সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪

প্রসঙ্গ বাংলাদেশ ও বন্ধুদের জুড়িয়ে দেয়া আমার ভারতীয় মামুরা


বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক কিংবা অসাম্প্রদায়িক সে বিষয়ে না গিয়ে আমি হিন্দুদের উপর সংঘটিত বিরাজমান প্রসঙ্গ নিয়ে আমার কিছু মতামত পোষণ করছি। বাংলাদেশ পাকিস্থান থেকে স্বাধীনদেশে পরিণত হবার ক্ষেত্রে ভারতীয় মদদ ছিল প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে। সে সময়কার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করলেও এদেশের ইসলাম সম্প্রদায়ের বেশীরভাগ মানুষই এটাকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে নি। সামাজিক জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে ভিন্নধর্মমতালম্বিদের মধ্যে স্নেহ-মমতার বন্ধন গড়ে উঠলেও, এই মেনে না নেবার ধরুন এদেশে মানুষের বেশীরভাগেরই ঘৃণা জমে ছিল ভারতীয়দের প্রতি, যার কারণে জামায়তি ইসলাম এদেশের স্বাধীনতার বিরোধীপক্ষ হয়েও এদেশের মানুষের রক্তে পূণঃবার সঞ্চালিত হতে সমর্থ হয়েছে শুধুমাত্র ছাতুরময় ধর্মীয় মতবাদ পোষনের মাধ্যমে, এদেশের মানুষকে তারা বোঝাতে সক্ষম হয়েছে ভারত বাংলাদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তারা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে ভাগিয়ে নেবে।


আসলে বাস্তবিক কি তাই?
আমি তা মনে করি না; মনে করার প্রশ্নও আসে না। নিজের জ্ঞান আর বিশ্লেষন থেকে আমার জ্ঞানে যতটুকু আসে তাতে আমি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি, বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় যে সাহায্য-সহযোগিতা বর্তমান তার মূল দুটো কারণ-
১) প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আঞ্চলিক সহযোগিতা। (যেটাকে এদেশের ইসলাম সম্প্রদায়ের বেশীরভাগ মানুষ বাড়াবাড়ি হিসেবে মনে করে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশের সাথে সবারই এ ধরনের সম্পর্ক বর্তমান থাকে বলেই আমার ধারণা)
২) মার্কিন ছত্রছায়া ছেড়ে নিজেদের ক্ষমতা সমূজ্জল রেখে তার প্রসার ঘটানো।

প্রথম কারণ‘টা একটু ভাবলেই বোঝা যাবে, তাই সেটা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষনে না গিয়ে দ্বিতীয় কারণটি নিয়ে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা করছি।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যখন সারাবিশ্ব উৎকণ্ঠা উদ্ভেগ প্রকাশ করছে, আওয়ামী লুটেরানীতিতে দেশের মানুষ যখন নিঃস্ব হতে নিঃস্বতর হচ্ছে- তখন বিরোধীদল বিএনপির সমর্থণ চলে আসে রাজনীতিতে। আওয়ামী রাজনীতির গেড়াকলের যাতনায় এদেশের মানুষ এতটাই বিক্ষুব্ধ যে তারা বিএনপির সাথে যুক্ত জামাত-শিবিরের নৃসংশতার মৃত্যুর কুপমন্ডক দৃশ্যপটও যেনে তাদের প্রতি অগ্রগ্রামী হওয়া ছাড়া কোন পথ দেখতে পায় না। এমত পরিস্থিতিতে আওয়ামীলিগের সমর্থন যোগানো ভারতীয়দের পক্ষে কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল?
অবৈধ একটা প্রণীতণীতি সমর্থণ যুক্তিযুক্ত নয় যেনেও কেন ভারত এদেশের আঞ্চলিকতাতে আওয়ামীলিগকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ দিয়ে যাচ্ছে? কারণ আর কিছু নয়, এই বিষয়টির একটাই সদুত্তর, এতে তাদের স্বার্থই প্রকট।
কিভাবে?
চলমান বিশ্বে মার্কিন ক্ষমতা ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়ছে, আর ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চীন এবং ভারত। এমত পরিস্থিতিতে ভারতকে দাবড়িয়ে রাখতে মার্কিণপ্রশাসনের প্রয়োজন পাকিস্থানে আর বাংলাদেশকে, কারণ কোন দেশেকে কাবু করতে প্রতিবেশী দেশকে ব্যবহারনীতি মার্কিণ প্রশাসনের মধ্যে শুরু থেকে পরিলক্ষিত। আর যেহেতু বাংলাদেশের তিনদিকেই ভারতের অবস্থান তাই বাংলাদেশকে ব্যবহারের ব্যাপার‘টা তারা হাতছাড়া করবে না।
আওয়ামী সরকার মার্কিণ প্রসাশনিক অনেক নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করছে না, তাই দেশের প্রতি তাদের বিরাগভাজন মনোভাব থাকার কথা। দেশকে কোনঠাসা করার প্রয়াস দেখানো কথা। তারসত্ত্বেও যখন তারা বাংলাদেশের প্রতি তাদের সদাচারণ দেখায় তখন সত্যটি আরো বেশী প্রকট হয়ে ওঠে। যেহেতু মার্কিণ প্রশাসনের উদ্দেশ্য এই, আর ভারতও আজকের যুগের রাজনীতিতে স্বভাবসিদ্ধি তাই তারা মার্কিন সাম্রাজ্র্যবাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখলেও তাদের উপর হস্থক্ষেপের সুযোগ প্রদান করবে না। আর এই কারণটাই প্রধান হয়ে উঠে বাংলাদেশের উপর তাদের খড়গ চালানোর ইচ্ছেতে। ভারত কোনভাবেই ছাচ্ছে না, বাংলাদেশের উপর দিয়ে মার্কিন প্রশাসন তাদের কৌণঠাসা করার প্রয়াস চালাক। তাই সব উপায়ে তারা এদেশে আওয়ামীলিগের উপর বিস্তৃত হয়ে আছে।

আমাদের কমবেশী জানা আছে- বাংলাদেশে বিএনপির সমর্থণ আছে ৩৫% মুসলমান আর আওয়ামীলিগের ৩০%। আর তাই আওয়ামীনেত্রিত্বের পিছনে জন্মগতভাবে ভূমিকা রাখে হিন্দুধর্মালম্বিদের ৭%। আর এই বীষচক্ষু হয়ে দাঁড়ায়। তাই ক্ষমতা কুক্ষিগতকরনের রাজনীতি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বারংবার নৃসংশতা চালায় তাদের নিঃশেষ করায়। আর নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের উপর এমন অত্যাচার দেখেও বন্ধুদের প্রতিক্রিয়ায় আমাদের মামুরা চুপ থাকে কারণ তারা ইচ্ছে করলেই আমাদের নিয়ে যেতে পারে না। যদিও তাদের বিশাল দেশ, সে দেশে চাইলেই তারা আমাদের ১ কোটি হিন্দুদের আশ্রয় দিতে সমর্থ, তারপরও তারা তা করবে না। তার প্রথম এবং প্রধান কারণই হল তাদের মার্কিন নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে ক্ষমতার সমুজ্জল প্রসারণ ঘটানো। এদেশে যতদিন একটা হিন্দুধর্মলম্বিও বেঁচে থাকবে, ততদিন তারা এদেশে নিজেদের ক্ষমতা চালাতে সক্ষম হবে। আর ব্যপারটি নিরসনে মার্কিন প্রশাসনের ইঙ্গিতে জামাত-শিবির দ্রুত চেষ্টা চালাচ্ছে বিষয়টি দ্রুত সূরাহা করে মার্কিন নিয়ন্ত্রিন ভারত বানাতে আর পাঠার বলি হয়ে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি- সবচেয়ে কঠিণ সত্য মৃত্যুকে বরণ করে নিতে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন