বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

তাড়না

গাড়িতে টুপি পাঞ্জাবি পড়া টিংটিঙ্গে লোকটা হাত পেতে বলছে পবিত্র কোরআন শরিফ বানব ভাই-চাচা-আপা-আম্মা, সবাই ২ টাকা ৫ টাকা দেন। সবাই কম-বেশি দিচ্ছে, একজন জিজ্ঞাসা করে, বানতে কত লাগে চাচা? জবাব শুনি, সে ১৩০ টাকা। চেয়ে দেখি প্রয়োজনের অধিক উঠে যায় গাড়িতেই।

লোকটি গাড়ি থেকে নামে, অন্য গাড়িতে উঠে। হয়ত একই বয়ান চলে তার গাড়িতে-গাড়িতে। হয়ত পবিত্র কোরআন শরিফ পড়ে থাকে যত্নবিহীন কোন তাকে। তবে একই বয়ান ওছিলাতে টাকা তুলে মেটে তার কোন অস্পষ্ট তাড়না?

জরুরী

বিড়াল পুষে মেঁও ডাক শোনার চেয়ে, মেঁও টাকে হাতে পাওয়াটা জরুরী।

প্রয়োজনে

সময় সংকীর্ণতায় আর চরিত্রের প্রয়োজনে
শরীর বাঁকে, বোল পাল্টে, রুপ বদলায়, দৃষ্টি ভিন্ন হয়।

সৎ জীবন-যাপনের জন্য প্রাইভেট চাকুরী খুঁজছেন?

সৎ জীবন-যাপনের জন্য প্রাইভেট চাকুরী খুঁজছেন? তবে মানষিক প্রস্ততির সময় এখনই-

প্রাইভেট চাকুরী করতে গেলে, প্রথমে মনে রাখা প্রয়োজন-
কোম্পানীতে মালিকের ইচ্ছেই ইচ্ছে, আপনি তার টাকায় কেনা গোলাম।
আপনার ইচ্ছে-অভিলাষ থাকবে স্বাভাবিক, তবে সেটা গোপনে।

প্রথমে যোগদানের সময় আপনার শিক্ষাজীবনের অর্জিত ফসল
বন্ড সই করে জমা দিয়ে কোম্পানীর দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
আপনি কোম্পানীর ক্ষতি করতে পারেন যেকোন সময়,
তাই সরকারী জামিনদার দেখাতে হবে।
কোম্পানীতে কাজ করার ইচ্ছে আছে মানে-
কোম্পানী যেকোন কাজ করতে প্রস্তুত হতে হবে।
আপনার বাড়ি টেকনাফ অফিস তেঁতুলিয়া, সমস্যাবোধ করা যাবে না।
আপনার নিয়োগ অফিসের কর্মকর্তা হিসেবে, কিন্তু কোম্পানী চাইলে
আপনাকে চায়ের কাপ টানাতে পারে, তাতে রাগ করা যাবে না।
কোম্পানীর গ্রাহক বীষ খাওয়ালে তা হজম করে
কোম্পানীর প্রয়োজন মিটিয়ে নিতে হবে।
প্রয়োজন মিটাতে বীষক্রিয়ায় মরে গেলে আপনি ব্যর্থ,
বেঁচে থাকলে আপনি কোম্পানীর একনিষ্ট কর্মচারী।

এখানে গ্রাহকের সাথে মালিকের সম্পর্ক বজায় রাখার প্রয়োজনে আপনাকে
মিথ্যে অন্যায়-অপবাদ মুখ বুজে সইবার মানষিকতা রাখতে হবে।
আপনি যতদিন শ্রম-মেধা খাটাতে সক্ষম ততদিন আমি কোম্পানীর কর্মচারী,
অক্ষম হয়ে পড়লে মেনে নিতে হবে-
কোম্পানী আপনার মত ছা-পোষাদের রাখবে কেন?

ডিউটির ক্ষেত্রে আপনার অফিসে ডোকার সময় নির্দিষ্ট হবে,
কিন্তু বের হবার সময় কোম্পানীর মার্জি মাপিক...
পরপর তিনদিন দেরিতে অফিসে গেলে আপনার একদিনের মাইনে কাটা।
প্রতিদিনকার সময়ের চেয়ে একটু বেশী ডিউটি করলে কোম্পানী খুশি হবে,
কিন্তু ওভারটামই বা কোন সুযোগ-সুবিধার প্রসঙ্গ এলে কোম্পানী এড়িয়ে যাবে।

বছর শেষ, সারাবছর শ্রম করে আশা পুষে আছেন বছর শেষে বেতন বাড়বে,
কিন্তু কোম্পানী এসে শুনাল কোম্পানীর লস হচ্ছে, অনেক কোম্পানী বন্ধ করে দিচ্ছে
কোম্পানীতে কাজ করতে হলে ২০% কম বেতনে করতে হবে,
না হলে চাকুরী ছেড়ে যেতে পারেন, মেনে কাজ করতে হবে।

সবশেষ যে কথাটি মাথায় রাখতে হবে-
কোম্পানী মনে করে আপনাকে অন্যকেউ দু‘টাকায় পুছত না,
অথচ তিনি কিংবা তার কোম্পানী আপনাকে জামাই আদরে রাখছেন।
প্রস্তুত আছেন তো? তবে আবেদন করুন, চাকুরী আপনার জন্য অপেক্ষমান।
রাজী না থাকলে যুদ্ধ করুন নিজের জন্য,
যদি টিকে যান তবে অন্যদের জন্য কানাওয়ালা বাঁশ নিয়ে দাঁড়াবারও সুযোগ আছে।

আমার প্রচেষ্টার ছিহ্নটুকু রেখে যাব একদিন

ছোটবেলায় লিখতাম কিনা জানি না, তবে ২০০২ সালের একটা ঝাপ্টা এসে এতটাই বিষন্ন করে তোলে যে, লেখালেখিটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সঙ্গী হয়ে যায়। তারপর থেকে এলোমেলো মনের কথাগুলো, ভাষাগুলো, ব্যাথাগুলো নিয়মিতই মগজ ছেড়ে ছুটতে থাকল। শিরা ছিড়ে কালির যোগান দিতে থাকে।

২০০৪ সালে কাকুর হাত ধরে ঢাকায় আসি, তখন নিজেকে তুলে ধরার একটা আবছা বাসনা পেয়ে বসে। ছুটোছুটি করি একটা বই বের করার। কিন্তু মধ্যবিত্ত বলয় আটকে দেয়। যেখানে জীবনের দায়টাই বড়, সেখানে আমার মতো মানুষগুলোর কাছে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টাটুকু অনেকটা অতিরঞ্জিত করে জাহির করার মতো। বাংলাবাজারের একতা প্রকাশনী তে- ২০০৫ সালেই আমার বই “কামনা” প্রকাশিত হবার কথা থাকলেও, প্রকাশনীর সাথে চুক্তিবদ্ধ সম্পূর্ণ টাকার অর্ধেকটাও দেয়া হয়নি আর বইয়ের প্রকাশ সে আকাঙ্খার মধ্যে নিঃশেষ হয়ে গেল। এরপর আর ইচ্ছেও হয়নি, চেষ্টাও করিনি।

২০০৮ কি ২০০৯ থেকে ফেবুতে মোটামুটি নিয়মিত আছি। ফেবুতে থাকাকালে বন্ধুদের মাধ্যমে ২০১০ সালের দিকে ব্লগ জগতের সাথে পরিচয় মেলে। “শৈলীব্লগ” দিয়ে শুরু করি অনলাইনে লেখালেখি। তারপর গল্পকবিতা, সবারব্লগ, আমারব্লগ, শব্দনীড়, সামু, প্রথমআলো থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি ব্লগে লিখি। জানতে থাকি এপাড়-ওপাড় দুইবাংলার বিখ্যাতদের সাথে। ফলশ্রুতিতে নিজেকে বিশ্লেষন করার, নিজের লেখার মান যাচাই-বাছাই করার, নিজের ভূল-ভ্রান্তীগুলো সংশোধন করার সুযোগ আসে। বুঝতে পারি, যা লিখে যাচ্ছি সে কেবল বিক্ষিপ্ত মনের প্রকাশ মাত্র, এর বেশী কিছু না। ফলে একদিন টাকার অভাবে যে বাসনাটি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে, এখন হাতে টাকা থাকলেও সে বাসনা দানাবেঁধে পীড়িত করে না।

প্রতিবছর বইমেলায় উপলক্ষ্যে অথবা বইমেলা ছাড়া অনেক শুভকাক্ষী আর প্রিয় লেখকদের বই আসে, কিছু প্রিয়জন-ভাই-বন্ধুরা উৎসাহ দিচ্ছে অন্তত একটা বই বের করার জন্য। কিন্তু আমি কেন জানি উৎসাহ পাই না। সত্যি বলতে কি- যতক্ষন পর্যন্ত নিজের লেখাটি নিয়ে নিজে সন্তুষ্ট হতে না পারছি ততক্ষন বই বের করার ইচ্ছে রাখছি না। কিন্তু এখনও একটা বাসনা জিইয়ে রাখছি, তাহল- সারাজীবনের তপস্যার সারাংশ নিয়েই না হয় আমার প্রচেষ্টার ছিহ্নটুকু রেখে যাব একদিন।

নিজেকে খুঁজে নিতে পারাটাই প্রত্যেকের জন্য সবচেয়ে বড় সফলতা

নিজেকে খুঁজে নিতে পারাটাই প্রত্যেকের জন্য সবচেয়ে বড় সফলতা। আপনি যখন আপনার ভিতরটাকে জানবেন, আপনি জানতে পারবেন আপনার ক্রোধ-হিংসা-অহংবোধ-দ্বেষ-ঘৃনা-সংযুক্তি। আবার আপনি যখন আপনার বাহিরটাকে জানবেন, আপনি বুঝবেন আপনার বাহ্যিক রুপ-লাবন্যপ্রভা-সবুজ-সৌন্দর্য-শৈর্য্য-বীর্য ।

যিনি নিজের ভিতর-বাহির সম্পর্কে অবগত, তিনি ধীর-স্থির হন। নিজের ভার অনুযায়ী কথা বলেন, বিষয়িক গতিবিধি সতর্কতার সাথে প্রত্যক্ষ করেন।

মানুষ তখনই কেবল নিজেকে আর সকলে চিন্তার উর্দ্ধে স্থাপন করতে সক্ষম হন, যখন তিনি তার গতিপ্রকৃতি যথার্থভাবে অনুধাবন করতে সমর্থ।

না চাহি আপন গলে

অতটা দেবার ছিলনা আমার
যতটা তুমি চেয়েছ
চোখের কিনারে দু‘ফোঁটা অশ্রুজলে
অকারণ চরণ ভিজিয়েছ

আমিতো কভু ছিলেম না চাঁদ
ধারিয়া আলোয় ভাসাব তোমায়
তবু মিছেমিছি কোন খেলার ছলে
জড়িয়ে গেলে হায়!

রাতের সেঁজুতি ডুরিয়া কাঁদে
শিহরিয়া বারে-বারে
কেন অকারন পড়িলে ফাঁস আজ
না চাহি আপন গলে!

নির্ণয়

সুন্নি না হয়ে সুন্নত করলে কি
মুসলিম হয়রে ভাই
শিয়া, ওহাবী, কাদিয়ানী, খারিজির
সুন্নতের দাম নাই!

সুন্নত কেবল সুন্নি জানে
জানত হিন্দু ব্রাক্ষ্মণে
জাত-পাতের বিধান ঘুটিয়ে
শুয়ে গেছে তারা শ্মশানে!

সুন্নি দেহ জান্নাতবাসী
সবকিছু তাদের জায়েজ হবে
বাকীসকল মাটির দেহ
কবরমাঝে কীটে খাবে!

দোজাহানের মূল্য কি জানি
আমার মত অজ্ঞ-ফ্যাসাদী
ধার্মিকের দেহে বোম্ বাঁধা দেখে
বাঁচিবার আশায় তাঁকে ডাকি।

ডাক কি তিনি শুনবেন আহা
সুন্নত আমার বড় বিকল
সুন্নতের পর সুন্নতি মুসলমান
বলিছে ধর্ম তাদেরই আসল!!!

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

বান্দিও মন্দিরাতে

ভোরের পাখি খুলে আঁখি
ডানামেলে ডাকিও
বিহানবেলায় হিমেল ছোঁয়ায়
সাথে নিও সঙ্গ দিও, প্রিয়।

রাত জোনাকি নিলে ডাকি
ডেকে নিও সাথে
আকাশ তারা আলোকধারা
বান্দিও মন্দিরাতে।

কোরোনা দেনা-দরবার

দ্বীপ জ্বলুক কিংবা দিল
দুই জ্বলে কেবল অঙ্গার
নিকষ কালোয় আলো দেখে
কোরোনা দেনা-দরবার।

হয়ত একদিন

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
রবি আর রাতের তারার আলো আলতো ছুঁয়ে প্রাণ জুড়োবে
সানবাঁধানো পুকুরজলে জলতরঙ্গে মন ভোলাবে
উদাস হাওয়া সবুজঘাসে প্রজাপতির দোল সে খাবে

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
স্বপ্ন দেখে লড়তে থাকা জীবনগুলো রং রূপ পাবে
কাঁদার মাঝে লুটিয়ে পড়া আলোর ঝলকে চিত্র হবে
ভূলে যাওয়া পথের ভাবুক সেও স্মৃতি খুঁজে নেবে

হয়ত একদিন লড়তে থাকা জীবনগুলো পূর্ণতা পাবে!
ন্যায় আদায়ের দীপ্তকণ্ঠ আকাশ জ্বেলে বজ্র হবে
অসহ্যের সব দৃড়বলয় ভেঙ্গে-চুরে গুড়িয়ে দেবে
জানবার মতো বিশ্বসংসার আপন হাতে গড়ে দেবে।

এখনও বিয়ে করিনি

একজন বলল বিপ্লব ভাই, আপনার কেউ নেই?
বললাম- আছে ত, মা-বোন-পাড়া প্রতিবেশী -আত্মীয়
আরে তা না
তবে?
প্রেমিকা!
না, প্রেমিকা নাই, বউ আছে...
বউ? কোথায়?
বাপের বাড়ি
কেন? এখনও উঠিয়ে আনেন নি?
আরে তা না, এখনও বিয়ে করিনি...

মেয়ের পেছনেও কিন্তু ঘুরে

বন্ধুশ্রেণীর একজন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল- ভাইরে দুনিয়ার সবাই স্বার্থের পিছনে ঘুরে।
আমি তার দীর্ঘশ্বাসকে হালকা করে দিয়ে বললাম- মেয়ের পেছনেও কিন্তু ঘুরে..

ঘৃণার থু-থু সে খুব কমজনই গিলে নিতে সক্ষম

সবাই কম-বেশী লিখতে চায় কিন্তু সবাই লিখতে পারে না আবার লিখলেও সবাই ভালো লেখে না।
একই মানুষের সন্মানের জায়গাটা জনবিশেষে কিংবা স্থানবিশেষে ভিন্ন। আজকে কারও লেখার অনেক কদর থাকতে পারে আবার ভবিতব্য সময়ে অলেখা-কুলেখাগুলোই সমান প্রিয় হতে পারে।
পৃথিবীতে একদিন ধর্মটা তীব্র বিশ্বাসের স্থানে ছিল, তখন বিজ্ঞানটাকে অবাস্তব রুপকথা ভাবত সকলে। কিন্তু এখন যখন বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত, ক্রমাগত দ্যৌদুলমান জীবনে পড়ে মানুষ এখন ধর্মটাকে সংশয়ে ঠেলে রুপকথার গল্প বলতে চাইছে?

বলছি সময়ের প্রাপ্তিকাল কিন্তু খুব বেশী নয়, তাই অযথা অন্যের লেখার মানদন্ড নিরূপণ না করে প্রত্যেককে প্রত্যেকের মত কিছু প্রকাশের স্বাধীনতা দিন না। বলছি- আঘাতের পরিণাম ত হাসি তে হয় না আর ঘৃণার থু-থু সে খুব কমজনই গিলে নিতে সক্ষম।

নেবে কি খেলায় যাদু-সোনা

খেলার বয়স চুকিয়ে এলাম তবু-
মন আমার আজও ভরল না
আমার সোনারঙ্গা দিনগুলো ছোঁব
নেবে কি খেলায় যাদু-সোনা?