শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

বন্যার আর আমি?

জানতাম ঝড়গা ছাড়া প্রেম জমে না, কিন্তু তাই বলে এতটা? দিনে-দুপুরে ঘরে-বাহিরে এতটা নিলর্জ্জতায়? বন্যার উপর খুব রাগ হচ্ছিল, কষ্টও। উপরওয়ালাকে মনে-প্রানে ডাকছি, যেন এই লজ্জা হতে মুক্তি মেলে। কিন্তু বন্যার নিলর্জ্জ গা বেড়ে ঢলে পড়া, শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে যেখানে-সেখানে টেনে নিয়ে যাওয়া, কিছুতেই রুখতে পারছিলাম না।

আজ সত্যি হতভম্ব আমি! আদি খোলস চুকিয়ে নিতে চায় সমস্ত সম্পর্কের বেড়ী বিন্যাস। অথচ কয়দিন আগেও কত আত্মদম্ভ সম্মান অহং সমুজ্জল ছিল। যৌবনের তেজদীপ্ত উচ্ছ্বাসে কত ছল্ - ছটাকে ছুটেছিলাম দিক-বিদিক। অথচ আজ অনন্তযৌবন ছৌঁয়া উদ্দীপনা মিটে দিচ্ছে প্রণয়বৃন্তের মন্ত্রণায়। আজ দন্ডায়মান পরিস্থিতি লোক সরোবরে নিস্তেজ করে দিচ্ছে উজ্জ্বল আলোকশিখার প্রেম পরিব্রাজক সূর্য্যটাকে।

বড় বিরহিত এই অনুলব্ধ বিন্যাস। সান-সৈকত আর আত্মগরিমার জমিয়ে রাখা অনুসঙ্গকে আজ বিদীর্ন করে তুলছে প্রতিটি খরস্রোতা ঢেঁউয়ের লয়। জীবনের সমস্ত লেনা-দেনা মিটে যাচ্ছে প্রাপ্তী-অপ্রাপ্তীর হিসেব-নিকেশে। পাবার সৌন্দর্য্যও আজ বিমুখ, বিভূষণে রঙ্গিন করে দেবার মতো সমস্ত চাকচিক্য আর অন্তরের গচ্ছিত সমস্ত স্বপ্নের আদিলেখা মুছে যাচ্ছে খাবি খাওয়া চুমুর রহস্যে। ভালোবাসার চিত্রপটে তাই এ এক দুর্বিসহ যন্ত্রণা।

প্রেম সমস্তই বিসর্জনের, প্রেম সমস্তই লেনদেনের। তাই সমস্ত হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে বন্যার গ্রাসে সলিল একটি পরিযায়ী পাখির নীড়ের, একটি পরম যতনে আগলে রাখা মধুর স্বপ্নের।

[লেখা পড়ে কেউ না আবার খারাপ কিছু ভেবে বসে তাই নিচে বি. দ্রঃ দিয়ে দিলাম]
[বি. দ্রঃ- আজ বাহারাইনের এক কাষ্টমার কল দিয়ে বলল- বিপ্লব ভাই, আমাদের এখানে তো বন্যায় সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকেও মনে হয় ভাসতে হবে। তাকে মজা করে বললাম- ভাইয়া, বন্যার সাথে আপনার কাজ কারবার কি? তারই প্রেক্ষিত ধরে, বন্যা আর আমি।]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন