বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৩

নিশন্তি

আজ চারাগাছটিতে নতুন দুটো পাতা গজালো। কি সুন্দর চকচকে দুটো পাতা। ভোরের আলোয় আলো খেলায়, মিষ্টি হাওয়ায় হাওয়া দোলায়। এ যেন নব আগমনে সুখের জোয়ারে আহ্লাদিত কচি দুটো পাতা। ছোট চারা কচিপাতা, দোলে খোলে স্বপ্নখাতা।
নিশন্তি ঘুম থেকে উঠে পাতা দুটো দেখে বড় আবেশিত হয়, ছোট্টখুকির অবুঝ মন, অবুঝ ভাবনাদের কথা-কথণ, কত কি বলে যায়, বার-বার টান পায়, ছুটে যায়। ধরে যত্ন করে, তার ছোঁয়ায় চারাটি শিহরিত হয়, দোলে, আনন্দে নড়ে।
ভোর সরে যায়, সকাল হয়। সূর্যের আলো বাড়তে থাকে। কৌলাহল বাড়ে, শব্দ ঝঙ্কারে ছায়াপূর্ণ হয়। খুশির কলরোল নামে, নিশন্তির খেলাঘরে। বন্ধুরা জড়ো হলে, সুখ লাগে। খেলা জমে। কতশত বর্ণিল রঙ্গে রাঙ্গে মাতানো মন, জীবন রাঙ্গানো খেলা। চলতে-চলতে ছুটে, পথে যেতে-যেতে কত হিল্লোল ঐ বাতাসের হিমে, রোদের ঘামে, খেলা জমে। খেলা বর্নিল, কোন খেলাই বেশী গড়ায় না, বন্ধুরা বাঁকে, কেউ কাঁদে, খেলা ভাঙ্গে, তবু খেলা চলে।

বড় অদ্ভুত জীবনমঞ্চে মঞ্চিত এ খেলা ঘরের খেলা‘রা। বেলা বেড়েছে, খেলাঘরের ঘর সেজেছে, নিশন্তিদের খেলাঘরে চলছে খাবারের আয়োজন। চকচকে বালির ভাত, গাছের পাতার বর্ণিল মাছ, মাংস, পেট পুরে খেতে আর কি প্রয়োজন?
সকালে মনে ছোঁয়া দেয়া সে কচিপাতা আবার টানে, নিশন্তি ছুটে যায়, ছিড়ে আনে, এ দিয়ে হবে সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার। এত কচিপাতায় কি খাবার হবে, ভাবছে সবাই, এযে ভাবনার। হ্যাঁ; এ হবে তবে পায়েস, হ্যাঁ-হ্যাঁ পায়েস। পায়েসের স্বাদ বড় লাগে মুখে।
চারাগাছের কষ্ট, নিশন্তিদের আনন্দঘটা খেলা, প্রকৃতি দেখে মুগ্ধসুখে। এ‘সুখে হিংসে আসে বড়, প্রকৃতির সহ্য হয় না যে, হিংসুটে প্রকৃতি, হিংসুটে তার রূপ রং, হিংসেতে নিশন্তির খেলাঘরের সুখ টুটে। রান্নাঘরের খাবার ধুতে নিশন্তি ছুটেছিল পুকুরঘাটে, প্রকৃতি বড় হিংসুটে, বড়বেশী হিংসুটে। চারাগাছের সুখের মতো, নিশন্তির সুখ টুটে। তার বাবা-মায়ের স্বপ্ন টুটে। মৃত্যু যন্ত্রনায় নিশন্তি ছুটে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন