বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

মৃত্যু ও মায়া

জন্মে মৃত্যু অধীর হয়ে দিচ্ছে কেবল তাড়া
মাঝখানে তার জড়িয়ে রাখা কিছু স্বপ্ন-মায়া।

দ্বিগবিজয়ী

দ্বিগবিজয়ীর পথ থাকে না! তিনি আঁধারের ইশারায় ছুটেন, বোকা পথ তাই আড়ালে হারাবার বাঁক খুঁজে পায় না।

ভারতীয় দালাল!!!

মাঝে-মাঝে কিছু লোকের সাথে অনিচ্ছায় বিতর্কে যেতে হয়। তাদের ভাষায় ভারত হিন্দুদের দাদার দেশ। হিন্দুরা ভারতের দালাল। তাদের কথায়-বার্তায়, আকার-ইঙ্গিত কিংবা উদ্দেশ্য কি? কথার বাকামিতে তারা এমন ভাব ধরে যেন আমরা কিছু বুঝি না। কিন্তু তাদের যদি প্রশ্ন করি এদেশে আপনার আমার নাড়ি ছেঁড়া রক্ত মাটি শুষেছে, এদেশের আবহাওয়ায় আমরা উঠেছি-বসেছি-খেলেছি। তারসত্বেও যদি আমাদের এদেশের চেয়ে ভারতের প্রতি দূর্বলতা বেশী হয়, তবে এদেশে বসবাস করে আপনাদের কাদের জন্য জ্বলে? আসলে তাদের কথার ভাবে মেনে নিতেই হবে- আসলে আমরা এদেশে নই, আমাদের মন-প্রাণ সব সঁপে দেয়া ভারতের জন্য। যদি আমি বা আমরা নাও হই, তারা জোর শক্তি প্রয়োগ করে হলেও আমাদের তা মানাতে বাধ্য করে ছাড়বে মনে হয়। আসলে দুনিয়াটা সত্যি খুব মজারু! এখানে ক্ষমতাই মূখ্য আর বাকী সব মৌন। ক্ষমতায় রাতকে ঝাড়বাতিতে দিন করে আর দিনকে কপাটের আড়ালে লুকিয়ে রাত করে। কিন্তু সাধ্য কিংবা সীমাবদ্ধতার কিংবা সত্যটা যথাযথ স্বীকৃতির ধার ধারেনা।

এখানে আমাদের কে ভারতের দালাল বলার কারণ হিসেবে তাদের যুক্তিগুলো শুনুন- বেশ রং চঙ্গা যুক্তি, জানা থাকলে যেকোন হিন্দুদের দালাল আখ্যায়িত করা আপনার জন্যও সহজ হবে। যুক্তিগুলোঃ

১) বাংলাদেশের প্রত্যেকটি হিন্দুদের আত্মীয়-স্বজন ভারতে আছে (কি কারণে সেটা বিবেচনার বিষয় নয়, কারণ.....সে না বললেও যারা বোঝার বুঝবেন নিশ্চয়ই)
২) বাংলাদেশের হিন্দু‘রা খুশিতে বসবাস করার জন্য ভারতে ছুটে।
৩) হিন্দু‘দের উপর এদেশে মানুষ অন্যায় অত্যাচার করলে তারা ভারতের কাছে বিচার দেয়।
৪) এরা ভারত সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আওয়ামীলিগকে ভোট দেয়।
৫) ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতি এদের দারুন আকর্ষন, এরা দেশী সংষ্কৃতি বাদ দিয়ে ভারতের সংষ্কৃতির প্রতি দাবমান। (যদিও বাংলাদেশের সত্যিকারের সংষ্কৃতি আসলে কি ছিল বা কি হচ্ছে তারা তা ভুলতে চেষ্টা করে অর্হনীশ।)
৬) হিন্দুরা ভারতের বাংলাদেশের উপর অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করে না। (যদিও বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাস বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, এদেশের মানুষের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ইতিহাস সংখ্যার বিচারে এখনও হিন্দুরাই এগিয়ে। এটা মুখের কথা নয়, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।)
৭) হিন্দুদের ভারতীয় কবি-সাহিত্যিকদের (রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর....) প্রতি দূর্বলতা।
৭) আরও আছে, এ মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।

এসব বলার পর তাদের যদি প্রশ্ন করা হয় এর জন্য যদি হিন্দু‘রা ভারতের দালাল হয়ে যায়, তবে বলুন-

১) আপনারা ভারতের চ্যানেল বর্জন করতে লাফালাফি করেন, অথচ মজার কথা আপনাদের প্রিয় নায়ক নায়িকাদের লিষ্টে এগিয়ে- সালমান খান, শাহরুখ খান, ফারদিন খান, আমির খানসহ ভারতের সব মুসলিম নায়ক‘রা, যদিও তারা আমারও প্রিয় নায়কের তালিকায়। তবু এদেশের মুসলমানদের তালিকাটি কিন্তু বিভাজিত।)
২) তেনাদের প্রিয় শিল্পীর তালিকায়, ভারতে গান গেয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া আতিফ আসলাম, আদনান সানি.....
৩) ভারতের চ্যানেলে প্রতি তীক্ততা থাকলেও তারা আবার ভারতের পিস টিভির দারুন ভক্ত।
৪) ভারতের সব নিকৃষ্ট বর্বর কিন্তু জাকের নায়েক, মওদুদী, ড. আবুল কালাম আজাদ তাদের আদর্শ। জাকের নায়েক আর মওদুদীর আদর্শ উদ্দেশ্য স্থাপনের জন্য তারা এমন কোন ঘৃন্য পথ নেই, যাতে আশ্রয়ে তাদের কার্পণ্যতা আছে।
৫) ভারতের সনিয়া মীর্জা পাকিস্থানের মালিককে বিয়ে করাতে তেনাদের সুখ বলে শেষ করা যাবে না।
৬) রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভারতীয়, তাই এদেশের সমস্ত পুস্তক থেকে তাঁদের বাদ দেয়া (আসল উদ্দেশ্য বাংলাভাষাটাকে মুছে দেয়া, একথা বলছি কারন- বাংলাসাহিত্যে তাঁরা ব্যতীত বাংলা সাহিত্যের আধো অস্তিত্ব আছে কিনা, আমার জানা নেই)। কিন্তু তাদেরই আবার ভারতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি নির্মোহ দূর্বলতা। ঘটনাটি প্রশ্নবিদ্ধ।

এসব বিষয় যদি বলা হয় এবং একই অভিযোগে তাদেরকেও ভারতীয় দালাল বলা হয় তখন এরা রক্তচোখে আপনাকে মারতে হুমকি দেবে না এও বলা মুশকিল। অতএব হিন্দু‘রা ভারতীয় দালাল তমকা নিয়েই এড়িয়ে চলুন জান বাঁচাতে, জানেন তো জান বাঁচানো ফরজ।

ধর্মবোধ ও আমরা

আমরা মানুষ হবার যতটা না চেষ্টায় রত, তারচেয়ে বেশী চেষ্টায়রত ধর্মকে আশ্রয়ে রাখতে। তবে কি আমরা ধার্মিক?

এই প্রশ্নের প্রতিউত্তর একটাই- ধর্মের নির্দেশনা ধর্মীয় অনুশাসন যথাযথভাবে পালন, একে অপরের সাথে মিথ্যা কিংবা জোচ্ছুরি না করা, সৎ পথে চলা, কারও ক্ষতির মানষিকতা পোষন না করা, নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা কিংবা থাকার সর্বোত্ত চেষ্টা করা, কারও গীবত না করা, সামার্থ্য অনুযামী দান-সদকা দেয়া, মনুষ্য জ্ঞাণে আবদ্ধ থাকা, মাণবতা পোষন করা, কারও ক্ষতি না করা, কারও উপর অন্যায়-অত্যাচার থেকে বিরত থাকা এবং সর্বোপরি সর্বোত্তভাবে সকলের সহিত যথার্থ বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখা।

কিন্তু আমরা কি দেখছি? আমরা দেখছি মন্দিরে বড়-বড় ধর্ম যাজক নামধারীরা জানাচ্ছে হিন্দুদের উপর অমানুষিক নির্যাতনের কথা, প্রার্থনা করছে তাদের ধর্মের লোকদের সু-প্রসন্ন জীবনের জন্য। মসজিদের ইমাম তিনি বয়ান দিচ্ছেন সমগ্র মুসলিম জাতির দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে, দোয়া করছেন মুসলিম ভাইয়েরা যেন জালিমদের দুঃখ-নিপীড়ন উতরে আল্লার পথ ধরে বেহস্তবাসী হয়। একই অবস্থা বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, গুরুধর্মসহ প্রায় সকল ধর্মের বেলায় বর্তমান।

আমরা প্রত্যেকে এক-একটা পরিবারের সন্তান, আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের অভ্যন্তরের প্রত্যেকের মানষিকতা কিংবা আদর্শ এক নয়। যদি একই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত হবার পরেও আমরা সম-মানষিকতা সম্পন্ন না হই, তবে সমাজ-সংসার কিংবা ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে আমরা সকলে কি করে এক হব? যদি একটি পরিবারের একজনের উগ্রতায় পরিবারের সবাইকে সামষ্টিক বিচারে আনা না হয়, তবে কেন ধর্মীয়বোধের উপর ভিত্তি করে মানুষে-মানুষে পৃথক হবে? সবধর্মের পালনকারী যেহেতু মানুষ- অতএব দৃষ্টিভঙ্গি, মানষিকতা কিংবা আদর্শিক বিচার-বিবেচনায় আনলে প্রত্যেক ধর্মে এমন কিছু মানুষ আছে- যারা আগ্রাসী, ধর্মের নাম করে এরা রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মজতে পছন্দ করে। এরা ধর্ম নিয়ে মানুষ নির্ণয় করতে চায়- মনুষ্যত্ব কিংবা মানবিক বিরেচনায় নয়। এরা দেখাতে চায়- এই ধর্মের লোক আমাদের এই করেছে, ঐ ধর্মের লোক আমাদের পাছায় বাঁশ দিয়েছে, ওরা আমাদের ধ্বংশ করতে চায়, চলুন আমরা আমাদের ভাইদের জন্য দোয়া করি। কিন্তু এরা এতটুকু বিবেকেও কখনও মানুষ হিসেবে ব্যক্তির উগ্রতা কিংবা হিংস্রতাকে দেখাতে চায় না। আসলে উদ্দেশ্য বিবেচনায় নিলে এরা চায়, শুধু নিজ ধর্মকে প্রচার আর প্রসার ঘটাতে। এতে রক্তের লিপ্সায় অন্যকে হিংস্র জানোয়ার বানাতে এদের বাঁধে না।

যদি একজন ধর্মীয় আদর্শ পালনকারী নেতা শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রচার-প্রসারের নেশায় পড়ে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে মানুষকে মারার নির্দেশ দেয় কিংবা কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিজের আদর্শিক মতাবাদ জোর করে চাপিয়ে দেয়, অথবা আদর্শিক মতবাদ চাপাতে না পেরে তাকে নিঃস্ব করে কিংবা তাকে কুপিয়ে হত্যার পরোক্ষ মদদ দেয়, তিনি কি করে সঠিক ধর্মীয়গুরু কিংবা ধার্মীক? যদি নিজের বিবেক-বোধ এতটুকু অন্তত থাকে তবে এই রক্তের হোলিখেলা থামাবার জন্য এখনই তা বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে এখনই, সেসব ধর্মীয়গুরুদের ভূল এখনই ধরিয়ে দিতে হবে। বলতে হবে আপনি মানুষের জন্য দোয়া করবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মুসলিম কিংবা নিজ ধর্ম অন্তর্ভূক্ত ভাইদের জন্য নয়। আমরা মনুষ্যত্ব বিশ্বাসকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই, বিষাদে নয়।

বাঙ্গালি চরিত্র ও ভবিষ্যত



বাঙ্গালি চিরকালই দু‘মুখো! এরা স্বাভাবিক চিন্তা-চেতনাতে কখনও এক হতে পারে নি, অদূর ভবিষ্যতের সে আশা করাটা দূরহ বটে। এরা সন্ত্রাসকে যেমন প্রতিহত করতে চায়, ঠিক তাদের লালনে মদদ দিতেও তৎপর। একদল একজনকে দোষী সাব্যস্ত করে তথ্য দিলে অন্যদলের কাছে মিথ্যে সাব্যস্ত করার তথ্যও এসে যায়। কেউ আক্রান্ত হয়ে ঘৃণা-ভয়ে থু-থু ছিটালে ঠিক বিপরীত কেউ এসে সে থু-থু চেটে খায়।

কেউ হ্যাঁ বললে সে হ্যাঁ‘কে না বলার লোকের যেমন অভাব থাকে না, তেমনি হিংস্র জানোয়ারের সুদর্শনরুপ দেখে ক্রাশ খেয়ে অর্গাজম হওয়ারও অভাব নেই।

এমন জাতির ভবিষ্যৎ কতটা ভয়ঙ্কর রুপ হয়ে এসে দাঁড়াবে- সময় কেবল তারই প্রতিক্ষার প্রহর গুনছে।

উদ্দেশ্য

আইডিবি থেকে কম্পিউটারের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক কোর্সে বৃত্তিসহ বিনামূল্যে করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র মুসলিম ছাত্রদের। ইসলামী ব্যাংকের মতো এখানে কোন হিন্দু বা অন্যকোন ধর্মালম্বিদের আবেদন করার সুযোগ পর্যন্ত নেই। সবচেয়ে মজার ব্যাপার সরকারই এ ব্যাপারে সব সুযোগ করে দিচ্ছে, এমনকি প্রশ্ন পর্যন্ত উঠছে না- এদেশে অন্য ধর্মালম্বিদের যথেষ্ঠ বসবাস থাকার সত্ত্বেও তারা কেন সমসুযোগ পাচ্ছে না?

প্রশ্ন তুলছি, গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় এ ধরনের মানষিকতা প্রদানের সুযোগ দেয়ার কার্য্যত কারন কি? বৃত্তিপ্রদানের মাধ্যমে এভাবে একটি জনগোষ্ঠীকেও সবস্থানে ক্ষমতাশালী করে তোলার উদ্দেশ্যও বা কি? আজকে যারা কম্পিউটারের হ্যাকিং কিংবা স্প্যামিং কিংবা ভার্চূয়াল জগতে হিডেন থেকে বিভিন্ন অসাধু কার্য্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের মদদ দাতা আসলে কারা? শুধুমাত্র একটা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গোপন কার্য্যসিদ্ধের উদ্দেশ্য কি?

ভয় ও বোধ

খেলোয়ার‘রা খেলছে- রাষ্ট্রযন্ত্র খেলছে, প্রধানমন্ত্রী খেলছে, আইনমন্ত্রী খেলছে, মন্ত্রী পরিষদ খেলছে, সাবেক বিরোধী বর্তমান বিরোধী খেলছে, বাম খেলছে, ডান খেলছে, সাথে মধ্যবর্তী‘রাও খেলছে। বুর্জোয়া রাজনৈতিক খেলছে, নীতি বিসর্জিত আমলাতন্ত্র খেলছে। প্রশাসন খেলছে, তার হাতে ধরে সাঙ্গ-পাঙ্গরা খেলছে। লেজুড় ধর্মব্যবসায়ী খেলছে, বুদ্ধিজীবী খেলছে। বিশ্বাসীরা খেলছে, বিশ্বাসবাসী‘রা খেলছে। লেজ গুটানো বিড়াল খেলছে, ধূর্ত শেয়াল খেলছে। লেজ তোলা কুকুর খেলছে, উগ্রতায় শুয়র খেলছে।

এখানে খেলায় জয়-বিজয় অনুমেয় না হলেও খেয়াল করলেই বোঝা যাচ্ছে সকলের খেলার উদ্দেশ্য হাসিল! খেলায় অংশগ্রহণকারী সবাই নিজেদের কায়দায় খেলতে-খেলতে ভাবছে আবাল জনতা ঠিক বোঝে না, ঠিক খেলার কৌশল জানে না। আর সত্যিতে পৌঁছে আমরাও দেখছি, আসলেই কম ভুগছি না। খেলার চমকে-ঢমকে আমরা ভীতি নিয়ে সেযে, ছুটছি আর থামছিও না। অথচ ভীতি থামিয়ে এদের দিকে হাত এগিয়ে নিলে এরা ঠিক মুঠিতে কতটা পুরত সন্দেহ!

বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬

প্রেম ও বিশ্বাস

প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মূখ্য এবং জরুরী “বিশ্বাস”। এখানে বিশ্বাস যত দৃঢ়, ব্যক্তি মধ্যকার প্রেম তত প্রগাঢ় ও সুদৃঢ়। সময়-পরিস্থিতি বিবেচনা বোধে না নিয়ে শুধুমাত্র আবেগের বশবতী হয়ে, অথবা হারাবার ভয়ে যখন কোন পরিণয় বা সমাপ্তী আসে, তখন সেই প্রেম বা সম্পর্ক নিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ায় জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশ্নবোধক শব্দটি....

তারা কি পরস্পরকে সত্যি বিশ্বাস করে??????

(প্রেম সময়কে যেমন হারাতে জানে, তেমনি হারাতে জানে সমাজ-সংসার-সংশয় কে। অতটুকু না থাকলে প্রেমের প্রাধান্য কিসে?)

প্রেমের ক্ষেত্রে আর একটি গুরুত্ববহ বিষয় সন্দেহ, যেটা দূর্বল বিশ্বাসের কারনে ব্যক্তিমনে জন্ম নেয়। যখন ব্যক্তিমনে সন্দেহ প্রবল হতে শুরু করে, তখন পরস্পরের মধ্যেকার বিশ্বাসও কমতে থাকে। সন্দেহ বাতিক যুক্ত যুগল সত্যিকারের প্রেমটাকে জানে না। তাদের কাছে প্রেমটা যতটা না স্বর্গীয়, তারচেয়ে বেশী দেহ ও মনের খোরাক কিংবা প্রাপ্তীর। এ‘ধরনের প্রেম অভিলাষী! যেটা পরিণয় পেলেও পরিণতিটা স্বপ্নের মতো আগলে রাখবার স্থান করে দিতে পারে না।

(বিঃ দ্রঃ - এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত কিংবা দর্শন। যেহেতু আমার ব্যক্তি জীবনে কাউকে নিয়ে তেমন করে স্বপ্ন দেখা কিংবা কারও হাত ধরে এক-দু‘ক্রোশ পথচলা সম্ভব হয়ে উঠেনি, তাই চিন্তা কিংবা চেতনার ভ্রান্তী থাকতে পারে। তবে নিজের জানার গন্ডি এবং সমাজের প্রতিবিম্ব থেকে যতটুকু আলোর বিচ্ছুরণে ঠিকরে নিতে পেরেছি, তাতে নিজের উপলব্ধিটাকে একেবারে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিতেও আমার কার্পণ্যতা আছে।)

জানা

উর্বর-অনুর্বর প্রাণগুলো ভেঙ্গে-চুরে বুনে যায় কবিতা-গল্প-উপন্যাস
আর রক্ত-মাংস-হাড় মাটিতে মিশে যেতে-যেতে রেখে যায় ইতিহাস।

জিজ্ঞাসা

যতটা কাছে আছি তারও কাছাকাছি রয়ে
যদি নীরবতার নীরবটুকু না শোন্
যতটা আড়ালে আছি তারও আরও বেশী গিয়ে
লাভ কি যদি এ মনটাকে জান?

প্রেম ও পরিণতি

শুরুটা ভালো লাগার, স্পর্শের কিংবা মনের সাথে লুকোচুরির
কিন্তু বিশ্বাসের ত্রয়োদশ বিন্দুরেখা পেরিয়ে পরিণতি সহজ নয়
কতকটা দ্যোদুলমান মন, কিছুটা মৌণস্তব্ধতা অথবা হারাবার কিছুপথ
আতঙ্কগুলো ভূত হয়ে পথ আগলিয়ে সমাপ্তিকে ইন্দ্রজালে আটকালে
আর চেয়ে নেবার মতো বাকী থাকে কেবল এক
যেখানে পরিবার-স্বজন, স্নেহ-সম্মান-দম্ভ-আধিখ্যাতা
জড়িয়ে পড়ে লক্ষ্যহীন ছায়াজালে, নাট্যমঞ্চের বিষাদে

ভালোবাসা হেয়ালীপনার মাত্রা যেমন বোঝে না
তেমনি বোঝে না এগিয়ে যাওয়া পথের সীমাবদ্ধতাটুকুও
শুধু মেঘধারার উপকূল ধরে ফেরবার আশার নৌকোটি
কূলে ভিড়বে বলেও ভেড়ে না
এখানে ভয়টা হারাবার, বিচ্ছেদের
তাই দিগন্তকে ছড়িয়ে যাবার নেশায় ঢেঁউগুলো যখন আরও অপ্রতিরোধ্য
তখন ঝরে পড়ে বেড়ে উঠা সীমানায় নিখাঁদ ভালোবাসার পালকগুলো।

অনুযোগ কেন?

যেমনটি ভেবেছ আমায় তেমনটি কখনও ছিলেম না, আজও নেই
সুদর্শণ পুরুষ তুমি কেন আর সকলেরই বাসনায়, অবিশ্বাস সেই?
না; তোমাকে দেখার মতো আমার কেবল দুটো আঁখিই সদা জেগে রয়
অনুযোগ কেন? আবেগ হেলে শিশিরেরও টলমল ছলছল রোদে পরিনয়।

বাসনা

যদি আগলে রাখার কৌশল জানতে প্রিয়তম;
আমিও পারতাম হতে অন্যসকল প্রেমিকসম

মূল্য

দীর্ঘ তিন বছর যন্ত্রণা সহ্য করেছি, দৈনিক গড়ে ৪-৫ ঘন্টা রাস্তায় কাটিয়েছি ২০ মিনিটের বাসের রাস্তায়। সব সহ্য করেও ভেবেছি সরকার ফ্লাইওভার বানাচ্ছে সে তো আমাদের মতো জনসাধারনের জন্যেই। কাজটা শেষ হলে আমরাই উল্লাসে এই রাস্তায় পথ পাড়ি দেব। ফলে ফ্লাইওভারের উল্লাসে বিভোর আমরা যখন রাস্তার বড়-বড় গর্ত পার হই, তখন তাতে আমাদের চিত্ত আহত হয় না বরং আমরা হাওয়াই মিঠে খেয়ে হাওয়ায় উড়ছি ভেবে নেই।

তিনবছরের মতো সময় পার হয়। যে ফ্লাইওভার দুই বছরের মধ্যে শেষ হবার চুক্তি হয়, তিনবছর পর তার অর্ধেক শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী উৎসাহ নিয়ে উদ্ভোধন করেন। আহা! এ দেখার মধ্যেও সুখ, কৈফিয়ত ছাড়া ঢাক-ঢোল-বাজনা বাজিয়ে উদ্ভোধন! যা হোক অর্ধেক ত হয়েছে, মনে আনন্দ জাগে। আপাতত অর্ধেকে না হয় পেট ফুরবো। হ্যাঁ; মাসখানেক আধেকে বেশ ভালোই কাটছিল। ২০ মিনিটের রাস্তায় আমরা উড়োজাহাজে উড়ে ১০ মিনিটে পার হয়ে গেছি। বাসার সবাইকে তাই কয়দিন কৈফিয়ত দিতে হয়, কি করে আমি এত তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছি! কৌতুক করে বড় এক ভাই বলেন; কি খবর বিপ্লবভাই? অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন নাকি? তখন গর্ব করেই বলে উঠি, আমরা এখন ফ্লাইওভারে উড়ি ভাইয়া। আপনি উড়ে চলার মজা না পেলে বুঝবেন না।

বাবার মৃত্যু বার্ষিকী পালনের জন্য বাড়ি গেছি। ফিরে আবার যখন নিয়মিত অফিস করবার জন্য ৩০ মিনিট আগে বাসে উঠলাম, লক্ষ্য ১০ মিনিটে অফিসের কাছে পৌঁছব, তারপর হাতে ২০ মিনিটে নাস্তা খেয়ে একটু রিলাক্স হয়ে অফিসে ঢুকব। কিন্তু; একি? গাড়ি ফ্লাইওভারে উঠল না, ড্রাইভারের সাথে কেওয়াজ লাগালাম- মামা তোমাগো এত যাত্রীতে পেট পুরে না? অফিস টাইমে মজা করছ? কিছুক্ষন বাক-বিতন্ডা শেষে বাসের স্টাফের কথায় বুঝলাম, বেইলি রোড ভিআইপিদের রোড! আম-জনতা ভিআইপি রোড দিয়ে চলবে? তাই মন্ত্রণালয় থেকে সাধারন যাত্রীসেবা বাসের রোড পার্মিট তুলে দেয়া হয়েছে। সেদিন অফিসে ১ ঘন্টা পর নাস্তা না খেয়েই ডুকলাম। বুঝলাম, এদেশে আম-জনতার মূল্য শাসে, তাই আমের (আমজনতার) শাসটাই সকলের চাওয়ার, ঐটুকু শেষ হলে আঁটি হতে নতুন চারা গজে যতদিন না নতুন শাসের আম পাওয়া যায়, ততদিন পর্যন্ত তা মূল্যহীনই পড়ে থাকে।

আশার বাণী

শ্রমিক-মজুরের পিঠে হাত বুলিয়ে অনেকে বলেছে-
দেশ যেদিন উন্নত হবে সেদিন আমরা তোমরা.....
দেশ একটু-একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে
পিঠে হাত বুলিয়ে অনেকে আকাশ ছুঁয়েছে
অথচ আশার বাণী আকড়ে ধরা শ্রমিক-মজুরের দল
তাঁরা চাপড়ানো পিঠে কুঁজ নিয়ে এখন বিছানায়, নির্বাক