মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৪

ধর্মের লেবাসধারী


ধর্মের লেবাসধারী‘রা নিজের বিবেকটাকেও প্রয়োজনে বিকিয়ে দেয়, বড় আজব সব মানুষের সাথে বসবাস আর চলাফেরা করতে হচ্ছে। এসব দলের লোকজনদের সাথে কথা বলে, নিয়মিত তাদের সাথে চলাফেরা করে আজব সব ভাবনা বয়ে যাচ্ছি।
সত্যি জীবনকে নিয়ে এদের ভাবনা কি?
যারা মানুষকে মানুষ জ্ঞান করতে শেখে না, যারা নিজের চেতনার বিপক্ষে গেলেই তাকে ঘিরে কুৎসা রটাতে থাকে, যারা অন্যকে নিজের পথে চালানো জোর আহ্বান চালায়, যেখানে যাকে আহ্বান করে তার মন বা স্বরূপ কি অথবা তার আহ্বানটুকু ঐ ব্যক্তিসত্ত্বার নিকট কতটা যুক্তিযুক্ত তা ভাবে না।


এরা কি সত্যি সত্যকে আহ্বান করে নাকি বিভক্তি ছড়ায়?
এরা কি নিজেরা ধর্মের ধারক হিসেবে ধর্মকে প্রসার বা অগ্রসর করতে চায় নাকি নিজের অজান্তেই ধর্মটাকে মানুষের নিকট বিতৃষ্ণ করে তোলে?

আমি নাস্তিক নই, আমার নিজধর্মে আমার বিশ্বাস অটুট আছে। তাই অটুট বিশ্বাসের জোরেই বলি- আমার ধর্মের উল্লেখ অনুযায়ী দিন-দিন মানুষ পথভ্রষ্ট হতে থাকবে আর পথভ্রষ্ট হতে-হতে একদিন যখন কেউ বাকী থাকবে না, তখন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। অন্যান্য ধর্ম পড়ে এবং তা থেকে যতটুকু জ্ঞাণ আমার হয়েছে- তাতেও আমার এই শিক্ষার কথা জানা আছে। এখন আমার প্রশ্ন তারা যদি সত্যিকার অর্থে ধর্মে বিশ্বাস করে থাকে তবে যারা বিপথগামী হচ্ছে (লেবাসধারীদের মতে) তাদের উপর জোর হস্তক্ষেপ চালিয়ে তাদের দিকে নেবার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তাদের দমাতে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে তারা প্রকৃতপক্ষে কি ধর্মের বাণীকে মিথ্যে করার চেষ্টা চালাচ্ছে না কিংবা তারা ধর্মের বিপরীত দিকে অবস্থান করছে না?
তারা আজ বিপথগামীদেরকে ধর্মপথে আনতে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে, মিথ্যা ছড়াচ্ছে, যারা তাদের মতাদর্শের বাহিরে যাচ্ছে তাদের নামে নিয়ত কুৎসা রটাচ্ছে। ঠিক এমন একটা অবস্থানে নিজেকে অবস্থিত রেখে তারা সত্যিকারে কোন অর্থে নিজেকে আস্তিক প্রমাণ করবে? যুক্তিযুক্ত আলোচনায় যদি তাদের অবস্থানটুকু তাসের ঘরের মতো ভেস্তে যায়, তবে কি তারা নিজেই নিজের অজান্তে মিথ্যার প্রশ্রয়ে চলে যাচ্ছে না?

আমার এই বক্তব্যটুকু আমার অফিসের এক কলিগের কথা ঘিরে। আমার অফিসের সবাই খুবই ধার্মিক আর ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি। সবাই পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ে বা পড়ার চেষ্টা করে, কেউ-কেউ নিয়মিত কোরআন তেলোয়াত করে আর গজল ও ওয়াজে মসগুল থাকে। তো এদের মধ্যে একজন- আজকে বললেন ইমরান এইস সরকারকে লোকজন নাকি ঢাকায় দুইটা বাড়ি দিয়েছে, গাড়ী দিয়েছে আর সে নাকি কল দিলেই যে কোন মেয়ে বা মহিলা তার শয়ন কক্ষে চলে আসে। কথাটা নিজেকে ছেদ করে গেল, ব্যাপারটা মোটেই ইমরান এইস সরকারের প্রতি ভালোবাসায় নয়, ব্যাপারটা মিথ্যে রটনা নিয়ে। কারণটা হল এই- আমি বিশ্বাস করি একজন মানুষকে জানতে বা চিনতে হলে তাকে কাছ থেকে দেথতে হয়, তাকে বুঝতে হয়। যদি তা না করে একজন মানুষকে ইঙ্গিত করে কিছু বলা হয় তা গীবত বা কুৎসা হয়। ব্যাপারটা নিজেকে ঘায়েল করাতে আমি তাকে মানষিক বিপর্যস্থ করার উদ্দেশ্যেই বললাম- সে যদি ভাবীকে আহ্বান করে সেও কি চলে আসবে? এবার সে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল ভাবী কেন আসবে? এখন বলুন তাকে কি বলা যায়? নিজেকে ধমালাম। ধমিয়ে আরোক কলিগকে বললাম ভাইয়া এ ভাই যে কথা বলেছে এটা কি গীবতের মধ্যে পড়ে না? তিনি আমাকে জানালেন ব্যাপারটা আরেক কলিগ ভালো বলতে পারবেন। যে কলিগ ভালো বলতে পারবেন তাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করে যাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম তাকেই জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা- গীবতের ব্যাপারে ধর্মের অনুশাসন কি আছে? সে বলল- যারা গীবত করে তারা মৃত ভাইয়ের মাংস খায়। একথা শুনে চুপে গেলাম- কারণ যারা মানুষকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করতে সক্ষম নয় তারা ভাইকে শ্রদ্ধা বা স্নেহের চোখে দেখবে এমন ভাবনাও অলীক!!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন