মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ভাষাহীন রোদন

আমি মনের ভাষাগুলো গুলিয়ে ফেলি বার-বার
শব্দরা বারবার বেরুতে চেয়েও স্তব্ধ হয়ে পড়ে,
ঘৃণাগুলোকে উগলে দিতে পারলে স্থির হতে পারতাম
অথবা উন্মাদ হয়ে মাসুদ নামক হিংস্র হায়েনাগুলোর
রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মাততে পারলে-
না; মাসুদ হায়েনাদের এমন করে ষষ্ঠশ্রেনীর
হরিণ শাবকটাকে খুবলে খাওয়ার দৃশ্য-

এ আমি ভাবতে পারি না,
এমন অবলীলায় অমানবিক হিংস্র জানোয়ারের পীড়ায়
জন্মদাতা-দাত্রীর ভাষাহীন রোদন এ আর সহ্য হয় না।

আরও একবার নতি স্বীকার

সুলতানা সুস্থ হয়ে জীবনে ফিরুক সে ইচ্ছেটা ছিল কিন্তু আমার সে ইচ্ছেটা বোধহয় ইচ্ছেতেই থেকে গেল, কারন জীবন তার অতি সন্নিকটে চলে গেছে।

জীবনের রূঢ বাস্তবতার কাছে বোধহয় আরও একবার নতি স্বীকার করতে হচ্ছে।

মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়

মানুষ জীবনের প্রতিটি স্তরে অসহায়।

সমাজে বলুন, সংসারে বলুন, কিংবা জাতি ধর্ম বর্ন গোত্র দেশ কিংবা বিদেশ যেখানেই বলুন না কেন, মানুষ প্রকারন্তে দারূন অসহায়। অসহায় এই জীবনে প্রত্যেকেই তাই কর্তব্যকে সীমাবদ্ধতার মাঝেই পরিব্যাপ্ত রাখে। স্নেহ-মায়া-মমতা কিংবা মানবতা, সব কিছুই জনবিশেষে সীমাবদ্ধ গন্ডিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে।

ও বিধাতা

এমনি করে জন্ম-মৃত্যু গুনে-গুনে
ক্ষীন সম্ভাবী জীবনও থেমে পড়ে,

হাসপাতালের বিছানায় ছড়িয়ে থাকা বেদনার্ত জীবনের আর্তনাদ
মৌণমুহূর্ততায় দুই-চারটা থেমে যাওয়া শরীর দেখে অভিভূত হই,
বলি ও বিধাতা; এই সহে-সহে ক্ষয়ে যাওয়া দেহে
কেন তবে এত বাসনারা ডুবে মরে?

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক

বাংলার প্রবাদ পুরুষ, ন্যায় নিষ্ঠতার প্রতীক শুধু একজনই। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এমনই একজন বলিষ্ঠ নেতা যার নাম উচ্চারিত হতেই পাকি ঘরনার লোকদের চুলকানী আর গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। শুধু তাই নয়- এই চুলকানী আর গাত্রদাহ তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বহে বেড়ায়। যখন চুলকানী কিংবা গাত্রদাহ খুব বেড়ে যায়, তখন তারা গেয়ে উঠে-

“জাতির পিতা মুজিব পিতা স্বপ্নে দেইখা কয়

দেশটা তো আমার একা, অন্য কারও নয়”

চরম চুলকানীর এই রোগে ভুগতে থাকা তারা ভুলে যায়- যে স্বপ্ন দেখে, দেখায় এবং স্বপ্নকে সার্থক করে, সে সত্যিকার অর্থেই সেই স্বপ্নের দাবীদার। অথচ তারা বঙ্গবন্ধুর বিদ্রুপ করতে গিয়েও তাঁর স্বীকৃত কর্মকে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলে নিজেদের অজান্তেই।

আজ ১৫ই আগষ্ট। বাঙ্গালী জাতির চির শোকের দিন। এই দিনে পাকিসমমনা ক্ষমতালিপ্সুদের হাতে জাতি হারায় একজন সত্যিকারের অভিভাবক, একজন রুপকার কিংবা একজন মহান সেনা নায়ককে। আজ এমন একটি শোকার্ত সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে শুধু এইটাই বলবার আছে-

“ওহে মহান সেনা, সত্যিকারের বলে বলিয়ান

আজ এই দীনহীনের লহও প্রণাম।”

শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৫

প্রিয় ভাবতে দিও

আমায় ভাবতে দিও
যখন তুমি ভাবছ আমার মত, প্রিয়
প্রিয় ভাবতে দিও;

ভাবতে দিও কেন এত লাল টিপ পরেছ
লাল পাড়ের ঐ জামদানি পরে রেশমি চুলের বেনী তুলেছ
কানে সোনার দুল পরেছ, নাকে সোনার নোলক পরেছ

ভাবতে দিও চলতে কেন নুপুর বাজে
দু‘হাতের ঐ রিনিঝিনি চুড়ি বাজে
সকাল-সাঁঝে কোন বিহগের সুর সে বাজে
অকাল বোধন চাঁদ-তারারা গান সে বাঁধে।

আমায় ভাবতে দিও, ভাবতে দিও
কেন তোমায় দেখলে মনে শিহরণ লাগে
দুরুদুরু বুকে কেন এত কাঁপন জাগে
নীল আকাশের সাদা মেঘেরা ভেলায় ভাসে
ভাবনা গড়িয়ে সোনার পালঙ্কে স্বপ্ন আসে?

প্রিয় ভাবতে দিও
কেন তোমায় ছুঁয়ে দিলে চোখ এত লাল হয়
মেঘের সাথে মেঘের গর্জন বুকের বানে বর্ষন হয়
সুখের রাগে কান্নার গড়িয়ে নদী হয়ে সাগরে বয়
হারিয়ে ফেলা দিনগুলো পেতে কেন আবার ইচ্ছে হয়।

কেন তুমি এমন প্রিয়,
প্রিয় হয়ে জড়িয়ে থাক হৃদখোলসে
ভাবতে ভাবতে যখন তখন তন্দ্রা আসে
হাত বাড়িয়ে হাত রেখে যাই সবুজঘাসে; ভালোবেসে অনায়াসে।

জন্ম

দিনে দিনে কত স্বপ্নের অপমৃত্যু
ধরিত্রীতে কত শোকের মাতম
তবু জন্মধারার খোলস খুলে হয়
কতশত কীটপতঙ্গের জনম।

জন্ম বয়ে বেড়ায় অভিশাপের পণ
জন্ম বয়ে চলে জন্মের মতন
নিধারুন জন্মক্ষয় আজও জন্মের বলয়ে
হায়! তবু কত জন্ম দেখ দীনের আলয়ে।

ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলেই প্রেপ্তার করা হবে

ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলেই প্রেপ্তার করা হবে, এমন একটা সিদ্ধান্তে সরকারের প্রতি সাধুবাদ।

কিন্তু আমার প্রশ্ন শুধু লিখলেই কেন? কেন ধর্মিয় উষ্কানিমুলক বক্তব্য দিলে বা অন্যধর্মকে কটাক্ষ করে কোন বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরকার তৎপর হতে চাইছে না? এতে কি সুস্পষ্ট হচ্ছে, এতে কি সরকার বা প্রশাসন কোন নির্দিষ্ট ধর্মবলয়ের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করছে না? যদি না হয়- তবে সরকার বা প্রশাসনকে এও স্পষ্ট করা উচিতঃ

১) যেসকল হুজুর ধর্মীয় উষ্কানী দিয়ে ওয়াজ কিংবা বয়ান দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার বা প্রশাসন কি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে?

২) যারা উষ্কানীমূলক কাজ করে যাচ্ছে তাদের কি সরকার বা প্রশাসন এই ব্যাপারে ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে?

৩) যে সকল ধর্মীয় উষ্কানীমূলক সিডি, অডিও ক্লিপ, ভিডিও ক্লিপ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিষিদ্ধে সরকারের বা প্রশাসনের ভূমিকা কি?

আরও একটি ঐতিহ্যবাহী সংখ্যালঘু পরিবার রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে

আরও একটি ঐতিহ্যবাহী সংখ্যালঘু পরিবার রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারা ফরিদপুরের “দয়াময়ী ভবনের“ বাসিন্দা।

খুবই মজার বিষয় যেটি- তারা ১৯৪৭- এ ভয় পায় নি, ১৯৬৫ তে ভীত হয় নি, ১৯৭১ সালেও তারা এতটা আরক্ত হয়নি। অথচ ২০১৫ তে এসে যে সরকার যখন সংখ্যালঘুদের জান-মালের নিশ্চয়তায় নিশ্চিত করছে বলে গলা ফাটাচ্ছে, তখন সেই সরকারের নেতার দাপটে পরিবারটি রাতের অন্ধকারে মিশে গেছে।

অবশ্য নেতা সাহেব বলছেন- তিনি ১২ কোটি টাকায় বাড়ি ক্রয় করেছেন। লোকমুখে ভাসছে তাকে ১ কোটি টাকা, সাথে হারিকেন-কানাওয়ালা বাঁশ আর পাছায় বনের কচু ডুকিয়ে নেতা সাহেব শিঙ্গে টাঙ্গিয়ে ছিলেন।

আমরা অবশ্য নেতা সাহেবকে সঠিক বলে ধরে নিচ্ছি, বুঝেনই তো তাদের দেশ, তারা ক্ষমতায়, সবকিছুতেই তারা মাথা। তারা কি এসব করতে পারেন?

রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৫

যারা সহি মুসলমান সাজতে চাইছে...তাদের কাছে আমার প্রশ্ন-

আমার বন্ধুদের যারা অনেকেই আজ সহি মুসলমান সাজতে চাইছে, আমাকে ঘৃনা করতে চাইছে আর বারংবার বুঝাতে চাইছে তারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে পড়ছে বলে তাদের কতল করা জায়েজ? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন-

১) আপনি কি ভাই হুজুরের ওয়াজ শুনেন কিংবা বয়ান? যদি শুনে থাকেন তবে তারা হিন্দু ধর্ম বা অন্যান্য ধর্ম নিয়ে কি কি বলে আপনার জানা আছে? (আমি আজমেরি পরিবহনে করে যাচ্ছি, গাড়ির ড্রাইভার গাড়িতে ওয়াজ লাগিয়েছে, হুজুর ওয়াজে বলে যাচ্ছে, কৃষ্ণ কেমন লুইচ্ছার লুইচ্ছা দেখুন সে তার মামীর সাথে অপকর্ম করে মামীকে নিয়ে ভাগছে আর হাজার-হাজার নারীর সাথে আকাম-কুকাম করছে সে কৃষ্ণকে হিন্দুরা বলে ভগবান? হা হা হা, বলেন এমন ভগবানের আপনাদের ধরকার?) । এমন ওয়াজ শুনে আমি হিন্দু হয়ে কি হুজুরকে কতল করতে ছুটব?

২) ব্লগার‘রা কি শুধু ইসলাম ধর্ম নিয়ে মেতেছে, হিন্দু বা অন্যকোন ধর্ম নিয়ে মাতে নি? আপনি যদি বলেন না- তবে আপনি উন্মাদ, আপনি পাগলা কুকুরের মতো নিজেকে আশ্রয় করছেন।

৩) আপনারা জাকির নায়েকের মুরিদ সাজছেন, আল্লামা সফির কিংবা সাঈদির মুরিদ সাজবেন, তারা যখন অন্য ধর্মকে ছোট করে আপনাকে আপনার ধর্মের বিশালতা দেখাবে তখন বাহা বাহা দেবেন, অথচ আপনার ধর্মকে নিয়ে কিছু বলে যখন তারা তাদের ধর্মকে বড় করতে চাইবে তখন তাদের “নারায়ে তাকবির” বলে কতল করে দেবেন?

৪) একই পিতার রক্তে যে সন্তানদের জন্ম, সে সন্তানদের সবাই কি পিতার মতোই হয়? যদি না হয়, তবে সেখানে কি ঘটে, তাদের মধ্যে কি ভালো-মন্দের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে না? নাকি আলাপ-আলোচনা বলতে কিছু নেই, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কতল করতে হবে?

৫) অস্ত্র আজ আপনার হাতে আছে তাই আপনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছেন, কালকে ওরা বাধ্য হয়ে অস্ত্র ধরবে না আপনি তা কতটা নিশ্চিত? তখন এই প্রতিষ্ঠিত শান্তি টিকবে তো?

৬) বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয় সব বিদ্যালয়ের কোন না কোন বন্ধু প্রণোদনা দিয়েছে মুসলাম হবার আর তখন আমরা নিজেরা নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছি নিজ ধর্মকে বড় রেখে। এখানে আমি তার ধর্মের বিপক্ষে কিছু তথ্য দাঁড় করেছি, তাই শান্তির বাহুবলয় গড়ে তুলতে আপনারা তা শোনা মাত্রই আমাকে কতল করতে ছুটবেন?

৭) হিন্দুরা গরুর মাংস খায় না, এ নিশ্চিত জেনেও আমার বন্ধুরা আমাকে গরুর মাংস খাবার প্রলোভন করে বা চেষ্টা করে, এর মানে তাকে খুন করে দেব?

৮) আপনি সত্যিকার ভাবে ধর্মকর্ম করছেন না, তাই আপনি যুক্তিতে বারবার হেরে কতল করতে ছুটছেন, সত্য নয় কি?

আমার কাছে আজ বারবার মনে হচ্ছে এই বাঙ্গালী জাতির রক্তের মধ্যে বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠীর রক্ত এমন ভাবে মিশেছে এরা কোন কালেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমর্থ নয়। আগে ক্ষমতা পেয়ে বাক্ষ্মনরা নিচু জাতের মানুষদের সাথে রুঢ় ব্যবহারে তাদের জীবন অতিষ্ঠ করেছে। আর সেই অতিষ্ঠ জাতি ধর্ম পরিবর্তনের মাঝে আজ ক্ষমতাশালী হয়ে একই উন্মত্ততায় মেতেছে। কিন্তু প্রকৃতি বরাবরের মতোই পরিবর্তিত হচ্ছে। সময় কিন্তু দিক পাল্টাচ্ছে দ্রুততার সাথেই।

প্রতিরোধ

নিশ্চিত মৃত্যু জেনে এভাবে পড়ে-পড়ে মরাটা কি অর্থহীন নয়!

হটলিষ্ট তৈরী করে এক-একটা নৃশংস খুন চলতে থাকলেও রাষ্ট্র যখন চুপচাপ পড়ে থাকে, তখন তাতে রাষ্ট্রের প্রছন্ন সমর্থন প্রমানের জন্য আর কোন প্রমান হাজির করার প্রয়োজন আছে বলে আমার অন্তত মনে হয় না। আর মৃত্যুর এমন সন্ধিক্ষনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পথ তৈরী করাটাকেই আমার কাছে গুরুত্ববহ মনে হয়।

মিছিলটাকে আরও বড় করবার লোভে ছুটছি

রাজিব হায়দার+অভিজিৎ রায়+ওয়াশিকুর রহমান+অনন্ত বিজয় দাশ+ নীলাদ্রি চট্রোপধ্যায়+ ?

মৃত্যুর মিছিল বড় হচ্ছে...,

এখন শুধু একটাই প্রশ্ন এরপর আমাদের মধ্যেকার কে?

সরকার কিংবা প্রশাসন আর কারও কাছেই আমরা কোন কৈফিয়ত চাচ্ছি না বরং বলছি আপনারা গদিটাকে কেবল বাঁচান, গদিটাকে ধরেই বেঁচে থাকুন। আমরা শুধু মিছিলটাকে আরও বড় করবার লোভে ছুটছি....

বোকারা প্রলাপ

দেশ যখন সর্বময় ক্ষমতায়
জনমনহীন রায়ে পোক্ত
তখন কণ্ঠরোধ হয় রাজপথে
ভেসে রাজপথ রক্তাক্ত।

এখানে লুটেরা বসে রাজ গদিতে
মুছে দেয় গণতন্ত্রের কাব্যেকথা
বোকারা প্রলাপে হায়-হুতাশ করে
আহা! কোথায় যাচ্ছে সভ্যতা?

কি সুন্দর হিসেব-নিকেশ

কি সুন্দর হিসেব-নিকেশ করা,

আপনি বললেন এই দুনিয়া মিছে মায়ার, আজরাইল আসছে ঐ পরকালের পথ ধর।
আবার আপনার ঘরেই চান্দের লাহান তিন-চারখান বৌ,
বলি নিজে চুপে-চুপে ঘি-ভাত খাবেন আর আমাদের পরকাল দেখিয়ে কাঁচামরিচ-পান্তা ধরাবেন?

কর্ম

কেউ মরছে,
কেউ মারছে
কেউ মেরে চুপি-চুপি সরছে
কেউ মারার দায়ে ধরছে
আর সব হিসেব মিলিয়ে কেউ-কেউ
কি সুন্দর রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে।