বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭

প্রদীপ আর সুবাস হও

 প্রদীপ হও
সলতে হয়ে জ্বলি তোমার মাঝ
জ্বলুক এ দেহখানি
তুমি নাও আঁচ
বিশ্বভুবন আলোর সুখে পাক
তপ্তদহন শ্বাস!


সুবাস হও
আগর হয়ে দহে-দহে যাই
উড়বার আগে আঁচটুকু নাও
বোঝ কতটা জ্বলছি তাই
বিশ্বভুবন মজুক সুখে
সুরভিত বিশুদ্ধতায়...

শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭

ভেজে লাজ

পরিস্থিতি যখন বিপরীতে-
আকাশ যখন মেঘের সুখে!
তখন আমি লাজ হেরি সে কার দুয়ারে?
ভেজা আমি, ভেজা বসন
ভেজে লাজ নিজে লজ্জা হেরে!

শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৭

অপরাধ

 চূড়ান্ত ফুলগুলো ঝরে গেলে, নিস্ফলা বৃক্ষের নির্জীব নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকাও অপরাধ বলে মনে হয়!

মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭

মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রাতগুলো কেমন জানি

 এভাবে বসে-বসে কত রাত পার করে দিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। জীবনের রাতগুলো কেমন জানি, মাঝে-মাঝেই অস্থির করে তোলে!

সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

পথগুলো কঠিন বলেই

 পথগুলো কঠিন বলেই-

অভিযোগ রেখে অনুযোগ করি,
অভিমান জমিয়ে রেখে পথ দেই পাড়ি।

কান্না নাকি চোখের নোনা?

মনের অজান্তেই নেমে আসে শ্রাবনধারার বৃষ্টি!
কেউ জানে না-
একি আকাশের কান্না নাকি চোখের নোনা?

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বাস্তবতা

 দুনিয়া সংসার এমন এক রঙ্গমঞ্চ, যেখানে-
ভালো অভিনেতাকে আদর্শ মনে হয়,
নীতিহীনকে কৌশলী মনে হয়,
ঠকবাজকে চালাক মনে হয়,
মিথ্যেবাদী প্রতারককে ধূর্ত মনে হয়,
রং চঙে সাজা বাগ্মীকে সুখী মনে হয়,
ঝামেলা এড়িয়ে চলা জনকে বোকা মনে হয়,
সত্য উন্মোচনকারীকে পাগল মনে হয়,
সত্যভাষীকে নিঃসঙ্গ মনে হয়,
আর অসহায়ত্বকে সবচেয়ে বড় দূর্বলতা মনে হয়।

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

কেউ যদি না জানে

কেউ যদি না জানে সখা
আছ কতটা সত্ত্বা জুড়ে
কি করে জানিবে সবে
এ বিষন্ন বিকেল ছুঁয়ে?

কে জানে কার পানে চেয়ে

কে জানে কার পানে চেয়ে
ফোটে বনফুল
কামিনী-মাধবী-দোপাটি
সাঁঝের বকুল।।

শিশির ভিজিয়ে দিলে
গোলাপের ঢালি
প্রভাতে শিউলি কুড়োয়
কোন বনমালি।
কোন ফুলে সে কার অনুরাগ
বিরহ ব্যাকুল (গো)
কে জানে কার পানে চেয়ে
ফোটে বনফুল।।

ফোটে ঐ বনফুল
বনের ধারে
মনে কেন কানাকানি
মধু হেরিবারে।
জানিনে কার আসায় সে কে
ছড়ালো মুকুল (গো)
কে জানে কার পানে চেয়ে
ফোটে বনফুল।।

মানবতারই জয় হবে

স্বপ্নহীন আমি আশায় বাঁচি, একদিন পৃথিবী মানুষেরই হবে। সব শেষে মানবতারই জয় হবে।

মায়া, মমতা আর মানবতা

মায়া, মমতা আর মানবতা সব একইসুতোয় বাঁধা। কাউকে আপন মনে না হলে- মানুষ তাকে মিথ্যে করেই তা দেয়। মিথ্যে তোষনেই অন্যকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে।

মানুষ ব্যক্তিটাই যদি অন্যকে মানুষ হিসেবে পরিগনিত করতে অক্ষম হয়! যদি ব্যক্তিসত্ত্বা ব্যক্তিকে জাতী ধর্মের উর্দ্ধে দাঁড় করাতে সক্ষম না হয়! তবে মানবতা নামক শব্দটাই একপ্রকার ভাড়ামো। আর তা দেখাতে চাওয়া সবাই মুখোসধারী, কপট, ভন্ড, প্রতারক। যারা করুনার ডালিতে রঙ্গিন পসরা সাজিয়ে নিজেকে মহান সাজাবার চেষ্টা চালায়।

অশ্রু বর্ষনে

অপেক্ষার প্রহর বড় মধুময়...
অশ্রু বর্ষনে লবনাক্ত হয়...

নিয়ামক

ভুল বুঝতে কিংবা বোঝাতে একটা নিয়ামকই যথেষ্ট!

সারাজীবন নিজেকে দহে অর্জিত ভালোবাসাটুকুও এক নিমিষে মিথ্যে নিরর্থক করে দিতে পারে, শুধু একটা প্রভাবক। আর অশ্রদ্ধা অবিশ্বাস এ ত সারাজীবনের অংশিদারিত্বে তদারকি করে বেড়ায় নিত্যদিন।

অনুধাবন

ঝিনুকের মুক্তোর মতো হৃদয়ের গহীনে লুকায়িত ভালোবাসার মুক্তোটি! অনুধাবন ব্যতীত এর ঘনত্ব কিংবা গভীরতা নির্ণয় সু-কঠিন।

উম্

একের শরীরের উম্ অন্যকে উদ্দীপ্ত করে, নব জীবনের স্বীকৃতি দেয়।

ভাবনা

সাজিতে-গুছিতে আমার গেল দিনমান
কেমনে হবে তবে মুশকিল আসান

স্বীকার ও স্বীকৃতি

কেউ হাতটা বাড়িয়ে না দিলে পায়ের কদমগুলো সেখানেই জমে পড়ত।

স্বীকার কিংবা স্বীকৃতিটাকে পড়তে চাই না, নির্দ্বিধায় নিশ্চিত হয়েই বলতে চাই- কেউ হাতটা বাড়িয়ে না দিলে আপনার বড়াই-অহংকার যেমন স্বীকৃতি পেত না, তেমনি মুক্তির পথটাও আরও সন্নিকট হত।

ভবঘুরে!!!

কিছুটা হারিয়ে আছি কাজের ঘোরে,
কিছুটা নিজের ঘোরে।
আড়াল হলে শুনি বলে লোকে-
আমি নাকি ভবঘুরে!!!

উপযুক্ততা নির্ণয়

দর কষাকষি করে উপযুক্ততা নির্ণয় করা যায় না, অথচ আহম্মকের মতো সে কাজটিই আমরা প্রতিনিয়ত করে বেড়াই।

বিনিময়

এটাই শেষ লড়াই, শেষ আর্তনাদ। এরপর কেবল নিশ্চল দেহটিকে টুকরো-টুকরো করার পালা।
একের আনন্দ বিনিময় হয় অন্যের জীবন বলিদানে!

কি মিলেছে

ধ্রুবতাঁরা!
আকাশ হতে চেয়েছিলে সংঘাতে
দুনিয়া জানতে চায়নি
কি মিলেছে প্রভাতের বিধূর বৈরি সংকটে?

আবেগ ও জীবন

হ্যাঁ; আবেগ সাময়িক। কিন্তু জীবন! একে সাময়িক শেকলে আটকানো যায় না। আবেগের ঘোর সময়ের চৌ-কাঠ ফেরুলেই খানিকটা কেটে যায় কিন্তু পায়ের প্রতিটি কদমে নিজেকে সামলায়ে জীবনের যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের ফলাফল মিলাতে হয়।

আর একটা কঠিন, তবে জীবনের জন্য অপরিহার্য্য। কিছু পেতে কিছু হারাতে হয়। দু'টো আকড়ে রাখতে গেলে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।

যতই চাস

পথ তোকে পথবেড়ী পরিয়ে
ঠাঁই রাস্তায় রাখব দাঁড়
তুই যতই চাস করতে
আমা হতে ছন্ন ছাড়।

বোধ-বসবাস

সবুজ তুই না বুঝে আমায়
কেন এত পৌহাস
আমার ধ্যান-মান সব পড়ে রয়
তোর বুকে করতে বাস।

প্রাপ্তী-অপ্রাপ্তী

সবুজ তোকে গিলে খাব বলে
তোর গীত গাই
আমার মাতাল হবার আগে গিলে নে তুই
বিঘোর অমবশ্যায়।

বাহির-ঘর

কবিতাকে ভালোবেসে
ঘর ছেড়েছি কবে
কোন ঔশ্বরির ঝলকে পড়ে
ফিরলাম ঘরে তবে?

জিজ্ঞাসা

অন্যকে ভাবতে গিয়ে মানুষ না হয় হিমশিম খায়
মানুষ সারাজীবন ভেবে আপনাকে কি চিনতে পায়?

সুখ!!!

সবে বলে- টাকায় নাকি সুখ কেনা চলে,
অথচ তিনি টাকার বিছানা ফেলে
ঝুল বারান্দায় ঝুলে গেলেন চির নিদ্রায়।

অনুভব আর জীবন

রাজপ্রসাদে থেকে সর্ব্বোচ্চ মাটিরঘরে থাকার সুখ অনুভব করা যায়, থাকা যায় না।

ঔরসের ওজন মাপতে অক্ষম

পত্নীতলায় বহু বেদুঈনের জন্ম হয় কিন্তু সে বেদুঈনের পিতা আপন ঔরসের ওজন মাপতে অক্ষম।

আমি যা

বে-খেয়ালি জীবনকে হেয়ালির খেয়াল পরিয়ে লাভ কি?
তারচে আমি যা তাই বলে ফেরা ভালো।

ভাগ

স্নেহ-সান্নিধ্য আর ভালোবাসার ভাগ কেউই সেচ্ছায় ছাড়তে রাজি নয়। তাইতো সকলে ভালোবাসার মানুষটিকে আকড়ে রাখতে চায়, শক্ত শিকলে বেঁধে রাখার মনোভাব পোষন করে। আর ব্যর্থতায় ভালোবাসার মানুষটিকেই ভাগ করতে বসে যায়। অথচ এই হিসেবের ভাগে পড়ে যে মানুষটি বিভাজিত কিংবা খন্ডিত-বিখন্ডিত হচ্ছে, তার যন্ত্রনাটুকু কেউ অন্বেষণ করার প্রয়োজনও বোধ না।

পবিত্র চরিত্র

আহা! বাহ! বাহ!
দেখতে কি চমৎকার
পুরুষ পবিত্র চরিত্র পায়
নারী সন্তান নিয়ে ছাড়লে সংসার।

সৌন্দর্য আর যোগ্যতা এক জিনিস নয়

সৌন্দর্য আর যোগ্যতা এক জিনিস নয়! সৌন্দর্য অন্যকে বিমোহিত করে, যোগ্যতা প্রশংসিত করে।
এর একটা প্রকৃতির দান অন্যটি অর্জন। তাই সৌন্দর্য নিয়ে আত্মভিমান অনেকটা দানের টাকায় রাজসভা করার মতো।
ফুলের মতো সৌন্দর্যও কিছুদিন পর মলিন হতে থাকে কিন্তু যোগ্যতা ব্যক্তিকে আরও পরিনত করে তোলে।

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

না হলে

চোখে চেয়ে থাক অবিরাম, জেনো এর ভাষা রপ্ত করার কৌশল শিখতে হয়। না হলে সংগীত তাল হারায় আর জীবন থেমে যায়।

পুরুষ নিজেরাই নিজেদের দোষ বুঝতে অক্ষম

দুটোই সাময়িক নেশা- এক নারী দুই সম্পদ!
অথচ দুনিয়ার সমস্ত লড়াই এই দুটোকে কেন্দ্র করে।

আপত দৃষ্টিতে দেখলে যদিও মনে হয়, সম্পদ আর নারীই সমস্ত লড়াইয়ের মূল কিন্তু সামগ্রিক বিবেচনা দেখা যায় এর কেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত কিন্তু পুরুষই। দুনিয়ার সমস্ত কাজে এরা "ধরি মাছ না ছুই পানি" মানষিকতায় থাকায়, এরা নিজেরাই নিজেদের দোষ বুঝতে অক্ষম।

মাপবে কোন মন্ত্রে?

বুকের স্পন্দন সে না হয় মেপে দিলে যন্ত্রে
মনের তীব্র স্পন্দন সে মাপবে কোন মন্ত্রে?

যথার্থ্য স্থির ব্যক্তি

যে হেরে অভ্যস্ত- পরাজয় তাকে যেমন সঙ্কিত করে না, জয়েও সে নিরুত্তাপ থাকে।
- এটাই স্থিরতা। যথার্থ্য স্থির ব্যক্তি আলোক দ্যূতি ছড়ায় জীবন ও জগতের কল্যানে।

আমার মতো বাঁচি আমি

যে জানে খোঁজে আমায়
যে চেনে সে চায়
আমার মতো বাঁচি আমি
অর্ধমৃত কবিতায়।

ছায়া হরিন, মায়া হরিন

ছায়া হরিন ছায়া ফেলে
দৌড়ায় বন বাদাড়ে
মায়া হরিন সম্মোহন জালে
বাঁধে অঘোর ঘোরে।

বুঝবে মরিলে তলে

উতলা হইও না সখী
নামিতে প্রেম জলে
গভীরে তার কি সুধা সুখ
বুঝবে মরিলে তলে।

আমি হীরে-পান্না যাচাই করতে পারি না বিধায়

আমি হীরে-পান্না যাচাই করতে পারি না বিধায় সৈকত তটে ঝিনুক কুড়িয়ে ফিরি।
কুড়িয়ে পাওয়া ঝিনুকে নিজেকে নিজের মতো সাজিয়ে সুখবোধ করি।

আগ্রহ

ভালোবেসে চেয়েছি বাহুডোর
পরে শাঁখা কপালে সিঁদুর
বাহুবলয়ে তোমার সাধ মিটিলে
খুঁজতে চাইলে বিবর্ণ মধুর

জীবনটা ছেলেখেলা নয়!

জীবনটা ছেলেখেলা নয়! ইচ্ছেমত পুতুল গড়তে না পারলেও তা দিয়ে খেলা চালিয়ে নিয়ে খেলা শেষে তা ভেঙ্গে ফেলে দেবে।

অভয়

হাতখানি না রাখিলে তাল
হয়ে যাই আমি বেসামাল...

সমন্ধ

মনে সুবাস মেলে না মেলে
আগর শেষ হয় জ্বলে
হৃদয়ের উত্তাপ টের পাও না পাও
মোম শেষ হয় গলে...

প্রকাশ

রাত ছুটছে গভীর হতে গভীরে
নিঃশ্বাসগুলো নিবির হতে নিবিরে

জন্মঋণ

পালক সে বাতাসে উড়ছে! পাখির মতো স্বাধীন
তবুও সে মৃত! বয়ে ফেরে আপন জন্মঋণ

ক্ষণিক অভিপ্রায়

পথ হতে কুড়ানো ফুল
পথেই পড়ে রয়
ক্ষণিক অভিপ্রায় শেষে
মুছে পরিচয়।

বন্ধুদের কে বলা

আমি দু'চার শব্দ লিখি, তাতে বন্ধুরা নাকি ফোঁড় খাওয়া ব্যথা টের পায়, অন্তর পৌঁড়া গন্ধ পায়। সে বন্ধুদের কে বলা-

যখন চাঁদনির প্রহর শেষে চাঁদ উবে যায়
কালো আকাশ ভরে উঠে তারায় তারায়
উতলা যতই মন প্রেমের বিলক্ষনে
মাতাল হাওয়া ছুঁলে ভরে সে গানে।

প্রেমের নাজরানা

আমি অল্প পারি কইতে
তারচেয়ে ঢের সইতে
তোমার প্রেমের নাজরানা সই
না পারি গো বইতে

জীবন সে শূন্যেই মিলবে

পথিক পথভুলে পথেই ফেরে...
ছুটতে গিয়ে হয়ত ভুলেছ
জীবন সে শূন্যেই মিলবে।

যেদিন রাত গভীরে

যেদিন রাত গভীরে সাধের সেতারা
তারে তুলবে ঝঙ্কার,
জেনো সকল রাতজাগা খগ
ব্যাকুল আমি স্মৃতি ছুঁয়ে তার...

জিতবার আক্ষেপ

আমি সেদিন থেকে জিতবার আক্ষেপটুকু ছেড়ে দিয়েছি যেদিন আবিষ্কার করতে পারলাম হেরে গিয়েও আমি বেশ টিকে থাকতে পারি।

না আমি কখনও কোনকিছুই জোর করে আদায় করতে চাইনি, শুধু চেয়েছি আমার অধিকারটুকু সকলে সেচ্চায় ফিরিয়ে দিক। অবশ্য না দিলেও তাতে আমার আক্ষেপ কিংবা আপসোস কিছুই থাকবে না।

জীবন আপনার ভাবনার বাহিরের অংশটুকু কেবল

আপনি যোগ্যতার উপরে গিয়ে যা চাইছেন - তা স্বপ্ন।
আপনি যোগ্যতর হয়েও যখন উপেক্ষিত - তা যন্ত্রণা।
আপনি যোগ্যহীন কিছুতে মানিয়ে নিচ্ছেন- তা জীবন।
জীবন আপনার ভাবনার বাহিরের অংশটুকু কেবল, যেটুকুতে মানিয়ে নেয়াই সৌর্ন্দয্য ভিন্নতায় দৈন্যতা।

মেটে কিগো প্রেম তৃষা?

যে আঁখি বোঝেনা ভাষা...

সে আঁখি কাজলে, নয়ন ভেজালে
মেটে কিগো প্রেম তৃষা?

প্রেমের মাহফিল

যে পথ মিশে যেতে চায়
প্রেমের মাহফিলে
সে প্রেমের মাল্য সখী
রেখ পথে ফেলে

দ্বীধা

দ্বীধা;
ধরেছিস যত মোরে
সরে গেছি তত দূরে
পথখানি পাড়িবারে
জন্মে যে সংশয়,

পারিনে দাঁড়াতে পথে
কোথা কি জানি রটে
নামিলে আঁধার বাটে
পড়িবে মনে নিশ্চয়

প্রেমবারিতে ভেজে যার মন

সব কথা কব না সখা
পড়িবে গো ভীষণ মনে
প্রেমবারিতে ভেজে যার মন
মূল্য সে কেবল জানে!

একদিন নিশ্চয়ই...

একদিন নিশ্চয়ই...
ভালোবেসে ভেঙ্গে দেব তোর সমস্ত সংশয়
হোক সে প্রভাতে জানাজানি দখিনায় কানাকানি
তোর হাতে হাত রেখে দেব আর একবার অব্যয়

জয়ের বাসনায়

চক্রবূহে আবর্তমান যে খেলা, সংসারের সে খেলায় মজে আপনাবূহে অন্যকে পরাজিত করতে পারার মনোবাসনা স্বার্থবাজদের জন্মগত!

এখানে স্বার্থবাজরা মধ্যবর্তী ফাঁদ ফেলে পরস্পর ভালো খেলতে চায়, জিততে চায়। কিন্তু তাদের জয়-পরাজয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে কেউ যখন মুষলধারায় সারাটা প্রহর ভিজে বিছানা থেকে শ্বশ্মানে চির সমাহত হয়, তখন পরাজিত তাকে নিয়ে নতুন খেলার পট রচনা করে পুনরায় কারও সঙ্গে খেলায় ফিরতে!

অন্ধকার চোরাগলিতে ডুবছে আজি পা...

কার মমতা আশিস সত্য সবে কি তা জানে?
পাবার আশায় পথচেয়ে রই ভুল মানুষি জনে!
অন্তরে বীষ পুষে কি হে ভালোবাসা যায়
অন্ধকার চোরাগলিতে ডুবছে আজি পা...

হেরে গিয়ে কি লুকোচ্ছিস গা?

সাদা-কালো জীবনে কানে ভাসে
সুবোধ তুই পালিয়ে যা
জীবন থেকে পালাতে গেলে জীবন বলে
হেরে গিয়ে কি লুকোচ্ছিস গা?

কতটা

তোমাকে কতটা ছুঁলে
হই আমি অপরাধী
কতটা পথ পেরুবার আশায়
পাহাড় ভেঙ্গে ছুটে নদী

অবাধ্য প্রেমিক

তখন স্বপ্নটাকে ছুঁলে আর দুটো হাত নাগাল ফেলে
আমিও তোমার মত কারও অবাধ্য প্রেমিক হতাম!

সহসায় বাতায়নে বসন্ত দৌলা দেয়
সব আকাশেই পাখিরা ডানা মেলে উড়ে
কখনও নীলঘন মেঘে, কখনও আবার সাদা
কখনও অন্তঃধ্যানে গুড়ু-গুড়ুম বা এক চিলতে বৃষ্টিতে
ভেজামন হারায় তোমার- আমার কিংবা আমাদের
যদি উপাস্য হতে, আমিও হাত ধরে তোমারি হতাম!

মনের বিষূবরেখা এড়াতে পারি না-
একাকি সঙ্গোপনে এলোকেশী এলে
তাকে এড়িয়ে যাব এতটা কঠোর তো নই...
বরং হৃদয়ের ভূ-খন্ড চিরে গড়তে রাজি ছিলেম
সবুজ বনায়ন, তৃষ্ণার্থ পাহাড়ের স্রোতধারা
সংকোচ কেটে অভয় দিলে, সেই কেবল বলে ফিরতাম!

নব জলপ্রপাতের ধারা ব্যাকুল বাসনায় ছুটে
ঘাস ফড়িং ছুটে ফেরে সবুজের কোমলতা ছুঁয়ে
অথচ আপনাকে বারবার হারিয়েও ফিরি আপনায়
কেননা অন্তরের বেচা-কেনা এত সহজ নয়
অনুপযুক্ত লেন-দেনের হিসাব কষে নেয়াও সহজ নয়
তাইতো চোখের জলুস ফেলে পথ ফেরে গন্তব্যে
আর বাসনারা ব্যাহত কাতরতায় বলে যায়-
পরস্পরের সম্মতি মিললে আমরা হয়ত কুটির গড়তাম!

সুন্দরের মহিমা কেমনে খুঁজিতে?

মনের মাপকাঠিতে মেপে
সুন্দরের মান ধরি
অসুন্দর আছে বলে হই
সুন্দরের পূজারি।

যদি কুৎসিত কদাকার কিছু
নয়নে না পেতে
জগতে সুন্দরের মহিমা
কেমনে খুঁজিতে?

ঋৃণ


হে মাটি-
দিয়েছ যা অশেষে ক্ষমা গ্রহনে
তাহার কি প্রণামি না জানি মনে...

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে মাঝে-মাঝে নিজেকে অসহায় অবস্থায় ফেলেতে হয়। অথচ দিনশেষে সমস্ত অপমান ক্ষতি কেবল নিজেকেই বইতে হয়।

কোথাও কেউ নেই

কোথাও কেউ নেই
ডাঙ্গায় গাছ নেই, নদীতে জল নেই
সবুজ আর ঘাস নেই, আকাশে নীল নেই
শুধু তুমি আমি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্নে
আমরা কি শুধু বেঁচে ভাষাহীন নিরবে?

কোথাও কিছু নেই
সুখে হাসি নেই, দুঃখে কান্না নেই
বেদনায় আকুলতা নেই, কষ্টে বিষন্নতা নেই
তবু পাশাপাশি হাত ধরে দাঁড়িয়ে ভাবনায়
আমরা কি আগের মতো আছি সে?

অন্তরে গচ্ছিত ভালোবাসাটুকু

সকলে অন্তরে গচ্ছিত ভালোবাসাটুকু চোখের সৌন্দর্যে দেখতে চায় কেন?

ফালি-ফালি করে কেটে নাও

তোমার হাতে চাকু রেখ
আমার এ বুক পাতা আছে
ফালি-ফালি করে কেটে নাও
তোমার যা কিছু চাইবার আছে...

সকলে তুলিতে চায় ঘরে

অনাদরে কাননে ফুটে যে ফুল
সৌন্দর্য্য তাহার সবে না জানে
কাহার আদরে ফুটে যে ফুল
কুড়িয়ে সবে তা, টাকায় কেনে।

বুঝি বুঝি এথা
চিত্তের মর্ম ব্যথা
ব্যথাতুর হীয়ার তরে
অবহেলায় নয়
আদরে ফোঁটা ফুল
সকলে তুলিতে চায় ঘরে।

ভালোবাসা ছুঁয়ে দেখা কিংবা লেনদেন নয়

ভালোবাসা ছুঁয়ে দেখা কিংবা লেনদেন নয়, এ অনুভব আর পরস্পরকে বুঝতে শেখা।

সুখ আর ভালোবাসা

সুখ আর ভালোবাসা
দুটোকেই মানুষ কাগুজে টাকায় মাপতে চায়, কাগুজে টাকায় কিনতে চায়...

কিন্তু টাকার ওজনে কিনে যখন প্রকৃত ভালোবাসা হতে প্রত্যাহিত হয়, তখন মুমূর্ষু মর্ম বেদনায় দাহিত হয়।

সে যদি ভাসে মোরে ভালো

সে যদি ভাসে মোরে ভালো
আমিও চাহি তারে ভাসিতে
গোরা আঁখিতে নিভৃতে নিরবে
আমিও চাহি পথখানি ভূলিতে!

থেমে গেছে অল্পে

শৈশবের স্বল্প আলোর তেলের প্রদীপ নিভতেই
রাস্তার নিকষ কালোয় গ্রাস করত ধাঁ-ধাঁ-রা
ভূত-প্রেত, রাখাল-রাজা আর স্বপ্নপুরীর গল্পে

এখন নিয়ন আলোয় রাতগুলো দিনের মতো
আলোর পথ কমতে-কমতে মিলে গেছে পথে
আমাদের ভাবনার বিচরণও থেমে গেছে অল্পে।

তেনারা *

তেনাদের মাথা গরম করা প্রশ্ন শুনলে ইচ্ছে করে তুলতুলে গাল টেনে কাঁদিয়ে দেই। আজ তেনাদের একজন বাবার কাঁধে নিজের স্কুলের ব্যাগ তুলে দিয়ে হেলেদুলে হেঁটে চলছেন আর বাবাকে প্রশ্ন করছেন- "বাবা বাবা ডাব কি প্রথমে ছোট্ট থেকে তাপ্পর বড় হয়?"
বলেন তো এটা কোন প্রশ্ন হল? বলি আমার মতো সবাইতো এ ছোট্টবেলা থেইকা জানি, তেনা তবে কেন...
আমি এ কারনে তেনাদের কাঁদানোর পক্ষে

নানারে (বন্ধু করিম) নিয়া বহুত মছিবতে আছি!!

নানারে (বন্ধু করিম) নিয়া বহুত মছিবতে আছি!!

নানা কইল তার পরিচিত কলেজ-ভার্সিটির চেনা-জানা বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে আমাকে সংসারী বানিয়ে ফেলবে, শুনে মনে-মনে বেজায় খুশি হলাম, যাক একটা হিল্লে হল বলে, উদাসিন যাযাবর স্থায়ী আবাস পাবে বলে। এরপর নানা আমার পছন্দের ব্যাপারে জানতে চেয়ে বলে- তোদের তো টাইটেল-টুইটেল কি সব বাছ-বিচার আছে, তোর এধরনের সমস্যা নাই তো? কইলাম নানা বিয়েটা পারিবারিক হলে জামেলা এখনও আছে, যদি প্রেম-টেমের ব্যবস্থা করবার পারছ তো তার লগে লুকাইয়া সংসার পাইতা লমু!! নানা কয় আমার মতো বুইরার নাকি বেইল নাই, এখন ডাইরেক্ট পারিবারিক বিয়েতে যাওন লাগব। কইলাম তয়লে টাইটেল বিছরান লাগব। যা হোক নানা কইল সে ব্যবস্থাই লইব, শুইনা আমিও নানার ভরসায় পথ চাইয়া থাকলাম।

পরদিন নানা সুখবর লইয়া আসল, কইল দাদা তোর একটা ব্যবস্থা করে ফেললাম!! শুনেই আমি মনে-মনে খুশি, নানা একদিনে ব্যবস্থা করে ফেলল? যাযাবরের ঘর হতে চলল...?

এরপর নানা যা কইল, তাতে যাযাবরের ঘরের আশা কি, ছুটেই কুল পায়না...

নানা কয় সে নাকি ফার্মগেইট কোন দোকানে খেতে গিয়ে এক মহিলার শাখা-সিঁদুর দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করে জেনেছে, তিনি আমার টাইটেলের। নানা তার সাথে কথা বলেছে, আর ঐ মহিলাও বলেছে আমার লাগি তিনি নাকি স্বামী-সংসার ছেড়ে চলে আসতে দুই পায়ে খাড়া!!! কইলাম নানা কইলি কলেজ-ভার্সিটির কথা, তবে বিবাহিত মহিলার কাছে গেলি কেন? নানা কয়- সে নাকি খোঁজ করে কাউরে পাচ্ছে না, তাই.... :o

পরদিন অফিস করে বাসায় আসলাম, দেখি নানা ফুরফুরে মেজাজে। জিগাইলাম নানা ঘটনা কি, বহুত মাস্তিতে আছিস মনে হয়?

নানা কয় দাদা আজকে তোর ব্যবস্থা করেই ফেলেছি, কনে আমাদের বাসাও দেখে গেছে, তোর সবকিছু শোনার পর সে রাজি হয়েছে। আমি বললাম তাই নাকি? আজকে আবার কে রাজি হল? নানা কয়- আজকে বাসার সামনে এক মহিলা বলতেছে- ছাই, এই ছাই লইবেন ছাই? হঠাৎ দেখি মহিলার হাতে শাখা-সিঁদুর... নানাকে থামিয়ে বললাম, তোকে মহিলার দিকে তাকাতে কে বলেছে? আর ছাইওয়ালা মহিলার সাথে তোর কথার দরকার পড়ল কেন? নানা কয় আরে শুন না, তোর জন্য না পাত্রী খুঁজছি, ভেবে দেখলাম মহিলা হিন্দু মানুষ, তার উপর হেঁটে-হেঁটে বিভিন্ন বাসায় ছাই বিক্রি করে...তার মাধ্যমে তোর একটা ব্যবস্থা করা গেলে মন্দ কি? তাই তাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনার নাম কি? মহিলা কয় সীতা রানি দেবনাথ। একথা শুনেই ভাবলাম, মহিলার মেয়ে বা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে তো কেউ অবশ্যই আছে, তোর ব্যবস্থা হবেই, কিন্তু মহিলা কয় তার পরিচিত বিবাহযোগ্য কোন পাত্রী নাই। তবে মহিলা নিজে রাজী হয়েছে, বলেগেছে তুই রাজি হলে সারাজীবন ছাই বিক্রি করে তোরে বসাইয়া-বসাইয়া খাওয়াইব... দাদা তুই রাজি হইয়া যায়, এ সুযোগ আর জীবনেও পাইবি না...

ভাই-বন্ধু-মুরুব্বি-শ্রদ্ধেয় জন, নানার মছিবত থেকে বাঁচার একটা উপায় বাতলায়ে দেন, নইলে তেজগাঁও রেললাইনের পাশের কচুগাছ দেখাইতাছে নানা...

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে প্রতিনিয়ত নিজের মনকে দন্ড দিয়ে গেছি। ভালোবাসি বলে আগলে রাখতে না পারার যন্ত্রণা বইতে পারব না বলেই সরে আছি।

কিন্তু না বলতে পারার আরাধ্য ভালোবাসার অন্তঃক্ষরণ কতটা হয়, সে পরাজিতের অভিপ্রায় না জেনে অনুধাবন এতটা সহজতর নয়!

দায়

আমি না হয় মুর্খ্যসুর্খ্য
না বুঝেই হৃদয় বিকিয়ে দিলাম
তুমি কি এমন দায়ে পড়ে
হৃদয়খানা করলে নিলাম?

মনোরাজ্য

হতে পারি আমি অতি সাধারন
তবুও আছে জেনো রাজ্য শাসন
যেথায় আমার প্রভাব- প্রতিপত্তি, একছত্র অধিকার
আমায় হীনে রাজ্যে, বাকি সব অসার!

উগ্রবাদী ধার্মিক হবার চেষ্টায় রত

পবিত্র বেদ, ত্রিপিটক, বাইবেল, কোরআন আমাদের জীবনবোধযুক্ত সত্যিকারের মানুষ হবার উপদেশ দিলেও, আমরা উগ্রবাদী ধার্মিক হবার চেষ্টায় রত হই।

সময়ে একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াও জরুরি!

সময়ে একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াও জরুরি!

আসলে অন্তরে অন্তর্গাতপূর্ণ শূন্যতা আর মনের ভিতরে কাউকে ভেবে বুনে চলা পৃথিবীটা ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে হৃদয়টাকে বিসন্নতায় জড়িয়ে ফেলে!

কোথাও কেউ নেই

কোথাও কেউ নেই-
তবু পাশে; একখন্ড আকাশ, এক মুঠি রৌদ্দুর আর এক আকাশ আশা

কোথাও কেউ নেই-
তবু পাশে; অনুভবে তুমি, তোমার গড়া পৃথিবী আর স্মৃতি আকড়ে বাঁচা।

আমার মুখে পুরে কেন আমায় গিললি বল

নেশা যদি গিলে নেশায়
মাতালময় এই দুনিয়াটাকে
সে গিলে না তাকে গিলে
কেমন করে বুঝবে লোকে?

ওরে আমার মুষ্টিহাতের বদ্ধ সুরার ঢল
আমার মুখে পুরে কেন আমায় গিললি বল..

জরুরি

অন্যকে মানুষ হিসেবে গণ্য করতে শেখা জরুরি। মানুষ হবার নিরন্তর চেষ্টা সবচেয়ে বেশী জরুরি।

সুখ-দুঃখ বলতে কিছু নাই

সুখ-দুঃখ বলতে কিছু নাই! এটা জৈবিক তাড়নার মতো এক ধরনের তাড়না, যা চাইলেই ভিন্ন উপায়ে মন থেকে হটিয়ে দেয়া সম্ভব! শুধু উপায়টাকে যথাযথ আত্মস্থ করার কৌশল আয়ত্ব করতে শিখতে হয়। আসল কথা হলো অন্তরের ভাব-বাসনার পীড়া মানুষকে যখন পরাস্ত করে তখন মানুষ দুঃখবোধ করে, জয়ে সুখবোধ।

আমাদের ক্ষমা করো

রাষ্ট্র যখন অন্যায়ের কাছে মাথা নুড়ে দেয়, অন্যায়কে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তখন সে রাষ্ট্রের গণমানুষের বেহালদশার গল্পগুলো মুখে জানানোর প্রয়োজন পড়ে না।

...দেশমাতৃকা আবারও লাজ-লজ্জা হেলে উন্মুক্ত দরবারে উলঙ্গ হল। তাঁর শাসক-নিয়ন্ত্রক যারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল, জীবনের বিনিময়ে হলেও মায়ের সম্মান সমুজ্জল রাখব! তারাও অন্যায়ের কাছে নিজেদের প্রতিজ্ঞা বিকিয়ে, নিজের হাতে দেশমাতৃকাকে উলঙ্গ করে ছাড়ল, তাই তাদের জন্য আবারও-

আমাদের ক্ষমা করো-
হে আমাদের রুগ্ন জন্মধাত্রী
আমরা নষ্ট বীজে অপুষ্ট ভ্রুণ
নেই গ্রহীরে শক্তি...

আমাদের ক্ষমা করো-
ক্ষমাহীন যত অযাচিত শাপ
জন্ম মোদের সংকরিত ফল
প্রভেদে রটে প্রবাদ...

আমরা আপনা নীড় আপনি ভাঙ্গি
নির্বাক প্রতিবাদে
আমাদের জন্মধারায় সংশয় আতুরঘর
কাঁদে ধুকে-ধুকে।

আমাদের ক্ষমা করো-
হে আমাদের রুগ্ন জন্মধাত্রী
কাপুরুষ সন্তান জন্মাতে বয়েছ প্রসব বেদনা
কাপুরুষ সন্তানের ভীড়ে হয়েছ মৃত্যু পথযাত্রী।

শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

উপযুক্ততা

সময়ের পথ ধরে যে শৃঙ্খল শক্ত শিকলের বন্ধনীতে সংযুক্ত হয়, তাকে উপযুক্ত হাতুড়ি ব্যতীত টুটে ফেলা দূরহ!

আমাদের বৈশাখ আনন্দ

চৈত্র সংক্রান্তির আগেরদিন থেকে বৈশাখের প্রথমদিন, ছেলেবেলাকার সময়ে এই তিনটি দিন আমাদের কাছে বিশেষ ছিল, ছিল আকাশ ছৌঁয়া আনন্দের। আনন্দের মাত্রা যদি জানতে চান, তবে বলি- এ আনন্দ বাতাস কেটে-কেটে সুখে ভেসে বেড়ানো ঘুড়ির মতন। মনটা কি রকম জানি ভাবাবেশে আকাশে নিরলে ভাসবার অবকাশ পায়!

খুব বেশীদিন আগের কথা নয়, বছর ১৫ ফিরলেই হাতের নাগালে উজ্জিবিত অতীতের ছৌঁয়া কিছুটা খুঁজে পাই, ছুঁতে পাই। মনে পড়তেই ফিরি চৈত্র সংক্রান্তির আগেরদিন ভোর হতেই শুরু হওয়া আমাদের আনন্দ ঘনঘটার আয়োজন। ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়া আঙ্গিলা ফুল আর আপনফুলের খোঁজে। এই দুটো ফুলের খোঁজ পাওয়া কিছুটা কষ্টসাধ্য ছিল, ফুলের গাছগুলো আপনা হতে বাগানে উঠত এবং অপ্রয়োজনীয় বলে লোকজন বাগান পরিষ্কার করতে কেটে ফেলত। ফলত বাগানে এই দুটো ফুলের গাছ মিলত খুব কমই। ফুলের জন্য তখন আমরা ঘন জঙ্গলভরা বাগানেও গিয়ে পৌঁছতাম, যেখানে ছিল কল্পিত দু‘মাথাওয়ালা ভূত আর সাপের ভয়! কিন্তু ফুল সংগ্রহের ব্যাপারটা তখন প্রতিযোগীতার বলে ভয়টা কিছুটা কুঞ্চিত হয়ে পড়ত!

সারাটা সকাল ফুল সংগ্রহ শেষে তা ফুলের ঝুড়িতে রেখে দিলে দিদিরা সময় করে বসে-বসে ফুলের মালা গাঁথত, আর আমরা তখন কাস্তে-দা নিয়ে ছুটে যেতাম রাস্তারধারে-মাঠে। তখন মাঠে আপনা হতে জন্মাত ধুছনি গাছ, বিষকাটালি গাছ, গাগরা গাছ আর রাস্তার পাশের গাছ হতে মিলত বিভিন্ন কাঁটা (যেমন: মান্দার কাঁটা, মন কাঁটা, বেল কাঁটা, বরই কাঁটা, নাটাই গাছের কাঁটা ইত্যাদি), আমরা কাঁটা আর গাছগুলো ইচ্ছেমত কেটে একটা নির্দিষ্টস্থানে এনে শুকোতে দিতাম। সারা দুপুরের পোড়া রোদে গাছগুলো শুকনো জ্বালানির উপযোগী হলে আমরা তা উঠোনে এনে জড়ো করতাম।

সাঁঝ নামবার আগেই মা-কাকীরা ব্যস্ত থাকতেন কড়ই (চাউল ভাজা) আর খই গুড়ো করার কাজে। আমরা ছোটরা তখন দলবেঁধে ছুটছি প্রকৃতির কাছে তাকে জেগে থাকবার আকুতি নিয়ে। আগামী কাল বছরের শেষ দিন, তাই আমাদের সাথে-সাথে প্রকৃতিও আনন্দে সারা হবে সারাদিন-সারারাত্রি। এ প্রচলিত রেওয়াজ-রীতি, প্রাচীন ঐতিহ্য! আর তাই আমরা যখন বাড়ির চারপাশ-মাঠ-রাস্তায় ঘুরে-ঘুরে মাতিয়ে তুলছি-

“গাছ-গাছালি জাগিও, 
কাইল বিয়ানে (সকালে) বিশুদজলে (বিশুদ্ধ পানিতে) স্নান করিও
পুষ্পমালা গলায় দিও।”

তখন চারিদিকেও সমস্বরে বাজছে সে আওয়াজ, যেন প্রকৃতি সে বার্তা খুব আনন্দের সহিত ছড়িয়ে দিচ্ছে! অনেকক্ষন আনন্দে নেচে গেয়ে চলে আমাদের সে আনন্দ অনুভূতির প্রকাশ।

সন্ধ্যের আলো গাঢ় হলে আমরা সবাই ঘরে ফিরি। ততক্ষনে বাড়ির প্রতিটি ঘরে-ঘরে তৈরি হচ্ছে লাবন (চাউলের কড়ই বা ধানের খই ভেজে পরে শীল-পাটায় মিহি দানা করে গুড় অথবা গুড়-নারিকেল সংমিশ্রনে সুন্দর কারুকার্যে বানানো সুস্বাদু খাবার)। ঘরে ফিরলে মা-কাকীরা লাবন তুলে দিত খাবার জন্য। পেট পুরিয়ে লাবন খেয়ে কখন যে ভাত না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি আমরা জানতামই না।

তখনও হয়ত ফজরের আযান পড়েনি। মা ডেকে তুলছে বাবু-বাবুরে উঠ-উঠ সবাই উঠে গেছে, বিষকাটালি পুড়বি না? প্রশ্নটা কানে বাজতে আর দেরী হয় না। আড়মোড় ভেঙ্গে উঠোনে বেরিয়ে আসি। তখন কেউ-কেউ বিষকাটালি, ধুনছি, গাগরগাছ, কাঁটা, খড় সমেত জ্বালাচ্ছে, কেউ জ্বালাবার আয়োজন করছে। আমরাও নেমে পড়ি। জ্বালাতে গিয়ে ধৌয়ায় চোখে জ্বালা ধরার, কিন্তু উৎসাহ আর আনন্দের মাত্রায় তাতে ভাটা পড়ে না। কিছুক্ষনের মধ্যে আগুন জ্বলে উঠে, জ্বলতে থাকে শুকনো গাছ আর কাঁটা। আমরা তখন ধৌঁয়া পরস্পরের গায়ে মাখি। আর আনন্দে সমস্বরে চিৎকার দিয়ে বলতে থাকি-

“আঙ্গো বাড়ির মশা-মাছি দূরে রে দূরে..! 
আঙ্গো বাড়ির অসুখ-বিশুখ দূরে রে দূরে দূরে..!”

আনন্দের মাত্রা বাড়তে থাকলে তা শয়তানিতে পরিনত হয়, তখন সুর উঠে-
“আঙ্গো বাড়ির শয়তান-বদমাইশ দূরে রে দূরে..!
আঙ্গো বাড়ির চোর-ডাকাইত দূরে রে দূরে দূরে..!”

আসলে সব আয়োজনই প্রতীকি। প্রতীকি আয়োজনের রেশ ধরেই ধৌয়ায় উড়িয়ে দিতে চাই মনের সমস্ত ভয়, অহং, পীড়া, জরাজিহ্নতাকে, লোভ, ক্ষোভ, পাপ-তাপকে।

যখন আবছা আলো-ছায়ার খেলা সাঙ্গ হচ্ছে কেবল, তখন থেকে মা-দিদি-কাকী-জেঠি‘রা বাড়ির পাশের মাঠ হতে ডিমাই শাক, থানকুনি শাক, কুমড়োর ডাটা, মাইরার ডাটা, আইল্লা (কলা গাছের অভ্যন্তরের নরম অংশ), কাঁচা কলা, বন আইডগা (বাগানে জন্মানো কাঁটাযুক্ত একধরনের সরু কচু), কচুর লতি, ঢেঁকি শাক, পুঁই শাক, কাঁচা কাঠাল ইত্যাদি সংগ্রহ করে। এরপর সবাই মিলে উঠোনে বসে শুরু হয় কাটা-কুটি। কাটাকাটির আইটেমে আরও যোগ হয়- কাঁচা আম, কাঁচা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়ো, মিষ্টি আলু, সাজনে ডাটাসহ আরও সুবিধাজনক আইটেম। আর এইসব আইটেম একযোগে পাঁচপোড়নের সম্বাদে রান্না হয়ে তৈরী করা হয় সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার “পাচন”, তবে কেউ-কেউ বোধকরি “সুপ্তী” বলে থাকে।

দুপুর হতেই বাড়িতে কাঁচা হলুদ আর নিমপাতা বাটা হয়। বাটা কাঁচা হলুদ আর নিমপাতা বৎসরের শেষ দিন গায়ে মাখতে হয়। আসলে এইদিন নিজেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়, নিষ্কোমল মন নিয়ে নতুন বৎসরটিকে শুরুর প্রত্যাশায়। এরপর স্নান করতে যাবার কালে বাদিগাছের ফল হাতে করে নিয়ে স্নান করার সময় পানিতে ডুব দিয়ে খেয়ে নিতে হয়। প্রাচীন বিশ্বাস এতে নাকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

স্নান সেরে এসে পরিষ্কার পোশাক পড়ে নারীরা আঙ্গিলা ফুলের মালা ঘরের সন্মুখ দরজায় লাগায় আর আপন ফুলের মালা গরুর গলায়, আর পুরুষরা শত্রু কাটাকাটি খেলে। পুরুষ ছেলে-বুড়ো সবাই এই খেলায় অংশ নেয়। খেলার নিয়ম হল- মাটিতে কাস্তে বা লোহার ফলা দিয়ে মানুষের মত করে একটা ছবি আঁকতে হয়, তারপর তার উপরে এক-দুই মুষ্টি খই ছিটিয়ে ছবির উপর একটা কাঁচা আম বসিয়ে তা কাটতে হয়। কাটার সময়কালে পাশে থাকা একজন তাকে জিজ্ঞাসা করে- 

কি কাট কি কাট?
যে কাটে সে জবাব দেয়-
আম কাটি...
এরপর আবার প্রশ্ন আসে-
আর কি কাট?
উত্তরে- শত্রুর মাথা কাটি। বলেই আমটিকে এক কোপে কাটা হয়।

এরপর শুরু হয় খাওয়া-দাওয়ার পালা। চৈত্রের শেষ দিন নিরামিষ খেতে হয়। এই দিন পাচনের সাথে সামার্থ্য অনুযায়ী খাবারের আইটেমে থাকে চাটনি, দধি আর মিষ্টি জাতীয় মুখরোচক খাবার।

বৈশাখের প্রখমদিন সবাই ভালো-মন্দ খেতে চায়। বেশিরভাগেরই বিশ্বাস এইদিনটি মন্দ হওয়া মানে বছরের বাকি দিনগুলোও মন্দ যাওয়া। তাই এই দিনটাকে সবাই নিজেদের মতো করে উপভোগ করার চেষ্টা করে।

আনন্দের দিনগুলো খুড়িয়ে এসেছি। এখন যান্ত্রিক জীবনে আনন্দসারা হয় অফিসের কাজের চাপে। কিন্তু জীবনে ফেলে আসা আনন্দের দিনগুলো একটু নিস্তব্ধতা ফেলেই হাতছানি দিয়ে ডাকে। সময়েগুলো কালাকালে ব্যাকুল হয়ে রয়।

স্মৃতি ও সুখ

স্মৃতিরা বারবার ফিরে আসে
খুশির লগন আজও মনে ভাসে...

জানাবে কি গোপন ব্যাথা

মাধবীলতা গো...
রাখিলে জড়ায়ে, প্রভাতে সংশয়ে
জানাবে কি গোপন ব্যাথা জনে?
আমাদের প্রণয়তৃষা জাগে যা মনে?

গোপনে বাস যারে

ওগো নীল অপরাজিতা;
শোনো মনের কথা
গোপনে বাস যারে
সে জানে কি?
তোমার সজল আঁখি।

প্রেমানু সূর্য্য

ভালোবাসায় মোদের আকাশ মাটি ব্যবধান হতে পারে,

জেনে নিও এও-
তোমার আকাশের প্রেমানু সূর্য্য
হৃদয়ের শূণ্যতা আমার আলোতে দেয় ভরে!

পরিস্থিতি মোকাবেলা

ঠান্ডা মাথায় যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করবার মত মানষিক দৃড়তা চরিত্রের সবচাইতে বড় গুণ, যা বেশিরভাগ মানুষেরই থাকে না।

আজ অফিসে আসার সময় শতাব্দী গাড়ির গেইটম্যানের চারিত্রিক দৃড়তায় আমি মুগ্ধ। মুলত পরিস্থিতি খারাপ হতে না দিয়ে অন্যায়কারী কে যথাযথ জবাবে প্রতিহত করবার মত দক্ষতা কেমন হতে পারে তা দেখলাম। 

ঘটনাটি হল- আমাদের গাড়ি পল্টনের কাছাকাছি পৌঁছতেই বামদিকে একটু সাইড করায় একটা মাইক্রো গাড়ি বের হতে অসুবিধা হওয়ায়, সে গেইটম্যানকে বাজে ভাষায় গালি দিতে থাকলে গেইটম্যান কিছুক্ষন চুপ থেকে জবাব দিল- আমাদের দুজনকে দেখতে তো একই দেখাচ্ছে, যদি আমি তাই হই তবে আপনিও তো ভিন্ন হবার কথা নয়। 

চিন্তা করুন- সে কি করে একই গালি প্রতিপক্ষকেও দিল। অথচ প্রতিপক্ষের কিছুই বলার সুযোগ থাকল না।

একদিন

একদিন দেহ অনলে পুড়ে হবে ভস্ম ছাই
অথবা মাটিতে মিশে যাবে সমস্ত অহং বড়াই...

স্বপ্ন আছে বলে

স্বপ্ন আছে বলে যেছে যাই
ভাববে কি আমায়?
তোমার ভাবনার খেয়ালে
স্বপ্ন কল্পনায়...

অভিমান

যাবে বলে ছুটলে যখন
আমিও ফিরে চাইনি
অভিমান কেবল সে তোমারি
আমি কি অধিকার পাইনি?

দেখা হয়েছিল সে কবে

দেখা হয়েছিল সে কবে
কোন এক পৌষ-ফাগুনের মেলায়
মনে পড়তেই দশকের সংখ্যা পেরুই
ফিরে যাই পৌষ-ফাগুনের মধ্যদুপুর...
আগন্তুক তুমি আমি আর আমাদের চঞ্চল চোখ
মুখোমুখি হতেই কত লুকোচুরি খেলত লজ্জায়!

দেখা হয়েছিল সে কবে
কোন এক পৌষ-ফাগুনের মেলায়
সেদিন তোমার আর্দ্রগালে ছিল মল্লিকের কুসুম ছড়ানো টোল
বাঁশবনের মাতাল হিমেল হিল্লোলে ছিল কোকড়ানো চুলে দোল
আর উড়ু-উড়ু মনে পাখা মেলে উড়ছিল প্রজাপতি
আকাশের সাতরং সবুজ গায়ে মাখছিল রবি জ্যোতি

দেখা হয়েছিল সে কবে
কোন এক পৌষ-ফাগুনের মেলায়
হয়ত নির্জীব আলোড়নে মনে কোন সংবেদন পেয়েছিলে
অথবা নিলর্জ্জ কারও চোখকে দিতেছিলে ক্ষমাহীন মুক্তি!
তবুও দুটি চোখ আবদ্ধ বলয়ে বেঁধে নিয়েছিল...
আপনার আপন ভেবে আপনাকে সঁপে দিয়েছিল।

দেখা হয়েছিল সে কবে
কোন এক পৌষ-ফাগুনের মেলায়
জীবনের ভালোলাগা রং বদলে যায় সময় পেরিয়ে
ভালোলাগা ভালোবাসা পায় বার-বার অভ্যর্থনা পেলে
অথচ ভালোলাগা সে দাগকাটা হৃদয়
তুমি তো দেখলে কেবল ক্ষনিকই
আড়াল হতে আগলে হৃদয়
কি করে বুঝবে কেউ বাসে ভালো নীরবেই...

দেখা হয়েছিল এইতো সেদিন
এদিনও ছিল ফাগুনের আগুন রাঙ্গানো বেলা
হয়ত ভুলেছ হয়ত মনে আছে
কিন্তু চিনলে না বলে বুঝতে পারি
এ‘কেবল আপন মনে রাঙ্গানো আলতার রং
ধ্রুবকরাশির মান মেলাতে যা মুছতে হয় সহস্রবার
কালবেলায় কারও বেদনার ব্যর্থ অনুচ্ছেদ রচনায়।



পরাজিত

পরাজিতের নিষ্কৃতি নেই, সে হেরে যাবার বাসনায় বারবার জন্মায়!

আমি মূর্তিপূজা শতভাগ সাপোর্ট করি

আমি মূর্তিপূজা শতভাগ সাপোর্ট করি এবং এটাকে সম্মানের সহিত দেখি। অনেকে বলতে পারে এটা আমার ধর্মের অনুসঙ্গ হিসেবে তা আমি করি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা মোটেই নয়। কারন জন্মে মানুষ যদিও পরিবার কিংবা তার সমাজের ধরুন কোন বিশেষে আকৃষ্ট হয় কিংবা তার প্রতি দূর্বলতাবোধ করে। কিন্তু বিস্তৃত সমাজ পরিসরে বসবাস করতে গিয়ে সকলের সামষ্টিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে সে ঘোর অনেকটাই কেটে যায় বলেই আমার বিশ্বাস।

এখন প্রশ্ন হতে পারে- কাল্পনিক, পৌরনিক অথবা মৃত মিথ!!! -কে বিশ্বাসে আগলে আমার সাপোর্ট এবং সম্মানের কারন বা হেতু কি?

যদিও লেখালেখির কলরোলে আমাকে খুব কমজনই জানে- তবুও সত্য যে, আমি দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখির সাথে সংযুক্ত। আর এ লেখালেখি করতে গিয়ে আমি একটা বিষয় খুব বেশি অনুধাবন করি, তা হল- বাস্তবতা আপনি যতই নিরীক্ষন করুন না কেন, আপনার পর্যবেক্ষনকে রুপদান করতে গেলে অথবা তাকে নিখুঁত ফুটিয়ে তুলতে গেলে, আপনাকে অবশ্যই আবেগ এবং কল্পনা- এ দুইয়ের আশ্রয় নিতেই হবে। আবেগ ব্যতীত অনুধাবন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি কল্পনা ব্যতীত বিষয়ের আশ্রয়ও কঠিন। ধরুন রুপগুণহীন নারী সুদর্শন পুরুষকে কামনা করছে যদিও তার অনুপযুক্ততার বিষয়ে সে শতভাগ নিশ্চত। একইভাবে কল্পনায় যে পুরুষটি সুদর্শনা নারীটিকে ছুঁয়ে যাচ্ছে! তাও মিথ্যা। কিন্তু তবু তাতে তারা আবেগের আহ্লাদী আহবানে অন্তরের প্রসন্নতার খেয়ালটুকু মিটিয়ে নিচ্ছে। আসলে চোখের দর্শন আর ব্যক্তি আকর্ষন কখনোই উপযুক্ততা কিংবা অনুপযুক্ততা খোঁজে না, যতটা অতৃপ্ত বাসনার খেয়াল মেটায়।

আমি কি আমার বিষয়ের বাহিরে চলে যাচ্ছি? না মোটেই না। আসলে আমি জানাতে চাইছি, সুদর্শন-সুপুরুষ, সুদর্শনা-গুণবতী নরনারী যদি না হত অথ্যাৎ সবাই দেখতে এক হত, তবে ভিন্নভাবনার প্রাসঙ্গিকতা আসত কোথা থেকে? 

তারমানে, ভিন্ন ভাব-ভাবনা সে প্রকৃতির ইচ্ছেতেই হচ্ছে আর দুনিয়াতে বেঁচে থাকবার এই কেবল অনুসঙ্গ!

অন্য আর একটি প্রসঙ্গে ফিরি- ধরুন আপনার কাছে জানতে চাওয়া হল- আপনি বেঁচে থাকতে চান কেন? আপনি কি জবাব দেবেন? আপনাকে ভাববার সুযোগ দিচ্ছি, দয়া করে ভেবে বলুন। ভাবতে দিলে অনেকে হয়ত উত্তর দেবেন, স্রষ্টার ইচ্ছেতে তাঁকে ডাকতে, তাঁর চরণের সান্নিধ্য পেতে! কিন্তু মুখ থেকে বেরিয়ে পড়া কথাগুলো কোনটাই বিশ্বাসযোগ্য মনে করি না। এগুলো কেবলই বলার জন্য বলা কথা, দু একজন ব্যতীত বাকি সবার বেঁচে থাকবার ইচ্ছে ভিন্ন, যেটা মন ভাবছে কিন্তু মুখ বলছে না। আসলে বেঁচে থাকবার বাসনায় মানুষের ইচ্ছেতে প্রথম স্থান পায় আত্মপ্রসন্নতা। মানে মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার ইচ্ছেতে সুখ-স্বাচ্ছন্দ-বিত্ত-বৈভব-আনন্দ-অভিলাষ এগুলোই আগে স্থান পায়। আর পূজা-পার্বন হল একপ্রকারের আনন্দ-অভিলাষ। যা অন্তত একদিনের জন্য জীবনে বেঁচে থাকবার গতি দেয় আর মনের ভিতরকার আকাঙ্খার প্রকাশকে শূন্যে ছুড়ে দেয় ধরার আগ্রহে।

আর মূর্তি?

এটা কেবলই প্রতীক। সনাতন ধর্ম মতানুসারে- নিরাকার ঈশ্বরের আরাধনা কঠিন বলে মানুষ সাকারের পূজায় আকৃষ্ট হয়। এখানে ঐ বিষয়টিই আগে প্রাধান্য পায়, সুদর্শন কিংবা সুদর্শনার রুপালব্ধি সহজ বিধায় অনুপযুক্ত কিংবা আপ্রাসঙ্গিকেই ঘিরেই সকলে অভিলাষ সঁপে বাঁচে।

পরিবর্তন

সময়ের প্রবাহ বয়ে কিছু মানুষ সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠে, তবে বেশিরভাগই মুখোশে মানুষরুপ ধরে আর কিছু সারাজীবন অমানুষই থেকে যায়।

আক্ষেপের বেদন

কলি বলল- যদি প্রজাপতির রঙ্গিন ডানা আঁকতে পার
বসন্তের মাতাল হাওয়ায় ফুটব বেনুবনে, দুলব দ্যৌলায়!

সে থেকে তুলি হতে আপন খেয়ালে
আঁকি স্বপ্ন, রঙ্গের আল্পনা
অথচ বসন্ত আসে বসন্ত যায়,
হয়না আঁকা প্রজাপতির ডানা!

অক্ষম'রা

সময়ে মনের কথা মুখে জানাতে অক্ষম'রা গোপনে কারও দহনে দহে।

জঙ্গিবাদের উত্থান অনুশীলন কাদের ধ্বংস করবার জন্য?

উইকিপিডিয়ার তথ্যনুসারে এদেশে প্রায় ১০% ভিন্ন ধর্মালম্বির মানুষের বসবাস। ৯০% মুসলিমের বসবাসের দেশটিতে প্রায় ৭০% এর বিশ্বাস এ দেশ তাদের, তাদের আচার-আচারন ও প্রভাব খাটাবার মানসিকতাও অনেকটা তদ্রুপ। স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বে যদি ভিন্ন ধর্মালম্বিদের অবদানটুকু অস্বীকার করা যায়, তবে সবকিছুই তাদের মনোভাব মর্জিতে চালানোর প্রচেষ্টা প্রকটই। ব্যাপারটিকে আমি স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখার চেষ্টা করছি। এখন আমার প্রশ্ন ৯০% মুসলিমদের এদেশে এত জঙ্গিবাদের উত্থান অনুশীলন কাদের ধ্বংস করবার জন্য? যদি ১০% কে হয়, তবে এত আয়োজনের প্রয়োজন তো দেখছি না। না বলছিলাম ৭টা হাত ১ টা গালে পড়লেই তো সে পড়ি-মরি করে মরবে!

এইটুকু আলোয় দেখাবে বেশ ভালো

ঘোর অমবস্যাও নামল পূর্ণিমার চাঁদ
তখন আমি ছুটছি জোনাকের পিছে,
আমার দশায় হেসে কুটিকুটি চাঁদ
বলল- বোকার মত ছুটছ কেন মিছে?

ঘেমে-নেয়ে হাসিমুখে বলি
শোনো হে অপরূপ সুন্দরী
আমার আঁধার কুঞ্জকাননে রয়েছে যতটুকু কালো
সে কালোয় এইটুকু আলোয়, দেখাবে বেশ ভালো।

শূন্যতা

সবকিছু সাজানো তবু- কি যেন নেই
বয়সে বাড়ে শূন্যতা, শূন্য সবখানেই

আগলে তা বইবে আমায় আজীবন

দুনিয়া চাইছে
চাইছে সবাই
তুমিও যদি চাও তা...
ক্ষমা চেয়ে বলব, প্রিয়তম
আছে কেবল দেবার মত
অন্তর আর আবেগী কবিতা

আগলে তা বইবে আমায় আজীবন!

আমি কি ধান্ধার কিছু কইলাম?

বন্ধু করিম (নানা ডাকি) কইল- জিমে টাকা দেয় কারনে জিমে যাবার গরজ থাকে। এর আগে কয়েকবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যয়াম করার কথা থাকলেও গরজে করা হয়নি।

আমি কইলাম নানা তয়লে তুই প্রতিমাসে আমারে ২০০০টাকা দিয়ে প্রতিদিন ফজরের পর থেইকা খালি দৌড়াবি। মাসে ২০০০টাকা চলে যাচ্ছে, এ টেনশানে দেখবি তোর দৌড়ানি থামে না...

নানা কয়, দাদা তুই ধান্ধাবাজ। জিগাইলাম কেমনে? কয় আমি নাকি ভুলাইয়া ভালাইয়া টাকা নেবার দান্ধা করতাছি।

এহন আপনেরা কন, আমি কি ধান্ধার কিছু কইলাম? আমার তো কেবল নানার গরজ বাড়ানোর চিন্তা আছিল!!

সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০১৭

তারি কিছু বইব আজীবন গৌরবে

কিছুকথা থাক বাকি, বলুক তা দু'আঁখি
তুমি না হয় ফিরিলে পথটুকু নিরবে...
সজল আঁখি জল, মুছিলে ঐ কাজল
তারি কিছু বইব আজীবন গৌরবে!

কি কথা লিখিলে সখি

মিলিতে আঁখি পরস্পরে
আহা! মরি! মরি!
কি কথা লিখিলে সখি
দু'আঁখি মেলি!

#দহন #সুখ #অন্তরাল

#দহনটাই বড়, গ্রহণ নয়।
#সুখের লগন সীমাবদ্ধ কিন্তু বিরহের গান বিমোহিত।
#অন্তরালে নিজের আকাশটাকেই কেবল লুকানো যায়।

অন্ত অনুশীলন জানা

ভালোলাগার ঘোরটুকু চঞ্চল মনকে বারংবার আন্দোলিত করে তোলে। চিত্তের মধ্যেকার আবেগ-অভ্যর্থনার সঞ্চালন কতটা গভীর, হিসেব কষে তার অন্ত অনুশীলন জানা কঠিন।

আবর্জনা ও শুভ্রতা সুগন্ধি

আবর্জনা যতটা সম্ভব ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হয়, না হলে নোংরা ছড়িয়ে পড়ে আর দুর্গন্ধে চারিদিক বিষময় হয়ে উঠে।
শুভ্রতা সুগন্ধি যতটা সম্ভব মুক্ত করে দিতে হয়, এতে জীবন যেমন নির্মল হয়ে উঠে, তেমনি সুবাসে মন প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।

হৃদপিঞ্জরে আগলে বাসব ভালো

তোমার ঐ উদার আকাশ হতে
ঢালো যদি এক প্রহরের আলো
তিমিরের গভীর কালো ভুলি
হৃদপিঞ্জরে আগলে বাসব ভালো।

ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা

আমি কেবল ভালোবাসার সুক্ষতাটুকুই খুঁজতে চেষ্টা করি। কিন্তু ভালোবাসার রুপবোধ রং রস বোধকরি আমার থেকে ছোটরাও ভালো বোঝে। নির্লিপ্তবোধের এই জীবনে তাই প্রতিটি দিনের মতো আসে বসন্তের রং, প্রতিটি ক্ষনের মতোই ভালোবাসার ঢং!

ভালোবাসার ডালা সকলের হাতে শোভা পায় না, সকলের সাজাবার মতো মনের ভিতরকার কারুকার্য্যও সমান নয়, তাই কোন অর্ঘ্য গ্রহনের মতো মনোভাব এতটা ক্রিয়া সংযুক্ত নয়, যতটায় বোধটুকু বাঁচে।

সময়ে প্রতিটি ভালোবাসার বিশেষণ কিংবা বিশ্লেষণ দুইই ভিন্ন থাকে। ফলতঃ ভালোবাসার বোধ রসও জনবিশেষে ভিন্ন হয়। আর এই ভিন্ন পরস্পরতার ধরুন- কেউ জনকে ভালোবাসে, কেউ পরিবার কে, কেউ সমাজকে, কেউ রাষ্ট্রকে অথবা কেউ জীবনকে। তবে ভালোবাসার সকল ধরনকে চাপিয়ে যখন ব্যাক্তিগত আবেগের প্রবাহটাই বেশী গতি পায়, তখন সে ভালোবাসায় ভয় জন্মে। কেননা বসন্ত শেষে ফুলের পাপড়ি ঝরতে থাকে, ভ্রমরের গুঞ্জণ কমতে থাকে আর সাথে বাড়তে থাকে অনাকাঙ্খিত সঙ্কা।

তবুও ভালোবাসার তোরণ মিশে যাক দূর নীলনীলিমায় আপন মহিমায় আর আন্দোলিত চিত্তকে ঢেলে দিক অন্তর নিড়ানো উদ্ভেল শুভেচ্ছায়, সে কামনায় সকলকে ভালোবাসা দিবসের রং মাতানো শিমুলের শুভেচ্ছা।

শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সুখী হতে গেলে

পরস্পরকে নিয়ে সুখী হতে গেলে জীবনের সঙ্গীটিকে নিয়ে সমগতিতে দৌড়ানোর মানষিকতা যোগাতে হয় অথবা যোগানোর আগ্রহ দেখাতে হয়। যদি পরস্পরের সমগতিতে দৌড়ানোর মানষিকতা না থাকে- তবে এগিয়ে চলা সঙ্গীকে বারবার পিছনে ফিরে ক্লান্ত-রুষ্ট চিত্তে একসময় থেমে পড়তে হয় আর পিছনের সঙ্গীটিকে অভিমান-ভীতি নিয়ে অন্যকারও সঙ্গ কামনা করতে হয়।

মুক্তো ছড়ানো শহরে

মুক্তো ছড়ানো শহরে
মুক্তোর আলোয় যত না আঁধার পুরোয়
তারচেয়ে বেশি ঝিনুকের স্বপ্ন পুরোয়!

অনুধাবন

মনুষ্য হৃদয় আহত ব্যাকুলের আত্মচিৎকার ততক্ষন অনুধাবনে ব্যর্থ, যতক্ষন সে আহত নয় অথবা আহত পরিবেশের মুখোমুখি নয়!

(গতকাল রাতে পাশের একটা বিল্ডিংয়ে দূর থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড দেখলাম। ছোটবেলায় মা বলতেন- "সবকিছুতে তবু কিছু পাই, আগুনে পুড়লে শুধু ছাই।" ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে লোকমুখে শুনলাম, দু'জন নাকি দগ্ধ হয়েছেন। আজ সকালে অফিসে আসছিলাম ক্ষতিগ্রস্থ স্থানের পাশ দিয়ে। পথে একদল তরুনী গার্মেন্টস কর্মী যারা কারখানায় কাজে আসার পথে ক্ষতিগ্রস্থ স্থান দেখতে যাচ্ছে। পথে অন্য এক তরুনীকে পেয়ে তাকেও ওদের সাথে যেতে বললে, তরুনী কোথায় যাবে জানতে চাইল, তখন কয়েকজন সমসুরে গেয়ে উঠে- "জ্বালাইয়া গেলা মনের আগুন নিবাইয়া গেলা না।" ওখানে, মানে গতকাল আগুন লাগছিল যে ওখানে। এরপর হাসি ঠাট্টায় তাদের এগিয়ে চলা।)

বোধ

ভালো থাকতে চাইলে সমষ্টিক মতামতকে গুরুত্ব দিতে হয়। ব্যক্তিমতকে গুরুত্ববহ রাখতে চাইলে, হয় তাকে সমষ্টির প্রভাবক হতে হয়, নতুবা তার মতামত সঠিক বিশ্লেষন ও সুন্দর উপস্থাপনের ক্ষমতা রাখতে হয়। এর ব্যতীত ব্যক্তি যেমন সমষ্টি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তেমনি সমষ্টির মধ্যও পারস্পরিক সমন্ধ বিনষ্ট হয়।

ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়

সুন্দর মনের চেয়ে চোখ ধাঁ-ধাঁ-নো সুন্দরের খোঁজ অধিকতর সহজ বলে সকলে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কম-বেশী প্রতারিত হয়।

বাসনার আক্ষেপ

বিহঙ্গ হবার সাধ মিটেছে
মুক্ত আকাশ জোটেনি
খাঁচায় বসে আকাশ দেখি
উড়বার বাসনা মেটেনি।

জীবনের নিশ্চয়তা

আরাম-আয়েশ আর নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তার আশায় সকলে কদম রাখতে চায়, অথচ পরবর্তী কদমের নিশ্চয়তা নিয়ে কেউ ভাবতে রাজী নয়।

নিয়মিত জীবনে অনভ্যস্ত

যারা নিয়মিত জীবনে অনভ্যস্ত, তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ কাঁটায় জড়ানো।

কাপুরুষ

যেকোন দেশের সেনারা সে দেশের গর্ব-অহংকার, কেননা তারা দেশের জন্য নিজের জীবনকে বাজি রেখে সেনা হিসেবে অংশগ্রহন করে আর প্রত্যয় ব্যক্ত করে নিজ জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অবধি দেশ ও মানুষের কল্যানে ব্যয় করার। তারা যেকোন অনাকাক্ষিত অনাগত ভয়-বাঁধার দেয়াল ভেঙ্গে দেশ মানুষের ভুলুন্ঠিত সম্মান ফিরিয়ে দেবার কিংবা ধরে রাখার অঙ্গিকারে সদা থাকে প্রস্তুত।

যুদ্ধ হয় সমানে-সমানে! যে যুদ্ধ শুরুর আগেই কারও পরাজয় শতভাগ নিশ্চিত করে রাখে, তাকে যুদ্ধ বলাটা অসম্মানের আর তাতে অংশগ্রহণ করা সেনাদের দেশপ্রেমিক না বলে কাপুরুষ ভুষণে আখ্যা দেয়াটা অধিকতর যুক্তিযুক্ত।

আমি রোহিঙ্গা জনগনের পক্ষে, যে যতভাবেই যুক্তি-তর্ক প্রদান করুক না কেন, কয়েকজন হিংস্র উন্মত্ত জানোয়ারের কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে একটা জাতিগোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দেবার পয়তারা করা, ঘটনার সত্যতাকে সন্দিহান করে তোলে। যদি সত্যিকারেই ক্যাম্পে ঢুকে সেনা হত্যাযজ্ঞ হয়ে থাকে, তবে সে ঠেকাতে না পারার কিংবা নিজেদের কর্তব্যের ব্যাপারে সজাগ না হবার ব্যর্থতা তো রাষ্ট্রের। এটা রাষ্ট্রের দূরদর্শিতাকে প্রশ্নযুক্ত করে, প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের ন্যায় কর্তব্য সম্পর্কে, যারা দেশকে পাহারা দেবে বলে নিজেদেরই পাহারা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এই সুযোগটাকে ব্যবহার করছে সুযোগ সন্ধানীদল, যা রাষ্ট্রকে বরাবার অযাচিত ভাবনায় ফেলে দিতে যথেষ্ঠ। অথচ রাষ্ট্র যে কিনা নিজের দূর্বলতা ঢাকতে না পেরে যুগ-যুগ ধরে বসবাসরত জাতিগোষ্ঠীকে অবাঞ্চিত ঘোষনা দিয়ে কাপুষোচিত হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে।

সহস্রাব্দের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখছি এই সহিংস নেক্কারজনক ঘটনাকে বিশ্ব কি করে সহে যাচ্ছে। আজ চোখ মেলে চারিদিকে তাকিয়ে বুঝতে অক্ষম আমি আর আমার বোধ। ভাবছি, এ মানুষের মানবিক আত্মার পচন নাকি অমানুষের যাতনা সইতে না পেরে পলায়ন!

না, কাপুরুষ সেনাদলের এভাবে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে মানুষ হত্যা আমি কোনভাবেই মানতে পারছি না, মানতে পারছি না একের অন্যায়ে অন্যকে দূর্বিসহ জীবনে ঠেলে দেয়া, নিষ্কোমল জীবনগুলোতে তীব্র ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়ে আরও কতগুলো সহিংস জীবনের উত্থানকে।

বাঁচি কেমনে প্রেম বিহনে

আরাধ্য দেবতা আমার-
সেও ব্যাকুল প্রেমনুরণনে
পরিব্রাজক হয়ে তবে
বাঁচি কেমনে প্রেম বিহনে!

প্রয়োজনের গল্প

একদিন তোমার প্রয়োজনে তুমি জন্মালে,
আমার প্রয়োজনে আমি-
এরপর পরস্পরের প্রয়োজনে আমরা এক হলাম
আর প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়ল প্রয়োজনের গল্প

প্রিয় প্রতীক্ষায়

বসন্ত তরু-
কলি ছড়িয়ে ফুল দিলে
পাপড়ি ছড়িয়ে সন্তরিত-সম্ভোগ;
কুঞ্জলয়ের ভ্রমর ফিরিতে কহিও
প্রিয় প্রতীক্ষায় প্রেমিক হৃদয়ে
জমে অনুযোগ।

বন্যার আর আমি?

জানতাম ঝড়গা ছাড়া প্রেম জমে না, কিন্তু তাই বলে এতটা? দিনে-দুপুরে ঘরে-বাহিরে এতটা নিলর্জ্জতায়? বন্যার উপর খুব রাগ হচ্ছিল, কষ্টও। উপরওয়ালাকে মনে-প্রানে ডাকছি, যেন এই লজ্জা হতে মুক্তি মেলে। কিন্তু বন্যার নিলর্জ্জ গা বেড়ে ঢলে পড়া, শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে যেখানে-সেখানে টেনে নিয়ে যাওয়া, কিছুতেই রুখতে পারছিলাম না।

আজ সত্যি হতভম্ব আমি! আদি খোলস চুকিয়ে নিতে চায় সমস্ত সম্পর্কের বেড়ী বিন্যাস। অথচ কয়দিন আগেও কত আত্মদম্ভ সম্মান অহং সমুজ্জল ছিল। যৌবনের তেজদীপ্ত উচ্ছ্বাসে কত ছল্ - ছটাকে ছুটেছিলাম দিক-বিদিক। অথচ আজ অনন্তযৌবন ছৌঁয়া উদ্দীপনা মিটে দিচ্ছে প্রণয়বৃন্তের মন্ত্রণায়। আজ দন্ডায়মান পরিস্থিতি লোক সরোবরে নিস্তেজ করে দিচ্ছে উজ্জ্বল আলোকশিখার প্রেম পরিব্রাজক সূর্য্যটাকে।

বড় বিরহিত এই অনুলব্ধ বিন্যাস। সান-সৈকত আর আত্মগরিমার জমিয়ে রাখা অনুসঙ্গকে আজ বিদীর্ন করে তুলছে প্রতিটি খরস্রোতা ঢেঁউয়ের লয়। জীবনের সমস্ত লেনা-দেনা মিটে যাচ্ছে প্রাপ্তী-অপ্রাপ্তীর হিসেব-নিকেশে। পাবার সৌন্দর্য্যও আজ বিমুখ, বিভূষণে রঙ্গিন করে দেবার মতো সমস্ত চাকচিক্য আর অন্তরের গচ্ছিত সমস্ত স্বপ্নের আদিলেখা মুছে যাচ্ছে খাবি খাওয়া চুমুর রহস্যে। ভালোবাসার চিত্রপটে তাই এ এক দুর্বিসহ যন্ত্রণা।

প্রেম সমস্তই বিসর্জনের, প্রেম সমস্তই লেনদেনের। তাই সমস্ত হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে বন্যার গ্রাসে সলিল একটি পরিযায়ী পাখির নীড়ের, একটি পরম যতনে আগলে রাখা মধুর স্বপ্নের।

[লেখা পড়ে কেউ না আবার খারাপ কিছু ভেবে বসে তাই নিচে বি. দ্রঃ দিয়ে দিলাম]
[বি. দ্রঃ- আজ বাহারাইনের এক কাষ্টমার কল দিয়ে বলল- বিপ্লব ভাই, আমাদের এখানে তো বন্যায় সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকেও মনে হয় ভাসতে হবে। তাকে মজা করে বললাম- ভাইয়া, বন্যার সাথে আপনার কাজ কারবার কি? তারই প্রেক্ষিত ধরে, বন্যা আর আমি।]

ভন্ড ও ভবিতব্য

মানুষকে মানুষ ভাবতে পারা, বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ হতে শেখা আর মানবতা জাগ্রতকল্পে সচেতনতাই কেবল বিশ্বব্যাপী খুন-ধর্ষণ-আহাজারি কিংবা জাতি বিদ্বেষের মাত্রা কমাতে পারে।

যারা নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের নিধন উল্লাসের সহিত করে শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিবোধ আর জাতিসত্ত্বার দোহাইয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য কেঁদে-কেটে চৌচির হচ্ছে, এরাও ভন্ডশ্রেনীর।

আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি, যারা এদেশে সংখ্যালঘুদের মানুষ বলে মনে করে না, তাদের ক্ষয়ক্ষতিতে মনে-মনে খুশি হয় অথচ রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের বিবেকের দরবারে কুঠারাঘাত হচ্ছে, যদি সত্যিকারের বিবেকবান সমাজের ধরুন আমাদের দেশে রোহিঙ্গারা স্থায়ী আবাস পায় এবং এই দেশে সংখ্যলঘু‘রা নিছিহ্ন হয়। সেদিন এদেশের এই কপট ভন্ডধারী‘রাই অস্ত্র উছিয়ে রোহিঙ্গাদের কতল করতে ছুটবে বহিরাগত বলে।