বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫

যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে প্রিয়গো না ভরে আঁখি

যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি
বলো বলোগো কি আর থাকে বাকী,
প্রিয়গো কি আর থাকে বাকী....

শরতের শিশির ঝর-ঝর আড়ালে কি তার আছে
কেন এত ভালোলাগা অকারন এ জীবনে আসে
মরমের ভালোবাসা কেন এত ডাকে বলো দেখী
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

চেনা টানে চেনা সুরে গায় যখন আড়ালে বিরহী পাখি
উতলা হৃদয় পুড়ে মেঘধারায় ভেজামন যায় প্রিয় ডাকি
বিরহ বিনা প্রেম আবেগী মধুর দিন চায় কি
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

এই সে দান প্রিয় এই সে দান
ভালোবাসার অশ্রু বেড়ে যে দান হয় মহিয়ান
জানে শুধু অর্ন্তযামী ব্যকুলমন প্রিয় আঁশে পায় কি
যদি ঐটুকু অশ্রুসুখে
প্রিয়গো; না ভরে আঁখি

কেটে যাবে তোমার দুখ?

তোমার রেখে দেয়া স্মৃতি যদি
হীরের মূল্যে কেউ কিনতে চায়
অনাদরে তারে দেবে কি বেঁচে
দুর্মূল্যের এই বাজারটায়?

যুগের পাঁজর কেটে-কেটে
জমা হয় যে কয়টা অশ্রু-সুখ
হীরের মূল্যে সে কি গো বেঁচে
কেটে যাবে তোমার দুখ?

আমার এ মনের দুঃখ কেমনে যাবে?

আমার এ মনের দুঃখ কেমনে যাবে?

হল কি- একদিন একটা পিচ্ছি কাঁদছিল- আমি বলল, এই পিচ্ছি না বুঝি কাঁদছ কা।
এম্মা, একটুখানি পিচ্ছি কান্না থামায়ে আমারে কয়- ধাতি দিমু।
আমি চোখ রাঙ্গায়ে ভারী গলায় বললাম- এরই....
পিচ্ছি আমার কোন বিষয় আমলে না নিয়ে বলল-ওপ, ধাতি দিমু।
এদিকে আমার ত মান-সুলোমান টিকানো দায়, তাই আমি গলা আগের চেয়ে আরও একটু ভারী করে বললাম, বোপ।
একথা বলতেই পিচ্ছি বাড়ি-ঘর কাঁপায়ে কান্না জুড়িয়ে দিল,
আমি উপায়ান্তু না দেখে পিচ্ছির নিকটজন কেউ আসার আগেই কেটে পড়লাম।

বলি এই জীবনে পিচ্ছিদের কাছেও আমার দাম নাইক্ক...

মহিমাণ্বিত করে

মননশীল কর্ম ব্যক্তিকে মহিমাণ্বিত করে ব্যক্তির আচারণ কিংবা চরিত্র নই। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তির আচারণ তার মৃত্যুর সাথে-সাথেই সমাহিত হয়।

অনুকাব্যগুচ্ছ- ০২

(১)

আকাশের বুকে মনের রঙ্গে
এঁকে দেই যদি আল্পনা
তোমার বিভোর মনের ঘোর কেটে কি
তাকে একটু ছোঁবে না?

(২)

বাপ জুগিয়েছে ছেলে খাবে
জমে যাক এমন গল্প
অলস আমরা কাজ কি মোদের
কিসের ভবিতব্য!

(৩)

এসো হে বিনোদিনী, বিরহী ব্রজবাসিনী
তব নয়নে হৃদয় মজায়ে, তপস্বী ধ্যানে মজে
ওহে অপলক গোপনে, শিয়রে শিহরণে
স্বপন আলাপন সকাল-সাঁঝে....

মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৫

অনুকাব্য গুচ্ছ-০১

(১)

ওরে উজান-ভাটির গৌরী -
তোর বুকের ঐ ঘোলা জলে
নিবি কি আমায় ডুবসাঁতারে?

(২)

হিংস্র হায়নার সামনে বসে, এঁকেছি বিজয়রেখা
যে রেখায় হল বিনিময়- এক সাগর রক্ত, একটি পতাকা।


(৩)

বুলেট যদি মাথায় ঠেকে
বাঁচব কিসে আর?
মন ভাঙ্গিলে সংসার কিসের?
জীবনই ত ছন্নছাড় ।

(৪)
বিষদাঁত পীড়ায় যার
মধুর বচণ
শুনিলে তুষের অনলে
পুড়িবে জীবন।

(৫)

বিষ গিলে ঝিনুকের
হয় মুক্তো সাধন
তবে কেন অমৃত আঁশে
সকলের রোধন?

জীবনরে বেচে দিলে মিলবে কি একমুঠো সোনালী আলো

জীবনরে বেচে দিলে মিলবে কি একমুঠো সোনালী আলো
ও জীবনরে- বিলিয়ে দিলে অনাদরে, ক্ষয়ে যাবে কি অন্তরের কালো

জীবনরে ইচ্ছে মত পুড়িয়ে নিলে ভস্ম ছাইয়ে মিলে কি কোন সোনার কনা
ও জীবনরে ভাসিয়ে দিলে অবেলার স্রোতে, দাম মিলে কি তার দু‘চার আনা।

ও জীবনরে তোর চাওয়াতে উড়ে চলি, চাতক পাখির মতো
জীবনরে তৃষ্ণায় ছাতি ফাটে তবু প্রেয়সি মেঘে ঘুরি অবিরত
জীবনরে অভিশাপের এই মোহনায় সুখ কুড়োতে যাই কার সে সীমানায়
ও জীবনরে চোখের দেখায় ঝাপসা দেখী, খুঁড়ে চলে স্বপ্ন অজানায়।

ও জীবনরে বনের বাঘে খাচ্ছে হরিন ছুটছে সবে রণে
জীবনরে গোপন মন্ত্র জপতে-জপতে ছুটি বৃন্দাবনে
জীবনরে ওপাড় স্বর্গে এপাড় পুড়ে কেন করলি বনাচার
ও জীবনরে বিবেক ধ্বংশ মগ্ন নেশায়, ছুটে শেষ কৈলাশপাহাড়।

ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর

ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর
ও তুই পরের ঘরে থাকিস পড়ে, আপন করিস পর।

ভাবিস কত আপন তোর
ইট-পাথরের দেয়াল তুলে বাঁধবি আপন ঘর
ওরে উড়ু-উড়ু মনের খেলায়, পড়ে যাস ঠিক পথের উপর
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

তোর চলন ভালো নয়
দেহ পচে মনটা পচে উপায় কি আর রয়
ও তোর রুগ্নচেতন ইষ্ট কিসে, কি বয়ে দেহপীঞ্জর ক্ষয়
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

ভেবে নিলি জগতেই সব তোর
ভোরের আশায় জাগিস তবু কাটে না যে ঘোর
ও তুই মাঝনদীর উত্তালে পড়ে, কেঁদে ডাকিস কোথায় প্রানেশ্বর
ক্ষ্যাপা তুই বাঁধবি কোথায় ঘর
ও ক্ষ্যাপামন বাঁধবি কেমনে ঘর

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বোঝার ভূলে

তুমি হেলায় ঠেলে দিলে বলে
এ জীবনে বিদ্ধ আমি এমন
তোমার বোঝার ভূলে রাখি তুলে
আজও যা মনে গোপন

বেঁচে থাকার গল্প

তবুও বেঁচে থাকতে হয়-
রাতের আঁধারে ডানা ঝাপ্টিয়ে গন্তব্যে ফেরা পাখির মত
রাস্তারধারে অনাদরে অকারণ বেড়ে উঠা আগাছার মত

বেঁচে থাকার অভিনয়ে ভাঙ্গা কুঁড়োঘরে জমে বর্ণিল নুড়ি
আলো কিংবা বাদলে অঘোর ঘুম ভাঙ্গে সুখ সঞ্চায়নে
বিদির্ন স্বপ্নের বিচিত্র নেশা অহেতুক হানা দেয় মনে

দ্যোদুলমান এ জীবন-
একে রং চংয়ে সাজিয়ে একটু রঙ্গিন করে তোলা গেলেই
অযাচিত পথচারি বেশে ঠুকরে চলা প্রতিটি পায়ের ছাপে
সহজেই এঁকে নেয়া যায় বেঁচে থাকার রোমাঞ্চকর গল্প...

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ

রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আগ পর্যন্ত খুব কমজনই জীবনের তিক্ততার ব্যাপারে সজাগ হয়।

বলতে চাইছি

বর্তমানে বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটিরও অধিক।

সরকার ২১ লক্ষ সরকারি লোককে হাতে রাখতে তাদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুন করেছে। সাথে দ্বিগুনের অধিক হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ সামরিক কিংবা আধা-সামরিক বাহিনীর বেতন। আর বাদবাকী যে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ আছে, যারা দিনমজুরে কিংবা বিভিন্ন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে, তাদের জন্য সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই।

সরকার সরকারী কর্মচারী কিংবা কর্মকর্তাদের এই বর্ধিত বেতনের ধরুন খাদ্য কিংবা নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রবাদির উপর যে প্রভাব পড়বে তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? নাকি সরকার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদে বাকীদের এদেশে অবাঞ্চিত ঘোষনা করবে?

সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বর্ধিত বেতনের কারনে সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে অসাধু উপায় আর ঘুষ বানিজ্য বন্ধ হবে! কিন্তু আমি বলতে চাইছি যারা এতদিন ধরে ঘুষ খাওয়ার এত-এত সুচতুর কৌশল আয়ত্ব করেছে, ঘুষের রকমারী পণ্থা আবিষ্কার করেছে, সর্বোপরি নিজেদের লালসার জিহ্বাকে এত-এত ভারী করে তুলেছে তাদের এই কর্মকান্ডকে সরকার ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় বন্ধ করবার চিন্তা করছে? আর কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে অসৎ উপায় ঠেকাতে কিংবা ঘুষ বানিজ্য বন্ধ বাস্তবায়নে?

নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়

এইযে; যে জায়গাটিতে আপনি আছেন- এখানে জীবনের প্রতিটি প্রদক্ষেপ আপনাকে অনুৎসাহিত করবে। আপনার মন অনুচ্চারিত আগামীর যে সুন্দর প্রভাতটির প্রতীক্ষা করছে- সে প্রভাতটিকে আরও বীষময় করে তুলবে। আপনার চলার প্রতিটি বাঁক‘কে সে আরও বাঁকিয়ে তুলবে, জীবনের প্রতিটি কৌঠর‘কে কদার্য্য করে তুলবে, যদি আপনি মানুষ থেকে থাকেন।

এখানে কেবল মানুষদের কথা বলা হয়েছে। কারণ একজন মানুষ মানুষ হয়ে প্রতিদিন হাজারো হতাশা, রূদ্ধশ্বাস, স্বপ্নের অকাল মৃত্যু, চারপাশের এত-এত যন্ত্রণা-বঞ্চনা-গঞ্জনা, ধর্ষন, ক্ষমতার দম্ভ, অহংবোধ, স্তুপকারে জমা হওয়া লাশের সারি, মৃত্যুতে ঠেলে দিয়ে নৃশংস উল্লাস এসব কোনক্রমেই নিজের বিবেকে বইতে সক্ষম নয়।

বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী

শুনি দুনিয়াতে সবচেয়ে বড় আদালত মানুষের বিবেক।

যেখানে মানুষের বিবেক পচে দূর্গন্ধ ছড়ায়, সেখানে সঠিক বিচারের প্রত্যাশাও বোকামী।

বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়

বীরেরদল বীরত্ব দেখিয়ে সন্মানিত হয় আর বাঙ্গালীর বেশীরভাগই বীরত্ব দেখিয়ে চোর-লুটেরা হয়।