রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

অবাধ্য প্রেমিক

তখন স্বপ্নটাকে ছুঁলে আর দুটো হাত নাগাল ফেলে
আমিও তোমার মত কারও অবাধ্য প্রেমিক হতাম!

সহসায় বাতায়নে বসন্ত দৌলা দেয়
সব আকাশেই পাখিরা ডানা মেলে উড়ে
কখনও নীলঘন মেঘে, কখনও আবার সাদা
কখনও অন্তঃধ্যানে গুড়ু-গুড়ুম বা এক চিলতে বৃষ্টিতে
ভেজামন হারায় তোমার- আমার কিংবা আমাদের
যদি উপাস্য হতে, আমিও হাত ধরে তোমারি হতাম!

মনের বিষূবরেখা এড়াতে পারি না-
একাকি সঙ্গোপনে এলোকেশী এলে
তাকে এড়িয়ে যাব এতটা কঠোর তো নই...
বরং হৃদয়ের ভূ-খন্ড চিরে গড়তে রাজি ছিলেম
সবুজ বনায়ন, তৃষ্ণার্থ পাহাড়ের স্রোতধারা
সংকোচ কেটে অভয় দিলে, সেই কেবল বলে ফিরতাম!

নব জলপ্রপাতের ধারা ব্যাকুল বাসনায় ছুটে
ঘাস ফড়িং ছুটে ফেরে সবুজের কোমলতা ছুঁয়ে
অথচ আপনাকে বারবার হারিয়েও ফিরি আপনায়
কেননা অন্তরের বেচা-কেনা এত সহজ নয়
অনুপযুক্ত লেন-দেনের হিসাব কষে নেয়াও সহজ নয়
তাইতো চোখের জলুস ফেলে পথ ফেরে গন্তব্যে
আর বাসনারা ব্যাহত কাতরতায় বলে যায়-
পরস্পরের সম্মতি মিললে আমরা হয়ত কুটির গড়তাম!

সুন্দরের মহিমা কেমনে খুঁজিতে?

মনের মাপকাঠিতে মেপে
সুন্দরের মান ধরি
অসুন্দর আছে বলে হই
সুন্দরের পূজারি।

যদি কুৎসিত কদাকার কিছু
নয়নে না পেতে
জগতে সুন্দরের মহিমা
কেমনে খুঁজিতে?

ঋৃণ


হে মাটি-
দিয়েছ যা অশেষে ক্ষমা গ্রহনে
তাহার কি প্রণামি না জানি মনে...

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে

শ্রদ্ধার স্থানটুকু ধরে রাখতে গিয়ে মাঝে-মাঝে নিজেকে অসহায় অবস্থায় ফেলেতে হয়। অথচ দিনশেষে সমস্ত অপমান ক্ষতি কেবল নিজেকেই বইতে হয়।

কোথাও কেউ নেই

কোথাও কেউ নেই
ডাঙ্গায় গাছ নেই, নদীতে জল নেই
সবুজ আর ঘাস নেই, আকাশে নীল নেই
শুধু তুমি আমি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্নে
আমরা কি শুধু বেঁচে ভাষাহীন নিরবে?

কোথাও কিছু নেই
সুখে হাসি নেই, দুঃখে কান্না নেই
বেদনায় আকুলতা নেই, কষ্টে বিষন্নতা নেই
তবু পাশাপাশি হাত ধরে দাঁড়িয়ে ভাবনায়
আমরা কি আগের মতো আছি সে?

অন্তরে গচ্ছিত ভালোবাসাটুকু

সকলে অন্তরে গচ্ছিত ভালোবাসাটুকু চোখের সৌন্দর্যে দেখতে চায় কেন?

ফালি-ফালি করে কেটে নাও

তোমার হাতে চাকু রেখ
আমার এ বুক পাতা আছে
ফালি-ফালি করে কেটে নাও
তোমার যা কিছু চাইবার আছে...

সকলে তুলিতে চায় ঘরে

অনাদরে কাননে ফুটে যে ফুল
সৌন্দর্য্য তাহার সবে না জানে
কাহার আদরে ফুটে যে ফুল
কুড়িয়ে সবে তা, টাকায় কেনে।

বুঝি বুঝি এথা
চিত্তের মর্ম ব্যথা
ব্যথাতুর হীয়ার তরে
অবহেলায় নয়
আদরে ফোঁটা ফুল
সকলে তুলিতে চায় ঘরে।

ভালোবাসা ছুঁয়ে দেখা কিংবা লেনদেন নয়

ভালোবাসা ছুঁয়ে দেখা কিংবা লেনদেন নয়, এ অনুভব আর পরস্পরকে বুঝতে শেখা।

সুখ আর ভালোবাসা

সুখ আর ভালোবাসা
দুটোকেই মানুষ কাগুজে টাকায় মাপতে চায়, কাগুজে টাকায় কিনতে চায়...

কিন্তু টাকার ওজনে কিনে যখন প্রকৃত ভালোবাসা হতে প্রত্যাহিত হয়, তখন মুমূর্ষু মর্ম বেদনায় দাহিত হয়।

সে যদি ভাসে মোরে ভালো

সে যদি ভাসে মোরে ভালো
আমিও চাহি তারে ভাসিতে
গোরা আঁখিতে নিভৃতে নিরবে
আমিও চাহি পথখানি ভূলিতে!

থেমে গেছে অল্পে

শৈশবের স্বল্প আলোর তেলের প্রদীপ নিভতেই
রাস্তার নিকষ কালোয় গ্রাস করত ধাঁ-ধাঁ-রা
ভূত-প্রেত, রাখাল-রাজা আর স্বপ্নপুরীর গল্পে

এখন নিয়ন আলোয় রাতগুলো দিনের মতো
আলোর পথ কমতে-কমতে মিলে গেছে পথে
আমাদের ভাবনার বিচরণও থেমে গেছে অল্পে।

তেনারা *

তেনাদের মাথা গরম করা প্রশ্ন শুনলে ইচ্ছে করে তুলতুলে গাল টেনে কাঁদিয়ে দেই। আজ তেনাদের একজন বাবার কাঁধে নিজের স্কুলের ব্যাগ তুলে দিয়ে হেলেদুলে হেঁটে চলছেন আর বাবাকে প্রশ্ন করছেন- "বাবা বাবা ডাব কি প্রথমে ছোট্ট থেকে তাপ্পর বড় হয়?"
বলেন তো এটা কোন প্রশ্ন হল? বলি আমার মতো সবাইতো এ ছোট্টবেলা থেইকা জানি, তেনা তবে কেন...
আমি এ কারনে তেনাদের কাঁদানোর পক্ষে

নানারে (বন্ধু করিম) নিয়া বহুত মছিবতে আছি!!

নানারে (বন্ধু করিম) নিয়া বহুত মছিবতে আছি!!

নানা কইল তার পরিচিত কলেজ-ভার্সিটির চেনা-জানা বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে আমাকে সংসারী বানিয়ে ফেলবে, শুনে মনে-মনে বেজায় খুশি হলাম, যাক একটা হিল্লে হল বলে, উদাসিন যাযাবর স্থায়ী আবাস পাবে বলে। এরপর নানা আমার পছন্দের ব্যাপারে জানতে চেয়ে বলে- তোদের তো টাইটেল-টুইটেল কি সব বাছ-বিচার আছে, তোর এধরনের সমস্যা নাই তো? কইলাম নানা বিয়েটা পারিবারিক হলে জামেলা এখনও আছে, যদি প্রেম-টেমের ব্যবস্থা করবার পারছ তো তার লগে লুকাইয়া সংসার পাইতা লমু!! নানা কয় আমার মতো বুইরার নাকি বেইল নাই, এখন ডাইরেক্ট পারিবারিক বিয়েতে যাওন লাগব। কইলাম তয়লে টাইটেল বিছরান লাগব। যা হোক নানা কইল সে ব্যবস্থাই লইব, শুইনা আমিও নানার ভরসায় পথ চাইয়া থাকলাম।

পরদিন নানা সুখবর লইয়া আসল, কইল দাদা তোর একটা ব্যবস্থা করে ফেললাম!! শুনেই আমি মনে-মনে খুশি, নানা একদিনে ব্যবস্থা করে ফেলল? যাযাবরের ঘর হতে চলল...?

এরপর নানা যা কইল, তাতে যাযাবরের ঘরের আশা কি, ছুটেই কুল পায়না...

নানা কয় সে নাকি ফার্মগেইট কোন দোকানে খেতে গিয়ে এক মহিলার শাখা-সিঁদুর দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করে জেনেছে, তিনি আমার টাইটেলের। নানা তার সাথে কথা বলেছে, আর ঐ মহিলাও বলেছে আমার লাগি তিনি নাকি স্বামী-সংসার ছেড়ে চলে আসতে দুই পায়ে খাড়া!!! কইলাম নানা কইলি কলেজ-ভার্সিটির কথা, তবে বিবাহিত মহিলার কাছে গেলি কেন? নানা কয়- সে নাকি খোঁজ করে কাউরে পাচ্ছে না, তাই.... :o

পরদিন অফিস করে বাসায় আসলাম, দেখি নানা ফুরফুরে মেজাজে। জিগাইলাম নানা ঘটনা কি, বহুত মাস্তিতে আছিস মনে হয়?

নানা কয় দাদা আজকে তোর ব্যবস্থা করেই ফেলেছি, কনে আমাদের বাসাও দেখে গেছে, তোর সবকিছু শোনার পর সে রাজি হয়েছে। আমি বললাম তাই নাকি? আজকে আবার কে রাজি হল? নানা কয়- আজকে বাসার সামনে এক মহিলা বলতেছে- ছাই, এই ছাই লইবেন ছাই? হঠাৎ দেখি মহিলার হাতে শাখা-সিঁদুর... নানাকে থামিয়ে বললাম, তোকে মহিলার দিকে তাকাতে কে বলেছে? আর ছাইওয়ালা মহিলার সাথে তোর কথার দরকার পড়ল কেন? নানা কয় আরে শুন না, তোর জন্য না পাত্রী খুঁজছি, ভেবে দেখলাম মহিলা হিন্দু মানুষ, তার উপর হেঁটে-হেঁটে বিভিন্ন বাসায় ছাই বিক্রি করে...তার মাধ্যমে তোর একটা ব্যবস্থা করা গেলে মন্দ কি? তাই তাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনার নাম কি? মহিলা কয় সীতা রানি দেবনাথ। একথা শুনেই ভাবলাম, মহিলার মেয়ে বা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে তো কেউ অবশ্যই আছে, তোর ব্যবস্থা হবেই, কিন্তু মহিলা কয় তার পরিচিত বিবাহযোগ্য কোন পাত্রী নাই। তবে মহিলা নিজে রাজী হয়েছে, বলেগেছে তুই রাজি হলে সারাজীবন ছাই বিক্রি করে তোরে বসাইয়া-বসাইয়া খাওয়াইব... দাদা তুই রাজি হইয়া যায়, এ সুযোগ আর জীবনেও পাইবি না...

ভাই-বন্ধু-মুরুব্বি-শ্রদ্ধেয় জন, নানার মছিবত থেকে বাঁচার একটা উপায় বাতলায়ে দেন, নইলে তেজগাঁও রেললাইনের পাশের কচুগাছ দেখাইতাছে নানা...

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে

ভালোবাসি বলে কাউকে দন্ডিতে চাইনি বলে প্রতিনিয়ত নিজের মনকে দন্ড দিয়ে গেছি। ভালোবাসি বলে আগলে রাখতে না পারার যন্ত্রণা বইতে পারব না বলেই সরে আছি।

কিন্তু না বলতে পারার আরাধ্য ভালোবাসার অন্তঃক্ষরণ কতটা হয়, সে পরাজিতের অভিপ্রায় না জেনে অনুধাবন এতটা সহজতর নয়!