অঙ্কিতা! আমি মুগ্ধবিমোহিত হই। এই তোমাতে- রাত্রিকালে ছন্দকিরণে যখন বিভোর হই, বুঝি এই খেলাঘরে তোমার আমার অনন্তযৌবণ
মিলেমিশে একাকার হয়। আমি মুগ্ধদ্রষ্টা অন্তরমুগ্ধতায় সঁপে দেই তোমাতে আমার
জীবন-যৌবণ। বিধিবৈচিত্র্য বোধে আসে, অনেক দেখী তার নয়নভুলিয়ে। তোমার শরীরে
বর্নভোলা রং, সে মিটায় আগলে রাখা অর্ন্তমোহ অনুরাগ। তাই জানতে কিবা অজান্তে পথ ভূলে
বিপথে হয়না আমার সুখ। অঙ্কিতা! দেহ কামনার হোক কিংবা বাসনার। মমতায় বার-বার ছুয়ে দিলে সেও ক্ষয়ে।
কিন্তু নিজেকে সামলায়ে যে বাহুবন্ধনে জীবন পারস্পরিক হয় তাকে শুধু দু‘ঠোঁটের
অস্ফালন কিংবা দেহসুখ মিটিয়ে থামানো যায় না। প্রকৃতির অনেক মুগ্ধরূপ আছে। তবে শুধু
মুগ্ধতায় যদি জীবনটাকে কাটিয়ে দেয়া যেত তবে মায়ার দায়টুকু আর কিসে? জানি বটবৃক্ষের
ফল মানুষ পেল না কিন্তু শ্রান্ত পথিকের ক্লান্ত বিরামে সে কি নয়ন জুড়ায় না?
প্রশান্তির সুখধারা কি ছড়ায় না সে দেহপীঞ্জরে?
ঐ‘দেখ সখী মরিবার, কিযে সুখ তার আমি মরব সে মরবে, কে নেবে মৃত্যুর দায়ভার সখী কি সুখ বল কার এক প্রেমেতে দু‘জনার প্রাণ হল বনাচার হাস কেন ওগো সখী বল সমাচার।
অযাচিত ভাবনারাও একদিন মুখ থুবড়ে পথে পড়ে, তখন জীবনপথের আসক্ত বাসনাটুকু আর থাকে না। পূর্ণচাঁদে গ্রহণদিলে যেখানে শুক্লপক্ষের জোৎস্না ম্লাণ হয়, জীবনজোৎস্না চাঁদহীন গ্রহণে সেখানে ম্লাণ হবার মত কি খুঁজবে?
জীবন
থেকে অনেক কিছু চলে যাচ্ছে চলে যাবে, কেননা জীবন যে বড়ই সঙ্গীন। ভালোবাসা
জনে-জনে ভিন্ন হয় দিনে-দিনে গাঢ় হয়। কিন্তু একি? গাঢ় ভালোবাসার যে এখন
গলনাংক কমে যাচ্ছে আর দিনকে-দিন তা শূণ্যের কৌঠায় পৌঁছে যাচ্ছে। আচ্ছা
ভালোবাসার গলনাংক যখন শূণ্যে গিয়ে দাঁড়াবে তখন কি মানুষ ভালোবাসায় এঁটে
যাবে? মানে- সবকিছু একত্রে জড়ো হয়ে যাবে?
গরীবের দায়ভারটা শুধুই পেটের, তাই পেটের জন্য শয্যা পাততে যেমন তাদের দ্বীধা নেই, রাত-দিন মল ছাটতেও তাঁদের ঘৃণা নেই। শত্রুর একটুখানী স্বার্থণ্বেষী সহানুভূতিও তাদের আবেগ কেড়ে নেয়। বাঙ্গালি জাতি আজীবন গরীব, গরীব জীবন-যাপনে, গরীব কার্য্যকরনে; মণণে। নিজের বলা এই কথাগুলোয় আমি নিজেই লজ্জায় ডুবে মরি, তবু সত্যটাকে অস্বীকার করতে পারি না বলে, অকপটে তা বলতে পিছ‘পা হই না।
অথচ নারীর বুকে জেগে উঠা ঐ মাংসপিন্ডটুকুই নাকি নিসাড়-নির্জীব পুরুষকেও সজিব করে তোলে যারা সমাজের কথা বলে; রাষ্ট্রের কথা বলে; বলে সম-অধিকারের কথা অথচ বুকের উপর পোথিত ঐ মাংসপিন্ডটুকুর মোহতায় তারা কামনার ঢেঁকুরে অস্থির হয়ে পড়ে চিৎকার তুলে আহা; এ‘যে কাপড় তুলে সব উন্মুক্ত করে দিলে বাতাসের ঘুর্ণি‘যে ঐ ছুটছে, দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যাও হে...