রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৩

কবিতাঃ স্বপ্নলোকে আমার বাংলা


দিনের ক্লান্তি শেষে ছুঁয়েছি বিশ্রামের বিছানাখানী
আমার দু’নয়নের তন্দ্রাঘুম স্বপ্নে নিল টানি।

ঘুমের প্রথম স্বপ্ন; নিখিলের তরণী
ফুল-ফল-পাখির সাম্রাজ্যে, আমার জননী
আমার মুক্ত নিঃশ্বাস, উচ্ছ্বাসের নীতিমালা
আমার প্রিতী অহংকার এই বাংলা।


ঘুমের দ্বিতীয় স্বপ্ন;কলকল নদী
স্বচ্ছপানি-মাছ-জলপতঙ্গ, চলছে অবধী
আমার সাঁতারকাটা, হাত-পা ছুঁড়ে এগিয়ে চলা
আমার নির্দ্বীধার সৈকত এই বাংলা।

ঘুমের তৃতীয় স্বপ্ন;উঁচু গিরী-পাহাড়
শৈবাল-ঝরনা-সবুজ রং, মনছৌঁয়া পাড়
আমার ব্যাকুলমন, ডিঙ্গানোর সুরডালা
আমার উদাসমনে হারানো এই বাংলা।

ঘুমের চতুর্থ স্বপ্ন;ঘাসে ঢাঁকা মাঠ
গরু-রাখাল-কৃষানের, জীবন তরী পাঠ
আমার ক্লান্তির স্বস্তি, গাছের ছায়াঢালা
আমার পরম শান্তির এই বাংলা।

ঘুমের পঞ্চম স্বপ্ন;আঁধারে জোনাকিপোকা
আলো-বাতাস-আঁধার, নয়নে নির্ঝর ঢাঁকা
আমার আঁধার পথ দেখানোর প্রীতিবেলা
আমার আঁধার ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে চলা এই বাংলা।

ঘুমের ষষ্ঠ স্বপ্ন;চাঁদনি এক রাত
বাউলের জারি; মাঝির নাইওরি, উদ্ভাসিত এক প্রভাত
আমার জেগেকাটা রাত, উপবিষ্ট প্রাতঃমালা
আমার জন্মাবধী চাওয়া এই বাংলা।

ঘুমের সপ্তম স্বপ্ন;স্নিগ্ধ-সকালের রবি
নতুন আশা-ভাষা-প্রিতী, মুখরিত বাংলার সবি
আমার কাব্যের ভাষা, ভাষার চয়ন তোলা
আমার ভাবান্তর-ভাব এই বাংলা।

ঘুমের শেষ স্বপ্ন;আমার মায়ের কোল
মায়ের স্নেহ-মমতা-স্মৃতি, খুশির কলরোল
আজ হারায়েছে মা আদর মিশায়ে দিয়ে, আমার বেড়ে উঠা শালায়
আমিও হারিয়ে যাচ্ছি আমার প্রিতী মুঠো হাতে ধরা- আকাঙ্খার বাংলায়।

[রাত্রির অষ্টপ্রহর ভেবে লেখা]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন