রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৫

বৃষ্টিবিলাস

বৃষ্টির উপর আজ খুব অভিমান হল, ইচ্ছে ছিল আজই সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলি। তবু শুধুমাত্র অভিমানের রেশটুকু সঙ্গে করে অফিসে পৌঁছলাম।

আমার কাছে প্রেম-ভালোবাসা আবদ্ধ বলয়ে লালন করবার বিষয়, অন্যরা বুঝবে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে, তবে কেউই নিশ্চিত সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। সারাক্ষনই দুজনা দুজনার জন্য অস্থির থাকব, তবু কেউ এগিয়ে এসে জানতে পারবে না দুজনার মধ্যেকার প্রেমের বাহুল্যতা ঠিক কতটুকু! অথচ ওর কাছে প্রেম-ভালোবাসাটাই সব, ভালোবাসি বলতে গেলেই যেন তার তাড়িত বাহুবন্ধনীতে আমাকে জড়িয়ে থাকতে হবে। অথচ সারাক্ষন ভালোবাসি বলে ফিরে চলার মত ঘ্যান-ঘ্যানানি, প্যান-প্যানানি আমার অসহ্য ঠেকে, বাড়াবাড়ি লাগে। বলি যদি মনটাকে না বোঝা হয় তবে ভালোবাসা এভাবে কদ্দিন টেনে নেয়া যায়?

বৃষ্টিকে আজ সাফ জানিয়ে দিলাম- এ আমার সহ্য নয়! জানি তার সময়ে সে তার মতোই অটল থাকবে। তবু এমন প্রেম-ভালোবাসার লাগাম আমাকে বাঁধুক সে আমি চাই না। সত্যিকারে বলতে গেলে কি- প্রেমের যে লাগামে এদিক-ওদিক ছুটবে পারব না, যে লাগামে কাজকর্ম ঠিকমতো হবে না, যে লাগামে মিষ্টি-মধুর আকুতিগুলো আতঙ্কেরুপ নেবে, সে লাগামের অভিমানগুলো ক্ষোভে সমর্পিত হবে, সে লাগামে আবদ্ধ হবার বাসনা আমি ছাড়বই।

অনেক কাঁদছিল সে, তার চোখের অবিরত বর্ষন আমার ছাতার ফাঁক গলে ভিজিয়ে দিয়েছে আমার শরীরের আদ্যপ্রান্ত। আচারণে বুঝলাম ক্ষোভের রেশ কোনক্রমেই কাটটে পারছে না অথবা ক্ষোভ প্রকাশের কোন ভালো মাধ্যম ও খুঁজে পাচ্ছে না, তাই এক নাগাড়ে এমন অঝোর ধারায় কাঁদছে। আমি সব ফেলে জীবন ভাবনায়ই কেবল ছুটলাম। গন্তব্যে পৌঁছে যখন তার অশ্রুতে ভেজা শরীরের শিহরণ দেখলাম, তখন মনটা ব্যাকুল হয়ে ভাবছে- এ শিহরণটুকুই বোধকরি ভালোবাসা জাগায়, ভাবতে শিখায়, ভাসতে শেখায় অথবা আনমনা ভাবুক কবিকে ঘোরের মাঝে ফেলে নিয়ে যায় বাদল দিনের গানে-

পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে॥
চেনাশোনার কোন্‌ বাইরে
যেখানে পথ নাই নাই রে
সেখানে অকারণে যায় ছুটে॥
ঘরের মুখে আর কি রে
কোনো দিন সে যাবে ফিরে।
যাবে না, যাবে না--
দেয়াল যত সব গেল টুটে॥
বৃষ্টি-নেশা-ভরা সন্ধ্যাবেলা
কোন্‌ বলরামের আমি চেলা,
আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে মাতাল জুটে--
যত মাতাল জুটে।
যা না চাইবার তাই আজি চাই গো,
যা না পাইবার তাই কোথা পাই গো।
পাব না, পাব না--
মরি অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে॥

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন