অবিবেচকের দিনলিপি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অবিবেচকের দিনলিপি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০

এদেশে লকডাউন তুলে দেওয়া উচিত

দেশের সামগ্রিক বিবেচনায় লকডাউন এ দেশের জন্য মোটেই সমাধান নয়। তাই এদেশে লকডাউন তুলে দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। বিষয়টি এজন্যই বিবেচনার-
১) এদেশের মানুষ প্রচন্ডরকম অসচেতন, একগুঁয়ে, কট্টর, সংস্কারহীন, দাসমনোবৃত্তির, ঐক্যহীন, মতহীন, অধিক কৌতুহলী, ভাবলেশহীন, অগ্রাহ্যমনা, নীচমনা, দূর্বল

স্বভাব ও দূর্বল চিন্তাধারার।
২) সরকার ব্যবস্থা পক্ষকেন্দ্রীক, শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অসমর্থ্য, ভীরুতাপূর্ন্য, ক্ষমতাকেন্দ্রিক।
৩) রাস্ট্র ব্যবস্থা দূর্বল, অসহনীয়, নীতিনৈতিকতা বিবর্জিত, অাগ্রাসী।
যেহেতু রাস্ট্র, সরকার আর জনগনের মধ্যেকার কোন সমন্বয় বা ঐক্য সংস্থাপন কোনভাবেই সম্ভব নয়, তাই লকডাউনের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া এদেশে প্রয়োগও

বাস্তবিকভাবে সম্ভব নয় বরং এতে কর্মহীন মানুষের দিকে দুর্ভিক্ষ ধেয়ে আসবে আর করোনা থেকে বাঁচাবার পথ খোঁজা এখানে অমূলক হয়ে দাঁড়াবে।

মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০২০

সর্বতো সকলের মঙ্গল কামনায়

মৃত্যু অনিবার্য্য! নির্ধারিত!
হয় আজ অথবা কাল।
কিন্তু সেবা পেশাকে বেছে নিয়ে কাপুরুষের মত জীবন বাঁচাতে ঘরে আবব্ধ হতে চাই না। 
যতক্ষন সুযোগ আছে মানুষের কল্যানেই বাঁচতে চাই। আর এতে অপেক্ষমান


মৃত্যু দ্রুত হানা দিতে চাইলেও তাকে অভিবাদন জানাই।
যদি মৃত্যু কেড়ে নিতে চায়, তবে একটাই আপসোস অবশিষ্ট বর্তমান থাকবে। তা হল- আমার ছোট দুটো বোনকে আর যে সন্তানকে সহসায় ভরসা দিয়ে মমতার দুনিয়ায় নিয়ে এলাম, তাদের কোন শক্ত ভিট আমি রচনা করে যেতে ব্যর্থ হলাম।
সর্বতো সকলের মঙ্গল কামনায়, স্রষ্টা আমাদের সকলকে ভালো রাখুক, সুস্থ রাখুক।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২০

শূণ্যতা

মৃত্যুর পরেই একজন মানুষ কতটা শূণ্যতা তৈরী করতে পারে তা বোঝা যায়।
মা ছেড়ে গেলেন ১৪ বছর শেষ হতে চলল, এর মধ্যে চারপাশ জুড়ে কত নতুন  সম্পর্ক বাহুপাশে বেঁধে নিল, অথচ আমার মায়ের তৈরী করা শূণ্যতার দশ শতাংশ ও সবে মিলে পূরণ করতে সমর্থ হলো না। স্বার্থপর দুনিয়ায় আমার মায়ের শূণ্যতাই কেবল আমাকে তাড়া করে ফিরল।

শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বাবা হবার অনুভূতি

বাবা হবার অনুভূতি সত্যি অন্যরকম অসাধারণ। গতকাল সন্ধ্যেয় সে বুক ভরে পূর্ণতা এনে দিলে আর তাতে সারাটা রাত কখন যে জেগে কেটে গেল, টেরটিও পেলাম না। 

(আমার প্রথম সন্তান ত্রিদেবের জন্মদিন)

বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০১৮

বিশ্বাসের জায়গা

 কেন জানিনা ঠিক, তবে বিশ্বাসের জায়গাগুলো ক্রমাগত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮

অনেকটাই প্রতীক্ষায় ছিলাম

অনেকটাই প্রতীক্ষায় ছিলাম-ছোটবোন নিজের যোগ্যতায় একটা অবস্থান তৈরী করুক। আমরা নিন্ম মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান, জীবনের পদক্ষেপে আহামরি কোন আকাঙ্খা নেই। শুধু শেষ অবধি চালিয়ে নেবার মত একটা অবস্থান পেলেই তাতে খুশি। এজন্য নোবিপ্রবি'তে ''ল্যাব এটেনডেন্ট'' হিসেবে ছোটবোনের চাকুরী জীবন শুরুটা আমার জন্য অনেক বড় স্বপ্ন পুরনের মতো। 


২০০৬ সালে মায়ের অকাল মৃত্যুতে মায়ের যে সোনার সংসার অনলে পুড়ে শেষ হতে বসেছে, সেই শেষ থেকে আবার নতুন করে শুরু করা জীবনে, এ বাসনার পুরনও আমার জন্য অনেক বেশী।
সকলের আর্শিবাদ একান্ত কাম্য।

সোমবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৮

অযোগ্যরা তেলবাজ, দালাল, সমাজের অবক্ষয়।

আমি কোটা সংষ্কারের শতভাগ পক্ষে।
দেশ অযোগ্য অথর্বদের হাত থেকে মুক্ত হোক,
যোগ্যরা যোগ্যতাবলে আপনা স্থানে অধিষ্ঠিত হোক।


রক্ত দিয়ে অর্জিত যে স্বাধীনতা
তাকে পুনরায় পরাধীন করছে কোটা প্রথা
কেননা; অযোগ্যের দল বরাবরই কাপুরুষ হয়
অযোগ্যরা তেলবাজ, দালাল, সমাজের অবক্ষয়।

মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রাতগুলো কেমন জানি

 এভাবে বসে-বসে কত রাত পার করে দিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। জীবনের রাতগুলো কেমন জানি, মাঝে-মাঝেই অস্থির করে তোলে!

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মানবতারই জয় হবে

স্বপ্নহীন আমি আশায় বাঁচি, একদিন পৃথিবী মানুষেরই হবে। সব শেষে মানবতারই জয় হবে।

আমি যা

বে-খেয়ালি জীবনকে হেয়ালির খেয়াল পরিয়ে লাভ কি?
তারচে আমি যা তাই বলে ফেরা ভালো।

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

আমি হীরে-পান্না যাচাই করতে পারি না বিধায়

আমি হীরে-পান্না যাচাই করতে পারি না বিধায় সৈকত তটে ঝিনুক কুড়িয়ে ফিরি।
কুড়িয়ে পাওয়া ঝিনুকে নিজেকে নিজের মতো সাজিয়ে সুখবোধ করি।

বন্ধুদের কে বলা

আমি দু'চার শব্দ লিখি, তাতে বন্ধুরা নাকি ফোঁড় খাওয়া ব্যথা টের পায়, অন্তর পৌঁড়া গন্ধ পায়। সে বন্ধুদের কে বলা-

যখন চাঁদনির প্রহর শেষে চাঁদ উবে যায়
কালো আকাশ ভরে উঠে তারায় তারায়
উতলা যতই মন প্রেমের বিলক্ষনে
মাতাল হাওয়া ছুঁলে ভরে সে গানে।

জিতবার আক্ষেপ

আমি সেদিন থেকে জিতবার আক্ষেপটুকু ছেড়ে দিয়েছি যেদিন আবিষ্কার করতে পারলাম হেরে গিয়েও আমি বেশ টিকে থাকতে পারি।

না আমি কখনও কোনকিছুই জোর করে আদায় করতে চাইনি, শুধু চেয়েছি আমার অধিকারটুকু সকলে সেচ্চায় ফিরিয়ে দিক। অবশ্য না দিলেও তাতে আমার আক্ষেপ কিংবা আপসোস কিছুই থাকবে না।

হেরে গিয়ে কি লুকোচ্ছিস গা?

সাদা-কালো জীবনে কানে ভাসে
সুবোধ তুই পালিয়ে যা
জীবন থেকে পালাতে গেলে জীবন বলে
হেরে গিয়ে কি লুকোচ্ছিস গা?

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে মাঝে-মাঝে নিজেকে অসহায় অবস্থায় ফেলেতে হয়। অথচ দিনশেষে সমস্ত অপমান ক্ষতি কেবল নিজেকেই বইতে হয়।

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে প্রতিনিয়ত নিজের মনকে দন্ড দিয়ে গেছি। ভালোবাসি বলে আগলে রাখতে না পারার যন্ত্রণা বইতে পারব না বলেই সরে আছি।

কিন্তু না বলতে পারার আরাধ্য ভালোবাসার অন্তঃক্ষরণ কতটা হয়, সে পরাজিতের অভিপ্রায় না জেনে অনুধাবন এতটা সহজতর নয়!

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

আমি সংশয়বাদী!!

আমি সংশয়বাদী!!

ধর্ম সত্য এ যুক্তি আজও যেমন কেউ আমার মননে গেঁথে দিতে পারে নি, তেমনি ধর্ম মিথ্যা এ সম্পর্কে যুক্তিগুলোও আমার কাছে অতটা শক্তিশালী মনে হয় না। তাই কেউ কোন বিষয়কে আমার কাছে সত্য বলে জোর যুক্তি দেখাতে পারলে আমি তাকে সত্য বলে স্বীকার করি আবার কোন সত্যকে মিথ্যা বা মিথ হিসেবে শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে পারলে তাকেও আমি মানি।

আমার ধর্মের প্রতি যেমন প্রচন্ড বিশ্বাস আছে, তেমনি প্রচন্ড অবিশ্বাসও। পূর্বাপর মহাপুরুষদের মহানুভবতা এবং তাঁদের প্রতি আজও মানুষের শ্রদ্ধাবোধ দেখে আমি যেমন বিমোহিত হই। তেমনি ক্ষমতাশালীর ক্ষমতায় দীন-হীন মানুষের সারাজীবন শোষন, অবহেলা আর অবজ্ঞা আমাকে স্রষ্টার অপার মহিমার বিষয়ে সন্দিহান করে। আমি আমার ভ্রমযুক্ত পৃথিবীতেই কেবল পরিভ্রমন করি। সকল ধর্মের মহিমাণ্বীত হবার জায়গায় আমার যেমন দৃঢ বিশ্বাস আর শ্রদ্ধাবোধ আছে, তেমনি ধর্মকে ব্যবহার করে হিংস্র ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠায় জন্য ঘৃণাবোধও প্রবল।

সহজ করে বলতে গেলে আমার মত সংশয়বাদীদের অবস্থান জাহান্নাম কিংবা নরক! তাই স্বর্গ বা বেহেস্তের সাধও আমার মনে আসে না আর তা মনে আনার চেষ্টাও আমি করি না। দুনিয়ার আলো নিবে গেলে পরপারে কার কি হবে? কে কোথায় যাবে? সত্য-মিথ্যায় কে কতটা এগিয়ে? মুখোশের আড়ালে কে কাকে আস্তাকুঁড়ে ঠেলে পয়দা লুটছে... এসব যেহেতু জানা সম্ভবপর নয় আর দুনিয়াতে নানান পণ্থায় সৎ আর ভালো থাকবার জায়গায় থেকে যখন বার-বার আহত আর প্রতারিত হই, তখন বেঁচে থাকার এই দুনিয়ায় যেটুকু সুস্থ-নির্মল শ্বাস নিতে পারি, এই কেবল আমার কামনা।

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

মেস জীবনের অধ্যায়

নিচতলায় অবস্থিত তিনরুমের একটা ফ্ল্যাটে আমাদের সাত জীবিত (ব্যাচেলর) আর এক মৃত (বিবাহিত) এর বসবাস। যার মধ্যে একরুমে থাকি আমি, আমার পিচ্ছিকালের (বিদ্যালয়ের) বন্ধু সুমন আর আড্ডাবাজ বন্ধুগ্রুপের এর বন্ধু করিম। আমরা তিনজন নোয়াখালীর। অন্য আরেক রুমে পিশাত ভাই সুব্রত আর তার বিদ্যালয়বেলার বন্ধু শরিফ, তারা দুজন লক্ষ্মীপুরের। আর শেষ রুমটিতে থাকে সুমনের বিএসটিআই এর অফিস কলিগ মোশারফ ভাই (কিশোরগঞ্জ), আরিফ (লক্ষ্মীপুর) আর মিনহাজ (কুমিল্লা)। আরিফ আর মিনহাজ দু‘জনেই সুব্রতের ডিপ্লোমার বন্ধু। যাই হোক- যে প্রসঙ্গ ধরে সবার পরিচয় একে-একে দিচ্ছিলাম, সে প্রসঙ্গেই ফিরি।

গতকাল, তখন রাত ১২:৩০ কি তারও একটু বেশী। আমরা বাসায় সাধারনত সবাই ঘুমুতে-ঘুমুতে রাত একটা কি দুটা বাজে। আমি বালিশে হেলান ফেলে আকাম করছিলাম :P (ক্যান্ডিক্র্যাশ সোডা খেলছিলাম), মিথুন ডেল কার্নেগী সমগ্র পড়ছিল। আরিফ জাভা এনড্রয়েড প্রোগ্রামীং নিয়ে ব্যস্ত আর আরিফের ছোটভাই পিয়াস (ঘুরতে এসেছে) আর মোশারফ ভাই মোবাইলে ব্যস্ত, শরিফ মুভি দেখছে আর সুব্রত শরিফের সাথে মুভি দেখার পাশাপাশি ফেসবুক আর পত্রিকা নিয়ে ব্যস্ত। অবশ্য মিনহাজ আর করিম বাসায় ছিল না। মিনহাজ অফিসের কাজে শেরপুর আর করিম ব্যক্তিগত কাজে বাড়িতে।

আমার রুমটা ডোকার মুখেই। হঠাৎ জানালার কাঁচে একটা মাথা। বন্ধু সুমনকে বললাম মিথুন (এ নামেও তাকে ডাকি) দেখ জানালার পাশে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখা যায়। আমাদের বাউন্ডারিতে চারটা বিল্ডিং সেফারেট বাউন্ডারী করা। এর অংশিদাররা সম্পর্কে সবাই ভাই-বোন। আর ইউনুছ মিয়া বাসার দারোয়ান। ইউনুছ মিয়াকে দেখলে একটু অবাকই লাগে, যতক্ষন তাকে দেখী ততক্ষনই ওর চোখ তার এনড্রয়েড ফোনের মধ্যে। একজন মানুষ কি করে একটা বিষয় নিয়ে এতটা সময় মজে থাকতে পারে সে আমার চিন্তার বাহিরে। তার একটা কুকুর আছে, অপরিচিত কাউকে ও বেশ বিরক্ত করে। পেছন-পেছন ছোটে আর গেঁউ-গেঁউ করে। মিথুনকে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখাতেই মিথুন বই বন্ধ করে জানালা দিয়ে সবেমাত্র উঁকি দিয়ে ইউনুছ মিয়াকে কিছু বলতে যাবে, তখনই ও দেখল পুলিশ বাহিনী আসছে। মিথুন জানালার পাশ থেকে আমার দিকে সরে এসেই বলল পুলিশ আসছে। আমি ওর কথাটা মজা হিসেবে নিয়ে আবার খেলায় মন দেব, ঠিক তখনই দরজায় নক পড়ল। আরিফ উঠে দরজা খুলে দিল। সাথে-সাথে ৮ জনের পুলিশ আর বিজিবি সদস্য আমাদের ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ল। ঢুকেই তারা ভাগ হয়ে আমাদের তিনরুমে তল্লাশি চালাতে শুরু করল। আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাগ কাপড়-চোপড় চেক করার পর, টেবিলে বইয়ের তাক পর্যবেক্ষন করতে শুরু করলেন। টেবিলের উপর অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি “আ'মালিয়াতে কোরআন” আর “মৃত্যুর আগে ও পরে” নামক দুটি বই ছিল। আর বিছানায় পড়ে ছিল মিথুনের পড়তে থাকা “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তল্লাশি করতে থাকা পুলিশ “আ'মালিয়াতে কোরআন” হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আমাকে প্রশ্ন করল- বিছানায় বইটি কিসের? আমি জানালাম “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তারপর বন্ধু করিমের টেবিলের ঢাকনা খুলে ঔষধের বোতল খুলে জিজ্ঞাসা করল- এটা কি? বললাম ঔষধ।

আকস্মাৎ অনাকাক্ষিত ঘটনায় কিছুটা বিব্রতবোধ করলাম, কিছুটা শঙ্কাও! মূলত আমরা আমাদের মোটামুটি ভালো করেই চিনি। প্রায় দু‘বছরের মতো একত্রে থাকছি, পাশাপাশি আমদের ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্তমান। আর সবাই বেশ রকমের ধৈর্য্য-শৈর্য্যশালী (কারণ আমাকে যারা সহ্য করে স্নেহ-সন্মান দেখায়, তারা সে না হয়ে পারে না।)। তাছাড়া আমি ব্যতীত (নিজের কথা নিজে বলা যায়?) কখনও কারও আচারনের কোনপ্রকার উগ্রতা কিংবা কোনপ্রকার অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে নি। তাই নিজেদের নিয়ে আমার শঙ্কা ছিলনা, কিন্তু বর্তমান পুলিশের ঘটনাগুলো কম-বেশী জানা থাকায় তাদেরকে একটু সন্দেহের চোখেই দেখছিলাম আর খেয়াল রাখছিলাম, তারা না অস্বাভাবিক কিছু করে ফাঁসিয়ে দেয়।

যা হোক নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাস বলবৎ থাকায় আর পুলিশের আমার রুম তল্লাশি করা শেষ হলে, আমি কিছুটা স্বাভাবিক মনে আবার খেলতে শুরু করলাম। আরিফ রুমের সবচেয়ে ছোট মানুষ আর মোশারফ ভাই ছুন্নতি আলেম মানুষ, দু‘জন একটু বেশী ঘাবড়িয়ে পড়ায় পুলিশের জেরার মুখে পড়ল। আমি যখন খেলায় মনোযোগ দিলাম, তখন দু‘জন পুলিশ এসে আমার পাশে বসে আমার তামশা দেখছে, একজন চেয়ারে বসে-বসে ঝিমুচ্ছে। কিছুক্ষন আমার তামশা দেখার পর- একজন পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করল- কি? ইন্টারনেট চালান? তাহলে কম্পিউটার চেক করতে হবে। একথা বলে আমার কাছ থেকে ল্যাপটপ চাইলে আমি দিলাম, কিন্তু বেরসিক পুলিশ আমার খেলাটাকে মিনিমাইজ না করে কেটে দিয়ে ব্রাউজার ওপেন করে ব্রাউজারের রুপদর্শনপূর্বক কেটে দিয়ে আমাকে ল্যাপটপ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন একটা জিমেইল খুলতে। আমি বুঝলাম তিনি কম্পিউটার হাতে ধরলেও এখনও ওটায় অতটা অভ্যস্ত হতে পারেন নি। তাই আমি ওকে স্যার বলে খুললাম, তিনি তার দেয়া একটা আইডিতে লগিন করে একটা মেইল পাঠাতে বললেন। তা করে দিলাম। ব্যস্ স্যার খুশি হয়ে আমাকে বিভিন্ন উপদেশ প্রদান করতে লাগলেন, আর সাবধান থাকতে বললেন। বললেন- কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত কিছু দেখলে বা অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়লে যেন পুলিশকে জানাই। আমি বললাম- ঠিক আছে স্যার।

রাত একটার মধ্যে পুলিশের সব চেক করা আর কথাবার্তা বলা শেষ হলে তারা বেরিয়ে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে, কিছুক্ষন হাসি-ঠাট্টা চলে। তারপর প্রত্যেকের নিজের রুমে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি চলে। শুতে যাবার আগে মিথুন জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখে- আমাদের মালিকের বোন আমাদের মুখোমুখি বিল্ডিংয়ের দোতালা থেকে আমাদের রুম আর আমাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষন করছে। মিথুন বলল- অবিবেচক, আন্টি দোতালা থেকে তামশা দেখছে। মনে হয় আগামী মাসে বাসা ছাড়ার নোটিশ পাব। আমি বললাম- এত সহজ? কি অন্যায়ে ছাড়ব? এরপর আরও কিছুক্ষন দু‘বন্ধু কথা-বার্তা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে অফিসের প্রস্তুতি নিয়ে বেরুতেই দেখলাম, আন্টির স্বামী টাংকির পানি চেক করছে। আমাকে দেখে কিছুটা সন্দেহের দিকে তাকাল মনে হল। ভাবছি- তবে কি মিথুনের ভাবনা সত্য? বাসা ছাড়ার নোটিশ মিলতে পারে? যদি তাই হয়, তবে বাসা ছাড়ার কষ্টে আমি কিন্তু মিথুনকে আচ্ছা ধোলাই দেব। বলব- কুফা তুই ঐ কথা মনে করাতেই তো বাসা ছাড়ার নোটিশ এল..

সময়ের পরিবর্তন

সময় বদলাচ্ছে, জীবন বদলাচ্ছে
বদলাচ্ছে মুখের ছাপ
ভাব বদলাচ্ছে, অনুভব বদলাচ্ছে
জড়াচ্ছে দুঃখ তাপ...

[ছোটবেলায় খুব রোগাটে আর পিচ্ছি থাকায়, আমাকে নিয়ে মায়ের কষ্টের অন্ত ছিল না। শারীরভাবে উর্বর করতে মায়ের সে কত কি প্রচেষ্টা ছুটোছুটি। আবছা মনে আছে- ষষ্ঠ কি সপ্তমশ্রেনীতে থাকাকালে আমার শারীরীক উন্নতির জন্য মা আমাকে ৭-১০ টি ভিটামিন ইনজেকশন করিয়েছিলেন। সে ইনজেকশনের যন্ত্রণা মনে পড়লে আজও আতকে উঠি। কমচে কম ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা এই ইনজেকশনের ব্যাথা থাকত। কিন্তু সব রকমের প্রচেষ্টা চালিয়েও মা আমার তার ছেলেকে মোটা দেখতে ব্যর্থ হল।

আজকের দিনটাতে দাঁড়িয়ে কিছুটা আপসোস, আক্ষেপ আর বুকভরা কান্না আড়াল করা ছাড়া কিছুই করার নেই। মাকে হারিয়েছি ১০ বছর গত হবার পথে। অথচ যে চেষ্টা করে মা ব্যর্থ হয়েছে, যে শরীরের ক্রমাগতবর্ধনে এখন নিজেই ভীত হচ্ছি। ইতোমধ্যে ৭০ কেজি ওজনের সাথে লড়তে শুরু করেছি।]

বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?

প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অফিসের কিছু অর্থ খুইয়েছি বেশী দিন হয় নি। গতপরশু আবার আরোক প্রতারক চক্রের কল। কল দিয়ে বলল- হ্যালো গ্রামীণ ফোন থেকে বলছিলাম। বুঝতে পেরে তাকে- জিজ্ঞাসা করলাম, কদ্দিন যাবৎ চাকুরী করছেন? বলতেই- গালি করতে করতে কলটা কেটে দিল। অফিসে থাকায় গালিগুলো শুনে হজম করা ছাড়া কিছুই করার কিংবা বলার ছিল না।

শালার ভাগ্য আর সময়টাই দেখুন!!

প্রতারণাও করবে আবার গালিটাও দিয়ে আরামে কেটে যাবে। আর আমি শালা বুঝে-শুনেও মুখে কুলুপ এঁটে, বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?