মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

স্বপন

স্বপন জীবনটাকে নিয়ে সত্যিকারের ভাবনায় পড়ে গেল!! নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সে অন্যভুবন ধরে হাঁটছে আর নিজের সাথে বলছে, না আমার কোন স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন থাকতে নেই। বারংবার হোঁছট খেয়ে পড়াটাই আমার জীবন! আমার নিয়তি! আমার গন্তব্য!!!

বেশ কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার পর স্বপন দেখল উষ্ক-শুষ্ক মলিন বদনে ছেঁড়া বসনে জড়ানো শরীর টেনে কয়েক টুকরো ইট আর পাথর হাতে দীনু পাগলা ছুটছে। দীনুর এইভাবে ছুটে চলা দেখে স্বপন স্তম্ভিত ফিরে পেল। সে দীনুকে থামাল, জিজ্ঞাসা করল- কিরে ইট-পাথরের টুকরো হাতে কোথায় ছুটছিস...? জবাবে দীনু জড়তার স্বরে বলল- ঘল তুলব লে, পাকা ঘল তুলব। মা কান্দে কইছে আমি বালা হইলে, আমাদেলও পাকা ঘল হত!!! দীনুর কথা শুনে স্বপন হেসে উঠে বলল- এই কয় টুকরো ইট-পাথরে কি ঘর হয় রে বোকা? দীনু বলল- যা তুই বোকা, আলও (আরও) আনব লে, তখন হবে!!! বলেই দীনু আপনার গন্তব্যে ছুটে চলল।

দীনু চলে গেলে স্বপন তার পাগলামীর কথা ভেবে মনে-মনে হেসে উঠল, কিন্তু পরক্ষনেই দীনুর ইচ্ছের কথা ভেবে সে অবাক হল! সে ভাবতে থাকল, সারা জীবন ধরে ইট-পাথরের টুকরো কুড়োলেও তো দীনুর পাকা ঘর উঠবে না। সারাজীবনের তপস্যাতেও দীনুর বদলাবার সম্ভবনা নেই, তবুও সে স্বপ্ন দেখছে, আগ্রহে এগিয়ে চলছে, জীবনটাকে ব্যস্ততায় ভরে তুলছে, সময়ের রংগুলোকে রঙ্গিন করে তুলছে। তবে আমি----?

স্বপন জীবনের গন্তব্য পেল, সে বুঝল জীবন শুধূ ফসলের ফল বইবার জন্য অতটা নয় যতটা ফসল ফলাবার। জীবন কেবল স্বপ্ন দেখে কদম ফেলার, স্বপ্নগুলোকে ছুয়ে দেখার আগ্রহে ব্যস্ত হবার, দুঃখ-দুর্দশা-পীড়ন ভূলে থাকবার মত কার্য্য করার।

স্বপন এখন ভাঙ্গার স্বপ্ন দেখে না, স্বপন এখন ফসল ফলাবার প্রত্যয়ে স্বপ্ন গড়ে।

সময়

প্রেম, ভালোবাসা কিংবা ভালোলাগার জন্য চঞ্চল, আবেগী, মুখের ভাব-প্রকৃতি আর মিষ্ট প্রকাশের পারঙ্গমতাই যথেষ্ঠ। 

কিন্তু জীবন সংগ্রামের সংসার সাজাতে গেলে উপরেরগুলো বেশীরভাগই অযাচিত, অনাকাঙ্খিত আর অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায়। সংসার জীবনে পরিশ্রমী, সহনশীল আর বোধগম্যযুক্ত মানুষই সকলের প্রথম কাম্য থাকে।

দম্ভ

যে কায়া ছুঁলে জাত চলে যায়...
সে কায়ার ছায়া পদতলে মাড়ায়
ছোট-বড়-জাত-বেজাত নাই সে ইশারায়
আপনার দম্ভ আপনার কর্মে চূর্ণ হয় ধরায়...

বিভেদ

সবজায়গায় হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি; কাড়াকাড়ি

আমি-
পায়ে বল নেই বলে বাহন চাপাতে পারি না
গায়ে বল নেই বলে গতর খাটাতে পারি না
হাত কাঁপে বলে ভার বইবার শক্তি পাই না
মগজ শূণ্য বলে বুদ্ধির জোরেও টিকি না

সবাই পথ খুঁজে হালুয়া-রুটির কিঞ্চিৎ পেয়ে গায়-গতরে বেঁচে যায়
আমি কঙ্কালসার দেহের বেদন সহতে না পেরে ওপারের প্রত্যাশায়...

যে ভালোবাসে

যে ভালোবাসে কিংবা বাসতে চায় তাকে চেনা যায়!
মুখের মায়ায় ধ্রুবরাশির রেখায় খেয়ালের উচ্ছলতায়
সময়ের কাব্যকলার ঢংয়ে মনটাকে পড়া যায়...

ক্ষমতাপরে অহমিকা

সিঁড়িটা একই থাকে। কিন্তু মাথা উঁচু করে উঠতে হয় আবার মাথা নিঁচু করে নামতে হয়।

ভাবতে না চাইলে সমস্যা নেই, কিন্তু ভেবে রাখা দরকার, ক্ষমতাপরে অহমিকাটাই আপনাকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে মারবে।

সময় অসময়

বলেছিলে ভালোবাসবে
বেসুর বাদলে জড়িয়ে ধরবে আলিঙ্গনে
সময়বদলে বেসুরে মাতালে, তুমি তোমার হয়ে গেলে
আর ভালোবাসার দারুচিনিদ্বীপ তলিয়ে গেল অতলে...

ধর্ম আর স্বভাব

কুড়ালের ধর্ম কাটা কিন্তু স্বভাব বুকের দিকে টানা...

তেমনি মানুষের ধর্ম মনুষ্যত্ব হলেও তার স্বভাব নিজের জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনকে বুকে টানা। জাতি-গোষ্ঠী-পরিজনের দোষ-ক্রটি দেখেও তার পক্ষপাত করা। মানুষ দুনিয়াকে ধ্বংশ করতে একপায়ে খাঁড়া শুধুমাত্র নিজের হীনতাকে বড় রাখতে।

মানুষ জীব হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠের দাবিদার হলেও, সময়ের কর্মকান্ড বিবেচনায় নিলে এদের মতো হিংস্র জানোয়ার দুনিয়ায় দুটো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর!

পরিশ্রমী চোখগুলো

পরিশ্রমী চোখগুলো বরাবর উদাসীন দেখায়। ক্লান্ত শরীরগুলো ঘাম ঝরিয়ে শরীর হালকা করার সাথে দেমাগটাকেও বীষিয়ে দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

হিংসের কারণ

তেনাদের কাজকম্ম দেখে কি আর কব...

আরে কচ্ছিলাম পুছকাগুলানের কতা যেনারা ভেংচি কাটে, কানাচোখে চায়, বোপ দেয়
আর দামের হিসেব কষলে যেনাদের কাছে আমি সিকি আধুলিও না...

তবে তেনাদের হগল লজ্জার গুপন কতা মুই জানি, যেগুলান শুনলে আপনারা মুখ খিছিয়ে চোখবুজে ছুটবেন...

কচ্ছিলাম কি...

এদ্দিন দেকি তেনাদের একজন হামাঘুড়ি মেরে ছুটছেন, ছুটে আশপাশে একটু দেকলেন।
দেকলেন তেনার চারপাশে দুখানা মুরগি কুকক্-কুকক্ করে খাবার খুটে খাচ্ছেন।
এদেকে তেনা বেজায় খুশি হয়ে হাসতে-হাসতে দু‘নম্বর কাজটা সেরে দিলেন...

তারপর কি দেখলুম বাপু; পাশের মুরগি দুটো ছুটে এসে তেনার ত্যাগ করা দু‘নম্বর জিনিস দু‘ঠোকড় মেরে দিল!!! আর অমনি তেনা উল্লাসে নিজের ত্যাগ করা দু‘নম্বর জিনিস নিজের দু‘হাতে ধরে উল্লাস করতে লাগলেন। মুই তেনার মানসুলেমান পান্সার করা কম্ম দেখতে রইলুম। উম্মা দেখি তেনা দু‘নম্বর জিনিস ধরা হাত ছুড়ে আমার দিকে ছুটছেন? আমি পড়ি কি মরি, মরি কি বাঁচি করে যেই না সরতে চাইলাম অমনি তেনা কান্না শুরু করে দিলেন। পরে তেনার মা কান্না শুনে তেনাকে পরিষ্কার করতে নিয়ে গেলেন।

এরপর থেকে তেনারা দু‘নম্বর কম্ম করে ফেললে আমি আর তেনাদের ধার ধারি না।

কিন্তু এদিন হল কি, গেলুম মেজদিদির বাসায়। দিদি ভাত খেতে দিলে দিব্যি আরাম-আয়েশ করে খাচ্ছি। ছোটভাগিনা (মানে- পুছকাদলের লোক) একবার এদিক ছুটছেন তো আরেকবার ওদিক। কোনভাবেই তেনাকে ঠেকানো যাচ্ছেনা। তেনার জন্য আয়েশের খাওয়াটা একটু কমিয়ে নিতে হল- কেননা বলা যায়না তেনা কখন খাবার পাতের উপর বসে খেলতে শুরু করে দেন। খাবার সময় তেনার এমন আনন্দ করে খেলা দেখে বেশ হিংসে হচ্ছিল, কিন্তু দিদি সামনে থাকায় তেনাকে কাঁদানোও যাচ্ছিল না, তাই হিংসে মনে চেপে খাচ্ছিলাম। হঠাৎ কি হল- তেনা একনম্বর কামটা সারিয়ে দিলেন।

সমস্যা তাও না, সমস্যা তৈরী হল তখন যখন তিনি একনম্বর কাজখানা সেরে তা নিয়ে খেলতে চাইলেন। দিদি ঘটনা দেখার সাথে-সাথে তেনাকে সরিয়ে না নিলে কি ঘটনাটাই না তেনা ঘটিয়ে দিতেন। মনে পড়লে এখনও বুক দুরু-দুরু করে উঠে।

আমি কোনভাবেই বুঝতে পারি না, তেনাদের সাথে আমার হিংসের জায়গাটা কোথায়? কেন তেনারা আমাকে হিংসে করেন? অবশ্যি আমারটা আমি জানি, আমি তেনাদের হিংসে করি কারণ- তেনাদের সবাই আদর করেন, কিন্তু আমার বেলায়.....

স্বপ্ন বনাম বাস্তবতা

কেউ যখন ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে, তখন সে তার চারপাশে দেখা অনেক হীরে-জহরত-মণি-মুক্তো থেকে বেছে-বেছে সেরাগুলোকে নিয়ে আলোকসজ্জা তৈরী করে স্বপ্নের ঘর সাজায় আর সেরা হীরে সুউচ্চে সাজায়ে রাখে যেন সবাই দেখে।

কিন্তু যখন বাস্তবতার ঘর সাজাতে যায়, সে দেখে সবটাই মূলত আলোকছটা, যা নষ্ট অকেজো জিনিস জ্বালিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে ছিল। আর নিজের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় সারাজীবন এই অকেজো জিনিস সাজিয়ে রঙমশাল জ্বালাতে হবে!

স্বস্তি

যাচ্ছি মাতৃটানে মাটির গন্ধ অঙ্গে নিতে জড়িয়ে
শহরের যান্ত্রিক কৌলাহল ছেড়ে সবুজের ভীড়ে

---বাড়ি যাচ্ছি, কয়েকদিনের জন্য। শহরের কৌলাহলে আবারও ৭ মাস কেটে গেছে, যান্ত্রিকতা আর অফিসের কাজের ভীড়ে দমও বন্ধ হয়ে আসছে। একটু খোলা চাতালের মুক্ত বাতাস না ফেলে আর বাঁচা দায়।

ছুটটি আপন আঙ্গিনার পথে, যেখানে মা-বাবা তার আহ্লাদের কনার মায়া রেখে শান্ত মনে শুয়ে আছে নিরবে-নিভৃতে। কতদিন প্রাণখুলে কথা বলার কাউকে পাই না, মনের মাঝে জমানো ব্যকুলতা কতদিন কাউকে বলা হয় না। মা-বাবার নিভৃতি ভেঙ্গে কিছু বলব, দেখী বুকের ভার একটু কি কমে..

আসব কয়দিন পরেই, ততদিন হয়ত কথা হবে না যান্ত্রিক বিজ্ঞানে, হয়ত খোঁজ রবে না অনলাইনের কারও সনে। তবু ভাষা জমবে, কথা বাড়বে এই কয়েকদিন পরেই, মন ফুরফুরে হলেই।

উর্বর উপযুক্ত

জমিন ফসল ফলাবার জন্যই, কিন্তু ভালো ফসল পেতে গেলে জমিনকে উর্বর উপযুক্ত করে নিতে হয়। যে যত ভালো উর্বর করতে সক্ষম, তার জমিনের ফসল তত সজীব, তত ফলনশীল আর তত সুমিষ্ট।

প্রতিটি বুকের খাঁজে যে ছোট্টকুঠুরি, ওটাও জমিনের মত ভালোবাসা ফলবার জন্যই প্রস্তুত থাকে। সেখান থেকে সজীব-সুমিষ্ট প্রেম-প্রেরণা পেতে প্রত্যেকেই আপনা শ্রমেই স্থানটিকে উর্বর করে নিতে হয়।

বদল

বদলে যাচ্ছে দুনিয়া, একটু করে বদলে যাচ্ছি আমিও
বদলে যাওয়ার অনিবার্য রীতিতে, বদলে যাচ্ছ তুমিও

সময় গল্প শিখে, কবিতা লেখে, গান শুনে মনের খেয়ালে
পূর্বাপর সময়ও হয়ত হেঁটেছে একই মাত্রায় একই তালে
শুধু বদলেছে দিন, পাল্টেছে বোল, সাথে মেরুন রংমাখা রুপের ছটা
রাত্রির স্বপ্নরাঙ্গানো প্রহর শেষে পথে ফেলে যাওয়া উন্মাষিক বারতা।

নির্বাচন সুস্থ-নির্দলীয়-নিরপেক্ষ হয়েছে!!!

নির্বাচন সুস্থ-নির্দলীয়-নিরপেক্ষ হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা নেই...

শুধু গোপন একটা কথা ছিল ভাই।

আমি পাগলা কামাইল্লা। তয় ভাই আপনারা আমারে চিনেন আর না চিনেন, যদি আমি নির্বাচনে দাঁড়াতাম আর দলীয় মনোনয়নে আমার মার্কা ঠান্ডা জলে ভাসার একখান নৌকো হত। তয় আমারও দেশ-দশের সেবা কইরা দেশটারে উল্টাইয়া-পাল্টাইয়া ঝকঝকা করে বাড়িখানা টাওয়ার বানানোর ব্যবস্থা হইত। লগে পাগলা পদবী কাইটা জনাব হইত।

আহা! একখানা সুযোগ আপনাদের আমার সেবা পাওয়া থেকে কতটাই না বঞ্চিত করল।