বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৫

না, পারিনি কখনও পারবও না

ফাঁসির দন্ডাদেশের পূর্বে কামরুজ্জামানের শেষ উক্তি ছিল তিনি নির্দোষ! একইভাবে বাংলার সকল যুদ্ধ অপরাধীরা শোরগোল তুলছে তারা নির্দোষ বলে... এত-এত তথ্য প্রমান, ঐতিহাসিক সত্যতা থাকার সত্ত্বেও তারা নিজেদের কি করে নির্দোষ বলে দাবি করছে?

আমার কাছে যে বিষয়টি তাদের নিজের বিবেকের কাছে নির্দোষ ভাবতে সাহার্য্য করছে বলে মনে হয়, তাহল- তারা বিবেকের কাছে নিজেদের দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরছে।

এখন যদি প্রসঙ্গে আসি, তবে বলতে গেলে বলতে হয়- তারা কি তবে দেশপ্রেমিক নয়?
অবশ্যই তাদের মাতৃভূমির বুকে তারা দেশপ্রেমিক ছিল এবং তারা ছিল মাতৃভূমির লড়াকু সৈনিক। তারা তাদের মাতৃভূমির জন্য নিজেদের জীবন দিতেও কার্পণ্য করত না। অতএব মাতৃভূমির জন্য তাদের বলিদানের সদিচ্ছা তাদের দোষী না ভাবাটার কারণ হওয়াটা স্বাভাবিক। আর তাই তারা তাদের অনুসারীদের কাছে এ প্রচার করে এবং বলে চলে আজ যদি বাংলাদেশ না হত তবে তারাই বীর সৈনিক হত!

কিন্তু অতি আশ্চার্য্যের বিষয় তারা এখনও বুঝতে পারছে না, এ এখন আর তাদের দেশ নয়। তাদের বাপ-দাদারা তাদের ত্যাগের বিনিময়টা দিয়েছে; উষ্ঠা দিয়ে বাপ-দাদার বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে। এখন সৃষ্ট দেশটি স্বাধীন সার্বভৌম নতুন দেশ। যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহির লেপন নিয়ে অস্ত্রধারীরা বীর, তাঁরা তাঁদের বীরত্বগাঁথায় ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে পেয়েছে নতুন দেশ আর এই দেশে বিরুদ্ধে তাদের লিপ্ততায় তারা হয়ে গেছে রাষ্ট্রদ্রোহি, মাতৃভূমির কালাঙ্গার।

আচ্ছা বলুন ত- যদি আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র তৈরী না হত তবে যারা নতুন দেশের স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রাণ দিতে উৎসুক ছিল, তাদের অবস্থা কি হত? তখন কি মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রদ্রোহি হত না? পাকি রাষ্ট্র রাষ্ট্রদ্রোহির বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিত না? পৃথিবীর রাষ্ট্রদ্রোহিনীতি অনুযায়ী তাদের কি ওপেন ব্রাশফায়ার করা হত না? অথবা আমৃত্যু কারাবাস করতে হত না?

যদি তাই হয়? তবে আজ কাদের এই কুলাঙ্গারদের জন্য কাদের এত মায়া উতলায়? কোন কোন উছিলায় এরা দরদ দেখাতে চায়? যারা কখনো এই বাংলাদেশই চায় নি, চায়নি এখানকার সৃষ্টি-সংযুক্তি-স্মৃতি। শুধু এ নয়, স্বাধীনতার পরও এরা নিজেদের নিলর্জ্জ মুখ ঢেঁকে নীরবে দুনিয়া থেকে যেতে পারে নি। বরং কুলাঙ্গারগুলো বারংবার বুক উঁচিয়ে লক্ষপ্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করে অন্যের হাতে তুলে দিতে অার্বিভূত হয়েছে। এখনও, কুলাঙ্গারের দল মায়ের আঁচলে থেকেও মাকে ভালোবাসতে চায় না। তবে এদের জন্য মায়া হবে কেন? ঠিক কোন অনুভূতি কিংবা যুক্তিতে আমরা এদের ক্ষমা করব?

না, পারিনি কখনও পারবও না। এখনও বলে যাচ্ছি, মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাই বলে যাব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন