বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বিষয়ক

ধর্ম কাকে বলে?
ধর্ম বিষয়ে সকলের করণীয় কি?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কাকে বলে?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কখন হয়?
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কেন হয়?
ধর্ম পালনকারি বলে জানা- ধর্মীয় গুরুরা যখন অন্য ধর্ম নিয়ে বাজে আলোচনা করে, তাকে আমরা প্রতিহত করি?
নাকি অন্যধর্মে কটাক্ষে বা খারাপ আলোচনায় নিজেদের শরীর ওম করি?
নাস্তিকতা শব্দের অর্থ কি?
নাস্তিক কে বা কারা?
আমি হিন্দুধর্মের অনুসারি, ধর্ম বলে বিধর্মীরা নাস্তিক, তার মানে কি আমার ধর্মে আমার বিশ্বাস থাকা শর্তেও আমি নাস্তিক?
- উল্লেখিত প্রশ্নগুলোর উত্তরগুলো ভাবতে চেষ্টা কর, তাহলে কোনটিকেই বাড়াবাড়ি মনে হবে না।

এবার ধর্ম বিষয়ে আমার বিশ্লেষনটা বলি-
আমি মনে করি যা আমার চেতনায় ধারণ সম্পন্ন তাই আমার ধর্ম। আমার জ্ঞাণে আমি যেটিকে যথার্থ ভাবব, সেটাই আমার ধর্ম। হাজার বাধা শর্তেও আমি যে বিশ্বাসে অটল থাকতে পারব, সেটাই আমার ধর্ম। আমি হিন্দু, আমার বিশ্বাসের বদ্ধমুলে- শ্রীমদ্ ভগবত গীতা, বেদ, রামায়ন, মহাভারত, অতএব এগুলো নিয়মনীতির যথার্থ অনুসরণই আমার ধর্ম।

এখন এমন যদি হয় কেউ একজন আমার ধর্ম নিয়ে আমাকে কটাক্ষ করে, আমি তার জবাব অস্ত্রদিয়ে কিংবা গালি দিয়ে দেব না। কেননা; এই দুটোই ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। মানুষ তখনই ক্রোধিত হয়, যখন কোন বিষয় তার আচারের বিপক্ষে যায় এবং সে বিষয়ে তার দূর্বলতা থাকে। যখনই কারো কটাক্ষের জবাব দেবার মতো আমার যথেষ্ঠ জ্ঞাণ থাকবে না, তখনই বাড়াবাড়ির বিষয়টি আসবে। আর বাড়াবাড়িটা তখনই চরম আকার ধারণ করবে, যখন আমি সদিচ্ছায় আমার ধর্ম বিষয়ে কটাক্ষকারীদের যথার্থ উত্তর প্রদর্শণ করতে না পারব। তাহলে বিষয়টি কি দাঁড়াল-

বিষয়টি দাঁড়াল ধর্ম বিষয়ে আমার অজ্ঞতাই আমার ক্রোধের কারণ, আমার পরিমিত জ্ঞানের জন্য বা আমার না জানা থাকায়, আমি কাউকে নাস্তিক উপাধি দিচ্ছি। অথচ ধর্ম নির্দেশ করছে, ধর্মগ্রন্থে আছে জীবন-ধারণের পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধান।

নাস্তিকরা ধর্ম বিষয়ে ঘেঁটে-ঘেঁটে ধর্মীয় দূর্বল দিক বের করে তা নিয়ে আলোচন করে, কিন্তু আমরা যারা ধর্ম বিশ্বাস করি হৃদয় হতে, আমরা জানি প্রত্যেকটি কারণের প্রাসঙ্গিক কোন ব্যাখ্যা আছে। যখন কেউ ধর্মীয় দূর্বলতা খুঁজে তা নিয়ে আলোচনায় আসবে, বিশ্বাসীদের উচিত সে বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে জবাব দেয়া।

কিন্তু আমরা কি করছি? যাদের নাস্তিক বলে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করছি, তাদের মতও কি আমরা আমাদের নিজেদের ধর্মটাকে খোঁজার চেষ্টা করছি? ধর্মীয় বিষয়ে নিজেদের দূর্বল জ্ঞাণের জন্য আমরা অন্যের জ্ঞাণ বিশ্লেষণকে অস্ত্রতে কেটে ফেলে দেব?
এটা কি উগ্রতা নয়?
ধর্ম কি আমাদের এ শিক্ষাই দেয়?
যদি ধর্ম এই শিক্ষাই দেয়, তবে সে ধর্মের প্রতি বিশ্বাসের অবস্থানটুকু কতটা স্থাপিত হয় বা ভবিষতে হবে?
ধর্মগ্রন্থে কি উল্লেখ নেই, মৃত্যুর আগেও যদি কেউ ধর্ম যথার্থ অনুসারী হয়, তাকে স্রষ্টা ক্ষমা করেন?
তবে- কতটুকু যৌক্তিকতায় আমরা কাউকে খুন করে দিচ্ছি?

ধর্মে স্পষ্টত উল্লেখ আছে, পৃথিবীতে একদিন পাপ-অনাচার বেড়ে যাবে, সময়ে পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, তবে নিজেরা ধর্মটাকে সঠিকভাবে ধারণ না করে, অন্যকে ধর্ম পথে ফেরাবার বদলে তাকে খুন করে কি আমরা ধর্মকে রক্ষার মতো নির্বুদ্ধ সাহস দেখাচ্ছি না? নিজেদের অজ্ঞতায় কি আমরা ধর্ম পালন বাদ দিয়ে অধর্ম করছি না?

প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি প্রত্যাশা করছি বন্ধু‘রা.....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন