মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫

শরীরের বীষপোড়া

যখন শরীরে বীষপোড়া উঠে তখন তা সারাদেহ যন্ত্রণায় দহে।
আবার প্রদীপের শীখা বেড়ে পড়া ক্ষুদ্র আলোও রাত্রির অন্ধকারে অনেকটা পথ আলোকিত করে।

প্রোফাইল পিকচারে ফান্সের প্রতি সমবেদনা জানাতে ফান্সের পতাকা দেওয়াতে আমার যেসকল বন্ধুরা আহত হয়েছে, উপরের দুটো কথা তাদের জন্য। আইএসআইএস কে নির্দেশ করেই কথা দুটো। আশা করি আমাকে ভুল না বুঝে আমার কথাটি বন্ধুরা উপলব্ধি করবে।

আর একটি কথা, যারা আজ বলতে চাইছে লম্বা দাঁড়ি আর জুব্বা পড়ে আইএসআইএস নামধারী যারা ইসলামের নাম ভেঙ্গে এসব করছে তারা মূলত ইসলামের শত্রু। তাদের আবার অনেকেই দেখছি আইএস এর সাফল্যে খুশিতে গদগদ হতে। আইএস এর সাফল্যগাঁথা ছবিতে লাইক দিতে। সত্যি বলতে কি- আমার বিশ্বাস আইএসআইএস এর পতন হলে এরা সমভাবেই ব্যথিত হবে।

(অজ্ঞাতে কাউকে আঘাত করলে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী)

পতন হোক সাম্রাজ্যবাদের

আদর্শিকতার ব্যাপারে মতের অমিল থাকলেও কোন ধর্মগ্রন্থে আমার অবিশ্বাস নেই। আমি আমার জীবনের যে মেরুতে দাঁড়িয়ে আছি, এখানে এসে দাঁড়াতে গিয়ে আমি যাদেরকে জীবনের আদর্শ কিংবা স্বরূপ মেনেছি- তারা কোন না কোন ধর্মের মতাদর্শী। তাই যুগ কিংবা কালের নাও বেয়ে যে সত্য আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাকে এক তুড়িয়ে মিথ্যা-বানোয়াট কিংবা অসত্য বলতে আমার কার্পণ্যতা সর্বাধিক। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, ধর্মগুলোকে কেউ-কেউ ইন্দ্রর্জাল বলতে চাইলেও এর অর্ন্তহীত যে বোধগুলো নিয়ে জগতে শীর্ষস্থানগুলোতে যারা পৌঁছেছে- ধর্মের আদর্শ কিংবা সারতর্ত্ত্ব যদি সত্যি বানোয়াট হত, তবে সে আকড়ে কেউ শীর্ষে পৌঁছতে পারত না।

কিন্তু ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি করা, এটাকেও আমি মানতে পারিনা। যেমন আমার কথাই যদি বলি তবে যে সত্যিটা সামনে এসে দাঁড়ায়, তাতে আমি দেখী- আমি চাইলেই অনেক কিছু মেনে চলতে পারি না। জীবনের অসঙ্গতিতে কিংবা সামাজিক অথবা পারিবারিক কারণে। যেহেতু অনেক ভাবনাকে কারণে অবহেলায় রাখতে হয়, তাই নিজের মনকে বুঝ দিতে কিংবা স্থির রাখতে আমাকেও নিত্য-নতুন কোন কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়। অথাৎ আমার ব্যক্তিগত একটা মতাদর্শ আমাকে তৈরী করতে হয় স্রেফ নিজেকে বুঝ দিয়ে রাখতে।

পৃথিবীর ৯০ শতাংশ মানুষকে আমি একই কাতারে ফেলি। কারণ আমি মনে করি, যাদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা শক্তিশালী রুপ নেয় নি, তারা কখনও কোন প্রকার নিজস্ব চেতনা কিংবা মতাদর্শ তৈরী করে চলছে না- হাজার শক্তিশালী যুক্তি প্রদান করলেও তা সত্য নয়। আর এই ধর্মীয় বাড়াবাড়িগুলোও এই ৯০ শতাংশ মানুষের হাত ধরেই তৈরী হয়। যারা না সঠিক ধর্মের সারতত্ত্ব প্রদানে সামার্থ্য, না জীবনের বাস্তবতায়। ফলশ্রুতিতে জীবনের সবক্ষেত্রেই এদের অবস্থান অনেকটা জগাখিচুড়ির মত। মানে এরা নিজেরাও শান্তিতে থাকতে পারে না, অন্যকেও শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না। আর এখানেই আধিপত্য বিস্তার করে মডারেটর, প্রমোটর কিংবা সাম্রাজ্যবাদীরা। এরা বিভ্রান্ত মানুষগুলোকে পেঁচিয়ে এতটাই গুলায় যে, সাধারণ মানুষগুলো নিজেরা সঠিক বলে ছুটতে বাধ্য হয়। তাতে সে খুন হচ্ছে নাকি তার মতো অসহায় কাউকে খুন করছে খেয়াল করে না। আর এখানেই সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থকতা।

পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হোক, আর পতন হোক সাম্রাজ্যবাদের সেই কামনা অহর্নিশ।

এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই

এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই
আমি যে কয়েকটা দিন বাঁচি ভাই...

আমি দুনিয়ার মোহে সব ভূলে যাই
পরকালের স্বর্গ খুঁজি কোথায়?

আমার ধর্মজ্ঞান নাই (আমার ধর্ম আচার নাই)
বেদ-কোরানের তত্ত্বসার জানিব কোথায়?
(আমার) রাত পৌহালে সংসারযজ্ঞে
সারাটা দিন কেটে যায়
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...
যারা করে ধর্মের আচার, জানে তারা তাঁর তত্ত্বসার
তাই পরপারের স্বর্গের আশায়, করে তা প্রচার।
শুধু বুঝি না তাদের এ কেমন বিচার
আমার এপাড় স্বর্গ পুঁড়ে করে ছাই
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...

আমি মূর্খ্য মানবভ্রুন, পাইব কোথায় তেমন জ্ঞাণীর গুণ
যাদের হাজার রকম নরক যন্ত্রণায়, টুটে যায় চোখের ঘুম
অজ্ঞাণী আমি ভাবী বসে, দেহের মধ্যে কোনস্থান আছে
দহণ ব্যথায় সমান না পৌড়ায়
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...
শুনি গুণীজনের কাছে, লক্ষ যোনি পর মানব এসেছে
মানব মুক্ত নিষ্কাম কর্মগুণে, স্বয়ং স্রষ্টা বলেছে
তবে স্বর্গ পাবার কর্ম কিসে, চলছে সবাই কিসের পিছে
অবিবেচক ভেবে কয় জানা নাই
এই দুনিয়ায় স্বর্গ গড়ে থাকতে চাই...

আন্তরিকতার অভাব দেখে

রাজন-রাজীব হত্যাকারীদের বিচারের যথাযথ প্রয়াসের জন্য সরকার আর বিচার বিভাগের প্রতি অকুন্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য রইল।

কিন্তু এখনও কষ্ট পাচ্ছি সরকার-প্রশাসন-বিচারবিভাগের সাগর-রুনি, বিশ্বজিৎ, ত্বকী, সৌরভ, অভিজিৎ, হিমাদ্রী, নিলাদ্রী, ওয়াশিকুর বাবু, ফারুকী, রাজীব, অনন্ত বিজয়, দীপনসহ রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয়ভাবে আক্রান্ত মানুষগুলো হত্যার বিচারের ব্যাপারে আন্তরিকতার অভাব দেখে।

চাপাবাজি

দুইবন্ধু মুভি দেখছে, এসময় একবন্ধু কিছুক্ষন পাশে বসে চলে যেতে চাইলে মুভিতে মনোযোগী বন্ধুটি বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে বলল, কিরে চলে যাচ্ছিস কেন? বসে মুভি দেখ, মুভিটি ভালো হবে মনে হচ্ছে।

বন্ধুটির কথা শুনে চলে যাবার জন্য উদগ্রিব বন্ধুটি বলল- আরে ছাড়। এই মুভি আমি আগে অনেক দেখেছি, মুভির আগাগোড়া সব মুখস্থ। বন্ধুর জবাব শুনে অপর বন্ধুটি বলল- কি বলিস? মুভিটি তো নতুন, তুই কি করে দেখলি? ঠিক আছে যদি দেখে থাকিস তবে কাহিনী বল-

জায়গায় ধরা খাওয়া বন্ধুটি আমতা-আমতা করে আদ্যপ্রান্ত ভাবছে কি বলবে....ঠিক এসময় একটি অ্যাকশান দৃশ্য চলছে, যেখানে নায়ককে দেখে ভিলেনরা পালাচ্ছে- এই দৃশ্য দেখে বন্ধুটি বলল- আরে ঐযে দেখছিস ছেলেটা, ওটা নায়ক আর হিরোয়িনটা নায়িকা। আর বাদ-বাকী প্রেম-রোমাঞ্চ-মারামারি-কাটাকাটি অন্য ছবির মত। তুই দেখ, কাহিনী আমি যা বলেছি এর বাহিরে কিচ্ছু নেই। অবশ্য তোর যেহেতু মুভি ভালো লাগে তুই মজা পাবি, দেখ দেখ, আমি গেলাম....

অনুকাব্য গুচ্ছ**

১)

বুঝিনা- নির্বিকার জীবনই কি কেবল বৃত্তবন্দি?
ফুল কি কেবল ডালের বন্ধনিতেই-
উজাড় করে মধু বিলায়?
ক্ষয়ে-ক্ষয়ে সুবাস বিলায়?
মুগ্ধতায় রুপসুধা বিলায়?

তবে- ক্ষয়ে যেতে বন্দি হব প্রাতঃরাশে!

২)

কিছু মানুষ ঘরে বসেই
যুদ্ধজয়ের গল্প লেখে
সৈনিক কিন্তু রণাঙ্গণেই
যুদ্ধজয়ের গল্প শেখে।

৩)
যে বোঝে তারে না হয় যায় বলা-
যে বুঝতে করে ছলা-কলা, তারে বোঝাতে কে নেবে জ্বালা?


সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী

যখন সমাজব্যবস্থা সাম্যবস্থায় পৌঁছার চেষ্টা করছে, তখন পুরুষালী সমাজ আড়মোড় ভেঙ্গে মোছড়াতে শুরু করেছে। আর ক্ষমতার বাহুবিন্যাস নারীর সাথে মিলিয়ে দেখাতে চাচ্ছে নারীর ক্ষমতা নস্যি তাদের তুলনায়। এখানে পুরুষালীসমাজ নারী ভূমিকা ধারন করতে চায় এবং নারীকে শেখাতে চায় তাদের ভালো-মন্দের ব্যাপারগুলো। ব্যাপারটা এমন- যেন নারীসমাজ তার ভেতরকার জাগ্রত সত্ত্বাকে কখনও উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। অথচ নিজেদের ব্যাপারে তাদের সচেতনতা আদ্যৌ জাগ্রত হচ্ছে কি?

কিন্তু এটা কেন হচ্ছে?

হচ্ছে কারণ- পুরুষ নারীসমাজকে দাবড়িয়ে রাখতে চায় নিজেদের ভেতরের পশুত্ব কিংবা অপকর্ম ডাকতে কিংবা নিজেদের চরিত্র চরিতার্থ করার মতো বাসনা যেন নারীর মধ্যে জাগ্রত না হয়, সে ঠেকাতে।

আমি সবসময় যা মনে করি তা হল- যেহেতু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আর্কষনটা স্বাভাবিক, তাই চারিত্রিক নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারটা ব্যক্তির ভেতর থেকে হওয়া উচিত। নারী যদি রাস্তা-ঘাটে পুরুষের উন্মুক্ত অঙ্গভঙ্গি দেখেও স্বাভাবিক পথ চলতে পারে, তবে নারীর পোশাকের দায় দিয়ে কেন তাকে হটানোর পয়তারা করা হবে?

নারী সমন্ধে বলতে গেলে অনেকের মধ্যে একটা সুর প্রায়ই উঠে, তা হল- নারীর দূর্বলতা তার মাতৃত্বে। অথাৎ নারীর অনিষ্ট সাধন খুবই সহজতর। তাই যে কোন অনিষ্ট তার চরিত্রে কালিমা লেপে দেবে। এখানে প্রশ্ন দাঁড়ায়- নারীর এ দূর্বলতা হবে কেন? এবং কালিমার ব্যাপারটা কেন একা নারীরক্ষেত্রে হবে? যদি কেউ নারীর অনিষ্ট করে তাহলে উপস্থিত নারী-পুরুষ দু‘জনের চরিত্রই তো শুদ্ধতা হারাল। তাহলে কলংঙ্কের দায় নারীর একার কেন? শুধু সন্তানের উৎপাদনের কারণ কিংবা সন্তানের লালন-পালন হেতুর দায়ে যদি নারীকে টুটি চেপে ধরে রাখা হয়, তবে একটাই উত্তর সন্মুখে এসে দাঁড়ায়, তাহল- পুরুষালীসমাজ বিবেকবর্জিত, এরা নিজেদের সাধু সাজানোর জন্যই কেবল নারীসমাজকে ঘরের ভেতর আটকে রাখতে চায় কিংবা কোনঠাসা করে রাখতে চায়।

জীবনগুলো জীবনের মতো পরিচ্ছন্ন হোক। দাবড়িয়ে রাখার পয়তারায় যে সন্দেহের দেয়াল তৈরী হচ্ছে তা ভেঙ্গে যাক। আর নারী-পুরুষের মধ্যেকার সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী।

গন্তব্যের পথ ধরে ছুটে চলছে তার সীমানা

সময়ের কথা বলছি- দেশ যে গন্তব্যের পথ ধরে ছুটে চলছে তার সীমানা তো কেবল নিষ্ঠুর পরিণতি।

না সে ভাবতে চাই না, তবু কেন জানি ভাবাচ্ছে-
বলি একদিন কি তবে স্বাধীনতার স্বপক্ষে লড়াকু সৈনিকদের কাছ থেকেই স্বাধীনতার অর্জনের জন্য লড়তে হবে?

নিজেকে স্তব্ধ করতে গিয়ে...

শুভাকাক্ষি প্রিয় মানুষগুলো বারংবার নিষেধ করছে কোন প্রকারের প্রতিবাদমূলক লেখা পোষ্ট করার ব্যাপারে। তাদের বারংবার নিষেধে কিছু লিখতে গেলেই একটা বাঁধার বলয় সামনে এগিয়ে আসে। বারবার মনে হয়- এ নিষেধ অমাণ্যতে তারা কষ্ট পাবে। কিন্তু বিচলিত মনকেও স্থির রাখতে পারি না।

মৃত্যু নিয়ে হাসপাস করা কিংবা মৃত্যুতে ভীত তত্রস্থ হয়ে পড়া সে এখন আমাকে এতটা আবেগী করে না। কিন্তু শুভাকাক্ষি মনগুলোর ভালোবাসা ডিঙ্গিয়ে মনের রক্তখরণগুলো বারবার মুছে নিতেও কষ্ট হচ্ছে খুব। কোন কিছুই ঠিক বুঝতে পারি না, শুধু ভাবনা আসে এভাবে নিজেকে স্তব্ধ করতে গিয়ে নিজের ভিতকার শক্তিটাকেই না স্তব্ধ করে দেই।

বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫

আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

দয়াল গো...
ও দয়াল, দয়াল গো.....

দয়াল- মাতাল হাওয়ায় উদাস এ মন পাগল হয়েছে
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে....

বাবুই পাখি বাসা বুনে সুনিপুন অতি
আমার দেখিয়া এমন কর্ম মনে জাগে মতি
তাই পরের খড়-কুটো কাটি, মজি জগত বিনাশে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

দেহমোড়া জড়ধেনু সুখের আশায় ছুটে
আমি কামনার ফলা বানিয়ে দিলেম তাতে জুটে
এখন চলছে জীবন লুটে-পুটে, না দেখে ভিতর-বাহিরে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

কাঁদেতে কলিকাল এসে কালি মেখে যায়
আমার দেহ-কর্ম চিত্তমর্ম ভুমিতে লুটায়
অর্হনিশ জীবন খাতায়, অনেক হিসেব জমেছে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

ঝরা-জিহ্ন দেহ নিয়ে সাধু সঙ্গ করি
গুরুর পদপদ্মে মজে স্মরি হে শ্রীহরি
আমার কূলহারা তরী ব্যকুলে ছুটে, ডুবে মরি অকূল সমুদ্রে...
আমি সুখের আশায় বিষ গিলে প্রাণে মরি যে...

পারা, না পারা

অপশক্তি ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস রুদ্ধ করতে পারে, ব্যক্তিতে কেটে খন্ড-বিখন্ড করতে পারে, ব্যক্তির স্বপ্নটাকে থামিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তার ভেতরকার সত্ত্বা, তার মগজের চিন্তা-চেতনা, তার ধ্যানযুক্ত সৃষ্টি কিংবা তার আত্মিক দর্শন কোনটিকেই নিঃশেষ করতে পারে না।

আপনি থেমে গেলেন কিংবা থামবেন ভাবছেন?

আপনি থেমে গেলেন কিংবা থামবেন ভাবছেন? পরাজয়টা আপনারই কেবল
ভয় আছে থাকবে, ক্রমাগত ভয়ে হাত কেঁপে-কেঁপে উঠবে, বুক ধড়পড়-ধড়পড় করবে
কিন্তু থেমে গেলেই হেরে গেলেন।

আমাদের ভয়টাতো কেবল মৃত্যুর কিংবা যন্ত্রনার- তাই না?
কিন্তু মৃত্যুটাকে কে কখন কিভাবে রুখবে?
বলছেন মৃত্যু হোক কিন্তু অপমৃত্যুর প্রত্যাশা করেন না, তাই তো?
কিন্তু থেমে গেলে বেঁচে যাবেন, আপনি কি সে ব্যাপারে নিশ্চিত?
গত একমাসে এক নাখালপাড়া রেলক্রসিয়ের আশ-পাশে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে অন্তত ৫ জন।

এ কি অপমৃত্যু নয়? এ কার কাম্য ছিল? তবে ভয়ে এতটা জড়সড় হচ্ছেন কেন?
দেশের বর্তমানকে ভাবুন, ভবিষ্যত স্পষ্ট দেখতে পাবেন...
এদেশে রাষ্ট্রনায়ক আছে, ভাবাদর্শের লোক আছে, আইন-আদালত আছে, আছে বিচার ব্যবস্থা
তারপরও ক্রমাগত খুন হয়, খুনিচক্র ধরা পড়ে না? সত্যি তাই? নাকি ধরছে না?
সহজ ব্যাকারণ...ধরা হচ্ছে না
কেন এমনটি মনে হচ্ছে?

বলছি- দেশে গোয়েন্দা বিভাগ আছে, ইন্টিলিজেন্ট গ্রুপ আছে, আছে তাদের সোলস এজেন্ট
যাদের দায়িত্ব দেশের সামগ্রিকতা অবলোকন করে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা।
এত খুনোখুনির পরও যখন তারা যখন কোন ক্লু‘ই পাচ্ছে না, তখন দুটো উত্তর কেবল জ্বলজ্বল করে-
১) অদক্ষ লোক দিয়ে প্রশাসন চালানো হচ্ছে (গাধা দিয়ে হাল চাষ হচ্ছে)
২) প্রভাব খাটিয়ে তাদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে

ভাবুন, আজ যারা গনবিষ্পোরিত এলাকায় প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে খুন করে পার পাচ্ছে,
তাদের কাছে নির্জন স্থানে আপনার রক্ত নিয়ে হোলিখেলা এতো ডাল-ভাত।
এর মানে কি দাঁড়াচ্ছে?

ভাবুন, চুপসে না গিয়ে ভাবুন, আরও তীব্র প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ গড়ে তোলা খুবই জরুরী
না হলে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম মৃত্যুর জন্য হিংস্র হায়েনাদের উপত্যাকায় রয়ে গেল...

কলম কেবল হাত বদলায়

কলম কেবল হাত বদলায় কিন্তু চলার গতি থামায় না।

আমাদের মাথা সে তোমাদের খড়গের নিচেই সমর্পিত আছে, চালিয়ে যাও...
চেয়ে-চেয়ে দেখী কলম থেমে যায় নাকি!!!

আমার প্রিয় হে দেশমাতৃকা, রক্তে কেবল তোমার আঁচলটাই ভিজে লাল হচ্ছে...

কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী

তোমার ঐ চোখ চোখে বীষ ঢেলে দেয়
বীষচোখে উঠে অনল জাগি
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

দেখিতে চোখ বড়ই কোমল
কালো মনিতে হয়েছে সজল
কাজলের কালো পাপড়িতে জল টলমল,
আবার সে জলে জ্বলে মোর আঁখি
শীতল মন চঞ্চল দেখী...
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

ভাবে লোক আমি জাত মাতাল
চোখ তাই এমন রক্তলাল
বলিতে পারি না সখী কেন এমন হাল
অবিবেচক কয় লোক জানেনা
মাতালের নয় কেবল এমন আঁখি...
কতবীষ ঐ চোখে জমানো বল সখী (সখীগো)।

আপাতত রক্ষে



মাতৃশ্রেণী প্রতিটি সন্তানের জন্য আজীবন অবুঝ মায়া আর আবেগ পুষে। এ শ্রেণী সবসময় ভাবে সন্তান কম খেয়ে-খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ এরকম একনাগাড়ে খেতে গেলে যে শারীরীক ভাবে তা ধরে রাখার সক্ষমতা সকলের থাকে না- তা বোঝানো মুশকিল।

দু‘দিন বারংবার খেতে-খেতে আমার ত্রাহি-ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু আমার অবস্থা কাকীকে বোঝানো সে আমার সাধ্যি! যা হোক, আবার সে গন্ডীবদ্ধ জীবনে ফিরে আপাতত রক্ষে।

আমার জীবন ঘিরে অতিবাস্তব



আমার জীবন ঘিরে অতিবাস্তব একটি সত্য বর্তমান- তা হল আমি যখনই কোন আনন্দঘন মূহুর্তকে গ্রহন করি, তার পরক্ষনেই আমার জন্য কোন না কোন বিপদ অনিবার্য্য হয়ে দাঁড়ায়। অথবা আমি যদি কোন আনন্দঘন মূহুর্তের প্রতীক্ষা করি সেটিও কোন ভগ্ন হৃদয়ের আহ্বানে সম্পন্ন হয়। তাই ইচ্ছা হোক কিংবা অনিচ্ছায়, আমি আমার জীবনের আনন্দঘন প্রতীক্ষার বিষয়গুলো এড়িয়ে চলি। সত্যি বলতে কি নিজ বাড়ী কিংবা আত্মীয় বাড়ী, কোথাও কোন উৎসব কিংবা পার্বণ সবকিছুকেই আমি এড়িয়ে চলি। আর নির্দ্বীধার সময়গুলোকে কাটাতে আমি নিজেকে কোন না কোন কাজে ব্যস্ত রাখি। আমি জানি সকলের জীবনেই বিপদ কিংবা খারাপ সময় থাকে, তারপরও দেখী আমি আনন্দঘন মূহুর্তগুলোকে অন্যবিষয়ে ব্যস্ত থেকে কাটাতে পারলেই আমি ভালো থাকি আমার সময়গুলো কিংবা মন ভালো থাকে। তাই শত অনুরোধকে যেকোনভাবে কাটানোই আমার লক্ষ্য থাকে।

আমার মা পরলোকগামী হয়েছেন আজ প্রায় ৯ বছর হল। মা থাকাকালে মায়ের স্নেহময় দিনগুলো কাটাতে পারলেও এখন সবজায়গায় কোন একটা হা-হা-কার সবসময় বয়ে থাকে। আনন্দ করার ইচ্ছেগুলো এখন প্রায় শূণ্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই উৎসব কিংবা পার্বণে কোথায় না পারতে যাই না, কারও অনুরোধ রাখি না। না ভাই-বোন-বন্ধুর, না পাড়া-প্রতিবেশীর না নিজের। জানি না কেন সবখানে অনীহা ছড়িয়ে থাকে।

গত ২ মাস ধরে কাকী কল দিয়ে-দিয়ে নরসিংদী যাওয়ার কথা বলছে। কিছু না কিছু বলে এড়িয়ে যাচ্ছি বারংবার, কিন্তু লক্ষ্মীপুঁজোয় যাওয়ার ব্যপারে কাকীর অনুরোধটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, আমি না গেলে কাকী সত্যিই কষ্ট পাবে। কিন্তু আমি কাকী কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের কি করে বোঝাই, আমার জীবনের এই একটুখানী আনন্দের মূহুর্তও আমার জন্য কোন না কোন কষ্ট বহন করে আনবে। তাই আমি যেকোন ভাবে নিজেকে ভালো রাখতে চাই।

না মাতৃসম কাকীর বারংবার অনুরোধ অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই আগামীকাল সকালে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছি। কিন্তু মনের মাঝে বদ্ধমূল ভয়টা সেঁটে আছে- আবার না কোন বিপদ এগিয়ে আসে, এই একটুখানী আনন্দের মাঝে।