বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

বান্দিও মন্দিরাতে

ভোরের পাখি খুলে আঁখি
ডানামেলে ডাকিও
বিহানবেলায় হিমেল ছোঁয়ায়
সাথে নিও সঙ্গ দিও, প্রিয়।

রাত জোনাকি নিলে ডাকি
ডেকে নিও সাথে
আকাশ তারা আলোকধারা
বান্দিও মন্দিরাতে।

কোরোনা দেনা-দরবার

দ্বীপ জ্বলুক কিংবা দিল
দুই জ্বলে কেবল অঙ্গার
নিকষ কালোয় আলো দেখে
কোরোনা দেনা-দরবার।

হয়ত একদিন

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
রবি আর রাতের তারার আলো আলতো ছুঁয়ে প্রাণ জুড়োবে
সানবাঁধানো পুকুরজলে জলতরঙ্গে মন ভোলাবে
উদাস হাওয়া সবুজঘাসে প্রজাপতির দোল সে খাবে

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
স্বপ্ন দেখে লড়তে থাকা জীবনগুলো রং রূপ পাবে
কাঁদার মাঝে লুটিয়ে পড়া আলোর ঝলকে চিত্র হবে
ভূলে যাওয়া পথের ভাবুক সেও স্মৃতি খুঁজে নেবে

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
ন্যায় আদায়ের দীপ্তকণ্ঠ আকাশ জ্বেলে বজ্র হবে
অসহ্যের সব দৃড়বলয় ভেঙ্গে-চুরে গুড়িয়ে দেবে
জানবার মতো বিশ্বসংসার আপন হাতে গড়ে দেবে।

এখনও বিয়ে করিনি

একজন বলল বিপ্লব ভাই, আপনার কেউ নেই?
বললাম- আছে ত, মা-বোন-পাড়া প্রতিবেশী -আত্মীয়
আরে তা না
তবে?
প্রেমিকা!
না, প্রেমিকা নাই, বউ আছে...
বউ? কোথায়?
বাপের বাড়ি
কেন? এখনও উঠিয়ে আনেন নি?
আরে তা না, এখনও বিয়ে করিনি...

মেয়ের পেছনেও কিন্তু ঘুরে

বন্ধুশ্রেণীর একজন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল- ভাইরে দুনিয়ার সবাই স্বার্থের পিছনে ঘুরে।
আমি তার দীর্ঘশ্বাসকে হালকা করে দিয়ে বললাম- মেয়ের পেছনেও কিন্তু ঘুরে..

ঘৃণার থু-থু সে খুব কমজনই গিলে নিতে সক্ষম

সবাই কম-বেশী লিখতে চায় কিন্তু সবাই লিখতে পারে না আবার লিখলেও সবাই ভালো লেখে না।
একই মানুষের সন্মানের জায়গাটা জনবিশেষে কিংবা স্থানবিশেষে ভিন্ন। আজকে কারও লেখার অনেক কদর থাকতে পারে আবার ভবিতব্য সময়ে অলেখা-কুলেখাগুলোই সমান প্রিয় হতে পারে।
পৃথিবীতে একদিন ধর্মটা তীব্র বিশ্বাসের স্থানে ছিল, তখন বিজ্ঞানটাকে অবাস্তব রুপকথা ভাবত সকলে। কিন্তু এখন যখন বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত, ক্রমাগত দ্যৌদুলমান জীবনে পড়ে মানুষ এখন ধর্মটাকে সংশয়ে ঠেলে রুপকথার গল্প বলতে চাইছে?

বলছি সময়ের প্রাপ্তিকাল কিন্তু খুব বেশী নয়, তাই অযথা অন্যের লেখার মানদন্ড নিরূপণ না করে প্রত্যেককে প্রত্যেকের মত কিছু প্রকাশের স্বাধীনতা দিন না। বলছি- আঘাতের পরিণাম ত হাসি তে হয় না আর ঘৃণার থু-থু সে খুব কমজনই গিলে নিতে সক্ষম।

নেবে কি খেলায় যাদু-সোনা

খেলার বয়স চুকিয়ে এলাম তবু-
মন আমার আজও ভরল না
আমার সোনারঙ্গা দিনগুলো ছোঁব
নেবে কি খেলায় যাদু-সোনা?

প্রকৃত জয়ী

জীবনযুদ্ধে বার-বার হেরেও যে বা যিনি মাথা তুলে নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে পারেন, তিনিই প্রকৃত জয়ী।

২০০২ সালে মাধ্যমিক দেয়া ছেলে-মেয়েদের বেশীরভাগ ভোদাই প্রজন্ম!

২০০২ সালে মাধ্যমিক দেয়া ছেলে-মেয়েদের বেশীরভাগ ভোদাই প্রজন্ম!

না বলছিলাম- ২০০২ সালে আমরা যারা মাধ্যমিক দিয়েছি তাদের অনেককেই দেখেছি জীবনের প্রতিটি পরতে এত-এত নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হয়েও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের সংশোধন করতে সমর্থ হইনি। জীবনের প্রতিটি প্রহসনই এখন যখনটা না মর্মাহত করে, তারচেয়ে নিজেদের বোকামীর জন্য হাসি আসে। জীবনের গল্পগুলো বললে হয়ত অন্যরাও আমাদের বলদামির কথা শুনে হেসে উঠবে।

আচ্ছা গতকালকের বন্ধুর মোবাইল রুম থেকে নিয়ে যাওয়ার গল্পটাই বলি। নতুন বাসায় আমরা দুবন্ধুই আঁচ করতে পেরেছিলাম বাসায় এঘটনা ঘটার সম্ভবনা শত ভাগ। তারপরও নিজেদের অসাবধানতায় বন্ধুর আইফোন আর নোকিয়া সেট দুটো রুম থেকে চোরে নিয়ে গেল। বন্ধু রাত তিনটায় ঘুমিয়েছে আর আমি ৬ টার দিকে ঘুম থেকে উঠেছি, অথচ ঘুম আমাদের এমনভাবে জড়িয়েছিল, দুইবন্ধুর কেউই টের পাইনি এমন একটা ঘটনায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে চলে আসলাম, বুঝতেই পারিনি কিছু একটা ঘটেছে। আর বন্ধুর অফিস শুক্রবারে বন্ধ থাকে বিধায় সে ১১ টায় ঘুম থেকে উঠে টের পেয়েছে। সন্ধ্যায় অফিসে বসে ছোটভাইয়ের কাছ থেকে ঘটনাটি শুনে বেশ কষ্ট পেলাম। তারপর যখন বাসায় পৌঁছে বন্ধুর বিমর্ষ মুখ দেখলাম তখন নিজেদের ভোদাই গুণের কথা মনে করে কষ্টের বদলে মুখ চেপে হাসি বেরিয়ে আসছিল। সত্যি বলছি- জীবনের প্রহসনগুলো সত্যি বড় বেশী হাসিয়ে যাচ্ছে।

নদীর উথাল-পাতাল ঢেঁউ

ও নদী ক্ষরস্রোতে ভেঙ্গে দিলি কার সোনার শহর
ও নদী ভেঙ্গে দিলি স্বপ্নডাঙ্গার পাড়া-পড়শির ঘর
ও নদী কেড়ে নিলি অনুরাগীর কপলের সিঁধুর
ও নদী গহীরে ডুবিয়ে দিলি রাখালিয়ার সুর
ও নদী তোর বুকে একটু কি মায়া নাই
ও নদী পাষান হৃদয় তোর মত আর নাই
কারও নাই নাই নাই নাইরে
ও নদী পাষান হৃদয় তোর মত আর নাই

(নদীর উথাল-পাতাল ঢেঁউ, বাঁধিতে নাই কেউ
ক্ষরস্রোতে দু‘কূল ভেঙ্গে যায়।)

নয়া ভেলায় ডাক পড়িলে বৈঠা বায় ত্বরায়
ও সে পাষাণে ভূলায়
নতুন পাতা সবুজ গায়ে ফাগুন জাগায়
ও সে পুলকে মজায়
তবে তোর চলনে রসের রঙ্গ কেন ভেসে যায়
হায় কোন সে সীমানায়
কারও নাই নাই নাই নাইরে
ও নদী পাষান হৃদয় তোর মত আর নাই

(নদীর উথাল-পাতাল ঢেঁউ, বাঁধিতে নাই কেউ
ক্ষরস্রোতে দু‘কূল ভেঙ্গে যায়।)

আমার ভেস্তে গেলে ঘর, আমি পড়ি তার ভিতর
দিন পড়িতে দিনের মায়া নাই
যখন সময় সে ফুরায়, আমার দেহ খাবি খায়
স্বাদের জীবন জলেতে মিলায়
তবে জীবনটাকে মিছে মায়ায় কেন বেসে যাই
বাসিবার যা ছিল কেন বাসতে পারি নাই
কারও নাই নাই নাই নাইরে
ও নদী পাষান হৃদয় তোর মত আর নাই

(নদীর উথাল-পাতাল ঢেঁউ, বাঁধিতে নাই কেউ
ক্ষরস্রোতে দু‘কূল ভেঙ্গে যায়।)

বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫

দু‘জন যদি ভাসি

পূর্ণিমার চাঁদ
সেদিন; দেবে কি লাজুক আলোর হাসি...
সহসায় হৃদ তৃয়াসে জলতরঙ্গে
দু‘জন যদি ভাসি!

গীবন জ্বইলে-পুইরে ধুয়া-ধুয়া, পুড়া-পুড়া হইয়া যাইব

বিয়ের আগেই কত্ত অভিজ্ঞতা জ্ঞান ভান্ডারে জমা হইতেছে, আমি ত জ্ঞাণীর জ্ঞাণী মহাজ্ঞাণী হয়ে যাচ্ছি হে...

আইজকে এক কলিগ কইল- প্রাইভেট চাকুরীজীবীদের বউকে বাড়িতে রেখে দূরে চাকুরী করতে হলে বউরে আদরে আর গাজরে রাখত হইব। নইলে মোবাইল ফুনে প্যানাপ্যানানি আর চাকুরীতে বসের গ্যানগ্যানানী দুই‘ই মিলে গীবন জ্বইলে-পুইরে ধুয়া-ধুয়া, পুড়া-পুড়া হইয়া যাইব।

জীবন কেমনে চলে জানতে চান?

জীবন কেমনে চলে জানতে চান?

তবে বলি-

ধরুন; কোথাও টাকা দিয়ে একমুঠো সুখের সুযোগ বিক্রি হচ্ছে। সুখের কথা শুনেই মুহূর্তে অনেক প্রার্থী এসে জুটে সুযোগ পেতে। অনেক প্রার্থী দেখে বিক্রেতা ফন্দি করে লটারির মাধ্যমে যার ভাগ্যে জুটবে তাকে সুযোগ দিতে আর বেশী লাভের আশায় শর্ত জুড়িয়ে দেয়- সুযোগের পূর্বে অর্থ প্রদান করতে হবে এবং তা অফেরতযোগ্য। অফেরতযোগ্য অর্থের কথা শুনে উচ্চবিত্ত বাবা-মায়ের সন্তানগুলো সুযোগ পেতে নির্ধিদ্বায় টাকা দেয় এবং বিকল্প সুযোগ খুঁজে। উচ্চমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানগুলো প্রতিযোগিতায় মধ্যবিত্ত কিংবা নিন্মবিত্তদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেখে হিংসুটে মনে ওদের ঠেকাতে অংশ নেয়। মধ্যবিত্ত ঘরের উগ্র সন্তানগুলো যারা প্রত্যহ জীবন-যাপন নিয়ে অসন্তুষ্ট, তারা পরিবার পরিশেষে ক্ষোভ পোষন করে টাকা দেয়। মধ্যবিত্তঘরের ভদ্র হবার চেষ্টা করে ফেরা সন্তানগুলো বাবা-মা কষ্ট পাবে বলে দিতে চেয়েও সরে যায়। নিন্ম মধ্যবিত্তঘরের সন্তানগুলোর তীব্র আকাঙ্খা দেখিয়ে আশপাশ করতে থাকল কেউ যদি তাকে সুযোগ করে দেয়, তারা নিজেরাও কিছুটা ম্যানেজ করতে চেষ্টা চালায়। আর দরিদ্রঘরের সন্তানগুলো উৎসুক মনে বোকার মত সবার কার্য্য দেখে হতবাক চেয়ে থাকে।

(বিঃ দ্রঃ - সমসুযোগ বলতে জীবনে কিছু নেই, থাকে না।)

লটারি হয়ে গেছে, এখন ফলাফল ঘোষনার পালা। পাওয়া কিংবা হারাবার ভয়ে সবার মনে কিছুটা ধুরু-ধুরু। কি হবে? আর কে হবে সৌভাগ্যবান?

কি হবে তা নিয়ে একটু অগ্রীম ভাবি-

যদি উচ্চবিত্তদের কেউ সুযোগ পায়। তাহলে কি হবে?

# উচ্চবিত্তেরদল উচ্ছ্বসিত হবে।
# উচ্চমধ্যবিত্ত না পাওয়ার আকাঙ্খায় অনুভব করলেও আহত হবে না।
# মধ্যবিত্তের ক্ষুদ্ধদল পরিবার সমাজের কাছে আরও বেপারোয়া হিসেবে পরিচিত হবে।
# মধ্যবিত্তঘরের ভদ্র সন্তানগুলো চারপাশ মিলিয়ে নিজেকে শান্তনায় ভুলাবে কিন্তু হীণমন্যতায় ভুগবে।
# নিন্মমধ্যবিত্ত অংশগ্রহণের সুযোগ না পাওয়ার যন্ত্রণায় ভুগবে।
# দরিদ্রের দল হাততালি দিয়ে পেটের ক্ষুধা দমিয়ে নেবে।

যদি উচ্চমধ্যবিত্তদের কেউ সুযোগ পায়। তাহলে কি হবে?

# উচ্চবিত্তেরদল থোরাই-কেয়ারে চলে যাবে।
# উচ্চমধ্যবিত্ত পাওয়ার আনন্দে মধ্যবিত্ত কিংবা নিন্মমধ্যবিত্তদের বাক্যবানে জর্জরিত করতে চাইবে।
# মধ্যবিত্তের ক্ষুদ্ধদল পরিবার সমাজের কাছে আরও বেপারোয়া হিসেবে পরিচিত হবে।
# মধ্যবিত্তঘরের ভদ্র সন্তানগুলো চারপাশ মিলিয়ে নিজেকে শান্তনায় ভুলাবে কিন্তু হীণমন্যতায় ভুগবে।
# নিন্মমধ্যবিত্ত অংশগ্রহণের সুযোগ না পাওয়ার যন্ত্রণায় ভুগবে।
# দরিদ্রের দল হাততালি দিয়ে পেটের ক্ষুধা দমিয়ে নেবে।

যদি মধ্যবিত্তঘরের উগ্র কেউ সুযোগ পায়। তাহলে কি হবে?

# উচ্চবিত্তেরদল মনে-মনে আপসোস বোধ করে চলে যাবে।
# উচ্চমধ্যবিত্ত আহত হয়ে ভৎসনা করবে।
# মধ্যবিত্তের ক্ষুদ্ধদল আত্মভিমানী হয়ে সময়ে উচ্চমধ্যবিত্তকে চপটেঘাত করতে চাইবে আর নিজের অবস্থানের সকলকে কটাক্ষ করার প্রয়াস করবে।
# মধ্যবিত্তঘরের ভদ্র সন্তানগুলো আপসোস বাড়বে কিন্তু নিজেদের মধ্যেকার কেউ পাওয়ায় মনে-মনে আহ্লাদিত হবে।
# নিন্মমধ্যবিত্তদের যন্ত্রণা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
# দরিদ্রের দল কিছু পাবার আশায় হাত বাড়াতে চাইবে।

[বিঃ দ্রঃ - উদযাপনটা বৃত্তাকারে বিত্তভেদে হয়]

ব্যাপারগুলো এখানে সীমাবদ্ধ নয়।

চলতে চলতে চক্রাকার জুয়া খেলার এই জীবনে কেউ বারংবার হেরে হয় জুয়াড়ি-সন্ত্রাসী কিংবা লুটররাজ,
কেউ নেয় ফকির-দরবেশ কিংবা বাউল সাজ।
কেউ যাপনে চির দুঃখী হয়ে কলহে করে নিত্য চিৎকার,
কারও দিনব্যাপী সুখী দিনে ভালোবাসারা মিলেমিশে হয়ে যায় একাকার।

সমগ্র বিচার ব্যবস্থা স্থগিত করা হোক

নিজামী ভদ্দরলোক, খুবই অমায়িক ভাষা-ব্যবহার-আচারণ। তাই অতীতের ভূলগুলো বর্তমান চরিত্র ও বয়স বিবেচনায় ক্ষমা করে দেয়া হোক। -খন্দকার মাহবুব।

পৃথিবীর সব অপরাধীর বর্তমান প্রত্যক্ষ করা হোক আর তাদের বয়স এবং আচারণ বিবেচনায় তাদের ক্ষমা করা হোক। -অবিবেচক দেবনাথ।

এপিটকঃ রক্ত টগবগে থাকা কালে অপরাধ করুন এবং লুকিয়ে পড়ুন। বয়স বাড়লে ভালো মানুষি মুখোশ পড়ে ধরা দিন। কিছু আবাল আইনজীবী আপনার ভদ্র ব্যবহার আর বয়স দেখে বিচার করতে আর্জি জানাবে।

[বিঃ দ্রঃ বয়স আর আচারণ বিবেচনায় অপরাধের শাস্তি হলে, সমগ্র বিচার ব্যবস্থা স্থগিত করা হোক।]

জীবনটাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ফালা-ফালা করতে হবে

যেহেতু ঢাকা শহরের ৯০ শতাংশ বাড়িওয়ালারা ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দেবে না বলে ঠিক করেছে, সেহেতু প্রত্যেক বাড়িওয়ালাদের উচিত অনেকগুলো কন্যাসন্তান পয়দা করা আর আমাদের মতো ব্যাচেলরদের ২-৩ মাস পরপর বাড়ি ভাড়া খোঁজা থেকে রেহাই দেয়া।

নতুন বাসায় উঠতে রাত দুটো পর্যন্ত কাজ করে এখন শরীরের ব্যাথা সহে অফিস করতে হচ্ছে। এই ঢাহা শহরের বাড়িওয়ালাগুলোর যন্ত্রণায় হয় বিয়ে করে তাদের বউ দেখাতে হবে, না হয় জীবনটাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ফালা-ফালা করতে হবে।

মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে

আমার মাঝে আমি না রইলে 
আমার রব সে রবে কোনখানে 
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে
ওরে ও ভোলা মন- 
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে

গীতায় স্বয়ং বিধাতা, বলিছে সে গুহ্য কথা
জীবেতে আত্মারুপে বসত, করে চিণ্ময়আত্মা
যদি আত্মায় আত্মা না চিনে, মানুষ চিনিবে কেমনে
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে
ওরে ও ভোলা মন- 
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে

দেহেতে সাঁইত্রিশট্রিলি কোষ ঘের, তাতে দুইশ রকম ফের
শুদ্ধসংঘ না পেলে বান্ধব, বুঝবে কি হেরফের
আবার অহমে ইন্দ্রিয় না শুধে, শুদ্ধ হৃদয় পাই কেমনে
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে
ওরে ও ভোলা মন- 
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে

আগে কর্ম কর ঠিক, তবে পাইবে সঠিক দিক
ষড়রিপু বশ হইবে, মানুষ হইবে ঠিক
অবিবেচক কয় গীতা-কোরাআন-বাইবেল, তাহাই বলে বর্ণনে
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে
ওরে ও ভোলা মন- 
মানুষ না হয়ে মানুষ ভজিব কেমনে

প্রচেষ্টা

যন্ত্র যদি পড়ে থাকে লক্ষ জনা মাঝে
যান্ত্রিক বিনা যন্ত্র কেমন করে বাজে।

উপরের দুটো লাইন গানের লিরিক। কিন্তু আমি এই লাইন দুটো দিয়েছি অন্য উদ্দেশ্যে।
যারা এই দুটো লাইনের মর্ম উদ্ধারে সমর্থ, একমাত্র তারাই বূঝতে পারে চলার পথটা কার সঠিক।

আমি সবসময় একটা বিশ্বাস ধরে রাখি এবং তা ধরে আকড়ে থাকি। আমাকে যখন পদচ্যুত পথ আকড়ে ধরে, তখন আমি নিজের মনের কাছে মণিষীদের বাণীগুলো উচ্চারণ করি-

“সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে নাই।“
“যত্র জীব তত্র শিব।”
“জীবে প্রেম করে যে জন, সেজন সেবিছে ঈশ্বর।”
অথবা নিজে চয়ন করে বলি-

“মানুষ বিনে ধর্ম কি ভাই পালন হবে শুদ্ধ, ধর্মের শান্তির বাণীতে যদি মানুষই বিদ্ধ।”
“অগত্য কোন পথে, শান্তি মিলে ভাই। মন যদি না শুদ্ধ রয়, বন্ধন মিলে কি তায় ”
অথবা
“আমার মাঝে আমি না রইলে, আমার দয়াল সে রবে কোনখানে। মানুষ না হয়ে মানুষ ভজব কেমনে।”

আমি জানি এই দুনিয়ায় স্রষ্টাই যখন নানানজনে কাছে নানানরুপে পরিব্যাপ্ত তখন বিভাজনে আমরা কতটা বিচ্ছিন্ন হই কিংবা আমরা সত্যিকারে মানুষ হবার পথটাতেই হয়ত বিভক্ত হয়ে পড়ি। তবু একটা উপায়েই কেবল আমরা সঠিকভাবে স্রষ্টার অণ্বেষন করতে পারি, তা নিজেদের মধ্যেকার মূল্যবোধ সৃষ্টি করে, মানবতাটুকু পরিশীল করে। পরিপার্শ্বের সাথে যুদ্ধ করে সত্যিকারের মানুষ হওয়া সত্যি দুষ্কর কর্ম । তবুও যতটা সম্ভব হচ্ছে চেষ্টা চালাচ্ছি, বাকিটা যিনি গন্তব্য স্থির করে দিয়েছেন তাঁর ইচ্ছে হলেই পৌঁছুতে পারব।

প্রশ্ন!

এখনও কি সম্মোহনে পল্লিগাঁয়ের রাখালিয়া
বাঁশিতে নেয় সখী ডাকি?
এখনও কি ঢোলের ঢুংয়ে পায়েতে বাজে ঘুঙ্গুর
খেলাঘরে নামে আলোর চাঁন কি?

বল হে সখী বল, রোদেলামন আজও কি ভিজে
চৈতালি মেঘবরণ ধারায়
আজও কি প্রতীক্ষা শেষে নয়নে নামে ঢল
ব্যাকুল মন কেঁদে-কেঁদে সারা।

এই তবে ভালোবাসা, ছুঁয়েছে মন তোমার
মরিতে হবে বীষের জ্বালায়
জানিও ওগো সখী, কলঙ্ক লাগিবে গায়ে
পুড়িতে হবে নিষ্ঠুর কালায়।

আত্মবিশ্বাস শূণ্য এবং সে কারও দায়িত্ব নিতে অসমর্থ্য

কারও মন যদি অন্যের আশ্রয় কিংবা অন্যের কাছ থেকে সুযোগ নেবার প্রত্যাশায় থাকে, মনে রাখুন তার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস শূণ্য এবং সে কারও দায়িত্ব নিতে অসমর্থ্য।

সিরিয়াস কৌতুক সাথে প্রশ্ন (মিঃ বিন দেখার কারণে কৌতুকটির জন্ম সাথে প্রশ্নটির)

পাশের ফ্ল্যাটের পিচ্ছি অনুমান করি বয়েস দুই কি তিন হবে, অনেকক্ষন ধরে আব্বু-আব্বু করছিল। কোনদিক থেকে কোন সাড়া আসছিল না। আমি আমার রুমের চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমি ছাড়া আর কেউ নেই। বলুন তো পাশের ফ্ল্যাটের পিচ্ছি কাকে আব্বু-আব্বু ডাকছে?

অসহায় নিরাপরাধ কাকে বলে?



অসহায় নিরাপরাধ কাকে বলে?

আমি অসহায় নিরাপরাধ শব্দগুলো নিয়ে গোলযোগে পড়েছি। এতদিন আমার গোলযোগ ছিল না, কিন্তু রাজাকারদের ফাঁসি শুরু হবার পর থেকে কিছু বন্ধু-বান্ধবদের কথায় এই শব্দদুটি নিয়ে আমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছি। এখনো আমার বন্ধুদের কেহ-কেহ উগলে বমি করে বলতে চাইছে, যাদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে তারা রাজাকার নয়। যদি জিজ্ঞাসা করি কেন? সহজে উত্তর দেবে- শুধু কি এরা রাজাকার? আওয়ামীলিগে রাজাকার নাই? সরকার যদি রাজাকারের বিচার করে থাকবে তবে, শুধু বিরোধীপক্ষকে কেন রাজাকার বলে ফাঁসি দিচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীর নিজের বেয়াইও ত রাজাকার, তার বিচার করবে?

আমার প্রশ্ন দেখুন আর তাদের উত্তর দেখুন। প্রশ্ন কেন তারা রাজাকার নয়- আর উত্তর আওয়ামীলিগে রাজাকার নাই, বেয়াইও রাজাকার।

কোন সৌজন্যতা দেখাচ্ছি না, সরাসরি ভেবে নিচ্ছি তাদের মনস্তাত্ত্বিক ধ্যান-ধারনা আর কার্য্যবিধি। কিন্তু তারপরও একটি কথা তাদের উদ্দেশ্য করে আবার বলা- আজ যাদের রাজাকার হিসেবে ফাঁসি হচ্ছে- ঠিক কি কারণে এদের অসহায় নিরাপরাধ বোধ হচ্ছে?

এদের অর্থ-বিভব নেই? ক্ষমতা-দাপট নেই? বিদেশী লবিং নেই? তাদের জন্য লড়ার আইনজীবী নেই? এদের অবস্থা কি ঠিক এতই কর্পদস্ত যে, চাইলেই এদের অপরাধী প্রমাণ এত সহজতর? আইন-প্রশাসনের পক্ষে এদের অপরাধী প্রমাণ করা এতটাই সহজ? তবে অকারণে এদের রিভিউ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে? ঠিক কি কারণে এদেরকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী আওয়াজ উঠছে? একদম সহজ করে বলি- পাকিদের সাথে আজও এদের কেন এত সখ্যতা দৃশ্যমান হচ্ছে?

এরপরও নিরাপরাধ অসহায়?

বলছি ভোদাই, তোদের যতই বুঝাই,

মাথায় যে মাল জমেছে তা ঝেড়ে ,মানুষ হবি? চেষ্টা বৃথাই।

আর একবার দেখুক পৃথিবী

সাকা চৌধুরীর মতো গলা মিলিয়ে বলতে চাই না- “ফাঁসি যখন নিশ্চিত তখন তা উপভোগই শ্রেয়!”

বরং বলতে চাই, আর একবার দেখুক পৃথিবী- “অপরাধীর ক্ষমা নেই, সে যত ক্ষমতাশালী কিংবা দাম্ভিক হোক না কেন।”

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫

শরীরের বীষপোড়া

যখন শরীরে বীষপোড়া উঠে তখন তা সারাদেহ যন্ত্রণায় দহে।
আবার প্রদীপের শীখা বেড়ে পড়া ক্ষুদ্র আলোও রাত্রির অন্ধকারে অনেকটা পথ আলোকিত করে।

প্রোফাইল পিকচারে ফান্সের প্রতি সমবেদনা জানাতে ফান্সের পতাকা দেওয়াতে আমার যেসকল বন্ধুরা আহত হয়েছে, উপরের দুটো কথা তাদের জন্য। আইএসআইএস কে নির্দেশ করেই কথা দুটো। আশা করি আমাকে ভুল না বুঝে আমার কথাটি বন্ধুরা উপলব্ধি করবে।

আর একটি কথা, যারা আজ বলতে চাইছে লম্বা দাঁড়ি আর জুব্বা পড়ে আইএসআইএস নামধারী যারা ইসলামের নাম ভেঙ্গে এসব করছে তারা মূলত ইসলামের শত্রু। তাদের আবার অনেকেই দেখছি আইএস এর সাফল্যে খুশিতে গদগদ হতে। আইএস এর সাফল্যগাঁথা ছবিতে লাইক দিতে। সত্যি বলতে কি- আমার বিশ্বাস আইএসআইএস এর পতন হলে এরা সমভাবেই ব্যথিত হবে।

(অজ্ঞাতে কাউকে আঘাত করলে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী)

পতন হোক সাম্রাজ্যবাদের

আদর্শিকতার ব্যাপারে মতের অমিল থাকলেও কোন ধর্মগ্রন্থে আমার অবিশ্বাস নেই। আমি আমার জীবনের যে মেরুতে দাঁড়িয়ে আছি, এখানে এসে দাঁড়াতে গিয়ে আমি যাদেরকে জীবনের আদর্শ কিংবা স্বরূপ মেনেছি- তারা কোন না কোন ধর্মের মতাদর্শী। তাই যুগ কিংবা কালের নাও বেয়ে যে সত্য আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাকে এক তুড়িয়ে মিথ্যা-বানোয়াট কিংবা অসত্য বলতে আমার কার্পণ্যতা সর্বাধিক। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, ধর্মগুলোকে কেউ-কেউ ইন্দ্রর্জাল বলতে চাইলেও এর অর্ন্তহীত যে বোধগুলো নিয়ে জগতে শীর্ষস্থানগুলোতে যারা পৌঁছেছে- ধর্মের আদর্শ কিংবা সারতর্ত্ত্ব যদি সত্যি বানোয়াট হত, তবে সে আকড়ে কেউ শীর্ষে পৌঁছতে পারত না।

কিন্তু ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি করা, এটাকেও আমি মানতে পারিনা। যেমন আমার কথাই যদি বলি তবে যে সত্যিটা সামনে এসে দাঁড়ায়, তাতে আমি দেখী- আমি চাইলেই অনেক কিছু মেনে চলতে পারি না। জীবনের অসঙ্গতিতে কিংবা সামাজিক অথবা পারিবারিক কারণে। যেহেতু অনেক ভাবনাকে কারণে অবহেলায় রাখতে হয়, তাই নিজের মনকে বুঝ দিতে কিংবা স্থির রাখতে আমাকেও নিত্য-নতুন কোন কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়। অথাৎ আমার ব্যক্তিগত একটা মতাদর্শ আমাকে তৈরী করতে হয় স্রেফ নিজেকে বুঝ দিয়ে রাখতে।

পৃথিবীর ৯০ শতাংশ মানুষকে আমি একই কাতারে ফেলি। কারণ আমি মনে করি, যাদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা শক্তিশালী রুপ নেয় নি, তারা কখনও কোন প্রকার নিজস্ব চেতনা কিংবা মতাদর্শ তৈরী করে চলছে না- হাজার শক্তিশালী যুক্তি প্রদান করলেও তা সত্য নয়। আর এই ধর্মীয় বাড়াবাড়িগুলোও এই ৯০ শতাংশ মানুষের হাত ধরেই তৈরী হয়। যারা না সঠিক ধর্মের সারতত্ত্ব প্রদানে সামার্থ্য, না জীবনের বাস্তবতায়। ফলশ্রুতিতে জীবনের সবক্ষেত্রেই এদের অবস্থান অনেকটা জগাখিচুড়ির মত। মানে এরা নিজেরাও শান্তিতে থাকতে পারে না, অন্যকেও শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না। আর এখানেই আধিপত্য বিস্তার করে মডারেটর, প্রমোটর কিংবা সাম্রাজ্যবাদীরা। এরা বিভ্রান্ত মানুষগুলোকে পেঁচিয়ে এতটাই গুলায় যে, সাধারণ মানুষগুলো নিজেরা সঠিক বলে ছুটতে বাধ্য হয়। তাতে সে খুন হচ্ছে নাকি তার মতো অসহায় কাউকে খুন করছে খেয়াল করে না। আর এখানেই সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থকতা।

পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হোক, আর পতন হোক সাম্রাজ্যবাদের সেই কামনা অহর্নিশ।

এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই

এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই
আমি যে কয়েকটা দিন বাঁচি ভাই...

আমি দুনিয়ার মোহে সব ভূলে যাই
পরকালের স্বর্গ খুঁজি কোথায়?

আমার ধর্মজ্ঞান নাই (আমার ধর্ম আচার নাই)
বেদ-কোরানের তত্ত্বসার জানিব কোথায়?
(আমার) রাত পৌহালে সংসারযজ্ঞে
সারাটা দিন কেটে যায়
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...
যারা করে ধর্মের আচার, জানে তারা তাঁর তত্ত্বসার
তাই পরপারের স্বর্গের আশায়, করে তা প্রচার।
শুধু বুঝি না তাদের এ কেমন বিচার
আমার এপাড় স্বর্গ পুঁড়ে করে ছাই
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...

আমি মূর্খ্য মানবভ্রুন, পাইব কোথায় তেমন জ্ঞাণীর গুণ
যাদের হাজার রকম নরক যন্ত্রণায়, টুটে যায় চোখের ঘুম
অজ্ঞাণী আমি ভাবী বসে, দেহের মধ্যে কোনস্থান আছে
দহণ ব্যথায় সমান না পৌড়ায়
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...
শুনি গুণীজনের কাছে, লক্ষ যোনি পর মানব এসেছে
মানব মুক্ত নিষ্কাম কর্মগুণে, স্বয়ং স্রষ্টা বলেছে
তবে স্বর্গ পাবার কর্ম কিসে, চলছে সবাই কিসের পিছে
অবিবেচক ভেবে কয় জানা নাই
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...

আন্তরিকতার অভাব দেখে

রাজন-রাজীব হত্যাকারীদের বিচারের যথাযথ প্রয়াসের জন্য সরকার আর বিচার বিভাগের প্রতি অকুন্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য রইল।

কিন্তু এখনও কষ্ট পাচ্ছি সরকার-প্রশাসন-বিচারবিভাগের সাগর-রুনি, বিশ্বজিৎ, ত্বকী, সৌরভ, অভিজিৎ, হিমাদ্রী, নিলাদ্রী, ওয়াশিকুর বাবু, ফারুকী, রাজীব, অনন্ত বিজয়, দীপনসহ রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয়ভাবে আক্রান্ত মানুষগুলো হত্যার বিচারের ব্যাপারে আন্তরিকতার অভাব দেখে।

চাপাবাজি

দুইবন্ধু মুভি দেখছে, এসময় একবন্ধু কিছুক্ষন পাশে বসে চলে যেতে চাইলে মুভিতে মনোযোগী বন্ধুটি বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে বলল, কিরে চলে যাচ্ছিস কেন? বসে মুভি দেখ, মুভিটি ভালো হবে মনে হচ্ছে।

বন্ধুটির কথা শুনে চলে যাবার জন্য উদগ্রিব বন্ধুটি বলল- আরে ছাড়। এই মুভি আমি আগে অনেক দেখেছি, মুভির আগাগোড়া সব মুখস্থ। বন্ধুর জবাব শুনে অপর বন্ধুটি বলল- কি বলিস? মুভিটি তো নতুন, তুই কি করে দেখলি? ঠিক আছে যদি দেখে থাকিস তবে কাহিনী বল-

জায়গায় ধরা খাওয়া বন্ধুটি আমতা-আমতা করে আদ্যপ্রান্ত ভাবছে কি বলবে....ঠিক এসময় একটি অ্যাকশান দৃশ্য চলছে, যেখানে নায়ককে দেখে ভিলেনরা পালাচ্ছে- এই দৃশ্য দেখে বন্ধুটি বলল- আরে ঐযে দেখছিস ছেলেটা, ওটা নায়ক আর হিরোয়িনটা নায়িকা। আর বাদ-বাকী প্রেম-রোমাঞ্চ-মারামারি-কাটাকাটি অন্য ছবির মত। তুই দেখ, কাহিনী আমি যা বলেছি এর বাহিরে কিচ্ছু নেই। অবশ্য তোর যেহেতু মুভি ভালো লাগে তুই মজা পাবি, দেখ দেখ, আমি গেলাম....

অনুকাব্য গুচ্ছ**

১)

বুঝিনা- নির্বিকার জীবনই কি কেবল বৃত্তবন্দি?
ফুল কি কেবল ডালের বন্ধনিতেই-
উজাড় করে মধু বিলায়?
ক্ষয়ে-ক্ষয়ে সুবাস বিলায়?
মুগ্ধতায় রুপসুধা বিলায়?

তবে- ক্ষয়ে যেতে বন্দি হব প্রাতঃরাশে!

২)

কিছু মানুষ ঘরে বসেই
যুদ্ধজয়ের গল্প লেখে
সৈনিক কিন্তু রণাঙ্গণেই
যুদ্ধজয়ের গল্প শেখে।

৩)
যে বোঝে তারে না হয় যায় বলা-
যে বুঝতে করে ছলা-কলা, তারে বোঝাতে কে নেবে জ্বালা?


সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী

যখন সমাজব্যবস্থা সাম্যবস্থায় পৌঁছার চেষ্টা করছে, তখন পুরুষালী সমাজ আড়মোড় ভেঙ্গে মোছড়াতে শুরু করেছে। আর ক্ষমতার বাহুবিন্যাস নারীর সাথে মিলিয়ে দেখাতে চাচ্ছে নারীর ক্ষমতা নস্যি তাদের তুলনায়। এখানে পুরুষালীসমাজ নারী ভূমিকা ধারন করতে চায় এবং নারীকে শেখাতে চায় তাদের ভালো-মন্দের ব্যাপারগুলো। ব্যাপারটা এমন- যেন নারীসমাজ তার ভেতরকার জাগ্রত সত্ত্বাকে কখনও উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। অথচ নিজেদের ব্যাপারে তাদের সচেতনতা আদ্যৌ জাগ্রত হচ্ছে কি?

কিন্তু এটা কেন হচ্ছে?

হচ্ছে কারণ- পুরুষ নারীসমাজকে দাবড়িয়ে রাখতে চায় নিজেদের ভেতরের পশুত্ব কিংবা অপকর্ম ডাকতে কিংবা নিজেদের চরিত্র চরিতার্থ করার মতো বাসনা যেন নারীর মধ্যে জাগ্রত না হয়, সে ঠেকাতে।

আমি সবসময় যা মনে করি তা হল- যেহেতু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আর্কষনটা স্বাভাবিক, তাই চারিত্রিক নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারটা ব্যক্তির ভেতর থেকে হওয়া উচিত। নারী যদি রাস্তা-ঘাটে পুরুষের উন্মুক্ত অঙ্গভঙ্গি দেখেও স্বাভাবিক পথ চলতে পারে, তবে নারীর পোশাকের দায় দিয়ে কেন তাকে হটানোর পয়তারা করা হবে?

নারী সমন্ধে বলতে গেলে অনেকের মধ্যে একটা সুর প্রায়ই উঠে, তা হল- নারীর দূর্বলতা তার মাতৃত্বে। অথাৎ নারীর অনিষ্ট সাধন খুবই সহজতর। তাই যে কোন অনিষ্ট তার চরিত্রে কালিমা লেপে দেবে। এখানে প্রশ্ন দাঁড়ায়- নারীর এ দূর্বলতা হবে কেন? এবং কালিমার ব্যাপারটা কেন একা নারীরক্ষেত্রে হবে? যদি কেউ নারীর অনিষ্ট করে তাহলে উপস্থিত নারী-পুরুষ দু‘জনের চরিত্রই তো শুদ্ধতা হারাল। তাহলে কলংঙ্কের দায় নারীর একার কেন? শুধু সন্তানের উৎপাদনের কারণ কিংবা সন্তানের লালন-পালন হেতুর দায়ে যদি নারীকে টুটি চেপে ধরে রাখা হয়, তবে একটাই উত্তর সন্মুখে এসে দাঁড়ায়, তাহল- পুরুষালীসমাজ বিবেকবর্জিত, এরা নিজেদের সাধু সাজানোর জন্যই কেবল নারীসমাজকে ঘরের ভেতর আটকে রাখতে চায় কিংবা কোনঠাসা করে রাখতে চায়।

জীবনগুলো জীবনের মতো পরিচ্ছন্ন হোক। দাবড়িয়ে রাখার পয়তারায় যে সন্দেহের দেয়াল তৈরী হচ্ছে তা ভেঙ্গে যাক। আর নারী-পুরুষের মধ্যেকার সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী।

গন্তব্যের পথ ধরে ছুটে চলছে তার সীমানা

সময়ের কথা বলছি- দেশ যে গন্তব্যের পথ ধরে ছুটে চলছে তার সীমানা তো কেবল নিষ্ঠুর পরিণতি।

না সে ভাবতে চাই না, তবু কেন জানি ভাবাচ্ছে-
বলি একদিন কি তবে স্বাধীনতার স্বপক্ষে লড়াকু সৈনিকদের কাছ থেকেই স্বাধীনতার অর্জনের জন্য লড়তে হবে?

নিজেকে স্তব্ধ করতে গিয়ে...

শুভাকাক্ষি প্রিয় মানুষগুলো বারংবার নিষেধ করছে কোন প্রকারের প্রতিবাদমূলক লেখা পোষ্ট করার ব্যাপারে। তাদের বারংবার নিষেধে কিছু লিখতে গেলেই একটা বাঁধার বলয় সামনে এগিয়ে আসে। বারবার মনে হয়- এ নিষেধ অমাণ্যতে তারা কষ্ট পাবে। কিন্তু বিচলিত মনকেও স্থির রাখতে পারি না।

মৃত্যু নিয়ে হাসপাস করা কিংবা মৃত্যুতে ভীত তত্রস্থ হয়ে পড়া সে এখন আমাকে এতটা আবেগী করে না। কিন্তু শুভাকাক্ষি মনগুলোর ভালোবাসা ডিঙ্গিয়ে মনের রক্তখরণগুলো বারবার মুছে নিতেও কষ্ট হচ্ছে খুব। কোন কিছুই ঠিক বুঝতে পারি না, শুধু ভাবনা আসে এভাবে নিজেকে স্তব্ধ করতে গিয়ে নিজের ভিতকার শক্তিটাকেই না স্তব্ধ করে দেই।

বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫

আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

দয়াল গো...
ও দয়াল, দয়াল গো.....

দয়াল- মাতাল হাওয়ায় উদাস এ মন পাগল হয়েছে
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে....

বাবুই পাখি বাসা বুনে সুনিপুন অতি
আমার দেখিয়া এমন কর্ম মনে জাগে মতি
তাই পরের খড়-কুটো কাটি, মজি জগত বিনাশে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

দেহমোড়া জড়ধেনু সুখের আশায় ছুটে
আমি কামনার ফলা বানিয়ে দিলেম তাতে জুটে
এখন চলছে জীবন লুটে-পুটে, না দেখে ভিতর-বাহিরে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

কাঁদেতে কলিকাল এসে কালি মেখে যায়
আমার দেহ-কর্ম চিত্তমর্ম ভুমিতে লুটায়
অর্হনিশ জীবন খাতায়, অনেক হিসেব জমেছে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

ঝরা-জিহ্ন দেহ নিয়ে সাধু সঙ্গ করি
গুরুর পদপদ্মে মজে স্মরি হে শ্রীহরি
আমার কূলহারা তরী ব্যকুলে ছুটে, ডুবে মরি অকূল সমুদ্রে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

পারা, না পারা

অপশক্তি ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস রুদ্ধ করতে পারে, ব্যক্তিতে কেটে খন্ড-বিখন্ড করতে পারে, ব্যক্তির স্বপ্নটাকে থামিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তার ভেতরকার সত্ত্বা, তার মগজের চিন্তা-চেতনা, তার ধ্যানযুক্ত সৃষ্টি কিংবা তার আত্মিক দর্শন কোনটিকেই নিঃশেষ করতে পারে না।

আপনি থেমে গেলেন কিংবা থামবেন ভাবছেন?

আপনি থেমে গেলেন কিংবা থামবেন ভাবছেন? পরাজয়টা আপনারই কেবল
ভয় আছে থাকবে, ক্রমাগত ভয়ে হাত কেঁপে-কেঁপে উঠবে, বুক ধড়পড়-ধড়পড় করবে
কিন্তু থেমে গেলেই হেরে গেলেন।

আমাদের ভয়টাতো কেবল মৃত্যুর কিংবা যন্ত্রনার- তাই না?
কিন্তু মৃত্যুটাকে কে কখন কিভাবে রুখবে?
বলছেন মৃত্যু হোক কিন্তু অপমৃত্যুর প্রত্যাশা করেন না, তাই তো?
কিন্তু থেমে গেলে বেঁচে যাবেন, আপনি কি সে ব্যাপারে নিশ্চিত?
গত একমাসে এক নাখালপাড়া রেলক্রসিয়ের আশ-পাশে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে অন্তত ৫ জন।

এ কি অপমৃত্যু নয়? এ কার কাম্য ছিল? তবে ভয়ে এতটা জড়সড় হচ্ছেন কেন?
দেশের বর্তমানকে ভাবুন, ভবিষ্যত স্পষ্ট দেখতে পাবেন...
এদেশে রাষ্ট্রনায়ক আছে, ভাবাদর্শের লোক আছে, আইন-আদালত আছে, আছে বিচার ব্যবস্থা
তারপরও ক্রমাগত খুন হয়, খুনিচক্র ধরা পড়ে না? সত্যি তাই? নাকি ধরছে না?
সহজ ব্যাকারণ...ধরা হচ্ছে না
কেন এমনটি মনে হচ্ছে?

বলছি- দেশে গোয়েন্দা বিভাগ আছে, ইন্টিলিজেন্ট গ্রুপ আছে, আছে তাদের সোলস এজেন্ট
যাদের দায়িত্ব দেশের সামগ্রিকতা অবলোকন করে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা।
এত খুনোখুনির পরও যখন তারা যখন কোন ক্লু‘ই পাচ্ছে না, তখন দুটো উত্তর কেবল জ্বলজ্বল করে-
১) অদক্ষ লোক দিয়ে প্রশাসন চালানো হচ্ছে (গাধা দিয়ে হাল চাষ হচ্ছে)
২) প্রভাব খাটিয়ে তাদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে

ভাবুন, আজ যারা গনবিষ্পোরিত এলাকায় প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে খুন করে পার পাচ্ছে,
তাদের কাছে নির্জন স্থানে আপনার রক্ত নিয়ে হোলিখেলা এতো ডাল-ভাত।
এর মানে কি দাঁড়াচ্ছে?

ভাবুন, চুপসে না গিয়ে ভাবুন, আরও তীব্র প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ গড়ে তোলা খুবই জরুরী
না হলে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম মৃত্যুর জন্য হিংস্র হায়েনাদের উপত্যাকায় রয়ে গেল...

কলম কেবল হাত বদলায়

কলম কেবল হাত বদলায় কিন্তু চলার গতি থামায় না।

আমাদের মাথা সে তোমাদের খড়গের নিচেই সমর্পিত আছে, চালিয়ে যাও...
চেয়ে-চেয়ে দেখী কলম থেমে যায় নাকি!!!

আমার প্রিয় হে দেশমাতৃকা, রক্তে কেবল তোমার আঁচলটাই ভিজে লাল হচ্ছে...

কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী

তোমার ঐ চোখ চোখে বীষ ঢেলে দেয়
বীষচোখে উঠে অনল জাগি
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

দেখিতে চোখ বড়ই কোমল
কালো মনিতে হয়েছে সজল
কাজলের কালো পাপড়িতে জল টলমল,
আবার সে জলে জ্বলে মোর আঁখি
শীতল মন চঞ্চল দেখী...
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

ভাবে লোক আমি জাত মাতাল
চোখ তাই এমন রক্তলাল
বলিতে পারি না সখী কেন এমন হাল
অবিবেচক কয় লোক জানেনা
মাতালের নয় কেবল এমন আঁখি...
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

আপাতত রক্ষে



মাতৃশ্রেণী প্রতিটি সন্তানের জন্য আজীবন অবুঝ মায়া আর আবেগ পুষে। এ শ্রেণী সবসময় ভাবে সন্তান কম খেয়ে-খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ এরকম একনাগাড়ে খেতে গেলে যে শারীরীক ভাবে তা ধরে রাখার সক্ষমতা সকলের থাকে না- তা বোঝানো মুশকিল।

দু‘দিন বারংবার খেতে-খেতে আমার ত্রাহি-ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু আমার অবস্থা কাকীকে বোঝানো সে আমার সাধ্যি! যা হোক, আবার সে গন্ডীবদ্ধ জীবনে ফিরে আপাতত রক্ষে।

আমার জীবন ঘিরে অতিবাস্তব



আমার জীবন ঘিরে অতিবাস্তব একটি সত্য বর্তমান- তা হল আমি যখনই কোন আনন্দঘন মূহুর্তকে গ্রহন করি, তার পরক্ষনেই আমার জন্য কোন না কোন বিপদ অনিবার্য্য হয়ে দাঁড়ায়। অথবা আমি যদি কোন আনন্দঘন মূহুর্তের প্রতীক্ষা করি সেটিও কোন ভগ্ন হৃদয়ের আহ্বানে সম্পন্ন হয়। তাই ইচ্ছা হোক কিংবা অনিচ্ছায়, আমি আমার জীবনের আনন্দঘন প্রতীক্ষার বিষয়গুলো এড়িয়ে চলি। সত্যি বলতে কি নিজ বাড়ী কিংবা আত্মীয় বাড়ী, কোথাও কোন উৎসব কিংবা পার্বণ সবকিছুকেই আমি এড়িয়ে চলি। আর নির্দ্বীধার সময়গুলোকে কাটাতে আমি নিজেকে কোন না কোন কাজে ব্যস্ত রাখি। আমি জানি সকলের জীবনেই বিপদ কিংবা খারাপ সময় থাকে, তারপরও দেখী আমি আনন্দঘন মূহুর্তগুলোকে অন্যবিষয়ে ব্যস্ত থেকে কাটাতে পারলেই আমি ভালো থাকি আমার সময়গুলো কিংবা মন ভালো থাকে। তাই শত অনুরোধকে যেকোনভাবে কাটানোই আমার লক্ষ্য থাকে।

আমার মা পরলোকগামী হয়েছেন আজ প্রায় ৯ বছর হল। মা থাকাকালে মায়ের স্নেহময় দিনগুলো কাটাতে পারলেও এখন সবজায়গায় কোন একটা হা-হা-কার সবসময় বয়ে থাকে। আনন্দ করার ইচ্ছেগুলো এখন প্রায় শূণ্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই উৎসব কিংবা পার্বণে কোথায় না পারতে যাই না, কারও অনুরোধ রাখি না। না ভাই-বোন-বন্ধুর, না পাড়া-প্রতিবেশীর না নিজের। জানি না কেন সবখানে অনীহা ছড়িয়ে থাকে।

গত ২ মাস ধরে কাকী কল দিয়ে-দিয়ে নরসিংদী যাওয়ার কথা বলছে। কিছু না কিছু বলে এড়িয়ে যাচ্ছি বারংবার, কিন্তু লক্ষ্মীপুঁজোয় যাওয়ার ব্যপারে কাকীর অনুরোধটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, আমি না গেলে কাকী সত্যিই কষ্ট পাবে। কিন্তু আমি কাকী কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের কি করে বোঝাই, আমার জীবনের এই একটুখানী আনন্দের মূহুর্তও আমার জন্য কোন না কোন কষ্ট বহন করে আনবে। তাই আমি যেকোন ভাবে নিজেকে ভালো রাখতে চাই।

না মাতৃসম কাকীর বারংবার অনুরোধ অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই আগামীকাল সকালে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছি। কিন্তু মনের মাঝে বদ্ধমূল ভয়টা সেঁটে আছে- আবার না কোন বিপদ এগিয়ে আসে, এই একটুখানী আনন্দের মাঝে।

বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫

যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে প্রিয়গো না ভরে আঁখি

যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি
বলো বলোগো কি আর থাকে বাকী,
প্রিয়গো কি আর থাকে বাকী....

শরতের শিশির ঝর-ঝর আড়ালে কি তার আছে
কেন এত ভালোলাগা অকারন এ জীবনে আসে
মরমের ভালোবাসা কেন এত ডাকে বলো দেখী
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

চেনা টানে চেনা সুরে গায় যখন আড়ালে বিরহী পাখি
উতলা হৃদয় পুড়ে মেঘধারায় ভেজামন যায় প্রিয় ডাকি
বিরহ বিনা প্রেম আবেগী মধুর দিন চায় কি
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

এই সে দান প্রিয় এই সে দান
ভালোবাসার অশ্রু বেড়ে যে দান হয় মহিয়ান
জানে শুধু অর্ন্তযামী ব্যকুলমন প্রিয় আঁশে পায় কি
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

কেটে যাবে তোমার দুখ?

তোমার রেখে দেয়া স্মৃতি যদি
হীরের মূল্যে কেউ কিনতে চায়
অনাদরে তারে দেবে কি বেঁচে
দুর্মূল্যের এই বাজারটায়?

যুগের পাঁজর কেটে-কেটে
জমা হয় যে কয়টা অশ্রু-সুখ
হীরের মূল্যে সে কি গো বেঁচে
কেটে যাবে তোমার দুখ?

আমার এ মনের দুঃখ কেমনে যাবে?

আমার এ মনের দুঃখ কেমনে যাবে?

হল কি- একদিন একটা পিচ্ছি কাঁদছিল- আমি বলল, এই পিচ্ছি না বুঝি কাঁদছ কা।
এম্মা, একটুখানি পিচ্ছি কান্না থামায়ে আমারে কয়- ধাতি দিমু।
আমি চোখ রাঙ্গায়ে ভারী গলায় বললাম- এরই....
পিচ্ছি আমার কোন বিষয় আমলে না নিয়ে বলল-ওপ, ধাতি দিমু।
এদিকে আমার ত মান-সুলোমান টিকানো দায়, তাই আমি গলা আগের চেয়ে আরও একটু ভারী করে বললাম, বোপ।
একথা বলতেই পিচ্ছি বাড়ি-ঘর কাঁপায়ে কান্না জুড়িয়ে দিল,
আমি উপায়ান্তু না দেখে পিচ্ছির নিকটজন কেউ আসার আগেই কেটে পড়লাম।

বলি এই জীবনে পিচ্ছিদের কাছেও আমার দাম নাইক্ক...

মহিমাণ্বিত করে

মননশীল কর্ম ব্যক্তিকে মহিমাণ্বিত করে ব্যক্তির আচারণ কিংবা চরিত্র নই। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তির আচারণ তার মৃত্যুর সাথে-সাথেই সমাহিত হয়।

অনুকাব্যগুচ্ছ- ০২

(১)

আকাশের বুকে মনের রঙ্গে
এঁকে দেই যদি আল্পনা
তোমার বিভোর মনের ঘোর কেটে কি
তাকে একটু ছোঁবে না?

(২)

বাপ জুগিয়েছে ছেলে খাবে
জমে যাক এমন গল্প
অলস আমরা কাজ কি মোদের
কিসের ভবিতব্য!

(৩)

এসো হে বিনোদিনী, বিরহী ব্রজবাসিনী
তব নয়নে হৃদয় মজায়ে, তপস্বী ধ্যানে মজে
ওহে অপলক গোপনে, শিয়রে শিহরণে
স্বপন আলাপন সকাল-সাঁঝে....

মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৫

অনুকাব্য গুচ্ছ-০১

(১)

ওরে উজান-ভাটির গৌরী -
তোর বুকের ঐ ঘোলা জলে
নিবি কি আমায় ডুবসাঁতারে?

(২)

হিংস্র হায়নার সামনে বসে, এঁকেছি বিজয়রেখা
যে রেখায় হল বিনিময়- এক সাগর রক্ত, একটি পতাকা।


(৩)

বুলেট যদি মাথায় ঠেকে
বাঁচব কিসে আর?
মন ভাঙ্গিলে সংসার কিসের?
জীবনই ত ছন্নছাড় ।

(৪)
বিষদাঁত পীড়ায় যার
মধুর বচণ
শুনিলে তুষের অনলে
পুড়িবে জীবন।

(৫)

বিষ গিলে ঝিনুকের
হয় মুক্তো সাধন
তবে কেন অমৃত আঁশে
সকলের রোধন?

জীবনরে বেচে দিলে মিলবে কি একমুঠো সোনালী আলো

জীবনরে বেচে দিলে মিলবে কি একমুঠো সোনালী আলো
ও জীবনরে- বিলিয়ে দিলে অনাদরে, ক্ষয়ে যাবে কি অন্তরের কালো

জীবনরে ইচ্ছে মত পুড়িয়ে নিলে ভস্ম ছাইয়ে মিলে কি কোন সোনার কনা
ও জীবনরে ভাসিয়ে দিলে অবেলার স্রোতে, দাম মিলে কি তার দু‘চার আনা।

ও জীবনরে তোর চাওয়াতে উড়ে চলি, চাতক পাখির মতো
জীবনরে তৃষ্ণায় ছাতি ফাটে তবু প্রেয়সি মেঘে ঘুরি অবিরত
জীবনরে অভিশাপের এই মোহনায় সুখ কুড়োতে যাই কার সে সীমানায়
ও জীবনরে চোখের দেখায় ঝাপসা দেখী, খুঁড়ে চলে স্বপ্ন অজানায়।

ও জীবনরে বনের বাঘে খাচ্ছে হরিন ছুটছে সবে রণে
জীবনরে গোপন মন্ত্র জপতে-জপতে ছুটি বৃন্দাবনে
জীবনরে ওপাড় স্বর্গে এপাড় পুড়ে কেন করলি বনাচার
ও জীবনরে বিবেক ধ্বংশ মগ্ন নেশায়, ছুটে শেষ কৈলাশপাহাড়।

ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর

ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর
ও তুই পরের ঘরে থাকিস পড়ে, আপন করিস পর।

ভাবিস কত আপন তোর
ইট-পাথরের দেয়াল তুলে বাঁধবি আপন ঘর
ওরে উড়ু-উড়ু মনের খেলায়, পড়ে যাস ঠিক পথের উপর
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

তোর চলন ভালো নয়
দেহ পচে মনটা পচে উপায় কি আর রয়
ও তোর রুগ্নচেতন ইষ্ট কিসে, কি বয়ে দেহপীঞ্জর ক্ষয়
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

ভেবে নিলি জগতেই সব তোর
ভোরের আশায় জাগিস তবু কাটে না যে ঘোর
ও তুই মাঝনদীর উত্তালে পড়ে, কেঁদে ডাকিস কোথায় প্রানেশ্বর
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বোঝার ভূলে

তুমি হেলায় ঠেলে দিলে বলে
এ জীবনে বিদ্ধ আমি এমন
তোমার বোঝার ভূলে রাখি তুলে
আজও যা মনে গোপন

বেঁচে থাকার গল্প

তবুও বেঁচে থাকতে হয়-
রাতের আঁধারে ডানা ঝাপ্টিয়ে গন্তব্যে ফেরা পাখির মত
রাস্তারধারে অনাদরে অকারণ বেড়ে উঠা আগাছার মত

বেঁচে থাকার অভিনয়ে ভাঙ্গা কুঁড়োঘরে জমে বর্ণিল নুড়ি
আলো কিংবা বাদলে অঘোর ঘুম ভাঙ্গে সুখ সঞ্চায়নে
বিদির্ন স্বপ্নের বিচিত্র নেশা অহেতুক হানা দেয় মনে

দ্যোদুলমান এ জীবন-
একে রং চংয়ে সাজিয়ে একটু রঙ্গিন করে তোলা গেলেই
অযাচিত পথচারি বেশে ঠুকরে চলা প্রতিটি পায়ের ছাপে
সহজেই এঁকে নেয়া যায় বেঁচে থাকার রোমাঞ্চকর গল্প...

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ

রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আগ পর্যন্ত খুব কমজনই জীবনের তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ হয়।

বলতে চাইছি

বর্তমানে বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটিরও অধিক।

সরকার ২১ লক্ষ সরকারি লোককে হাতে রাখতে তাদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুন করেছে। সাথে দ্বিগুনের অধিক হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ সামরিক কিংবা আধা-সামরিক বাহিনীর বেতন। আর বাদবাকী যে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ আছে, যারা দিনমজুরে কিংবা বিভিন্ন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে, তাদের জন্য সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই।

সরকার সরকারী কর্মচারী কিংবা কর্মকর্তাদের এই বর্ধিত বেতনের ধরুন খাদ্য কিংবা নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রবাদির উপর যে প্রভাব পড়বে তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? নাকি সরকার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদে বাকীদের এদেশে অবাঞ্চিত ঘোষনা করবে?

সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বর্ধিত বেতনের কারনে সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে অসাধু উপায় আর ঘুষ বানিজ্য বন্ধ হবে! কিন্তু আমি বলতে চাইছি যারা এতদিন ধরে ঘুষ খাওয়ার এত-এত সুচতুর কৌশল আয়ত্ব করেছে, ঘুষের রকমারী পণ্থা আবিষ্কার করেছে, সর্বোপরি নিজেদের লালসার জিহ্বাকে এত-এত ভারী করে তুলেছে তাদের এই কর্মকান্ডকে সরকার ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় বন্ধ করবার চিন্তা করছে? আর কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে অসৎ উপায় ঠেকাতে কিংবা ঘুষ বানিজ্য বন্ধ বাস্তবায়নে?

নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়

এইযে; যে জায়গাটিতে আপনি আছেন- এখানে জীবনের প্রতিটি প্রদক্ষেপ আপনাকে অনুৎসাহিত করবে। আপনার মন অনুচ্চারিত আগামীর যে সুন্দর প্রভাতটির প্রতীক্ষা করছে- সে প্রভাতটিকে আরও বীষময় করে তুলবে। আপনার চলার প্রতিটি বাঁক‘কে সে আরও বাঁকিয়ে তুলবে, জীবনের প্রতিটি কৌঠর‘কে কদার্য্য করে তুলবে, যদি আপনি মানুষ থেকে থাকেন।

এখানে কেবল মানুষদের কথা বলা হয়েছে। কারণ একজন মানুষ মানুষ হয়ে প্রতিদিন হাজারো হতাশা, রূদ্ধশ্বাস, স্বপ্নের অকাল মৃত্যু, চারপাশের এত-এত যন্ত্রণা-বঞ্চনা-গঞ্জনা, ধর্ষন, ক্ষমতার দম্ভ, অহংবোধ, স্তুপকারে জমা হওয়া লাশের সারি, মৃত্যুতে ঠেলে দিয়ে নৃশংস উল্লাস এসব কোনক্রমেই নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়।

বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী

শুনি দুনিয়াতে সবচেয়ে বড় আদালত মানুষের বিবেক।

যেখানে মানুষের বিবেক পচে দূর্গন্ধ ছড়ায়, সেখানে সঠিক বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী।

বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়

বীরেরদল বীরত্ব দেখিয়ে সন্মানিত হয় আর বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়।

আজকে এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে স্যারের সে কথাটি খুব মনে পড়ছে

ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়াকালে জীবনবিজ্ঞান ক্লাসে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সিরাজউদ্দোলা স্যার যখন কৈশরে পদার্পনকালে মানবদেহের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতেন, তখন ইমোশনাল মনে এর তীব্রতা তৈরীর কারণে পিছনের সারিতে বসা ছাত্রদের মধ্যে হুসহাস-ফুসফাস আর হাসাহাসি শুরু হত। এমত অবস্থায় স্যারের পড়াতে অসুবিধা হত বিধায় স্যার দু‘একজনকে তুলে হুসহাস-ফুসফাসের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা অনুত্তর মুখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকত। তখন স্যার বলতেন, এরে অডা হগল তোরা কি নিয়ে ফুসুর-ফাসুর করছ, তোরা কি মনে করছ আমি বুঝি না? তোগে কিছু বলার বা জানার থাকলে আমারে জিগা, ফুসফাস করছ কেন? একথা বলে বসিয়ে থামানোর চেষ্টা করতে। কিন্তু ছাত্ররা বসেই আবার একই কাজ করত। তখন স্যার রেগে বলতেন, অডা হগল নিজেগোরে কি বেশী সেয়ানা মনে অয়? তোগে মত কত হোলাইন হগল য়ার মুতের লগে চলি গেছে আর কোতুগুন লুঙ্গিত আটকি মরি গেছে। আর তোরা আইয়ছ ......

আজকে এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে স্যারের সে কথাটি খুব মনে পড়ছে। ছাত্রলীগ নামক যে আবালের দল শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারসহ সন্মানিতদের গায়ে হাত দেয়ার সাহস করেছে,তাদের অনেকেই স্যারের প্রসাবের সাথে বেরিয়ে যাবারও যোগ্যতা রাখে না। অথচ ক্ষমতার জোরে আজ তারা কি করছে তা ভাববার জ্ঞানও তাদের নেই। আর যারা এই ঘটনাকে জাফর স্যারের গায়ের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে তাদের কথা আর না ই বললাম.....

মনুষ্যত্ববোধে কেবল মানুষ আপন

ধর্ম কর তুমি তোমার মতন
ধর্ম করি আমি আমার মতন
ধর্ম বলয়ের পথ যোজন-যোজন
মনুষ্যত্ববোধে কেবল মানুষ আপন।

আমার নাম অবিবেচক কেন?

আমার ফেসবুকের বেশিরভাগ বন্ধুদের কৌতুহল আমার নাম অবিবেচক কেন?

সত্যিকারের যদি বলতে যাই তবে এর রহস্য আমার কাছেও কিছুটা অবোধ্য, তারপরও যখন নামটি ধারন করে আছি তাই বলতে হয়-

* আমি “অবিবেচক” কারণ- চলতে গিয়ে আমি দেখেছি আর আট-দশজনের মতো করে আমি এত সহজ চিন্তা কিংবা বিবেচনা করতে পারি না।

* আমার জানার পরিধির চেয়ে প্রকাশ করার পীড়া বেশী।

* আমি মনের কথাগুলো বলতে গেলেই দেখি, আমার বন্ধুদের অনেকে তা সহজে নিতে পারে না।

* আমার প্রকৃত নাম “বিপ্লব” অথচ এই নামের মত আমি কখনোই দীপ্তমান নই।

* যেহেতু নিজ নামটি বহন করবার মতো নিজেকে উপযুক্ত বিবেচনা করতে পারি না, তাই বিবেচনাহীন হয়েই বেঁচে থাকবার অভিনয় করে যেতে হচ্ছে।

* “অবিবেচক” নামটা বহণ করার ফলে কিছু কিছু দায়বদ্ধ পীড়া থেকে সহজেই নিজেকে মুক্ত করে নিতে পারি।

ইত্যাদি.....

ঘামাব আপন মাথা কি ভেবে গণ্য

এই তল্লাটে, একই পাল্লাতে
রাম-রহিমের ওজন যদি হয় ভিন্ন,
অস্বীকারের কিবা আছে, মুক্ত স্মরিয়া পাছে
ঘামাব আপন মাথা কি ভেবে গণ্য?

পরিপূর্ণতা

জন্মে কর্মসিদ্ধ হয় না বরং মানুষের ভিতরকার সৎনিষ্ঠা আর শ্রমের বিনিময়ে তা পরিপূর্ণতা পায়।

বর্নিলে দেখা

হৃদয়ের ক্যানভাসে যে ছবি আঁকা
তারে;
--তুলির রেখায় টেনে বর্নিলে দেখা

ভাষাহীন রোদন

আমি মনের ভাষাগুলো গুলিয়ে ফেলি বার-বার
শব্দরা বারবার বেরুতে চেয়েও স্তব্ধ হয়ে পড়ে,
ঘৃণাগুলোকে উগলে দিতে পারলে স্থির হতে পারতাম
অথবা উন্মাদ হয়ে মাসুদ নামক হিংস্র হায়েনাগুলোর
রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মাততে পারলে-
না; মাসুদ হায়েনাদের এমন করে ষষ্ঠশ্রেনীর
হরিণ শাবকটাকে খুবলে খাওয়ার দৃশ্য-

এ আমি ভাবতে পারি না,
এমন অবলীলায় অমানবিক হিংস্র জানোয়ারের পীড়ায়
জন্মদাতা-দাত্রীর ভাষাহীন রোদন এ আর সহ্য হয় না।

আরও একবার নতি স্বীকার

সুলতানা সুস্থ হয়ে জীবনে ফিরুক সে ইচ্ছেটা ছিল কিন্তু আমার সে ইচ্ছেটা বোধহয় ইচ্ছেতেই থেকে গেল, কারন জীবন তার অতি সন্নিকটে চলে গেছে।

জীবনের রূঢ বাস্তবতার কাছে বোধহয় আরও একবার নতি স্বীকার করতে হচ্ছে।

মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়

মানুষ জীবনের প্রতিটি স্তরে অসহায়।

সমাজে বলুন, সংসারে বলুন, কিংবা জাতি ধর্ম বর্ন গোত্র দেশ কিংবা বিদেশ যেখানেই বলুন না কেন, মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়। অসহায় এই জীবনে প্রত্যেকেই তাই কর্তব্যকে সীমাবদ্ধতার মাঝেই পরিব্যাপ্ত রাখে। স্নেহ-মায়া-মমতা কিংবা মানবতা, সব কিছুই জনবিশেষে সীমাবদ্ধ গন্ডিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে।

ও বিধাতা

এমনি করে জন্ম-মৃত্যু গুনে-গুনে
ক্ষীন সম্ভাবী জীবনও থেমে পড়ে,

হাসপাতালের বিছানায় ছড়িয়ে থাকা বেদনার্ত জীবনের আর্তনাদ
মৌণমুহূর্ততায় দুই-চারটা থেমে যাওয়া শরীর দেখে অভিভূত হই,
বলি ও বিধাতা; এই সহে-সহে ক্ষয়ে যাওয়া দেহে
কেন তবে এত বাসনারা ডুবে মরে?

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক শুধু একজনই। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এমনই একজন বলিষ্ঠ নেতা যার নাম উচ্চারিত হতেই পাকি ঘরনার লোকদের চুলকানী আর গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। শুধু তাই নয়- এই চুলকানী আর গাত্রদাহ তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বহে বেড়ায়। যখন চুলকানী কিংবা গাত্রদাহ খুব বেড়ে যায়, তখন তারা গেয়ে উঠে-

“জাতির পিতা মুজিব পিতা স্বপ্নে দেইখা কয়

দেশটা তো আমার একা, অন্য কারও নয়”

চরম চুলকানীর এই রোগে ভুগতে থাকা তারা ভুলে যায়- যে স্বপ্ন দেখে, দেখায় এবং স্বপ্নকে সার্থক করে, সে সত্যিকার অর্থেই সেই স্বপ্নের দাবীদার। অথচ তারা বঙ্গবন্ধুর বিদ্রুপ করতে গিয়েও তাঁর স্বীকৃত কর্মকে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলে নিজেদের অজান্তেই।

আজ ১৫ই আগষ্ট। বাঙ্গালী জাতির চির শোকের দিন। এই দিনে পাকিসমমনা ক্ষমতালিপ্সুদের হাতে জাতি হারায় একজন সত্যিকারের অভিভাবক, একজন রুপকার কিংবা একজন মহান সেনা নায়ককে। আজ এমন একটি শোকার্ত সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে শুধু এইটাই বলবার আছে-

“ওহে মহান সেনা, সত্যিকারের বলে বলিয়ান

আজ এই দীনহীনের লহও প্রণাম।”

শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৫

প্রিয় ভাবতে দিও

আমায় ভাবতে দিও
যখন তুমি ভাবছ আমার মত, প্রিয়
প্রিয় ভাবতে দিও;

ভাবতে দিও কেন এত লাল টিপ পরেছ
লাল পাড়ের ঐ জামদানি পরে রেশমি চুলের বেনী তুলেছ
কানে সোনার দুল পরেছ, নাকে সোনার নোলক পরেছ

ভাবতে দিও চলতে কেন নুপুর বাজে
দু‘হাতের ঐ রিনিঝিনি চুড়ি বাজে
সকাল-সাঁঝে কোন বিহগের সুর সে বাজে
অকাল বোধন চাঁদ-তারারা গান সে বাঁধে।

আমায় ভাবতে দিও, ভাবতে দিও
কেন তোমায় দেখলে মনে শিহরণ লাগে
দুরুদুরু বুকে কেন এত কাঁপন জাগে
নীল আকাশের সাদা মেঘেরা ভেলায় ভাসে
ভাবনা গড়িয়ে সোনার পালঙ্কে স্বপ্ন আসে?

প্রিয় ভাবতে দিও
কেন তোমায় ছুঁয়ে দিলে চোখ এত লাল হয়
মেঘের সাথে মেঘের গর্জন বুকের বানে বর্ষন হয়
সুখের রাগে কান্নার গড়িয়ে নদী হয়ে সাগরে বয়
হারিয়ে ফেলা দিনগুলো পেতে কেন আবার ইচ্ছে হয়।

কেন তুমি এমন প্রিয়,
প্রিয় হয়ে জড়িয়ে থাক হৃদখোলসে
ভাবতে ভাবতে যখন তখন তন্দ্রা আসে
হাত বাড়িয়ে হাত রেখে যাই সবুজঘাসে; ভালোবেসে অনায়াসে।

জন্ম

দিনে দিনে কত স্বপ্নের অপমৃত্যু
ধরিত্রীতে কত শোকের মাতম
তবু জন্মধারার খোলস খুলে হয়
কতশত কীটপতঙ্গের জনম।

জন্ম বয়ে বেড়ায় অভিশাপের পণ
জন্ম বয়ে চলে জন্মের মতন
নিধারুন জন্মক্ষয় আজও জন্মের বলয়ে
হায়! তবু কত জন্ম দেখ দীনের আলয়ে।

ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলেই প্রেপ্তার করা হবে

ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলেই প্রেপ্তার করা হবে, এমন একটা সিদ্ধান্তে সরকারের প্রতি সাধুবাদ।

কিন্তু আমার প্রশ্ন শুধু লিখলেই কেন? কেন ধর্মিয় উষ্কানিমুলক বক্তব্য দিলে বা অন্যধর্মকে কটাক্ষ করে কোন বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরকার তৎপর হতে চাইছে না? এতে কি সুস্পষ্ট হচ্ছে, এতে কি সরকার বা প্রশাসন কোন নির্দিষ্ট ধর্মবলয়ের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করছে না? যদি না হয়- তবে সরকার বা প্রশাসনকে এও স্পষ্ট করা উচিতঃ

১) যেসকল হুজুর ধর্মীয় উষ্কানী দিয়ে ওয়াজ কিংবা বয়ান দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার বা প্রশাসন কি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে?

২) যারা উষ্কানীমূলক কাজ করে যাচ্ছে তাদের কি সরকার বা প্রশাসন এই ব্যাপারে ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে?

৩) যে সকল ধর্মীয় উষ্কানীমূলক সিডি, অডিও ক্লিপ, ভিডিও ক্লিপ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিষিদ্ধে সরকারের বা প্রশাসনের ভূমিকা কি?

আরও একটি ঐতিহ্যবাহী সংখ্যালঘু পরিবার রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে

আরও একটি ঐতিহ্যবাহী সংখ্যালঘু পরিবার রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারা ফরিদপুরের “দয়াময়ী ভবনের“ বাসিন্দা।

খুবই মজার বিষয় যেটি- তারা ১৯৪৭- এ ভয় পায় নি, ১৯৬৫ তে ভীত হয় নি, ১৯৭১ সালেও তারা এতটা আরক্ত হয়নি। অথচ ২০১৫ তে এসে যে সরকার যখন সংখ্যালঘুদের জান-মালের নিশ্চয়তায় নিশ্চিত করছে বলে গলা ফাটাচ্ছে, তখন সেই সরকারের নেতার দাপটে পরিবারটি রাতের অন্ধকারে মিশে গেছে।

অবশ্য নেতা সাহেব বলছেন- তিনি ১২ কোটি টাকায় বাড়ি ক্রয় করেছেন। লোকমুখে ভাসছে তাকে ১ কোটি টাকা, সাথে হারিকেন-কানাওয়ালা বাঁশ আর পাছায় বনের কচু ডুকিয়ে নেতা সাহেব শিঙ্গে টাঙ্গিয়ে ছিলেন।

আমরা অবশ্য নেতা সাহেবকে সঠিক বলে ধরে নিচ্ছি, বুঝেনই তো তাদের দেশ, তারা ক্ষমতায়, সবকিছুতেই তারা মাথা। তারা কি এসব করতে পারেন?

রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৫

যারা সহি মুসলমান সাজতে চাইছে...তাদের কাছে আমার প্রশ্ন-

আমার বন্ধুদের যারা অনেকেই আজ সহি মুসলমান সাজতে চাইছে, আমাকে ঘৃনা করতে চাইছে আর বারংবার বুঝাতে চাইছে তারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে পড়ছে বলে তাদের কতল করা জায়েজ? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন-

১) আপনি কি ভাই হুজুরের ওয়াজ শুনেন কিংবা বয়ান? যদি শুনে থাকেন তবে তারা হিন্দু ধর্ম বা অন্যান্য ধর্ম নিয়ে কি কি বলে আপনার জানা আছে? (আমি আজমেরি পরিবহনে করে যাচ্ছি, গাড়ির ড্রাইভার গাড়িতে ওয়াজ লাগিয়েছে, হুজুর ওয়াজে বলে যাচ্ছে, কৃষ্ণ কেমন লুইচ্ছার লুইচ্ছা দেখুন সে তার মামীর সাথে অপকর্ম করে মামীকে নিয়ে ভাগছে আর হাজার-হাজার নারীর সাথে আকাম-কুকাম করছে সে কৃষ্ণকে হিন্দুরা বলে ভগবান? হা হা হা, বলেন এমন ভগবানের আপনাদের ধরকার?) । এমন ওয়াজ শুনে আমি হিন্দু হয়ে কি হুজুরকে কতল করতে ছুটব?

২) ব্লগার‘রা কি শুধু ইসলাম ধর্ম নিয়ে মেতেছে, হিন্দু বা অন্যকোন ধর্ম নিয়ে মাতে নি? আপনি যদি বলেন না- তবে আপনি উন্মাদ, আপনি পাগলা কুকুরের মতো নিজেকে আশ্রয় করছেন।

৩) আপনারা জাকির নায়েকের মুরিদ সাজছেন, আল্লামা সফির কিংবা সাঈদির মুরিদ সাজবেন, তারা যখন অন্য ধর্মকে ছোট করে আপনাকে আপনার ধর্মের বিশালতা দেখাবে তখন বাহা বাহা দেবেন, অথচ আপনার ধর্মকে নিয়ে কিছু বলে যখন তারা তাদের ধর্মকে বড় করতে চাইবে তখন তাদের “নারায়ে তাকবির” বলে কতল করে দেবেন?

৪) একই পিতার রক্তে যে সন্তানদের জন্ম, সে সন্তানদের সবাই কি পিতার মতোই হয়? যদি না হয়, তবে সেখানে কি ঘটে, তাদের মধ্যে কি ভালো-মন্দের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে না? নাকি আলাপ-আলোচনা বলতে কিছু নেই, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কতল করতে হবে?

৫) অস্ত্র আজ আপনার হাতে আছে তাই আপনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছেন, কালকে ওরা বাধ্য হয়ে অস্ত্র ধরবে না আপনি তা কতটা নিশ্চিত? তখন এই প্রতিষ্ঠিত শান্তি টিকবে তো?

৬) বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয় সব বিদ্যালয়ের কোন না কোন বন্ধু প্রণোদনা দিয়েছে মুসলাম হবার আর তখন আমরা নিজেরা নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছি নিজ ধর্মকে বড় রেখে। এখানে আমি তার ধর্মের বিপক্ষে কিছু তথ্য দাঁড় করেছি, তাই শান্তির বাহুবলয় গড়ে তুলতে আপনারা তা শোনা মাত্রই আমাকে কতল করতে ছুটবেন?

৭) হিন্দুরা গরুর মাংস খায় না, এ নিশ্চিত জেনেও আমার বন্ধুরা আমাকে গরুর মাংস খাবার প্রলোভন করে বা চেষ্টা করে, এর মানে তাকে খুন করে দেব?

৮) আপনি সত্যিকার ভাবে ধর্মকর্ম করছেন না, তাই আপনি যুক্তিতে বারবার হেরে কতল করতে ছুটছেন, সত্য নয় কি?

আমার কাছে আজ বারবার মনে হচ্ছে এই বাঙ্গালী জাতির রক্তের মধ্যে বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠীর রক্ত এমন ভাবে মিশেছে এরা কোন কালেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমর্থ নয়। আগে ক্ষমতা পেয়ে বাক্ষ্মনরা নিচু জাতের মানুষদের সাথে রুঢ় ব্যবহারে তাদের জীবন অতিষ্ঠ করেছে। আর সেই অতিষ্ঠ জাতি ধর্ম পরিবর্তনের মাঝে আজ ক্ষমতাশালী হয়ে একই উন্মত্ততায় মেতেছে। কিন্তু প্রকৃতি বরাবরের মতোই পরিবর্তিত হচ্ছে। সময় কিন্তু দিক পাল্টাচ্ছে দ্রুততার সাথেই।

প্রতিরোধ

নিশ্চিত মৃত্যু জেনে এভাবে পড়ে-পড়ে মরাটা কি অর্থহীন নয়!

হটলিষ্ট তৈরী করে এক-একটা নৃশংস খুন চলতে থাকলেও রাষ্ট্র যখন চুপচাপ পড়ে থাকে, তখন তাতে রাষ্ট্রের প্রছন্ন সমর্থন প্রমানের জন্য আর কোন প্রমান হাজির করার প্রয়োজন আছে বলে আমার অন্তত মনে হয় না। আর মৃত্যুর এমন সন্ধিক্ষনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পথ তৈরী করাটাকেই আমার কাছে গুরুত্ববহ মনে হয়।

মিছিলটাকে আরও বড় করবার লোভে ছুটছি

রাজিব হায়দার+অভিজিৎ রায়+ওয়াশিকুর রহমান+অনন্ত বিজয় দাশ+ নীলাদ্রি চট্রোপধ্যায়+ ?

মৃত্যুর মিছিল বড় হচ্ছে...,

এখন শুধু একটাই প্রশ্ন এরপর আমাদের মধ্যেকার কে?

সরকার কিংবা প্রশাসন আর কারও কাছেই আমরা কোন কৈফিয়ত চাচ্ছি না বরং বলছি আপনারা গদিটাকে কেবল বাঁচান, গদিটাকে ধরেই বেঁচে থাকুন। আমরা শুধু মিছিলটাকে আরও বড় করবার লোভে ছুটছি....

বোকারা প্রলাপ

দেশ যখন সর্বময় ক্ষমতায়
জনমনহীন রায়ে পোক্ত
তখন কণ্ঠরোধ হয় রাজপথে
ভেসে রাজপথ রক্তাক্ত।

এখানে লুটেরা বসে রাজ গদিতে
মুছে দেয় গণতন্ত্রের কাব্যেকথা
বোকারা প্রলাপে হায়-হুতাশ করে
আহা! কোথায় যাচ্ছে সভ্যতা?

কি সুন্দর হিসেব-নিকেশ

কি সুন্দর হিসেব-নিকেশ করা,

আপনি বললেন এই দুনিয়া মিছে মায়ার, আজরাইল আসছে ঐ পরকালের পথ ধর।
আবার আপনার ঘরেই চান্দের লাহান তিন-চারখান বৌ,
বলি নিজে চুপে-চুপে ঘি-ভাত খাবেন আর আমাদের পরকাল দেখিয়ে কাঁচামরিচ-পান্তা ধরাবেন?

কর্ম

কেউ মরছে,
কেউ মারছে
কেউ মেরে চুপি-চুপি সরছে
কেউ মারার দায়ে ধরছে
আর সব হিসেব মিলিয়ে কেউ-কেউ
কি সুন্দর রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে।

বন্ধুত্ব বন্ধন অটুট থাকুক আজীবন

তখন পা দুটো এঁকেবেঁকে চলে- দাঁড়াতে পড়ি, চলতে দৌড়ি আর দৌড়ে পড়বার আগে ধরবার আশ্রয় খুঁজি। ঠিক তখন কেউ এসে কচি দু‘হাত এগিয়ে নেয় একপা- দোপা করে সামনের পথে। আর কচি মুখের কুয়ারাতে ঝুকতে-ঝুকতে বুঝি কেউ আছে।

এখন দাঁড়াতে শিখেছি, ছুটতেও বেশ পারি, দূরন্ত বালকের সে ছুটে চলায় কেউ পাশে ছুটতে-ছুটতে আসে, বুঝি কেউ পাশে আছে।

জীবনে প্রথমবারের মত নতুন গন্ডিতে পা দিলাম, দেখী আরও অনেকে সেখানে, তখন ভয়-বিষ্ময়ে হৃদয় কুপোকাত। কয়দিন যেতেই দেখি সবাই সবাইকে বলে আছি। এভাবেই নিত্য-নতুন গন্ডিতে জীবন বয়ে যায় প্রতিদিনকার।

কিশোর বয়স, দূরন্ত মন, অনুসন্ধিচ্ছু মন বারবার ছুটে যেতে চায় দূর্গম পথ বেয়ে। তখন বারবার হোঁছট খাওয়া হাতে হাত বাড়িয়ে কেউ বলে উঠে আছি।

সময়টাই এমন যে; মন অকারণ ব্যাকুল হয়ে পড়ে, কোন শূণ্যতা কোন বাসনায় বারবার মন ছুটে যেতে চায় কারও সংস্পর্শে, একান্ত ভালোলাগায়। আর তখন ভালোলাগার অভিব্যাক্তিটাকে বুঝে কেউ বলে উঠে পাশেই আছি।

হঠাৎ কি হল? সময়ের সাথে টিকে উঠতে খেই হারিয়ে ফেলছি বারবার, সবকিছু ঠিকঠাক চলবার কথা ছিল, ঠিকমতো কাজ-খাওয়া-দাওয়া-ঘুম কিন্তু না কোনটাই ঠিক করে হচ্ছে না। ঠিক তখন জীবন বলে- একান্তভাবে নিজের কথা বলার সাথে কেউ থাকা চাই। সময়ের বদৌলতে- ঠিক কেউ এসে বলে, আছি তো সাথে আজীবন থাকবার বাসনায়।

এরপর সময় গড়িয়ে যায়, সংসার বাড়ে সংশয় বাড়ে সাথে কমে জীবনের উদ্দ্যমতা। আর তখন উত্তরাউত্তর কেউ বলে উঠে, নিশ্চিত থাকো তো আমি আছি।

এভাবেই সময়ের আবর্তে কারও ভরশার আশ্রয় করেই জীবন এগিয়ে চলে...
আর ভরশার জায়গারগুলো হয় একান্ত হৃদ্য কোন হাত। আর সেই হৃদ্য হাতগুলোই হয় বন্ধু কিংবা একান্ত প্রিয় কেউ।

---বন্ধুত্ব বন্ধন অটুট থাকুক আজীবন।

সহ্য

হৃদয় পৌড়ায় যে ক্ষতের দাগ লাগে সকলেই তা সমান বহে
তবু ব্যাকুল তিয়াসে কারও আঁখি জল, কেউ মুখ চেপে সহে।

বৃষ্টিবিলাস

বৃষ্টির উপর আজ খুব অভিমান হল, ইচ্ছে ছিল আজই সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলি। তবু শুধুমাত্র অভিমানের রেশটুকু সঙ্গে করে অফিসে পৌঁছলাম।

আমার কাছে প্রেম-ভালোবাসা আবদ্ধ বলয়ে লালন করবার বিষয়, অন্যরা বুঝবে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে, তবে কেউই নিশ্চিত সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। সারাক্ষনই দুজনা দুজনার জন্য অস্থির থাকব, তবু কেউ এগিয়ে এসে জানতে পারবে না দুজনার মধ্যেকার প্রেমের বাহুল্যতা ঠিক কতটুকু! অথচ ওর কাছে প্রেম-ভালোবাসাটাই সব, ভালোবাসি বলতে গেলেই যেন তার তাড়িত বাহুবন্ধনীতে আমাকে জড়িয়ে থাকতে হবে। অথচ সারাক্ষন ভালোবাসি বলে ফিরে চলার মত ঘ্যান-ঘ্যানানি, প্যান-প্যানানি আমার অসহ্য ঠেকে, বাড়াবাড়ি লাগে। বলি যদি মনটাকে না বোঝা হয় তবে ভালোবাসা এভাবে কদ্দিন টেনে নেয়া যায়?

বৃষ্টিকে আজ সাফ জানিয়ে দিলাম- এ আমার সহ্য নয়! জানি তার সময়ে সে তার মতোই অটল থাকবে। তবু এমন প্রেম-ভালোবাসার লাগাম আমাকে বাঁধুক সে আমি চাই না। সত্যিকারে বলতে গেলে কি- প্রেমের যে লাগামে এদিক-ওদিক ছুটবে পারব না, যে লাগামে কাজকর্ম ঠিকমতো হবে না, যে লাগামে মিষ্টি-মধুর আকুতিগুলো আতঙ্কেরুপ নেবে, সে লাগামের অভিমানগুলো ক্ষোভে সমর্পিত হবে, সে লাগামে আবদ্ধ হবার বাসনা আমি ছাড়বই।

অনেক কাঁদছিল সে, তার চোখের অবিরত বর্ষন আমার ছাতার ফাঁক গলে ভিজিয়ে দিয়েছে আমার শরীরের আদ্যপ্রান্ত। আচারণে বুঝলাম ক্ষোভের রেশ কোনক্রমেই কাটটে পারছে না অথবা ক্ষোভ প্রকাশের কোন ভালো মাধ্যম ও খুঁজে পাচ্ছে না, তাই এক নাগাড়ে এমন অঝোর ধারায় কাঁদছে। আমি সব ফেলে জীবন ভাবনায়ই কেবল ছুটলাম। গন্তব্যে পৌঁছে যখন তার অশ্রুতে ভেজা শরীরের শিহরণ দেখলাম, তখন মনটা ব্যাকুল হয়ে ভাবছে- এ শিহরণটুকুই বোধকরি ভালোবাসা জাগায়, ভাবতে শিখায়, ভাসতে শেখায় অথবা আনমনা ভাবুক কবিকে ঘোরের মাঝে ফেলে নিয়ে যায় বাদল দিনের গানে-

পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে॥
চেনাশোনার কোন্‌ বাইরে
যেখানে পথ নাই নাই রে
সেখানে অকারণে যায় ছুটে॥
ঘরের মুখে আর কি রে
কোনো দিন সে যাবে ফিরে।
যাবে না, যাবে না--
দেয়াল যত সব গেল টুটে॥
বৃষ্টি-নেশা-ভরা সন্ধ্যাবেলা
কোন্‌ বলরামের আমি চেলা,
আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে মাতাল জুটে--
যত মাতাল জুটে।
যা না চাইবার তাই আজি চাই গো,
যা না পাইবার তাই কোথা পাই গো।
পাব না, পাব না--
মরি অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে॥

তুলির ছোপে আঁকছি

যেমন করে দেখছ তুমি তেমন করেই ভাবছি
তোমার মুখের কাব্যকলা তুলির ছোপে আঁকছি।

কেন করছ গরল পান

এ জীবন খ্যাঁত স্বভাবে বদ নসিবের দান
তুমি আপনা সুখ উপড়ে কেন করছ গরল পান?

চিঠি

গতির সীমানা কেউ জানে না, জানে না কোথায় কে থামে
উড়াল পথে এলো কার চিঠি, দেখ ঐ রঙ্গিন খামে।

শ্বশুরকুলটা পালাল কোথায়

আমার আজকের রাশিফলে লিখেছে- “শ্বশুরকুল থেকে অর্থসম্পত্তি প্রাপ্তির যোগ”।
বলি এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু শ্বশুরকুলটা পালাল কোথায়?

কারও জীবনের দহনের মধ্যেই কারও মনের অভিলাষ পূর্ণ হয়

কারও জীবনের দহনের মধ্যেই কারও মনের অভিলাষ পূর্ণ হয়। তাই আধখানা আনন্দ অভিলাষে শিশু বায়না ধরে প্রকৃতির মুগ্ধ রুপে মজে যাওয়া প্রজাপতি কে হাতে নিয়ে খেলা করার বাসনায়, কোন উড়ন্ত ফড়িংয়ের চকচকে ডানার আলো খেলা দেখে তাকে অধিকারে নেওয়ার ইচ্ছেয়।

জগৎ জুড়ে যে করুণ সুরের সুধায় জাগ্রত মন আটকা পড়ে মোহাছন্ন ইন্দ্রজালের জালিকায়, তখনও হয়ত কারও শরীর কেটে-কেটে বিবশ হয়। আর রঙ্গমঞ্চে অভিনয় পারদর্শী কোন মহতি জীবনমঞ্চে অকারণ হেরে বসে।

ভ্রান্ত অভিলাষ নিয়ে কে কাকে কখন কিভাবে ছেড়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় - হিসেবের খাতায় তার যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের ফলাফল মিলালে যে ফল পাওয়া যায়, চোখ বুজে সে ফলকে শূণ্য বলে ধরেই জীবনের আদ্যপ্রান্ত টানতে হয়।

জ্বি; এটাই জীবনের বাস্তবতা, এটাই কেবল জীবন। আর বাদবাকী সবই ঘোর!

কত মানুষজন কত সহজ কৌশলে মহান হয়ে গেল...

না, বলছি ব্যাপার‘টা ভাবতে কিংবা দেখতে মন্দ না, কি বলেন?

মাসের পর মাস শ্রমিকের দিয়ে রাত-দিন হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটাবেন
উৎপাদন বাড়াতে বোনাস, ওভারটাইম, ভাতা ঘোষনা করে শ্রমিকের মন তাজা করবেন
এরপর কাজ হাসিল করে রক্তঝরা ঘামের মজুরী নিতে ঝড়-বৃষ্টি উতরে, রাত জেগে, রোদে ছেকে মিছিল-মিটিং এর জন্য মাঠে নামাবেন। আর শ্রমিকের রক্তের হাজার-কোটি টাকা লোপাট করে যৎসামান্য দান-খয়রাত-যাকাত-সদকা দিয়ে মহান বনে যাবেন, দেশের কর্ণ্বধার হবেন, দেশের মাতা-পিতা হবেন।

আহা! কত মানুষজন কত সহজ কৌশলে মহান হয়ে গেল...

শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০১৫

এর নামই জীবন!!

এইযে বলছি চলে যাচ্ছে-
এর নামই জীবন!!
শত বাঁধা-বিপত্তি মান-অপমান ভেবে হাঁফিয়ে যেটুকু চলছি
এর নামই জীবন!!

কেউ ভুল বুঝে, কেউ ভুল খুঁজে
বোঝা-খোঁজার মাঝে যে ইচ্ছের অবদমন আড়ালে লুকাচ্ছি
এর নামই জীবন!!

চাইনি তবু পাচ্ছি, পাইনি তবু চাচ্ছি
দোটানাকে সঙ্গী করে এই যে, প্রতিদিন পথ ভুলে ঘুরছি
এর নামই জীবন!!

কখনও আশায় কাঁদি কখনও ভালোবাসায় হাসি
স্বপ্নবাঁধা খেলাঘর ছেড়ে যাব না বলেও, এইযে চলে যাচ্ছি
এর নামই জীবন!!

চাইছি বুঝুক আমিও বুঝি, চাইছি শিখুক আমিও শিখি
তবু অনিচ্ছার কাঁধ বেয়ে যে নিয়মের বলয় গড়ছে দেখছি
এর নামই জীবন!!

ভাবছি গোছব গোছাব, ভাবতে জানছি জানাব
অথচ অকারণ অনিয়ম শৃঙ্খলে প্রত্যয় হারানোয় এইযে হটছি
এর নামই জীবন!!

এইযে জীবন- এ জীবনই কেবল জীবনের জন্য থাকে
পিষে-পেষে আদ্যোপান্ত লেপ্টে সংযুক্তিগুলোই কেবল রাখে
এখানে ভারহীন ভরসার দুয়ারে পাবে ঠাঁই কোথায় সে কথা?
অথচ নিরন্তন পথচলার বাসনায়ই জানি জীবনের স্বার্থকতা!!

প্রকৃতি একদিন এর ভার বহতে না পেরে ঠিক বদলা নেবে

এই কিছুক্ষন আগেই পল্টনমোড়ে নেমে পাশে কাপড়ে ঘেরা দোকানে রং চা পান করছিলাম। আমার পাশেই চা পান করছে টিং-টিঙ্গে হেংলা পাতলা ফর্সা গোছের এক মেয়ে। চায়ের দোকানদার বোধ করি তার পুর্ব পরিচিত। দোকানি তাকে জিজ্ঞাসা করল- কিরে তোদের বেতন-বোনাস হয়নি? মেয়েটি কিছুটা জড়ানো গলায় জবাব দিল- বেতন-বোনাস? গত সাপ্তাতে মাত্র মে মাসের বেতন পেলাম। ১০-১৫ দিন আগে অফিসে দেখলাম ৪৫০০০ ফেবরিক্সের মাল এল গার্মেন্টেসে, মাইকে এলাউন্স করে জানানো হল আগামী ২ দিন কাজ করতে হবে। কাজ শেষে সবার সবার বেতন-বোনাস দিয়ে ছুটি দেয়া হবে। পরদিন গিয়ে দেখি সব মাল নিয়ে চলে যাচ্ছে। বসকে জিজ্ঞাসা করলে, বলল- এটা নাকি অন্য কোন বায়ারের সাথে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ ছিল। কাজের হিসেবে বনিবনা না হওয়ায় মালিক বলেছে সাব-কন্ট্রাকে কাজ করবে না। এরপরের দিন শুনি মালিক নাকি পালিয়ে যাচ্ছিল, এয়ারপোর্টে ধরা পড়ে আর যেতে পারল না, পরে জোর চেষ্টায় সকলের মে মাসের বেতন মিলল।

তোদের গার্মেন্টস কোথায়? এয়াপোর্টের কাছে, উত্তর খানে। ঈদে বাড়ি যাবি না?
একটু থেমে- সে আল্লাহ মালুম। একথা বলে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে মেয়েটি জানতে চাইল- তার কতটাকা হয়েছে। দোকানী জানাল ১২ টাকা। মেয়েটি দোকানিকে টাকা দিয়ে বেরিয়ে গেল।

মেয়েটি চলে গেলে চা দোকানির কাছ থেকে জানলাম- আজ ৫ ধরে ওরা কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তিভবনের সামনে জড়ো হয়েছে। পার্টির নেতাদের নির্দেশনায় তারা আন্দোলন করছে নিজেদের প্রাপ্য মজুরী আদায়ে।

অফিসে আসতে কিছুক্ষন মুক্তিভবনের সামনে দাঁড়ালাম। দেখলাম ১৫০-২০০ নারী-পুরুষের অবস্থান, যাদের শতকরা ৮০ জনই নারী। সকলের চোখ-মুখ অন্যায় আর ঘৃণার চাপ বয়ে বেড়াচ্ছে। দূরাশা, হতাশা কিংবা মেনে নেয়া না নেয়ার দ্বিধা-দ্বন্ধে তারা সকলে দ্যোদুলমান। আর ৩-৪ দিন পর ঈদ, সকলের ঈদের আয়োজনে ব্যস্ত থাকবার কথা। অথচ তারা রক্তঝরা ঘাম ঝেরে হাত পেতে বেড়াচ্ছে ঘোরহীন আচ্ছন্ন বলয়ে।

না কোন আশ্রয়ী-অনাশ্রয়ী পেতাত্মা, সাধু-সন্ন্যাসী কিংবা তেঁতুল হুজুরদের অভিশাপ কিংবা অভিসম্পাতে আমাদের এই দেশ কখনো তলিয়ে যাবে না। ধ্বংস হবে না কোন ক্ষমতালোভীদের স্বার্থসিদ্ধ অভিপ্রায়ে। কিন্তু আমি নিঃশ্চিত করে বলতে পারি- এই দেশের অবহেলিত, অনাহত, অতিদরিদ্র মানুষের রক্তঝরা ঘামের মূল্য পরিশোধের যে হীণমন্যতার প্রভাব, যা শ্রমিক, কৃষক কিংবা মেহনতি মানুষের দম আটকিয়ে রাখা রূদ্ধ নিঃশ্বাসে বাতাস ভারী করে তুলছে, প্রকৃতি একদিন এর ভার বহতে না পেরে ঠিক বদলা নেবে।

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৫

বড়দিদি

পরীক্ষার রেজাল্ট হাতে দাঁড়িয়ে বড়দিদি, অমনি বুকটা ধড়পড়-ধড়পড় করতে লাগল। বড়দিদি বলতে থাকলেন তাঁর কথাগুলো আর তা বুকের মাঝে চেল হয়ে ক্রমাগত বিঁধতে থাকল। মাঝে-মাঝে শ্রেনীকক্ষে প্রবেশ করেও দিদি তাঁর বাক্যবানে স্তব্ধ করে দিতেন আমাদের।

সময়ের পরিক্রমায় আজ বুঝি, শাসনের যে বাক্যবান আমাদের হৃদয়কে একদিন ক্ষত-বিক্ষত করত। সে বাক্যবান সময়ে বুঝলে হয়ত আজকে আমরা সকলে ধারণ করতে পারতাম এক একটা গৌরবময় মুকুট।

বুধবার, ২২ জুলাই, ২০১৫

ঈদ শুভেচ্ছা

বাঁধভাঙ্গা জোয়ারে এল প্রান উচ্ছল দিন
গলায় গলায় বুকে বুকে দিন হল রঙ্গিন
ধনী-দরিদ্র জাত-গোত্র ভেদ নাইকো কারও মনে
রমজানের ঐ রোজার শেষে আজকে খুশির দিনে

ঈদ মোবারক
সবাইকে রইল ঈদের প্রানঢালা শুভেচ্ছা...

লগনের অন্বেষণ

অনাশ্রিত এই আমাকে করলে জিম্মি কি সে কারণ
প্রেমপ্রয়াসী মন ভাবুকের কোন লগনের অন্বেষণ?

জীবনের আবহসংগীত

দৃশ্যপট-০১ঃ

পুরনো পল্টন মোড়- মোড়ের পাশের পুলিশ বক্স। যেকোন অনাকাক্ষিত ঘটনা সহজে পুলিশের পক্ষে দেখার কিংবা নিয়ন্ত্রন সম্ভব। অথচ কি দেখলাম?

আমি গাড়িতে করে পল্টন থেকে ফার্মগেইট ফিরছিলাম। পল্টন মোড়ে গাড়ি একটু থামিয়ে লোক ভরছে। আমি সিটে বসে লোকজন উঠছে সে দিকে খেয়াল রাখলাম। মোটামুটি ভদ্রগোছের একটা ছেলে গাড়ির পাশ ঘেষে আসছে। দেখে মনে হচ্ছে গাড়িতে উঠবে। কিন্তু হঠাৎ সে গাড়ির জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়েই ছোঁ মারল আমার সামনের এক ভদ্রলোকের মোবাইলে। ভদ্রলোক তখন মোবাইলে ভিডিও গান দেখতে ব্যস্ত ছিলেন। গাড়ির জানালার ফাঁকটা কম থাকায় ছেলেটি সুবিধে করতে পারে নি। আমরা আকস্মিক এমন ছোঁ মারাতে যখন ছেলেটিকে ধরতে বলছিলাম। তখন দুইজন পুলিশ গাড়ির ভিতরকার আমাদের মত নির্বাক দাড়িয়ে।

দৃশ্যপট-০২ঃ নাখালপাড়া আমার বাসার গলির মুখে হাঁটছি বাসায় পৌঁছতে। পাশে একজন মহিলা হাঁটতে-হাঁটতে কথা বলছে। মহিলাটি পুরো ঘেমে একাকার, ব্যতিব্যস্ত কেউ যখন তাড়াহুড়ো করে চলে তখন ক্রমশ দম ভারী হয়ে আসে। মহিলাটিও সেরকম দম ফেলতে-ফেলতে দ্রুত চলছে আর মোবাইলে কাকে যেন বলছে- রোজার সময়টাতে একটা বাসায় কাজ জোগাড় করতে পেরেছি, কিন্তু রোজার পর আমি কি করব?

এভাবে, ঠিক এভাবেই চলছে আমাদের দেশ, দেশের মানুষ আর বদ্ধ নিঃশ্বাসে বয়ে বেড়ানো আমাদের জীবনের আবহসংগীত।

কি চমৎকার

কত বিচার প্রতিক্ষায় দাঁড়িয়ে
কত কাঁদে সে নিরবে আড়ালে
কত বিচার দরজায় কড়া নাড়ে
বিবেক দাঁড়িয়ে অচেতন খেয়ালে।

রাত পুরোয় নতুন বিচার জমে
পুরনো বিচার ঢেঁকে যায় স্তুপে
বিচার নামের লুকোচুরি খেলায়
চলছে দেখ জীবন মেপে-মেপে।

হীরকরাজের দেশ প্রতিশ্রুতি বেশ
চারিদিকে প্রতিশ্রুতির জয়-জয়কার
বিচার হবে!!! বিচার হবে!!!
ভাবছি ভীষণ কি চমৎকার।

রাজনদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

কি বলব? কাকে বলব? কেন বলব বুঝছি না,
যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র আহম্মকের মতো তাকিয়ে থাকে,
যেখানে দায়-দায়িত্ব, ন্যায়-নীতি সব পর্যবসিত স্বার্থের করতালে,
যেখানে বিবেক দায় সারতে নিয়ত ব্যস্ত,

সেখানে রাজনদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ক্রমাগত চলবে, হায়েনারা লিকলিকে জিহ্বায় রক্তের স্বাদ নিতে উন্মাদ হবে, এ নিয়ে আর ভাববার কি আছে?

মেনে নেয়া

মেনে নেয়া মানে হেরে যাওয়া নয়, বরং সময়ের আবর্তে বোধহীন কাউকে তার নিজের কাছে হারিয়ে দেয়া।

দু‘কদম

সময় বাড়ছে
বয়স কমছে
শরীর করছে উঠা-নামা,

শৈশব-কৈশর আগে গেল
যৌবন রঙ্গে মন মজিল
আর আছে দু‘কদম বাকী
ভুলতে এ পথের ঠিকানা।

বিদ্যালয়ের কিছু বেদনাময় স্মৃতি

পৃথিবীতে সবাই বেড়াতে আসে। বেড়াতে এসে কেউ নিতে চায়, কেউ দিতে চায়, কেউ সময় নিয়ে ঘুরতে চায় আবার কেউ সময় হেলে ছুটতে চায়। সময়ের এই খন্ডিত জীবন বলয়ে তাই সকলেই প্রায় আবেগ তাড়িত, তবে আমার আবেগটা বোধহয় আর সকলের থেকে একটু বেশীই। আসলে সত্যটা কি, আমি এখনও ছায়াছবির কোন আবেগী দৃশ্য দেখে নিজেকে সামলাতে পারি না, চোখ থেকে অনর্গল পানি ঝরতে থাকে কোনে এক অদৃশ্য কাতরতায়। এই জন্য বন্ধু-বান্ধবদের পাশে থাকাকালে আবেগী ছবিগুলো একটু এড়িয়েই চলি, কেননা কেউ যদি আমার আবেগের অস্ফালনটা দেখে ফেলে, যদি লজ্জায় পড়ি!

স্মৃতির ছায়াগুলো আমাকে খুব বেশী দাবড়িয়ে বেড়ায়। বেখেয়াল হলেই কানে ভেসে আসে পঞ্চমশ্রেনীতে টেসি দিদির দুখুকে উদ্দেশ্য করে বলা কথাগুলো। দুখু, পড়ালেখা তোকে দিয়ে হবে না রে। তোর মাকে আর কষ্ট দিস না, সে কত কষ্ট করে দিন-রাত খেটে তোর পড়ার খরচ জোগাচ্ছে, অথচ তুই ঠিকমতো পড়িস না। বলি- কোথাও কাজে লেগে যা, তাতে অন্তত মায়ের কষ্টটা কমবে। পঞ্চম শ্রেনীর পর আমরা আর দুখুকে পাই নি। জানি না দুখু কি তার মায়ের কষ্ট লাঘব করতে ছুটেছে কিনা, নাকি সবভূলে এখনও সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত।

আব্দুল সাত্তারের কথাও মনে ভাসে, বেচারা নাকি সারাদিন-রাত বই নিয়ে পড়ে থাকত। অথচ পরীক্ষার ফলাফলে ও ওর পরিশ্রমের নূন্যতম সিকিও অর্জনে সমর্থ হত না। মোরশেদ স্যার মাঝে-মাঝেই বলতেন ছেলেটার প্রচেষ্টা আছে অথচ ওর মাথায় কিছুই থাকে না। সপ্তম শ্রেনীর পর আব্দুল সাত্তারকে আর পেলাম না।

জীবনের রঙ্গশালায় তার হাতে সময় খুব বেশী ছিল না। জীবন থেকে হয়ত কিছু পাবার কিংবা নেবার সময় হয়েছে মাত্র, ঠিক তখনই মিতু পাড়ি দিয়েছিল অচিন পথে। সেদিন বিদ্যালয় থেকে মেজদি আর সংগীতা দিদির আসতে বিকেল হয়ে গেলে দেরির কারণ জিজ্ঞাসা করতেই জানতে পারি মিতু নিরুদ্দেশের পথে পাড়ি দিয়েছে, আরও জানতে পারি তার বাবাও নাকি ঠিক কয়েকদিন আগেই গত হয়েছেন। মেয়েটি নাকি বাবার জন্য খুব পাগল ছিল! তাই বাবার শোকটা কাটিয়ে নিজেকে সামলিয়ে নিতে পারে নি। সেদিন বসে-বসে খুব হিসেব মিলাই, ঠিক কতটা মমতা কিংবা ভালোবাসার মোহ থাকলে বাবার পথে নিজেও অচিন দেশে ছুটে যাওয়া যায়?

স্মৃতিগুলোর যন্ত্রণা খুব বেশী, ভুলতে চাই পারি না আবার পালাতে ছুটলে পা পিছলে বারবার পড়ে যাই। বলি- কষ্টের মন্ত্রণাগুলো কেন আমার আদ্যপৃষ্ঠে এতটা জড়িয়ে থাকে? কেউ কি ভালো বলতে পার?

সোমবার, ২০ জুলাই, ২০১৫

বন্ধু, শুভাকাক্ষি

বিশাল আকাশের নীলে ঘুড়ি উড়তে গিয়ে যখন ঘুড্ডি খেতে-খেতে দিক কেটে উলম্বাকারে নিচে পড়তে থাকে, তখন নির্দিষ্ট পরিধির জায়গায় পৌঁছতেই বায়ু তার পড়াটাকে থামিয়ে আবার ঠেলে দেয় উর্দ্ধমুখে মুক্তভাবে উড়বার জায়গাটিতে। আমরাও উড়ছি ঠিক ঘুড়ির মতো করেই। আর এই মুক্ত উড়ে চলায় আমাদের হোঁছট খাওয়া স্থানে-স্থানে যারা ব্যর্থ হাতগুলো ধরে সাফল্যের সাহস জোগাচ্ছে, সাথে হেঁটে চলছে তারাই এক-একজন বন্ধু, শুভাকাক্ষি।

বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০১৫

বিদ্যালয় জীবনে সেন স্যারের রেখে যাওয়া যে স্মৃতি আজও হাসায়

সপ্তমশ্রেনীতে সেন স্যারের মতো ভয় অন্য কাউকে বোধহয় খুব কমই পেতাম। কারণ স্যারের শ্রেনীকক্ষে প্রবেশ মানে ধুমম্ মাইর হবে।

স্যার শ্রেনীকক্ষে ঢুকে প্রথমে পড়ার জন্য ডাকতেন খ্রীষ্টান বন্ধুদের। তাদের পালা শেষ হলে এরপর উল্টো-প্লাটা রোল দিয়ে ডেকে তাদের পালা। পড়া শেখা থাকলেও মাইর খাওয়া নির্ভর করত স্যারের মর্জির উপর। সে হিসেবে বলা যায় রোল এক হোক বা একশ, মাইর খাওয়াটা সবার মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। আর তাঁর পড়ানোর ধরনও সম্পূর্ণ ভিন্ন, আসলেই Tense, Translation, Essay, Paragraph এই চার-পাচটা গন্ডিতেই আবদ্ধ ছিলেন।

স্যারের শ্রেণীতে অবস্থান আমাদের কতটা আতঙ্কিত কিংবা তত্রস্থ করত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্যারের সেদিনকার দিনগুলো এমন আচারণই হয়ত আজকে আমাদের স্যারকে সবচেয়ে বেশী মনে করার প্রধান কারণ।

স্যারের মুখের সে কথাগুলো যে, কথাগুলো আমরা বন্ধুরা এখনো কয়েকজন এক হলে মনে করতে থাকি, খ্রীষ্টান বন্ধুদের ডাকতে গেলে- খ্রীষ্টাইন্না বেগ্গুন একত্তরে চলি আয়, লেখতে বললে- ১০-১২ পৃষ্ঠা লেই হালাও, লেখা থামাবার সময়- স্ট্যান্ড আপ একপায়ে টেবিলের উপর, মারতে গেলে উত অই যাও উত অই যাও টেবিলের নিচে মাথা দি উত অই যাও, মাইরের আগে কেউ কিছু বলতে চাইলে স্যার বলতেন- আগে মাথা পরে কথা, মাইর দিতে গেলে কেউ যদি স্যার স্যার বলে মাপ করার বাসনা করত- স্যারের জবাব সাগু সাগু করিও না, সাগু সাগু করিও না, সাগু সাগু করি বছরের ১০ মাস খাইয়ালাইছ।

অন্যদের পিটানোর মাঝে স্যারের কমিকগুলো এমন ছিল যে, আমরা এত আতঙ্কের মধ্যেও মাঝে-মাঝে হেসে ফেলতাম। তখন স্যার বলত- হাইসোনা, পালা আইয়ের। মাইরের ভয়ে কয়েকজন জিন্সের প্যান্টের ভিতর কাছা (গোছ) মেরে লুঙ্গি পরে আসত। উৎ করে পিটানোর সময় স্যার যখন দেখত স্যারের মাইর ঠিক মতো লাগছে না তখন দাঁড় করিয়ে শরীরে পিটাত। পরে অবশ্যই পোলাপাইন স্যারের ধরে পেলাটাকে ধরতে পেরে কোচ মারা লুঙ্গির উপরে জিন্সের প্যান্ট পড়েও মাইরের সাথে-সাথে জোরে চিৎকার করে আঘাত পাওয়ার ভাব দেখাত।

আমাদের শ্রেনীতে বয়সের তুলনায় লম্বা সারির ছিল রহমান, বর্মাকেন্টিন (ওর নাম ভূলে গেছি, তাই স্যারের দেয়া নামেই চালিয়ে দিলাম ) , লুক, জোনাস, জিকোসহ বেশ কয়েকজন। রহমান লম্বায় স্যারের থেকেও প্রায় একহাত উঁচু ছিল। তাকে পিটানোর পর আমরা তাকে কখনও আঘাত পেয়েছে এমন কোন ভাব তার মুখে দেখিনি। স্যার তাই তার নাম দিয়েছে স্টিক টাইট। বর্মাকেন্টিন কে নিয়ে স্যারের অজুহাত ছিল বেশ। ও নাকি বর্মাকেন্দ্রীতে একটা কেন্টিনে বসে লুকিয়ে সিগারেট খেত। লুক আব্দুর রহমানদের দলের লোক, অনেক মাইর খাওয়ার পরও যখন ওদের মধ্যে কান্নার কোন ভাব আসত না, তখন স্যার উত্তেজনায় মুখের থু-থু চারিদিকে ছড়িয়ে মারতে-মারতে বলতে থাকত লুকুচ্ছা-ফুকুচ্ছা হুস-হাছ ঠুস-ঠাস হুয়া-হুয়া।

নাকি কাঁদার মতো আমাদের শ্রেনীতে বয়সের তুলনায় কম লম্বা ছিলাম - আমি, সাত্তার, ফারুক, ওয়াছি, আরিফ, কনক, জিয়া, নাজিম, নিতু, সুমনসহ বেশ কয়েকজন। বেতকে আমার জন্মের ভয় ছিল, তাই যখনই আমার ডাক পড়ত আমি স্যারের বেতের সামনে গিয়েই কেঁদে দিতাম। আর গায়ে বেত পড়াত মানে ১০-২০ মিনিটের কান্নার ব্যবস্থা। আরিফকে মাইর দিলেই ও লাফিয়ে উঠে গাল ফুলিয়ে শব্দ করত উফস্ । কনকের গাল তুল-তুলে ফোলাই ছিল, তাই যখন ওকে মারত মুখ দিয়ে কেবল উহ্ উহ্ করত আর তার শরীর রক্তবর্ণ ধারন করত। সাত্তারকে মাইর দিলেই ও শরীরকে বাঁকিয়ে এমন ভাব করত যে না হেসে পারা যেত না। জিয়া (শিমুল) ‘র এলার্জির সমস্যা ছিল, তার শরীরের যেখানটায় মাইর পড়ত সেখানটায় ফুলে এমন টইটম্বুর হত যে, কিছুক্ষন হয়ত চেনাই মুশকিল ছিল । অবশ্য স্যার আমাদের পিচ্ছিদলের অবস্থা বুঝত, তাই আমরা অন্যদের হিসেবে অনেক কমই বেত খেতাম।

জনি, রিটুল, রাহাত, মথি, সোহাগ (টিটলি ভাইয়া) স্যার এদের প্রতি একটু স্পেশাল কেয়ার নিত, মানে বড় গ্রুপের সাথে এরাও প্রায় প্রতিদিনই ধরা খেত। তবে রহমানসহ অন্যদের পিটানোর পর ওদের পিটানোর মত একটা শক্তি স্যারেরও ছিল না ।

স্যার পড়া ধরলেই বোর্ডে সামনে নিয়ে যেত বলত কোগা অ্যাসে, প্যারাগ্রাফ শিখছ বোর্ডে লেখি হালাও। কেউ যদি কি লিখবে বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকত- তখনই পিঠে ধুপ্ ধুপ পড়ে যেত। মাইরের ঘোরে কেউ যখন দিশা হারিয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করত, তখন স্যার তার পিছে ছুটে গিয়ে মারত। তবে দৌড়ে গিয়ে নিজের আসনে বসতে পারলে অনেক সময়ই হাঁফ ছেড়ে বাঁচা যেত।

আমাকে এখনো স্যারের যে কর্মকান্ড বেশী হাসায় তা হল- মিরাজকে পড়ার জন্য ডাকলে স্যার মিরাজের সাথে-সাথে মনঞ্জুকেও ডাকত। মূলত দু‘জনের মধ্যে সখ্যতার কারণেও হয়ত স্যার এটা করত। মিরাজ স্যারের মাইরের হাত থেকে বাঁচতে অস্পষ্ট গুনগুনে পড়া বলতে থাকত। যেহেতু মনঞ্জুর সাথে তার সখ্যতা বেশী, তাই স্যার মনঞ্জুকে নিয়ে আসত মিরাজ কি বলতেছে তা বলার জন্য। এখানে মিরাজের কাজ ছিলো মনঞ্জুর কানে-কানে পড়া বলা। আর মনঞ্জুর কাজ ছিলে মাইক হয়ে সে পড়াটা স্যারের কাছে পরিবেশন করা। কিন্তু সমস্যা হলে গিয়ে- মিরাজের ত পড়া শেখা ছিল না, সে মনঞ্জুর কানেও বিড়-বিড় করে পড়া বলত আর মনঞ্জু তার মাইকে কি বলবে সে বুঝতে না পেরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকত। অবশেষে দুজনের উপর একধাপ পড়ে পালা শেষ হত.....

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

ক্ষত


নয়নজলে যে ক্ষত শুকায়
সে ক্ষত জমে কিঞ্চিৎকালে,
হৃদয়জুড়ে কত ক্ষত বাড়ে
শ্রাবণধারার বৃষ্টির জলে।

অলিখিত প্রণয়

যাকে দেখিনি চোখে
তারি জন্যে নিখাদ দৃষ্টিতে এঁকেছি ভালোবাসার পৃথিবী
কৃষ্ণপক্ষের নিকষ আলো ঢেলেছি তার মুখে-শরীরে
উদাসিন ভেবে যাওয়া কত রাতে একা-একা বেঁধে যাওয়া কত শত কবিতায়

সিঁথানের বালিশ কতবার বাহুবলয়ে এসেছে
তাকে প্রেমশরীরে বেঁধে রাখার সে কত অনুচ্চ ব্যাকুলতা...
তারপর কল্পনাভূক শরীর বেড়ে চোখ ধাঁধিঁয়ে যায় চৈতন্যহীন সবুজ বলয়
আর প্রজপতি ঘাসফড়িং ছুটে চলে অলিখিত প্রণয়ের মোহজালে।

যদিও আমরা

আপনাদের মত মানুষ আমরা, আপনাদের মতই মগজ আছে
মাথা-শরীর-চোখ-মুখ দেখুন, আপনাদের মতোই সব গজেছে

পা চালিয়ে চলেন যেমন, আমরাও চলছি পায়ের ভরে
মুখে তুলে যেমন করে খান, আমরাও খাই তেমন করে

দু‘কলমে জোর আছে ঢের, প্রভাব আছে কোর্ট-কাচারি
আপনারা তাই বড় মানুষ, আমরা আপনাদের কর্মচারী

প্রভুর ইচ্ছেয় চড়া কাঁধ পেলাম, গতর খাটতে কি আর মানা
সুদাসল কাগজ-কলমে কষুন, কত ঘামে মিলবে ষোলআনা

মাথার বোঝায় মগজ চেপে গেছে, বুদ্ধির খেলা খেলব কেমন করে?
আপনাদের সম্মানে, আপনাদের টাকায়, বিক্রি আমরাই নগদ ভারে।

শুধু বলি- যদিও আমরা মাঠের শ্রমিক পথের কুলি রাস্তারধারের কর্মচারী
দিনমজুরে যা খেটে পাই, তাতেই আমরা দুঃখ ঘুছাই, তাতেই পেট পুরি।

শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০১৫

আমার ব্রাদার আঁন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয়ের দিনগুলো-০৩ঃ

পঞ্চম শ্রেণীর আমার প্রথম ক্লাস। শ্রেণীতে আমাদের শ্রেণী শিক্ষক ছিলেন শ্রদ্ধেয় শ্রী অতুল চন্দ্র সূত্রধর যাকে আমরা অতুল স্যার বলে জানতাম। আমরা যখন পঞ্চম শ্রেণীতে, তখন তিনি বয়সের ভারে কিছুটা ন্যুজ। কৃষ্ণকালো পাতলা গড়নের শরীর, মাথায় টাক বর্তমান। শারীরীক বিবেচনায় নিয়ে যদি বয়সটাকে বলি তবে ৬০ বছর অতিক্রান্ত করেছেন সে নিঃসন্দেহে বলা চলে। যা হোক, স্যারকে পেয়ে মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে গেল। কারণ যার গানের চমৎকার গলা, তিনি মানুষটা যে চমৎকার হবেন তা নিজের বিবেচনায় বুঝতে পারলাম। স্যার হাজিরা খাতা নিয়ে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করলেন এবং সকলের হাজিরা সম্পন্ন করলেন। হাজিরা নেয়া সম্পন্ন হলে, স্যার আমাদের বিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন, লেখা-পড়া প্রভৃতি বিষয়ে বেশ কিছু মূল্যবান উপদেশ দেন। স্যার যখন হেঁটে-হেঁটে আমাদের জ্ঞাণের পরিধিকে বিস্তৃর্ণ করছেন, তখন আমরা অবাক চিত্তে তাঁর মুখ নিঃসৃত বাণী শ্রবণ করছিলাম। স্যার বললেন দেখ সন্মানের জায়গাটা সবসময় মনে রাখবে, যে তোমাকে জীবনে একটা শব্দও শিক্ষা দিয়েছে সে তোমার গুরু। তাই পথে-ঘাটে যেখানেই কোন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখবে তাঁদের সন্মান করবে। স্যারের হাতের লেখাটা বেশ চমৎকার ছিল। পঞ্চম শ্রেণীর আমার বার্ষিক পরিক্ষার ফলাফলের কাগজে স্যারের সেই আর্ট করা লেখা আজও বোধ করি আমাদের ঘরে রক্ষিত আছে। অতুল স্যার পঞ্চম শ্রেণীতে আমাদের দুটো ক্লাস নিতেন। প্রথম ঘন্টায় বাংলা এবং শেষ ঘন্টায় সমাজ।

প্রথম ঘন্টা শেষ হলে দ্বিতীয় ঘন্টায় এলেন শ্রদ্ধেয়া টেসি দিদি, পুরো নাম যতটুকু মনে পড়ছে তাতে মনে হয় টেসি গোনছালবেজ‘ই হবে। বিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষকদের স্যার আর শিক্ষিকাদের দিদি ডাকতাম, সে হিসেবে তিনি টেসি দিদি। দিদি এসেও আমাদের বিভিন্ন উপদেশ দিলেন। দিদির যে উপদেশটি আমার আজও মনে গেঁথে আছে তা হল- “একটা সময় তোমরা অনেকে অনেক বড় হবে, কিন্তু একটা কথা সব সময় মনে রাখবে- কখনও মুরুব্বি বা শ্রদ্ধেয় জনদের সামনে পা তুলে বসবে না।” দিদির সে উপদেশটি আমি আজও রাখার চেষ্টা করছি। টেসি দিদি সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয়- তাঁর বয়স ৪০ ছুঁই-ছুঁই করছে। শারীরী গড়নটাকে মোটামুটি মোটা বলা চলে, গৌর বর্ণের। দিদি আমাদের গণিত আর ইংরেজী ক্লাস নিতেন। দিদির সংস্পর্শে থেকে আমরা যে গুণটিতে অভ্যস্ত হয়েছি, সে ছিল দ্রুত লেখার চর্চ্চা। তিনি বোর্ডে লেখার সময় এত দ্রুত লিখতেন যে, মাঝে-মাঝে আমরা হাঁফিয়ে উঠতাম।

অতুল স্যার, টেসি দিদি ছাড়াও আরও একজন আমাদের শ্রেণীতে পাঠদান করতেন, তিনি মমতাজ দিদি। ফর্সা স্লিম চেহারার এই দিদি ছিল আমার পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষাজীবনের আতঙ্ক। আসলে হল কি- দিদি আমাদের পঞ্চম ঘন্টার ক্লাসটি নিতেন। ক্লাসের মধ্য বিরতির ঠিক পর-পরই আমাদের শ্রেণীতে এলেন দিদি। মধ্য বিরতির পর দিদি শ্রেণীতে ডুকে পাঠদান শুরু করলেও আমি সুদেবের কাঁদে হাত রেখে কথায় মশগুল। দিদি শ্রেণীতে প্রবেশ করেছেন তাতে আমার নূন্যতম খেয়ালও নেই। হঠাৎ আমার মাথায় উপর ছুটে এল দিদির হাতের বুরুশ আর কানে দিদির কণ্ঠ, বেদপ ছেলে কোথাকার। বুরুশ মাথায় পড়লে আর দিদির চিৎকারে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। স্তম্ভিত ফিরে যখন আমার ভূলটি বুঝতে পারলাম, ততক্ষণে আমাকে দিদি কান ধরিয়ে শ্রেণীর বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখলেন। সে দিন থেকে দিদির শ্রেণীতে আমার মতো ভদ্র ছেলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল ছিল বটে।

বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫

আমাদের মানষিকতাই সামগ্রিক অধঃপতন নিশ্চয়তার কারণ

দেশের বর্তমান হালচিত্র দেখে মনে হয়, দেশকে উন্নয়নের জোয়ারে না ভাসিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সবকিছুর সঠিক তদারকির ব্যবস্থা নেয়াটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। কেননা নামসর্বস্ব উন্নয়নের জোয়ার দেখাতে গিয়ে গতকাল যে কাজ করা হয়েছে আজ তা ভেঙ্গে পড়ছে, আজ যা করবে নিশ্চিত আগামীকাল তা ভেঙ্গে পড়বে, আগামীকাল যা করবে তা পরেরদিনই ভেঙ্গে যাবে। তাছাড়া অপরিকল্পিত চিন্তা-ধারায় কাজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে একই কাজ (যেমন- ময়লা-আবর্জনা নিষ্কাশন বা ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, গ্যাস সরবরাহ ইত্যাদি ) বার-বার ভেঙ্গে পুনরায় করতে হচ্ছে। বারবার একই কাজ করার ফলে প্রতিনিয়ত জনমানুষের যে অসহনীয় ভোগান্তি এবং দেশের টাকার যে পরিমান ক্ষতিসাধন হচ্ছে, শুধুমাত্র সুস্থ মানষিকতা নিয়ে কাজ করে সে টাকায় আমাদের মতো ছোট একটি দেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত করা কোন ব্যাপারই নয়।

দেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে দেখলে আমরা দেখছি শুধুমাত্র একশ্রেনী স্বার্থ কুক্ষিগত করতে এবং সরকারগুলো পরম্পরা দেখেও না দেখার ভান করে পড়ে থাকার মানষিকতায় কিংবা যথাযথ মনোযোগ দিয়ে কার্য্যকরি ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেশ তথা নাগরিক কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থার সমস্ত কার্য্যক্রম ক্রমান্বয়ে ভঙ্গুর অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

যখন কোন দেশের অর্থমন্ত্রী বলে উঠেন নিজদেহের কিছু বীষপোড়ার জন্য তিনি বা তারা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না, তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের তীর ছুটে আসে, যদি তিনি বা তারা নিজদেহের বীষপোড়া উপড়ে ফেলতে অসমর্থ হন- তবে অন্যের দেহের বীষপোড়াগুলো তারা কি করে সারিয়ে তুলবেন? একজন দায়িত্ববান ব্যাক্তি যখন দায়িত্ব কাঁদে নিয়ে তা পালনে নিজের অযোগ্যতা, অক্ষমতা কিংবা অপারগতা প্রকাশ করেন এবং নিজ দূর্বলতা সত্ত্বেও অবস্থান ধরে থাকার মানষিকতা পোষন করেন, তখন কি প্রমান হয়? এরমানে কি এই নয় তিনি নিজ দূর্বলতায় অন্যকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন আবার কাউকে সুযোগ না দিয়ে নিজের ভেতরের দূর্বলতাগুলো ঢাঁকতে চেষ্টা চালাচ্ছেন? দায়িত্ব মানে কি বাঁধা পেয়ে থেমে যাওয়া নাকি সমস্ত বাঁধাকে উপড়ে ফেলে এগিয়ে যাবার প্রচেষ্টা করা? যদি সরকারই দেশ চালাতে গিয়ে অজুহাত তৈরী করে এবং নিজেদের দূর্বলতাগুলো জনমানুষের কাছে প্রচার করে জনমানুষের আবেগটাকে সঙ্গিন করে চলার মানষিকতা পোষন করে, তবে সে দেশ কিসের উপর ভিত্তি করে চলছে তা সহজেই অনুমেয়।

মানুষের মানষিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ না দিয়ে কিংবা টেকসই কার্য্যক্রমের প্রচেষ্টা না করে শুধু জনগনের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য যদি দেশটাকে লেংগুট পরিয়ে লজ্জাস্থান ঢেঁকে রাখার পয়তারা করা হয় প্রতিনিয়ত তবে নির্দিধায় বলা যায়, আমাদের মানষিকতাই সামগ্রিক অধঃপতন নিশ্চয়তার কারণ।

পরলোকে মতি

মাটি টেনে নিয়ে যায় দেহখানি যার
মাটির কোলে শয়ন পাতি, নির্ঘুম ঘুম তার
সায়ন্নে ছুটে ঘুমের দেশে, স্তব্ধ জীবনের গতি
মায়া-মোহ ত্যাগ করে সবের পরলোকে মতি।

মরি অতল জলে

কাঁচাহলুদ মুখখানি যার রবির কিরণ
লাজে লুকায় চাঁদে দেখি তার বদন
সজল দিঘীর জল ছায়া ছোঁয় ঘোরে
ভূবন হেলিয়া চাহে সম্মোহনের তরে।

বদনে চাহিয়া তার বিহঙ্গ সুর হারায়
চরিয়া সন্তোপনে সবুজ সুখে দ্যোলায়
দেখিয়া শ্রীমুখ তার হৃদয় পুড়ে অনলে
নামিয়া প্রেম সায়রে মরি অতল জলে।

অঙ্কিতা-০২

অঙ্কিতা- বাহ্যিকরুপটাই কেবল উপলব্ধ। অন্তরটাকে খুঁড়ে-খুঁড়ে জানবার বাসনা কার কোথায়? বিনিদ্রাগুলো গুমোট রাতের তারাগুলোর মত মনের মধ্যে ঝলক দিয়ে উঠে, প্রকাশের ভাষাগুলো একটু আবেগ ছোঁয়ায় লালন করবে এমন জন আর পেলাম কৈ?

অঙ্কিতা; দেখছ এখানে যে বিমূর্ত ছায়ারুপ, এখানে কেউ কেবল স্মৃতির ছায়া ধরেই পড়ে থাকে। গন্ধহীন ফুল সে আলোতেই ভালো দেখায়, আঁধারে তাকে হাতরে খুঁজবে এমনতর অভিলাষ কার কোথায়?

গ্রীষ্ম এলেই শীতের সকালে ছড়িয়ে থাকা দূর্বাঘাসের উপর শিশির পায়ে জড়িয়ে রাখা আবেশটুকু এসে শিহরিত করে। অথচ শীতের প্রাক্কালে এমন পরশে সকলেরই অনিহা থাকে। বেঁচে থাকার বাসনাগুলো সময়ের ব্যবধানে কত বর্ন - বিবর্নে সজ্জিত হয়।

এখানেও সুখ মেলে অঙ্কিতা! এ বয়ে বেড়াবার সুখ, প্রহসনগুলোকে তীর্যক মনে ভাববার সুখ অথবা প্রতারিত জীবনে কারও মনে আড়ষ্টতা জিইয়ে দেখবার সুখ। দহণ প্লাবনে আমার মত তুমি দ্রুত ক্ষয়ে না যাও, একটু-একটু করে ক্ষয়ে যাও সে আমি চাইব না কেন?

না, দেবতা হওয়ার মত এত বড় হৃদয় আমার নেই। ষড় ঋতুর বৈচিত্র্যতায় যে আমি বিচিত্র হয়ে পড়েছি, সে আমি দেবতার মত এত নিঃসংকোচ উদারতা পাব কোথায়? দেখ এই চোখের মনিতে, সে সাগরের নোনাজল বয়ে কতটা ঝাপসা হয়েছে। দেখ; দেখ এই দেহ অয়ববে, অনুভবহীন দেহকোষগুলো কতটা মরে গেছে। দেখ; দেখ; দেখ; মনের ভেতরকার ঘুমরে থাকা বাসনাগুলো আজ কতটা হিংস্র হয়েছে। তবে বেঁচে থেকে আমি কি করে দেবতা হব?

অঙ্কিতা আমি জানি- ভালোবাসা মানে ছাড় দেওয়া। কিন্তু ছাড়টাকে যদি ছেড়ে যাওয়ায় বয়ে নিতে হয়, তবে জমানো স্বপ্ন কবিতার কাতরতা সহে থাকা দুষ্কর নয় কি? আমি পারি না অঙ্কিতা, সত্যি আমি পারি না। ছন্দের ছোঁয়াগুলো আমার বিব্রত জীবনটাকে আরও বিপথগামীতার দিকে ঠেলে দেয়। এখন জীবনের পান্ডুলিপিটা পুড়ে সাঙ্গজীবনের সর্ব সমাপ্তি‘ই কেবল সুখ দিতে পারে!

নিজ বুদ্ধি

মরতে যখন হচ্ছেই
নিজ বুদ্ধিতে মরে যান
অন্যের সিদ্ধান্তগুলো যেনেই
নিজেকে নিজের মত সাজান...

সময়

সময়ের ব্যবধানে জীবন যেভাবে ফুরায়, ঠিক তেমনি সময়ে ব্যাক্তির প্রয়োজনও আর থাকে না।
আপনি একদিন যাদের আকড়ে ধরে থাকবেন বলে বাসনা করেছিলেন, প্রয়োজন শেষে কারণে বা অকারণে তারা আপনাকে ফেলে ছুটবে। তাই বলে সব ছেড়ে-ছুড়ে ফেলে দিয়ে চলার ভাবনাটাও জীবন নয়।

একটা কথা সবসময়ই সত্য, আপনার নির্মোহ কর্ম আপনাকে আপনার যথাযোগ্য অবস্থানে স্থান দিতে বাধ্য!

সময়ের প্রয়োজনে আপনি আপনার কাঙ্খিত হাত আপনার দিকে না পেলেও, আপনার জন্য এমন অনেক অনাকাঙ্খিত হাত বাড়িয়ে আছে, যে হাতগুলো সত্যিকার অর্থেই আপনাকে মুগ্ধ করবে।

ভালোবাসাই হোক সাধনা

মলয় বাতাসে যখন উড়ে একরাশ এলোমেলো চুল
যখন প্রজাপতির ডানায় খেলে নানান রং ব্যাকুল
যখন তরুছায়ার চিকচিকে খেলে ঢেঁউয়ে আলো-জল
যখন সবুজে ভাবিয়ে তোলে মনে ঐ‘দূরের অঞ্চল
তখন মোহিত ভাবনার চিবুকে চুমিয়ে বললে- ভালোবাসি;

সীমানার প্রান্তরে যখন স্থির হয়ে রয় আঁখি
যখন হিজলবনে ফুল ঝরে ভাসে চেয়ে দেখি
যখন মুক্ত সরোবরে জলকেলিতে মগ্ন হংস পাখি
যখন সায়র গর্জনে আনমনে হারিয়ে যেতে থাকি
তখন ভাবাবেগে আবেশিত গালে চুমিয়ে বললে- ভালোবাসি;

অচেনা কোলাহলে যখন সুর বাজে কানে অবিরত
যখন দূর্বনে অনুকম্পনে রয় বিবাগী বিহঙ্গ মত্ত
যখন চৈতালী হাওয়ায় ভাসে নুপুরের ধ্বনিত নৃত্য
যখন হারিয়ে যাওয়া সুরে বাজে স্বরগম অনবরত
তখন ইচ্ছের দৌলায় কপালে চুমিয়ে বললে- ভালোবাসি;

আনমনে অকারণে যখন সুর উঠে বেজে ঠোঁটে
যখন প্রণয়সিথানে প্রণিত প্রণয় শিয়রে পড়ে লুটে
যখন ব্যাকুল কথার আকুল ছোঁয়া দিকে-দিকে রটে
যখন দু‘জন রচি জন্মান্তরের নেশা মৃত্যু বিয়োগান্তে
তখন শিহরিত ঠোঁটে চুমু এঁকে বললে- ভালোবাসি;

এমনি করেই ভালোবাসা আসে, ভালোবাসা রয়ে যায়
অচেনা ভুবনে অচেনা জন, আপনার আপন হয়ে যায়
সে আপনে আপনজন যখন হয়ে যাই আমরা দুজনা
ভালোবাস তুমি ভালোবাসি আমি, ভালোবাসাই হোক সাধনা।।

রবিবার, ৫ জুলাই, ২০১৫

আমার ব্রাদার আঁন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয়ের দিনগুলো-০২ঃ

আকাশে ঝলমল রৌদ্দুর। সবুজ ঘাসের উপর চকচকে রৌদের আলো-ছায়া খেলা। বাতাসে ফুলের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। চারদিকে উড়োউড়ি খেলা খেলছে প্রজাপতি আর ফড়িংয়ের দল। বাতাসের ঝাপটা আসছে মাঝে-মাঝে, সে ঝাপটায় ডানা মেলে পাখিরা উড়ে বেড়াচ্ছে কিচির-মিছির শব্দে। এর সাথে যুক্ত হল বিদ্যালয়ের সব ছেলে-মেয়েদের হৈ-হুল্লোর, হুড়ো-হুড়ি, চিৎকার।

বাড়ি থেকে আমাদের বিদ্যালয়ের অবস্থান দক্ষিন দিকে, তাই বিদ্যালয়ে প্রবেশ হতে গেলে আমাদের সবসময়ই বিদ্যালয়ের উত্তর গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে হত। বিদ্যালয়ের উত্তর গেইট ছাড়াও দক্ষিণ দিক দিয়ে আরোকটি গেইট আছে।

বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পা রেখে আমার কাছে বেশ ভালো লাগল। প্রথম গেইট পেরিয়ে গীর্জা, গীর্জার ধ্বনিত প্রার্থনা সংগীত, পাশে সানবাঁধানো পুকুর, সারি-সারি নারিকেল গাছ, দ্বিতীয় গেইটের পাশে ঝাউবন, ঝাউবনের শোঁ-শোঁ শব্দ, সবুজ ঘাস বিছানো বড় মাঠ, খোলা মাঠের উপর দিয়ে দখিনা বাতাস খেতে-খেতে শ্রেণীকক্ষে এগিয়ে যাওয়া। সত্যি সবকিছু যেন স্বপ্নের রাজ্যে পর্দাপন করার মতো।

দ্বিতীয় গেইট ফেরিয়ে আমরা যখন বিদ্যালয়ের বড় মাঠ দিয়ে বাতাস খেতে-খেতে এগিয়ে চলছি, তখন দিদিসহ অন্যসকল মেয়েরা দ্বিতীয় গেইট দিয়ে ডুকে ১৫-২০ হাত পূর্বে গিয়ে তাদের শ্রেণীকক্ষে চলে যাচ্ছে। আসলে বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের আলাদা শ্রেণীকক্ষ হওয়ায় সবাই সকলের নির্দিষ্ট গন্তব্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

তখন সকাল আটটা বাজে। আমদের বিশৃঙ্খল ছাত্রদের সুরুজ স্যার, হেলাল স্যার আর কামাল স্যার বেত হাতে শৃঙ্খলা বদ্ধ করতে লাগল। বেতে আমার ভয় সে ছোটবেলা থেকে। তাই বেত দেখেই শৃঙ্খল হবার দলে যোগ দিয়ে এগিয়ে গেলাম। প্রতিটি শ্রেণীকক্ষের সব ছাত্ররা দলবদ্ধ হলে, প্রতিটি সারি দলবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যায় সবগুলো্ শ্রেণীকক্ষের বেষ্টনিতে ঘিরে থাকা মাঠে। যেখানে রয়েছে দন্ডায়মান স্বাধীন বাংলার লাল সবুজ পতাকা। বাতাসের ছটকায় যে পতাকা উড়ে চলছে মুক্ত আকাশে আপন খেয়ালে।

দন্ডায়মান পতাকার পিছনেই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অফিস কক্ষ। কিছুক্ষনের মধ্যে হারমোনিয়াম আনা হল, অফিস কক্ষ থেকে বেরিয়ে অতুল স্যার হারমোনিয়াম ধরলে, তাঁকে মধ্যমনি করে পাশে এসে এক-এক করে দাঁড়াল প্রধান শিক্ষিকা ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও দপ্তরী সকল। এবার সুরুজ স্যার এগিয়ে এলেন আমাদের ঠিক সামনে, দাঁড়ালেন আমাদের মুখোমুখি হয়ে। শুরু হল মার্চ ফাস্ট। মার্চ ফাস্টের পর শুরু হয় জাতীয় সংগীত। এ প্রথম আমি কারো মুখে জাতীয় সংগীত শুনে সবচেয়ে বেশী অভিভূত হলাম। মানুষ এত সুন্দর করে জাতীয় সংগীত গাইতে পারে, শ্রদ্ধেয় অতুল স্যারের সুরে না শুনলে আমি বোধ করি বিশ্বাসই করতে পারতাম না। জাতীয় সংগীত শেষে সুরুজ স্যারের সাথে আমরা সকলে দেশ তথা দশের কল্যানে নিজেদের বলিদান করবার শপদ বাক্য পাঠ করে সারিবদ্ধভাবে আবার নিজেদের শ্রেণীকক্ষের পথে এগিয়ে চললাম।

বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫

আমার ব্রাদার আঁন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয়ের দিনগুলো-০১ঃ

গোপাই স্কুলে পড়তাম আমি আর মেজদিদি (জয়ন্তী)। দিদি পঞ্চম শ্রেণী শেষ করে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উর্ত্তীন হলে দিদির জন্য বিদ্যালয় পরিবর্তনের আভাস আসে, কেননা গোপাই স্কুল ছিল পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। বাবা আর পরিবারের অন্যসকলে দিদিকে পরবর্তিতে বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সির্দ্ধান্ত নিলেও মায়ের তাতে প্রচন্ড অমত ছিল। অতঃপর মায়ের ইচ্ছায় বাবা ও অন্য সকলে দিদিকে ব্রাদার আঁন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমতি দিল। কিন্তু এবার আমাকে নিয়ে ঝামেলা। যেহেতু তখন আমি তিনবোনের উপর এক ভাই ছিলাম, তাই ছেলের একা-একা বিদ্যালয়ে যাবার ক্ষেত্রে একধরনের ভয় মা অনুভব করতে থাকেন। অতঃপর বাবার ও অন্যান্যদের সাথে আলোচনায় ঠিক হল আমিও ভর্তি হব দিদির সাথে। যা হোক, যথাসময়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি তালিকা তৃতীয় স্থান নিয়ে উর্ত্তীন হলাম। যথাসময়ে মা আর দিদি গিয়ে ভর্তিও করিয়ে আসলেন। আমাদের দুই ভাইবোনের ভর্তি হবার সাথে সাথে ব্রাদারে আমাদের বাড়ির ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল পাঁচে। মানে শিশুশ্রেণী থেকে বিদ্যালয়ে পড়ত আমার বাবার কাকাত ভাইয়ের তিন ছেলে-মেয়ে (রানু দাদা, সংগীতা দিদি আর কানু) যারা সম্পর্কে আমার ভাইবোন।

নতুন বিদ্যালয়ের দিনগুলো কেমন হবে এ ভেবে খুবই উত্তেজিত ছিলাম আমি। কেননা; ছোটবেলা থেকে শুনে আসতাম ব্রাদার আঁন্দ্রে বেশ ভালো বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের আইন-কানুন বেশ কড়া। সুদেব আমাদের পাশের বাড়ির। পঞ্চমশ্রেণীতে ভর্তি হবার সুযোগে আমি তার সে সহপাঠী। তাই বাড়ি থেকে আর সকলের সাথে বের হলেও তার সাথে-সাথে হেলে-ধুলে পথ চলতে লাগলাম। নতুন বিদ্যালয়ে নতুন করে যাবার অনুভূতি তখন বোঝা যাচ্ছিল না ঠিক। ঠিক মনের মাঝে যেমন উৎচ্ছ্বাস ছিল তেমনি ছিল এক ধুরু-ধুরু কাঁপন। কেননা মাইর খাওয়ায় আমার ছিল দারুণ ভয়। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটি তখন ছিল তা‘হল- বয়সের তুলনায় আমার শরীরের গঠন ততটা পরিপুষ্ট ছিল না। বড় কথা- আমাকে দেখে সকলে ঠিকরাত আমি বোধ করি প্রথম কিংবা দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি। যা হোক, হেলেধুলে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পৌঁছলাম।

সোমবার, ২৯ জুন, ২০১৫

অভিমানই যদি না রয় প্রেমে

নীল আকাশে মেঘ যদি না হয়, বারিধারা বইবে কি?
অভিমানই যদি না রয় প্রেমে, ভালোবাসার মূল্য কি?

চতুরতা

মিথ্যা আর প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে নিজেকে চতুর করে তোলা সম্ভব। তবে কারও সত্যনিষ্ঠ জীবন-যাপনকে বোকামি আর ব্যাক্তিকে বোকা ধরে নিজেকে এতটা চতুর ভাবতে যাবেন না।

কাহারে ঘিরে মন

হিল্লোলে দোলে ফুল
প্রান্তরে কি দোলে চাহি ফিরে-ফিরে
ঝিরিঝির বর্ষনধারা, কেন এত বহে যায়
কাহারে ঘিরে মন ক্ষনে-ক্ষনে, ব্যাকুল বারে-বারে।

ভাবা

কাউকে যদি আপনি ছোট ভাই ভেবে স্নেহ-মমতা দেখান, সে মনে-মনে নিজেকে আপনার দুলাভাই ভেবে বসবে। সে ভাববে- না হলে তার প্রতি আপনার দূর্বলতা কোথায়?

ভালো বোঝা পড়া না থাকলে

কারো সাথে খুব ভালো বোঝা পড়া না থাকলে রসিকতা করতে যাবেন না। যে আপনাকে ভালো বুঝতে পারে না, সে আপনার রসিকতার জবাবে আপনার বিশুদ্ধ মনটাকে নিঃস্প্রান করে দেবে।

মধুর যে বসন্ত

সুমধুর যে সুর মনের মাঝে বাজে
সে কি গো তোমারি সুরে তোলা
মধুর যে বসন্ত বুকে এসে লাগে
তা ভেবে তোমারও কি কাটে বেলা?

ভালোবাসি কত

যখন বুঝতেই চাও না রাতের কোলে আলো পড়ে ঢলে
তখন বুঝাই কেমনে ভালোবাসি কত বুঝবে দূরে গেলে....

রবিবার, ২৮ জুন, ২০১৫

কয়েকটি কলকথা

কিছু স্বপ্ন পথে ফেলে এসে
ভূল করে ভূলি তারে,
কিছু স্মৃতি ফেলে আসা যায়
ভূলে থাকা যায় নারে...
===
প্রেয়সি; জান না এই চোখের ভাষায় কি? কতটা বোবা কান্না অভিমান জমে-জমে স্তুপ হয়েছে হৃদয়ের কিনারায়। শুধু বলি যদি ভূলতে চেয়েও ভূল করে একবার কাছে আসতে, তবে এত অভিমানে হৃদয় এতটা পাষান হতো না....
===
এসো এসো এই বাহুতলে, জড়াবো তোমায় মায়াজালে
বাহুমেলে ডাকি তোমায় ফাল্গুনে
সবুজ ঘাস সবুজ প্রাণ, সবুজ উদ্ভেল আহ্বান
এসো মিশে যায় পরস্পরে, প্রাণে-প্রাণে।
===
আমি বসে আছি বারান্দায়
তুমি এসো; ফেলে যাও আমার কায়ায় তোমার ছায়া

বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০১৫

বেপারোয়া আচারণ

গতকালকের ঘটনা। লেগুনাতে করে মাত্র লুকাস মোড়ের কাছাকাছি স্টুডিও টুমরো এর কাছে। হঠাৎ ধুমম্ করে আমাদের লেগুনার বডিতে একটা ইট পড়ল আর একটা লোক হুঙ্কার ছেড়ে বলতে থাকল, মাদারছোদের দল তোরা লেগুনা চালাবি? শুয়রের বাচ্চারদল? কুকুরের দল...

কিছুক্ষনের মধ্যে আরও কয়েকটি ভাঙ্গা ইট ছুটে এল। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে লেগুনার ভিতরকার আমরা কিছুটা বিহ্বল হয়ে পড়লাম। নেমে পড়ব নাকি কি করব, হঠাৎ করে কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না। মনের মাঝে একটা অজানা ভয়ও তৈরী হয়ে গেল। ভেবে দেখলাম লোকটি যে ইট মারছে এ শরীরে পড়লে নির্ঘাত জখম। একটু খেয়াল করতেই দেখলাম, লোকটির ক্ষোভ অন্যে কারো কিছুতে নয়, তার ক্ষোভ লেগুনার ড্রাইভারদের সাথে। ঘটনার সময়কালে আরও দুটো লেগুনা আমাদের পিছনে ছিল। লোকটির এমন বেপারোয়া আচারণে আমাদের আর তৃতীয় নাম্বার লেগুনার ড্রাইভার পগারপার। দ্বিতীয় লেগুনার ড্রাইভার লেগুনা থেকে বের হয়ে লোকজনকে আহ্বান করছে উম্মাদ লোকটিকে থামাতে। কিন্তু লোকটির আচারণ এতটাই বেপারোয়া যে, আশপাশে দর্শকশ্রেণীর কেউই সাহস করে আসছে না থামাতে। একটা ইট এসে লেগুনার দ্বিতীয় ড্রাইভারের পায়ে পড়ে ওর পা থেকে রক্ত ঝরা শুরু করলে লোকটির উন্মাদনা কিছুটা কমে। তারপরও সে সবগুলো ড্রাইভারকে কান ধরার বিনিময়ে ক্ষমা করে। আসলে লোকটির সাথে ড্রাইভারদের সাথে কি সমস্যা সে জানা হয় নি, তবে ঘটনায় বোঝা গেল লোকটির সাথে কোন আচারণগত সমস্যা তাদের হয়েছে যার ক্রোধের ফলাফল এই দৃশ্য।

উপরের দৃশ্যে ভয়ের কারণ ইট হাতে লোকটির উন্মাদ আচারণ। তাকে ঘিরে অন্তত ১৫-২০ জন লোক ছিল। লোকটির শারীরীক ভাষাও ততটা উন্নত নয়, তবুও মানুষের মধ্যে শঙ্কা কেবল তার বেপারোয়া আচারণে।

নেতা

একজন সন্ত্রাসী ১০০ থেকে ১০০০ জন সাধারনকে রুখে দিতে পারে কোন প্রকার শরীরীক শক্তি ছাড়াই শুধুমাত্র একটা অস্ত্র আর বেপারোয়া আচারণে। তাই কোন সন্ত্রাসী যদি মনে করে কেউ তার চেহারায়, অয়ববে কিংবা পেশীতে ভয় পায়, তবে এ সম্পূর্ণ কল্পিত কথা।

আসলে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা এরা নিজের জীবনের মায়ায় প্রবলভাবে আসক্ত থাকে। তাই সে কোনভাবে চায় না অকারণে কেউ তার অনিষ্ট করুক। অথচ সন্ত্রাসী নামধারী আবালের দল মনে করে, তার চেহারাই মানুষের ভয়ের কারণ। তাকে লোকে খাতির করে, সমীহ করে।
না, ব্যক্তি কাউকেই কারও ভয় নেই। খালি হাতে আসুন, আপনার সাথে দ্বন্ধে যেতে , আপনার মুখোমুখি হতে কারও কার্পণ্য নেই। কিন্তু অস্ত্রের নাড়ানি, ঝঙ্কার দিয়েই দুনিয়ার সব গাঞ্জাখোর, হিরোঞ্চী, বেজন্মা শুয়রেরদল সকলের আতঙ্কের কারণ হয়, নেতা বনে যায়!

মানষিক অধঃগতি

ক্রমাণ্বয়ে মানুষের মধ্যেকার মানষিক অধঃগতি বেড়ে চলছে। দেখার দৃষ্টিভঙ্গিগুলো আমাদের এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, নিজের মা-বোন-মাসি-পিসি-কাকি এদের নিয়ে পথে চলতে গেলেও সংকোচ বোধ হয়। মানুষের বিবেচনা, ধারণা আর বলার ধরন এমন হয় যে, পাশের লোকটির প্রশ্নে অথবা ব্যবহারে আপনি নিশ্চিত বিব্রত বা সংকোচে পড়ে যাবেন কি করবেন বা কি বলবেন এই ভাবনায়।

সোমবার, ২২ জুন, ২০১৫

যুদ্ধ জয়ী সৈনিক

অস্ত্রহাতে যুদ্ধ জয়ী যে সৈনিক, তাকেও আজীবন বাঁচতে হয় ধারালো অস্ত্রের ক্ষতচিহ্ন বয়ে-বয়ে।

স্বপ্ন পতন

না, আমার নিজেকে নিয়ে বড় করে বলার মত কিছুই আমার নেই। যৌথপরিবারের কলহের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে জীবনের ১২-১৩ বছর। অনাহার, অভুক্ততা সব সহে-সহে জীবনটাকে শিখতে চেষ্টা করেছি বারবার। নিজের অজ্ঞতায় অনেক হোঁছট খেয়েছি ছোট্ট এ জীবনের বেলাভূমে। তবুও নিজের অজ্ঞতাকে সংশোধনের চেষ্টা ছিল সব-সময়। অনেক শেখা হয়নি পরিবেশ-পরিস্থিতিতে, অনেক শেখা বাকী রয়ে গেছে নিজের গাফিলতিতে। তবুও নিজের মনকে নিয়ন্ত্রন করার প্রয়াস সব-সময় রেখেছি। নিজের আচারণ, নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্খাকে ঠিক অতটা পর্যন্ত রাখার চেষ্টা করেছি প্রতিনিয়ত, যেন আমার জন্য কেউ পীড়িত না হয় অথবা আমার দ্বারা কেউ পীড়িত না হয়।

বড় হবার স্বপ্ন সবাই দেখে, সবাই বড় হবার স্বপ্ন দেখে-দেখেই দুনিয়ার মায়ায় পড়ে। একটা সময় অনেক বড় হবার আকাশ-কুসুম ভাবনা আমাকেও পেয়ে বসেছিল। ঢাকায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশলে ভর্তি হবার ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য ছিল- বড়-বড় কবি-লেখকদের সান্নিধ্য নেয়া, তাঁদের দেখে, তাঁদের কাছ থেকে শিখে একদিন অনেক বড় লেখক হওয়া। অথচ এই স্বপ্নটা আমার জন্য সত্যিকারে অর্থে অলিক ছিল! ঢাকায় আমার অবস্থান প্রায় ১১ বছর চলছে। অথচ এখনও পর্যন্ত আমি কোন ভালো লেখক বা কবির সান্নিধ্য গ্রহণ করিনি। সত্যি কথা বলতে কি, নিজের ভিতরকার সে শক্তিগুলো হারিয়ে গেছে। বড় লেখক হবার স্বপ্ন দেখা আমার অনেক আগেই উতরে গেছে। এখন যেটুকু লেখালেখি করি, সেটা নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কেবল করি। একটা সময় যে লেখালেখিতে আসক্তি ছিল, সেটার নেশায় ডুবে করি।

সময়ের ব্যবধানে জীবনের ভীত শক্ত মজবুত হয়। আমার ভীতটাও হয়ত মোটামুটি করে চালিয়ে নেবার মত হয়েছে। কিন্তু নিজের ভিতরকার উজ্জিবিত শক্তিগুলো ক্রমশ দূর্বল হতে-হতে এখন প্রায় নিঃচিহ্ন। এখন কেবল এই ভাবনাই নিজেকে পীড়িত করে, ১০ বছর আগে এই ভীতটাকে ফেলে হয়ত নিজের স্বপ্নগুলোকে এভাবে আছড়ে মারতে হত না।

মানষিক সংশোধন

মানষিক সংশোধনটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। যে নিজের মনকে নিজের মানষিকতাকে সংশোধনে ব্যর্থ, সময়ের ব্যবধানে সে অন্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়।

খ্যাতি

খ্যাতিতে যতটা সুখ আছে, ঠিক ততটা বিড়ম্বনাও আছে....

আমি কোনভাবেই কোন অস্বাভাবিকতাকে সহজ করে নিতে পারছি না

গতকাল সকালে অফিসে আসছিলাম। পুরোনো পল্টন মোড়ে গাড়ী থেকে নামতেই দেখী উৎসাহী লোকের ভীড় চারদিকে। যাদের মোবাইলে হাই ফিক্সেল ক্যামরা আছে, তাদের কেউ দৈনিক সকালের খবর পত্রিকার ছাদের উপরের ছবি তুলতে ব্যস্ত। আর অনেকে দল-দল হয়ে আলোচনায় মশগুল। সকলের এমন অবস্থা দেখে সকালের খবর পত্রিকার অফিসের ছাদে তাকালাম। দেখলাম কয়েকজন পুলিশের আনাগোনা। এমনটা দেখে- ভাবলাম বোধকরি পুলিশ কাউকে ক্রশফায়ার করেছে। ভেবে আরেকটু এগিয়ে এসে লোকমুখে জানলাম, ছাদে অবস্থিত টাওয়ার ঘেষে একজন লোক একদম সোজা দাঁড়িয়ে। যিনি আত্মহত্যা করেছেন অথবা টাওয়ারের শর্টসার্কিটে প্রাণ হারিয়েছেন। নিচ থেকে সকালের খবরের অফিসের ছাদটাকে ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করলাম। দেখে মনে হচ্ছে টাওয়ারের শীর্ষবিন্দু থেকে একটা দড়ি যেন ঝুলছে যার প্রান্তভাগ লোকটির গলায় ঝুলানো। কিন্তু নিচ থেকে এও বোঝা মুশকিল হচ্ছে যে, যদি টাওয়ারের সাথে লোকটি ঝুলে আত্মহত্যা করে থাকে তবে নিচ থেকে তাকে যে অবস্থানে দেখা যাচ্ছে, সে অবস্থানে দেখা যেত না।

যা হোক ঠিক বোঝা সম্ভব হচ্ছে না, আসল মৃত্যু রহস্য। দৃশ্যটি দেখে অফিসের পথে পা বাড়ালাম আর ভাবতে থাকলাম এধরনের অপমৃত্যু সম্পর্কে। দিনকে-দিন এমন পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে যে, স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রত্যাশাই অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। মানুষ কত সহজে এধরণের মৃত্যুতে আলিঙ্গন করছে অথবা কেউ কত সহজে অন্যকে মেরে ফেলে যাচ্ছে। আমাকে ক্রমাণ্বয়ে চিন্তারা গ্রাস করতে থাকে। ভাবতে থাকি লোকটি কি খুব সমস্যায় জর্জরিত ছিল? কতটা অবসাদ তাকে এমন কাজে প্রলুব্ধ করল? তিনি ফাঁসের জন্য এমন একটা স্থান কেন বেছে নিলেন? তিনি কি কোন নির্দেশনা রেখে যেতে চাইছিলেন?

যদি কেউ তাকে মেরে রেখে যায়, তবে কেন? মানুষ কি করে এতটা পাষান চিত্তে অন্যকে শেষ করার প্রয়াস পায়?

যদি বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা যায়, এ খুবই দুঃখজনক ব্যাপার...

আচ্ছা তার অনুপস্থিতিতে পরিবার-পরিজনের কি হবে?

ভাবতে গিয়ে সকালে আর নাস্তা খেতে ইচ্ছে করল না। না খেয়েই অফিসে ঢুকলাম। অফিসে ঢুকেও বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকলাম। অফিস শেষ করে বাসায় পৌঁছেও বিষয়টিকে মাথা থেকে তাড়াতে পারলাম না।

আজ শুনলাম ওটা ফাঁসিতে আত্মহত্যা ছিল। বিষয়টি এখনও ভাবনা থেকে যাচ্ছে না। আমার যে ইদানিং কি হয়েছে আমি নিজেই ঠিক বুঝে পারছি না। আমি কোনভাবেই কোন অস্বাভাবিকতাকে সহজ করে নিতে পারছি না।

বিশুদ্ধ জন্মরক্ত

সরকারী চাকুরীতে যোগদানের পর চাকুরীজীবীদের বেশীরভাগই বিশুদ্ধ জন্মরক্ত দুষিত হয়ে পড়ে কেন, কেউ কি সঠিক বলতে পারেন?

ভালো বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি ভালো ছাত্র-ছাত্রী তৈরীর গর্বিত অংশিদার?

আজকে একটা বিষয় জানতে চাই সকলের কাছে- সে হল ভালো বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো ছাত্র-ছাত্রী তৈরীর গর্বিত অংশিদার কিনা?
শিশুবেলা থেকেই শুরু করি।

একটি শিশুকে যখন বাবা-মা বিদ্যালয়ে পড়ার উপযুক্ত মনে করে তাকে নিয়ে যায় বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে, তখন আমরা দেখি যে সকল বিদ্যালয়গুলো মানের দিক থেকে ভালো তারা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা যাচাই-বাচাই করে তাদের বিদ্যালয়ে তাদের স্থান করে দেয়। এখন যদি বলি প্রথম দিককার যে শিশুটি তৈরী হয়ে প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে। সে অবশ্যই অন্য আর আট-দশজন থেকে ভালো বলেই ঐ বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে। অন্যদিকে যারা সুযোগ পায়নি, তারা তাদের মান অনুযায়ী অন্যান্য বিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে। তার মানে কি এই দাঁড়ায় না; ভালো বিদ্যালয়গুলো ভালো ছাত্র-ছাত্রী বের করার প্রয়াসে প্রথম অঙ্কুরটি সুন্দরভাবে তাদের মাঠে লাগাতে সক্ষম হয়েছে? অথচ অঙ্কুরটি তাদের তৈরী নয়, ছিলো অন্যের তৈরী।

এরপর যাচাই-বাচাই করে নেয়া অঙ্কুরগুলোর মধ্যে বছর ধরে প্রতিযোগিতা চলে। প্রতিবছর ভালো বিদ্যালয়ের অঙ্কুরগুলোর বেশীভাগগুলোতেই পচন ধরে। ফলশ্রুতিতে সময়ের ব্যবধানে ছিটকে পড়ে তারা। আর ছিটকে পড়াগুলোকে তারা পরিষ্কার করে জাল বিছায় অন্যান্য বিদ্যালয়ে তৈরী হওয়া মেধাবীদের তাদের বিদ্যালয়ে নেবার। সময়ের ব্যবধানে নিন্ম মানধারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, বাবা-মা, শুভাকাক্ষী অথবা শিক্ষার্থীর নিজের প্রচেষ্টায় নিজেকে মেধাবী অবস্থানে দাঁড় করায় এবং ভালো বিদ্যালয়ের কৌশলগত জালে পড়ে খারাপ বিদ্যালয় ত্যাগ করে ভালো বিদ্যালয়ে ছুটে। প্রতি বছর এই কার্য্যক্রম অব্যহত থাকায় নিন্মমানের বিদ্যালয়গুলো ক্রমাগত প্রায় তলানিতে গিয়ে পৌঁছে। দীর্ঘ দশ বছরের ত্যাগ-তীথীক্ষা শেষ হয় বিদ্যালয়গুলোর। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়। মেধাবী বিদ্যালয়গুলো ভালো ফলাফলে আলোড়ন করেছে আর তলানীতে পৌঁছা খারাপ বিদ্যালয়গুলো নিজেদের বিদ্যালয়ের অবস্থান টিকাতে হিমশিম খাচ্ছে। এখানে আবার মজার একটা ঘটনা ঘটে। খারাপ বিদ্যালয়ে থাকাকালে যে মেধাবীটি তৈরী হয়, সে মেধাবীটি ভালো বিদ্যালয়ের মেধাবীদের দলে গিয়ে যে ফলাফল করার কথা থাকে, অনেক সময় তা থেকে বঞ্চিত হয়। অথচ খারাপ বিদ্যালয়ে থাকাকালে তার সে প্রত্যাশাটা মোটামুটি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ছিলো।

তাহলে মূল বিষয় কি দাঁড়ায়? ভালো বিদ্যালয়গুলো ভালো ছাত্র-ছাত্রী পয়দা করছে? না তাদের শেষ করে দিচ্ছে?

এবার আসি মহাবিদ্যালয়গুলোতে। বাংলাদেশে নটরডেম কলেজ, হলিক্রস বেশ নামকরা মহাবিদ্যালয়। এছাড়া পর্যায়ক্রমিক আরো মহাবিদ্যালয়গুলো আছে যারা প্রতিবছর হাজার-লক্ষ এ+ গ্রেডের ছাত্র-ছাত্রী পয়দা করে। প্রথমে নটরডেমের কথায়ই আছি। এখানে যারা ভর্তি হয়, নিঃসকোচে বলা চলে- বিদ্যালয়ের সেরা মেধাগুলোকে মহাবিদ্যালয়টিতে সুযোগ করে দেয়। এভাবে শুরু করে, পর্যায়ক্রমিকভাবে সব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা সেরা মহাবিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হবার পর নিন্মমানের মহাবিদ্যালয়গুলোর জন্য বিবেচনায় ঝুট-আবর্জনাগুলো থাকে। এভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শুরু হয় দু‘বছরের যুদ্ধ। যুদ্ধ শেষে ফলাফল কি?

আমার এক মেসো তাঁর সন্তানকে নিয়ে বেশ চিন্তিত। বিষয়টি হল- এত তাঁর গোল্ডেন এ+ গ্রেডের ছেলেটি মেধাবী হবার সত্ত্বেও নটরডেমে সুযোগ না পেয়ে যখন নোয়াখালী কলেজে ভর্তি হয় তখন তাঁর হতাশার মাত্রা আরও বাড়ে। ছেলেকে তিনি প্রতিনিয়ত বুঝাতে থাকেন যেন কোনক্রমেই তার গোল্ডেন এ+ থেকে ছিটকে না পড়ে। ছেলে তাকে ভরসা দেয়, তবু তিনি পান না। তিনি বলেন শুন তোদের মহাবিদ্যালয়ে ১০০ এর অধিক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা মানের দিক থেকে তোর কাছাকাছি। ফলাফল শেষে দেখা যায় নোয়াখালী কলেজের এই ১০০ জনের মধ্যে গোল্ডেন এ+ পাবে ১৫-২০ জন। তারমানে ৮০-৮৫ জনই ছিটকে যাবে। মেসোর কথাটি অযৌক্তিক নয় মোটেই। ফলাফল রসায়ন করলে আমরা তাই দেখছি। যে নটরডেম মহাবিদ্যালয় সব সুপার ট্যালেন্টকে নিচ্ছে তাদের আশ্রয়ে। দু‘বছরের সাধনা শেষে সেই সুপার ট্যালেন্টদের সবাইকে তাদের প্রাপ্য সন্মানটা ধরে রাখার ব্যবস্থা করে দিতে সক্ষম হচ্ছে কি? মোটেই তা নয়। প্রতিবছর মেধাবী তকমাধারী মহাবিদ্যালয়গুলো দিকে স্পষ্টত দৃষ্টি রাখলেই তা সকলের দৃষ্টিগোছর হবে। সে হিসেবে ফলাফল যাই হোক না কেন, সামগ্রিক বিবেচনায় নিন্মমানের মহাবিদ্যালয়গুলোই বেশী ভালো করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলায়ও প্রায় একই প্রক্রিয়া। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবীদের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হলে, অনেকটা টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনতে ছুটে যুদ্ধ করতে-করতে চলা কিছুটা নিন্ম মেধাবীর শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শেষে যদি কর্মক্ষেত্রকে বিবেচণায় আনা হয়, তবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সফল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই দেখা যায় যাদের বলা হয় টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনেছে, তাদের পিছনে।

যদি সবকিছুকে ধারাবাহিকভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়। তবে এ একটা সত্য সবাইকে মানতেই হবে। ভালো তকমাধারীরা ভালো ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে অনেকটা খামখেয়ালি তামশা খেলা খেলে তাদের মেধাটিকে শেষ করে দিচ্ছে। যদি তাই না হত, তবে পথে-ঘাটে ব্যাঙ্গচির ভাষার মতো এত কোচিং সেন্টারের জন্ম হত না। কোচিং সেন্টারের গায়ে লেখা থাকত না অমুক বিদ্যালয়, অমুক মহাবিদ্যালয়, অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ের, অমুক শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।