শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

পুঁজিবাদী সমাজের সমাচার


গত তিনদিন ধরে লিটন‘দার একটু-আধটু সান্নিধ্য পেয়েছি, পেয়েছি এমন কয়েকটি সামাজিক আর বৈষয়িক বিষয়ে ধারণা যা সত্যি ভাবনার। এমন কিছু সচেতন ধারনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাকে। দাদা আমাকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন-সমাজের পুঁজিবাদী‘রা নিজেদের হীণস্বার্থ উদ্ধারের জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে কৌশলে এমনভাবে ধাঙ্গা বাঁধিয়ে চলছে যাতে করে আমরা যারা সমাজে বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকি, তারা পরষ্পরের সাথে খড়গ হস্তে লিপ্ত থেকে পরষ্পরকে নিঃশেষ করে যাচ্ছি। প্রকান্তরে স্বার্থণ্বেষী‘রা নিজেদের এমনভাবে প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে যে, তাতে মনে হতে থাকবে আমাদের যা কিছু আশা-প্রশ্বাস তা তাদেরই জন্য সম্ভব হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে মোটেই তা নয়। প্রত্যেকটি ব্যাপার তারা সমাজের আধ্যপৃষে্ঠ এমনভাবে জড়িয়ে দিচ্ছে নিজেদের অজ্ঞতায় আমরা সেসব হতে কখনোই পারছি বের হতে পারছি না অথবা সেসব আমাদের ধারণা কিণারেই ঠাঁই পাচ্ছে না।

লিটন‘দা আরো জানালেন, দেখ বিপ্লব- যেখানে সরকারি পেটুয়া বাহিনী‘রা শ্রমিকশ্রেণীর আন্দোলনের তিনঘন্টাপূর্বে খোঁজ পেয়ে যায় তাদের আন্দোলনের ধ্যান-ধারণা সম্পর্কে, সেখানে রামুর ঘটনা, পাবনা সাঁথিয়ার ঘটনা কিংবা বরিশালের ঘটনাপ্রবাহের কয়েকদিনের প্রস্তুতি নিয়ে হবার পরেও কেন প্রশাসণ তার সম্পর্কে জানে না? আর ঘটনা ঘটে যাবার পরও কেন অপরাধীদের আইনের আওতাভুক্ততায় এনে শাস্তি দেয়া হয় না? ব্যাপারটা আসলে অন্য কিছু না, এটাই রাজনীতি।
এই রাজনীতির নোংরা খেলার মূল উদ্দ্যেশ্য হল সামাজিক বৈষম্যতা সৃষ্টি। তার ফলে সৃ্ষ্ট হিংসা-দ্বেষ তৈরী হবে অজ্ঞ জাতিগোষ্ঠীর পরস্পর পরস্পরকে ধ্বংশের কাজে (যেমন জামাত-শিবিরের উগ্রতার আশ্রয় হচ্ছে আওয়ামীলিগের লাইমলাইটে আসা)। এখানে পুঁজিবাদী আর স্বার্থন্বেষী সমাজ অনেকভাবে লাভবান হয়। যেমণঃ
১) আমরা বাস্তব ধারণা পোষন করতে না পারায় ধ্বংশযজ্ঞে নিয়োজিত হয়ে পরস্পর পরস্পরের অনিষ্টসাধন করছি আর পুঁজিবাদীদের শরণাপন্ন হচ্ছি সমাধানের প্রশ্নে।
২) নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক অন্তঃকোন্দলের কারণে আমরা যেহেতু আজীবনই ক্ষতিগ্রস্থ তাই আমরা সবসময় পুঁজিবাদী সমাজের নিকট মাথা তুলে দাঁড়াবার ক্ষমতা হারাচ্ছি।
৩) আবেগের অরক্ষিত চিন্তায় আমরা প্রতিনিয়ত অগ্রাসী হচ্ছি।
ব্যাপারগুলো আসলেই তাই। সমাজের চারপাশ ঘেঁটে-ঘুটে অনেক দেখেছি। আজ যে, ১৯জন গাড়ীতে ধরানো আগুনে ঝলসে গেছে তাতে কে ক্ষতিগ্রস্থ হল? কোন শিল্পপতি, মণ্ত্রী কিংবা এমপি? না তারা কেহ নয়, তারা দেশের সাধারণ শ্রেণী। যারা পেটের দায়ে জীবন হাতে নিয়ে পথে চলে। অন্যদিকে যারা আগুণ দিচ্ছে তারা কি পাচ্ছে? আজীবন বসে খাবার ব্যবস্থা? অর্থ, বিভব, সম্পদ? মোটেই না। হয়ত ৫০০ কিংবা ১০০০টাকা, যা তাদের একদিনের নেশার সুখ মেটাবে কিংবা মেটাবে একদিনের ক্ষুধার যন্ত্রণা। অথচ একজনের একদিনের সুখের বিনিময়ে নিঃশেষ হয়ে গেল ১৯টি পরিবারের রক্ষিত সুখ। আর যারা ক্ষমতার পিছনের মূলকারিগর, তারা কিন্তু নিশ্চুপ-নিরালায় নিলিপ্ত সুখে অনুশোচণাটুকুও পুড়িয়ে নেবে গায়েবি নামাজের কল্যাণে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন