মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৩

মুক্তির ক্ষুধা

সে অনেকদিন আগেকার কথা, এক বনে ছিল এক দুষ্ট বাঘ, তার হিংস্রতায় ছিল বনজীবন ও জনজীবন অতিষ্ট। একদিন এক দুষ্ট শিকারীর ফাঁদে ধরা পড়ে খাঁচায় বন্দি হয় বাঘটি। ফলে বনজীবন ও জনজীবনে নেমে আসে সুখের বারতা।
এভাবে কিছুদিন কেটে যায়, দিনের পর দিন খাবারের অভাবে বাঘটি ক্ষুধার্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং পথিমধ্যের লোকজনকে আকুতি-মিনতি করে তাকে ছেড়ে দেবার জন্য। কিন্তু দুষ্টবাঘের ব্যাপারে সবাই জানত বলে কেউ তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়না। শেষে এক সহজ-সরল লোক বাঘের মায়াকান্নার মোহজালে ধরা পড়ে বাঘটিকে ছেড়ে দেয়। অবাক ব্যাপার হল বাঘটি বেরিয়ে এসে লোকটির উপর কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে ক্ষুধার তোপে তাকে খেতে ছুটে যায়। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও লোকটি বাঘটির হাত থেকে বাঁচার উপায় খুঁজে পায় না। পরিশেষে ধূর্ত শিয়াল পন্ডিতের বুদ্ধিতে লোকটি প্রানে রক্ষা পায়।

নিদ্রিত হোক বেঁচে থাকার সুপ্ত বাসনাটুকুও

নিয়নের আবছা আলো ছড়ানো। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঐ আলোয় পথ দেখে চলতে হয়। রেললাইনের স্লিপার ধরে তেজতুরি বাজারের মোড় দিয়ে বাসায় ফিরছি। হঠাৎ একটা ব্যাপার চোখে পড়তেই আমি থমকে দাঁড়ালাম। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে যে আবছা আলো পড়ছে তাতে আমি প্রথমে কিছু না দেখতে পেলেও ভালোভাবে খেয়াল করতেই যে দৃশ্য দেখলাম তাতে হতবাক না হয়ে উপায় ছিলনা। আমি দেখলাম ঘুটঘুটে ঐ অন্ধকারে একটা লোক জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। তার দেহের গড়ন চিকন ছিপছিপে, কালো। পরনে একটা লুঙ্গি যা কিনা বুক হতে হাঁটু অবধি জড়িয়ে আছে।

কঠিন বাস্তবতাঃ জননী

জননী ইট ভাংছিল, খেলছে নিজে-নিজে তার কোলের শিশুটি।  অনেক সময় পর শিশুটি খেলা সাঙ্গ করে মায়ের সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় কান্না জুড়িয়ে দিল । মায়ার মোহজালে আবদ্ধ জননী আর নিজেকে স্থির রাখতে পারল না, ছুটে এলো নাড়ির টানে। হাতুড়ির কষাঘাতে শক্ত খসখসে হাতে সন্তানকে আপনার বুকের কাছে টেনে নিল। অথচ শক্ত খসখসে হাতের পরম মমতায় শিশুটির কান্না থেমে গেল। জননী শিশুটিকে আপনার বুকের দুধ খাইয়ে আবার খেলতে বসিয়ে দিলেন।কিন্তু; শিশুটি এখন আর নিজে- নিজে খেলতে রাজী নয়, সে খেলার সঙ্গি হিসেবে জননীকে প্রত্যাশা করে।

বিদ্রুপের হাসি

[ঢাকা শহর।কত জানা-অজানার সংমিশ্রন, কত সংথৈব দুঃখ-কষ্টের পদচারনা, কত নিয়তির দীর্ঘশ্বাস, কত যুদ্ধ-সংঘাত, কত আহুতির পরিসর আর তার মধ্যে আবার কত দালান-কৌঠা, গাড়ী আর পাপের বিস্তৃতি।আর সেসবের দু্'একটার প্রকাশ আমার বাস্তব জগত।-অবিবেচক দেবনাথ।]
এখনো কচিমুখের চাপ কাটেনি মুখ থেকে অথচ সংসারের দ্যৌটানা নামিয়ে নিল পথে। দেখে হতবাক হই, সংসারের হাল ধরতে এই বয়সে ওদের প্রচেষ্টা। নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে ওরা ভাবিত নয়, ওদের প্রচেষ্টা শুধু জীবনের প্রতিটি ধাপ যুদ্ধ করে টিকে থাকা। ঢাকা শহরের পথে-ঘাটে, অলিতে-গলিতে চোখ পড়ে এমনি কত কচি ছেলে-মেয়ের, যারা সংসারের দুঃখ-কষ্ট ঠেকাতে নেমেছে পথে। চলছে জীবনের বাস্তবতার সন্মুখিন যুদ্ধ করে।
আমার এই লেখা এমনি এক কচিমুখ নিয়ে, যার এখন মাঠে-মাঠে ছুটে বেড়ানোর কথা, যার জ্ঞান আরোহনের জন্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু; ভাগ্যের পরিহাসে পথে-পথে তার খেলাধুলা চলে কর্মের মাধ্যমে।আর কর্মের মধ্যেও ঘটে কষ্টের সন্নিবেশন, এ যেন তার প্রতি পদক্ষেপের হৌঁছট এবং ভাগ্যের বিরূপ-প্রতিরূপ।

অন্যায্যনীতি ও দূর্ণীতি

শরীরের কোনস্থানে পচন ধরলে তার চিকিৎসা করা সম্ভব অতি সহজে। কিন্তু যখন সারা শরীরে পচন ধরে, তখন তার চিকিৎসা করা এতটা সহজতর হয় না। আর অনেক সময় এই পচন থেকে হাজারো চেষ্টাতেও মুক্তি মেলে না। আমাদের দেশের নষ্ট রাজনীতি (নষ্ট রাজনীতি এই জন্য বলছি যে, আমি দেখেছি, যারা নিলজ্জ-বেহায়ার মতো লুঙ্গি তুলে পথ চলাচল করে, পথে-ঘাটে কারণহীন অসভ্যতামি করে, তারাই রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়।)‘র কোপানলে যেভাবে সর্বত্র পচন ধরেছে, তার চিকিৎসাও এত সহজ নয় এবং আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কখনো এই পচন থেকে আমরা মুক্তি পাব না। আর যদি কখনো মুক্তি মেলে, তবে বলব সে আমাদের পরম সৌভাগ্য!

নিজেকে বাঁধতে গিয়ে

নিজেকে বাঁধতে গিয়ে বেঁধে ফেলেছি নিজের মধ্যেকার সত্যিকারের অদম্যতাকে, ভিতরকার শক্তিকে। একটা সময় ছিল যখন বর্ণিল স্বপ্ন‘রা এতটাই পারস্পরিক ছিল যে, মনে হত আর কয়দিন পরেই তাদের ছৌঁয়া পাব, আর একটু পথ এগিয়ে গেলেই মনের গহীরে পৌথিত পুঞ্জিভূত স্বপ্ন‘রা ধরা দেবে। কিন্তু দিন পুরোতেই সময় বাঁক নেই, অসমতাকে সমণ্বয় করে,
নিহৃদ্য বিধান জারি করে আর পরস্পর খন্ডবিভাজনে জীবনকে অস্থির করে।

শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৩

অতৃপ্ত হৃদয়


গতকালও এখানের বাঁশঝাড়ের শন-শন বাতাসে কি যেন একটা ছিল
অতৃপ্ত প্রাণ সে!!!
জীবনের কোন সুপ্তশাপ তাকে গিলেছিল,
বিঁধেছিল প্রাণ তার অতৃপ্ত বাসনায়।

জীবনের লালায়িত সুখ, হাজারো বেদনার বেঁড়ী ভেঙ্গে ফেলে দেয়
উত্তাল জোয়ারে ভেস্তে যায় পাড়ের ধারে নীড়বাঁধা বাবুইয়ের স্বপ্ন।
তবু প্রাণের এপাড়ে সুখ কেড়ে নেয় পাষানের একঝলক আহ্বান।

পূর্ণাঙ্গতা

একজন মানুষ তখনই পূর্ণাঙ্গতা পায় যখন সে মানবতার জন্য দাসত্ব স্বীকার করতেও অঙ্গিকারবদ্ধ। নৈতিকতাহীন বুদ্ধিবৈশ্যা কিংবা চটকধার রাজনীতিবিদ‘রা মুখে যতই মিষ্টি বুলি আওড়ায় না কেন, মানুষ বলতে তাদের আমরা বাঁধা পাই। বিবেকই হয়ত চটকধারদের কখনো মানুষ বলেই স্বীকৃতি দিতে চায় না।

শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০১৩

অভাব

জীবনের বিন্যাস যেখানে প্রতিনিয়ত শ্রেণী শোষন আর সামাজিক ভাগ বিভাজন, সেখানে মর্মস্পর্শী লোকের বড় অভাব হয়।

রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

আজীবনের ভয়

যখন কিঞ্চিৎ কারণে প্রিয় বিয়োগ হয়
তখন আরোগ্যেতেও জমে থাকে আজীবনের ভয়।

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

স্মৃতিচারণ

ঝাপসাদেখায় হাতের রেখায় ছবির মুখে হাতরায়ে
অবয়বটাকে টেনে নেই স্মৃতির কোলঘেষা বাদল বেলায়,
টপটপবৃষ্টির ধারায় ভেসে যায় তাই চোখেরকোণ!!

অনিষ্ট

মানুষ সুন্দরে আকৃষ্ট হয়ে তাকে নষ্ট করে ফেলে। ফুলের ক্ষেত্রেই দেখুন, গাছে তারা কত বিমেহিত থাকে অথচ মানুষ তাকে ছিড়ে অনিষ্ট করে।

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৩

খোঁজ

ভূলকে ভূলতে চেয়ে ভূলের মায়ায় আবদ্ধ হয়েই আমরা সুখ খুঁজি।

শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৩

সমস্যা

যদি সব শৃঙ্খলকেই ভেঙ্গে নতুন করে গড়তে পারি, তবে জীবনকে জীবনের রূপ দিতে আমাদের সমস্যা কোথায় বাঁধে?

মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৩

ভাবনা

জীবনসংসার নিয়ে এত ভাববার কুসরত কোথায়
নয়নধারায় নোনাস্রোতের ঢেঁউ যেথায়?