বৃহস্পতিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

নানা রঙ্গে সাজে বসন্ত

দখিনা হাওয়া দ্যোল খেলে-খেলে এল দখিনা বসন্ত
সাড়া জেগেছে ফুলবনে, নবপল্লবী নববিতানে নত
লেগেছে হাওয়া মহুয়াতলে, লেগেছে হাওয়া ফাগুণে
প্রিয় ডাকে কৌকিল ডাকে, সৌরভে ভ্রমর গুঞ্জরণে
এমন ডাকে থাকে কি রৌহিনী? বাঁধে কি বাহুর বৃত্ত?
ফাগুণের‘এ আগুন ধরা দিনে, নানা রঙ্গে সাজে বসন্ত।

সোমবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সীমাবদ্ধ জীবনে

যদি কোন বিষয়ে অন্তর্হীত তাৎপর্য্য খুঁজতে ৩০০ বা তারও অধিককাল সময় ব্যয়ের প্রয়োজন হয়, তবে মানব জীবনের সীমাবদ্ধ জীবনে সে তাৎপর্য্য খুঁজে বেড়াবার উদ্দেশ্য থাকে কি?

আমি বলতে চাইছিঃ এই পৃথিবীতে মানুষের আগ্রহ-অভিলাষ-অভিসন্ধি-অভিরুচী-কামনা-বাসনা-অভিপ্রায় সব সম্পন্ন করার পর, মানুষের আর কতকটা আগ্রহ থাকে, যাতে করে সে ৩০০ বছরের কোন তাৎপর্য্যের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাবে?

রাজনীতি ও জনতা

তখনও তারা জনগনের রাজনীতি করত এখনও তারা করছে
তখনও ধর্মের বুলিতে মানুষ মজাত এখনও অনবরত মজাচ্ছে
তখনও পেটুয়া বাহিনী দিয়ে নির্যাতন চলত এখনও চলছে সমান তালে
তখনও রক্ষিবাহিনীর হাতে ক্রসফায়ার হত এখনও হচ্ছে সদল বলে
তখনও অসহায় নারীদের ধর্ষন চলত এখনও চলছে পথে-ঘরে
তখনও ঘরে-ঘরে লুটপাট হত এখনও হচ্ছে তা অকাতরে
তখনও বিপক্ষ গুম হত এখনও হচ্ছে নিত্যদিন
তখনও জনতা পুড়ত এখনও পুড়ে হচ্ছে লীন
তখনও অমানবিকভাবে খুন হত এখনও হচ্ছে পথে-পথে
তখনও সংখ্যালঘুর উচ্ছেদ চলত এখনও চলছে বিধান মতে
তখনও তাদের সিংহাসন ছিল এখনও রয়েছে তা তাদেরই দখলে
তখনও সিংহাসনের জন্য মরত জনতা এখনও মরে সাফ সুদাসলে।

তবে স্বাধীনচেতা হবার লাভ কোথায় সে বল?
কেন ভেবে-ভেবে অযোগ্য অথর্বদের জন্য কান্না করে চল?
আরে এ সমস্যা ত নেতার নয়
সমস্যাটা মগজহীন অথবা পঁচা মগজের জনতার
এরা মানে; বুঝে, তবু কাজে এদের তত্ত্বসার
মগজ পচনে এরা পড়ে-পড়ে কাঁদে,
লড়তে জানে না
মাথাব্যথার যন্ত্রনায় মাথা কেটে ফেলে
বুঝতে শেখে না

সমস্যা ঘেঁটে-ঘেঁটে তলানি তে আসি
দেখী নিথর ক্রিয়াহীন দেহের জনতাই এইসব চায়
তারা চায় কেবলই চায় নিজেদের বলি দিয়ে বুলি রাখতে
ধর্মের বুলি আর লোভের মাদুলির দুই তাবিজই গলায় ঝুলাতে

সে সুযোগ কি আর হাতছাড়া করে নেতা?
সেযে; রাজনীতি করে, তার চাই ক্ষমতা কেবল ক্ষমতা...
দূর্বল আগাছাগুলো যতই কেটে-ছেটে রক্তাক্ত হোক না কেন
এরা যে বারবার জন্মাবে এ ত তারা জানে,
তারা অগাছা সাফ করে প্রতিনিয়ত হাসি-ঠাট্টা-প্রহসণে।

জনতা জনে-জনে যা দেখি তাতে কেবল এটাই ভাবি তারে-
পথে পড়া মরা একদিনও হাহাকার না করে থাকতে পারে না বলে
ডুরিয়া-ডুরিয়া অভিশাপে কেঁদে নিজেদের অস্তিত্বকে প্রমাণ করে...

অথবা

অথবা নয়নে নামুক ঘোর
তবু জেনেছি যখন তোকে ভোর
আমি রাখব খুলে এই আমার অলস বিষর্ন্ন দোর...

অথবা চলতে থামুক সব
তবু জেনেছি যখন তোর রব
তোর মাঝেই খুঁজে ফিরব আমার অনুভব...

আমাদের দাসত্ব জিহ্বা

আমাদের দাসত্ব জিহ্বা কতটা দাস পড়ে পড়েছে তা আমাদের টকশোর মলছাটা বুদ্ধিবেশ্যাদের দেখে বোঝা সম্ভব। যে দেশের বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় বলে খ্যাত বেশ্যা চাটুকারদল পা‘ছাটা স্বভাব না ঢাঁকতে পেরে সাধারণ মানুষের পুড়ে ছাই হওয়া ভষ্মকেও রাজনীতি কথা বলে জায়েজ করে চলে। তাদের বুদ্ধিতে দেশ কোন পথে যাবে? তাদের অনুসারীদের ভাবনার জগৎ ও কতটা কি হবে, সে সহজেই অনুমেয়।

আমি আমার ভাবনা থেকে একটা বিষয়ই কেবল অনুধাবন করতে পারি- তা হল যতদিন চাটুকার; বুদ্ধি বেশ্যা; দালাল; সুশীল নামক ছাটাদেরকে আমরা জ্ঞানী ভেবে সমর্থন করে যাব। ততদিন সাধারণের মুক্তি সম্ভবনা করাটাই বৃথা।

ভুলো মন সাজিয়ে তোলা

বেণী টেনে এলোগেছো চুল সাজিয়ে তোলা যায়
কিন্তু কালভদ্রে ভুলো মন সাজিয়ে তোলার উপায় কি?

আবেগ নয়, অনুভূতি দিয়ে বোঝ

আবেগ নয়, অনুভূতি দিয়ে বোঝ
আপনাকে আপনার নয়, অপরের মাঝে খোঁজ....

ভালো থাকতে গেলে

ভালো থাকতে গেলে ভালো রাখতে হয়
ভালো রাখতে গেলে ভুলতে হয় পরিচয়।

রাজনীতি এবং দেয়াশলাই

রাজনীতি এবং দেয়াশলাই দুই‘ই আগুন জ্বালে-
রাজনীতির আগুনে পুড়ে জনসাধারণের চিতায় রাজার ক্ষমতা সিদ্ধ হয়
আর দেয়াশলাইয়ের আগুনে খড়-কুটোর চিতায় পেটের ক্ষুধা রূদ্ধ হয়।

বান্ধবের বন্ধন

সবকিছুর মায়া ছেড়ে দিলেই কি শেষ হয়ে যায় সব বন্ধনের বাঁধা ?
জীবনের শেকল ছড়িয়ে দিকে-দিকে, দেখেও তোর হয় না শেখা? গাধা...

ছেড়ে গেলি না হয় সংসার, ছুটে গেলি না হয় নির্জন পাহাড়, বন
সেখানে গিয়ে মন ভরে তুই করবি কি সুধা পান? কিংবা করবি কি অবলোকন?

সৃষ্টির বৃত্তান্ত উঠে না কেঁদে যার, দেয় না যারে ইশারা,
তাকে কিসে করবি গোপন, কিসে করবি তারে সারা?

গোপনে সে বন্ধন তাড়ায়, কি করে করবি তারে মিছে
বান্ধবের বন্ধন গড়িয়া চলিছে, দেখ তোর পিছে-পিছে।

রবিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

মা মা বলে ডাকতে

আজ ফেব্রুয়ারীর প্রথম দিন
আমার প্রিয় ভাই-বন্ধু-শ্রদ্ধেয় প্রিয়দের বইয়ের
প্রতিটি বুননে ভাসবে, শত প্রিয় বর্ণ
যে বর্ণের শুদ্ধতা হৃদ্য করে প্রাণ, করে আহ্বান
ওহে প্রিয় ভাষাশহীদ বীর-
তোমাদের রক্তঝরায় সে সৃষ্ট শব্দ‘রা
ঝঙ্কার তুলে হৃদয় উত্তাল করে
সে উত্তালের ঢেঁউ আমাদের এগিয়ে চলতে শেখায়
শেখায় নিজেদের চিনতে, নিজেদের বুঝতে, নিজেদের জানতে
সর্বোপরি; এই বাংলার আকাশ-বাতাস-মাটির
প্রতিটি কণার ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে
মা মা বলে ডাকতে...

উত্তল হৃদয় মম

ফুলবনে গুঞ্জরণে ভ্রমরা হারায়
বসন্তের উদাস দুয়ারে কে এসে দাঁড়ায়
দেখে হই অবিভূত, দেখি নাতো ভ্রম?
জানিনে কোন আহ্বানে উত্তল হৃদয় মম।

নিঠুর ঘুম

চলতে পথে গতিভূলে যখন, হয়ে যায় পথের ভূল
দক্ষিন বাতাসে বাজে কার নুপুর, উড়ে কার এলো চুল?

মাঝরাত্রির পথহারা পথ, ধুরু-ধুরু মনে ভয়
সুনশান এই নিকষ আঁধারে, কানে-কানে কে কি কয়?

পেরিয়ে ভূলে দীর্ঘ দিঘি, পেরিয়ে বাঁশ বন
কাঁদে আড়ালে পুত্রহারা পাখি, আরো কাঁদে ভাঙ্গা মন...

চলে না কদম, এঁটে পড়ে দম, পড়ি-পড়ি করে পথ
কোথায় পড়ে আঁধার যাত্রী, কে দেবে বল মনোরথ...

ধবল শাদা শাড়ির আঁচল ভাসে, চোখে কেবল পথ ধাঁ-ধাঁ
দু‘পা ছড়িয়ে নির্জল আঁধারে, কে যেন ঐ‘ডালে বাঁধা?

ভেবে-ভেবে কেবল খুঁজি ভূল পথ, দৌঁড়ে-দৌড়ে ক্লান্ত শরীর
এ কোন ভয়ে, এই কোন পাপে, দেহ জমে হয় স্থির?

বিপদ লগ্ন বিপদ ঘিরে, করে কেবল হৃদয় চূর্ণ
কত করে ডাকি সহায় হও প্রভু, কেন ঘিরে এত দৈণ্য...

কালশাপের জীবন ধুকে-ধুকে কেবল, দিচ্ছে অন্তিম চুম
পড়ি-পড়ি করে আড়-মোড় ভেঙ্গে, ভাঙ্গে নিঠুর ঘুম।

বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৫

সামর্থ্য, ক্ষমতা ও নারীর পায়ে শেকল পড়াবার কারণ

পারঙ্গমতাই সামর্থ্য আর সামর্থ্য অনুযায়ী কার্য্য করা হল সামর্থ্যতার পরিচয়। অন্যদিকে ক্ষমতা হল- কোন বৈষয়িক বিষয়ে অর্জিত শক্তির অহমবোধ। 

হ্যাঁ; আমি সেসকল লোকদের কথা বলতে চাইছি যারা একাদিক বিয়ে করে থাকেন। আমার অনেক বন্ধু বলে থাকে তাদের সামর্থ্য আছে তাই তারা করে। আমি আমার বন্ধুদের উদ্দেশ্যেই বলছি, এতগুলো বিয়ে করা সে সামর্থ্য নয় বরং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। এই পৃথিবীতে যতজন পুরুষ দুই বা ততোধিক স্ত্রী গ্রহণ করেছে, তাদের দুই একজনই কেবল সামর্থ্যের জন্য করেছে। আর বাদবাকী সবাই করেছে ক্ষমতার দাম্ভিকতায়। বিষয়টা এই জন্যই বললাম- ধরুন বিয়ের মূখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে জৈবিক চাহিদা পূরণ। একজন পুরুষের জন্য একজন নারীই যথেষ্ঠ এই চাহিদা পুরণে। যদি কোন কারণে স্ত্রী বা পুরুষ অসমর্থ্য হয় সেক্ষেত্রে তার দ্বিতীয় পক্ষীয় কাউকে প্রয়োজন হতে পারে (যদিও সমাজে নারীর প্রয়োজনটি অগ্রাহ্য)। এক্ষেত্রে বিষয়টির প্রাধান্য সামর্থ্যের ভিত্তিতে। কেননা সামর্থ্য না থাকলে নৈতিকভাবে সে কাউকে বঞ্চিত করবে। কিন্তু যদি ধন-সম্পদের মোহভাবনা দেখিয়ে অথবা ক্ষমতার বাহুল্যতা দেখিয়ে দুই বা ততোধিক বিয়ে করা হয়, তবে তা নিতান্তই বিবেকবর্জিত কাজ। একমাত্র মনুষ্যত্বহীনদের দ্বারাই এমন কার্য্য সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

সম্পর্ক

হয়ত এমন করেই সম্পর্কগুলো ভেঙ্গে যায় অথবা এঁটে থাকে
যেমন করে পাতাঝরা দিন আসে কিংবা ফুলের সৌরভ বাতাস মাখে
দেয়ালের তৈলচিত্র দেখি অবিভূত হয়ে, দেখি চৌকাঠের শৈল্পিক চিত্র
দু‘ই টানে, অগত্য কোথায় মিলে যায় শীতল সাঁতারের ত্রয়োদশবিন্দু

বিনিদ্রা ছায়াঢাঁকা পথে হেঁটে যেতে-যেতে কত কি বিশেষণ খুঁজি
ভাবি সবুজে পীতবর্ণ যদি মিশত, যদি ঐ দিগন্তের পাখিরা
ডানা না মেলত, তবে স্বাদ কি হত এত উড়বার অথবা
উড়তে গিয়ে উদাসী সন্ন্যাসীর মতো সব ভুলে থাকবার?

বেলা আসে যায়, অধর বেয়ে পড়া অশ্রুসিক্ত সজলচোখ
কাউকে বয়ে যেতে দেয়, মনে এনে দেয় ভুলে যাওয়া দিনের গানের কলি,
অথবা গুন-গুন করে তোলা স্বরলিপির সরগম।

কত কিছু ভুলবার আশায় থাকি,
উদাস আকাশ আর নীলনীলিমার কত বিন্যাস
সাতাশইঞ্চি জীবন পথ এগুলো আরো কতকিছু থেমে পড়বে,
তবু বাধ্যবাধকতায় বাঁধি নিজেকে। বলি একদিন জীবন পাব
মিশে যেতে-যেতে একদিন যখন সব মিটিয়ে দেব,
তখন আর ভাবনারাও সাড়া দেবে না। নিজেকেও লুকোতে যাব না।
জীবনের ভ্রান্তশিকলে একদিন সব হিসেব আটকে পড়বে
হয়ত এমন শিকলেই সম্পর্ক‘রা একদিন স্থায়ীরূপ পাবে।