সোমবার, ২২ জুন, ২০১৫

কোথায়?

কোথায় বসে গল্পকার?
কদমফুল কি পড়ে নি তার চোখে
শোনেনি কি সে-
কেউ ছিলো আষাঢ়ের পথে দেখে।

কোথায় বসে কবি?
কদমফুল কি পড়ে নি তার চোখে
শোনেনি কি সে-
বৃষ্টিতে ভেজে দুটি চোখ চোখ রেখে।

তারচেয়ে বরং মোম হও

প্রদীপের সলতে হতে বলো না প্রিয়ে, আমি জ্বলে অঙ্গার
তুমি কারও প্রতীক্ষার
তারচেয়ে বরং মোম হও, আমি হব সুতো ভিতরকার
দুজনে জ্বলে হব একাকার, ছড়াবো আলোক চারিধার।

অসংগতি

দেখা, শোনা, ভাবা, বলা এই চারটি বিষয়ে পার্থক্য সবার মধ্যে বর্তমান। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়-

যে ভালো দেখে সে ভালো শুনে না, যে ভালো শুনে সে ভালো দেখতে পারে না, যে ভালো ভাবে সে ভালো বলতে পারে না, আর যে ভালো বলে সে ভালো ভাবতে পারে না।

প্রকৃতিও তাই চায়। না হলে সকলের মাঝে এত অসমতা কিংবা এত অসংগতি তৈরী হবে কেন?

শুক্রবার, ১২ জুন, ২০১৫

শরীরের অয়বব দিয়ে কি নিজের কদর্যরুপ ঢাঁকা যায়

প্রতিনিয়ত আবছা বিষয়গুলো দেখার মানষিকতায় আমাদের অবস্থা এমন এক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, যেখানে আমরা এখন সঠিক পরিশোধিত শুদ্ধটাকেই দেখতে পাই না।

কারও কান কাটল, আবছায় আমরা দেখি সে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ে আছে...
কারও চোখ হারালে, আবছায় আমরা দেখী তাকে মাটির অন্ধকার ঘরে...

সারাদিন মিথ্যা-অপশক্তি-অপকৌশল দেখতে-দেখতে, শুনতে-শুনতে আমরা নিজের অজান্তেই এক-একজন হয়ে পড়ছি সবচেয়ে বড় প্রতারক প্রপঞ্চক।

আমরা এখন নিত্যদিন নিজেদের জন্য কৌশল খুঁজি। নিজেদের হীনমণ্যতাকে প্রতিষ্ঠা করতে আমরা আশ্রয় খুঁজি। অথচ আমাদের যাচাইয়ের ভাবনার যথেষ্ঠ সুযোগ আছে, বোঝার বোধ সৃষ্টির মগজ আছে। আলো-আঁধার, সাদা-রঙ্গিন দেখার মতো জ্বলজ্বলে চোখ আছে। তবু...

আসলে মানুষ থাকতে চাওয়ার বোধ না থাকলে শরীরের অয়বব দিয়ে কি নিজের কদর্যরুপ ঢাঁকা যায়?

প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারী বেইমান আমরা

বিদ্যালয় জীবনে দশ থেকে এগার বছর পাঠ করা শপদ বাক্য আজ কয়জন মনে রেখেছে?
চারিদিকে তাকিয়ে দেখী সকলে ছুটছে, ছুটছে কেবল নিজেকে নিয়ে, নিজের অবস্থান নিয়ে।
আজ সকলের ক্ষমতা চাই, খ্যাতি চাই, সুখ-সাম্রাজ্য চাই।
সময়ের প্রয়োজনে যখন সকলের সৎ থাকাটা জরুরী, সৎ সাহসটা জরুরী। তখন দেখছি- সকলে মৃত্যু ভয়ে কুণ্ঠিত, পরিণাম নিজের সন্মুখে না এসে দাঁড়ালে কেউ কারও হাতটাকে ধরবারও প্রয়োজন বোধ করে না।

সত্যি সেদিন আমরা কতটা নিলর্জ বেহায়ার মতো শপদ বাক্য গিলে খেয়েছি। শত-শত বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষিকা, আকাশ-বাতাস সাক্ষী রেখে শপদ করা কতটা প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারী বেইমান আমরা।

অথচ একসময় নিষ্কোমল মন শপদবাক্য পাঠে কতটাই না তেজদীপ্ত হত, কতটাই না বলিষ্ঠ হত, কতটাই না দৃড় থাকত।

বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০১৫

নিঃচিহ্ন হয়ে গেছি বলতে আর বাঁধে কোথায়...

আমাদের দেশ, অঞ্চল তথা সমাজের কোন দৃশ্যপট‘টা এ মুহূর্তে পরিবর্তন সবচেয়ে বেশী জরুরী, যাতে আমরা অন্তর পক্ষাঘাতটাকে ঠেকাতে পারি? আমরা নিঃশ্চিত করতে পারি জীবনের গরিমাকে, আমরা আবদ্ধ হতে পারি সুস্থ মানষিকতায়, আমাদের চিন্তার স্থানটা হতে পারে সর্বোত্তম বিকশিত। সবমিলিয়ে আমরা আমাদের পঁচে যাওয়া অন্তরটাতে ধীরে-ধীরে সুস্থ করে তুলতে পারি?

পথে হেঁটে যেতে-যেতে প্রতিদিন দেখি মানুষের কর্মযজ্ঞ-কৌলাহল। দেখী পরিবার, পরিজন, আত্মীয়-স্বজনদের কর্মকান্ড। মাঝে-মাঝে নিজেকে ভেবেও অবাক হয়ে পড়ি!


কি মানষিকতা নিয়ে আমরা গড়ে উঠছি প্রতিনিয়ত?
আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের কাছ থেকে কি নিয়েছি?
আমরা আমাদের উত্তরসূরীদের কি দিচ্ছি?
তারা তাদের উত্তরাত্তরসূরীকে কি দেবে?


মিথ্যা-অপঘাত-প্রবঞ্চনার যে শক্তবিত গড়ে চলছে প্রতিনিয়ত, এ পঁচা বীষ দূর্গন্ধে এমনিতেই সব উজাড় হয়ে পড়বে।
আজ শিক্ষালয়ে লক্ষ মেধাবীর তকমা। চাকুরীর বাজারে সে তকমাধারীদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ক্ষমতার জোরে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি। দারিদ্র-অনাদর-হাহাকার, প্রতিনিয়ত বীষিয়ে উঠা জীবনের সত্যিকার অর্থে আশ্রয় কোথায় মিলবে? জীবনকে জীবনের চোখে দেখবে তার বস্তুত বিন্যাস কোথায়?


যদি জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি হাতরায়ে পথ উতরে যাবার জন্য মনটাকে স্থির করে রাখতে হয়, তবে নিঃচিহ্ন হয়ে গেছি বলতে আর বাঁধে কোথায়?

না আমরা মানুষ নই

না আমরা মানুষ নই, আমরা কোনক্রমেই মানুষ হতে পারি না।
মানুষ হতে গেলে তার মগজ থাকবে। মগজে উদ্দিপনা থাকবে। সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না, অনুভব, অনুভূতি সব থাকবে। সে নিজের পীড়ণ বুঝবে। নিজের পীড়ণগুলো বুঝে অন্যকেও বুঝতে চাইবে। বোধগম্যতায় সে অন্যের অনুভব-অনুভূতির ভাগিদার হতে চাইবে। আপন সদিচ্ছায় সে তার আপন ভাগিদারিত্বের সাক্ষর প্রতিনিয়ত প্রমাণ করবে।


এর ব্যতীত যারা, তাদের কি করে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যায়? বলি মানুষের মতো হাত-পা-চোখ-কান-মুখ থাকলেই যদি মানুষ হিসেবে গন্য করতে হয়, তবে বুনো জানোয়ারদের মানুষ বলতে মানুষের দ্বিধা হবে কেন? বলি শুধু দৈহিক অয়বব থাকলেই কি সকলে মানুষ হয়ে যাবে? তবে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ জীবের ভূষণ কেবল মানবের হবে কেন?


উপরের কথাগুলো প্রতিনিয়ত হৃদয়ে আর্তচিৎকারে বেজে উঠে। সত্যি আর সহ্য হয় না। প্রতিটা সহ্যের একটা পরিসীমা থাকা উচিত, কিন্তু বারংবার যখন সে সীমা অতিক্রান্ত হয়ে যায়, তখন নিজের জাত-কুল সব ঘৃণায় পর্যবসিত হয়। আর একটা বিষয় কত বলা যায়? ঠিক কি করলে মানুষের ভিতরে এই কথাগুলো পৌঁছে? ভাই হাজার-কোটি মানুষের প্রতিদিনকার যে তপ্ত নিঃশ্বাস অভিশাপের উপর থেকে হাজার-কোটি টাকা উপার্জন করা, একজন মানুষ হিসেবে কি এ টাকায় সত্যিকারের সুস্থ-সবল দিণাতিপাত করার বোধ থাকে?


তিব্বত থেকে মালিবাগ রুটে ফ্লাইওভারের নাম করে আজকে তিনটা বছর ধরে মানুষের উপর যে অমানুষিক নির্যাতন-পীড়ন শুরু হয়েছে, তা ভাষায় বর্ণনা অসম্ভব। একটা দেশের রাজধানীর এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ রুটে, যেখানে প্রতিদিন হাজার-লক্ষ মানুষের চলাচল, সে রুটটাকে যখন মানুষের উপকারের কথা বলে জীবনটাকে বিষিয়ে তিলে-তিলে শেষ করে দেয়ার পয়তারা করা হয়। যখন মানুষের এত-এত বেহাল দশা, এত-এত অভিশাপেও কারো টনক নড়ে না, তখন কি করে বলা যায় এসব কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন মানুষ থাকে? বলি এমন একটা ফ্লাইওভারের কাজ সম্পন্ন করতে ঠিক কত সময় লাগে? একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজগুলো কেন অধিক গুরুত্ব দিয়ে সম্পন্ন করা হচ্ছে না? সরকার-প্রশাসন-কার্য্যকরী পরিষদ কে কোথায় আছে? দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বিষয়ে যখন এদের কোন নুন্যতম তৎপরতার নেই তখন এদের বিবেকের দায়বদ্ধতা কোথায়? যারা নিজেদের দায়-দায়িত্বকে এভাবে অবহেলা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, এদের মনুষ্যত্ববোধ কতটুকু আর কার্য্যকর আছে?


সত্যি বলছি, তিনটা বছরে জীবন একবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ২০ মিনিটের রাস্তায় ২-৪ ঘন্টায় (দৈনিক ৪-৮ ঘন্টায় ৪০ মিনিটের পথ) আসা-যাওয়া করতে-করতে বিবেক শূণ্য হয়ে পড়েছি আমি এবং আমরা। প্রতিদিন অধৈর্য্য হয়ে ক্ষমতালোভী জানোয়ারগুলোকে হাতের কাছে না পেয়ে, অকথ্য ভাষায় ক্ষোভ ঝারছি ড্রাইভার, কন্ট্রাকটার আর হেলপারের উপর। আমাদের বিবেক এতটাই ক্ষয়ে গেছে যে, আমরা ভূলে যাচ্ছি ক্রমশ- যে বাসে চড়ে আমরা যাচ্ছি, আপাত দৃষ্টিতে দেখলে- বাস ড্রাইভারের হাতে আমাদের জান গচ্ছিত আছে। তার ক্ষোভের রুপ প্রকাশ করলে বাসের সকলের জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে।


জীবন ক্রমবদ্ধমান কালে আমাদের মানুষগুলোর দেহ অয়ববের লোমগুলো ক্রমশ খাড়া হয়ে যাচ্ছে, গজ দাঁতগুলো বের হয়ে আসছে, মাথার মগজ পচে শিং হয়ে বেরিয়ে আসছে। আমাদের মনুষ্যত্বের অধঃগতি আমাদের ক্রমন্বয়ে পশুতে পরিণত করছে আর আমরা হয়ে উঠছি এক-একটা নরপশু, হিংস্র জানোয়ার।

মৃত্যু

মৃত্যুতে আমার ভয় নেই কখনও, কেননা অবিসম্ভাবী বিষয়গুলোকে আমি কখনও এড়িয়ে যেতে চাই না। জীবনের ব্যাপারে আমার এ কেবল শঙ্কা, যদি আমি কখনো কারো কাছে বোঝারূপে অবস্থান করি, যদি আমার অবস্থান অন্য কারও জন্য পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আসলে আমার আকাঙ্খা কেবল এই, ঘাতে মৃত্যু হোক কিংবা অপঘাতে মৃত্যু হোক, সে যেন সাথে-সাথেই হয়। স্রষ্টার কাছে এই কেবল আমার অকুণ্ঠ প্রণতি।

ঘামের দাম

শরীর বেড়ে ঝরে পড়া ঘামে
কে দিয়েছে সঠিক দাম তার, কে বা দিতে জানে?
যে দেয় খুশি মনে ঝরা রক্তের দাম
তাঁহার চরণে আমার অকুণ্ঠ প্রণাম।

ভূল চুল

যেটুকু ভেবেছি বসে, সেটুকু না হয় হল ভূল
তাই বলে কি ক্ষোভ বিলেতে, ঝরে যাবে চুল?

যখন অস্তিত্বে সংকট আসে

যখন অস্তিত্বে সংকট আসে- তখন বিঁভূইয়ের চোখও ধন-জনের মোহ ভূলে! পড়ন্ত আচ্ছাদনে লাঘব ধরে কিঞ্চিৎ আশার রেশে, যে রেশটুকু সংকটে সংকীর্ণ সাহস যোগায়।

ভাব-বিচারে কি ভূল

সৃষ্টির যে সুখ, সে সুখ বিধাতারও থাকে মনণে
আমরা ভাব-বিচারে কি ভূল করি আপন সৃষ্টির বিস্তরণে?

নিষ্পাপ জীবন

অশৌচ আতুর ঘরেই জন্ম হয় প্রতি পুত-পবিত্র নিষ্পাপ জীবনের।

জানুক

দেহকে মিশিয়ে নাও মাটি,
জীবনকে বিষিয়ে যার লাভ আর যার ক্ষতি
জানুক সবে তোমার আশ্রয়টাই খাঁটি।

মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫

স্বীকার ও স্বীকৃতি

রাষ্ট্র অন্তত একবার যদি বলতে
তোমার সমূদ্র সীমায় কোন সন্তান থাকে পাহারায়
সীমান্তে নির্বিঘ্ন দৃষ্টিতে কে আছে মৃত্যুর অন্তরায়
তবে একদিন মরতে পারতাম শোকে...

রাষ্ট্র অন্তত একবার ঢুকরে কাঁদতে
অন্তত একবার যদি বলতে ব্যর্থ তুমি অক্ষমতায়
তবে দেখতাম তোমার চোখের পানি
জানতাম তুমি ঝাপসা দেখছ চোখে।