রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৫

আবেগের কারণে মানুষ তার কতটা সীমানা অতিক্রম করতে পারে?

গত কয়েকদিন ধরে চোখে পড়ার মত বেশ কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করেছি, যা অপ্রত্যাশিত সত্য। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ কি পরিমান ভ্রষ্ট মানষিকতার, কতটা হীনমন্য প্রকৃতির, এরা কতটা বাপ-দাদার পরিচয়হীন তা আবার স্পষ্ট দেখা গেল।

বাংলাদেশের ভারতের সাথে হেরে যাওয়াটা অনাকাঙ্গিত ছিল। আম্পায়ারদের নষ্ট মানষিকতার ফলশ্রুতিতে হোক, কিংবা হোক জুড়ায়ি কিংবা আইসিসির ইশারায়। এই নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে অন্য আর সকলের মত আমিও বেশ আপসেট ছিলাম। সত্যিকারে বলতে গেলে এমন প্রহসণ মেনে নেয়া সকলের জন্যই বেশ কষ্টসাধ্য। কিন্তু এদেশের চোখে পড়ার মত বেজন্মাদলের মনোভাব দেখে আমার কাছে প্রহসণের ভারত জয়ের বেদনার চেয়ে এদেশে এই বেজন্মাদের সাথে এখনো ঠিক থাকাকেই বেশী অনাকাঙ্খিত মনে হচ্ছে এবং পীড়িত করছে।

খেলায় আইসিসি জোচ্চুরি করেছে, এ অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু এর মানে কি হিন্দু‘রা দোষী হয়ে গেছে? বাড়িতে-পথে-ঘাটে হিন্দুদের মানষিক কিংবা শারীরীক আঘাত কিংবা অপদস্ত করা জায়েজ হয়েছে? হিন্দুরা কি খেলায় বাংলাদেশের পক্ষে ছিল না? বাংলাদেশ দলে হিন্দুরা খেলছে না? কোন দেশে বসবাস করে সে দেশের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কাদের এবং কয়জনের পক্ষে সম্ভব? ভারতে কি কেবল হিন্দুদের বসবাস? খেলায় হার হিসেবে ভারতীয় খেলোয়ার‘রা কি দোষী? একটা খেলাই কি অন্যকে শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রধান কারণ হবে? ভারত আমাদের কে পাকিস্থানের মতো তাদের অধিনস্থ করে অত্যাচার করছে? খেলার কারণে পাকিস্থান আর ভারতের অবস্থান কি এক কাতারে চলে আসবে? আজ পাকিস্থানের মত ভারতকেও আমাদের জাত শত্রু ভাবতে হবে?

আমি মানষিকভাবে আহত হওয়ায় হয়ত বুঝতেছিনা- আবেগের কারণে মানুষ তার কতটা সীমানা অতিক্রম করতে পারে, তাই বন্ধু হিসেবে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানতে চাইছি।

সকলেই অন্যের চমৎকার মুখটিকেই কেবল দেখতে পায়

সকলেই অন্যের চমৎকার মুখটিকেই কেবল দেখতে পায়, কিন্তু সে চমৎকার মুখটি যে কতটা অপ্রাকৃত রং মেখে সেজে আছে সে কেবল দুই একজনের চোখে পড়ে ।

এখানে মুখোশ আচ্ছাদনকে মুখ ভেবে অনুভূতির রমরমা পীড়া সহ্যই কেবল পরিভ্রাজকের পরিশিষ্ট।

বঙ্গজননী

বঙ্গজননী; যতটা সহেছ তুমি
সহিতে পারি না আজও আমি

২৫‘শের কালরাত্রে শব্দহীন বলাকারা, ডানা ঝাপ্টায়
নিরবে নিগ্রহে নিঃশব্দ অবাধ্য প্রাণান্ত প্রতিরোধে
তবু; ঝরে পড়া পালক ছড়ায় বৃত্তশুদ্ধ সভ্য ভুমিতে

বঙ্গজননী; হিংস্রজানোয়ার লিকলিকে জিহ্বা আজও চোখে ভাসে
চোখ মুদতে গেলে আজও সহস্র জন্মান্তের আর্তনাদ কানে আসে
দন্তমূলে লেগে থাকা রক্ত ধারায় জানোয়াদের ভয়ার্ত্ত সে হাসি
অথচ মনবন্ধীত্বের ব্যাকুলতায় আজও সবকটা অবিশ্বাসের বেড়ী

৩০ লক্ষ শহীদের বলিদান আর ৭ লক্ষ ব্যাভিচারের পর লালসূর্য্য
যখন জানালার ফাঁক গলে একেঁ যায় তোমার গাঢ় সবুজ আঁচলে
তখন দমবদ্ধ নিঃশ্বাসে যেটুকু প্রশান্তি আসে, সে ভাষায় আসে না
শুধু মনের কথাগুলো ডাইরিতে লিখি দগদগে দাগকাটা স্মৃতি হাতরে।

দ্বিমুখীতা

ধন-সম্পদে আচ্ছাদনে থেকে ধৃতরঞ্জন বুঝতে পারে এ যতটা না সুখ দেয় তারচেয়ে বেশী পীড়িত করে। তাছাড়া একজীবনে মানুষের বিষয়-বাসনা-বৈভবের এত প্রয়োজন কি? এত আয়োজনযজ্ঞ, এত মোহসুখ, এত বালখিল্য বাৎসল্যে মজে বিন্দু-বিষর্জনের কি আর বাকী থাকে? বিবেকের তাড়নায় নিজের অনুভবে যখন নিজে বন্দি হতে থাকে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সকলের সামনে বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরে সকলকে এর মোহমুগ্ধতা থেকে বের করে আনার প্রয়াস করবেন।

ধর্মীয় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ধৃতরঞ্জন। নিজের আন্তরিক প্রচেষ্টায় যতটা সাবলিলতার সহিত তার ভাষাকে সকলের সামনে তুলে ধরা যায় তার সর্বোত্ত চেষ্টা তিনি করছেন।

সভা শেষ করে তিনি যখন দেখলেন তার বক্তব্যে মানুষের মধ্যে সাড়া পড়েছে, তখন তিনি খুশি হন। বুঝতে পারেন ধীরে-ধীরে মানুষ তা বুঝতে পারবে, নিজেদের বাসনার ভূল তাদের তাড়না করলে তারা মুক্তি চাইবে।

সভায় বিষয়-বৈভবের মোহ-বাসনা ত্যাগ করার প্রত্যয় নিয়ে সকলে বের হলেও প্রত্যহ জীবনের আরক্ত আত্মতুষ্টি যখন পীড়িত করতে থাকে, তখন প্রত্যয়গুলো প্রত্যাখ্যাত হতে থাকে। এমত অবস্থায় সবাই নিজেদের প্রত্যয় ভেঙ্গে ফেলবার কারণে অভিযোগ তুলে বলে- ধৃতরঞ্জন যে এত বড়-বড় আবেগ তাড়িত কথা বলে যাচ্ছেন তিনি কি নিজে মোহবাসনা ত্যাগ করেছেন?

মানুষের ভাষা সুস্পষ্ট হয়, এক কান দুই কান হয়ে কথাগুলো ধৃতরঞ্জনের কাছেও পৌঁছে। ধৃতরঞ্জন দেখে প্রশ্নগুলো উপেক্ষিত নয়, সত্যিই তো তিনি নিজেও এখনো মোহবাসনা মুক্ত নন। মুক্তির আশায় ধৃতরঞ্জন বৈরাগ্য বেশ ধারণের সিদ্ধান্ত নেন, আরও কঠোর সিদ্ধান্তে বদ্ধমূল ধারণ করেন- যতদিন তিনি সংশোধন না হতে পারছেন, ততদিন তিনি নির্লিপ্ত থাকবেন মানুষের সান্নিধ্য হতে।

সাধনার প্রাথমিক প্রদক্ষেপে পা রেখেছেন ধৃতরঞ্জন, নিজের আত্মশুদ্ধতার প্রশ্নে তিনি বিষয়-বৈভব থেকে মুক্তির চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু যখনই তার চেষ্টা শুরু হয় তখনই তিনি দেখেন- যদিও মানবজীবনের দুঃখ-দূর্দশার মূল কারণ বিষয়-বৈভব, তবুও এর থেকে মুক্তি এতটা সহজসাধ্য নয়। তিনি দেখেন যতই তিনি মুক্তির চেষ্টা করছেন, ততই যেন তার বন্ধনের তাড়না আরো পোক্ত হচ্ছে। স্থুল হেম আর মূখ্য কাম জাগতিক বাসনায় আরো প্রলুব্ধ করে চলছে।

ব্যর্থ ধৃতরঞ্জন!

ধৃতরঞ্জন বুঝলেন অঢেল সম্পদে আসক্তি কমে ঠিকই, কিন্তু জন্মস্থুল বাসনা দমে না। জীবনের প্রতিটি স্তর দ্বি-মুখী, এখানে মানুষের জীবনটাই দ্বি-মুখীতায় পরিপূর্ণ।

মনের অবস্থা বুঝতে পারছি না

মনের অবস্থা বুঝতে পারছি না। অকারণ অহেতুক পথে পায়চারী করে দিন কেটে যাচ্ছে...
ভেবে ব্যকুল হই যখন সামনে দেখি- প্রত্যাশিত কিংবা প্রকাশিত গন্তব্য অননুমেয়....

সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০১৫

প্রণতি

মদমগ্নতায় দেহভরা জঞ্জাল, মগজজুড়ে স্বার্থের খুনসুটি
লালসায় লালাভ লিপ্সার জিহ্বা, মায়ার মোহতলে ছুটি


পথের কংকরে প্রাসাদ হয়েছে, পড়েছে দেহে রঙ্গের আচড়
বিষমে বিবর্ণ রং ছুঁয়ে দিলে, খুঁজে ফিরি আপন পর

জীবন জোয়ারে যৌবণ খুঁড়ে, পড়ি আজ পথে প্রান্তরে
দিনগুলো তাই যায় কেঁদে যায়, ভরা বসন্তের অন্তরে

আজ প্রণতি করিহে প্রভূ, বাসনায় রচি রাঙ্গা চরণ
ভক্তির বাৎসলে ভাঙ্গে দম্ভ, অহংকার চূর্ণ সিক্ত নয়ন

শোন বাংলার জয়ধ্বনি

বিশ্বাসে ভরা মন, ভরসায় ছড়িয়ে দিয়েছে হাত
এগারো জোড়া হাতে ১৬ কোটি প্রাণের বাজিমাত
জয় হবে হবেই প্রাণের স্পন্দনে বাজে সে ধ্বনি
কান পেতে শোন ঐ শোন বাংলার জয়ধ্বনি ।।

চাইলেই

চাইলেই হতে পার ঘরনী আমার
চাইলেই হতে পার আমার সংসার
চাইলেই নিতে পার আমার ঠিকাদারী
চাইলেই করতে পার আমাকে তোমারি, আমাকে তোমারি

চাইলেই চাও প্রিয় হই একাকার
ভবঘুরে পথিকের হবে সংসার
চাইলেই নিয়ে যাও ধরে দুই হাত
চাঁদনীর এ স্নাতে পথে কাটুক রাত
চাইলেই করে নাও মনের জিম্মাদারি
প্রেমের শক্তিতে আজ প্রেম হোক ভারি, প্রেম হোক ভারি

চাইলেই হতে পার অথৈই সাগর
পাড় ভেঙ্গে মাঝ বুকে হব প্রেমের চর
চাইলেই হতে পার খোলসের ঝিনুক
গহীরের মুক্তো হয়ে লবিব সুখ
চাইলেই হও প্রিয় প্রেমের কোষাগার
প্রেমের ঋণে কোষাগারে উঠুক পাহাড়, হোক পাহাড়

চাইলেই হতে পার বালিশ ঘুমের
গোপনে সব কথা হবে মনের
চাইলেই হতে পার পতঙ্গের ফুল
কুঞ্জমাল্যে আসুক প্রেমের মুকুল
চাইলেই চাও প্রিয় রাখগো অন্তরে
জাতিষ্মরের মোহে বাঁধি আপনারে, বাঁধি আপনারে

শ্রমিক অসন্তোষ

শ্রমিক অসন্তোষের জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী মালিক পক্ষের বিক্ষিপ্ত মনোভাব, উদাসিণ্যতা, অফিসের প্রথমশ্রেনীর উপর অতিরিক্ত বিশ্বাস কিংবা তাদের বাড়তি সুবিধা অর্পণ, অফিসে শ্রমিকশ্রেনীর শ্রেনীগত বৈষম্য সৃষ্টি এবং কাউকে নিজ দায়দায়িত্বের বাহিরে অতিরিক্ত কাজ ছাপিয়ে তার থেকে বাড়তি সুযোগ নেবার পয়তারা।

যেমন আমার অফিসের পিয়ন, তাকে পিয়নের কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হলেও তাকে উপরের শ্রেনী নিজেদের কাজে লাগিয়ে নিজেরা বসে-বসে গায়ে বাতাস মাখে। নিজের অবস্থান ভেবে সে প্রথম-প্রথম সে কাজটি যথাযথ করে যাবে ঠিকই। কিন্তু যখন তার মনে অনিচ্ছা তৈরী হবে, অতিরিক্ত বোঝা বইতে সে অসমর্থ হবে, কিংবা তার আপনকার মনে প্রশ্ন উৎপন্ন হবে, এই কাজটি ত তার না, তাহলে সে কি করবে? কেন অন্যরা তাকে দিয়ে সুবিধা নেবার চেষ্টা করবে? তখনই তার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিরোধ হিসেবে জাগ্রত হবে প্রতিবাদ করার ভাষা। আর সে যখনই প্রতিবাদে সোচ্চার হবে, যখনই উপরের শ্রেনী তাকে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হবে, তখনই তারাও রিএ্যাক্ট করা শুরু করবে। মালিক পক্ষের সাথে কানাঘুষা শুরু করবে। ফলশ্রুতিতে শ্রমিক তার চাকুরী হারাবে তীব্র অসন্তুষ্টি ও আত্মগ্লানি নিয়ে।

মোহসুখ

অন্ধকার এলে ঘনিয়ে
ফেরে সবাই আপন নীড়ে
উড়ণচন্ডী মতিভ্রম আমার
নীড়ের ঠিকানা পথেরপরে

অধিক ভাবি না; তাতেই নীড় গড়ি
রঙ্গিন দুনিয়ার ফাঁদে পড়ি
বদ্ধ নিয়তির নিশান তলে
দিনগুলো হেসে দেয় গড়াগড়ি

ভূখাপেটে বালিতে মেটে স্বাদ,
জলে মিটে যায় পেটের দুখ
অম্বরতলে এমন বাঁচা-মরায়,
জাগতিক ঘৃণায় নাশ মোহসুখ।

হয়েছে ঘুমের অন্তিম সমাধি

হয়েছে ঘুমের অন্তিম সমাধি
রাতগুলো তাই জেগে-জেগে কাটি....

লাভের অংশটি অমীমাংসিত যন্ত্রণা

লাভ-ক্ষতির হিসেব মিলিয়ে কি হবে?
ক্ষতি যার হয়, তার লাভের অংশটি যে অমীমাংসিত যন্ত্রণা....

বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বিষয়ক

ধর্ম কাকে বলে?
ধর্ম বিষয়ে সকলের করণীয় কি?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কাকে বলে?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কখন হয়?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কেন হয়?
ধর্ম পালনকারি বলে জানা- ধর্মীয় গুরুরা যখন অন্য ধর্ম নিয়ে বাজে আলোচনা করে, তাকে আমরা প্রতিহত করি?
নাকি অন্যধর্মে কটাক্ষে বা খারাপ আলোচনায় নিজেদের শরীর ওম করি?
নাস্তিকতা শব্দের অর্থ কি?
নাস্তিক কে বা কারা?
আমি হিন্দুধর্মের অনুসারি, ধর্ম বলে বিধর্মীরা নাস্তিক, তার মানে কি আমার ধর্মে আমার বিশ্বাস থাকা শর্তেও আমি নাস্তিক?
- উল্লেখিত প্রশ্নগুলোর উত্তরগুলো ভাবতে চেষ্টা কর, তাহলে কোনটিকেই বাড়াবাড়ি মনে হবে না।

এবার ধর্ম বিষয়ে আমার বিশ্লেষনটা বলি-
আমি মনে করি যা আমার চেতনায় ধারণ সম্পন্ন তাই আমার ধর্ম। আমার জ্ঞাণে আমি যেটিকে যথার্থ ভাবব, সেটাই আমার ধর্ম। হাজার বাধা শর্তেও আমি যে বিশ্বাসে অটল থাকতে পারব, সেটাই আমার ধর্ম। আমি হিন্দু, আমার বিশ্বাসের বদ্ধমুলে- শ্রীমদ্ ভগবত গীতা, বেদ, রামায়ন, মহাভারত, অতএব এগুলো নিয়মনীতির যথার্থ অনুসরণই আমার ধর্ম।

এখন এমন যদি হয় কেউ একজন আমার ধর্ম নিয়ে আমাকে কটাক্ষ করে, আমি তার জবাব অস্ত্রদিয়ে কিংবা গালি দিয়ে দেব না। কেননা; এই দুটোই ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। মানুষ তখনই ক্রোধিত হয়, যখন কোন বিষয় তার আচারের বিপক্ষে যায় এবং সে বিষয়ে তার দূর্বলতা থাকে। যখনই কারো কটাক্ষের জবাব দেবার মতো আমার যথেষ্ঠ জ্ঞাণ থাকবে না, তখনই বাড়াবাড়ির বিষয়টি আসবে। আর বাড়াবাড়িটা তখনই চরম আকার ধারণ করবে, যখন আমি সদিচ্ছায় আমার ধর্ম বিষয়ে কটাক্ষকারীদের যথার্থ উত্তর প্রদর্শণ করতে না পারব। তাহলে বিষয়টি কি দাঁড়াল-

বিষয়টি দাঁড়াল ধর্ম বিষয়ে আমার অজ্ঞতাই আমার ক্রোধের কারণ, আমার পরিমিত জ্ঞানের জন্য বা আমার না জানা থাকায়, আমি কাউকে নাস্তিক উপাধি দিচ্ছি। অথচ ধর্ম নির্দেশ করছে, ধর্মগ্রন্থে আছে জীবন-ধারণের পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধান।

নাস্তিকরা ধর্ম বিষয়ে ঘেঁটে-ঘেঁটে ধর্মীয় দূর্বল দিক বের করে তা নিয়ে আলোচন করে, কিন্তু আমরা যারা ধর্ম বিশ্বাস করি হৃদয় হতে, আমরা জানি প্রত্যেকটি কারণের প্রাসঙ্গিক কোন ব্যাখ্যা আছে। যখন কেউ ধর্মীয় দূর্বলতা খুঁজে তা নিয়ে আলোচনায় আসবে, বিশ্বাসীদের উচিত সে বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে জবাব দেয়া।

কিন্তু আমরা কি করছি? যাদের নাস্তিক বলে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করছি, তাদের মতও কি আমরা আমাদের নিজেদের ধর্মটাকে খোঁজার চেষ্টা করছি? ধর্মীয় বিষয়ে নিজেদের দূর্বল জ্ঞাণের জন্য আমরা অন্যের জ্ঞাণ বিশ্লেষণকে অস্ত্রতে কেটে ফেলে দেব?
এটা কি উগ্রতা নয়?
ধর্ম কি আমাদের এ শিক্ষাই দেয়?
যদি ধর্ম এই শিক্ষাই দেয়, তবে সে ধর্মের প্রতি বিশ্বাসের অবস্থানটুকু কতটা স্থাপিত হয় বা ভবিষতে হবে?
ধর্মগ্রন্থে কি উল্লেখ নেই, মৃত্যুর আগেও যদি কেউ ধর্ম যথার্থ অনুসারী হয়, তাকে স্রষ্টা ক্ষমা করেন?
তবে- কতটুকু যৌক্তিকতায় আমরা কাউকে খুন করে দিচ্ছি?

ধর্মে স্পষ্টত উল্লেখ আছে, পৃথিবীতে একদিন পাপ-অনাচার বেড়ে যাবে, সময়ে পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, তবে নিজেরা ধর্মটাকে সঠিকভাবে ধারণ না করে, অন্যকে ধর্ম পথে ফেরাবার বদলে তাকে খুন করে কি আমরা ধর্মকে রক্ষার মতো নির্বুদ্ধ সাহস দেখাচ্ছি না? নিজেদের অজ্ঞতায় কি আমরা ধর্ম পালন বাদ দিয়ে অধর্ম করছি না?

প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি প্রত্যাশা করছি বন্ধু‘রা.....

আমার কয়েকটি প্রশ্ন

আমার কয়েকটি প্রশ্ন- দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ যে সকল হুজুরেরা ওয়াজে যান এবং ওয়াজে গিয়ে অন্যধর্ম কিংবা রাজনীতিক ইস্যুকে টেনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন,

তাদের উদ্দেশ্য কি?
তাদের ওয়াজে যারা যান ওয়াজ শুনতে তাদের শোনার ইচ্ছে টা কি?
আর রাজনীতি কিংবা অন্যের ধর্মকে নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টিটাই ওয়াজ?
নাকি সেখানে বলার বিষয়গুলোই ধর্ম?

বাসনা প্রকট হলে

বাসনা প্রকট হলে ভালোবাসার জন্য জীবন দিতে যেমন দ্বীধা থাকে না, তেমনি-
ক্ষুন্ন বাসনায় ভালোবাসার মানুষটিকে খুন করতেও কোন দ্বীধা থাকে না।

বয়স যখন আবেগী

বয়স যখন আবেগী তখন ভালোবাসার জন্য সুন্দর সুদর্শন ছেলেটিকে কিংবা সুশ্রী মেয়েটিকে প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় সাহস করে ভালোবাসার কথাটি বলে ফেলা ছেলেটির, সহজে মিশতে জানা চপল মেয়েটির।

আসলে মানুষ মন থেকে সুদর্শন কিংবা সুশ্রী কাউকে কামনা করলেও-

যে তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়, সে তাকে ধীরে-ধীরে তার হৃদয়ের অনুভবে আশ্রয় দিতে থাকে, ভালো লাগার আবেশে তার মধ্যেকার ভালোটাকে বের করতে থাকে, অবশেষে একদিন তাকে ভালোবেসে ফেলে।

এটাই বড় সত্য...

নিজের দম্ভ কিংবা অহংকারকে টিকিয়ে রাখতে সবার আগে যেটা প্রয়োজন, সেটা হল- আপনার দম্ভ বা অহংকারের জায়গাটাকে শক্ত ভীটের উপর দাঁড় করানো। যদি তা না করতে পারেন-

তবে আপনার অস্তিত্ব সংকটের দায়ভার আপনাকে উগ্র করে তুলবে এ স্বাভাবিক, আর এই উগ্রতা আপনাকে পশু পর্যায়ে নিয়ে ফেলবে এটাই বড় সত্য।

কারও সাথে আপনার মতাদর্শের অমিল সে থাকতেই পারে

কারও সাথে আপনার মতাদর্শের অমিল সে থাকতেই পারে। কিন্তু আপনি যখন তার মতাদর্শের বিপক্ষে গিয়ে নিজের মতাদর্শকে স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়ে তাকে খুন করে দিলেন-

তার মানে কি দাঁড়াল?

এর মানে ত আপনি তাকে আপনার মতাদর্শ জানাতে অসমর্থ্য অথবা আপনার মতাদর্শ ভিত্তিহীন। আর তাই তাকে খুন করার মাধ্যমে আপনি তার মতাদর্শকে সত্য বলে স্থাপন করে দিলেন।

পৌঁড়া হৃদয় কি করে পরকালে বেহেস্তের প্রত্যাশা করবে?

যখন পরকালের বেহস্ত প্রত্যাশী ধার্মিকের ধর্ম তোপে সকলের ইহকালটাই নরক হয়ে পড়ে, তখন ইহকালের নরকের অনলে পুড়ে, পৌঁড়া হৃদয় কি করে পরকালে বেহেস্তের প্রত্যাশা করবে?

বিশ্বাস, সৃষ্টি কিংবা সামগ্রিকতা কি থামিয়ে দেয়া সম্ভব

হাত হতে হাতের কলম কেড়ে নেয়া যায়, হাতের আঙ্গুল কেটে লেখা বন্ধ করানো প্রয়াস করা যায়, ব্যাক্তিটাকে খুন করে তাকে থামানো চেষ্টা করানো যায়। কিন্তু তার বিশ্বাস, তার সৃষ্টি কিংবা সামগ্রিকতা কি থামিয়ে দেয়া সম্ভব? যে সৃষ্টিগুলোকে সে দিনের পর দিন আগলে রেখে বড় করে তুলেছে, তাদেরকে রাতা-রাতি স্তব্ধ করে দেবে কার সে সাধ্য? সত্য কি বলে? ইতিহাস কি সাক্ষ্য দেয়?

উম্মাদনা দিয়ে সবকিছু কি থামিয়ে দেয়া সম্ভব? হুমায়ুন আজাদ থেমে গেছে? হুমায়ুন আজাদকে থামিয়ে রাখা সম্ভব হয় নি, ৫০ বছর পরও সম্ভব হবে না, অভিজিৎ রায়কেও যেভাবে থামিয়ে দিয়ে ভেবেছে অভিজিৎ রায় থেমে গেছে, তারা অবোধ, আবাল, তীর্যক দৃষ্টিশূণ্য খোয়াড়ের বলদ।

লেখার ভাষাকে লেখার ভাষায় জবাব দিতে হয়, কলমের ভাষার জবাবে যারা অস্ত্র হাতে নেয় এরা কখনো মানুষ হতে পারে না। মানুষের মাঝে বিবেক থাকবে, বিবেকের তাড়না থাকবে, সে সত্য-মিথ্যা অনুধাবণ করবে, সে খুঁজবে, জানবে, নিজের লালিত মতাদর্শকে টিকিয়ে রাখতে যথার্থতার সাহার্য্য নেবে। কিন্তু নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে টিকাতে না পেরে, ব্যাক্তিটাকেই মেরে ফেলার চেষ্টা করবে না। কেননা; অন্যায়ভাবে তার ঝরানো রক্তের উপর যে লক্ষ ব্যাক্তিরা জন্মাবে, তাদের মেরে ফেলা এতটা সহজতর হবে না।

উগ্রবাদীরা আসলে কি ভাবছে

উগ্রবাদীরা আসলে কি ভাবছে? তারা নিজেদের কথাকে, ভাষাকে জোর জবরদস্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করবে? এটা কি সম্ভব নাকি? যদি সবকিছু জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হত, তবে তারাতো এতদিনে চালকের আসনে চলে যেত। অথচ তারা নিতান্তই কাপুরুষের ন্যায়, বদ্ধমাতালের ন্যায়, মনুষ্যত্বহীন বর্জিত হয়ে পিছন থেকে মেরে দিয়ে যাচ্ছে।

ওহে ধর্মান্ধ উগ্রবাদী মাতাল শুয়রের দল, তোমাদের এমন হীন কর্মকান্ড আমাদের মত মানুষদের ধর্ম বিশ্বাসে প্রতিনিয়ত আঘাত করে যাচ্ছে। তোমাদের বিশ্বাসটাকে যদি তোমরা প্রতিষ্ঠা করার পারঙ্গমতা দেখানোর পরিবর্তে অন্যের বিশ্বাসের কাছে হেরে তাকে শেষ করে দেবার প্রয়াস কর, তবে তোমরা কিসের বালছাল ধার্মিক হলে। তোমাদের তো নেড়ি কুকুর হবার কথা ছিল? একসাথে পায়খানার কক্ষে ডুকে মল ছাটবার কথা ছিল।

এবার কি শব্দ`রা মৌণ হবে

অস্ত্রদিয়ে রক্তের দাগ টেনে-টেনে
তবে কি মুখের ভাষা বন্ধ হবে?
হুমায়ুন আজাদ গেল, রাজীব গেল, অভিজিৎ গেল
এবার কি শব্দ`রা মৌণ হবে?

অনুবাদের দায়িত্ব কাদের হাতে দেয়া হয়েছে

প্রথম আলোর পত্রিকা হতে জানতে পারলাম, গুগল অনুবাদকে ইংরেজী থেকে যথাযথ বাংলায় পরিবর্তনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে এ ধরণের কাজ সবসময় ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বিষয় হল- এই অনুবাদের দায়িত্ব কাদের হাতে দেয়া হয়েছে? অথবা কারা এটা করবে?

এটা কি কম্পিউটার প্রকৌশলীরা করবে? শিক্ষার্থী‘রা করবে? শিক্ষক‘রা করবে? বিদ্বানজন‘রা করবে? নাকি যারা অনুবাদে সমর্থ্য তারা করবে?

আমি জানি না কারা করবে- তবে যখন দেখী অনুবাদকের অনুবাদগুলো নিন্মে দেওয়া অনুবাদের মত হয়, তখন কষ্ট না পেয়ে কিংবা কিছু না বলে থাকতে পারি নাঃ

১) (i broke my leg) অনুবাদকের অনুবাদ (আমি আমার পা ভেঙ্গে)
২) (city ville) অনুবাদকের অনুবাদ (শহর Ville)
৩) (i love cheese) অনুবাদকের অনুবাদ (আমি পনির প্রেম)
৪) (winter is comming) অনুবাদকের অনুবাদ (শীতকালীন comming হয়)
৫) (live your life and forget your age) অনুবাদকের অনুবাদ (আপনার জীবন এবং আপনার বয়স ভুলবেন)

এ অনুবাদগুলো কি কেউ করছে নাকি Google Translate এ অনুবাদ করে আবার দিয়ে দিচ্ছে? বুঝতেছি না, বুঝতে পারছিনা। শুধু ভাবছি- নববর্ষের মধ্যে যখন ১০ লক্ষ শব্দ অনুবাদের প্রত্যয় পোষণ করা হয়, তখন বোধহয় তড়িঘড়ি করতে গিয়ে এসবই করতে হয়।

আমার প্রিয় অনুবাদক ভাইয়েরা দয়া করে আপনারা তড়িঘড়ি করে আপনাদের প্রত্যয়টাকে আমাদের না দেখিয়ে, আমরা যেন সত্যিকার অর্থে বাংলা থেকে ইংরেজীতে কিংবা ইংরেজী থেকে বাংলাতে সঠিক ও গ্রহণযোগ্য অনুবাদ পাই, তার জন্য চেষ্টা অব্যহত রাখুন। আপনাদের পরিশ্রমকে যথাযথ কাজে লাগান। আর যদি শুধূ প্রত্যয়কে কাজে লাগাতে কিংবা নিজেদের মাহার্ত্ম্য দেখাতে কাজ করেন, তবে অনুরোধ করব সরে পড়েন। আপনাদের নকলবাজি অনুবাদ আমরা চাই না।