বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

মেস জীবনের অধ্যায়

নিচতলায় অবস্থিত তিনরুমের একটা ফ্ল্যাটে আমাদের সাত জীবিত (ব্যাচেলর) আর এক মৃত (বিবাহিত) এর বসবাস। যার মধ্যে একরুমে থাকি আমি, আমার পিচ্ছিকালের (বিদ্যালয়ের) বন্ধু সুমন আর আড্ডাবাজ বন্ধুগ্রুপের এর বন্ধু করিম। আমরা তিনজন নোয়াখালীর। অন্য আরেক রুমে পিশাত ভাই সুব্রত আর তার বিদ্যালয়বেলার বন্ধু শরিফ, তারা দুজন লক্ষ্মীপুরের। আর শেষ রুমটিতে থাকে সুমনের বিএসটিআই এর অফিস কলিগ মোশারফ ভাই (কিশোরগঞ্জ), আরিফ (লক্ষ্মীপুর) আর মিনহাজ (কুমিল্লা)। আরিফ আর মিনহাজ দু‘জনেই সুব্রতের ডিপ্লোমার বন্ধু। যাই হোক- যে প্রসঙ্গ ধরে সবার পরিচয় একে-একে দিচ্ছিলাম, সে প্রসঙ্গেই ফিরি।

গতকাল, তখন রাত ১২:৩০ কি তারও একটু বেশী। আমরা বাসায় সাধারনত সবাই ঘুমুতে-ঘুমুতে রাত একটা কি দুটা বাজে। আমি বালিশে হেলান ফেলে আকাম করছিলাম :P (ক্যান্ডিক্র্যাশ সোডা খেলছিলাম), মিথুন ডেল কার্নেগী সমগ্র পড়ছিল। আরিফ জাভা এনড্রয়েড প্রোগ্রামীং নিয়ে ব্যস্ত আর আরিফের ছোটভাই পিয়াস (ঘুরতে এসেছে) আর মোশারফ ভাই মোবাইলে ব্যস্ত, শরিফ মুভি দেখছে আর সুব্রত শরিফের সাথে মুভি দেখার পাশাপাশি ফেসবুক আর পত্রিকা নিয়ে ব্যস্ত। অবশ্য মিনহাজ আর করিম বাসায় ছিল না। মিনহাজ অফিসের কাজে শেরপুর আর করিম ব্যক্তিগত কাজে বাড়িতে।

আমার রুমটা ডোকার মুখেই। হঠাৎ জানালার কাঁচে একটা মাথা। বন্ধু সুমনকে বললাম মিথুন (এ নামেও তাকে ডাকি) দেখ জানালার পাশে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখা যায়। আমাদের বাউন্ডারিতে চারটা বিল্ডিং সেফারেট বাউন্ডারী করা। এর অংশিদাররা সম্পর্কে সবাই ভাই-বোন। আর ইউনুছ মিয়া বাসার দারোয়ান। ইউনুছ মিয়াকে দেখলে একটু অবাকই লাগে, যতক্ষন তাকে দেখী ততক্ষনই ওর চোখ তার এনড্রয়েড ফোনের মধ্যে। একজন মানুষ কি করে একটা বিষয় নিয়ে এতটা সময় মজে থাকতে পারে সে আমার চিন্তার বাহিরে। তার একটা কুকুর আছে, অপরিচিত কাউকে ও বেশ বিরক্ত করে। পেছন-পেছন ছোটে আর গেঁউ-গেঁউ করে। মিথুনকে ইউনুছ মিয়ার মাথা দেখাতেই মিথুন বই বন্ধ করে জানালা দিয়ে সবেমাত্র উঁকি দিয়ে ইউনুছ মিয়াকে কিছু বলতে যাবে, তখনই ও দেখল পুলিশ বাহিনী আসছে। মিথুন জানালার পাশ থেকে আমার দিকে সরে এসেই বলল পুলিশ আসছে। আমি ওর কথাটা মজা হিসেবে নিয়ে আবার খেলায় মন দেব, ঠিক তখনই দরজায় নক পড়ল। আরিফ উঠে দরজা খুলে দিল। সাথে-সাথে ৮ জনের পুলিশ আর বিজিবি সদস্য আমাদের ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ল। ঢুকেই তারা ভাগ হয়ে আমাদের তিনরুমে তল্লাশি চালাতে শুরু করল। আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাগ কাপড়-চোপড় চেক করার পর, টেবিলে বইয়ের তাক পর্যবেক্ষন করতে শুরু করলেন। টেবিলের উপর অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি “আ'মালিয়াতে কোরআন” আর “মৃত্যুর আগে ও পরে” নামক দুটি বই ছিল। আর বিছানায় পড়ে ছিল মিথুনের পড়তে থাকা “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তল্লাশি করতে থাকা পুলিশ “আ'মালিয়াতে কোরআন” হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আমাকে প্রশ্ন করল- বিছানায় বইটি কিসের? আমি জানালাম “ডেল কার্নেগী সমগ্র”। তারপর বন্ধু করিমের টেবিলের ঢাকনা খুলে ঔষধের বোতল খুলে জিজ্ঞাসা করল- এটা কি? বললাম ঔষধ।

আকস্মাৎ অনাকাক্ষিত ঘটনায় কিছুটা বিব্রতবোধ করলাম, কিছুটা শঙ্কাও! মূলত আমরা আমাদের মোটামুটি ভালো করেই চিনি। প্রায় দু‘বছরের মতো একত্রে থাকছি, পাশাপাশি আমদের ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্তমান। আর সবাই বেশ রকমের ধৈর্য্য-শৈর্য্যশালী (কারণ আমাকে যারা সহ্য করে স্নেহ-সন্মান দেখায়, তারা সে না হয়ে পারে না।)। তাছাড়া আমি ব্যতীত (নিজের কথা নিজে বলা যায়?) কখনও কারও আচারনের কোনপ্রকার উগ্রতা কিংবা কোনপ্রকার অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে নি। তাই নিজেদের নিয়ে আমার শঙ্কা ছিলনা, কিন্তু বর্তমান পুলিশের ঘটনাগুলো কম-বেশী জানা থাকায় তাদেরকে একটু সন্দেহের চোখেই দেখছিলাম আর খেয়াল রাখছিলাম, তারা না অস্বাভাবিক কিছু করে ফাঁসিয়ে দেয়।

যা হোক নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাস বলবৎ থাকায় আর পুলিশের আমার রুম তল্লাশি করা শেষ হলে, আমি কিছুটা স্বাভাবিক মনে আবার খেলতে শুরু করলাম। আরিফ রুমের সবচেয়ে ছোট মানুষ আর মোশারফ ভাই ছুন্নতি আলেম মানুষ, দু‘জন একটু বেশী ঘাবড়িয়ে পড়ায় পুলিশের জেরার মুখে পড়ল। আমি যখন খেলায় মনোযোগ দিলাম, তখন দু‘জন পুলিশ এসে আমার পাশে বসে আমার তামশা দেখছে, একজন চেয়ারে বসে-বসে ঝিমুচ্ছে। কিছুক্ষন আমার তামশা দেখার পর- একজন পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করল- কি? ইন্টারনেট চালান? তাহলে কম্পিউটার চেক করতে হবে। একথা বলে আমার কাছ থেকে ল্যাপটপ চাইলে আমি দিলাম, কিন্তু বেরসিক পুলিশ আমার খেলাটাকে মিনিমাইজ না করে কেটে দিয়ে ব্রাউজার ওপেন করে ব্রাউজারের রুপদর্শনপূর্বক কেটে দিয়ে আমাকে ল্যাপটপ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন একটা জিমেইল খুলতে। আমি বুঝলাম তিনি কম্পিউটার হাতে ধরলেও এখনও ওটায় অতটা অভ্যস্ত হতে পারেন নি। তাই আমি ওকে স্যার বলে খুললাম, তিনি তার দেয়া একটা আইডিতে লগিন করে একটা মেইল পাঠাতে বললেন। তা করে দিলাম। ব্যস্ স্যার খুশি হয়ে আমাকে বিভিন্ন উপদেশ প্রদান করতে লাগলেন, আর সাবধান থাকতে বললেন। বললেন- কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত কিছু দেখলে বা অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়লে যেন পুলিশকে জানাই। আমি বললাম- ঠিক আছে স্যার।

রাত একটার মধ্যে পুলিশের সব চেক করা আর কথাবার্তা বলা শেষ হলে তারা বেরিয়ে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে, কিছুক্ষন হাসি-ঠাট্টা চলে। তারপর প্রত্যেকের নিজের রুমে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি চলে। শুতে যাবার আগে মিথুন জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখে- আমাদের মালিকের বোন আমাদের মুখোমুখি বিল্ডিংয়ের দোতালা থেকে আমাদের রুম আর আমাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষন করছে। মিথুন বলল- অবিবেচক, আন্টি দোতালা থেকে তামশা দেখছে। মনে হয় আগামী মাসে বাসা ছাড়ার নোটিশ পাব। আমি বললাম- এত সহজ? কি অন্যায়ে ছাড়ব? এরপর আরও কিছুক্ষন দু‘বন্ধু কথা-বার্তা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে অফিসের প্রস্তুতি নিয়ে বেরুতেই দেখলাম, আন্টির স্বামী টাংকির পানি চেক করছে। আমাকে দেখে কিছুটা সন্দেহের দিকে তাকাল মনে হল। ভাবছি- তবে কি মিথুনের ভাবনা সত্য? বাসা ছাড়ার নোটিশ মিলতে পারে? যদি তাই হয়, তবে বাসা ছাড়ার কষ্টে আমি কিন্তু মিথুনকে আচ্ছা ধোলাই দেব। বলব- কুফা তুই ঐ কথা মনে করাতেই তো বাসা ছাড়ার নোটিশ এল..

সময়ের পরিবর্তন

সময় বদলাচ্ছে, জীবন বদলাচ্ছে
বদলাচ্ছে মুখের ছাপ
ভাব বদলাচ্ছে, অনুভব বদলাচ্ছে
জড়াচ্ছে দুঃখ তাপ...

[ছোটবেলায় খুব রোগাটে আর পিচ্ছি থাকায়, আমাকে নিয়ে মায়ের কষ্টের অন্ত ছিল না। শারীরভাবে উর্বর করতে মায়ের সে কত কি প্রচেষ্টা ছুটোছুটি। আবছা মনে আছে- ষষ্ঠ কি সপ্তমশ্রেনীতে থাকাকালে আমার শারীরীক উন্নতির জন্য মা আমাকে ৭-১০ টি ভিটামিন ইনজেকশন করিয়েছিলেন। সে ইনজেকশনের যন্ত্রণা মনে পড়লে আজও আতকে উঠি। কমচে কম ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা এই ইনজেকশনের ব্যাথা থাকত। কিন্তু সব রকমের প্রচেষ্টা চালিয়েও মা আমার তার ছেলেকে মোটা দেখতে ব্যর্থ হল।

আজকের দিনটাতে দাঁড়িয়ে কিছুটা আপসোস, আক্ষেপ আর বুকভরা কান্না আড়াল করা ছাড়া কিছুই করার নেই। মাকে হারিয়েছি ১০ বছর গত হবার পথে। অথচ যে চেষ্টা করে মা ব্যর্থ হয়েছে, যে শরীরের ক্রমাগতবর্ধনে এখন নিজেই ভীত হচ্ছি। ইতোমধ্যে ৭০ কেজি ওজনের সাথে লড়তে শুরু করেছি।]

বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?

প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অফিসের কিছু অর্থ খুইয়েছি বেশী দিন হয় নি। গতপরশু আবার আরোক প্রতারক চক্রের কল। কল দিয়ে বলল- হ্যালো গ্রামীণ ফোন থেকে বলছিলাম। বুঝতে পেরে তাকে- জিজ্ঞাসা করলাম, কদ্দিন যাবৎ চাকুরী করছেন? বলতেই- গালি করতে করতে কলটা কেটে দিল। অফিসে থাকায় গালিগুলো শুনে হজম করা ছাড়া কিছুই করার কিংবা বলার ছিল না।

শালার ভাগ্য আর সময়টাই দেখুন!!

প্রতারণাও করবে আবার গালিটাও দিয়ে আরামে কেটে যাবে। আর আমি শালা বুঝে-শুনেও মুখে কুলুপ এঁটে, বুকের যন্ত্রণা চেপে, সব সহে গেলাম?

প্রসঙ্গ ফেসবুক

ট্যাগ করলে খুবই বিরক্তি লাগে আর রাজনৈতিক ট্যাগ হলে আরও বেশী। সবাইকে অনুরোধ করছি আমাকে কোনপ্রকারের রাজনৈতিক ট্যাগ করবেন না। আমি কোন রাজনৈতিকের টাকায় কখনও এককাপ চা কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের অনুদানের পয়সায় একটা বিস্কিটও খাই নি। ছোটবেলায় বাপ-কাকার উপার্জনের টাকা খেয়ে বড় হয়েছি আর এখন নিজের শ্রমে খেয়ে বাঁচি। যেহেতু কারও খাই না এবং খাবার ইচ্ছেও নেই, তাই কারও প্রচার-প্রচারণামূলক পোষ্ট আমার ব্যাক্তিগত টাইমলাইনে এসে ভীড় করবে এ আমার অসহ্য।

আমার ব্যাক্তিগত মতাদর্শ আছে, আছে আমার ব্যাক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ। আমার কাউকে পছন্দ হলে কিংবা তাঁর মতাদর্শ আমার ভালো লাগলে- সে আমি নিজের ওয়ালে প্রকাশ করি কাউকে বিরক্ত করা ছাড়াই। তবে অযথা আমাকে ট্যাগ করে বিরক্ত করা কেন?

সত্য আড়াল

চোখের সৌন্দর্য্য আর মনের অনুভূতি, জীবনের অনেক সত্য আড়াল করে।

সৌন্দর্য্য আর প্রেম

সৌন্দর্য্য অনুভব আর প্রেম অনুভূতি
সৌন্দর্য্য ছুঁয়ে দিলে রুপ হারায় আর প্রেম দু‌হাতে জড়িয়ে নিলেই নিঃস্তেজ হয়ে পড়ে

উছন্ন

নয়নাভিরাম প্রেয়সীর প্রেম বন্দনায়
তুলতুলে গাল আলতো ছুঁলে-
সরে দাঁড়ায় সে
বলে- সখা হে
ক্ষয়িষ্ণু রুপে মজ না বলি এত
পাবার মত হইও ব্যাকূল তত
রাখিও মনে-
লাজুক লতা লাজে যায় ঝরে
রুপের পসর ছুঁলে যায় খয়ে
মাঝখানে সব ভূলের অবয়ব
অষ্টাদশির উছন্নের কলরব।

আবেদন

হিমবুড়ী আসছে চুপি-চুপি
তুমি তার সাথে আসছ কি?
তুমি না এলে শীতকেও কর মানা
ঘাসের শিশির চরণ যেন ছৌঁয় না
ভালোবাসাবিহীন জীবন বড্ড একা
শিশির শীহরণে খাচ্ছে কেবল ধোঁকা!!!

ধিক্কার

ইচ্ছে না থাকলেও একবার ভাবুন- মানুষ কতটা হিংস্র জানোয়ার হলে ঠান্ডা মাথায় ২0 জন নিরীহ মানুষকে গুলি করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে-কেটে প্রতিটি মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত করতে পারে? শুধু তাই নয়- কতটা নিকৃষ্ট জানোয়ার হলে, মৃত্যুর মিছিলে বসে হাতের-শরীরের রক্ত মুছে শেফকে দিয়ে নিজেদের পছন্দের খাবার বানিয়ে নির্বিকার মনে বসে পেট পুরে খেতে পারে? এদের বাঁচবার অধিকার আছে?

আর উপরের ঘটনায় কাদের প্রতি সিমপ্যাথি দেখাবার কথা? নিশ্চয়ই সে সব অসহায়দের জন্য, যারা পরিবার-পরিজন ছেড়ে বিদেশ-বিভূইয়ে নৃশংস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

অথচ টাইম-লাইনে ভেসে বেড়ায় সেসব জঙ্গি নেকড়ের বিভৎস ঘৃণ্য ছবি আর তাদের জন্য বিবেক বোধহীন অসংখ্য মানুষের ব্যাকুল রোদন সাথে রুপের স্তব-স্তুতি।

রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৬

যদি অভিমানী আঁখিজলে

যদি অভিমানী আঁখিজলে মুছে কাজল
ধরিয়া রাখিও প্রিয়ে পাতিয়া আঁচল
বিরহী পাখি যবে উড়ে যাবে দূরে
দেখিব কত কাজল রাখিলে আঁচলে।

যদি

যদি বন্ধু হও!!!
সামনে দাঁড়াও
কথা কও
সুরে গাও
দেখি প্রানের পরে মনের কথা গানের সুরে।

যদি প্রিয় হও!!!
ধরা দাও
পাশে দাঁড়াও
হাতটি বাড়াও
প্রেমপ্রেয়সী পাশে থাকুক হাতটি রাখুক হাতের পরে।।

তোকে দেখে

তোকে দেখে-
লজ্জার মাথা খেয়ে, চোখ রাখি চোখে।

বেহেস্তকামীদের সমস্যা কি?

বেহেস্তকামীদের সমস্যা কি?

আরে ভাই, তোরা বেহেস্তে ৭০ হুর নিয়ে উল্লাস করবি আবার দুনিয়াতেও কাফেরের রক্ত নিয়ে উল্লাস করবি?

আরে- কাফের‌রা তো এমনিতেই পরকালে দোজগের আগুণে জ্বলতে থাকবে বলে নিশ্চিত হয়েছে, তাদের দুনিয়ার বাতাসটুকু অন্তত শান্তিতে নিতে দে।

নাকি দুনিয়াতে তাদের এইটুকু সুখও সহ্য হচ্ছে না? নাকি পরকালের দোজগের আগুণের ব্যাপারে তোদের সন্দেহ আছে?

তবে বল- দুনিয়াতে কাফেরের এই সামান্য সুখ নিতে পারছিস না, জান্নাতে অন্যের সেই মানের ৭০ হুর দেখে সইতে পারবি তো?

(বি. দ্র- এই পোষ্ট বিশেষ কারও পক্ষ নিয়ে নয়। এই পোষ্ট আক্রান্ত সাধারন অসহায়েদর পক্ষে, এই পোষ্ট ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির ধরুন আমার মত আর যারা কাফের খ্যাতি পায়- তাদের জন্যে।)

যে যেতে চায়

পুলিশের আইজিপি (এ কে এম শহীদুল হক) বলেছেন, আটক জঙ্গিরা বলে, ‘আমাকে মেরে ফেলেন। আমি জান্নাতে যাব।’

প্রত্যেকের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার আছে, আছে বাসনা পুরণের অধিকারও। অথচ প্রশাসন অকারণ হস্তক্ষেপ চালাচ্ছে।

যে যেতে চায় তাকে যেতে দিতে হয়, তাকে যেতে দেওয়া উচিত। না হলে সে যার যাওয়ার ইচ্ছে নেই, তাকে নিয়ে যাবার সুযোগ খুঁজে।

নিঃখাদ ভালোবাসা্ ও দেশপ্রেম

নিঃখাদ ভালোবাসা কাকে বলে? সত্যিকারের দেশপ্রেমিক কারা?

ভালোবাসা তখনই নিখাদ হয়, যখন তা বিনিময় বিহীন হয়।
মা-বাবা জানে তার কোলের কন্যা সন্তানটি একদিন তাদের ছেড়ে অন্যে ঘরের কেউ হবে, জানে- তাঁদের ছেলেটি একদিন তাঁদের পথে ফেলে দিতেও হয়ত দ্বীধা করবে না। তবুও তাঁরা কন্যাটিকে, তাঁদের ছেলেটিকে নিজের শরীরের হাজার ছোট-জখমের বিনিময়ে কোমল রাখতে উদগ্রীব থাকে।

নিখাদ ভালোবাসা বাসতে পারে একজন কৃষক। সারাদিন মাঠে পড়ে আগুণে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল বুনে। অথচ তিনি জানেন এই ফসলের দশভাগের একভাগও তাঁর উদর নিবৃতের জন্য নয়। তবুও সন্তানের মমতায় আগলে তিনি ফসল বুনেন, ফসল উঠার আগ পর্যন্ত হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা ঢেলে ফসলের যত্ন করেন।

নিখাদ ভালোবাসা দেখাতে পারেন একজন শ্রমিক- তিনি পরম মমতায় অন্যের জন্য বড়-বড় দালান-কৌঠা, পথ-ঘাট গড়ে তোলেন প্রতিটি রক্তঝরা ঘামের দামে। অথচ এই দালান-কৌঠা, রাস্তা-ঘাট কোনটিই তাঁর থাকবার বা চলবার নয়।

আমরা একটু দানবীর হলেই তাকে শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিকের খেতাম দেই! রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অলংকৃত করে শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিকের আসন প্রদান করি! অথচ জানতে চাই না- দানবীরের অর্জিত সম্পদের খাত, বুঝতে চাই না নেতা-মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর সাচ্চা দেশপ্রেমিক সাজার পেছনে কাক্ষিত থাকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার বাসনা।

আগে অনেকবার লেখেছি- মনের ভেতরে পুড়ে-পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া প্রেমিকের প্রেম খুব কম প্রেমিকাই বুঝতে চেষ্টা করে। অথচ ভালোবাসি-ভালোবাসি বলে মুখে ফেনা তোলা লাফাঙ্গারই প্রতারণা ফলাবার আগ পর্যন্ত প্রেমিকার কাছে শ্রেষ্ঠ প্রেমিক বলে বিবেচ্য হয়!