শুক্রবার, ৬ মে, ২০১৬

সেটাই হোক আমাদের কাম্য

পরলোকে যদি মানুষের ইহলোকের কৃতকর্ম অনুযায়ী স্বর্গ-নরক নির্ধারিত হয়ে থাকে, তবে একথাটি নিশ্চিত করে বলা চলে মানুষের পালিত ধর্ম কখনোই মানুষের জন্য স্বর্গ-নরক নিশ্চিত করে না বরং মানুষের ভিতরকার সৎ বোধশক্তি এবং সত্যকর্মই তার নির্ধারক। জীবন-জগতে মানবিকবোধ সম্পন্ন হওয়াটাই তার জন্য সবচেয়ে জরুরী। এই বিশ্বাসটি আমার মনে এতদিন কেবল স্থির করে রেখে ছিলাম। আমি কিছুটা ঘরকুনে নির্লিপ্ত, তাই জানার গন্ডি অতটা প্রসস্ত না হওয়ায় এবং নিজের জানার গন্ডিবদ্ধ দুনিয়া অনেক ছোট হওয়াই অনেককিছু বলার ইচ্ছে থাকলেও সাহস ছিল না। নিজের আত্মিক শক্তির উপর বিশ্বাস এখনও অতটা স্থাপন করতে সমর্থ হইনি বলেও কিছুটা নিজের সাথে নিজেকে আড়াল করছিলাম।

একটা বিষয় আজ আমার চোখ স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে স্পষ্টতার জন্য আমি চিরকালের জন্য গান্ধিজীর কাছে চিরঋণী হয়ে গেলাম। ধর্মান্তরিত হবার বিষয়টিকে আমি কখনও স্বাভাবিক চোখে দেখিনি আজও দেখি না। আমার বাল্য বন্ধু মথি ফারনানডেজ যখন ধর্মান্তরিত হয়ে আব্দুল্লা হল- এবং সে যখন তার মাকে মায়ের অনিচ্ছার স্বত্ত্বেও তার মতাদর্শে আনতে বাধ্য করল, তখন বিষয়টি শুনে আমি খুবই হতবাক হলাম এবং অন্তরে ব্যথা অনুভব করলাম। কিন্তু সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেলাম যখন কোন এক আড্ডার সময় সে আমার অন্য বন্ধুদের বলল, তারা আমাকে দাওয়াত করেছে কিনা? আমি জানি ওর ধর্মান্তরিতের পিছনে আমার কয়েকজন বন্ধু প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত কিন্তু যখন মথি আমার অন্যবন্ধুদের এমন প্রশ্ন করল, তখন তারা তাকে ইঙ্গিত করল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে। কারন আমার বন্ধুদের কয়েকজন আমাকে এ ব্যাপারে কিছুটা জানে। আসলে আমার ভেতরে তখন থেকে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল, সত্যিকারে ধর্মান্তরিত হবার ফলেই কি একজন মানুষের বেহেস্ত নিশ্চিত হয়ে গেল? তার মায়ের অনিচ্ছার স্বত্ত্বেও যখন একমাত্র সন্তানের ভরশায় নিজের মেয়ে-আত্মিয়-পরশিসহ সকলের সাথে সম্পর্ক ছেদ করে একা নিঃসঙ্গ জীবন বেচে নিলেন, সে তার ভিতরকার যন্ত্রণার চাপায় বন্ধুর কি বেহেস্ত নিশ্চিতের আধো সম্ভবনা আছে? আমার জ্ঞান পরিমীত তাই আমার পক্ষে সত্য-মিথ্যা যাচাই কিংবা নিরূপণ নিশ্চিত কঠিন। কিন্তু নিজের ভেতরকার প্রশ্ন যেটা আমাকে নিত্য দিন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সেটা?

ধর্মান্তর বিষয়ে এনড্রুজ গান্ধীজিকে বললেন- "আন্তরিকভাবে যদি কেউ একথা বলেন, তিনি ভালো খ্রিস্টান হতে চান, আমি তার জবাবে বলব, ‍‍"আপনি যেন তা-ই হন।" উত্তরে গান্ধীজি বলেন- "কিন্তু আপনি কি এই কথা উপলব্ধি করছেন না যে আপনি তাকে একটা সুযোগ পর্যন্ত দিচ্ছেন না? আপনি তাকে একবার জেরা করেও দেখছেন না। কোন খ্রিস্টান যদি আমার কাছে এসে বলেন যে তিনি ভগবদগীতা পাঠ করে মুগ্ধ হয়েছেন এবং তাই নিজেকে হিন্দু বলে ঘোষনা করতে চান, আমি তাকে বলব, "না, তার প্রয়োজন নেই। কারণ ভগবদগীতাতে যা পেয়েছেন, বাইবেলেও তাই পাবেন। আপনি এখনও বাইবেল থেকে এটা খুজে নেবার চেষ্টা করেননি। এই প্রচেষ্টায় লেগে পড়ৃন এবং আদর্শ খ্রিস্টান হোন।" গান্ধীজী আরও বলেন- "পারস্পরিক সহনশীলতা না সর্বধর্মে সমভাব, এ-দুয়ের কোনটা গ্রহন করবেন? তা বিবেচনা করে দেখুন।"

হ্যা; যদি সব ধর্মে্র্ সারবস্তু হয় স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ, তবে আমরা সহনশীল হয়ে নিজ-নিজ ধর্মপণ্থায় কেন এগিয়ে যাবার প্রয়াস করছি না। ধর্মান্তরিত হয়ে আমি মনপ্রাণ ফেলে ধর্মে অনুরক্ত হচ্ছি, যেখানে আমাকে আমার নিজ ধর্ম সঠিক লালন-পালনের মাধ্যমে আমার লক্ষ্যে পৌছানে সম্ভব।

বন্ধুদের কাউকে আহত করার উদ্দেশ্যে আমার এই পোষ্ট নয়, বরং আমরা যেন সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজেদের অভিষ্ট লক্ষ্যে যেতে আগ্রহী হই, সেটাই হোক আমাদের কাম্য।

রবিবার, ১ মে, ২০১৬

আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

(শ্রদ্ধেয় নচিকেতা যখন বাংলাদেশের বরিশালে তাঁর পৈত্রিক ভিটায় এভাবে বসে নয়নজলে অবিরত ভাসতে থাকেন, তখন সে ভাষাটাকে, সে ভাবার্থটাকে বুঝে নেয়া কতটা কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার এই প্রয়াসটুকু শুধু তাঁদের জন্য, যারা ছেড়ে যাওয়া পৈত্রিক স্মৃতি জড়িয়ে আবেগের মূর্চ্চনায় হু-হু-কারে ঢুকরে কেঁদে উঠেন।

সামাজ্র্যবাদের যুগে সবসময়ই মনে একটা ভয় বয়ে বেড়ায়, তবুও কখনও নিজের পৈত্রিক ভিটে, নিজের দেশ ছেড়ে যাবার কথা ভাবতে পারি না, সারাক্ষনই কেবল মনে হয়, যদি কোনদিন সব ছাড়তে হয়, সেদিন বোধ করি আমার দেহ-মন আক্ষেপ করতে গিয়ে সেখানে পড়ে মরবে।)

এ মাটির কোলে সহস্র জন্ম ঋণ!!
ও তাঁর জিহ্ন-শীর্ণ বদনে অন্তর মলিন...
তবুও আজ সে বন্ধনে বাঁধিতে চায় কি মায়ায়?
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এ মাটি শুষেছে নাড়ীছেড়া রক্ত খুলেছে তাঁর আলোয় চোখ
ঐ আতুরঘরে শরীর ধোয়া জল মিশে ভূমিকোলে মমতার বুক
প্রসবের যন্ত্রণা ভুলে, সন্তানের মুখ তুলে, খুশি মিশে মায়ের মিষ্টি মুখে
চেনা শরীরের ঘ্রানে প্রাণের যে বিষাদ টানে আজন্ম বেঁচে থাকার সুখে
বুঝ বাঁধিবার আগে কঠিন বাঁধিয়া বুকে, হঠাৎ সে পথ থমকিয়া যায়
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এইখানে কুঁড়েঘরে আমার পিতৃদেবের চলেছে কয়েক পুরুষ বাস
বাড়ির পেছনে সুপারির মাচানে হুক্কার ধোঁয়ায় দাদুর মৌনতা গ্রাস
উঠোনে পালা করে ফসল শুকোতে দিলে, রমণীর আঁচলে ঘামের ঢল
পুকুরের জলে নেমে অশ্বথ গাছের তলে আমাদের সাঁতার অবিরল
সেসব পেছন ফেলে মমতার চুমু হেলে, পথ পথকে আগলে দাঁড়ায়
আমার দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

এতদিনে ভুলে গেছি সে পথ, যেখানে কত সন্ধ্যে নেমেছে গোধূলির আড়ালে
চাতালের ঐদিকটায় হুল্লোরে কত খেলায়, কত বাঁশি বেজেছিল মাঠের পালে
স্মৃতির মানসপটে কতদিন এমন ঘটে রাতভর জ্যোৎস্নার স্নাতে খুনশুটি
বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকোচুরি খেলে মিছে আনন্দে কতশত লুটোপুটি
আজ কেবল খুঁজে ফেরা বাংলার শ্যামলধারা, মুখোমুখি বসিবার ধাঁধাঁয়
এখনও দেহগড়িয়ার অন্তর বাঁধিতে চায় কোন মায়ায়?

আড়াল

কোন কাজ যদি ব্যক্তির মনে সামান্যতম সংকোচ বা শোচনা সৃষ্টি করে তাই শাপ বা পাপ।

অথচ প্রায় প্রত্যেকে তার আচারণ কিংবা কাজে কোনপ্রকার অনুশোচনা বোধ করলে চারপাশে খুঁজে বেড়ায় সংকোচ বা অনুতপ্ত বোধ হওয়া তার কাজের মতোই কোন কাজ বা আচারণ, যার আড়ালে সে আড়াল করে নিজের ভিতরকার সংকোচ কিংবা অসংঙ্গতিগুলো।

সমকামিতা

না; কথাগুলোকে এভাবে বলবেন না। বলি কি আপনারা আদর আর কাম এই দুইয়ের ব্যবধানটুকু তো একটু বুঝতে চেষ্টা করুন। হুজুরা ছোট-ছোট বাচ্চাদের সাথে গোপন অভিসারে যা করছেন এটাকে আপনারা কিছুতেই কামের আওতায় ফেলতে পারেন না, এটা স্রেফ আদর। আর অন্য যারা তা করছে তা কিন্তু সমকামিতা!!!

তাই যারা সমকামিতার পক্ষে বলে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গলার সাথে গলা মিলিয়ে গলাবাজি করুন- এটা উচিতই ছিল...সহকামিতা না জায়েজ। তবে হুজুদের কিন্তু আদর করার পক্ষেও সাপোর্ট দিতে হবে কচ্ছি...tongue emoticon

রক্ত পানি করে কর দিয়ে কাদের পুষে যাচ্ছে....???

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন- নিরাপত্তার স্বার্থে নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় তৈরী করার জন্য। এর অর্থ ত এই দাঁড়ায়, তারা মূলত তাদের নিজেদের নিরাপত্তায় ব্যস্ত আছে আপাতত, তাই দেশ নিয়ে ভাবনা আপাতত ছেড়ে দিয়েছে।

ভেবে দেখুন সাধারন জনতা নিজের রক্ত পানি করে কর দিয়ে কাদের পুষে যাচ্ছে....???

কারও দেখায় সুখ, কারও অসুখ!!!

কারও দেখায় সুখ, কারও অসুখ!!!

- প্রতিদিনকার গুম-খুন-আহাজারি-ধর্ষনে আমাদের নেতা-নেত্রী-মন্ত্রী-এমপি-সরকারগোষ্ঠী চোখ-মুখ কাচুমাচু করে ভেতরে দম ফাটানো খুশি নিয়ে সংবাদ সম্মোলন করে আর তা দেখে আমজনতা পিত্তির যন্ত্রণার মরে...

ঘৃণা

সৃষ্টি রহস্য উলঙ্গ, সঙ্গমরত যুগল উলঙ্গ
জন্ম-জৈববৃত্তি উলঙ্গ, বিবেক-বোধ উলঙ্গ
শুধু নেড়া মাথায় ঘোল ঢেলে মানুষের দাবী তারা সভ্য!!!

শালারা!! নিত্য-নৈমিত্তিক বৃত্তবলয়ে গড়ে তুলছে যত্তসব অদ্ভুত উপখ্যান
দিন-রাতের ব্যবধানটুকুতে থাকে আড়াল হিংস্র জানোয়ার আর ভগবান।

চাওয়া-পাওয়া

আঁধারকে কি কেউ ডেকেছে কখনও অসীম ব্যথার রোধনে?
অথচ জগত সংসারময় কত দীপ পুড়ে অনন্ত আলো আহ্বানে

যা ফসিল তা মেলে সংসারে যুগব্যাপী চাপা সয়ে
জীবনের পথ দিকে-দিকে বদলায় অন্তরে বিষ বয়ে

খাল-নালা-ডোবায় জমে জঞ্জালস্তুপ পঁচে দিগন্ত কটুবাসে
অথচ অনলে ধুপ না পোঁড়ালে সুবাস মেলে না তার আশে

শুভ নববর্ষ-১৪২৩

সময়ের পাতা বদল! 

জীবনের ভাবনাকে সঙ্গিন করে চলতে-চলতে ফিরে গেল পুরনো বছর
আর দেহভরা ক্লান্তিতে একটু বিশ্রামের সুখ-সন্তোষ আর স্বপ্নের আশ্রয় করে
ফিরে এল আরও একটি নতুন বছর।

অতীতের জরাজিহ্নতা আর তপ্তখরা কেটে সবাই যেন বালুবেলার সৈকতে
স্বপ্নটাকে হাতে ধরে বেড়াতে পারে, সে শুভকামনা সতত সবার জন্য।

শুভ নববর্ষ-১৪২৩।

তারা আসলে কি? -সে বরং তারা নিজেরাই ভাবুক

শুধুমাত্র সুনাম কুড়োবার জন্য সবাই লেখে না, অনেক বড় প্রতিভাবান দেখাবার আশায় কিংবা প্রতিষ্ঠিত হবার জন্যও সবাই লেখে না। কিছু লেখা মনের গতিকে রোধ করে, ভারাক্রান্ত মনকে স্থির করে, কখনও ভাষা ভালোবাসা অনুভবকে প্রকাশ করে।

প্রতিদিন অনেক প্রতিষ্ঠিত সমাদৃত লেখকদের মনের ক্ষুধা নিবৃত করার মতো অনেক ভালো-ভালো লেখায় যেমন মনের তাগিদ পাই, চেতনা জাগ্রত হয়। ঠিক তেমনি কিছু সমাদৃতের কলমের খোচায় মনটা ভারাক্রান্ত হয়।

আগেই বলছি সবাই প্রতিষ্ঠা পাবার আশায় লেখে না। যদি তাই হত- আমার মতো অবিবেচকেরও ৫-৬ টি বই এতদিনে কারও কারও হাতে হয়ত পৌঁছত। খুব সহজে টাকা দিয়ে বই বের করবার মতো সেই সামার্থ্য আমার হয়ত ছিল!

তবে প্রশ্ন আসতে পারে দূর্বোধ্য ছারপাশ লেখা কেন? কেন অকারণ সাহিত্যের ময়লার স্তুপ জমানো?

আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি- প্রত্যেকে তার চোখে দুনিয়াকে দেখে, তার মতো করে দুনিয়ার সমস্ত নাড়ি-নক্ষত্র বিশ্লেষন করতে চেষ্টা করে। আর বিশ্লেষন করা এইসকল তথ্য-উপাত্ত কেউ-কেউ খুব সহজে অন্যের কাছে বলার ভঙ্গিমায় উপস্থাপন করতে পারে, কেউ আবার নিজস্ব জীবনদর্শন নিজের মধ্যেই জমিয়ে রাখতে পারে। এই দুটো শ্রেণীবাদে আরও একটা শ্রেণী আছে যারা দুটোর কোনটাই করতে পারে না। তাদের সমস্ত জীবনদর্শনের কিছু বোধ প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম কাগজ-কলম। মূলতঃ নিজেদের আত্মবিশ্লেষনটাকে প্রকাশ করবার আশায়ই তারা লেখে। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নটা আসে- তবে সাহিত্য জগতে ছারপাশের স্তুপ জমানো কেন? এখানে প্রশ্নটি করার আগে বলতে হবে- যারা অন্যের সবধরনের অভিব্যক্তিটাকে সাহিত্য বলতে চাইছেন- তারা আসলে কারা? - সাহিত্যে আবর্জনার স্তুপ জমানোর কথা বলবার আগে, তাদের মানষিক অবস্থা জানা প্রয়োজন। কারণ কোন লেখাটি সাহিত্য হিসেবে স্থান নেবার যোগ্যতা রাখে আর কোন লেখাটি মনের ভাব প্রকাশের জন্য লেখা, এই দুটোকে যারা আলাদা করতে জানে না, তাদের মানদন্ড নিয়ে মনে সংশয় জাগে।

আর একটি কথা- কাকের ময়ুরের পাখনা পড়লে যেমন কাক ময়ুর হয় না, তেমনি কাক স্বাদ করে ময়ুরের পাখনা পড়ে ঘুরলে যারা কাক আর ময়ুরকে আলাদা করতে পারে না, তারা আসলে কি? -সে বরং তারা নিজেরাই ভাবুক।

ফিরে দেখা দর্পনের প্রতিবিম্ব

ফিরে দেখা দর্পনে দুটো প্রতিবিম্বের প্রতিচ্ছবি সবচেয়ে বেশী প্রতিফলিত হয়, একটি বিম্ব প্রতারকের অন্যটি প্রতারিতের।

প্রতারক ভাবে মানুষজন কতটা সরল আর বলদ হতে পারে। আর প্রতারিত ভাবে সরলতা আর বিশ্বাসকে মানুষ কতটা হীণমন্যতায় ব্যবহার করতে পারে।

প্রতারকের আছে হিংস্র জানোয়ারের মতো উল্লাস কিন্তু প্রতারিতের কাছে থাকে সরল বিশ্বাস নিয়ে খেলার দুঃখবোধ আর চাপা ক্ষোভ।

আপনারা মশাই কেবল আবেগে ভূল জায়গায় পড়ে যাচ্ছেন

ছাত্র-ছাত্রী আর সাধারণ জনতা বেশী আবেগী। আরে বাবা, তনু নামের কেউ নেই। gasp emoticon সরকার প্রশাসন তাই বলতে চাইছে আর আপনারা অকারণ অনর্থ বকে যাচ্ছেন- তাকে ধর্ষন করে মারা হয়েছে?

দেখুন সরকার প্রশাসন তাদের জায়গায় সঠিক!!! সমস্যা হল গিয়ে- সময়ের পরিবর্তন আপনাদের খেয়াল নেই...

সরকার প্রশাসন পিছনে পড়ে থাকতে চায় না বলে তারা অনেক এগিয়ে গেছে আর আপনারা উল্টো আগের সময়ে ফিরে গিয়ে অকাট্য যুক্তি দেখাচ্ছেন।

সময়ের হিসেব কষে দেখুন আপনারা মশাই কেবল আবেগে ভূল জায়গায় পড়ে যাচ্ছেন। সরকার প্রশাসন অনেক এগিয়ে জীবিত তনু আর তার গোষ্টির পিন্ডি চটকাচ্ছে...

(কুমিল্লার ক্যান্টনম্যান্ট এলাকায় সাদিয়া জাহান তনুকে ধারনা করা হয় প্রশাসনিক লোকজন ধর্ষন করে মেরে ফেলে। কিন্তু সব বুঝেও যখন প্রশাসন চেপে গিয়ে তার পরিবার পরিজনের উপর চাপ প্রয়োগ করে তখন আমাদের মতো সাধারনের আর্তচিৎকারটাই সারমর্ম হয়। এই প্রসঙ্গে এই স্যাটোয়ার।)

ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন !

ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন !
চাইবার মতো মন থাকলে- ফুল ছুঁয়ে শিহরণ মেলে,
পাখির কাকলিতে তন্ময় জমে, অথবা সাগরের গর্জনে উল্লাস আসে।
আবার নেবার মতো অধিকার থাকলে- চেয়ে নেয়া যায়,
আহ্লাদি আবদার করা চলে, কখনও আবার কেড়ে নেয়া যায়।

পতঙ্গ ভাবনা পতঙ্গের মত, মনুষ্য ভাবনা মানুষের মত
আর জাগতিক ভাবনা জগতের মত...
পতঙ্গ আনন্দ অহরসে অনলে আত্মাহুতি দেয়,
মানুষ চিত্তোল্লাসে ধ্বংশযজ্ঞে আসক্ত হয় আর অসহ্যে জগত ধুমড়ে-মুছড়ে রুপ পাল্টায়।
না; সেযে, বলছি- ভালোবাসা দেখানো খুব সময়ই কঠিন! সেখানে ফিরি-
দেখুন; সময়ে ভালোবাসা পাথরে ফোঁটে, গোবর হতে নেমে আসে আগরের সুগন্ধি,
মোলায়েম পদ্ম ফোঁটে নোংরা দুর্গন্ধ ডোবায় আর কাঁটার আঘাতে দেহ বেড়ে বের হয় বীষ।
অনুসঙ্গ নয়, ভালোবাসার রুপ ঘাটলেও অনেক সময় বোধে আসে না।
আসলে কোনরুপে কোন ভালোবাসা কারে বাঁধে তা বোঝাবার মতো সামর্থ্য কয়জনারই বা আছে?

ভাবীর কথামতো নিলেন নাকি?

অফিসের কলিগের দুটো বাচ্চা, দুজনেই ছেলে। তাই বেচারার একটি মেয়ের শখ। ভাবীর কাছে আবদার নিয়ে গেলে, ভাবী সাফ জানিয়ে দিলেন দু‘বাচ্চার যন্ত্রণাই তিনি টিকছেন না, আবার মেয়ে?

এরপরও পুনঃ আবদার হলে- ভাবী জানায় বাচ্চা নিজের পেটে নিতে। tongue emoticon

আজ কলিগ বলছে- তার মাথা ঘুরছে, বমি-বমি লাগছে। বললাম, কি ব্যাপার বলেন তো? ভাবীর কথামতো নিলেন নাকি? gasp emoticon

মরু বালু

মরু বালু ভাবতে পারেনি আজও
বুকে নামতে পারে জলতরঙ্গ খেলা
সূর্য্য দহনলে পুড়ে বুকের মাঝে তাই
গড়ে তোলা ছলে জলতরঙ্গ বেলা

বস্তি

এখানে জীবন বাস্তবতা শেখার, কঠিন পরাভূত করার
আর জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াবার চেষ্টা বারবার!
“জীবন যেখানে আশ্রয়হীনের” - সেখানে কেউ আশ্রিত
“জীবন যেখানে যান্ত্রিকের” - সেখানে কেউ যন্ত্র
এখানে ভোগ আছে বিলাষ নেই
ক্ষমা আছে ক্ষমতা নেই
মমতা আছে মায়া নেই
বলার ভাব আছে ভাষা নেই

ছোট্টশিশু সে যেমন শীর্ণকায় নিয়ে নুন-মরিচে ক্ষুধা ভুলে
জিহ্নকায়ের বয়োবৃদ্ধও দুঃসহ পরিনতি ভেবে পথ ভুলে...

এখানে প্রতিটি দিন পার হয় যুগের আবর্তে
বেঁচে থাকা মানুষগুলো জানে তাদের গড় আয়ু শত-সহস্র
তবু বিনয়ে এদের পরাজিত করার শক্তি পাবে যে; সে মহান
এদের জীবনের রহস্য নিয়ে ভাববে, সে ত কেবল ভগবান...

শুধু চৈত্রের খরা কেটে বর্ষার ধামাকায় পড়লে
চারপাশের পচাগলায় থেকে এরা ভাবতে পারে
এখনও ত পঁচি নি! দিব্যি মানুষ বলছে লোকে!
বস্তিতেও মানুষ নামের কেউ বেঁচে
শুধু জানেনা তারা জীবন বলে কাকে?

বিশ্বাস

বিশ্বাসটাই মনের সবচেয়ে বড় খোরাক। নিত্য-নৈমত্তিক বিষয়ে যিনি যতবেশী বিশ্বাসটাকে মনে অনুধাবন করতে পারেন, তিনি ততবেশী তার মনকে দৃঢ়-প্রগাঢ় করে তুলতে সক্ষম।

যথার্থ অনুধাবন আর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্তিকে আত্মউন্নতির সর্ব্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে।

ব্যক্তিস্বাধীনতা

আমি ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে বুঝি, যেটুকু অন্যের অধিকার খর্ব না করে অথবা অন্যের উপর মানষিক চাপ সৃষ্টি না করে করা সম্ভব হয়...

প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ

যারা চিন্তা আর প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের দুনিয়া তাদের চিন্তা ধারাক্রমকে অনেক সময়ই দমবন্ধ করার পর্যায়ে নিয়ে ফেলে।

প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে সারা পৃথিবীর মানুষ। সময়-পরিবেশ-পরিস্থিতিতে প্রতিটি মানুষের চিন্তা-ভাবনায় কম-বেশী পার্থক্য থাকে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যখন প্রতিটি মানুষের চিন্তা-ভাবনার স্তরগুলোর পার্থক্য ক্রমাগত আসতে থাকে, তখন চিন্তা ভাবনায় তাড়িত মানুষগুলো অনেকবেশী ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে তার ভাবনা জগতটার পরিসর বাড়লেও হঠাৎ সম্ভাব্য ভাবনার অধিক ভাবনায় পড়ে অনেকের তাল কেটে পড়ে। ফলতঃ অনেকেই খেই হারিয়ে পদচ্যূত হয় নিজের স্বাভাবিক ভাবনা থেকেও।

চাওয়া

তোমার কাছে যেটুকু রুপ রং
কিছু কদর আছে তার আমার কাছে
তাই বলে নেউলে এনে সাপ খেলাবে
চাওয়াটা একটু বেশীই লাগছে...