মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ডাক

আজ আবার তাই পথে-ঘাটে
ধরি সুরে পথ হারাবার গান

ওরে আয় আয় আয়রে তোরা
ভবঘুরে আছিস যারা
পথ হারিয়ে পথ খুলে দেই
মন বাউলার টান।

মানুষ, আমরাও ছিলেম একদিন!

ঝুলবারান্দায় বসে-বসে পচে গেছে মন
সভ্যতার স্তুপে জমে শহুরে যান্ত্রিক দর্শন
যাবতীয় কোলাহলে জমে যত ত্রাহি-ত্রাহি রাহুদশা
তারি মাঝে আমরা বাঁচি, দেহপৃষ্ঠে নিয়ে লাগাতার ব্যস্ততা...
ভূ-মৃত্তিকা জানে কি না জানে
জানি না আমরা শেষ কবে পেয়েছি সে দিন
বৃত্তের আবর্ত বলয়ে পড়ে থেকে আজন্ম
দু‘হাতে বিলিয়ে দিতে বে-রসিক স্বপ্নঋণ
জানে সবে গন্তব্যে জনে-জনে ফিরতে হয় একদিন
তবুও সভ্যতার ভূতলে কষাঘাতে ঠেকে মাথা
বলে চলা হায় মানুষ, আমরাও ছিলেম একদিন!

ভিন্ন


যার জীবন ভিন্নগতিতে চলে, তার জগতটাও ভিন্ন...

কিছু জীবন বিলিয়ে দেবার

কিছু জীবন বিলিয়ে দেবার
ফুল ফোঁটে!!!
প্রকৃতির মাঝে সৌন্দর্য্য বিলায়
মুগ্ধ হতে গন্ধ বিলায়
ফলরুপে শাস বিলায়
প্রেমিকের ডাকে প্রেম বিলায়
সুবাসে কারও মৃত্যু বিলায়
বীষ শুষে কারও জন্ম বিলায়
বীজরুপে বংশধারা বিলায়।।

কেউ যদি জানতে চায় ভালোবাসা কি?

কেউ যদি জানতে চায় ভালোবাসা কি?
আমি বলব এটি তিনটি অংশের সমন্বয়-
প্রথম অংশটি আবেগ- “যা কাউকে নিয়ে ভাবতে শেখায়, কারও ভালোটাকে খুঁজে দেখায়।”
দ্বিতীয় অংশটি লাম্পট্য- “যা অধিকারে নিতে চায়, আত্মগ্লানিতে ভোগায়।”
শেষ অংশটি মায়া- “যা বন্ধন চায়, সারাজীবন কাউকে আগলে রাখার প্রত্যয়ে পুড়তে চায়।”

এখানে সম্পূর্ণতাই কেবল ভালোবাসা, সে পূর্ণতা পাক কিংবা না পাক।
যার কলকাকলী প্রথম অংশেই সম্পন্ন হয়- তার কাকলীটুকু ভালোবাসা নয়, শুধু ভালোলাগার ভ্রম।
যারটা দ্বিতীয় অংশ সম্পন্ন হবার পরপর বিনষ্ট হয়- তারটা কেবল দৈহিক কামনা, স্বার্থসিদ্ধি।
ভালোবাসা তখনই কেবল পূর্ণাঙ্গরূপ পায়, যখন দুটো মনের দ্যোটানা একবিন্দুতে পরিসমাপ্তী টানতে চায় বারংবার।

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সৌন্দর্য্য অনুভবের....

সৌন্দর্য্য অনুভবের, গন্ধ চেনার আর শাস ক্ষুদা মেটাবার প্রয়োজনে...

চাইলেই সৌন্দর্য্যও খাওয়া যায়, গন্ধ অনুভব করা যায় আর শাসটাকে চিনে রাখা যায়, তবে তাতে কেবল প্রকৃতির রুপটাই বিরূপ হয়....

স্বপন

স্বপন জীবনটাকে নিয়ে সত্যিকারের ভাবনায় পড়ে গেল!! নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সে অন্যভুবন ধরে হাঁটছে আর নিজের সাথে বলছে, না আমার কোন স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন থাকতে নেই। বারংবার হোঁছট খেয়ে পড়াটাই আমার জীবন! আমার নিয়তি! আমার গন্তব্য!!!

বেশ কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার পর স্বপন দেখল উষ্ক-শুষ্ক মলিন বদনে ছেঁড়া বসনে জড়ানো শরীর টেনে কয়েক টুকরো ইট আর পাথর হাতে দীনু পাগলা ছুটছে। দীনুর এইভাবে ছুটে চলা দেখে স্বপন স্তম্ভিত ফিরে পেল। সে দীনুকে থামাল, জিজ্ঞাসা করল- কিরে ইট-পাথরের টুকরো হাতে কোথায় ছুটছিস...? জবাবে দীনু জড়তার স্বরে বলল- ঘল তুলব লে, পাকা ঘল তুলব। মা কান্দে কইছে আমি বালা হইলে, আমাদেলও পাকা ঘল হত!!! দীনুর কথা শুনে স্বপন হেসে উঠে বলল- এই কয় টুকরো ইট-পাথরে কি ঘর হয় রে বোকা? দীনু বলল- যা তুই বোকা, আলও (আরও) আনব লে, তখন হবে!!! বলেই দীনু আপনার গন্তব্যে ছুটে চলল।

দীনু চলে গেলে স্বপন তার পাগলামীর কথা ভেবে মনে-মনে হেসে উঠল, কিন্তু পরক্ষনেই দীনুর ইচ্ছের কথা ভেবে সে অবাক হল! সে ভাবতে থাকল, সারা জীবন ধরে ইট-পাথরের টুকরো কুড়োলেও তো দীনুর পাকা ঘর উঠবে না। সারাজীবনের তপস্যাতেও দীনুর বদলাবার সম্ভবনা নেই, তবুও সে স্বপ্ন দেখছে, আগ্রহে এগিয়ে চলছে, জীবনটাকে ব্যস্ততায় ভরে তুলছে, সময়ের রংগুলোকে রঙ্গিন করে তুলছে। তবে আমি----?

স্বপন জীবনের গন্তব্য পেল, সে বুঝল জীবন শুধূ ফসলের ফল বইবার জন্য অতটা নয় যতটা ফসল ফলাবার। জীবন কেবল স্বপ্ন দেখে কদম ফেলার, স্বপ্নগুলোকে ছুয়ে দেখার আগ্রহে ব্যস্ত হবার, দুঃখ-দুর্দশা-পীড়ন ভূলে থাকবার মত কার্য্য করার।

স্বপন এখন ভাঙ্গার স্বপ্ন দেখে না, স্বপন এখন ফসল ফলাবার প্রত্যয়ে স্বপ্ন গড়ে।

সময়

প্রেম, ভালোবাসা কিংবা ভালোলাগার জন্য চঞ্চল, আবেগী, মুখের ভাব-প্রকৃতি আর মিষ্ট প্রকাশের পারঙ্গমতাই যথেষ্ঠ। 

কিন্তু জীবন সংগ্রামের সংসার সাজাতে গেলে উপরেরগুলো বেশীরভাগই অযাচিত, অনাকাঙ্খিত আর অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায়। সংসার জীবনে পরিশ্রমী, সহনশীল আর বোধগম্যযুক্ত মানুষই সকলের প্রথম কাম্য থাকে।

দম্ভ

যে কায়া ছুঁলে জাত চলে যায়...
সে কায়ার ছায়া পদতলে মাড়ায়
ছোট-বড়-জাত-বেজাত নাই সে ইশারায়
আপনার দম্ভ আপনার কর্মে চূর্ণ হয় ধরায়...

বিভেদ

সবজায়গায় হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি; কাড়াকাড়ি

আমি-
পায়ে বল নেই বলে বাহন চাপাতে পারি না
গায়ে বল নেই বলে গতর খাটাতে পারি না
হাত কাঁপে বলে ভার বইবার শক্তি পাই না
মগজ শূণ্য বলে বুদ্ধির জোরেও টিকি না

সবাই পথ খুঁজে হালুয়া-রুটির কিঞ্চিৎ পেয়ে গায়-গতরে বেঁচে যায়
আমি কঙ্কালসার দেহের বেদন সহতে না পেরে ওপারের প্রত্যাশায়...

যে ভালোবাসে

যে ভালোবাসে কিংবা বাসতে চায় তাকে চেনা যায়!
মুখের মায়ায় ধ্রুবরাশির রেখায় খেয়ালের উচ্ছলতায়
সময়ের কাব্যকলার ঢংয়ে মনটাকে পড়া যায়...

ক্ষমতাপরে অহমিকা

সিঁড়িটা একই থাকে। কিন্তু মাথা উঁচু করে উঠতে হয় আবার মাথা নিঁচু করে নামতে হয়।

ভাবতে না চাইলে সমস্যা নেই, কিন্তু ভেবে রাখা দরকার, ক্ষমতাপরে অহমিকাটাই আপনাকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে মারবে।

সময় অসময়

বলেছিলে ভালোবাসবে
বেসুর বাদলে জড়িয়ে ধরবে আলিঙ্গনে
সময়বদলে বেসুরে মাতালে, তুমি তোমার হয়ে গেলে
আর ভালোবাসার দারুচিনিদ্বীপ তলিয়ে গেল অতলে...

ধর্ম আর স্বভাব

কুড়ালের ধর্ম কাটা কিন্তু স্বভাব বুকের দিকে টানা...

তেমনি মানুষের ধর্ম মনুষ্যত্ব হলেও তার স্বভাব নিজের জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনকে বুকে টানা। জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনের দোষ-ক্রটি দেখেও তার পক্ষপাত করা। মানুষ দুনিয়াকে ধ্বংশ করতে একপায়ে খাঁড়া শুধুমাত্র নিজের হীনতাকে বড় রাখতে।

মানুষ জীব হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠের দাবিদার হলেও, সময়ের কর্মকান্ড বিবেচনায় নিলে এদের মতো হিংস্র জানোয়ার দুনিয়ায় দুটো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর!

পরিশ্রমী চোখগুলো

পরিশ্রমী চোখগুলো বরাবর উদাসীন দেখায়। ক্লান্ত শরীরগুলো ঘাম ঝরিয়ে শরীর হালকা করার সাথে দেমাগটাকেও বীষিয়ে দিচ্ছে।