর্তমান অবস্থান দেখলে খুব সহজেই অপরিচিত কেউ ভেবে নেবে, এদেশটাতে তারা রিফিউজিই ছিল। তাদের পাঞ্জাবী রেখে ধুতির কোচ খুলে পালানো দেখলে খুব সহজে বলে দেয়া যায়, নিজস্বার্থের জন্য এরা নিজের পরিবার-পরিজনকে নেংটা করার দক্ষতা অর্জন করলেও, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য মৃত্যু অবধি লড়তে প্রস্তুত নয়। এদের শক্তি মনে নয় দেহে, তাই মনের ভয়ে শরীরের শক্তি নিয়ে এরা যতটা পালিয়ে ছুটতে সক্ষম, ঠিক ততটা শক্তি দিয়ে অন্যায়কারীকে ধরাশায়ী করতে সক্ষম নয়। এভাবে ছুটতে-ছুটতে কত কম সময়ের মধ্যে তারা এইদেশের অবাঞ্চিত রিফিউজি হয়ে গেছে, হাত কচলিয়ে আজও হয়ত অনেকে ভেবে ফেরে!

সইবে তো?

কৃষক-মজৃরের পিঠের চামড়া তুলে তা দিয়ে দেশটাকে ঢেঁকে যদি সোনালি রঙ্গের তুলিতে আঁচড় কেটে বলা হয়, এই দেখ আমরা দেশটা চকচকে সোনায় মুড়িয়ে দিয়েছি। তাতে কি সারা পৃথিবী মেনে নেবে আমার দেশটা সোনায়-সোনায় ভরে উঠেছে? আপনারা কি খোঁজ করে জেনেছেন সারা পৃথিবী ঢুলছে তালে-তালে, মাতালে?

দেশসেনানী‘রা আর একটু ভাবুন, মনে হয় আর একটু ভেবে নেবার প্রয়োজন খুব বেশী। মাতাল ঘোর থাকা পর্যন্ত রঙ্গিন দুনিয়ার সুখ খুঁজে, প্রলাপ বকে।কিন্তু ঘোরহীন সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ালে, প্রতিটা কদমে এত-এত আর্তনাদ-আহাজারী-আক্রোশ সইবে তো?

ট্যাক্স

৫৬ হাজার কোটিপতি ট্যাক্সের টাকায় ফূর্তি করবে, অভুক্ত কৃষক দেশ চালাতে ট্যাক্স দেবে। আর প্রজাতন্ত্রের সেনানায়ক‘রা গাঞ্জা খেয়ে দেশটাকে উদ্ধার করবে।

কার !

টগবগে তরুন তুখোড় কবি
বুকে প্রেমের পাথার, চোখে রঙ্গিন ছবি
কার ! প্রেমিকার?
এ বোঝা দায়!!

কবি কোন বিভোরে থাকে, কখন ইশারায় ডাকে
রুপকথার জগত পেরিয়ে ভ্রান্তী কাটলে, সকলে বুঝে
সে শুধুই প্রেমিক ছিল !
সুন্দরের, কবিতার...

হিংসেটুকু আগলে রাখি কি করে বলুন ত?

আরে এতদ্দিন তো কেবল তেনাদের (পুছকা পোলাপাইনের) কাজ-কারবার দেইখা আমি তাজ্জব হইতেম। এখন তেনাদের মতন আরেকদল পেলুম। তেনাদের রং তামাশাও আমার কাছে বেশ লেগেছে। এইদল কিন্তু তেনাদের মতো কথায়-কথায় কাঁদেন না, তবে খিটখিটে স্বভাবের জন্য তেনাদের সবসময় বেশ সুনাম। হয়, ঠিক ধরেছে- তেনারা বয়সে বড় হলেও আচারণগত দিকে মাঝে-মাঝে পুছকা তেনাদেরও হার মানিয়ে দেন। এই ধরুন আজকের কথাই বলি-

তখন রিকশায় আফিসে আচ্ছিলুম। লুকাস মোড়ে রিকশা ফার্মগেটের দিকে মোড় দিতেই দেকি তেনারা দু‘জন (বয়স অনুমানিক হিসেবে ৭০+) রং-ঢংয়ে মেতেছেন। একজনের হাতে কচকচে ২০ টাকার দুটো নোট, অন্যজন সাথে বসা। নোট হাতে তেনা করলেন কি, উৎসাহ নিয়ে একটু লাফালেন, তারপর একটা কচকচে নোটের উপর মুখ থেকে একটু থু-থু নিয়ে অন্যজনের কপালে আটিয়ে দিলেন। অন্যজনও দেখী এতে বেপুক মজা লুটছেন। তিনি খুশিতে গদগদ হয়ে,হাফুস-হাফুস করা মুখে একগাল হেসে, কপাল থেকে টাকাটা পকেটে পুরে নিলেন। এদেকে হাতে থাকা বাকী আরখানা নোটও থু মেরে এঁটে দিলেন কপালে আর অন্যজন একইভাবে পকেটে পুরলেন। দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছিল, দুজনের মধ্যেকার আনন্দঘন সুখটুকু।

দু‘জনের হাস্যোউজ্জল মুখ দেখে সত্যি অনেক সুখবোধ হল। জীবনের এ সময়টায় দাঁড়িয়ে এতটা নিঃসঙ্গতা, এতটা একাকিত্ব ঘুছিয়ে নেবার মতো এতটুকু সুখবোধ খুব কমজনেরই মেলে। আমি ভাবছি, যদি বেঁচে থাকি জীবনের সে ক্রান্তিক্ষনে আমারও কি এমন একজন বন্ধু মিলবে? আমিও কি জীবনটাকে এই ছোট্ট একটা আনন্দে এতটা মশগুল করে নিতে পারব? পাওয়ার শোকটুকু এখনই অনুধাবন করছি। তাই বলি- হিংসেটুকু আগলে রাখি কি করে বলুন ত?

শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

যেদিন মন বিষে যায়

যেদিন মন বিষে যায়, সেদিন থেকে ছায়াটাকে মাড়ায়ে পিষছি প্রতিদিন
এ‘মাটির মায়ায় যত নুড়েছি মানুষের ঘৃণার দহানলে হৃদয় ততটা লীন।

আকৃষ্ট

ভালোবাসাটা ভিতরকার বস্তু. একে বুঝতেও তেমন মন থাকা লাগে।
অথচ বেশীরভাগই অবদমনে জড়িয়ে মুখের প্রলাপযুক্ত ভালোবাসাতে বেশী আকৃষ্ট হয়। 

কেউ আবার দেখানো ভালোবাসা না পেলে ভেতরকার অন্তর্দহ ক্ষতে আরক্ত হয়।

দাসত্ব জীবন কাটিতে হইবে?



দুঃখ কারে কহি বাপু, হগলের বন্ধু থায়ে, কয়ে বন্ধু-বান্ধব বিপদ-আপদের সঙ্গী।

আর শালার আমি এমন বন্ধু-বান্ধব পায়াছি, যারা কয়- “বন্ধু-বান্ধব নাকি চাকর-বাকরের সমান”।।

বলি এমন বন্ধু-বান্ধব লয়ে কি মোকে সারাজীবন দাসত্ব জীবন কাটিতে হইবে?

সহনশীল মানুষ

সহনশীল মানুষ বোধযুক্ত বটে, তবে দায়িত্বের ব্যাপারে সতর্ক নয়।

নিদহীন কে গো

বিদূর রাতে বৈরাগীমন ডুকরে কাঁদে উজান-ভাটির মেঘমালায়
অঝর ধারায় প্রিয় বিনে নিদহীন কে গো শিউলি তলায়

ভয়

যে নিজের জীবন নিয়ে খেলতে প্রস্তুত, তার আবার হারাবার ভয় কিসে?

একই

একই গৃহ, একই বোধ, একই চিত্ত, একই মূল আর সে একই স্বজাতি ভাবনা----

তবে নষ্ট বিলে ফোঁটা ফুলে মন্দের ভালোটাই তো কেবল কাম্য; তাই নয় কি?

না; বলছি এই বঙ্গে ক্ষমতাসিনদের মধ্যে আমাদেরতো কেবল মন্দের ভালোটাই চাওয়া, অন্য কারও ভিন্ন ভাবনা থাকলে, পসরা সাজিয়ে তার কাছেই বরং যান।

ধ্রুব দূর্লভ নেশায়

ধ্রুব দূর্লভ নেশায় ঝাউবনের জোনাক গিলেছে টিকটিকি
এখন কুঞ্চিত কৃচ্ছের আলয়ে, নিয়ন আলোর পসরা মেলে

সে দেখারই প্রতিক্ষায়

না বলার ভাষা কোনদিন ছিল না, এখনও নেই। শুধু পেট গুলিয়ে বমি পাচ্ছে আর বমির ভাব ঘুছাতে চারদিকে কেবল থু-থু টাকে ছিটানোরই কেবল প্রয়াস পাচ্ছি।

সময় বলছে আমরা বোধহয় নিজেদের হারিয়ে পেলছি শীঘ্রই, হারিয়ে ফেলছি সম্মান-সঞ্চয়-বিবেকবোধ, তবে আর রইলই বা কি?

যারা শ্রদ্ধা-সম্মান ভূলছে তার এই বোধ দিয়ে ধর্মটাকে লালন করবে? তবে চেয়ে আছি সে দেখারই প্রতিক্ষায়...

অব্যক্ত প্রশ্ন

আজ একজন তার বন্ধুশ্রেনীর একজনের কাছে গল্প করার সময়ে বলে উঠলেন, মাওলানা মওদুদীর “শান্তিপথ” বইটি পড়লে নাকি তার রক্ত টকবগিয়ে উঠে। তিনি জানালেন বইটি তিনি বেশ কয়েকবার পড়েছেন এবং প্রতিবারেই কাফেরদের বেদাতি কাজ দেখে ক্ষুদিত হচ্ছেন তাদের শেষ করার ব্যাপারে।

লোকটির কথা প্রতিবাদ করার সাহস আর সুযোগ না থাকলেও হাসছি আর ভাবছি মানুষকে খুন করার উদ্ভুদ্ধ করা বইয়ের নামও তাহলে ”শান্তিপথ” হয়?

শুক্রবার, ৬ মে, ২০১৬

সেটাই হোক আমাদের কাম্য

পরলোকে যদি মানুষের ইহলোকের কৃতকর্ম অনুযায়ী স্বর্গ-নরক নির্ধারিত হয়ে থাকে, তবে একথাটি নিশ্চিত করে বলা চলে মানুষের পালিত ধর্ম কখনোই মানুষের জন্য স্বর্গ-নরক নিশ্চিত করে না বরং মানুষের ভিতরকার সৎ বোধশক্তি এবং সত্যকর্মই তার নির্ধারক। জীবন-জগতে মানবিকবোধ সম্পন্ন হওয়াটাই তার জন্য সবচেয়ে জরুরী। এই বিশ্বাসটি আমার মনে এতদিন কেবল স্থির করে রেখে ছিলাম। আমি কিছুটা ঘরকুনে নির্লিপ্ত, তাই জানার গন্ডি অতটা প্রসস্ত না হওয়ায় এবং নিজের জানার গন্ডিবদ্ধ দুনিয়া অনেক ছোট হওয়াই অনেককিছু বলার ইচ্ছে থাকলেও সাহস ছিল না। নিজের আত্মিক শক্তির উপর বিশ্বাস এখনও অতটা স্থাপন করতে সমর্থ হইনি বলেও কিছুটা নিজের সাথে নিজেকে আড়াল করছিলাম।

একটা বিষয় আজ আমার চোখ স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে স্পষ্টতার জন্য আমি চিরকালের জন্য গান্ধিজীর কাছে চিরঋণী হয়ে গেলাম। ধর্মান্তরিত হবার বিষয়টিকে আমি কখনও স্বাভাবিক চোখে দেখিনি আজও দেখি না। আমার বাল্য বন্ধু মথি ফারনানডেজ যখন ধর্মান্তরিত হয়ে আব্দুল্লা হল- এবং সে যখন তার মাকে মায়ের অনিচ্ছার স্বত্ত্বেও তার মতাদর্শে আনতে বাধ্য করল, তখন বিষয়টি শুনে আমি খুবই হতবাক হলাম এবং অন্তরে ব্যথা অনুভব করলাম। কিন্তু সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেলাম যখন কোন এক আড্ডার সময় সে আমার অন্য বন্ধুদের বলল, তারা আমাকে দাওয়াত করেছে কিনা? আমি জানি ওর ধর্মান্তরিতের পিছনে আমার কয়েকজন বন্ধু প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত কিন্তু যখন মথি আমার অন্যবন্ধুদের এমন প্রশ্ন করল, তখন তারা তাকে ইঙ্গিত করল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে। কারন আমার বন্ধুদের কয়েকজন আমাকে এ ব্যাপারে কিছুটা জানে। আসলে আমার ভেতরে তখন থেকে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল, সত্যিকারে ধর্মান্তরিত হবার ফলেই কি একজন মানুষের বেহেস্ত নিশ্চিত হয়ে গেল? তার মায়ের অনিচ্ছার স্বত্ত্বেও যখন একমাত্র সন্তানের ভরশায় নিজের মেয়ে-আত্মিয়-পরশিসহ সকলের সাথে সম্পর্ক ছেদ করে একা নিঃসঙ্গ জীবন বেচে নিলেন, সে তার ভিতরকার যন্ত্রণার চাপায় বন্ধুর কি বেহেস্ত নিশ্চিতের আধো সম্ভবনা আছে? আমার জ্ঞান পরিমীত তাই আমার পক্ষে সত্য-মিথ্যা যাচাই কিংবা নিরূপণ নিশ্চিত কঠিন। কিন্তু নিজের ভেতরকার প্রশ্ন যেটা আমাকে নিত্য দিন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সেটা?

ধর্মান্তর বিষয়ে এনড্রুজ গান্ধীজিকে বললেন- "আন্তরিকভাবে যদি কেউ একথা বলেন, তিনি ভালো খ্রিস্টান হতে চান, আমি তার জবাবে বলব, ‍‍"আপনি যেন তা-ই হন।" উত্তরে গান্ধীজি বলেন- "কিন্তু আপনি কি এই কথা উপলব্ধি করছেন না যে আপনি তাকে একটা সুযোগ পর্যন্ত দিচ্ছেন না? আপনি তাকে একবার জেরা করেও দেখছেন না। কোন খ্রিস্টান যদি আমার কাছে এসে বলেন যে তিনি ভগবদগীতা পাঠ করে মুগ্ধ হয়েছেন এবং তাই নিজেকে হিন্দু বলে ঘোষনা করতে চান, আমি তাকে বলব, "না, তার প্রয়োজন নেই। কারণ ভগবদগীতাতে যা পেয়েছেন, বাইবেলেও তাই পাবেন। আপনি এখনও বাইবেল থেকে এটা খুজে নেবার চেষ্টা করেননি। এই প্রচেষ্টায় লেগে পড়ৃন এবং আদর্শ খ্রিস্টান হোন।" গান্ধীজী আরও বলেন- "পারস্পরিক সহনশীলতা না সর্বধর্মে সমভাব, এ-দুয়ের কোনটা গ্রহন করবেন? তা বিবেচনা করে দেখুন।"

হ্যা; যদি সব ধর্মে্র্ সারবস্তু হয় স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ, তবে আমরা সহনশীল হয়ে নিজ-নিজ ধর্মপণ্থায় কেন এগিয়ে যাবার প্রয়াস করছি না। ধর্মান্তরিত হয়ে আমি মনপ্রাণ ফেলে ধর্মে অনুরক্ত হচ্ছি, যেখানে আমাকে আমার নিজ ধর্ম সঠিক লালন-পালনের মাধ্যমে আমার লক্ষ্যে পৌছানে সম্ভব।

বন্ধুদের কাউকে আহত করার উদ্দেশ্যে আমার এই পোষ্ট নয়, বরং আমরা যেন সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজেদের অভিষ্ট লক্ষ্যে যেতে আগ্রহী হই, সেটাই হোক আমাদের কাম্য।

রবিবার, ১ মে, ২০১৬

আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

(শ্রদ্ধেয় নচিকেতা যখন বাংলাদেশের বরিশালে তাঁর পৈত্রিক ভিটায় এভাবে বসে নয়নজলে অবিরত ভাসতে থাকেন, তখন সে ভাষাটাকে, সে ভাবার্থটাকে বুঝে নেয়া কতটা কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার এই প্রয়াসটুকু শুধু তাঁদের জন্য, যারা ছেড়ে যাওয়া পৈত্রিক স্মৃতি জড়িয়ে আবেগের মূর্চ্চনায় হু-হু-কারে ঢুকরে কেঁদে উঠেন।

সামাজ্র্যবাদের যুগে সবসময়ই মনে একটা ভয় বয়ে বেড়ায়, তবুও কখনও নিজের পৈত্রিক ভিটে, নিজের দেশ ছেড়ে যাবার কথা ভাবতে পারি না, সারাক্ষনই কেবল মনে হয়, যদি কোনদিন সব ছাড়তে হয়, সেদিন বোধ করি আমার দেহ-মন আক্ষেপ করতে গিয়ে সেখানে পড়ে মরবে।)

এ মাটির কোলে সহস্র জন্ম ঋণ!!
ও তাঁর জিহ্ন-শীর্ণ বদনে অন্তর মলিন...
তবুও আজ সে বন্ধনে বাঁধিতে চায় কি মায়ায়?
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এ মাটি শুষেছে নাড়ীছেড়া রক্ত খুলেছে তাঁর আলোয় চোখ
ঐ আতুরঘরে শরীর ধোয়া জল মিশে ভূমিকোলে মমতার বুক
প্রসবের যন্ত্রণা ভুলে, সন্তানের মুখ তুলে, খুশি মিশে মায়ের মিষ্টি মুখে
চেনা শরীরের ঘ্রানে প্রাণের যে বিষাদ টানে আজন্ম বেঁচে থাকার সুখে
বুঝ বাঁধিবার আগে কঠিন বাঁধিয়া বুকে, হঠাৎ সে পথ থমকিয়া যায়
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এইখানে কুঁড়েঘরে আমার পিতৃদেবের চলেছে কয়েক পুরুষ বাস
বাড়ির পেছনে সুপারির মাচানে হুক্কার ধোঁয়ায় দাদুর মৌনতা গ্রাস
উঠোনে পালা করে ফসল শুকোতে দিলে, রমণীর আঁচলে ঘামের ঢল
পুকুরের জলে নেমে অশ্বথ গাছের তলে আমাদের সাঁতার অবিরল
সেসব পেছন ফেলে মমতার চুমু হেলে, পথ পথকে আগলে দাঁড়ায়
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এতদিনে ভুলে গেছি সে পথ, যেখানে কত সন্ধ্যে নেমেছে গোধূলির আড়ালে
চাতালের ঐদিকটায় হুল্লোরে কত খেলায়, কত বাঁশি বেজেছিল মাঠের পালে
স্মৃতির মানসপটে কতদিন এমন ঘটে রাতভর জ্যোৎস্নার স্নাতে খুনশুটি
বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকোচুরি খেলে মিছে আনন্দে কতশত লুটোপুটি
আজ কেবল খুঁজে ফেরা বাংলার শ্যামলধারা, মুখোমুখি বসিবার ধাঁধাঁয়
এখনও দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

আড়াল

কোন কাজ যদি ব্যক্তির মনে সামান্যতম সংকোচ বা শোচনা সৃষ্টি করে তাই শাপ বা পাপ।

অথচ প্রায় প্রত্যেকে তার আচারণ কিংবা কাজে কোনপ্রকার অনুশোচনা বোধ করলে চারপাশে খুঁজে বেড়ায় সংকোচ বা অনুতপ্ত বোধ হওয়া তার কাজের মতোই কোন কাজ বা আচারণ, যার আড়ালে সে আড়াল করে নিজের ভিতরকার সংকোচ কিংবা অসংঙ্গতিগুলো।

সমকামিতা

না; কথাগুলোকে এভাবে বলবেন না। বলি কি আপনারা আদর আর কাম এই দুইয়ের ব্যবধানটুকু তো একটু বুঝতে চেষ্টা করুন। হুজুরা ছোট-ছোট বাচ্চাদের সাথে গোপন অভিসারে যা করছেন এটাকে আপনারা কিছুতেই কামের আওতায় ফেলতে পারেন না, এটা স্রেফ আদর। আর অন্য যারা তা করছে তা কিন্তু সমকামিতা!!!

তাই যারা সমকামিতার পক্ষে বলে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গলার সাথে গলা মিলিয়ে গলাবাজি করুন- এটা উচিতই ছিল...সহকামিতা না জায়েজ। তবে হুজুদের কিন্তু আদর করার পক্ষেও সাপোর্ট দিতে হবে কচ্ছি...tongue emoticon

রক্ত পানি করে কর দিয়ে কাদের পুষে যাচ্ছে....???

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন- নিরাপত্তার স্বার্থে নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় তৈরী করার জন্য। এর অর্থ ত এই দাঁড়ায়, তারা মূলত তাদের নিজেদের নিরাপত্তায় ব্যস্ত আছে আপাতত, তাই দেশ নিয়ে ভাবনা আপাতত ছেড়ে দিয়েছে।

ভেবে দেখুন সাধারন জনতা নিজের রক্ত পানি করে কর দিয়ে কাদের পুষে যাচ্ছে....???

কারও দেখায় সুখ, কারও অসুখ!!!

কারও দেখায় সুখ, কারও অসুখ!!!

- প্রতিদিনকার গুম-খুন-আহাজারি-ধর্ষনে আমাদের নেতা-নেত্রী-মন্ত্রী-এমপি-সরকারগোষ্ঠী চোখ-মুখ কাচুমাচু করে ভেতরে দম ফাটানো খুশি নিয়ে সংবাদ সম্মোলন করে আর তা দেখে আমজনতা পিত্তির যন্ত্রণার মরে...

ঘৃণা

সৃষ্টি রহস্য উলঙ্গ, সঙ্গমরত যুগল উলঙ্গ
জন্ম-জৈববৃত্তি উলঙ্গ, বিবেক-বোধ উলঙ্গ
শুধু নেড়া মাথায় ঘোল ঢেলে মানুষের দাবী তারা সভ্য!!!

শালারা!! নিত্য-নৈমিত্তিক বৃত্তবলয়ে গড়ে তুলছে যত্তসব অদ্ভুত উপখ্যান
দিন-রাতের ব্যবধানটুকুতে থাকে আড়াল হিংস্র জানোয়ার আর ভগবান।

চাওয়া-পাওয়া

আঁধারকে কি কেউ ডেকেছে কখনও অসীম ব্যথার রোধনে?
অথচ জগত সংসারময় কত দীপ পুড়ে অনন্ত আলো আহ্বানে

যা ফসিল তা মেলে সংসারে যুগব্যাপী চাপা সয়ে
জীবনের পথ দিকে-দিকে বদলায় অন্তরে বিষ বয়ে

খাল-নালা-ডোবায় জমে জঞ্জালস্তুপ পঁচে দিগন্ত কটুবাসে
অথচ অনলে ধুপ না পোঁড়ালে সুবাস মেলে না তার আশে

শুভ নববর্ষ-১৪২৩

সময়ের পাতা বদল! 

জীবনের ভাবনাকে সঙ্গিন করে চলতে-চলতে ফিরে গেল পুরনো বছর
আর দেহভরা ক্লান্তিতে একটু বিশ্রামের সুখ-সন্তোষ আর স্বপ্নের আশ্রয় করে
ফিরে এল আরও একটি নতুন বছর।

অতীতের জরাজিহ্নতা আর তপ্তখরা কেটে সবাই যেন বালুবেলার সৈকতে
স্বপ্নটাকে হাতে ধরে বেড়াতে পারে, সে শুভকামনা সতত সবার জন্য।

শুভ নববর্ষ-১৪২৩।

তারা আসলে কি? -সে বরং তারা নিজেরাই ভাবুক

শুধুমাত্র সুনাম কুড়োবার জন্য সবাই লেখে না, অনেক বড় প্রতিভাবান দেখাবার আশায় কিংবা প্রতিষ্ঠিত হবার জন্যও সবাই লেখে না। কিছু লেখা মনের গতিকে রোধ করে, ভারাক্রান্ত মনকে স্থির করে, কখনও ভাষা ভালোবাসা অনুভবকে প্রকাশ করে।

প্রতিদিন অনেক প্রতিষ্ঠিত সমাদৃত লেখকদের মনের ক্ষুধা নিবৃত করার মতো অনেক ভালো-ভালো লেখায় যেমন মনের তাগিদ পাই, চেতনা জাগ্রত হয়। ঠিক তেমনি কিছু সমাদৃতের কলমের খোচায় মনটা ভারাক্রান্ত হয়।

আগেই বলছি সবাই প্রতিষ্ঠা পাবার আশায় লেখে না। যদি তাই হত- আমার মতো অবিবেচকেরও ৫-৬ টি বই এতদিনে কারও কারও হাতে হয়ত পৌঁছত। খুব সহজে টাকা দিয়ে বই বের করবার মতো সেই সামার্থ্য আমার হয়ত ছিল!

তবে প্রশ্ন আসতে পারে দূর্বোধ্য ছারপাশ লেখা কেন? কেন অকারণ সাহিত্যের ময়লার স্তুপ জমানো?

আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি- প্রত্যেকে তার চোখে দুনিয়াকে দেখে, তার মতো করে দুনিয়ার সমস্ত নাড়ি-নক্ষত্র বিশ্লেষন করতে চেষ্টা করে। আর বিশ্লেষন করা এইসকল তথ্য-উপাত্ত কেউ-কেউ খুব সহজে অন্যের কাছে বলার ভঙ্গিমায় উপস্থাপন করতে পারে, কেউ আবার নিজস্ব জীবনদর্শন নিজের মধ্যেই জমিয়ে রাখতে পারে। এই দুটো শ্রেণীবাদে আরও একটা শ্রেণী আছে যারা দুটোর কোনটাই করতে পারে না। তাদের সমস্ত জীবনদর্শনের কিছু বোধ প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম কাগজ-কলম। মূলতঃ নিজেদের আত্মবিশ্লেষনটাকে প্রকাশ করবার আশায়ই তারা লেখে। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নটা আসে- তবে সাহিত্য জগতে ছারপাশের স্তুপ জমানো কেন? এখানে প্রশ্নটি করার আগে বলতে হবে- যারা অন্যের সবধরনের অভিব্যক্তিটাকে সাহিত্য বলতে চাইছেন- তারা আসলে কারা? - সাহিত্যে আবর্জনার স্তুপ জমানোর কথা বলবার আগে, তাদের মানষিক অবস্থা জানা প্রয়োজন। কারণ কোন লেখাটি সাহিত্য হিসেবে স্থান নেবার যোগ্যতা রাখে আর কোন লেখাটি মনের ভাব প্রকাশের জন্য লেখা, এই দুটোকে যারা আলাদা করতে জানে না, তাদের মানদন্ড নিয়ে মনে সংশয় জাগে।

আর একটি কথা- কাকের ময়ুরের পাখনা পড়লে যেমন কাক ময়ুর হয় না, তেমনি কাক স্বাদ করে ময়ুরের পাখনা পড়ে ঘুরলে যারা কাক আর ময়ুরকে আলাদা করতে পারে না, তারা আসলে কি? -সে বরং তারা নিজেরাই ভাবুক।

ফিরে দেখা দর্পনের প্রতিবিম্ব

ফিরে দেখা দর্পনে দুটো প্রতিবিম্বের প্রতিচ্ছবি সবচেয়ে বেশী প্রতিফলিত হয়, একটি বিম্ব প্রতারকের অন্যটি প্রতারিতের।

প্রতারক ভাবে মানুষজন কতটা সরল আর বলদ হতে পারে। আর প্রতারিত ভাবে সরলতা আর বিশ্বাসকে মানুষ কতটা হীণমন্যতায় ব্যবহার করতে পারে।

প্রতারকের আছে হিংস্র জানোয়ারের মতো উল্লাস কিন্তু প্রতারিতের কাছে থাকে সরল বিশ্বাস নিয়ে খেলার দুঃখবোধ আর চাপা ক্ষোভ।

আপনারা মশাই কেবল আবেগে ভূল জায়গায় পড়ে যাচ্ছেন

ছাত্র-ছাত্রী আর সাধারণ জনতা বেশী আবেগী। আরে বাবা, তনু নামের কেউ নেই। gasp emoticon সরকার প্রশাসন তাই বলতে চাইছে আর আপনারা অকারণ অনর্থ বকে যাচ্ছেন- তাকে ধর্ষন করে মারা হয়েছে?

দেখুন সরকার প্রশাসন তাদের জায়গায় সঠিক!!! সমস্যা হল গিয়ে- সময়ের পরিবর্তন আপনাদের খেয়াল নেই...

সরকার প্রশাসন পিছনে পড়ে থাকতে চায় না বলে তারা অনেক এগিয়ে গেছে আর আপনারা উল্টো আগের সময়ে ফিরে গিয়ে অকাট্য যুক্তি দেখাচ্ছেন।

সময়ের হিসেব কষে দেখুন আপনারা মশাই কেবল আবেগে ভূল জায়গায় পড়ে যাচ্ছেন। সরকার প্রশাসন অনেক এগিয়ে জীবিত তনু আর তার গোষ্টির পিন্ডি চটকাচ্ছে...

(কুমিল্লার ক্যান্টনম্যান্ট এলাকায় সাদিয়া জাহান তনুকে ধারনা করা হয় প্রশাসনিক লোকজন ধর্ষন করে মেরে ফেলে। কিন্তু সব বুঝেও যখন প্রশাসন চেপে গিয়ে তার পরিবার পরিজনের উপর চাপ প্রয়োগ করে তখন আমাদের মতো সাধারনের আর্তচিৎকারটাই সারমর্ম হয়। এই প্রসঙ্গে এই স্যাটোয়ার।)

ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন !

ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন !
চাইবার মতো মন থাকলে- ফুল ছুঁয়ে শিহরণ মেলে,
পাখির কাকলিতে তন্ময় জমে, অথবা সাগরের গর্জনে উল্লাস আসে।
আবার নেবার মতো অধিকার থাকলে- চেয়ে নেয়া যায়,
আহ্লাদি আবদার করা চলে, কখনও আবার কেড়ে নেয়া যায়।

পতঙ্গ ভাবনা পতঙ্গের মত, মনুষ্য ভাবনা মানুষের মত
আর জাগতিক ভাবনা জগতের মত...
পতঙ্গ আনন্দ অহরসে অনলে আত্মাহুতি দেয়,
মানুষ চিত্তোল্লাসে ধ্বংশযজ্ঞে আসক্ত হয় আর অসহ্যে জগত ধুমড়ে-মুছড়ে রুপ পাল্টায়।
না; সেযে, বলছি- ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন! সেখানে ফিরি-
দেখুন; সময়ে ভালোবাসা পাথরে ফোঁটে, গোবর হতে নেমে আসে আগরের সুগন্ধি,
মোলায়েম পদ্ম ফোঁটে নোংরা দুর্গন্ধ ডোবায় আর কাঁটার আঘাতে দেহ বেড়ে বের হয় বীষ।
অনুসঙ্গ নয়, ভালোবাসার রুপ ঘাটলেও অনেক সময় বোধে আসে না।
আসলে কোনরুপে কোন ভালোবাসা কারে বাঁধে তা বোঝাবার মতো সামর্থ্য কয়জনারই বা আছে?

ভাবীর কথামতো নিলেন নাকি?

অফিসের কলিগের দুটো বাচ্চা, দুজনেই ছেলে। তাই বেচারার একটি মেয়ের শখ। ভাবীর কাছে আবদার নিয়ে গেলে, ভাবী সাফ জানিয়ে দিলেন দু‘বাচ্চার যন্ত্রণাই তিনি টিকছেন না, আবার মেয়ে?

এরপরও পুনঃ আবদার হলে- ভাবী জানায় বাচ্চা নিজের পেটে নিতে। tongue emoticon

আজ কলিগ বলছে- তার মাথা ঘুরছে, বমি-বমি লাগছে। বললাম, কি ব্যাপার বলেন তো? ভাবীর কথামতো নিলেন নাকি? gasp emoticon

মরু বালু

মরু বালু ভাবতে পারেনি আজও
বুকে নামতে পারে জলতরঙ্গ খেলা
সূর্য্য দহনলে পুড়ে বুকের মাঝে তাই
গড়ে তোলা ছলে জলতরঙ্গ বেলা

বস্তি

এখানে জীবন বাস্তবতা শেখার, কঠিন পরাভূত করার
আর জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াবার চেষ্টা বারবার!
“জীবন যেখানে আশ্রয়হীনের” - সেখানে কেউ আশ্রিত
“জীবন যেখানে যান্ত্রিকের” - সেখানে কেউ যন্ত্র
এখানে ভোগ আছে বিলাষ নেই
ক্ষমা আছে ক্ষমতা নেই
মমতা আছে মায়া নেই
বলার ভাব আছে ভাষা নেই

ছোট্টশিশু সে যেমন শীর্ণকায় নিয়ে নুন-মরিচে ক্ষুধা ভুলে
জিহ্নকায়ের বয়োবৃদ্ধও দুঃসহ পরিনতি ভেবে পথ ভুলে...

এখানে প্রতিটি দিন পার হয় যুগের আবর্তে
বেঁচে থাকা মানুষগুলো জানে তাদের গড় আয়ু শত-সহস্র
তবু বিনয়ে এদের পরাজিত করার শক্তি পাবে যে; সে মহান
এদের জীবনের রহস্য নিয়ে ভাববে, সে ত কেবল ভগবান...

শুধু চৈত্রের খরা কেটে বর্ষার ধামাকায় পড়লে
চারপাশের পচাগলায় থেকে এরা ভাবতে পারে
এখনও ত পঁচি নি! দিব্যি মানুষ বলছে লোকে!
বস্তিতেও মানুষ নামের কেউ বেঁচে
শুধু জানেনা তারা জীবন বলে কাকে?

বিশ্বাস

বিশ্বাসটাই মনের সবচেয়ে বড় খোরাক। নিত্য-নৈমত্তিক বিষয়ে যিনি যতবেশী বিশ্বাসটাকে মনে অনুধাবন করতে পারেন, তিনি ততবেশী তার মনকে দৃঢ়-প্রগাঢ় করে তুলতে সক্ষম।

যথার্থ অনুধাবন আর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্তিকে আত্মউন্নতির সর্ব্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে।

ব্যক্তিস্বাধীনতা

আমি ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে বুঝি, যেটুকু অন্যের অধিকার খর্ব না করে অথবা অন্যের উপর মানষিক চাপ সৃষ্টি না করে করা সম্ভব হয়...

প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ

যারা চিন্তা আর প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের দুনিয়া তাদের চিন্তা ধারাক্রমকে অনেক সময়ই দমবন্ধ করার পর্যায়ে নিয়ে ফেলে।

প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে সারা পৃথিবীর মানুষ। সময়-পরিবেশ-পরিস্থিতিতে প্রতিটি মানুষের চিন্তা-ভাবনায় কম-বেশী পার্থক্য থাকে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যখন প্রতিটি মানুষের চিন্তা-ভাবনার স্তরগুলোর পার্থক্য ক্রমাগত আসতে থাকে, তখন চিন্তা ভাবনায় তাড়িত মানুষগুলো অনেকবেশী ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে তার ভাবনা জগতটার পরিসর বাড়লেও হঠাৎ সম্ভাব্য ভাবনার অধিক ভাবনায় পড়ে অনেকের তাল কেটে পড়ে। ফলতঃ অনেকেই খেই হারিয়ে পদচ্যূত হয় নিজের স্বাভাবিক ভাবনা থেকেও।

চাওয়া

তোমার কাছে যেটুকু রুপ রং
কিছু কদর আছে তার আমার কাছে
তাই বলে নেউলে এনে সাপ খেলাবে
চাওয়াটা একটু বেশীই লাগছে...

বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬

নির্লিপ্ত সত্য

আমরা হিন্দু, আমরা আওয়ামীলিগার! আমরা ভারতীয় দালাল!
আমাদের সবাই যা বলে চাপাতে চায়, আমরা আসলেই তাই!
আমাদের নিজস্বতা নেই, নিজস্ব ভাব-ভাবনা নেই
ভুলস্থানে জন্মগ্রহনের কারণে পদবী পেয়েছি বাঙ্গালী বাংলাদেশী
ক্ষমতার জোরে আমাদের যেভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে সেটাই একান্ত সত্য,
বাকী সব মিথ্যে খোলস, মুখোশের আড়ালে আবডাল রাখা বোধ-ভাবনা
এদেশে আমাদের সুখ-স্মৃতি নেই, অবদান নেই, তাই আবদারও অনাকাঙ্খিত
সবচেয়ে বড় সত্য দিনশেষ এইদেশে আমরা কেবলই অভিশপ্ত পরিত্যাজ্য...

মানুষের উর্দ্ধে

ভাবতে শিহরে উঠি-
আমরা জাত চিনতে চাই, জাতি চিনতে চাই
মনুষ্য বোধ চাই না,
বলতে ঘেন্না লাগে-
আমরা জাত বিভক্তি চাই, জাতি বিভক্তি চাই
মানুষ হতে চাই না।

জন্মে শ্বাস-প্রশ্বাস টানি, যে মাটিতে একছত্রে
তার মানুষ জাতশত্রু করি, জাতি তুলি মিত্রে
জাতির ভাবনায় জাতের টানে, ভিন্নমত সব দালাল
ভাবি না কভু এক মাটির বুকে দুইয়ে টানছি হাল
দুইয়ে করেছি এক সরোবরে স্নান, এক কুপের জল পান
এক বায়ুতে দুইয়ের কায় শীতল, একঘামে সোনালী ঘ্রাণ
এক মাটিতে দুজন বাঁচি, মরি এক মাটির বুকে
জন্মবধি স্বপ্ন বাঁধি সবে, এক মাটিতে সুখে-দুখে।

অনুরোধ

রাত্রির নিকষ অন্ধকার মিছিলে
অস্থিরতার শব্দরা গিলে খেলে
দ্রোহের গল্পটি বন্ধু লিখিও
জীবনভর যার আস্তাকুড়ে সংসার
অসংযত চিৎকারে গুরু দায়িত্বভার
তার চলার পথটি দেখিও...

অবিবেচকের ডাইরি-দেখা

ক্ষমতা দাপট আর দূষিত রক্তকনার এ‘মাটিতে এখনও কয়েকজন ব্যক্তি আমাকে বিমোহিত করে- কখনও কোন প্রকার অপবাদে তাঁদের জড়াতে আমার দ্বীধা মৃত্যুকাল অবধি থাকবে। তাঁদের প্রতি আমার আবদার আছে, ক্ষোভ আছে, সাথে আছে অদম্য বিশ্বাস। আমার বিশ্বাস এই দেশটাকে তাঁরা হৃদয় খুঁড়ে ভালোবাসতে জানে। তাই আমি সারাজীবন সে বিশ্বাসকে আগলে রাখতে চাই পরম যতনে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, কয়েক ঘন্টা পূর্বে সন্মানের তাড়নায় সাবেক হওয়া গভর্ণর ড. আতিউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী সোহেল তাজ আর প্রিয় ক্রিকেট লিজেন্ড মাশরাফি বিন মর্তুজা। আমার বিশ্বাসের জায়গায়টায় তাঁরা বেঁচে থাকবেন আজীবন।

আশা-নিরাশা

তারা বলেছে তোমরা শ্রম দাও, হও দেশ উন্নয়নের অংশীদার
সকলেই রক্তঝরা প্রতি কনার মূল্য পাবে মনে করি অঙ্গিকার

আমরা দেশমাতৃকার মাথা পাহাড়সম উঁচু করার করি প্রতিজ্ঞা,
শৈশব ভূলি কৈশর হেলি যৌবন করি জলাঞ্জলি
বৃদ্ধ হাল কাঁধে বয়ে পাই নাঙ্গল-জোয়ালে বেঁচে থাকার আজ্ঞা

দেশমাতৃকাকে দেয়া কথা রাখতে হই বিদেশ-বিভুঁইদের গোলাম
রাত-দিন ঘুম ভেঙ্গে শ্রম দিয়ে সদা করি কর্পোরেটরদের সালাম
হাতুড়ির লৌহ আঘাতের ক্ষতগুলো করি প্রতিনিয়ত আড়াল
অকারণ অন্যায়ে শত যাতনাগুলো সহে করি অশ্রু আবডাল

চারদিকে যখন একটু-আধটু আনন্দঘন ঘন্টা শুনি,
শুনি বাতাসে ভেসে আসা শব্দ এগিয়ে যাচ্ছি আমরা
শুনে সুখ পাই- ভাবি এতদিনে কষ্টরা হচ্ছে সারা
কিন্তু হায়; পৌড়া কপাল আরও পুড়ে নিরাশায়...

যারা স্বপ্নটাকে সত্যি করবে বলে দেশের হাল নেয় তুলে
আমাদের রক্তের প্রতিটি ফোঁটা তরল গিলছে তারা ভুলে...

চোখ

সব চোখের রং এক থাকে না
সময়ে সব চোখ এক দেখে না
কখনও চোখ সৃষ্টি দেখায়, কখনও আবার কর্ম
কখনও সমাজ-ধর্ম শেখায়, কখনও আবার মর্ম

ভালোবাসার অনুসঙ্গে

বীণাকে ভালোবেসে ফেলেছি মুগ্ধতা ঝরা চঞ্চল নয়নভোলা হাসি দেখে
তারপর থেকে এক অদৃশ্য মায়া সারাদিন তার কাছে টেনেছে
হঠাৎ সামনে দাঁড়াবার সাহস ছিলনা, তবু ব্যকুল অনুসঙ্গ ভোগালে
পথ আগলে দাঁড়াই, বলি কাউকে ভালোবাসিস বীণা?
বীণা- আকস্মাৎ প্রশ্নে কিছুটা দ্বীধা নিয়ে বলে; কেন?

বলি- চলিস তো নদীর মতো এঁকে-বেঁকে, পায়ের নুপুরে কি খেয়াল রাখিস?
বীণা বলে- তুই বড্ড পাগল হয়েছিস, নুপুরে চেয়ে হাঁটতে কি হোঁছট খাব?

কবির অকাল প্রয়ান

যৌবনে সম্ভবনাময় কবির ঔরস প্রোথিত গর্ভ হতে
আজ নেমে গেল জন্মবিধৌত মৃত প্রসব যন্ত্রণা
তার দশমাস সন্তান যাতনা ছিল
সতর্ক চলনেও তার অন্তঃ ছিল ভার
ডাক্তারি পরীক্ষা সব ঠিকঠাক ছিল
আল্ট্রাসনোগ্রামেও সমস্যা পায়নি খুঁজে
জন্মদানের ব্যাপারটিও ছিল স্বাভাবিক
তবুও অপ্রাকৃত পৃথিবীতে মৃত প্রসবের জন্ম যাতনায়
কবির অকাল প্রয়ান তিথীটাও এঁকে গেল।

মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ডাক

আজ আবার তাই পথে-ঘাটে
ধরি সুরে পথ হারাবার গান

ওরে আয় আয় আয়রে তোরা
ভবঘুরে আছিস যারা
পথ হারিয়ে পথ খুলে দেই
মন বাউলার টান।

মানুষ, আমরাও ছিলেম একদিন!

ঝুলবারান্দায় বসে-বসে পচে গেছে মন
সভ্যতার স্তুপে জমে শহুরে যান্ত্রিক দর্শন
যাবতীয় কোলাহলে জমে যত ত্রাহি-ত্রাহি রাহুদশা
তারি মাঝে আমরা বাঁচি, দেহপৃষ্ঠে নিয়ে লাগাতার ব্যস্ততা...
ভূ-মৃত্তিকা জানে কি না জানে
জানি না আমরা শেষ কবে পেয়েছি সে দিন
বৃত্তের আবর্ত বলয়ে পড়ে থেকে আজন্ম
দু‘হাতে বিলিয়ে দিতে বে-রসিক স্বপ্নঋণ
জানে সবে গন্তব্যে জনে-জনে ফিরতে হয় একদিন
তবুও সভ্যতার ভূতলে কষাঘাতে ঠেকে মাথা
বলে চলা হায় মানুষ, আমরাও ছিলেম একদিন!

ভিন্ন


যার জীবন ভিন্নগতিতে চলে, তার জগতটাও ভিন্ন...

কিছু জীবন বিলিয়ে দেবার

কিছু জীবন বিলিয়ে দেবার
ফুল ফোঁটে!!!
প্রকৃতির মাঝে সৌন্দর্য্য বিলায়
মুগ্ধ হতে গন্ধ বিলায়
ফলরুপে শাস বিলায়
প্রেমিকের ডাকে প্রেম বিলায়
সুবাসে কারও মৃত্যু বিলায়
বীষ শুষে কারও জন্ম বিলায়
বীজরুপে বংশধারা বিলায়।।

কেউ যদি জানতে চায় ভালোবাসা কি?

কেউ যদি জানতে চায় ভালোবাসা কি?
আমি বলব এটি তিনটি অংশের সমন্বয়-
প্রথম অংশটি আবেগ- “যা কাউকে নিয়ে ভাবতে শেখায়, কারও ভালোটাকে খুঁজে দেখায়।”
দ্বিতীয় অংশটি লাম্পট্য- “যা অধিকারে নিতে চায়, আত্মগ্লানিতে ভোগায়।”
শেষ অংশটি মায়া- “যা বন্ধন চায়, সারাজীবন কাউকে আগলে রাখার প্রত্যয়ে পুড়তে চায়।”

এখানে সম্পূর্ণতাই কেবল ভালোবাসা, সে পূর্ণতা পাক কিংবা না পাক।
যার কলকাকলী প্রথম অংশেই সম্পন্ন হয়- তার কাকলীটুকু ভালোবাসা নয়, শুধু ভালোলাগার ভ্রম।
যারটা দ্বিতীয় অংশ সম্পন্ন হবার পরপর বিনষ্ট হয়- তারটা কেবল দৈহিক কামনা, স্বার্থসিদ্ধি।
ভালোবাসা তখনই কেবল পূর্ণাঙ্গরূপ পায়, যখন দুটো মনের দ্যোটানা একবিন্দুতে পরিসমাপ্তী টানতে চায় বারংবার।

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সৌন্দর্য্য অনুভবের....

সৌন্দর্য্য অনুভবের, গন্ধ চেনার আর শাস ক্ষুদা মেটাবার প্রয়োজনে...

চাইলেই সৌন্দর্য্যও খাওয়া যায়, গন্ধ অনুভব করা যায় আর শাসটাকে চিনে রাখা যায়, তবে তাতে কেবল প্রকৃতির রুপটাই বিরূপ হয়....

স্বপন

স্বপন জীবনটাকে নিয়ে সত্যিকারের ভাবনায় পড়ে গেল!! নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সে অন্যভুবন ধরে হাঁটছে আর নিজের সাথে বলছে, না আমার কোন স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন থাকতে নেই। বারংবার হোঁছট খেয়ে পড়াটাই আমার জীবন! আমার নিয়তি! আমার গন্তব্য!!!

বেশ কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার পর স্বপন দেখল উষ্ক-শুষ্ক মলিন বদনে ছেঁড়া বসনে জড়ানো শরীর টেনে কয়েক টুকরো ইট আর পাথর হাতে দীনু পাগলা ছুটছে। দীনুর এইভাবে ছুটে চলা দেখে স্বপন স্তম্ভিত ফিরে পেল। সে দীনুকে থামাল, জিজ্ঞাসা করল- কিরে ইট-পাথরের টুকরো হাতে কোথায় ছুটছিস...? জবাবে দীনু জড়তার স্বরে বলল- ঘল তুলব লে, পাকা ঘল তুলব। মা কান্দে কইছে আমি বালা হইলে, আমাদেলও পাকা ঘল হত!!! দীনুর কথা শুনে স্বপন হেসে উঠে বলল- এই কয় টুকরো ইট-পাথরে কি ঘর হয় রে বোকা? দীনু বলল- যা তুই বোকা, আলও (আরও) আনব লে, তখন হবে!!! বলেই দীনু আপনার গন্তব্যে ছুটে চলল।

দীনু চলে গেলে স্বপন তার পাগলামীর কথা ভেবে মনে-মনে হেসে উঠল, কিন্তু পরক্ষনেই দীনুর ইচ্ছের কথা ভেবে সে অবাক হল! সে ভাবতে থাকল, সারা জীবন ধরে ইট-পাথরের টুকরো কুড়োলেও তো দীনুর পাকা ঘর উঠবে না। সারাজীবনের তপস্যাতেও দীনুর বদলাবার সম্ভবনা নেই, তবুও সে স্বপ্ন দেখছে, আগ্রহে এগিয়ে চলছে, জীবনটাকে ব্যস্ততায় ভরে তুলছে, সময়ের রংগুলোকে রঙ্গিন করে তুলছে। তবে আমি----?

স্বপন জীবনের গন্তব্য পেল, সে বুঝল জীবন শুধূ ফসলের ফল বইবার জন্য অতটা নয় যতটা ফসল ফলাবার। জীবন কেবল স্বপ্ন দেখে কদম ফেলার, স্বপ্নগুলোকে ছুয়ে দেখার আগ্রহে ব্যস্ত হবার, দুঃখ-দুর্দশা-পীড়ন ভূলে থাকবার মত কার্য্য করার।

স্বপন এখন ভাঙ্গার স্বপ্ন দেখে না, স্বপন এখন ফসল ফলাবার প্রত্যয়ে স্বপ্ন গড়ে।

সময়

প্রেম, ভালোবাসা কিংবা ভালোলাগার জন্য চঞ্চল, আবেগী, মুখের ভাব-প্রকৃতি আর মিষ্ট প্রকাশের পারঙ্গমতাই যথেষ্ঠ। 

কিন্তু জীবন সংগ্রামের সংসার সাজাতে গেলে উপরেরগুলো বেশীরভাগই অযাচিত, অনাকাঙ্খিত আর অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায়। সংসার জীবনে পরিশ্রমী, সহনশীল আর বোধগম্যযুক্ত মানুষই সকলের প্রথম কাম্য থাকে।

দম্ভ

যে কায়া ছুঁলে জাত চলে যায়...
সে কায়ার ছায়া পদতলে মাড়ায়
ছোট-বড়-জাত-বেজাত নাই সে ইশারায়
আপনার দম্ভ আপনার কর্মে চূর্ণ হয় ধরায়...

বিভেদ

সবজায়গায় হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি; কাড়াকাড়ি

আমি-
পায়ে বল নেই বলে বাহন চাপাতে পারি না
গায়ে বল নেই বলে গতর খাটাতে পারি না
হাত কাঁপে বলে ভার বইবার শক্তি পাই না
মগজ শূণ্য বলে বুদ্ধির জোরেও টিকি না

সবাই পথ খুঁজে হালুয়া-রুটির কিঞ্চিৎ পেয়ে গায়-গতরে বেঁচে যায়
আমি কঙ্কালসার দেহের বেদন সহতে না পেরে ওপারের প্রত্যাশায়...

যে ভালোবাসে

যে ভালোবাসে কিংবা বাসতে চায় তাকে চেনা যায়!
মুখের মায়ায় ধ্রুবরাশির রেখায় খেয়ালের উচ্ছলতায়
সময়ের কাব্যকলার ঢংয়ে মনটাকে পড়া যায়...

ক্ষমতাপরে অহমিকা

সিঁড়িটা একই থাকে। কিন্তু মাথা উঁচু করে উঠতে হয় আবার মাথা নিঁচু করে নামতে হয়।

ভাবতে না চাইলে সমস্যা নেই, কিন্তু ভেবে রাখা দরকার, ক্ষমতাপরে অহমিকাটাই আপনাকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে মারবে।

সময় অসময়

বলেছিলে ভালোবাসবে
বেসুর বাদলে জড়িয়ে ধরবে আলিঙ্গনে
সময়বদলে বেসুরে মাতালে, তুমি তোমার হয়ে গেলে
আর ভালোবাসার দারুচিনিদ্বীপ তলিয়ে গেল অতলে...

ধর্ম আর স্বভাব

কুড়ালের ধর্ম কাটা কিন্তু স্বভাব বুকের দিকে টানা...

তেমনি মানুষের ধর্ম মনুষ্যত্ব হলেও তার স্বভাব নিজের জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনকে বুকে টানা। জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনের দোষ-ক্রটি দেখেও তার পক্ষপাত করা। মানুষ দুনিয়াকে ধ্বংশ করতে একপায়ে খাঁড়া শুধুমাত্র নিজের হীনতাকে বড় রাখতে।

মানুষ জীব হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠের দাবিদার হলেও, সময়ের কর্মকান্ড বিবেচনায় নিলে এদের মতো হিংস্র জানোয়ার দুনিয়ায় দুটো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর!

পরিশ্রমী চোখগুলো

পরিশ্রমী চোখগুলো বরাবর উদাসীন দেখায়। ক্লান্ত শরীরগুলো ঘাম ঝরিয়ে শরীর হালকা করার সাথে দেমাগটাকেও বীষিয়ে দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

হিংসের কারণ

তেনাদের কাজকম্ম দেখে কি আর কব...

আরে কচ্ছিলাম পুছকাগুলানের কতা যেনারা ভেংচি কাটে, কানাচোখে চায়, বোপ দেয়
আর দামের হিসেব কষলে যেনাদের কাছে আমি সিকি আধুলিও না...

তবে তেনাদের হগল লজ্জার গুপন কতা মুই জানি, যেগুলান শুনলে আপনারা মুখ খিছিয়ে চোখবুজে ছুটবেন...

কচ্ছিলাম কি...

এদ্দিন দেকি তেনাদের একজন হামাঘুড়ি মেরে ছুটছেন, ছুটে আশপাশে একটু দেকলেন।
দেকলেন তেনার চারপাশে দুখানা মুরগি কুকক্-কুকক্ করে খাবার খুটে খাচ্ছেন।
এদেকে তেনা বেজায় খুশি হয়ে হাসতে-হাসতে দু‘নম্বর কাজটা সেরে দিলেন...

তারপর কি দেখলুম বাপু; পাশের মুরগি দুটো ছুটে এসে তেনার ত্যাগ করা দু‘নম্বর জিনিস দু‘ঠোকড় মেরে দিল!!! আর অমনি তেনা উল্লাসে নিজের ত্যাগ করা দু‘নম্বর জিনিস নিজের দু‘হাতে ধরে উল্লাস করতে লাগলেন। মুই তেনার মানসুলেমান পান্সার করা কম্ম দেখতে রইলুম। উম্মা দেখি তেনা দু‘নম্বর জিনিস ধরা হাত ছুড়ে আমার দিকে ছুটছেন? আমি পড়ি কি মরি, মরি কি বাঁচি করে যেই না সরতে চাইলাম অমনি তেনা কান্না শুরু করে দিলেন। পরে তেনার মা কান্না শুনে তেনাকে পরিষ্কার করতে নিয়ে গেলেন।

এরপর থেকে তেনারা দু‘নম্বর কম্ম করে ফেললে আমি আর তেনাদের ধার ধারি না।

কিন্তু এদিন হল কি, গেলুম মেজদিদির বাসায়। দিদি ভাত খেতে দিলে দিব্যি আরাম-আয়েশ করে খাচ্ছি। ছোটভাগিনা (মানে- পুছকাদলের লোক) একবার এদিক ছুটছেন তো আরেকবার ওদিক। কোনভাবেই তেনাকে ঠেকানো যাচ্ছেনা। তেনার জন্য আয়েশের খাওয়াটা একটু কমিয়ে নিতে হল- কেননা বলা যায়না তেনা কখন খাবার পাতের উপর বসে খেলতে শুরু করে দেন। খাবার সময় তেনার এমন আনন্দ করে খেলা দেখে বেশ হিংসে হচ্ছিল, কিন্তু দিদি সামনে থাকায় তেনাকে কাঁদানোও যাচ্ছিল না, তাই হিংসে মনে চেপে খাচ্ছিলাম। হঠাৎ কি হল- তেনা একনম্বর কামটা সারিয়ে দিলেন।

সমস্যা তাও না, সমস্যা তৈরী হল তখন যখন তিনি একনম্বর কাজখানা সেরে তা নিয়ে খেলতে চাইলেন। দিদি ঘটনা দেখার সাথে-সাথে তেনাকে সরিয়ে না নিলে কি ঘটনাটাই না তেনা ঘটিয়ে দিতেন। মনে পড়লে এখনও বুক দুরু-দুরু করে উঠে।

আমি কোনভাবেই বুঝতে পারি না, তেনাদের সাথে আমার হিংসের জায়গাটা কোথায়? কেন তেনারা আমাকে হিংসে করেন? অবশ্যি আমারটা আমি জানি, আমি তেনাদের হিংসে করি কারণ- তেনাদের সবাই আদর করেন, কিন্তু আমার বেলায়.....

স্বপ্ন বনাম বাস্তবতা

কেউ যখন ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে, তখন সে তার চারপাশে দেখা অনেক হীরে-জহরত-মণি-মুক্তো থেকে বেছে-বেছে সেরাগুলোকে নিয়ে আলোকসজ্জা তৈরী করে স্বপ্নের ঘর সাজায় আর সেরা হীরে সুউচ্চে সাজায়ে রাখে যেন সবাই দেখে।

কিন্তু যখন বাস্তবতার ঘর সাজাতে যায়, সে দেখে সবটাই মূলত আলোকছটা, যা নষ্ট অকেজো জিনিস জ্বালিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে ছিল। আর নিজের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় সারাজীবন এই অকেজো জিনিস সাজিয়ে রঙমশাল জ্বালাতে হবে!

স্বস্তি

যাচ্ছি মাতৃটানে মাটির গন্ধ অঙ্গে নিতে জড়িয়ে
শহরের যান্ত্রিক কৌলাহল ছেড়ে সবুজের ভীড়ে

---বাড়ি যাচ্ছি, কয়েকদিনের জন্য। শহরের কৌলাহলে আবারও ৭ মাস কেটে গেছে, যান্ত্রিকতা আর অফিসের কাজের ভীড়ে দমও বন্ধ হয়ে আসছে। একটু খোলা চাতালের মুক্ত বাতাস না ফেলে আর বাঁচা দায়।

ছুটটি আপন আঙ্গিনার পথে, যেখানে মা-বাবা তার আহ্লাদের কনার মায়া রেখে শান্ত মনে শুয়ে আছে নিরবে-নিভৃতে। কতদিন প্রাণখুলে কথা বলার কাউকে পাই না, মনের মাঝে জমানো ব্যকুলতা কতদিন কাউকে বলা হয় না। মা-বাবার নিভৃতি ভেঙ্গে কিছু বলব, দেখী বুকের ভার একটু কি কমে..

আসব কয়দিন পরেই, ততদিন হয়ত কথা হবে না যান্ত্রিক বিজ্ঞানে, হয়ত খোঁজ রবে না অনলাইনের কারও সনে। তবু ভাষা জমবে, কথা বাড়বে এই কয়েকদিন পরেই, মন ফুরফুরে হলেই।

উর্বর উপযুক্ত

জমিন ফসল ফলাবার জন্যই, কিন্তু ভালো ফসল পেতে গেলে জমিনকে উর্বর উপযুক্ত করে নিতে হয়। যে যত ভালো উর্বর করতে সক্ষম, তার জমিনের ফসল তত সজীব, তত ফলনশীল আর তত সুমিষ্ট।

প্রতিটি বুকের খাঁজে যে ছোট্টকুঠুরি, ওটাও জমিনের মত ভালোবাসা ফলবার জন্যই প্রস্তুত থাকে। সেখান থেকে সজীব-সুমিষ্ট প্রেম-প্রেরণা পেতে প্রত্যেকেই আপনা শ্রমেই স্থানটিকে উর্বর করে নিতে হয়।

বদল

বদলে যাচ্ছে দুনিয়া, একটু করে বদলে যাচ্ছি আমিও
বদলে যাওয়ার অনিবার্য রীতিতে, বদলে যাচ্ছ তুমিও

সময় গল্প শিখে, কবিতা লেখে, গান শুনে মনের খেয়ালে
পূর্বাপর সময়ও হয়ত হেঁটেছে একই মাত্রায় একই তালে
শুধু বদলেছে দিন, পাল্টেছে বোল, সাথে মেরুন রংমাখা রুপের ছটা
রাত্রির স্বপ্নরাঙ্গানো প্রহর শেষে পথে ফেলে যাওয়া উন্মাষিক বারতা।

নির্বাচন সুস্থ-নির্দলীয়-নিরপেক্ষ হয়েছে!!!

নির্বাচন সুস্থ-নির্দলীয়-নিরপেক্ষ হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা নেই...

শুধু গোপন একটা কথা ছিল ভাই।

আমি পাগলা কামাইল্লা। তয় ভাই আপনারা আমারে চিনেন আর না চিনেন, যদি আমি নির্বাচনে দাঁড়াতাম আর দলীয় মনোনয়নে আমার মার্কা ঠান্ডা জলে ভাসার একখান নৌকো হত। তয় আমারও দেশ-দশের সেবা কইরা দেশটারে উল্টাইয়া-পাল্টাইয়া ঝকঝকা করে বাড়িখানা টাওয়ার বানানোর ব্যবস্থা হইত। লগে পাগলা পদবী কাইটা জনাব হইত।

আহা! একখানা সুযোগ আপনাদের আমার সেবা পাওয়া থেকে কতটাই না বঞ্চিত করল।