খোলা কলাম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
খোলা কলাম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

প্রসঙ্গঃ জীবনবোধ ও বাস্তবতা

মিডেলইষ্টে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া প্রবাসীর বেশীরভাগ খুবই কষ্টসাধ্য দিনযাপন করেন। যেখানে দেশে ২৭-২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করা কঠিন, সেখানে অনেকে ৪০ ডিগ্রীর উপরের তাপমাত্রা সহ্য করে ভেড়া-উট চারণ, খেঁজুর গাছ কাটা, খেঁজুর সংগ্রহ করা, মেথর-মুচির কাজ, রাজমিস্ত্রির কাজ, দোকানের সাধারন শ্রমিকের কাজ, তেলের খনিতে কিংবা দিনমজুর হিসেবে কাজ করে পরিবার পরিজনের জন্য অর্থের সংস্থান করে থাকেন। অনেকে সেখানে দূর্গম পাহাড়ের গায়ে বির্স্তৃন জনাকীর্ণ স্থানে খাবার-দাবারের নানাবিধ সমস্যা বয়েও টিকে থাকবার চেষ্টা করেন। নিজ দেশ ছেড়ে, পরিবার-পরিজন সব ছেড়ে সেখানে একা-একা যুদ্ধ করা কিংবা দুই-একটা পরিচিতমুখ সামনে রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে জীবনের প্রাণবন্ত মুহূর্তগুলো শেষ করে শেষ জীবনে এসে পরিবার-সন্তান সন্ততি নিয়ে একটু সুখের মুহূর্ত উপহার পাওয়া- এটাই বেশীরভাগের তাগিদ থাকে। কাজের মাধ্যমে মিডেলইষ্ট প্রবাসীরা সাথে সংযুক্ত থাকায় আমার জানা আছে- ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যারা কাজ করতে যায়, তারা মাসিক যে বেতনে চাকুরী করে তাতে ৮-১০ বছর চাকুরীর সুবাদে জমানো অর্থের পরিমান এ দেশে অবস্থানরত ১০-১৫ টাকা বেতনের চাকুরীজীবীদের থেকে সামান্যই বেশী। তাই বলতে গেলে বলা চলে- প্রতিনিয়ত বিরুপ পরিবেশে টিকে থাকায় তাদের জীবনবোধ অনুভব করার তাগিদ কিংবা সুযোগ দেশে বসবাসরত অন্যদের থেকে কয়েকগুন বেশী হবার কথা।

কিন্তু বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমরা কি দেখতে পাই?

দেখতে পাই- জীবন সম্পর্কে যাদের বোধশক্তি বেশী জন্মাবার কথা, তাদের বেশীরভাগই এদেশে এসে জমিদার বনে যায়। দেশে ফিরে তারা নিজের হাত-মুখ ধোয়ার জন্যও কারও হাতে থাকা পানির পাত্র খোঁজে। যা সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক। আর সবচেয়ে বেশী দুঃখজনক, ফিরে এসে যখন সেখানে যাদের হাতে অত্যাচারিত হয় তাদের গল্পই গর্ব করে বলে বেড়ায়। অথচ এদেশে ফিরে মানুষকে জীবনমুখি শিক্ষায় উৎসাহিত করার তাদের কত না সুযোগ ছিল। দেশের কাজে হাত লাগিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবার তাদের কত না সুযোগ বর্তমান। অথচ তারা প্রবাসে অন্যের মল তুলতে ঘৃণা বোধ না করলেও নিজ দেশের নাঙ্গল কাঁদে নিতে তাদের আজন্মের দ্বীধা!

[বি. দ্রঃ মিডেলইষ্টে কাজ করে অনেক টাকার মালিক বনে যারা এদেশে ফেরে, মনে রাখবেন তারা বেশীরভাগই ঐদেশে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে ফিরেছে অথবা কারও মাথায় আঘাত করে কাউকে নিঃস্ব করে ফিরেছে। সৎভাবে উপার্জন করে ১০০-তে কেবল ২-৫ জনেরই ভাগ্য প্রসন্ন হবার সুযোগ বর্তমান।]

ভারতীয় দালাল!!!

মাঝে-মাঝে কিছু লোকের সাথে অনিচ্ছায় বিতর্কে যেতে হয়। তাদের ভাষায় ভারত হিন্দুদের দাদার দেশ। হিন্দুরা ভারতের দালাল। তাদের কথায়-বার্তায়, আকার-ইঙ্গিত কিংবা উদ্দেশ্য কি? কথার বাকামিতে তারা এমন ভাব ধরে যেন আমরা কিছু বুঝি না। কিন্তু তাদের যদি প্রশ্ন করি এদেশে আপনার আমার নাড়ি ছেঁড়া রক্ত মাটি শুষেছে, এদেশের আবহাওয়ায় আমরা উঠেছি-বসেছি-খেলেছি। তারসত্বেও যদি আমাদের এদেশের চেয়ে ভারতের প্রতি দূর্বলতা বেশী হয়, তবে এদেশে বসবাস করে আপনাদের কাদের জন্য জ্বলে? আসলে তাদের কথার ভাবে মেনে নিতেই হবে- আসলে আমরা এদেশে নই, আমাদের মন-প্রাণ সব সঁপে দেয়া ভারতের জন্য। যদি আমি বা আমরা নাও হই, তারা জোর শক্তি প্রয়োগ করে হলেও আমাদের তা মানাতে বাধ্য করে ছাড়বে মনে হয়। আসলে দুনিয়াটা সত্যি খুব মজারু! এখানে ক্ষমতাই মূখ্য আর বাকী সব মৌন। ক্ষমতায় রাতকে ঝাড়বাতিতে দিন করে আর দিনকে কপাটের আড়ালে লুকিয়ে রাত করে। কিন্তু সাধ্য কিংবা সীমাবদ্ধতার কিংবা সত্যটা যথাযথ স্বীকৃতির ধার ধারেনা।

এখানে আমাদের কে ভারতের দালাল বলার কারণ হিসেবে তাদের যুক্তিগুলো শুনুন- বেশ রং চঙ্গা যুক্তি, জানা থাকলে যেকোন হিন্দুদের দালাল আখ্যায়িত করা আপনার জন্যও সহজ হবে। যুক্তিগুলোঃ

১) বাংলাদেশের প্রত্যেকটি হিন্দুদের আত্মীয়-স্বজন ভারতে আছে (কি কারণে সেটা বিবেচনার বিষয় নয়, কারণ.....সে না বললেও যারা বোঝার বুঝবেন নিশ্চয়ই)
২) বাংলাদেশের হিন্দু‘রা খুশিতে বসবাস করার জন্য ভারতে ছুটে।
৩) হিন্দু‘দের উপর এদেশে মানুষ অন্যায় অত্যাচার করলে তারা ভারতের কাছে বিচার দেয়।
৪) এরা ভারত সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আওয়ামীলিগকে ভোট দেয়।
৫) ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতি এদের দারুন আকর্ষন, এরা দেশী সংষ্কৃতি বাদ দিয়ে ভারতের সংষ্কৃতির প্রতি দাবমান। (যদিও বাংলাদেশের সত্যিকারের সংষ্কৃতি আসলে কি ছিল বা কি হচ্ছে তারা তা ভুলতে চেষ্টা করে অর্হনীশ।)
৬) হিন্দুরা ভারতের বাংলাদেশের উপর অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করে না। (যদিও বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাস বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, এদেশের মানুষের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ইতিহাস সংখ্যার বিচারে এখনও হিন্দুরাই এগিয়ে। এটা মুখের কথা নয়, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।)
৭) হিন্দুদের ভারতীয় কবি-সাহিত্যিকদের (রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর....) প্রতি দূর্বলতা।
৭) আরও আছে, এ মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।

এসব বলার পর তাদের যদি প্রশ্ন করা হয় এর জন্য যদি হিন্দু‘রা ভারতের দালাল হয়ে যায়, তবে বলুন-

১) আপনারা ভারতের চ্যানেল বর্জন করতে লাফালাফি করেন, অথচ মজার কথা আপনাদের প্রিয় নায়ক নায়িকাদের লিষ্টে এগিয়ে- সালমান খান, শাহরুখ খান, ফারদিন খান, আমির খানসহ ভারতের সব মুসলিম নায়ক‘রা, যদিও তারা আমারও প্রিয় নায়কের তালিকায়। তবু এদেশের মুসলমানদের তালিকাটি কিন্তু বিভাজিত।)
২) তেনাদের প্রিয় শিল্পীর তালিকায়, ভারতে গান গেয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া আতিফ আসলাম, আদনান সানি.....
৩) ভারতের চ্যানেলে প্রতি তীক্ততা থাকলেও তারা আবার ভারতের পিস টিভির দারুন ভক্ত।
৪) ভারতের সব নিকৃষ্ট বর্বর কিন্তু জাকের নায়েক, মওদুদী, ড. আবুল কালাম আজাদ তাদের আদর্শ। জাকের নায়েক আর মওদুদীর আদর্শ উদ্দেশ্য স্থাপনের জন্য তারা এমন কোন ঘৃন্য পথ নেই, যাতে আশ্রয়ে তাদের কার্পণ্যতা আছে।
৫) ভারতের সনিয়া মীর্জা পাকিস্থানের মালিককে বিয়ে করাতে তেনাদের সুখ বলে শেষ করা যাবে না।
৬) রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভারতীয়, তাই এদেশের সমস্ত পুস্তক থেকে তাঁদের বাদ দেয়া (আসল উদ্দেশ্য বাংলাভাষাটাকে মুছে দেয়া, একথা বলছি কারন- বাংলাসাহিত্যে তাঁরা ব্যতীত বাংলা সাহিত্যের আধো অস্তিত্ব আছে কিনা, আমার জানা নেই)। কিন্তু তাদেরই আবার ভারতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি নির্মোহ দূর্বলতা। ঘটনাটি প্রশ্নবিদ্ধ।

এসব বিষয় যদি বলা হয় এবং একই অভিযোগে তাদেরকেও ভারতীয় দালাল বলা হয় তখন এরা রক্তচোখে আপনাকে মারতে হুমকি দেবে না এও বলা মুশকিল। অতএব হিন্দু‘রা ভারতীয় দালাল তমকা নিয়েই এড়িয়ে চলুন জান বাঁচাতে, জানেন তো জান বাঁচানো ফরজ।

ধর্মবোধ ও আমরা

আমরা মানুষ হবার যতটা না চেষ্টায় রত, তারচেয়ে বেশী চেষ্টায়রত ধর্মকে আশ্রয়ে রাখতে। তবে কি আমরা ধার্মিক?

এই প্রশ্নের প্রতিউত্তর একটাই- ধর্মের নির্দেশনা ধর্মীয় অনুশাসন যথাযথভাবে পালন, একে অপরের সাথে মিথ্যা কিংবা জোচ্ছুরি না করা, সৎ পথে চলা, কারও ক্ষতির মানষিকতা পোষন না করা, নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা কিংবা থাকার সর্বোত্ত চেষ্টা করা, কারও গীবত না করা, সামার্থ্য অনুযামী দান-সদকা দেয়া, মনুষ্য জ্ঞাণে আবদ্ধ থাকা, মাণবতা পোষন করা, কারও ক্ষতি না করা, কারও উপর অন্যায়-অত্যাচার থেকে বিরত থাকা এবং সর্বোপরি সর্বোত্তভাবে সকলের সহিত যথার্থ বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখা।

কিন্তু আমরা কি দেখছি? আমরা দেখছি মন্দিরে বড়-বড় ধর্ম যাজক নামধারীরা জানাচ্ছে হিন্দুদের উপর অমানুষিক নির্যাতনের কথা, প্রার্থনা করছে তাদের ধর্মের লোকদের সু-প্রসন্ন জীবনের জন্য। মসজিদের ইমাম তিনি বয়ান দিচ্ছেন সমগ্র মুসলিম জাতির দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে, দোয়া করছেন মুসলিম ভাইয়েরা যেন জালিমদের দুঃখ-নিপীড়ন উতরে আল্লার পথ ধরে বেহস্তবাসী হয়। একই অবস্থা বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, গুরুধর্মসহ প্রায় সকল ধর্মের বেলায় বর্তমান।

আমরা প্রত্যেকে এক-একটা পরিবারের সন্তান, আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের অভ্যন্তরের প্রত্যেকের মানষিকতা কিংবা আদর্শ এক নয়। যদি একই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত হবার পরেও আমরা সম-মানষিকতা সম্পন্ন না হই, তবে সমাজ-সংসার কিংবা ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে আমরা সকলে কি করে এক হব? যদি একটি পরিবারের একজনের উগ্রতায় পরিবারের সবাইকে সামষ্টিক বিচারে আনা না হয়, তবে কেন ধর্মীয়বোধের উপর ভিত্তি করে মানুষে-মানুষে পৃথক হবে? সবধর্মের পালনকারী যেহেতু মানুষ- অতএব দৃষ্টিভঙ্গি, মানষিকতা কিংবা আদর্শিক বিচার-বিবেচনায় আনলে প্রত্যেক ধর্মে এমন কিছু মানুষ আছে- যারা আগ্রাসী, ধর্মের নাম করে এরা রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মজতে পছন্দ করে। এরা ধর্ম নিয়ে মানুষ নির্ণয় করতে চায়- মনুষ্যত্ব কিংবা মানবিক বিরেচনায় নয়। এরা দেখাতে চায়- এই ধর্মের লোক আমাদের এই করেছে, ঐ ধর্মের লোক আমাদের পাছায় বাঁশ দিয়েছে, ওরা আমাদের ধ্বংশ করতে চায়, চলুন আমরা আমাদের ভাইদের জন্য দোয়া করি। কিন্তু এরা এতটুকু বিবেকেও কখনও মানুষ হিসেবে ব্যক্তির উগ্রতা কিংবা হিংস্রতাকে দেখাতে চায় না। আসলে উদ্দেশ্য বিবেচনায় নিলে এরা চায়, শুধু নিজ ধর্মকে প্রচার আর প্রসার ঘটাতে। এতে রক্তের লিপ্সায় অন্যকে হিংস্র জানোয়ার বানাতে এদের বাঁধে না।

যদি একজন ধর্মীয় আদর্শ পালনকারী নেতা শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রচার-প্রসারের নেশায় পড়ে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে মানুষকে মারার নির্দেশ দেয় কিংবা কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিজের আদর্শিক মতাবাদ জোর করে চাপিয়ে দেয়, অথবা আদর্শিক মতবাদ চাপাতে না পেরে তাকে নিঃস্ব করে কিংবা তাকে কুপিয়ে হত্যার পরোক্ষ মদদ দেয়, তিনি কি করে সঠিক ধর্মীয়গুরু কিংবা ধার্মীক? যদি নিজের বিবেক-বোধ এতটুকু অন্তত থাকে তবে এই রক্তের হোলিখেলা থামাবার জন্য এখনই তা বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে এখনই, সেসব ধর্মীয়গুরুদের ভূল এখনই ধরিয়ে দিতে হবে। বলতে হবে আপনি মানুষের জন্য দোয়া করবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মুসলিম কিংবা নিজ ধর্ম অন্তর্ভূক্ত ভাইদের জন্য নয়। আমরা মনুষ্যত্ব বিশ্বাসকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই, বিষাদে নয়।

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫

সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী

যখন সমাজব্যবস্থা সাম্যবস্থায় পৌঁছার চেষ্টা করছে, তখন পুরুষালী সমাজ আড়মোড় ভেঙ্গে মোছড়াতে শুরু করেছে। আর ক্ষমতার বাহুবিন্যাস নারীর সাথে মিলিয়ে দেখাতে চাচ্ছে নারীর ক্ষমতা নস্যি তাদের তুলনায়। এখানে পুরুষালীসমাজ নারী ভূমিকা ধারন করতে চায় এবং নারীকে শেখাতে চায় তাদের ভালো-মন্দের ব্যাপারগুলো। ব্যাপারটা এমন- যেন নারীসমাজ তার ভেতরকার জাগ্রত সত্ত্বাকে কখনও উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। অথচ নিজেদের ব্যাপারে তাদের সচেতনতা আদ্যৌ জাগ্রত হচ্ছে কি?

কিন্তু এটা কেন হচ্ছে?

হচ্ছে কারণ- পুরুষ নারীসমাজকে দাবড়িয়ে রাখতে চায় নিজেদের ভেতরের পশুত্ব কিংবা অপকর্ম ডাকতে কিংবা নিজেদের চরিত্র চরিতার্থ করার মতো বাসনা যেন নারীর মধ্যে জাগ্রত না হয়, সে ঠেকাতে।

আমি সবসময় যা মনে করি তা হল- যেহেতু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আর্কষনটা স্বাভাবিক, তাই চারিত্রিক নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারটা ব্যক্তির ভেতর থেকে হওয়া উচিত। নারী যদি রাস্তা-ঘাটে পুরুষের উন্মুক্ত অঙ্গভঙ্গি দেখেও স্বাভাবিক পথ চলতে পারে, তবে নারীর পোশাকের দায় দিয়ে কেন তাকে হটানোর পয়তারা করা হবে?

নারী সমন্ধে বলতে গেলে অনেকের মধ্যে একটা সুর প্রায়ই উঠে, তা হল- নারীর দূর্বলতা তার মাতৃত্বে। অথাৎ নারীর অনিষ্ট সাধন খুবই সহজতর। তাই যে কোন অনিষ্ট তার চরিত্রে কালিমা লেপে দেবে। এখানে প্রশ্ন দাঁড়ায়- নারীর এ দূর্বলতা হবে কেন? এবং কালিমার ব্যাপারটা কেন একা নারীরক্ষেত্রে হবে? যদি কেউ নারীর অনিষ্ট করে তাহলে উপস্থিত নারী-পুরুষ দু‘জনের চরিত্রই তো শুদ্ধতা হারাল। তাহলে কলংঙ্কের দায় নারীর একার কেন? শুধু সন্তানের উৎপাদনের কারণ কিংবা সন্তানের লালন-পালন হেতুর দায়ে যদি নারীকে টুটি চেপে ধরে রাখা হয়, তবে একটাই উত্তর সন্মুখে এসে দাঁড়ায়, তাহল- পুরুষালীসমাজ বিবেকবর্জিত, এরা নিজেদের সাধু সাজানোর জন্যই কেবল নারীসমাজকে ঘরের ভেতর আটকে রাখতে চায় কিংবা কোনঠাসা করে রাখতে চায়।

জীবনগুলো জীবনের মতো পরিচ্ছন্ন হোক। দাবড়িয়ে রাখার পয়তারায় যে সন্দেহের দেয়াল তৈরী হচ্ছে তা ভেঙ্গে যাক। আর নারী-পুরুষের মধ্যেকার সত্যিকারের ভালোবাসায় গড়ে উঠুক প্রতিটি সংসার-সমাজ-দেশ-পৃথিবী।

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বলতে চাইছি

বর্তমানে বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটিরও অধিক।

সরকার ২১ লক্ষ সরকারি লোককে হাতে রাখতে তাদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুন করেছে। সাথে দ্বিগুনের অধিক হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ সামরিক কিংবা আধা-সামরিক বাহিনীর বেতন। আর বাদবাকী যে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ আছে, যারা দিনমজুরে কিংবা বিভিন্ন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে, তাদের জন্য সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই।

সরকার সরকারী কর্মচারী কিংবা কর্মকর্তাদের এই বর্ধিত বেতনের ধরুন খাদ্য কিংবা নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রবাদির উপর যে প্রভাব পড়বে তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? নাকি সরকার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদে বাকীদের এদেশে অবাঞ্চিত ঘোষনা করবে?

সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বর্ধিত বেতনের কারনে সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে অসাধু উপায় আর ঘুষ বানিজ্য বন্ধ হবে! কিন্তু আমি বলতে চাইছি যারা এতদিন ধরে ঘুষ খাওয়ার এত-এত সুচতুর কৌশল আয়ত্ব করেছে, ঘুষের রকমারী পণ্থা আবিষ্কার করেছে, সর্বোপরি নিজেদের লালসার জিহ্বাকে এত-এত ভারী করে তুলেছে তাদের এই কর্মকান্ডকে সরকার ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় বন্ধ করবার চিন্তা করছে? আর কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে অসৎ উপায় ঠেকাতে কিংবা ঘুষ বানিজ্য বন্ধ বাস্তবায়নে?

শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০১৫

প্রকৃতি একদিন এর ভার বহতে না পেরে ঠিক বদলা নেবে

এই কিছুক্ষন আগেই পল্টনমোড়ে নেমে পাশে কাপড়ে ঘেরা দোকানে রং চা পান করছিলাম। আমার পাশেই চা পান করছে টিং-টিঙ্গে হেংলা পাতলা ফর্সা গোছের এক মেয়ে। চায়ের দোকানদার বোধ করি তার পুর্ব পরিচিত। দোকানি তাকে জিজ্ঞাসা করল- কিরে তোদের বেতন-বোনাস হয়নি? মেয়েটি কিছুটা জড়ানো গলায় জবাব দিল- বেতন-বোনাস? গত সাপ্তাতে মাত্র মে মাসের বেতন পেলাম। ১০-১৫ দিন আগে অফিসে দেখলাম ৪৫০০০ ফেবরিক্সের মাল এল গার্মেন্টেসে, মাইকে এলাউন্স করে জানানো হল আগামী ২ দিন কাজ করতে হবে। কাজ শেষে সবার সবার বেতন-বোনাস দিয়ে ছুটি দেয়া হবে। পরদিন গিয়ে দেখি সব মাল নিয়ে চলে যাচ্ছে। বসকে জিজ্ঞাসা করলে, বলল- এটা নাকি অন্য কোন বায়ারের সাথে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ ছিল। কাজের হিসেবে বনিবনা না হওয়ায় মালিক বলেছে সাব-কন্ট্রাকে কাজ করবে না। এরপরের দিন শুনি মালিক নাকি পালিয়ে যাচ্ছিল, এয়ারপোর্টে ধরা পড়ে আর যেতে পারল না, পরে জোর চেষ্টায় সকলের মে মাসের বেতন মিলল।

তোদের গার্মেন্টস কোথায়? এয়াপোর্টের কাছে, উত্তর খানে। ঈদে বাড়ি যাবি না?
একটু থেমে- সে আল্লাহ মালুম। একথা বলে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে মেয়েটি জানতে চাইল- তার কতটাকা হয়েছে। দোকানী জানাল ১২ টাকা। মেয়েটি দোকানিকে টাকা দিয়ে বেরিয়ে গেল।

মেয়েটি চলে গেলে চা দোকানির কাছ থেকে জানলাম- আজ ৫ ধরে ওরা কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তিভবনের সামনে জড়ো হয়েছে। পার্টির নেতাদের নির্দেশনায় তারা আন্দোলন করছে নিজেদের প্রাপ্য মজুরী আদায়ে।

অফিসে আসতে কিছুক্ষন মুক্তিভবনের সামনে দাঁড়ালাম। দেখলাম ১৫০-২০০ নারী-পুরুষের অবস্থান, যাদের শতকরা ৮০ জনই নারী। সকলের চোখ-মুখ অন্যায় আর ঘৃণার চাপ বয়ে বেড়াচ্ছে। দূরাশা, হতাশা কিংবা মেনে নেয়া না নেয়ার দ্বিধা-দ্বন্ধে তারা সকলে দ্যোদুলমান। আর ৩-৪ দিন পর ঈদ, সকলের ঈদের আয়োজনে ব্যস্ত থাকবার কথা। অথচ তারা রক্তঝরা ঘাম ঝেরে হাত পেতে বেড়াচ্ছে ঘোরহীন আচ্ছন্ন বলয়ে।

না কোন আশ্রয়ী-অনাশ্রয়ী পেতাত্মা, সাধু-সন্ন্যাসী কিংবা তেঁতুল হুজুরদের অভিশাপ কিংবা অভিসম্পাতে আমাদের এই দেশ কখনো তলিয়ে যাবে না। ধ্বংস হবে না কোন ক্ষমতালোভীদের স্বার্থসিদ্ধ অভিপ্রায়ে। কিন্তু আমি নিঃশ্চিত করে বলতে পারি- এই দেশের অবহেলিত, অনাহত, অতিদরিদ্র মানুষের রক্তঝরা ঘামের মূল্য পরিশোধের যে হীণমন্যতার প্রভাব, যা শ্রমিক, কৃষক কিংবা মেহনতি মানুষের দম আটকিয়ে রাখা রূদ্ধ নিঃশ্বাসে বাতাস ভারী করে তুলছে, প্রকৃতি একদিন এর ভার বহতে না পেরে ঠিক বদলা নেবে।

সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০১৫

শ্রমিক অসন্তোষ

শ্রমিক অসন্তোষের জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী মালিক পক্ষের বিক্ষিপ্ত মনোভাব, উদাসিণ্যতা, অফিসের প্রথমশ্রেনীর উপর অতিরিক্ত বিশ্বাস কিংবা তাদের বাড়তি সুবিধা অর্পণ, অফিসে শ্রমিকশ্রেনীর শ্রেনীগত বৈষম্য সৃষ্টি এবং কাউকে নিজ দায়দায়িত্বের বাহিরে অতিরিক্ত কাজ ছাপিয়ে তার থেকে বাড়তি সুযোগ নেবার পয়তারা।

যেমন আমার অফিসের পিয়ন, তাকে পিয়নের কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হলেও তাকে উপরের শ্রেনী নিজেদের কাজে লাগিয়ে নিজেরা বসে-বসে গায়ে বাতাস মাখে। নিজের অবস্থান ভেবে সে প্রথম-প্রথম সে কাজটি যথাযথ করে যাবে ঠিকই। কিন্তু যখন তার মনে অনিচ্ছা তৈরী হবে, অতিরিক্ত বোঝা বইতে সে অসমর্থ হবে, কিংবা তার আপনকার মনে প্রশ্ন উৎপন্ন হবে, এই কাজটি ত তার না, তাহলে সে কি করবে? কেন অন্যরা তাকে দিয়ে সুবিধা নেবার চেষ্টা করবে? তখনই তার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিরোধ হিসেবে জাগ্রত হবে প্রতিবাদ করার ভাষা। আর সে যখনই প্রতিবাদে সোচ্চার হবে, যখনই উপরের শ্রেনী তাকে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হবে, তখনই তারাও রিএ্যাক্ট করা শুরু করবে। মালিক পক্ষের সাথে কানাঘুষা শুরু করবে। ফলশ্রুতিতে শ্রমিক তার চাকুরী হারাবে তীব্র অসন্তুষ্টি ও আত্মগ্লানি নিয়ে।

শুক্রবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

বাংলাদেশ, সাম্প্রদায়িকতা, একজন কেজরিওয়াল ও কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন

বাংলাদেশ
বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, আমাদের স্বস্তি, আমাদের নিঃশ্বাস। আমাদের নির্ভয়ে চলার অবাধ চারণভূমি, আমাদের প্রতিটি অঙ্গিকার, আমাদের প্রতিটি প্রত্যয় দেশকে জড়িয়ে, আমাদের আশা-ভাষা-স্বপ্ন এই ছোট্ট দেশটাকে ঘিরে।

আসলে কি তাই?

স্বাধীনতা ৪৪ বছরে দাঁড়িয়ে আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে যে প্রশ্নটি সকলের সামনে আজ ছুড়ে দিলাম তার আসল-নকল সকলে তাদের বিবেচনায় নির্ণয় করবে, আমি শুধু প্রসঙ্গ-প্রাসঙ্গিকতার কয়েকটি কথা তুলে ধরছি। ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের কারণ কিংবা প্রসঙ্গ যদি বলতে হয় তবে সহজে বলা চলে, এ যুদ্ধের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্থান থেকে আমাদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন। আমাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা সহ মৌলিক অধিকার নিশ্চয়তা। কোনঠাসা জীবনে পড়ে-পড়ে না মরে শেষবারের মতো বেঁচে থাকার প্রত্যয় দেখানোর যুদ্ধ। সেদিনকার যুদ্ধের পূর্বে পাকিস্থানের ধর্ম দোহাইও বাঙ্গালীদের মুক্তির সংগ্রাম হতে পিছু হটাতে পারে নি। কেননা; সেদিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিঃক্ষনে তারা দাঁড়িয়ে ছিল। সবকিছু মিলিয়ে বলা চলে- অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নি, বরং বঞ্চিত মৌলিক অধিকার আদায়ের প্রতিজ্ঞায় স্বাধীনতা এসেছে। তাহলে- আজ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রশ্ন কেন? প্রশ্নটির প্রাসঙ্গিকতা দেখার পূর্বে আমাদের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিগুলো একটু লক্ষ্য করি নিচের লিংকগুলো হতে-
১)
http://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE_%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7
২) http://www.molwa.gov.bd/kondo.php
[২ নং লিংকটিতে মুক্তিযুদ্ধের দলিলের ১৫ খন্ড পিডিএফ আকারে দেয়া আছে। সকলে ডাউনলোড করে পড়তে পারেন]

এখন আসি প্রাসঙ্গিকতায়-
প্রশ্ন তোলা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বাঙ্গালির মৌলিক চাহিদা নিয়ে টিকে থাকার আশায়। তবে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে কেন বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের প্রশ্ন আসে? তাছাড়া এদেশে ৮৫% মুসলমান অধ্যূষিত হবার দরুন এখানে এ ত ভাবনার বাহুল্যতা।
হ্যাঁ; হতে পারে ভাবনার বাহুল্যতা কিংবা এ যুক্তিযুক্ততার উর্দ্ধে, তারপরও এইদেশ অসাম্প্রদায়িক হতে পারে কারন; এই দেশের ইতিহাস তাতে নির্মাণ হয়েছে বলে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে যখন মুসলিম সমাজ বিভক্ত হয়ে পড়ে ধর্মীয় উষ্কানীতে, তখন যুদ্ধের ধকল সবচেয়ে বেশী বইতে হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। শতকরা হিসেবে যদি যুদ্ধের সামগ্রিকতা নিরুপন করা হয়, তবে দেখা যাবে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যতটুকু অবদান রেখে গেছে, সংখ্যাগুরুদের শতকরা তুলনায় তা অনেক গুণ বেশী ছিল। নিজেদের কোণঠাসা করেও, নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে যারা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল সে দিন। বেঁচে থাকা সে নিঃস্ব মানুষগুলোকে সে গোলাম হয়ে থাকতে হবে যাদের বেশীরভাগই চায়নি পাকিস্থান থেকে বাংলাদেশ পৃথক হোক তাদের কাছে?  মৌলিক অধিকারের জন্য সর্বস্ব বিলিয়েও যদি গোলামির জীবন বেঁচে নিতে হয়, তাও আবার পাকিস্থানকে মৌণসম্মতি দানকারীদের কাছে, তবে এখানে স্বপ্নচারীদের কি পাওয়ার আছে? তাদের অভ্যর্থনার সাধ কৈ?
আমার বন্ধুরা বলে- ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত দেশ হলে আমরা সকলে শান্তিতে থাকব। একমাত্র ইসলাম সবধর্মকে সমানদৃষ্টিতে দেখতে শেখায়। আমি এর সত্যতা যাচাই করতে চাইনি, কিন্তু সময়ের তোপে আজ সে করতে হল। আজ আমাকেও প্রশ্ন তুলতে হল সত্যি কি ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত কোন রাষ্ট্রে শান্তি বিরাজমান? দুঃখিত আমার বন্ধুরা, কথাটা এভাবে বলার জন্য। আমি সত্যতা যাছাই করতে চাইছি। আমি জানি প্রতিটি ধর্ম তার অনুসারীদের কাছে অনেক শ্রদ্ধার, সবধর্মই সত্যের উপর নির্ভরশীল, সব ধর্মই মান্য করে- সৎ জীবন যাপন, সদাচারণ, সহিষ্ণুতা, সদালাপ, মানবতা, প্রার্থনা, শুচিতা, পবিত্রতা ইত্যাদি। সবকিছু ঠিক থাকার পরও ঠিক কি কারণে এত-এত ধর্ম পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে?  
হ্যাঁ; তার কারণ আছে, তার স্পষ্ট কারণ বর্তমান। পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি ধর্মের এমন একটি আদিম দিক আছে, যা ধর্মকে ধর্ম হতে ভিন্ন করে, মানুষকে মানুষ হতে বিভাজিত করে। যেমনঃ পবিত্র কোরআনের নির্দেশনাই যদি আমরা দেখি তবে দেখি, কোরআন নির্দেশনা দেয়- “ইহুদী নাসারা ইসলামের শত্রু।” -এর অর্থ কি দাঁড়ায়? এর অর্থ দাঁড়ায় ইসলামের জন্মশত্রু ইহুদী ছাড়াও, নাসারা অথাৎ যারা বহুদেবতায় বিশ্বাসী বা প্রার্থনা করে, তারাও ইসলামের চোখে শত্রু।’ শুধু এই একটি বাক্যই এক ধর্মের মানুষ হতে অন্যধর্মের মানুষকে বিচ্ছিন্ন করতে, তাদের প্রতি ভীতি সঞ্চারিত করতে যথেষ্ঠ। কেননা; মুসলমান‘রা এই দুই জনগোষ্ঠীদের যখন জন্ম থেকে শত্রু জ্ঞান করে আসছে, তাই এদের সামান্য ভূলভ্রান্তিকেও তারা আকাশসম ভাববে তা স্বাভাবিক। তার প্রকটতাও আমাদের কাছে এতোমধ্যে স্পষ্ট আছে, যেমন- ১৯৫১ সালে বঙ্গবঙ্গ আন্দোলনের পূর্ববর্তী সময়ে যে পাকিস্থানে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল শতকরা ২২%, ২০১২ সালে এসে সে তা ঠেকেছে প্রায় ১% এ। অথচ বঙ্গবঙ্গ আন্দোলনের সময় ৮ মিলিয়ন হিন্দুদের মধ্যে ৪.১ মিলিয়ন মানুষ ভারতে গমন করেছিল। তাহলে বাকী‘রা কৈ? রেফারেন্স লিংক দেয়া আছে- [http://en.wikipedia.org/wiki/Hinduism_in_Pakistan]

অথচ বাংলার মুসলমান‘রা ভারতে বাবরি মসজিদের দোহাইয়ে, মুসলমানদের মেরে ফেলছে বলে ১৭% হিন্দুতের কমিয়ে আজ ৭% এ দাঁড় করিয়েছে। অথচ বিশ্বাস না করলেও এ সত্যি, যেখানে বলা হয়েছে ভারতে মুসলমানদের সব মেরে ফেলা হচ্ছে সেখানে তারা ৯% তে ১৫% এ উর্নীত হয়েছে।
অতএব নিজেদের নিঃস্ব করে অর্জিত কলার ভাগাভাগি করে খাবে সম্প্রদায়িকতার মুখোশ পড়ে, আর নিঃস্ব‘রা দিনে-দিনে আরোও নিঃশেষ হয়ে গোলামী করাটাকে মেনে নেবে? এ কি বিবেক বর্জিত নয়?  আর স্বাধীনতা এ ত অর্জন, এ অর্জন মানতে ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ানোর চেষ্টা কেন? এর উদ্দেশ্যও বা কি?

বাংলাদেশের বর্তমান
যে সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ তার দ্বীপ্ত প্রজ্জ্বলিত শিখা জ্বেলেছে, সে শিখার আলো কতকটা ছড়িয়েছে তা আমরা আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থান থেকে সহজেই নিরুপণ করতে পারি। মানুষের মৌলিক চাহিদা আদায়ের লক্ষ্যে যে অর্জিত স্বাধীনতা, সময়ে সে দিন বদলে গিয়ে রূপ নিয়েছে পিতৃপ্রদত্ত, স্বামীপ্রদত্ত কিংবা সাম্প্রদায়িক সম্পদে। অর্জন যখন সম্পদ হিসেবে পরিগনিত হয়- তখন তা ভাগবাটোয়ারা হবে, ভাগ নিয়ে চুরি-চোছামি হবে, মার-দাঙ্গা হবে, খুন-খারাবি হবে এ ত স্বাভাবিক। আর এই স্বাভাবিকতাই একদিন সমস্ত জীবনকে অস্বাভাবিক করে দেবে, দিচ্ছেও।
হ্যাঁ; আজ আমরা কেবল অস্বাভাবিকতাকেই আশ্রয় করে চলছি, আমরা বুঝতে পারবি না, আমাদের কি ঠিক আর কি বেঠিক। আমাদের আদর্শ আমাদের মতাদর্শ এখন কেবল টিকে থাকার। পাশে কে আছে, কিভাবে আছে সে ভাববার মতো কশরত আমাদের নেই। শক্তি বা ক্ষমতা এই এখন কেবল টিকে থাকবার হাতিয়ার। আর এই হাতিয়ার- দিনকে দিন জনজীবনকে যে পরিমান বিষিয়ে তুলছে, তাতে সকলই মুক্তি পেতে চাচ্ছে। সকলেই আজ দিন গুনছে একজন কেজরিওয়াল এসে আমাদের এই ভয়াল দিনে হাল ধরুক। আমরা ক্ষমতার হালুয়া-রুটি ভাগাভাগি থেকে মুক্ত করুক। কিন্তু আমাদের কেজরিওয়াল কে? আমাদের মুক্তির নিঃশ্বাসে তার উত্থান কি আদ্যৌ সম্ভব? সম্ভব অসম্ভব সে ভেবে পাই না, শুধু খুঁজে বের করার চেষ্টা করি- কে; ঠিক কে বেরিয়ে আসবে আমাদের জন্য কেজরিওয়াল হয়ে। যার আগমনে ধুমড়ে-মুছড়ে পড়বে, এই বঙ্গকে নিজের বাবার সম্পদ, স্বামীর সম্পদ কিংবা সাম্প্রদায়িক সম্পদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস হতে?

কেজরিওয়াল
কে এই কেজরিওয়াল? এ বলতে হবে না আজ কাউকে। শুধু যে কথাটি তার জন্য বলার আছে, সে হল- তিনি বিজেপির দাম্ভিকতা গুড়িয়ে দেবার প্রতীক। তিনি দেশটাকে যে কংগ্রেস নিজের সম্পদ করে নিয়েছিল, সে সম্পদ যে জনগনের সম্পদ তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেবার প্রতীক। মানুষ যে আবদ্ধ শিকল থেকে বের হতে চায়, সে চাওয়ার প্রতীক। রাজনীতির রাজ্যে কেজরিওয়াল দুধের শিশু বটে, তবে সে শিশুর প্রতি মানুষের আকাঙ্খা অনেক। মানুষ অনেক আশা করে তাকে বড় হবার সুযোগ করে দিয়েছে। তার বড় হবার পাশাপাশি দেশের মানুষের সৌভাগ্য আসবে, সে আশা করে আছে। জানি না কেজরিওয়াল কতটুকু কি পারবে অথবা নিজেকে কতটা বিস্তার ঘটাবে। তবে কিছু পারুক বা না পারুক তিনি গণমানুষের আপাত প্রতীক হয়ে আছেন, সামষ্টিক বিচারে এটাই এখন বড়। কিন্তু বড় সে তার সীমানায়, তার গন্তব্যে, পাশ্ববর্তী ভারতের দিল্লিতে। তবে তার ডিমে তা দিয়ে আমাদের কি পয়দা? আমাদের তো আমাদের কেজরিওয়াল এর খোঁজ পেতে হবে। তাই মিলিয়ে নেই আমাদের সম্ভবনাময়ী কেজরিওয়ালদের। মিলাতে-মিলাতে মনে পড়ে যায় শেখ মুজিবের একটা কথা- “সবাই পায় সোনার খনি, আর আমি পেলাম চোরের খনি।”  বঙ্গবন্ধু সেদিন ভূল বলেছে সে কথা আজও মনে করতে পারছি না। দেখে চলছি, যা ভেবে পাচ্ছি, সব জায়গায় এই একটি কাজই চলছে নিরবে নিভৃতে। যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই তারা চুরি করছে। হয় কাজ চুরি, না হয় সময় চুরি, না হয় বিশ্বাস চুরি, নয়তো সম্পদ চুরি অথবা প্রেম-স্নেহ-মায়া-মমতা চুরি। সব জায়গায়-জায়গায় আজ লুটেরা বসে আছে ঘাপটি মেরে, সময়ের অপেক্ষা করে। তবুও আমরা বিশ্বাস রাখছি আমাদেরও একদিন একজন কেজরিওয়াল আসবে, যে সব খান-খান করে ভেঙ্গে-ছুরে নতুন করে গড়বে।

উপসংহার
প্রাচীনমানুষ প্রথমে ফলমূল শাকসবজি খেতে শিখেছে, তখন তাই তাদের প্রিয় খাবার ছিল। এরপর তারা ক্রমান্নয়ে মাছ আর পশু শিকার করতে শিখল, তখন মাছ-মাংস প্রিয় খাবারে পরিনত হল। তারা বংশবিস্তারে আদিম খেলা শিখল, সেও তাদের প্রিয় হল। এখন তারা খুন করতে শিখেছে, এটাও এখন প্রিয়রূপ হয়েছে। দেশে-দেশে এখন রক্তের হোলি খেলাটাই এখন প্রিয় খেলার একটি। এই খেলার প্রাথমিক শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘুরা, তাদের পরিমান কমে গেলে কিংবা শেষ হয়ে আসলে চলে নিজেদের মধ্যে হোলি খেলার লড়াই। আমার কথা মানতে হবে না- শুধু দেখুন ক্ষোভ আর ক্রোধের প্রণয়ে মজে যে খেলা শুরু হয়, পরস্পর পঙ্গু হবার আগ পর্যন্ত সে খেলা  কিংবা ক্ষুধা কমে না। 

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৪

জন্ম যখন অজন্ম পাপ!!!

হ্যাঁ; আমাদের জন্মই অজন্ম পাপ আর তাই পাপের প্রায়চিত্ত আমরা মুখ বুঝেই সহ্য করার চেষ্টা করছি!
জীবন যখন পাথরের যাতাকলে চেপে চুপে যায়, তখন এই কেবল ধ্রুব সত্য হয়ে দাঁড়ায়, খন্ডনের ভাষায় কেহ-কেহ মমত্ত্ববোধ কিংবা মহত্বতা দেখালেও স্বীকৃত দায় কেউই এড়িয়ে যেতে পারে না। ক্ষমতা জীবনকে কেন্দ্রীভূত করে, পারস্পরিক করে সাম্প্রদায়িক অগ্রসানে। যুগে-যুগে, কালে-কালে এই সত্যই কেবল নিরূপনের আপ্রাণ প্রচেষ্টা বা প্রয়াস চলছে। আর এই প্রচেষ্টা বা প্রয়াসের বলিয়ান হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা ক্ষুদ্র ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠি।

কে কোন সত্য-মিথ্যা আলিঙ্গন করে এই দায় ঠেকাবে? ঠিক কোন প্রবোধ-বিবেচনায় নিজের জিজ্ঞাসাকে স্থির করবে? অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে দুই‘ই সম অপরাধে অপরাধী, যদি তাই হয় তবে গলা খেকিয়ে মহত্ব দেখাবার মাহার্ত্ব্য কি? কার্য্যবিধি প্রণয়নের সুস্থির বিন্যাস ব্যতিত অবুঝ-অবোধ শান্তনার মূল্য কি?

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪

প্রসঙ্গ বাংলাদেশ ও বন্ধুদের জুড়িয়ে দেয়া আমার ভারতীয় মামুরা


বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক কিংবা অসাম্প্রদায়িক সে বিষয়ে না গিয়ে আমি হিন্দুদের উপর সংঘটিত বিরাজমান প্রসঙ্গ নিয়ে আমার কিছু মতামত পোষণ করছি। বাংলাদেশ পাকিস্থান থেকে স্বাধীনদেশে পরিণত হবার ক্ষেত্রে ভারতীয় মদদ ছিল প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে। সে সময়কার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করলেও এদেশের ইসলাম সম্প্রদায়ের বেশীরভাগ মানুষই এটাকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে নি। সামাজিক জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে ভিন্নধর্মমতালম্বিদের মধ্যে স্নেহ-মমতার বন্ধন গড়ে উঠলেও, এই মেনে না নেবার ধরুন এদেশে মানুষের বেশীরভাগেরই ঘৃণা জমে ছিল ভারতীয়দের প্রতি, যার কারণে জামায়তি ইসলাম এদেশের স্বাধীনতার বিরোধীপক্ষ হয়েও এদেশের মানুষের রক্তে পূণঃবার সঞ্চালিত হতে সমর্থ হয়েছে শুধুমাত্র ছাতুরময় ধর্মীয় মতবাদ পোষনের মাধ্যমে, এদেশের মানুষকে তারা বোঝাতে সক্ষম হয়েছে ভারত বাংলাদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তারা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে ভাগিয়ে নেবে।

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

পুঁজিবাদী সমাজের সমাচার


গত তিনদিন ধরে লিটন‘দার একটু-আধটু সান্নিধ্য পেয়েছি, পেয়েছি এমন কয়েকটি সামাজিক আর বৈষয়িক বিষয়ে ধারণা যা সত্যি ভাবনার। এমন কিছু সচেতন ধারনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাকে। দাদা আমাকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন-সমাজের পুঁজিবাদী‘রা নিজেদের হীণস্বার্থ উদ্ধারের জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে কৌশলে এমনভাবে ধাঙ্গা বাঁধিয়ে চলছে যাতে করে আমরা যারা সমাজে বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকি, তারা পরষ্পরের সাথে খড়গ হস্তে লিপ্ত থেকে পরষ্পরকে নিঃশেষ করে যাচ্ছি। প্রকান্তরে স্বার্থণ্বেষী‘রা নিজেদের এমনভাবে প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে যে, তাতে মনে হতে থাকবে আমাদের যা কিছু আশা-প্রশ্বাস তা তাদেরই জন্য সম্ভব হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে মোটেই তা নয়। প্রত্যেকটি ব্যাপার তারা সমাজের আধ্যপৃষে্ঠ এমনভাবে জড়িয়ে দিচ্ছে নিজেদের অজ্ঞতায় আমরা সেসব হতে কখনোই পারছি বের হতে পারছি না অথবা সেসব আমাদের ধারণা কিণারেই ঠাঁই পাচ্ছে না।

মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৩

গর্বিত আগামি প্রজন্ম!

যুগ বদলেছে........
চারিদিকে আজ পালাবদলের হাওয়া। প্রকৃতির আনাচে-কানাচে পালাবদলের ঢেঁউ। সুন্দর বদল, কত সৃষ্টি-সৈকতের আগমণী বার্তা, বৈচিত্রের রঙ্গে-ঢঙ্গে বর্নিল।
সত্যি কি তাই! এই বদল শৃঙ্খলিত? এই পালাবদলের সুর কি বৈচিত্র্যের আহ্বানে চির-সুন্দর?
ঠিক আছে, আসুন আমরা একটা পালাবদলের চিত্রফট দেখী।
কি???? শালার বাচ্চা শালা, ইয়া...........

মুক্তির ক্ষুধা

সে অনেকদিন আগেকার কথা, এক বনে ছিল এক দুষ্ট বাঘ, তার হিংস্রতায় ছিল বনজীবন ও জনজীবন অতিষ্ট। একদিন এক দুষ্ট শিকারীর ফাঁদে ধরা পড়ে খাঁচায় বন্দি হয় বাঘটি। ফলে বনজীবন ও জনজীবনে নেমে আসে সুখের বারতা।
এভাবে কিছুদিন কেটে যায়, দিনের পর দিন খাবারের অভাবে বাঘটি ক্ষুধার্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং পথিমধ্যের লোকজনকে আকুতি-মিনতি করে তাকে ছেড়ে দেবার জন্য। কিন্তু দুষ্টবাঘের ব্যাপারে সবাই জানত বলে কেউ তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়না। শেষে এক সহজ-সরল লোক বাঘের মায়াকান্নার মোহজালে ধরা পড়ে বাঘটিকে ছেড়ে দেয়। অবাক ব্যাপার হল বাঘটি বেরিয়ে এসে লোকটির উপর কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে ক্ষুধার তোপে তাকে খেতে ছুটে যায়। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও লোকটি বাঘটির হাত থেকে বাঁচার উপায় খুঁজে পায় না। পরিশেষে ধূর্ত শিয়াল পন্ডিতের বুদ্ধিতে লোকটি প্রানে রক্ষা পায়।

অন্যায্যনীতি ও দূর্ণীতি

শরীরের কোনস্থানে পচন ধরলে তার চিকিৎসা করা সম্ভব অতি সহজে। কিন্তু যখন সারা শরীরে পচন ধরে, তখন তার চিকিৎসা করা এতটা সহজতর হয় না। আর অনেক সময় এই পচন থেকে হাজারো চেষ্টাতেও মুক্তি মেলে না। আমাদের দেশের নষ্ট রাজনীতি (নষ্ট রাজনীতি এই জন্য বলছি যে, আমি দেখেছি, যারা নিলজ্জ-বেহায়ার মতো লুঙ্গি তুলে পথ চলাচল করে, পথে-ঘাটে কারণহীন অসভ্যতামি করে, তারাই রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়।)‘র কোপানলে যেভাবে সর্বত্র পচন ধরেছে, তার চিকিৎসাও এত সহজ নয় এবং আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কখনো এই পচন থেকে আমরা মুক্তি পাব না। আর যদি কখনো মুক্তি মেলে, তবে বলব সে আমাদের পরম সৌভাগ্য!

বুধবার, ৫ জুন, ২০১৩

খোলা কলামঃ আর পারছি না

সত্যি বলছি আর পারছি না। আমার ভাষা আমি হারাচ্ছি, না কিছুই লিখতে পারছি না। সব আমার গোলমেলে হয়ে যাচ্ছে
আমরা কি? নিজেদের আজ খুব বেশী ছোট লাগছে। যে পতাকার জন্য ৭১ ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হলো .৫০ লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারালো। রক্তের প্রবাহমান স্রোতে ভেসে গেল বাংলার জমিন। যে পতাকা আমাদের হাতের শক্ত বাহুতে রেখে শান্তিতে নিদ্রার আশ্রয় খুঁজতে চেয়েছে লক্ষ শহীদ, সেই পতাকা আবারও ছিহ্ন-হিহ্ন হলো বাংলার মাটিতে, এই বাংলার সন্তানদের হাতে?

খোলা কলামঃ দাসত্ব মানষিকতা


গরীবের দায়ভারটা শুধুই পেটের, তাই পেটের জন্য শয্যা পাততে যেমন তাদের দ্বীধা নেই, রাত-দিন মল ছাটতেও তাঁদের ঘৃণা নেই। শত্রুর একটুখানী স্বার্থণ্বেষী সহানুভূতিও তাদের আবেগ কেড়ে নেয়।
বাঙ্গালি জাতি আজীবন গরীব, গরীব জীবন-যাপনে, গরীব কার্য্যকরনে; মণণে। নিজের বলা এই কথাগুলোয় আমি নিজেই লজ্জায় ডুবে মরি, তবু সত্যটাকে অস্বীকার করতে পারি না বলে, অকপটে তা বলতে পিছ‘পা হই না।