সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

পথিক এই একটাই বাঁশের বাঁশি আমার


পথিক এই একটাই বাঁশের বাঁশি আমার
এর মাঝেই তুমি শুনেছিলে-মাতাল হরা সে গান
যে গান বাতাসে মিশে; পাখির কলতানে, মাতায় ভাবুক প্রাণ।

কি করে বাজে সে সুর?

পথিক; তুমি কি কখনো যামিনীদের দেখ নি!!!


এইযে; দেখছ না মাটি, তারা এই মাটিগুলো রাত-দিন আগলা করে
তাতে সোনার বীজ বুনে আর দেখে গোলাভরা ফসলের সোনালী স্বপ্ন
অথচ দিনগুলো তাদের বছরের বার মাসে; বার-বার ফিরে আসে
তারা বার-বার স্বপ্ন দেখে; হাসে; আবার ভাসে; ব্যথার নোনাজলে

ভাবছ কেন?

তারা যে করে মহাজনের চাষ
তাদের রক্তঝরানো সোনালী স্বপ্নের ফসলে মহাজনের বুকভরা নিঃশ্বাস।

এই বাঁশি তাদের দুঃখ জানে; বুঝে, তাই এত বিলাপ, এত ব্যাকুল সুর তার
এই বাঁশরির কান্নায় খুঁজে যামিনীরা তাদের কষ্ট; ব্যথার প্রতিকার।

এই বাঁশি আমি কোথায় পেলাম?

পথিক তুমি কখনো কি জসিম উদ্দিনের আসমানিদের কথা শোননি?
ছোট্ট একখানা কুড়োঘর; এই একটুখানি বাতাসে ঢলে; একটুখানি বৃষ্টিতে টলে
অথচ রোগ-শোক-ক্ষুধার ছটপটে যন্ত্রণায়, তাতেই বাঁচে তাঁদের অমিমাংসিত স্বপ্ন‘রা
তাঁদের সেই কুড়োঘরের পিছে, নুড়ে পড়া যে ঢুলিঝাড়, এই বাঁশি সেখানকার
যে আবহমানকাল হতে বয়ে চলছে আসমানীদের ঘুমরে কাঁদার সুরটিকে।

কি করে তুলি সে সুর?

হাসালে পথিক.......
এইযে দেখছ এই দেহ, এর চিণ্ময়কোঠরে বেঁচে আছে একটা মন
সে মন অতী ছোট; বড় বেশী বালকসূলভ তার আচারণ
যে কোন মিথ্যে যাতনা বইতে জানেনা; একটু খোচায় চিৎকারে যার বিলাপ
সে মন যখন এই সবুজকে ভালোবাসে, তখন সবুজের বুকের বীষের অনল
পুড়ে-পুড়ে তাকে অঙ্গার করে ফেলে; এই সূর যে তারই কাতর আর্তনাদ হে।

এ বাঁশি নেবে?

না হে পথিক, সে হয় না; এ বাঁশির দায়ভার নেয়া যে বড় সু-কঠিণ
এ তোমায় পথে নিয়ে ফেলবে,
তোমার মনের সুর যেমন সে বইবে, তোমাকেও বইতে হবে তার ভার
নয়ত সে তোমার সুরে সুর দেবে না; তোমার ঠোঁটে আকুল হবে না
তারচে ভালো- যে পথ ধরে এলে; সে পথ ধরে ফিরে যাও; আপন গন্তব্যে
এই মায়ালোকের ঘোর কাটতে তোমার সময় লাগবে না;
দূরত্ব যে শুধু দূর করে তা নয়; এযে সাময়িক আকুলতাও ভূলিয়ে দেয়।
তাছাড়া মনের গ্রহীরে যে ব্যথারা অধীর হয়ে বাঁশিতে দিয়েছে গুরুভার
তুমি নিলে এ বাঁশি আমার; কি করে করবে তা প্রচার
পথিক এই একটাই বাঁশের বাঁশি আমার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন