শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৩

কবিতাঃ কার নামে আলোকধারা


মানুষ, কেন তোমার চোখে-মুখে, এত-এত ভয়; বিষ্ময়?
তাকিয়ে দেখ চারিধার; বিশ্বময়, কোথাও কিছু স্থির নয়।
এই দাঙ্গা-হাঙ্গামা-ঝঞ্ঝাট, ঐ প্রকৃতির বিভৎস-কদাকার
সবকিছু ডিঙ্গিয়ে যেতে হবে পথ ধরে, অর্জিতে আপন অধিকার।
তুমি নিরালায় চাও বাঁচিবার, তাই হয় এত ভয় তোমার
ভয়-কাতুরে মন ভূলে তুমি, আলোর ভূমে চাও
দেখ রনাঙ্গণে বাঁচিবার জীবন, স্বাদ অন্তরে লও।

কবিতাঃ পেটের দুখ


আমি কি ঘরে কি বাহিরে
সব জায়গায় সমান অনাহারি
ভিক্ষাহীন ক্ষুদার অনুযোগে
হয়েছি নৈশ প্রহরী।

কবিতাঃ নিজভূমে পরবাস

আমি রক্তস্নাত স্নান চাই না
চাই না কারো রক্তাক্ত লাশ
কাটছে আমার দিনগুলো তাই,
নিজভূমে থেকে পরবাস!


আমি বন্ধুত্ব চাই
হাত রাখি তাই বন্ধুর হাতে
আমি ভালোবাসা চাই

কবিতাঃ পথে পড়ি মারা


পথ আমার পারাবারে, চোখে দিল ধূল
আমি চোখবুঁজে পথের মাঝেই, হারিয়েছি পথের কূল
যাব কোন পথ, আঁধারে সব সারা
মিলায়ে দেহ ধূলি মাঝে, পথে পড়ি মারা।

কবিতাঃ নাজমুল


আমার ভার্সিটির বন্ধু নাজমুল। আমি লেখালেখি করি, সে জানে। তাই একদিন আমাকে সে অনুরোধ করল আমি যেন তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখি। ইংরেজী ২০০৮ সাল, আমাদের ভার্সিটির লেখাপড়াও প্রায় শেষ হবার পথে। ঠিক ওই সময় একদিন নাজমুলকে নিয়ে লেখলাম আমার অগোছালো মনের দু‘একটা কথা।

কবিতাঃ ভালোবাসার সুখ


আমি চলতে চাই দুনিয়ায়
মাথা তুলিয়া, বক্ষ খুলিয়া
আত্ম-সম্মান নিয়ে চলব, সেই ভাবিয়া
আমি চলি সরল হইয়া।
গরল আমি নইতো মনে
সরল হয়ে বাঁচতে চাই,

কবিতাঃ স্বপ্নভাঙ্গার যন্ত্রনায়


আশা মরে গেছে- নগ্নবেশে মন জড়ায়ে।
ঝরে পড়া শুকনো পাতা মাড়ানো পায়ে
পশম তোলা রক্ত জমাট উদাম গায়ে!
পালকবিহীন দেখে আমায় হাসছ কেহ?
আমি খুশী মনে দেইনি আমার এলিয়ে দেহ
ক্ষমতার ঐ শক্তবাহুতে দিলো ছেটে—–

কবিতাঃ প্রলয়ের পথে


প্রলয়ের পথে মৃত পথিক
শকুন মাংস খায় চারপাশ চেয়ে
এ এক দূর্ভিক্ষ অভিশাপে,
সব ধ্বংস পারমানবিক তান্ডবতায়
জানোয়ার ঐ ছুটছে ক্ষমতার তোড়ে
জীবন বোধহীন তেজস্ক্রিয় পরিতাপে।

ক্ষুধার দুখ

জন্মাবধী ডুলির গলুইয়ে
উড়ি সুতো হতে,
অন্তর-দেহ কলংক করে
পেটের দায়ে নটে!

তৃষায় বাসনা নয়
বাসনায় জাগে তৃষা,
ঠোকরে ক্ষয় অর্ধযৌবণ
মুঠোখানি অন্নের আশা!

কবিতাঃ এমন বন্ধুত্ব চাই

জীবনের বেলাভূমির অন্তঃসমীকরণে বসি
হিসেব মিলাই পিথ্যাগোরাসের সূত্র ধরে
কিংবা নিউটনের মহাকর্ষের সূত্র নিয়ে
ভাষ্করাচার্য্যের জ্যোতিবিদ্যার সূত্রও রেখেছি
সব তত্ত্বধারায় রাসায়নিক সমীক্ষা টানি, পেয়েছি এক অন্তঃমিলন শিক্ষা
যে শিক্ষার ভাববস্তু হল টান।

কবিতাঃ আমরা সবাই মিলে স্বপ্ন সাজাতে চাই

আজ স্বপ্নকুঠিরে সবাই মিলে স্বপ্ন সাজাতে চাই
মানবতার স্বপ্ন-সৌহার্দ্যে কে কে আসবে হাত বাড়াই
আমরা তাদের নিয়ে স্বপ্ন গড়াই, আমরা তাদের নিয়ে স্বপ্ন গড়তে চাই।
আমরা আজ স্বপ্ন গড়ব তৃণসনে, স্বপ্ন গড়ব দীনজনে
অবক্ষয়রোধে, মনুষ্যত্ববোধে আমরা মন জড়াই
আমরা সবার জন্য একটা স্বপ্ন চাই, আমরা সবাই মিলে স্বপ্ন সাজাতে চাই।।

আমরা চাইনা নিরক্ষরতার শাপ কিংবা অন্নপাপ
আমরা চাইনা বেকারত্ব কিংবা দরিদ্রতার রূদ্ধতাপ
সবাই আমরা বন্ধু-স্বজন থাকব সবাই মিশে
সে স্বপ্নে হতে আগুয়ান, জাগি প্রভাত প্রত্যূষে
আমরা জীবন-যাপনে সাম্যের বাণী প্রাণেতে সবার জাগাই।
আমরা সবার জন্য একটা স্বপ্ন চাই, আমরা সবাই মিলে স্বপ্ন সাজাতে চাই।।

তারা’তো আমাদেরই বোন-ভাই, যারা আজ নিরক্ষরতার অভিশাপে
এরা’তো আমাদেরই স্বজন, যারা ধুকছে ক্ষুধার তাপে
ওরা’তো আমাদেরই মতো স্বপ্ন দেখতে চায়, যারা অন্ধ-সামর্থ্যহীন
তাদের’ওতো আমাদেরই মতো বাঁচতে সাধ জাগে, যারা পথভুলে হয়েছে শৃঙ্খলহীন
পথে-পথে বেকার হয়ে ঠুকছে মাথা, সেও তো বন্ধুজন
আমরা কাকে হেলে পথে কাকে ধরে করব, নিজেদের স্বপ্ন সাধন?

আমরা এমন স্বপ্ন চাই, থাকি যেন আমরা সবে আনন্দ উচ্ছ্বলতায়
দুঃখ যদি ভাসাবে মোদের ভাসব একসনে, একাত্মাপ্রাণ মোদের; জড়াব প্রাণে-প্রাণে
যদি আজো হয়নি পূরণ স্বাধীনতার পূর্ণস্বাদ, তবু মোরা স্বপ্ন দেখী শুভ্র সেই প্রভাত
আমরা প্রভাত ফেরিতে আজ, মানবতার গান গাই
আমরা সবার জন্য একটা স্বপ্ন চাই, আমরা সবাই মিলে স্বপ্ন সাজাতে চাই।।

কবিতাঃ ভালোবাসার বৃষ্টিতে ভেজা


বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ভেঙ্গে, হাঁটছি আমি মেঠো পথে
অজান্তে ভেবে যাই যাকে; সেও কি ভাবছে আমাকে?
হেঁটে চলছি একা, নেই পাশে সে
বৃষ্টি কি ভেজাবে; শুধু আমাকেই?
অচেনা পথে চলি, কিংবা অজানায়

কবিতাঃ আহত মূর্ছনা

গোধূলি আকাশে ছড়াচ্ছে কালো রং
চাতক-চাতকির তৃষ্ণার্ত চিৎকারে ভাঙ্গছে নৈসর্গিক মৌনতা
হুতুমপেঁচা গাছের আড়াল হতে চেয়ে আছে
দূর-দিগন্তে পাখিদের ঘরে ফেরা থেমে গেছে
পথে-পথে বর্ষার ব্যাঙ্ ঘ্যাঁঙ্গর-ঘ্যাঁঙ্গ শব্দে মাতাচ্ছে

কবিতাঃ পরশি কন্যা


হাজার নদীর তীর ভেঙ্গে ঢেঁউ, ডাঙ্গায় উছলায়
নদীর তরঙ্গে মৌনতা ভেঙ্গে, কোমল মন খেলায়।
কে হে, পরশি কন্যা; সবুজ ঘাস মাড়ায়ে পায়ে
ছিটায়ে জল অবুঝ প্রানে, বার বেলায় এলে গাঁয়ে!

কবিতাঃ আজব মানুষ


আজব মানুষ, আজব কাজে ব্যস্ত
সবদোষ তার ভাগ্যে ন্যস্ত
তা ধারণে সে অভ্যস্ত
তার জীবন সূর্য্য পশ্চিম আকাশে অস্তঃ।
কোথায় কি গেল? কি ধরাধরি হল?
খোঁজ নেবে তুমি আজব মানুষ!
অন্তরের অন্তরীক্ষে তোল সেই হুঁশ।