মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমরা লজ্জিত, আমরা খুবই লজ্জিত আর দুঃখিত। দুঃখ ভারাক্রান্তচিত্তে বলছি- আপনার দল আওয়ামীলিগ কিছু শিখুক আর না শিখুক রাজনীতি করতে শিখেছে, তাই তাদের কাছে সবধরনের চলন-বলন-ধরন ‘ই রাজনীতির চালে চালিত করতে উৎসাহ দেয়। এখানে আমাদের আম-জনতার চাওয়া-পাওয়া তাদের কাছে বড় কিছু নয়, আমাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসে ইতোমধ্যে আপনারা তা আমাদের দেখিয়েও দিয়েছেন।
না আর ইতিহাস শুনতে চাই না, ইতিহাস মিথ্যে বলে, ইতিহাস প্রতারণা করে ইতিহাস আমায় কটাক্ষ করে, আমার চেতনা নিয়ে ব্যবসা করে না, আমি আর ইতিহাসের দারস্থ হতে চাই না, সব প্রতারক, সব প্রতারনা। সবাই সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করে, ইতিহাসকে মিথ্যে বানিয়ে দেয়। আমার বাঁচার দুয়ার রূদ্ধ করে ফেলে। আমি আর কোনদিন এই ইতিহাস আকড়ে ধরে থাকতে চাই না। আমি কেবল নিজের গোলার্ধকে আকড়ে রেখে বাঁচতে চাই।
দয়া করে বেঁচে থাকা বাকী চেতনাটুকু কেউ কিনতে আসবেন না, আমি আমার নিজেকে আকড়ে পড়ে থাকতে চাই।
মানুষের মন বড় বিচিত্র আর অস্থির। তাই কি? ঠিক বেঠিক জানি না, তবে আমার মতো করে পৃথিবীকে চিন্তা করি বলে আমার কাছে তাই মনে হয়। তাই এই আমি-
কখন কখন ভাবুক হয়ে যাই। ভেবে চলি- কিছু নিয়ে গবেষনা করে দুনিয়াকে চমকে দেব! আরে না না বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে যাবে সমস্ত বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড ঠিক এমন একটা কাজ করে তাক লাগিয়ে দেব!
কখনো আবার রক্তের টান পড়ে, ছুটে যাই সে চিন্তায়। ভাবী কত কর্তব্য পড়ে আছে। আমার নিয়ে যে যা ভাবুক, আমার জন্য কেউ কিছু করুক বা না করুক, সবাইকে টেনে তুলব একে-একে। সবাইকে বুঝাবো এভাবে টান-পৌড়ন, ঝগড়া-ঝাটিতে সুখ নেই। আমাদের দেহে একই রক্ত, তবে কেন বুঝতে পার না আবেগ-অনুভূতি। ফিরে এস!! আমরা সমস্ত বিভেদ ভূলে একটা শৃঙ্খলে আবদ্ধ হই।
বর্ণচোরা; যতবার হাত বাড়িয়েছে ততবারই করে গেছে এ দেহে কারবার আমি ধরতে পারি, বরাবরই ধরতে পারি কিন্তু ততক্ষনে সে নেই। আমারও অবস্থা নেই আগের মতো পথে দাঁড়াবার! বটতলার সন্ন্যাসী সে সাঁঝ হলে কোথায় ফিরে যায় পথের ভিখারী
দেবার মতো নেই যে কিছু, শূণ্য আমি ধরা তলে বাসনা তোমার পূর্ণ চাঁদ, নেমেছ সুখে অতল জলে। আমার নাই যে কিছু নাই, আমার ভেতর তোমার ছায়া আঁধারে লুকাই তোমার পথ জ্যোৎস্নার আলোয়, যাও সে পথে দেই দোহাই।
চলতে পৃথিবীতে কিছু-কিছু চাহিদার বাস্তবিক প্রয়োগের কোন প্রয়োজন নেই। তবুও কেহ-কেহ তা করে শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ চরিতার্থের জন্য, অন্যের পেটে লাথি মেরে নিজের অবস্থান সুস্থির করার জন্য। প্রত্যেকের জন্য মৌলিক চাহিদাসমূহ যেমন- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিনোদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী। সাথে বংশবৃদ্ধি কিংবা সমাজ-সংষ্কৃতি রক্ষায় জরুরী সমাজ-সংসারের। অথাৎ একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের চাহিদাগুলো অপরিহার্য। যদি তা হয় তবে এর ব্যতীত আমরা যা কিছু চাই তার প্রয়োজন কতটা? আর এর ব্যতীত অন্যকিছু প্রয়োজন অনুভব কি অস্বাভাবিক জীবন? আমার মতে মৌলিক চাহিদা কিংবা স্বাভাবিক সংসারজীবন ব্যতীত মানুষের যে কোন চাওয়ার পিছনের যে কারণ তা হল তার মধ্যেকার অস্বাভাবিক আচারণের তাড়না। আর এই অস্বাভাবিক তাড়নাই মানুষের পাশবিক তাড়নাকে প্রগাঢ় করে। এখানে অস্বাভাবিক তাড়না তখনই অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে, যখন মানুষের মৌলিক চাহিদার বাহিরেও সবকিছুর অঢেল মজুত থাকে।
মানুষের মুখের ভাষা আর মনের ভাষা যদি এক হত, তবে পৃথিবীর প্রতিটি পদক্ষেপ দূষ্কর ঠেকত। জীবনের কিছু-কিছু মুহূর্ত জীবনকে এতটাই বিষিয়ে তোলে যে, প্রিয়জনদের ঘিরে অনেক অপ্রিয় গরল অনিচ্ছায় বেরিয়ে পড়ে কিন্তু গরল উগঢে গিয়ে মন যখন স্থির হয়, তখন মমতার বন্ধনে আবদ্ধ হৃদয়ে জমে থাকা আকুতিগুলো আরও ব্যকুল হয়। অনুশোচনাবোধে ক্ষমাযোগ্য হৃদয়ের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়। জীবনের প্রতিটি ধাপে বোঝাপড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, না হলে চলার পিচ্ছিল পথে পড়ে দেহের প্রতিটা পাঁজর ভেঙ্গে চূর্ণ হতে পারে। তাই দ্বিধা-দ্বন্দ যাই থাকুক না কেন- প্রিয়জনদের মনকে বুঝতে সচেষ্ট হওয়া খুব প্রয়োজন, নচেৎ সামান্য হোঁচটও জীবনের জন্য কঠিন সময় বেঁধে দিতে পারে।
ঠিক কিছুই বোধে আসে না; কি করে চিবুক এত জমে কি করে জীবন যায় থেমে! লিখেছি ছায়াপথে হেঁটে চলার গল্প নিষ্কৃতি মেলে নি মঞ্চে করেছি জীবননাট্যের মঞ্চস্থ স্বীকৃতি আসে নি। শুধু ভাবি; কোথায় উদরে রাখা পিতা! কোথায় হারিয়েছে মমতাময়ী মাতা? ছায়াপথে একে-একে হারায় পাড়া-পড়শি, জীবনের গল্পে সবাই থাকে, তবু সারাক্ষন নিঃসঙ্গ উদাসী স্বার্থের পৃথিবীতে রক্তের টানও ছিড়ে ছুটে বার-বার অধরায়।
প্রত্যেকটি দেশের মানুষ রাজধানী
বা বড়-বড় শহরগুলোতে বসবাস করে বাড়তি নাগরিক সুবিধার জন্য। খাদ্য,
বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা জীবনযাপনে একটু আরাম আয়েশের জন্যে। অথচ
আমরা আমাদের রাজধানীতে বসবাস করছি একান্ত ঠেকায় পড়ে। রাজধানীতে বসবাস করতে
গিয়ে আমাদের নাগরিকবোধ জাগ্রত হবার বধৌলতে দিনকে-দিন আরো থমকে যাচ্ছে।
মানুষ পরকালের ভয় দেখায়- বলে ওখানে নাকি বড় যাতনা-যন্ত্রণা নির্মম জায়গা।
অথচ রাজধানী জীবনে যে নির্মমতার মুখোমুখি হচ্ছি এরচেয়ে সে যন্ত্রণা আসলে
কতটা বেশী এখনও তা বোধগম্য নয়। শুধু এইটুকু বলতে পারি- জীবনটা বড় বেশী
দূর্সহ ঠেকছে। না খাওয়ায় শান্তি, না চলায় শান্তি, না বসতে শান্তি, না উঠতে
শান্তি, না ঘুমাতে শান্তি, না জাগরণে শান্তি। সবস্থানে শান্তিদের কতটা
অসহায় অবস্থান তা বলাই বাহুল্য।