সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

শ্রদ্ধায় রতনতনু স্যার



ছোটভাইয়ের সাথে সম্পর্কের কারনে চার-পাঁচবার আমাদের বাসায় শ্রদ্ধেয় রতন তনু স্যারের পদার্পন হয়ে ছিল এবং স্যারকে একেবারে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। ভালো মানুষের সংজ্ঞা আগে খুঁজলেও এখন খুঁজি না, কিন্তু মানুষটাকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন তারা জানেন কতটা নিখাদ ভদ্রলোক ছিলেন তিনি। সন্তান-সন্ততিহীন যে পিতা নিজের লেখাকে সন্তান বানিয়ে বেঁচে ছিলেন, সমস্ত মন-প্রাণ ঢেলে যিনি সন্তানগুলোকে পরম মমতায় আগলে বড় করে তুলেছেন, সে সন্তানগুলোর কয়েকজনকে আগলে রাখার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলা একাডেমি তাঁকে বিশিষ্ট জন নিরুপন করতে পারে নি, এ সত্যি আমাদের জন্য হতাশাজনক বাতা! ৫২ বছরের পরিসমাপ্ত জীবনের যাঁর ৭০ খানা বই প্রকাশিত হয়েছে, যাঁর বই বাংলা একাডেমি কর্তৃক সংরক্ষিত হয়েছে, যিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য, যাঁর লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অনেকস্থানে পঠিত হয়েছে, যার বইয়ের সূত্র ধরে অনেকে থিসিস কিংবা গবেষণাপত্র, ক্রোড়পত্র লিখছে, তিনি নাকি বাংলা একাডেমির চোখে বিশিষ্টজন নন। আর তাই তাঁর মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শ্রর্দ্ধাঞ্জলির সুযোগ মেলে নি।

অনেক ভেবে দেখেছি, তেলমর্দনে তেলাক্ত করতে পারলে কে কি লিখেছে সে বড় হয়ে উঠে না, বরং জন বিশিষ্টজনে পরিনত হয়। আর তার পরিনতির মুখোমুখি হতেই আমাদের পথও দ্রুত এগিয়ে চলছে।পরিনতি যখন নিশ্চিত, তখন মর্দনের তেল উৎপাদন ব্যবস্থা না থাকলে, একদিন হয়ত খুনোখুনিই লেগে যাবে। যাক যা হবার তা হয়ে গেছে, অন্তরের আহত ক্ষতগুলোকে জমিয়ে রেখেই স্যারের জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থণা জানাই, তিনি যেন তাঁকে স্বর্গবাসী করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন