শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

আমি মূর্তিপূজা শতভাগ সাপোর্ট করি

আমি মূর্তিপূজা শতভাগ সাপোর্ট করি এবং এটাকে সম্মানের সহিত দেখি। অনেকে বলতে পারে এটা আমার ধর্মের অনুসঙ্গ হিসেবে তা আমি করি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা মোটেই নয়। কারন জন্মে মানুষ যদিও পরিবার কিংবা তার সমাজের ধরুন কোন বিশেষে আকৃষ্ট হয় কিংবা তার প্রতি দূর্বলতাবোধ করে। কিন্তু বিস্তৃত সমাজ পরিসরে বসবাস করতে গিয়ে সকলের সামষ্টিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে সে ঘোর অনেকটাই কেটে যায় বলেই আমার বিশ্বাস।

এখন প্রশ্ন হতে পারে- কাল্পনিক, পৌরনিক অথবা মৃত মিথ!!! -কে বিশ্বাসে আগলে আমার সাপোর্ট এবং সম্মানের কারন বা হেতু কি?

যদিও লেখালেখির কলরোলে আমাকে খুব কমজনই জানে- তবুও সত্য যে, আমি দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখির সাথে সংযুক্ত। আর এ লেখালেখি করতে গিয়ে আমি একটা বিষয় খুব বেশি অনুধাবন করি, তা হল- বাস্তবতা আপনি যতই নিরীক্ষন করুন না কেন, আপনার পর্যবেক্ষনকে রুপদান করতে গেলে অথবা তাকে নিখুঁত ফুটিয়ে তুলতে গেলে, আপনাকে অবশ্যই আবেগ এবং কল্পনা- এ দুইয়ের আশ্রয় নিতেই হবে। আবেগ ব্যতীত অনুধাবন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি কল্পনা ব্যতীত বিষয়ের আশ্রয়ও কঠিন। ধরুন রুপগুণহীন নারী সুদর্শন পুরুষকে কামনা করছে যদিও তার অনুপযুক্ততার বিষয়ে সে শতভাগ নিশ্চত। একইভাবে কল্পনায় যে পুরুষটি সুদর্শনা নারীটিকে ছুঁয়ে যাচ্ছে! তাও মিথ্যা। কিন্তু তবু তাতে তারা আবেগের আহ্লাদী আহবানে অন্তরের প্রসন্নতার খেয়ালটুকু মিটিয়ে নিচ্ছে। আসলে চোখের দর্শন আর ব্যক্তি আকর্ষন কখনোই উপযুক্ততা কিংবা অনুপযুক্ততা খোঁজে না, যতটা অতৃপ্ত বাসনার খেয়াল মেটায়।

আমি কি আমার বিষয়ের বাহিরে চলে যাচ্ছি? না মোটেই না। আসলে আমি জানাতে চাইছি, সুদর্শন-সুপুরুষ, সুদর্শনা-গুণবতী নরনারী যদি না হত অথ্যাৎ সবাই দেখতে এক হত, তবে ভিন্নভাবনার প্রাসঙ্গিকতা আসত কোথা থেকে? 

তারমানে, ভিন্ন ভাব-ভাবনা সে প্রকৃতির ইচ্ছেতেই হচ্ছে আর দুনিয়াতে বেঁচে থাকবার এই কেবল অনুসঙ্গ!

অন্য আর একটি প্রসঙ্গে ফিরি- ধরুন আপনার কাছে জানতে চাওয়া হল- আপনি বেঁচে থাকতে চান কেন? আপনি কি জবাব দেবেন? আপনাকে ভাববার সুযোগ দিচ্ছি, দয়া করে ভেবে বলুন। ভাবতে দিলে অনেকে হয়ত উত্তর দেবেন, স্রষ্টার ইচ্ছেতে তাঁকে ডাকতে, তাঁর চরণের সান্নিধ্য পেতে! কিন্তু মুখ থেকে বেরিয়ে পড়া কথাগুলো কোনটাই বিশ্বাসযোগ্য মনে করি না। এগুলো কেবলই বলার জন্য বলা কথা, দু একজন ব্যতীত বাকি সবার বেঁচে থাকবার ইচ্ছে ভিন্ন, যেটা মন ভাবছে কিন্তু মুখ বলছে না। আসলে বেঁচে থাকবার বাসনায় মানুষের ইচ্ছেতে প্রথম স্থান পায় আত্মপ্রসন্নতা। মানে মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার ইচ্ছেতে সুখ-স্বাচ্ছন্দ-বিত্ত-বৈভব-আনন্দ-অভিলাষ এগুলোই আগে স্থান পায়। আর পূজা-পার্বন হল একপ্রকারের আনন্দ-অভিলাষ। যা অন্তত একদিনের জন্য জীবনে বেঁচে থাকবার গতি দেয় আর মনের ভিতরকার আকাঙ্খার প্রকাশকে শূন্যে ছুড়ে দেয় ধরার আগ্রহে।

আর মূর্তি?

এটা কেবলই প্রতীক। সনাতন ধর্ম মতানুসারে- নিরাকার ঈশ্বরের আরাধনা কঠিন বলে মানুষ সাকারের পূজায় আকৃষ্ট হয়। এখানে ঐ বিষয়টিই আগে প্রাধান্য পায়, সুদর্শন কিংবা সুদর্শনার রুপালব্ধি সহজ বিধায় অনুপযুক্ত কিংবা আপ্রাসঙ্গিকেই ঘিরেই সকলে অভিলাষ সঁপে বাঁচে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন