শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৩

কবিতাঃ বাসনার দু‘জোড়া চক্ষু

বর্ধিত পৃথিবীর সব চক্ষু স্বচ্ছতা হারিয়েছে
কাকচক্ষুর মতো স্বচ্ছ অক্ষিগোলকের
কৃষ্ণকালো কিংবা বিড়ালসবুজ মনি
অক্ষিগোলকের ধুম্র আচ্ছ্বাদনে মলিন হচ্ছে,
তাকিয়ে থাকা সজল চোখের আশায়
হৃদয় যেখানে দ্বীপ্তমান…
সে হৃদয় হয়তো ধূসর রঙ্গে, নতুবা টকটকে লালে
অক্ষিগোলকে উদীয়মান।

সহস্র-লক্ষ বছর ধরে আমি আকাঙ্খার ব্রত করে যাচ্ছি
দু’জোড়া সজল চক্ষু আমার খুব বেশী প্রয়োজন,
একজোড়া চক্ষু আমার নিকট বন্ধুর আর
অন্যজোড়া অন্তরঙ্গ প্রিয়ার,
তাদের প্রীতিময় আগ্রসন আমায় সইতে পারবে
পারবে আন্তরালে লুকিয়ে থাকা আমার ব্যথার ভার বুঝতে।

অনেক পথ হেঁটে চলছি আমি………
হয়তো স্বপ্নে, নয়তো অজানা ভাবাবেশে
তখন অজানা পথের পাড়ে ছুঁয়ে থাকা সৌন্দর্য্য দেখে
আমি বুক বেঁধেছি বহুবার
ভেবেছি; এই বুঝি দু‘জোড়া সজল চক্ষু আমার সামনে এসে দাঁড়ালো
আমি উচ্ছ্বাসে উন্মাদ হয়ে পড়লাম,
কিন্তু সে দু‘জোড়া চক্ষু
আমায় ভালোবাসার বাহুপাশে বেঁধে স্থির করল।

স্বপ্নের শৈল্পিক সৃষ্টি মনে যেমন, নীলেও তেমন
হঠাৎ কালোমেঘের ধুম্র আচ্ছাদনে ঢেকে পড়া
আবার উজ্জ্বল রোদ্রশিখায় হিরণ্যবর্ণে ছুঁয়ে দেয়া।
গোপনে নিয়ত আত্মদহন যখন প্রতিকুলতাকে ছেড়ে
অদূর বন্দরে ছুটে চলে
তখন মনে হয়…..
এই কালোমেঘ আর হিরণ্য আলোর দ্রুতিময় ব্যাপ্তীতে
আমি আশাহত হই
হারিয়ে যায় আমার মনের মাঝে এঁটে থাকা অস্পষ্ট বাসনার
সেই দু‘জোড়া চক্ষু,
অস্থির আর নেশাসক্ত চক্ষুগুলোতে তাই
আমি বিভাজনে বিভাজিত।

অধীর সমক্ষেপনে চলতে গিয়ে যখন ভাবনারাও ক্লান্ত হয়
তখন আভাস পাই, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ যন্ত্রনার
যা হঠাৎ বজ্রাঘাত হওয়া নতশীরে অস্পষ্ট দেখাটাকেও আরো কালো করে গভীরে
বলে চলে, বহুযুগব্যাপি তোমার অন্তরের জমানো ভাবাবেশ বিনষ্ট হল আজ
তুমি শুধু অতৃপ্ত বাসনায় সেই দু‘জোড়া চক্ষুর আশায়ই জীবন খোয়ালে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন