সোমবার, ২২ জুন, ২০১৫

স্বপ্ন পতন

না, আমার নিজেকে নিয়ে বড় করে বলার মত কিছুই আমার নেই। যৌথপরিবারের কলহের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে জীবনের ১২-১৩ বছর। অনাহার, অভুক্ততা সব সহে-সহে জীবনটাকে শিখতে চেষ্টা করেছি বারবার। নিজের অজ্ঞতায় অনেক হোঁছট খেয়েছি ছোট্ট এ জীবনের বেলাভূমে। তবুও নিজের অজ্ঞতাকে সংশোধনের চেষ্টা ছিল সব-সময়। অনেক শেখা হয়নি পরিবেশ-পরিস্থিতিতে, অনেক শেখা বাকী রয়ে গেছে নিজের গাফিলতিতে। তবুও নিজের মনকে নিয়ন্ত্রন করার প্রয়াস সব-সময় রেখেছি। নিজের আচারণ, নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্খাকে ঠিক অতটা পর্যন্ত রাখার চেষ্টা করেছি প্রতিনিয়ত, যেন আমার জন্য কেউ পীড়িত না হয় অথবা আমার দ্বারা কেউ পীড়িত না হয়।

বড় হবার স্বপ্ন সবাই দেখে, সবাই বড় হবার স্বপ্ন দেখে-দেখেই দুনিয়ার মায়ায় পড়ে। একটা সময় অনেক বড় হবার আকাশ-কুসুম ভাবনা আমাকেও পেয়ে বসেছিল। ঢাকায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশলে ভর্তি হবার ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য ছিল- বড়-বড় কবি-লেখকদের সান্নিধ্য নেয়া, তাঁদের দেখে, তাঁদের কাছ থেকে শিখে একদিন অনেক বড় লেখক হওয়া। অথচ এই স্বপ্নটা আমার জন্য সত্যিকারে অর্থে অলিক ছিল! ঢাকায় আমার অবস্থান প্রায় ১১ বছর চলছে। অথচ এখনও পর্যন্ত আমি কোন ভালো লেখক বা কবির সান্নিধ্য গ্রহণ করিনি। সত্যি কথা বলতে কি, নিজের ভিতরকার সে শক্তিগুলো হারিয়ে গেছে। বড় লেখক হবার স্বপ্ন দেখা আমার অনেক আগেই উতরে গেছে। এখন যেটুকু লেখালেখি করি, সেটা নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কেবল করি। একটা সময় যে লেখালেখিতে আসক্তি ছিল, সেটার নেশায় ডুবে করি।

সময়ের ব্যবধানে জীবনের ভীত শক্ত মজবুত হয়। আমার ভীতটাও হয়ত মোটামুটি করে চালিয়ে নেবার মত হয়েছে। কিন্তু নিজের ভিতরকার উজ্জিবিত শক্তিগুলো ক্রমশ দূর্বল হতে-হতে এখন প্রায় নিঃচিহ্ন। এখন কেবল এই ভাবনাই নিজেকে পীড়িত করে, ১০ বছর আগে এই ভীতটাকে ফেলে হয়ত নিজের স্বপ্নগুলোকে এভাবে আছড়ে মারতে হত না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন