মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৩

কঠিন বাস্তবতাঃ জননী

জননী ইট ভাংছিল, খেলছে নিজে-নিজে তার কোলের শিশুটি।  অনেক সময় পর শিশুটি খেলা সাঙ্গ করে মায়ের সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় কান্না জুড়িয়ে দিল । মায়ার মোহজালে আবদ্ধ জননী আর নিজেকে স্থির রাখতে পারল না, ছুটে এলো নাড়ির টানে। হাতুড়ির কষাঘাতে শক্ত খসখসে হাতে সন্তানকে আপনার বুকের কাছে টেনে নিল। অথচ শক্ত খসখসে হাতের পরম মমতায় শিশুটির কান্না থেমে গেল। জননী শিশুটিকে আপনার বুকের দুধ খাইয়ে আবার খেলতে বসিয়ে দিলেন।কিন্তু; শিশুটি এখন আর নিজে- নিজে খেলতে রাজী নয়, সে খেলার সঙ্গি হিসেবে জননীকে প্রত্যাশা করে।
কিন্তু, কি করে তা সম্ভব?
যেখানে জীবন কষ্টের বদ্ধদুয়ারে আবদ্ধ- সেখানে নিজের পথচলা, সংসারের ঘানিটানা, সন্তানের ভবিষ্যৎ; জননীতো বসে থাকতে পারে না। তিনি তো পারেনা সন্তান কে উৎফুল্ল রাখতে, কারন এইযে সন্তানের জন্য সাময়িক উৎফুল্ল আর এই সাময়িক উৎফুল্লতা যে তাকে আরও অনিশ্চয়তার কষাঘাতে আহত করবে। তাই জননী তাকে জোর করে বসিয়ে কাজে যায়। সন্তানের চিৎকারে বিশৃঙ্খল হয়ে যায় নীরব প্রকৃতি। কিন্তু, কিছুক্ষন আগের মমতাময়ী জননী কঠোর হয়, নিজেকে স্থির করে।সন্তানের কান্না এখন আর তাকে স্পরশ করেনা, সে প্রকৃতির পাষাণ হৃদয়, সন্তানের নাড়ির টান এখন আর তাকে টানে না। তার মন কাজে নিবিষ্ট। তাকে টিকতে হবে, এই প্রকৃতিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তাকে যুদ্ধ করতে হবে প্রকৃতির সাথে।
অনেক সময় পর অনাহত শিশুটি থামে, প্রকৃতির নীরবতা সেও আপনার মধ্যে ধারন করে। শান্ত ভুবনে নিভির ছায়ায় চোখ বুজে সে, হাসে স্বপ্নের দাহরে বসুমতীর কোলে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন